এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খবর  টুকরো খবর

  • Kolkata Metro -- কলকাতা মেট্রোর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা

    admin লেখকের গ্রাহক হোন
    খবর | টুকরো খবর | ১৩ জুলাই ২০১৯ | ৬৪২ বার পঠিত
  • কলকাতা মেট্রো এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল আজ। দুর্ঘটনাটি ঘটে সন্ধ্য়ে পৌনে সাতটা নাগাদ। কসবা এলাকার বাসিন্দা সজল কাঞ্জিলাল। নন্দন চত্বরে লিটল ম্যাগাজিন বিক্রি করতেন। আজ সন্ধেবেলাউ সজলবাবুর হাত মেট্রোর একটি ট্রেনের দরজায় আটকে যায়। সাধারণ অবস্থায় এরকম আটকে যাওয়া সম্ভব নয়। দরজা এই অবস্থায় বন্ধই হয়না। কিন্তু যান্ত্রিক গোলমালের জন্য়ই এমন হয় বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। চালক কিছু টের পেয়েছিলেন কিনা জানা যায়নি। কিন্তু ওই অবস্থাতেই ট্রেন চলতে শুরু করে। যাত্রীটিকে ট্রেন ছ্য়াঁচড়াতে ছ্য়াঁচড়াতে নিয়ে চলে বহুদূর। তিনি গুরুতর ভাবে আহত হন। পরে মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন কিনা জানা যায়নি।

    ঘটনাটি ঘটে পার্কস্ট্রিট এবং ময়দান স্টেশনের মধ্য়ে। ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনার পরেই যাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই মর্মান্তিক ঘটনা রেলে সাধারণ যাত্রী-নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্য়ের দিকে নজরের অভাবের কথা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এই ঘটনায় কোনো নির্দিষ্ট ব্য়ক্তি, যেমন চালক বা নিরাপত্তারক্ষীর গাফিলতি আছে কিনা, তা তদন্তসাপেক্ষ, কিন্তু রেল কামরার দরজায় যে যান্ত্রিক সমস্য়া ছিল এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রেল কামরার দরজার খোলা-বন্ধ সরাসরি যাত্রীর নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। যাত্রীদের অনেকেরই পর্যবেক্ষণ, যে, দরজাগুলি বহু সময়েই ঠিকঠাক কাজ করেনা। কোনো কামরার দরজা খোলে, কোনো কামরার খোলেনা। সেদিকে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো নজরদারি নেই। একজন যাত্রী দরজা না খোলায় ট্রেনে উঠতে পারলেননা, বা নামতে পারলেননা, এটি যাত্রী স্বাচ্ছ্য়ন্দ্য়ের প্রশ্ন। আর দরজায় যাত্রী আটকে পড়লে তা জীবনমরণের প্রশ্ন। পুরো ব্য়াপারটাই যেহেতু স্বয়ংক্রিয়, তাই স্বাচ্ছন্দ্য় এবং নিরাপত্তার জন্য় কামরাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ এবং সব ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা তা নিয়ে নিয়মিত নিরীক্ষা খুব জরুরি। এই দিকে আদৌ কোনো নজর আছে কিনা, এই মর্মান্তিক ঘটনার পর সেই প্রশ্ন উঠে আসছে। ট্রেনের অনেকগুলি রেকই বহু বছরের পুরোনো। মাঝে মাঝেই নানা যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায়। দরজা খোলা বন্ধ তার মধ্য়ে কেবল একটি। রেকগুলিকে বদলে ফেলা জরুরি কিনা, সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা আদৌ হয়েছে কিনা, হলেও জেনেবুঝেই রেকগুলি বদলানো হয়নি কিনা সেই প্রশ্নও আসছে।

    ভারতীয় রেল নানা রাজ্য়সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্য়োগে বিরাট মেট্রো নেটওয়ার্ক বানিয়েছে। বিশেষত রাজধানী দিল্লি এলাকায় বিরাট অঞ্চল জুড়ে চালু হয়েছে মেট্রো পরিষেবা। সেখানে রেলের বরাদ্দ বিপুল। সবকটি রেকই শোনা যায় অত্য়াধুনিক। একই সঙ্গে মাঝে মাঝেই শোনা যায় বিপুল বিনিয়োগে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বুলেট ট্রেন চালু করার কথা। সেখানেও অর্থের প্রয়োজন প্রচুর। অথচ ভারতবর্ষের প্রাচীনতম এবং প্রথম মেট্রো সার্ভিসটিতে পুরোনো, যান্ত্রিক গাফিলতিতে ভর্তি রেক চালানো হয়। তাদের বদলে ফেলার জন্য় অর্থ বরাদ্দ করা হয়না। পূর্বাঞ্চলের প্রধান শহরটির প্রতি কেন্দ্রীয় রেলের নজরে এই গাফিলতি কেন?

    এই প্রশ্নের উত্তর আগামী দিনে খুঁজতে হবে। উইকিপিডিয়া বলছে "The Kolkata Metro was the first metro railway in India, opening for commercial services from 1984.It is the sixth longest operational metro network in India after the Delhi Metro, Hyderabad Metro, Chennai Metro, Namma Metro and Noida Metro. On 29 December 2010, Metro Railway, Kolkata became the 17th zone of the Indian Railways, operated by the Ministry of Railways. It is the only metro in the country to be controlled by Indian Railways .There are 300 metro services daily carrying over 700,000 passengers making it the second busiest metro system in India." যতদিন প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া যায়, কলকাতার এই সাতলক্ষ নাগরিককে দৈনিক মেট্রোয় চলাচল করতে হবে প্রাণ হাতে করে। যেকোনো সময় ট্রেনে ওঠা বা নামার সময় যে কারো হাত, পা, জামার অংশ ব্য়াগ, আটকে যেতে পারে ট্রেনের দরজায়। পরিণতি, ট্রেনের সঙ্গে ছেঁচড়ে চলা, এবং প্রায় অবশ্য়ম্ভাবী মৃত্য়ু।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • খবর | ১৩ জুলাই ২০১৯ | ৬৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Test | 890112.162.671223.39 (*) | ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৪:২৪79618
  • বাকস আসছে?
  • pi | 237812.69.453412.188 (*) | ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪৭79619
  • মোবাইল থেকে আসছেনা।

    ঘটনাটা মর্মান্তিক বললেও কম বলা হয়।
  • উনি | 237812.68.786712.15 (*) | ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৫:২০79620
  • ও হাত ঢুকিয়ে ভুল করেছিলেন। মর্মান্তিক কিন্তু এই মৃত্যু এড়ানো যেত
  • aranya | 236712.158.2367.26 (*) | ১৪ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৮79621
  • মর্মান্তিক ঘটনা তো বটেই। কলকাতা মেট্রোর জন্য অর্থ বরাদ্দ হয় না - এটাও সাংঘাতিক ব্যাপার। মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন যেখানে..
  • b | 236712.158.891212.193 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৬:৫৬79622
  • কলকাতা মেট্রোর মুশকিল হল এটি পুরোপুরি ভারতীয় রেলের মধ্যে। ম্যানেজমেন্টে গয়ংগচ্ছ ভাব ইত্যাদি। পাশাপাশি দিল্লি বা হায়্দ্রাবাদের "স্মার্ট" মেট্রো, প্রাইভেট/পাবলিক পার্টনারশিপ, রেকগুলি সরাসরি বিদেশ থেকে আনানো।

    ওদিকে হায়্দ্রাবাদ মেট্রোর টিকিট ১২ কিলোমিটার যেতে ৪০ টাকা, ২০ কিলোমিটার যেতে ৫০ টাকা। কলকাতায় ম্যক্সিমাম ২০-২৫ টাকা।

    নতুন যে ইস্টওয়েস্ট মেট্রো হচ্ছে, সেখানে সম্ভবতঃ নতুন ভাড়া হবে। দেখাযাক কি হয়।
  • Kaju | 236712.158.9001212.32 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৯ ১২:৩৮79623
  • মেট্রোয় এতবার এত রকম দুর্ঘটনা ঘটছে এতে লোকে যদি মেট্রো-কে পুরোপুরি বয়কট করে নিরাপত্তার স্বার্থে, অনেকে মিলে তবে এদের বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন করা যাবে, তখন যদি মহাশয়দের টনকটা কিঞ্চিৎ নড়ে, নইলে আর তো উপায় দেখছি না। বহুদিন ধরে কত কী যে ঘটল, আর মাটির তলায় একবার কিছু হলে আর কোনো উপায় নেই নিস্তার পাবার। এতো বাস নয়।

    এখন যাঁদের সোশাল মিডিয়ায় এক লাইন লিখলেই প্রচুর সাড়া মেলে, তারা যদি এই দাবিটা তোলেন হ্যাশট্যাগ দিয়ে, যে - মেট্রোর যান্ত্রিক সবরকম পরীক্ষা করে রেকটা ট্রিপে যাবার উপযুক্ত কিনা, সেন্সর ঠিক কার্যকরী আছে কিনা, সব দেখে বার করা হোক, নইলে প্রাণের তাগিদে ঘাতক মেট্রো-কে বাতিল করার পন্থা নেয়া হবে। সোশাল মিডিয়া তো অনেক ক্ষেত্রেই এভাবে অনেক বদল এনেছে, শুধু চাট্টি শোকপ্রকাশ না করে দায়িত্বজ্ঞানশূন্য কর্তৃপক্ষের ঝিটকির গোড়া ধরে ঝাঁকুনি দেয়া দরকার ভবিষ্যতে এরকম মর্মান্তিক ঘটনা এড়াতে। অপদার্থে যে শহর রাজ্য দেশ পচে গেল। আর কত সহ্য করব আমরা?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন