এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গ্রাস

    স্বপন মাঝি
    অন্যান্য | ০২ মে ২০২০ | ১০৫৩ বার পঠিত
  • নদীর ভাঙন দেখে দেখে হারাধনের সারাদিন কেটে গেল। সন্ধ্যার আগে আগে বাড়ী ফিরে
    অভুক্ত পেটে দাওয়ায় বসে থাকে বিমর্ষ মুখে। আজ ক’দিন ধরে তার মুখে রা’ নেই।

    দুমড়ে মুচড়ে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া নদীর ঘােলা স্রোত তার মগজের কোষে
    কোষে ঢুকে পড়ে। অত্যাসন্ন পতনের মুখে নিজেকে দেখতে পেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়
    হারাধন কেবল ড্যাবড্যাব করে চেয়ে থাকে। তার চোখের সামনে ভেসে যায় খড়কুটো
    দুমড়ানাে মুচড়ানাে বেড়া-ঘর, বাঁশের খুঁটি, গাছের গুড়ি, কচুরিপানা, মড়া। এই ভেসে
    চলার যেন শুধু শুরু আছে, শেষ নেই।

    সন্ধ্যা ঘনিয়ে কখন যে রাত নামে টের পায় না হারাধন। ঘুটঘুটে অন্ধকার। খুঁটিতে
    হেলান দিয়ে সে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। নির্ব্বাক। মেঘে ঢাকা আকাশে একটি
    তারাও তার চোখে পড়লাে না। সে যে তারা খুঁজছিলাে – এমনটি নয়। আকাশে
    ভেসে চলা মেঘ দেখতে দেখতে তার মনের পর্দায় বারবার ভেসে উঠছিলাে পাক
    খেয়ে খেয়ে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে চলা দূরন্ত নদী।

    সন্ধ্যার পর থেকে থেমে থেমে সুধারানী হারাধনকে ডাকে। হারাধনের সাড়া মেলে না।
    ছেলে-মেয়েদের খেতে দিয়ে নিজের মনে বকবক করে সুধারানী, এইহানে থাইক্যা
    কুনু লাভ নাই। কত কইছি জমি জমা সব বেইচ্যা ওইপারে চইল্যা যাই। আমার কথা
    হুনলাে না। অহন বুঝুক। একবার দাঙ্গা, আরেকবার নদীর ভাঙন, তার উপর সারা বছর
    নানা ছুতায় মুসলমানরা তাে পিছে লাইগ্যা রইচেই। এতাে জ্বালা ল’য়া মানুষ বাঁচতে
    পারে?

    ছেলে-মেয়েদের খাওয়া হয়ে গেলে সুধারানী আবার হাঁক দেয়, কই খায়া যাউক।
    আমি খাওন লয়া বইয়্যা থাকবার পারতাম না। |

    হারাধনের সাড়া না পেয়ে আবার তাড়া দেয়, হুনে না। কানের মাথা খায়ালছে
    নাহি ?

    হারাধনের কানে এসে তীব্র হয়ে বিঁধে পাড় ভাঙার শব্দ। তার মনে হলা, পাড় ভেঙে
    ভেঙে নদী খুব দ্রুত এগিয়ে আসছে।

    হারাধনের সাড়া না পেয়ে ক্ষুব্ধ সুধারাণী অভুক্ত পেটে শুয়ে পড়ে। স্বামীর আগে না
    খাওয়ার সংস্কার খুব নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছে সে। বিছানায় গা এলিয়ে দেবার
    অল্পক্ষণের মধ্যেই ক্লান্ত সুধারাণী ঘুমিয়ে পড়ে।

    হারাধনের মনের পর্দায় ভেসে ওঠে অন্য জীবন - কংকালসার। বাস্তুভিটা হারা,
    পথে-ঘাটে ভেসে বেড়ানাে এক আদিম মানুষ যেন হারাধন। তার শরীরে
    জোঁকের মত আঁকড়ে থাকে সূধারানী ও তিনটি সন্তান। এক মুঠো খাবাবের জন্যে সে সর্বত্র
    চষে ফেরে। খাবার মেলে না কোথাও। ক্ষুধায় কাতর, যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখগুলাে অসহায়ভাবে
    চেয়ে থাকে তার দিকে। সে চাহনি সহ্য করতে পারে না হারাধন। তার হৃৎপিন্ডে
    আরেক খরস্রোতা নদী। শরীরের সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে খড়কুটোর মত ভাসিয়ে নিয়ে যেতে
    চায় সে নদী। এই পতনােন্মুখ অবস্থা থেকে উদ্ধারের কোনাে পথ না পেয়ে হারাধন পালাতে
    চায়। দিশেহারা মানুষের মতাে ছুটতে থাকে, দিগ্বিদিক। ওরা তার পিছু ছাড়ে না। প্রাণপণে
    আঁকড়ে ধরে। হারাধন জোর করে ওদের ছাড়াতে চায়। পারে না। ওরা হাউমাউ করে কান্না
    জুড়ে দিলে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

    বাড়ির পােষা কুকুরটা বিলাপ তুলে কান্না শুরু করলে হারাধনের তন্দ্রা কেটে যায়।
    চোখের পাতা খুলে তাকায় - নিচ্ছিদ্র অন্ধকার। দু’হাত দূরের তুলসী গাছটা পর্যন্ত তার
    চোখে পড়ে না। অন্ধকারে সবকিছু কেমন অচেনা লাগে। ম্যালেরিয়ার জ্বরে কাঁপা রােগীর
    মতাে হারাধন হঠাৎ নিজের মধ্যে এক ধরনের কাঁপন অনুভব করে। নিজের অজান্তে সে
    গােঙাতে থাকে।
    কুকুরের বিলাপ শুনে সুধারাণীর ঘুম কেটে গিয়েছিলা। চোখের পাতা খুলে সে
    পিটপিট করে তাকিয়ে রইলা। অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। কিসের আওয়াজ, মনে মনে
    ভাবে সুধারাণী। কুকুরের বিলাপ শেষ হতে না হতেই হারাধনের গোঙানির আওয়াজ
    তালগােল পাকিয়ে দেয় সুধারাণীর মনে। সে ধড়মড় করে উঠে বসে। বিছানা ছেড়ে নেমে
    আসে দাওয়ায়। অন্ধকারে একাকার মানুষটা কোথায় যে বসে আছে খুজে পায় না সুধারাণী।
    কয়েক মুহূর্ত্ত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। অন্ধকার সয়ে এলে চোখে পড়ে দাওয়ার এক কোণে
    খুঁটিতে হেলান দিয়ে বসে আছে হারাধন। সুধারাণীর মনে হলাে হারাধন যেন এ জগতের কেউ না। অনেক দূরের অচেনা কেউ একজন তাদের দাওয়ায়। বুকের ভেতরটা খাঁ খাঁ করে উঠে তারা। গভীর মমতায় সে সন্তর্পণে এগিয়ে যায় হারাধনের কাছে । কাঁধে হাত রেখে মৃদু
    নাড়া দেয়, ঘরে চলো।

    কে! চমকে উঠে হারাধন।।
    বুক ফেটে কান্না আসে সুধারণীর । বিশ বছর ঘর করার পর হারাধন এখন সুধারাণীর পরিচয় জানতে চায় ? তবে কি হারাধন সত্যি সত্যি পাগল হয়ে গেল ?

    ভাঙ্গন সর্ব্বনাশা রূপ নিলে হারাধনের রুটিন মাফিক জীবন কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। ঘরে-বাইরে সবার সাথে তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। নদীর ভাঙ্গনে পতিত,
    অন্যদের হা-হুতাশ যখন আকাশ ছুঁয়েছে হারাধন তখন নির্ব্বাক। মিশুক প্রকৃতির হারাধন
    তার দুঃখ বিনিময় করা থেকে বিরত থাকলে অনেকে একে পাগল হবার পূর্ব্ব লক্ষ্মণ বলে
    প্রচার করে দেয়। এসব কথা সুধারানীর কানেও গিয়েছিল আমল দেয়নি। সুধারাণীর
    শরীরে কাঁপুনি দেখা দেয়। তবে কি হারাধন সত্যিই পাগল হয়ে গেল? ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে
    সুধারাণী। হারাধনের কাঁধ আকড়ে ধরে প্রবল ঝাঁকি দেয়- এ্যাই!
    আর বলতে পারে না,তার কণ্ঠ ধরে আসে।

    সম্বিত ফিরে পায় হারাধন। সুধারাণীর চাপা কান্নার আওয়াজ বড়ো বিশ্রী ঠেকে।
    অসহিষ্ণু কণ্ঠে বলে, কান্দস ক্যা? কাইন্দ্যা আর কি অইবাে।

    কাঁটার মতাে একটা অজানা ভয় সুধারানীর বুকে বিঁধে যায়। কয়েক মুহূর্ত
    স্তব্ধ থেকে বিড়বিড় করে বলে, এমন করতাছাে ক্যা?
    একদিনের ব্যবধানে পনেরটি পরিবারের বাড়ি-ঘর, জমি-জমা চলে গেল নদীর উদরে। দুর্বার গতিতে নদী আজ সকালে আঘাত হেনেছিল হারাধনের জমির উপর। সন্ধ্যার আগেই এক বিঘা জমি ভেসে গেল খরস্রোতে। বাড়ী এসে সে ঘটনা চেপে গিয়েছিল হারাধন। সুধারাণীকে তার খুব ভয়। জমি হারানাের কথাটা বললে হয়তাে ফোঁস করে উঠবে।

    কথায় কথায় দেশত্যাগের প্রস্তাব হারাধনের ভালাে লাগে না। পার্শ্ববর্তী গ্রামের বিপিন
    ঘােষ মুসলমান জোতদারের অত্যাচারে টিকতে না পেরে পানির দামে জমি-জমা সব বিক্রি
    করে ওপারে চলে গেলে সুধারাণী সে অজুহাত দেখিয়ে বলেছিলাে, এইহানে থাইক্যা আর
    সুখ নাই। একবার দাঙ্গা, দাঙ্গা না অইলে জমি-জমা জাল দলিল কইরা কাইড়া নেওয়া,
    হিন্দুর মাইয়্যা নিয়া টানাটানি করা- আর কোনােদিন থামবাে না। তারচে ভালা, চলাে
    আমরা ওইপারে চইল্যা যাই।।

    নদীর ভাঙনের কথা সুধারানী জানতাে। কিন্তু হারাধনের এক বিঘা জমি যে নদীর উদরে চলে গিয়েছে - এটা সে জানতাে না। হারাধন বলেনি। কিন্তু এ মুহূর্তে সে ভাবলাে, এতাে আর মহাজনের খেলা নয়, জমি হারানাের কথা শুনে সুধারানী ফুসে উঠবে - নদীর ভাঙ্গন ভগবানের খেলা। তবু কথাটা বলবে কিনা ভাবতে ভাবতে তার মুখ ফসকে বেরিয় যায়, ওইপারে চইল্যা গেলেই ভালা অইতাে।

    যে কথা আদায় করার জন্য হারাধনের সাথে প্রায়ই তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে দিতাে আজ সেই কাঙ্খিত শব্দটি শুনে সুধারানী কেমন হকচকিয়ে গেল। তার চোখে-মুখে নেমে আসে সংশয়ের ছায়া। এ কেমন করে সম্ভব? দেশ বিভাগ কালে ভয়াবহ দাঙ্গার সময় যে হারাধন ওপারে যায়নি। বালক হারাধন তার বাবার সাথে এ মাটি আঁকড়ে পড়েছিলো, একাত্তরে তার বাড়ী-ঘর লুঠ হয়ে গেল। সুধারানীকে নিয়ে চলে গেল নদীর ওপারে,
    পালিয়ে পালিয়ে বেড়ালা সেই ভয়াবহ দিনগুলােতে। আজ সে-ই কিনা-স্বেচ্ছায় চলে যেতে চাচ্ছে ওপারে। দ্বিধা জড়িত কণ্ঠে সুধারানী বলে, অহনাে তাে সময় আছে। ।
    হেই সুযােগ আর নাই।
    দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অন্ধকারে মাথা নাড়ে হারাধন।।
    সুধারানী ও হারাধন উভয়ে উৎকর্ণ হয়ে উঠে। পাড়ের অনেকটা অংশ কিংবা কোনাে বৃক্ষ পতনের বিপুল শব্দ খুব কাছ থেকে ভেসে এলে তারা একে অন্যের দিকে শংকিত মুখে তাকিয়ে থাকে। পতনের আওয়াজটা পাড় ভাঙার না কোনাে বৃক্ষ পতনের এই নিয়ে ভাবনায় পাড় যায় হারাধন।

    পরবর্তী মুহূর্তে অনেকগুলাে পাখির কলরব শুনে তার মনে
    হলা বটগাছটার পতন হয়েছে। গত দু’দিন ধরে বটগাছটা কাৎ হয়ে ঝুলেছিলাে নদীর দিকে, তার চারদিকে তৈরী হয়েছিলাে গভীর ফাটল। তাতে কলকলিয়ে ঢুকে পড়েছিলাে নদীর স্রোত। ভাঙনের ভয়াবহতা অনুমান করে তার শরীর কুঁকড়ে যায়। এক বছর পূর্বে বটগাছ
    থেকে বিশ হাত দূরে ছিলাে নদী। এই বট গাছের নিচে গেলবার অনুষ্ঠিত হয়েছিলাে বিশাল জনসভা। সে সভায় দেশের প্রেসিডেন্ট এসেছিলেন! কত লােক! চারদিকের গ্রাম ভেঙ্গে তারা এসেছিলা। নদীর ভাঙ্গন রােধে কার্য্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করেছিলেন প্রেসিডেন্ট। এক বছরের মধ্যে এ অঞ্চলের লােকের মুখে হাসি ফুটবে। হারাধনের মনে হলা, প্রেসিডেন্টের সেসব কথা নদীর ভাঙ্গনের মতাে ভেসে গেছে নদীর স্রোতে।

    সুধারাণী থামে না। সে আপন মনে বলতে থাকে, আইজ কতােডা দিন অইলাে মাইয়াডারে দেহি না। মাইয়্যাডারে বিয়া দিবার মাত্র দুইমাস পর চইল্যা গেল ওইপারে। কোনহানে কোন বাবরি মসজিদ আর রাম মন্দির লইয়্যা কি গন্ডগােল আর হেইডার ফলভােগ করতে অইতাছে আঙ্গর! ক্যা! আমরা কি দোষ করলাম, একজনের পাপ আরেক জনে ভােগ করবাে এইডা কোন বিচার, এইডা কোন ধর্ম? দম নেয় সুধারানী, জামাইর
    একটা মাত্র দোকান ঘর আছিলাে বাজারে, হেইডা লুঠ অইলাে। আর কেমনে থাহে এই দ্যাশে। যহন বাড়ি-ঘর জমি-জমা বেইচ্যা চইল্যা গেল ওইপারে -- আমি তহনি কইছিলাম, চলাে-আমরাও চইল্যা যাই। আমার কতা হলাে না। জেদ ধরলাে, না, এই দ্যাশ ছাইড়া আমি কুনুহানে যাইতাম না। এইভাবে কি মাইনসের জীবন চলে? বলতে বলতে আবার সুধারানীর কান্না পায়। সে কান্নার জলে নদীর ভাঙ্গন আর দেশ ভঙ্গন এক হয়ে যায়।

    জ্ঞান হবার পর থেকে সূধারানী তার ভাই, কাকা, পিসিমার মুখ দেখেনি। দেশ বিভাগের পর পরই ওরা চলে গিয়েছিলাে ওপারে। সুধারানীর বাবা কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল, ওপারে যাওয়ার ঘাের বিরােধী , অথচ সুধারানীর খেলার সাথী, আত্মীয়-স্বজন চেনা-জানা প্রায় সবাই একে একে চলে গেল ওপারে। সাত চল্লিশের পর সেই যে যাওয়া শুরু হয়েছে তার আর বিরাম নেই। নদীর ভাঙনের মতাে দেশ ভাঙ্গনের ফলে হাতে গােণা কয়েকজনের কপাল খুলে গেছে, পথে নেমে গেছে শত শত লােক। নানা
    ছুতায় সুধারাণী হারাধনকে বলত, হিন্দুর ভাত এইদেশ থাইক্যা উইঠ্যা গেছে। কার লগে জেদ কইর্যা মাটি কামড়ায়া পইড়া থাকবা?
    হারাধন খলবলিয়ে উঠতাে, তগাের মন চায় তােরা যা। বাপ দাদার ভিটা-মাটি ছাইড়া আমি কুলু অচিনা জায়গায় যাইতাম না। মরতে অয় এই মাটিতেই মরবাম।
    একে একে সবাই তাে চইল্যা যাইতাছে। এইখানে কারে লইয়া সমাজ করবা। তােমার আমার কথা না হয় বাদ দিলাম। পােলাপান তিনডার ভবিষ্যৎতাে দেখবা। মাইয়্যাড়া ডাঙ্গর অইতে না অইতেই মুসলমান পােলারা হের পিছে লাগছে। দত্ত বাড়ির এক মাইয়্যা তাে এক মুসলমান পােলার হাত ধইরা চইল্যা গিয়া ধর্মত্যাগী অইলাে। আত্মীয় স্বজন আর মুখ দেহায় কেমনে? হেই দুঃখে বাপে গলায় ফাঁস লইলাে। একটা ঘটনা ঘটলে তহন বুঝবা।

    হারাধনের চোখের সামনে আবার ভেসে ওঠে স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া কচুরিপানা, গাছের গুড়ি, খড়-কুটো মড়া। মগজের অলি-গলিতে কলকলিয়ে ঢুকে পড়ে নদীর ঘােলাজল। সে ঘােলা জলের স্রোতে উজান সাঁতার কেটে উঠে আসে সদরুদ্দি মাস্টার। সুধারানীর অনেক কথার কোনাে উত্তর দিতে পারতাে না হারাধন। মাঝে মধ্যে মনে হতাে সব বিক্রি
    করে ওপারে চলে যাওয়াই ভালা। কিন্তু আজন্ম পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে কোনাে অচেনা-অজানা জায়গায় যাওয়ার কথা মনে উদয় হবার সাথে সাথে সে দমে যেত। সদরুদ্দি মাস্টার তাকে দিয়েছিলাে নতুন প্রাণশক্তি। সংগ্রাম করে টিকে থাকবার প্রেরণা। মাষ্টার বলতাে, পথিবীর সব দেশে গরীবের ওপর ধনীদের সীমাহীন শােষণ নির্যাতন এক সাধারণ ঘটনা। হারাধনের একটা হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলতাে, তুমি কি মনে করাে
    পাকিস্তানের ধনী মুসলমানরা গরীব মুসলমানদের ওপর অত্যাচার করে না? এই দেশের কথাই ধরাে, এখানকার মুসলমান জোতদার কি ভূমিহীন মুসলমান কৃষকদের দয়া করে? ন্যায্য মজুরি দেয়? ভারতের ধনী হিন্দুরা কি গরীব হিন্দুদের ওপর জুলুম করে না? তুমি দেশ ত্যাগ করে কোথায় যাবে? গরীবের কোনাে দেশ নেই। সে যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে বাঁচতে হবে লড়াই করে।
    হারাধন বলতাে, যাই কও মাস্টার, এতাে লাঞ্ছনা গঞ্জনা আর সহ্য হয় না। সামান্য একটা ছুতা পাইলেই কইবাে, যা তাের বাপেগ’র দ্যাশে চইল্যা যা। এইহানে পইড়া আছস ক্যা? হের উপর মালাউনের বাচ্চা, চাঁড়াল- যতাে অকথ্য গালিগালাজ, আর সহ্য হয় না।
    ধনী-গরীবের আকাশ পাতাল সম্পর্ক যেখানে যতাে বেশী, অজ্ঞতা-মূখতাও সেখানে তত বেশী। সংখ্যালঘু শব্দটাও ওদের তৈরী। একটা সমাজের মানুষকে যতাে বেশীভাবে বিভক্ত করা যায় ততােই ওদের লাভ। এতে করে সাধারণ মানুষ হানাহানিতে লিপ্ত থাকে। জাত-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে শাসক-শােষকরা ঠিকই তাদের ঐক্য বজায় রাখছে। যে কোনাে দাঙ্গায় দেখবে ধনীরা মরে না, মরে গরীব মানুষ।
    হারাধন জোর সমর্থন জানায়, খাঁটি কথাই কইছ। ওইপারে যদি একটা দাঙ্গা বাধলাে তাে হেইডার ফল ভােগ করতে অয় এইহানের হিন্দুদের। একজনের অন্যায় কাজের শাস্তি আরেকজন পাইবাে এইডা কোন ধর্মে লেহা আছে?
    ধর্মে লেখা নেই ঠিকই। কিন্তু ধর্ম দিয়ে, বর্ণ দিয়ে, ভাষা দিয়ে অজ্ঞ গরীব
    মানুষগুলােকে খুব সহজে বিভক্ত করে রাখা যায়। যাতে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে সব রকম অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে না পারে। ধনী - সে মুসলমান হােক আর হিন্দুই হােক, তাদের উদ্দেশ্য অভিন্ন। তবে সব দেশেই সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করতে সুবিধা বেশী। সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প ছড়িয়ে রাখতে পারলে মানুষ তাতেই মেতে থাকবে। ভুলে যাবে নিজেদের অধিকার অর্জনের সংগ্রামের কথা।
    সদরুদ্দি মাস্টারের কথা শুনে হারাধন নতুন স্বপ্নে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল।
    জাত-ধর্ম তুচ্ছ জ্ঞান করে এক আসনে সদরুদ্দি মাস্টারের সাথে আহার করতে বসে যেত।
    সেই সদরুদ্দি মাস্টারকে এবং তার দলের ফজলু ও দেবদাসকে রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে নদীর পারে প্রকাশ্যে গুলি করে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলা নদীতে।
    পরদিন পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হলাে – রক্ষী বাহিনীর সাথে এক সংঘর্ষে তিন জন দুষ্কৃতকারী নিহত। এ ঘটনার পর হারাধন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলা।

    জোর বাতাস, ঢেউ আছড়ে পড়ার আর পাড় ধসে পড়ার ঝুপঝাপ শব্দের তীব্রতা বেড়ে যায়। হারাধন চমকে উঠে এদিক-ওদিক তাকায়। তার মনে হল ঘাড় ঘুরালেই সে দেখতে পাবে – বাড়ীর পাশ ঘেষে তীব্র বেগে বয়ে চলেছে নদী। নদীর এই দুর্বার গতি তার মনে বিস্ময়-ভয় জাগায়। নদী কি সত্যিই অপ্রতিরােধ্য। তার সর্বনাশা ভাঙ্গনের হাত থেকে কি রক্ষা পাওয়া যায় না? মানুষ কতােকিছু জয় করছে। কতাে অসম্ভবকে সম্ভব করে
    তুলছে। মাটি ছেড়ে চাঁদে গেছে। অথচ এই মাটির বুক চিরে বহমান এক নদী, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না মানুষ?
    | সদরুদ্দি মাস্টার বলতাে, বুঝলে হারু, যে নদী মানুষকে কাঁদাতে পারে সে নদীই আবার হাজার হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারে।
    হারাধন অবাক হয়ে শুনতাে। মাস্টার বলতাে, এই নদীটাকে খনন করে, দুই পাড়ে বাঁধ দিয়ে বৃক্ষরােপণ করলে, তারপর ধরাে - নদীতে মাছ ও ঝিনুক চাষ করলে, নদীর কর্তৃত্ব জেলেদের হাতে দিয়ে দিলে দেখবে অববাহিকার লােকদের মুখে হাসির বান। দুঃখ কি জানাে – সব সরকার নদীর গতিপথ ও নাব্যতা ঠিক রাখার মতাে কাজগুলাের ব্যাপারেওউদাসীন।
    হারাধন বিস্মিত কণ্ঠে বলতাে, ক্যান?
    নদীর প্রয়ােজনীয় সংস্কার হলে আর বন্যা হবে না। বন্যা না হলে সাহায্য আসবে না। আর সাহায্য না এলে লুঠপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়া যাবে না। আমলা-মন্ত্রী ও সে-সব দলের নেতারা বেঁচেই আছে বিদেশী সাহায্যের ওপর ভর করে।
    হারাধন মৃদু আপত্তি জানিয়েছিলাে, নদী সংস্কার করতে অইলে তাে অনেক টাকার দরকার। সরকার এতাে টাকা পাইবাে কই?
    রাজধানীতে বড়াে বড়াে ইমারত তৈরী করতে টাকার অভাব হয় না, রাস্তা-ঘাট তৈরী করতে টাকার অভাব হয় না। রাজধানীর ভি. আই. পি সড়কগুলাে একবার ভাঙ্গে আবার নতুন মডেলে তৈরী করে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফোয়ারা তৈরী করে। তখন টাকার অভাব হয় না। অভাব দেখা দেয় শুধু গঠনমূলক কাজে। তারপর একটা জুৎসই উদাহরণ দিয়ে মাস্টার বলেছিলাে, হােয়াং হাে নদী ছিল চীনের দুঃখ। সেখানকার
    কৃষক-শ্রমিকরা ক্ষমতা দখল করার পর মাও সেতুং-এর ডাকে জনগণ সে-ই নদীর বুক চিরে দুঃখকে কবর দিলাে। হাসি ফুটলাে সবার মুখে। এতাে বড় বিশাল কাজ কেবল জনগণের সম্মিলিত শক্তি, বিদেশী সাহায্য ছাড়াই। সেদিন পৃথিবীর মানুষ তাজ্জব বনে গিয়েছিল।
    সেসব কথা শুনতে শুনতে হারাধন অন্য রকম হয়ে যেত। তার মনে হতাে সেদিন। আর বেশী দূরে নেই যেদিন এদেশের মানুষের কোনাে দুঃখ থাকবে না। কোনাে রকম বিভাজন-বিভক্তি থাকবে না।
    পশ্চিমের ঝােপ ঝাড়ে কয়েকটা শিয়াল একসঙ্গে বিলাপ তুলে ডাকতে শুরু করলে উঠোনে নিঃসাড় পড়ে থাকা কুকুরটা হঠাৎ সচকিত হয়ে ঘেউ ঘেউ রব তুলে তেড়ে যায়। এ কোলাহলময় পরিস্থিতিতে হারাধনের তন্দ্রা ছুটে যায় আবার। সুধারানী দাওয়ার উপর পড়েই ঘুমাচ্ছিল। সেও ধড়মড় করে উঠে বসে। ঘুম ঘুম চোখে সুধারানী নিঃশব্দে ঘরে প্রবেশ করে আবার শুয়ে পড়ে। হারাধনও তার পিছু পিছু যায়।
    নদীর পাড় আর পাড় সংলগ্ন গাছপালা পতনের শব্দ ভয়াবহ রূপ নেয়। সেসব শব্দ হারাধনের কানে ঘন ঘন বাড়ি খায়। তার হৃৎ কম্পন বেড়ে যায়। বিড়বিড় করে বলে, আইজ রাইতটা বুজি আর পার অইবাে না।।
    অর্ধ ঘুমে সুধারানী টেনে টেনে বলে, ভগবানই রক্ষা করব।
    অন্য সময় হলে একথায় ফোড়ন কাটততা হারাধন, তাের ভগবান তাে ঝড় তুফান, বন্যা, খরা থাইক্যা গরীব মানুষগুলারে বাঁচাইতে পারে না। পাকা দালানের বাসিন্দারা ঠিকই বাচে। তাগাে শরীরের লােমটাও খসাইতে পারে না। ধুকে ধুকে মরে শুধু গরীব। কিন্তু এ মুহূর্তে সে সুধারানীর কথার কোনাে জবাব দিলাে না। গত কয়েকদিন ধরে কোথাকার এক পীরের নির্দেশে হিন্দু-মুসলিম সবাই বস্তায় বস্তায় লবণ ফেলছে নদীতে, যাতে নদীর দয়া হয়। বস্তা বস্তা লবণ খেয়েও নদীর দয়া হয় না। এসব কাজেও হারাধন আপত্তি করে না।
    হারাধন নিঃসাড় পড়ে থাকে বিছানায়। চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে গেছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে নদী তার এক বিঘা জমি গ্রাস করলাে। কে জানে হয়তাে আজ রাতের মধ্যে গােটা বাড়িটাই গ্রাস করে বসবে। জমি হারানাের বেদনা এ মুহূর্তে ভুলে যেতে চায় সে। পারে না। বাবলার কাঁটার মতাে সে নদী তার বুকে রক্ত ঝরায়। নদীর স্রোতে ভাসমান খড়-কুটোর মতাে সে রক্ত স্রোতে ভাসতে থাকে হারাধন। ভাসতে ভাসতে এক সময় সে তলিয়ে যেতে শুরু করে। হারাধন প্রাণপণে ভেসে উঠতে চায়। অসংখ্য হাত যেন তাকে লতা-গুল্মের মতাে আঁকড়ে ধরে। সে হাতগুলাের বাঁধন ছিড়তে গিয়ে সে বার বার ব্যর্থ হয়। তলিয়ে যেতে যেতে সে এলােপাতাড়ি হাত পা ছোঁড়ে।।
    অস্ফুট একটা শব্দ করে সুধারণী পাশ ফিরে শােয়।
    হারাধন ঘেমে উঠে। ফ্যালফ্যাল করে সে অন্ধকারে চেয়ে থাকে সুধারাণীর দিকে। বড়া মায়া হয় তার। সারাটা জীবন শুধু কষ্টই করে গেল। সুখের মুখ আর দেখলাে না।
    একটা বিকট শব্দে হারাধনের বুকটা ধড়াস করে উঠে। পর পর পাড় ধসে পড়ার শব্দ ভেসে আসতে থাকে। বাড়ির পূর্ব্ব পাশের বাংলা ঘরটার পতন হল কিনা ভেবে পায় না। তবে পাড়ে ঢেউ আছড়ে পড়ার অবিরাম শব্দ এসে বিধতে থাকে তার কানে। উৎকর্ণ হয়ে থাকে সে। মনে হল, বাড়ীর দোরগােড়ায় এসে গেছে নদী। তার কলকল ধ্বনিও সে শুনতে পায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তাে বাংলা ঘরটার মতাে এ ঘরটাও ভেসে যাবে নদীর
    স্রোতে। এক পলকের জন্য নদীর অবস্থান দেখে আসার ইচ্ছে তার মনে প্রবল হয়ে ওঠে। উঠে বসতে চায়। পারে না। শরীরে অসম্ভব ক্লান্তি। উঠে বসবার মতাে শক্তিটুকু যেন তার দেহে আর নেই। অন্ধকারে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে আসে হারাধনের।
    দোলনায় বসে ভাসতে ভাসতে এক সময় হারাধন পৌঁছে যায় এক নতুন চরে। সে চরে পা রাখতে না রাখতে তাড়া খায় আজিমুদ্দিন জোতদারের লাঠিয়ালদের। দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে ওঠে হারাধন। চারদিকে অসংখ্য লাশ, ছােপ ছােপ রক্ত। একটা,লাশের সাথে হোঁচট খেয়ে সে পড়ে যায় আবার উঠে দাঁড়ায়। কিন্তু এবার সে আর পালাতে পারে না। সদরুদ্দি
    মাস্টার তার সামনে এসে দাঁড়ায়, বুঝলে হারু, দেশ বিভাগ আর নদী ভাঙনের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। জমির মালিকের হাত বদল হয় মাত্র। ভূমিহীন কৃষকের পূর্ব সংখ্যার সাথে যােগ হয় নতুন সংখ্যা। আমাদের দলে এখন অনেক লােক। যুদ্ধে আমাদের জয় হবেই।
    তােমার স্ত্রীকে বলবে – দেশত্যাগের কথা আর ভাবতে হবে না।

    এতবড় একটা সুখের সংবাদ হারাধন চেপে রাখতে পারে না। ছুটে আসে সুধারানীর কাছে। হাঁপাতে হাঁপাতে তার একটা হাত চেপে ধরে। সুধারানী তন্দ্রাচ্ছন্নের ভেতর হারাধনের হাতটা বুকের ওপর থেকে সরিয়ে দিয়ে পাশ ফিরে আবার ঘাের নিদ্রায় তলিয়ে যায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন