এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আকাড়া কিশোরী ও একটি নদী

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৭৭২ বার পঠিত
  • আকাড়া কিশোরী ও একটি নদী
    -------------------------------
    ..... আকাড়া কিশোরী যেন সেদিনের বসন্ত পঞ্চমী
    হাসি নেই, অশ্রু আছে, দুচোখে চাঁদের ছায়া স্মৃতি টানে, গোপন সাবানে
    জলজ গায়ের গন্ধ ।

    চলে যায় মরি হায় বসন্তের দিন চলে যায়....
    ( একদিন, শৈশবে,সমুদ্রে : এই আমি, যে পাথরেঃ- শক্তি চট্টোপাধ্যায়)

    বসন্তপঞ্চমী এরকমই ছিলো আমাদের সে বয়সে। বাসন্তী শাড়ি, লুকিয়ে চাওয়া, আতপচালের ছড়ানো সৌরভ, ছুটন্ত সাইকেলে ব্যস্ত পুরোহিত। আর, অন্যদিন যে কথাটা বলা যায়না একান্ত কোনও একজনকে, তা বলার জন্য শেষ রাত থেকে প্রস্তুতি, কিন্তু আর বলা হয়ে ওঠেনা । দু'জনেরই। চলে যায়, বসন্তপঞ্চমীর দিন । আজও বলা হয়নি, শোনার লোক পাল্টে গেছে কতো । কিন্তু কথাটা গচ্ছিত রয়ে গেছে ঐ ফর্সা অনন্তযৌবনা দেবীটির পায়ের কাছে হৃদয়কমল বনে।
    --------------------------------------------------

    ২. সরস্বান একটি বিশেষণ শব্দ । অর্থ সর-আশ্রয়বান, মানে শৈত্য ও সরোযুক্ত। অস্যার্থ, জলপূর্ণ ধারাবান নির্মাণ। স্ত্রীলিঙ্গে হয়ে যায় সরস্বতী। নদী তো চিরকালই নারী। মর্যাদার বিচারে ঋগবেদের বিভিন্ন মন্ডলে দেখি সিন্ধুনদকেও অনেক স্থানে সরস্বতী নামে ডাকা হয়েছে । বলা হয়েছে 'দেবনদী'। ক্রমশঃ পুষা, ইন্দ্র,অশ্বিন ও মরুৎগণের সঙ্গে দেবীরূপে তার উল্লেখ হতে থাকে। ঋগবেদে দ্বিতীয়মন্ডলে ৪১তম সূক্তে ষোড়শ ঋকে সরস্বতী মাতৃগণের, নদীগণের ও দেবগণের শ্রেষ্ঠা বলে বর্ণিত হয়েছেন। যতোদিন গেছে নানাভাবে সরস্বতী শব্দের গরিমা বিকশিত হয়েছে সারা ভারতবর্ষে।
    ---------------------------------------------------

    ৩. বৈদিক সভ্যতার ঢের আগে হরপ্পা সভ্যতারও ধাত্রী ছিলো সিন্ধু-সরস্বতী অববাহিকা। কিন্তু সেই সব সভ্যতার কোনও দস্তাবেজে সরস্বতীর কোনও প্রত্যক্ষ উল্লেখ দেখিনা। বৈদিক সভ্যতার প্রথম থেকেই সিন্ধু-সরস্বতীর আরাধনা অবিরাম করে আসা হয়েছে। ঋষিদের শ্লোক মাফিক দেখছি সিন্ধু-সরস্বতীর সলিলপুষ্ট ক্ষত্রিয়রা বলবান যোদ্ধা হয়ে ওঠে। আদি আর্যরা বাস করতো পশ্চিমদিকে পূর্ব আফঘানিস্তান থেকে পূর্বদিকে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের মাঝে নানা নদীর অববাহিকা অঞ্চলে। সিন্ধুনদ ছিলো তাদের প্রাণস্রোত। ঋগবেদের দশম মন্ডলে ৭৫ নং শ্লোকে সিন্ধুনদের গুণগান করে যোগ করা হয়েছে, হে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী, শতদ্রু (শতলজ), পরুস্নি (রাভি বা ইরাবতী),অসিক্নি (চনাব), বিতস্তা (ঝেলম) ও অর্জিকিয়া (বিয়াস বা বিপাশা) তোমরা সকলে সুসোমা (সিন্ধু) নদের সঙ্গে আমাদের প্রণতি গ্রহণ করো। আমাদের শাস্ত্রগ্রন্থে যে সপ্তসিন্ধুর উল্লেখ রয়েছে, সেখানে সিন্ধু ও তার পাঁচটি সন্তান শাখানদী এবং সপ্তম সিন্ধু হিসেবে সরস্বতীকে মান্যতা দেওয়া হয়ে্ছে। উপরন্তু সরস্বতী ছিলো 'নদীতমা', পবিত্রতম আরাধ্য নদী। যদিও সরস্বতীর উৎস সিন্ধু থেকে নয়। ঋগবেদের উল্লেখ অনুযায়ী পারস্যের আবেস্তায় যে হরখবতী নদী, অধুনা দক্ষিণ আফঘানিস্তানের হেলমন্দ, সেই ছিলো আদতে সরস্বতীর নামান্তর। একটি প্রচলিত মত সূত্র, ঘাগ্গর-হাকরা চ্যানেলই আদি সরস্বতী নদী, এখন তর্কসাপেক্ষ হয়ে গিয়েছে।
    ------------------------------------------------
    ৪. সরস্বতীকে দেবী হিসেবে স্বীকৃতি সেই সময় থেকেই দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিলো। গঙ্গানদীর গরিমা অনেক পরবর্তী কালের ব্যাপার। বিভিন্ন পুরুষ বৈদিক দেবতাদের রাজগৌরব ভাগ করে নিতে হয়েছিলো দু'জন নারীদেবতার সঙ্গে, ঊষস ও সরস্বতী। সরস্বতীর এই পর্যায়ের মহিমা প্রচার করেছিলেন সেই সব ঋষির দল, যাঁরা সরস্বতী নদীতীরে ধর্মানুষ্ঠান পালন করার সময় শ্লোক রচনা ও আবৃত্তি করতেন। ক্রমশঃ তাঁদের কল্পনায় এই বাচিক সৃজনশীলতার উৎস হয়ে উঠলেন সরস্বতীদেবী। তাঁরা এই দেবীর জন্য একটি নতুন বিশেষণ যোজনা করলেন, বাগদেবী। পরবর্তী পুরাণযুগে বাগদেবীকে বিষ্ণুর সহচরী হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস হলো । যদিও বহু আগে থেকেই দেবী সরস্বতী প্রজাপতি ব্রহ্মার কন্যা হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছিলেন। সনাতনধর্মের বিস্তৃত দেবীকুল, দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী ইত্যাদি অনেক পরবর্তীকালের আগন্তুক। সরস্বতীই একমাত্র বৈদিক দেবতা যিনি গত তিন হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষে পূজিতা হয়ে আসছেন।

    (ক্রমশঃ)

    নব কুন্দধবলদলসুশীতলা,
    অতি সুনির্মলা, সুখসমুজ্জ্বলা,
    শুভ সুবর্ণ-আসনে অচঞ্চলা ॥
    স্মিত-উদয়ারুণ-কিরণ-বিলাসিনী,
    পূর্ণসিতাংশুবিভাসবিকাশিনী,
    নন্দনলক্ষ্ণীসুমঙ্গলা ॥ ( রবীন্দ্রনাথ)

    ৫. ভারতবর্ষের আর্থসামাজিক পরিকাঠামো ও মানসিক গঠনে গত তিন হাজার বছরে কী পরিমাণ পরিবর্তন এসেছে তা সবার জানা । তৎসত্ত্বেও আদি বৈদিক দেবদেবীদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত শুধু সরস্বতীই কেন প্রাসঙ্গিক থেকে গেছেন তা নিশ্চয় মানুষের কৌতূহল উদ্রেক করবে । নদী থেকে দেবী হওয়া আর কোনও ঐশী প্রতিমার নসিব হয়নি। যদি আমরা সরস্বতীর রূপগত প্রতীকগুলি বিচার করি, তবে মহর্ষি অগস্ত্যের নামে প্রচলিত একটি স্তুতিশ্লোক দিয়ে শুরু করা যায় । উপরোক্ত কবিতাটি রচনার সময় কবি নিশ্চয় এই শ্লোকটি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।

    য়া কুন্দেন্দু-তুষার-হার-ধবলা
    য়া শুভ্র-বস্ত্রাভৃতা
    য়া বীণাবরদন্ড-মন্ডিত কর
    য়া শ্বেত-পদ্মাসনা ।
    য়া ব্রহ্ম-অচ্যুত-শংকর-প্রভৃতিভির্দেবহ সদা পূজিতা
    সা মাং পাতু সরস্বতী ভগবতী নিঃশেষ-জাড্যাপহা ।।

    ... হে কুন্দফুলের মতো শ্বেতবর্ণ, চন্দ্রের মতো শীতল,
    তুষারের মতো উজ্জ্বল এবং মুক্তামালার মতো ঝলসিত ।।
    যাঁর হস্ত বীণাশোভিত এবং বরমুদ্রায় স্থিত, যিনি শুভ্রকমলাসনা
    যিনি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শংকর ও দেবগণের পূজিতা
    সেই দেবী সরস্বতী, আমাদের রক্ষা করো, অজ্ঞান মুক্ত করো ।।

    লক্ষ্য করার বিষয় শ্বেতবর্ণের জয়জয়কার । বৈদিক ককেশয়েড আর্যগোষ্ঠীর অশ্বেতকায় স্থানীয় জনসম্প্রদায়ের সমীপে নিজেদের গাত্রবর্ণকে মহিমান্বিত করার সজ্ঞান প্রচেষ্টা বলা যেতে পারে । যা কিছু পবিত্র, বরণীয়, দোষশূন্য সবই শ্বেতবর্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত । ভারতীয় বর্ণসচেতনতার একটি নথিবদ্ধ উদাহরণ হয়তো । আর্যমতে সত্ত্বগুণের আধার হিসেবে শ্বেতবর্ণকেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে। সরস্বতীর অপর নাম মহাশ্বেতা। গুণগত তাৎপর্য : শুদ্ধ, সেরিব্রাল ও অতীন্দ্রিয় চেতনাসম্পন্ন। শ্বেতবর্ণকে আবার ব্রাহ্মণ্যত্বের সঙ্গেও যোগ করা হয়েছে । অপর একটি শ্লোকে সরস্বতীর স্তুতি এভাবে গীত হয়েছে,

    " হে মহাদেবী, মহাকালী, মহালক্ষ্মী, তোমায় প্রণাম করি,
    তুমিই ব্রহ্মা, তুমিই বিষ্ণু, তুমিই শিব এবং আদরণীয় ব্রাহ্মণ, তুমিই আমাদের বন্দনা গ্রহণ করো।"

    আপাতভাবে অনেক কম প্রভাবশালী প্রতীত হলেও দেখা যাচ্ছে আদি দেবী হিসেবে আর্যশাস্ত্রে সরস্বতীর গুরুত্ব ভালোভাবেই স্বীকৃত ছিলো।
    -----------------------------------------------

    ৬. প্রকৃতিবাদী বৈদিক আর্য প্যান্থিয়নের একজন হবার সুবাদে সরস্বতী একাই যথেষ্ট হিম্মত রাখতেন । কারণ সেই সময় পর্যন্ত আর্যসম্প্রদায়ের মধ্যে নারীর স্বাধিকার স্বীকৃত ছিলো। পিতৃতন্ত্র তখনও ততো আগ্রাসী হয়ে ওঠেনি। মূলগতভাবে সরস্বতী অন্য কোনও প্রভাবশালী দেবতার সহচরী হিসেবে কখনও গণ্য হননি। কারণ তাঁর শুভ্র পবিত্রতা কুমারিত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু পৌরাণিক যুগে তাঁকে এক আধ জায়গায় ব্রহ্মার সঙ্গিনী হিসেবে ভাবা হয়েছে । তার কারণ ব্রহ্মা কল্পিত হয়েছিলেন যাবতীয় বাক্য ও শব্দের বিধাতা হিসেবে । অতএব পিতৃতন্ত্রের প্রয়োজনে বাগদেবীকে ব্রহ্মার নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি হয়ে পড়েছিলো। আদিরূপে সরস্বতীকে ব্রহ্মা থেকে জাত কল্পনা করা হতো, তার একটা অর্থ করা হয়েছিলো সরস্বতী ব্রহ্মার কন্যা । পরবর্তীকালে ভাবা হলো সরস্বতী ব্রহ্মার প্রকৃতি, যেমন লক্ষ্মী হলেন বিষ্ণুর এবং শক্তিদেবী শিবের । সেক্ষেত্রে একটা ধারণা তৈরি হলো ব্রহ্মা নিজ কন্যাকে ভার্যা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এই গপ্পোটি পরবর্তীকালে লোকের ঔৎসুক্য জাগিয়েছিলো। তবে কি 'হিন্দু'ধর্মে অজাচারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে? এই ধারণাটির একটি প্রধান উৎস ছিলো পরবর্তীকালের ভিন্ন ধর্মীয় আগন্তুকদের 'হিন্দুশাস্ত্র' সমূহের দূষণীয় লক্ষণ নির্ণয় ও ব্যাখ্যা। সেভাবেই ঐশী 'অজাচারে'র অভিযোগটি বেশ প্রচার পেয়েছিলো। কিন্তু এই আখ্যানটি বৈদিকযুগের নয়, নেহাৎ অর্বাচীন, পরবর্তী পুরাণযুগে রচিত হয়েছিলো। পরে কিঞ্চিত বিশদ চর্চা হবে।
    -------------------------------------------------
    ৭. নদী থেকে দেবী হবার পথে সরস্বতী প্রধানতঃ দু'টি গুণের অধিকারিণী হন। প্রথমটি নদীর নির্মল শুদ্ধি ক্ষমতা এবং দ্বিতীয়টি শষ্যপ্রজননের নিয়ন্তা । এই সংসর্গের জন্য তিনি প্রাথমিকভাবে পূজিতা হতেন । পরবর্তীকালে বৈদিকসাহিত্যে ( ব্রাহ্মণ) তাঁকে বাগদেবী হিসেবেই অধিক মর্যাদা দেওয়া হয় । স্রোতস্বিনীর প্রাথমিক সংসর্গকে ছাপিয়ে তিনি হয়ে গেলেন বাক, কাব্য, সঙ্গীত, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের দেবী । আর্যদের নিজেদের মতো তাঁদের ধর্মীয় বোধও ছিলো যাযাবর । তাদের কোনও নির্দিষ্ট তীর্থস্থান বা দেবালয় ছিলোনা। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে যখন তাঁরা ভারতবর্ষের পূর্ব উল্লেখিত প্রান্তটিতে স্থিত হতে শুরু করলেন, তখন তাঁদের প্রথম কোনও নির্দিষ্ট ধর্মসম্পর্কিত উপাসনাস্থলের প্রয়োজন অনুভূত হয়েছিলো । সরস্বতী নদীর তীরভূমিকে তাঁরা গ্রহণ করলেন নতুন বিধানের অধ্যাত্মিক পূজাস্থল হিসেবে । এর অপর একটি জরুরি মাত্রাও ছিলো। যাযাবর আর্যরা স্থিত হবার অল্পদিনের মধ্যেই তাঁরা শ্রম ও ধীশক্তির মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে কৃষিচর্চার পথিকৃৎ হয়ে দাঁড়ান । সরস্বতী নদীর উর্বর অববাহিকা তাঁদের সুযোগ করে দেয় কৃষি উৎপাদনে আপন উৎকর্ষ প্রমাণ করার । সেই সময় এই স্থানবিশেষটিকে বিশ্বের নাভিকেন্দ্র বলে দাবি করা হতে থাকে। সরস্বতীনদীর আশীর্বাদে গড়ে ওঠা কৃষিসভ্যতার সুবাদে ভূমিসম্পদকে সেই প্রথম মানুষের শ্রেষ্ঠ ও পবিত্র সম্পদ হিসেবে স্বীকার করা হলো। দেবী সরস্বতী বন্দিতা হলেন পবিত্রভূমির অধিষ্ঠাত্রীরূপে। বৈদিকসাহিত্যে সরস্বতী কীর্তিত হতে থাকলেন প্রাচুর্য, প্রজয়িতা, সম্পদ ও নির্মলতার প্রতীক হিসেবে। ধীরে ধীরে অবশ্য তিনি এই সব ভৌত ক্ষমতার সীমাবদ্ধতাকে ছাপিয়ে হয়ে গেলেন শুদ্ধ জ্ঞান ও বোধির দেবতা।
    ---------------------------

    ৮. উত্তর বৈদিক যুগ থেকে নদী হিসেবে সরস্বতীর গৌরব হ্রাস পেতে থাকে কিন্তু দেবী হিসেবে তাঁর আর্য প্যান্থিয়নে একটা প্রভাবশালী স্থান তৈরি হয়ে যায়। সিন্ধু উপত্যকা থেকে আর্যরা যতো বেশি দেশের পূর্বদিকে যাত্রা শুরু করেন ততো-ই তাঁদের জীবনচর্যায় সরস্বতী নদীর স্থান গঙ্গা নদী নিয়ে নেয়। পরবর্তীকালে গুপ্তশাসনের সময় থেকে যখন পুরাণযুগের শুরু, ভারতবর্ষে দেবদেবীর রাজপাটেও বৃহৎ মন্থন আন্দোলন সূচিত হয়ে গেলো । পুরাণগুলি কল্পকাহিনী হলেও তার মধ্যে ইতিহাস, সমাজচিত্র, অর্থনীতি, রাজনীতি, অধ্যাত্মপ্রসঙ্গ ইত্যাদি বিশদভাবে এসেছে। এগুলি মানুষের পরিবর্তে দেবতাদের চরিত্র অবলম্বন করে রচনা করা হয়। কোনও বৈজ্ঞানিক প্রামাণ্যতা নেই, কিন্তু পুরাণ ইতিবৃত্তের সাহিত্যমূল্য ঢের রয়েছে। সেকালে মানুষের যেকোন সৃষ্টিই রাজ অনুগ্রহ ব্যতিরেকে টিকে থাকতে পারতো না । রাজারা সব থেকে নিরাপদ বোধ করতেন দেবদেবীদের সান্নিধ্যে। রাজশক্তির এই চাহিদাটি পূর্ণ করতে মানুষ অসংখ্য পুরাণ রচনা করতে শুরু করলো। এর মধ্যে মহানতম রামায়ণ ও মহাভারত । এদের আরো একটি অনন্যতা রয়েছে। উভয়ই শুধু পুরাণ নয়, এরা মহাকাব্য এবং মানুষের কথাশিল্প। দেবদেবী বা ঐশী চরিত্ররা অবশ্যই আসাযাওয়া করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মানবিক ইতিবৃত্ত হিসেবেই তাদের প্রতিষ্ঠা।
    ---------------------------------------------------
    ৯. এই যুগেই আরো অনেক দেবদেবীর সঙ্গে সরস্বতী চরিত্রও নতুনভাবে রূপায়িত হতে আরম্ভ করে। বেদের ব্রাহ্মণ অংশে বারবার সরস্বতীর উল্লেখ হয়েছে বাগদেবী হিসেবে। সেখানে সরস্বতীর সঙ্গে ব্রহ্মার কোনও যোগ দেখা যায়না । পুরাণযুগে এসে সরস্বতীর সঙ্গে ব্রহ্মার চরিত্র জড়িয়ে পড়লো নানাভাবে। একটি আখ্যান বলছে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা জগৎ সৃষ্টির সংকল্প করে নিজের দেহকে দুই ভাগে বিভক্ত করলেন। একটি ভাগ পুরুষ, অপরভাগ প্রকৃতি । প্রকৃতিভাগের নাম দেওয়া হলো সরস্বতী । এই সরস্বতী বেদোক্ত বাগদেবী কি না তা নিয়ে কোনও উল্লেখ নেই । কারণ পুরাণযুগেই বাগদেবী সরস্বতীর উৎস বিষয়ে অন্যতর তত্ত্বও তৈরি হয়েছে। এই ব্রহ্মা ও সরস্বতীর মিলনে জন্ম নিলেন মনু, যাঁর থেকে মানবজাতির উদ্ভব। একই ধরণের অপর একটি গল্প রয়েছে ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ ও দেবীভাগবত পুরাণে । এখানে ব্রহ্মার জায়গা নিয়েছেন স্বয়ং কৃষ্ণ। আগের গল্পের মতো-ই কৃষ্ণ নিজেকে বিভক্ত করলেন দুভাগে, পুরুষ ও প্রকৃতি । কিন্তু এখানে প্রকৃতি আবার বিভক্ত হয়ে গেলেন পাঁচটি শক্তি হিসেবে, যার মধ্যে একটি শক্তির নাম সরস্বতী। শক্তি হিসেবে এই সরস্বতী ছিলেন সত্ত্বগুণের আধার এবং বোধির দেবতা। তাঁর উপর দায়িত্ব ছিলো বাকি চার শক্তির মধ্যে অন্তর্দৃষ্টি ও জ্ঞানের সঞ্চার করা। অথচ এই পুরাণেই রয়েছে বীণাবাদিনী সরস্বতীর সৃষ্টি হয় কৃষ্ণ বা ব্রহ্মার জিহ্বা থেকে। এই রূপটিকে বেদোক্ত বাগদেবীর সব থেকে কাছের মনে হয় । কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অন্য এক পুরাণ বলছে সরস্বতীর জন্ম বিষ্ণুর জিহ্বা থেকে । কারণ বিষ্ণু সহচরী হিসেবে লক্ষ্মীর সঙ্গে সরস্বতীকেও পেতে চেয়েছিলেন। এই পুরাণ রচয়িতার মতে লক্ষ্মী 'ভুক্তি' ( পার্থিব তৃপ্তি) ও সরস্বতী 'মুক্তি'র (আত্মিক পূর্ণতা) প্রতীক। এই দুজনকে নিয়েই বিষ্ণুর জগত সংসারের পরিপূর্ণতা ।

    (ক্রমশঃ)

    ১০. সরস্বতীর রূপকল্প নিয়ে নানাবিধ বিভিন্নতা রয়েছে । তবে বামনপুরাণে যে রূপটি গ্রন্থিত হয়েছিলো পরবর্তীকালের আর্যধর্মে সেটিই প্রামাণ্য বলে স্বীকৃত । এই রূপ অনুযায়ী দেবী চতুর্ভুজা, জলের উপর ভাসন্ত শ্বেতকমলাসনা, রাজহংস (পরমহংস) বাহিনী। হস্তমুদ্রার ক্ষেত্রেও বিভিন্নতা রয়েছে । কোথাও দুহাতে বীণা, একহাতে পুস্তক অন্য হাতে বরাভয় । আবার অন্যরূপে একহাতে বীণা, একহাতে পুস্তক ও অন্য দুহাতে অক্ষ-কমন্ডল। এছাড়া অন্যতর রূপেও, উপবিষ্টা বা দন্ডায়মানা ও ভিন্ন হস্তমুদ্রার কল্পনাও দেখা যায় ।

    ১১. সরস্বতী কোনও গার্হস্থ্য দেবী ন'ন। এই জন্যই তাঁর স্থায়ী মন্দিরের অভাব এই বিপুল দেশে । ছাত্র-ছাত্রী বা অধ্যাত্মবিশ্বাসী বিদ্যাপ্রার্থী জনগণও উদ্দেশ্য সাধনের জন্য দেবী কালিকার শরণ নেবেন, কিন্তু সরস্বতীর নয় । কারণ ভাবমূর্তি হিসেবে সরস্বতী 'শক্তি'রূপা ন'ন। হিন্দুরা রণদুর্মদ, রক্তরঞ্জিত নারীশক্তিকে বিশ্বাস করে। অন্ততঃ লক্ষ্মীদেবীর মতো পারিবারিক সুখসমৃদ্ধির আশ্বাসে উদার কাউকে চাই। সরস্বতী, দেবী হিসেবে কিছু পাইয়ে দিতে পারেন না, এমত গূঢ় ধারণা আছে মানুষের । আসলে দেবী সরস্বতীর ভাবমূর্তি বড়ো বেশি সাত্ত্বিক। একটি পুরাণ অনুযায়ী ব্রহ্মা যখন তাঁকে কামনা করেন, তখন তিনি সৃষ্টিকর্তাকে প্রত্যাখ্যান করে নিষ্ক্রান্ত হয়ে যান । তিনি কোনও পুরুষ দেবতার সহচরী, গৃহিণী, ভার্যা ন'ন । তিনি কোনও দেবতার সন্তানের জন্ম দেননি । তিনি একমাত্র বেদগর্ভ, অর্থাৎ শুধু বেদকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন। এমত দেবতার কাছে নগদবিদায়ের সম্ভাবনা খুবই কম, তাই তাঁর দেবালয় গড়ে শক্তিসামর্থ্যের অপচয় বিশেষ কেউ করেননি।

    ১২. জনপ্রিয়তা বা স্বীকৃতির নিরিখে যদি বিচার করি তবে দেখা যায় ভারতবর্ষে সরস্বতীর স্থায়ী মন্দিরের বিশেষ অভাব। প্রাচীনতম মন্দির বলতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কিশনগঙ্গার তীরে সারদাপীঠ । এই মন্দিরটি ছিলো একযোগে একটি শক্তিপীঠ, জৈন, বৌদ্ধ ও শৈব উপাসনাস্থল। হিউ এন সাং সপ্তম শতকে এখানে দু বছর জ্ঞানচর্চা করে গেছেন । আদি শংকর থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের অগণিত জ্ঞানতাপসদের সঙ্গে এককালে সংশ্লিষ্ট ছিলো এই মন্দির। এখন তা ধ্বংসস্তূপ । কাঞ্চীর শংকরাচার্য কাশ্মীর উপত্যকায় রামবানে একটি নতুন সারদাপীঠ স্থাপন করেছেন। অপর প্রাচীন মন্দিরটি রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে আদিলাবাদের কাছে গোদাবরী ও মন্জিরা নদীর সঙ্গমে । এই মন্দিরটি ষষ্ঠ শতকে নির্মিত হয়েছিলো। মনে হয় এটিই ভারতবর্ষে বর্তমানে সব চেয়ে লোকাদৃত সরস্বতী মন্দির । হায়দরাবাদের কাছে মেডক জেলায় একটি নতুন সরস্বতী মন্দির নির্মিত হয়েছে কাঞ্চী শংকরাচার্যের উদ্যোগে । তামিলনাড়ুর কুম্ভকোণমের কাছে কুথানুরে একটি নাতিপ্রাচীন কিন্তু বেশ বড়ো লোকপ্রিয় সরস্বতী মন্দির রয়েছে।
    --------------------------------------------
    ১৩. সনাতনধর্ম ব্যতিরেকে বৌদ্ধ মহাযানী সাধনায় সরস্বতী একটি বিশেষ স্থান অধিকার করেন। তৎকালে মহাযানী পন্থায় বজ্রযানের উদ্ভব পুরাণযুগের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে হয়েছিলো। সমগ্র আর্যাবর্তে দেবী সরস্বতীর জনপ্রিয়তা দেখে বজ্রযানী সাধকরা দেবী সরস্বতীকে নিজেদের তান্ত্রিক বৃত্তে আত্মস্থ করে নেন। সেই সময় দেবী সরস্বতী জ্ঞান ও শুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে হিন্দু ও বৌদ্ধ, উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই বিশেষরূপে সমাদৃত ছিলেন। বৌদ্ধ সরস্বতীর দুটি রূপ রয়েছে, এক মুখ-দুই বাহু বা ত্রিমুখ-ছয় বাহু। বৌদ্ধরা বিশ্বাস করতেন দেবতা মঞ্জুশ্রী ও প্রজ্ঞাপারমিতার মতো দেবী সরস্বতীও সাধককে জ্ঞান, বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি প্রদান করে থাকেন। বৌদ্ধ সাধনমালায় তাঁকে উৎসর্গ করে বহু ধরনের সাধনা লিপিবদ্ধ আছে।

    বজ্রযানে দেবী সরস্বতীর পাঁচটি রূপ দেখা যায়। মহাসরস্বতী, বজ্রবীণা সরস্বতী, বজ্রসারদা, আর্যসরস্বতী এবং বজ্রসরস্বতী । এঁদের সবার রূপ, ধ্যান ও সাধনা পৃথক ।
    -----------------------------------------

    ১৪. সেরিব্রালিটির দেবী হিসেবে সরস্বতী বাঙালি মানসে পৌত্তলিকতা ও পৌত্তলিক বিরোধিতার মাঝখানে কোনও নো ম্যান'স ল্যান্ডে অবস্থান করেন । বিদ্যাস্থানে বসন্তপঞ্চমীতে সরস্বতীর লৌকিক পূজাকে কেন্দ্র করে নানা ধরণের মধ্যবিত্ত বিরোধাভাস নিয়মিত চোখে পড়ে। হেরম্ব-রবীন্দ্র বনাম সুভাষ ও অন্যদের মতান্তর ইতিহাস খ্যাত । সে ট্র্যাডিশন আজও চলেছে। ভাবমূর্তির দিক দিয়ে নিতান্ত নির্বিবাদ এই দেবীকল্পনা সম্ভবতঃ সব চেয়ে বেশি অন্তর্বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে সাম্প্রতিককালে। মকবুল ফিদা হুসেনের মতো জাতীয় সম্পদকে শেষ জীবনে নির্বাসন নিতে হলো নিজের মতো করে সরস্বতীকে চিনতে গিয়ে। আবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সরস্বতীর প্রতি আর্ষ চুম্বনেচ্ছা নানা মহলে তুমুল বিপাক সৃষ্টি করে। ইতিহাস, সমাজতত্ত্ব বা নান্দনিকতার নিরিখে আমরা নানা সরস্বতীকে পেয়েছি । প্রত্যেকেই হয়তো বহিরঙ্গে কিছু পরিমাণে ভিন্ন, কিন্তু অন্তর্মহলে সরস্বতী নামক প্রতীকটির স্থান জ্ঞান, বিবেক ও শুভবুদ্ধির সিংহাসনে। বোধবিবেচনার এই নকটার্নে দাঁড়িয়ে বিগ্রহবোধহীন এই ইতর আমি স্মরণ করি এক প্রিয় কবির ভালোবাসায় ঋদ্ধ বসন্তপঞ্চমীর সেই আকাড়া কিশোরীকে। তার হাত ধরে সঙ্গে থাকে আর এক প্রিয় কবির মননশব্দে আঁকা মহাশ্বেতার রূপকল্প ,

    '' মহাসমুদ্র থেকে গভীর রাত্রে উঠে এলেন দেবী সরস্বতী,
    ....... উত্তরের ঠান্ডা বাতাস এবং বালির স্রোতের মধ্যে ডুবে থাকে
    হাজার হাজার নিরক্ষর গ্রাম,
    সমস্ত জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে ছেঁড়া কাঁথার ফুটো দিয়ে হু-হু ক'রে
    বাতাস ঢুকে যায়-হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়-
    এই অচেতন রাত্রেই গঞ্জে ও শহরে বীণাবাদিনীর আরাধনার আয়োজন চলে,
    ...... হাতের পুঁথি নিক্ষিপ্ত হোলো সমুদ্রগর্ভে, দেবী
    ডানহাত বাড়িয়ে দিলেন ঊর্দ্ধ আকাশে-কেড়ে নিলেন
    কালপুরুষের খড়্গ ,
    মহাসমুদ্রের সমস্ত নৈশ বর্ণমালা শুষে তাঁর শরীরে উঠে এলো
    অমাবস্যার ঘোর অন্ধকার-
    উত্তরে এবং দক্ষিণে উলঙ্গ ঘৃণাভরে ছুঁড়ে দিলেন সমস্ত আবরণ-
    দু'টি বিশাল জলস্তম্ভের মতো ঊরু বিস্তৃত করে তিনি দাঁড়ালেন
    নক্ষত্রের আগুন-ছড়ানো বাঘছাল-পরা রাত্রির বুকের উপর
    গলার হার ছুঁড়ে দিলেন হিমালয়ের চূড়ায়-চিক চিক করে উঠলো ভোর-.......

    ( শ্রীপঞ্চমীঃ গান্ধীনগরে একরাত্রিঃ মণিভূষণ ভট্টাচার্য)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৭৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sosen | 111.63.232.49 (*) | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৬:৩৬73946
  • সাধু!
  • শিবাংশু | 127.197.247.74 (*) | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৬:৩৭73947
  • এক বন্ধু দূরভাষে ব্রহ্মা ও সরস্বতী প্রকরণের কিছু বিশদ বিবরণ জানতে চেয়েছেন। লেখাটি শেষ হলে প্রয়াস নেবো আরো কিছু জানতে।
  • Ranjan Roy | 132.175.172.205 (*) | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৬:৫৭73948
  • শিবাংশুর সরস্বতীকে আভূমি প্রণাম করলাম।
  • একক | 24.99.116.245 (*) | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৮:২৭73949
  • খুব ভালো লাগলো পড়তে । আরও আরও দরকার এরকম লেখা ।
  • b | 135.20.82.164 (*) | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:০১73950
  • মাইহারে শারদা মন্দির আছে, আলাউদ্দিন খানের পরম প্রিয়। ইনি-ও কি সরস্বতী?
  • dd | 132.167.37.38 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০২:৫৫73953
  • নাঃ। তাও দু চাট্টে আবোল তাবোল বকে যাই। ক্যামন?

    ঋগ্বেদে একেবারে প্রথম মন্ডল থেকেই সরস্বতী জাঁকিয়ে আছেন। সে সময়ে তিনি যজ্ঞের দেবী আর ইড়া(বা ইলা) আর ভারতী নামে আর দুই দেবীর সাথে বেশ অনেকবার একই সাথে মেনশন্ড হয়েছেন। যেমতি মিত্র, বরুণ আর অর্যমা একই সাথে উচ্চারিত হতো। এক পলিমার দেবতা। পরে অর্যমা বাদ পরে কিন্তু মিত্র বরুণ প্রায় শিয়ামিস টুইনের মতন একই সাথে থাকে।

    তবে ঋগবেদেই সরস্বতী ক্রমশঃ আলাদা এনটিটি হয়ে ওঠেন। ব্রহ্মার সাথে তার ইন্টু মিন্টু বেশ বড়ো করে লেখা। পরিষ্কার এবং অস্বস্তিকর। পন্ডিতেরা অব্শ্য "ওটা সিম্বল ওটা সিম্বল" করে চেঁচান।

    তার পরে আলোর দেবতা হন। উষা আর সরস্বতী - আইদার অর হয়ে।

    অশ্বিনীদ্বয়ের সাথে সরস্বতী(যজুর্বেদে) অনেক সৃষ্টি করেন। যেমতি ইন্দ্রকেও এঁরা তিনজনে গড়ে তোলেন।

    তারপর বাগ্দেবী হয়ে যান। কিন্তু সেটা বোধয় পুরাণে।
  • dd | 132.167.37.38 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০২:৫৮73954
  • আর একবার পুরাণ ধরলে সব কিছুই গুলে যায়। কারন এতো পুরাণ যে কোথায় কি লেখা আছে সব ঠাহর হয় না।

    ইন্দ্রের বউ হিসেবেও সরস্বতী আছে। বিষ্ণুর বউ হিসেবেও।

    খ্যাল করুন, আমি কোনো রেফারেন্স দি' নি। দিতে পারি, কিন্তু ক্যানো দেবো? (কবি কয়েছেন)।
  • শিবাংশু | 127.201.149.200 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৮:১৪73952
  • সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ।

    b,

    মাইহারের 'শারদা'দেবী শক্তিদেবী । পুরাণকথা অনুযায়ী সতীর কণ্ঠহার পড়েছিলো মাইহার পাহাড়ে । তার থেকেই এই স্থাননাম এসেছে, মাই কা হার । দেবী তন্ত্রমতের মাতৃবিগ্রহ । আসলে সরস্বতীর নাম 'সারদা', 'শারদা' নয় । শারদা শরৎকালে পূজিতা শক্তিকাল্টের দেবী ।

    rivu,
    দুর্গার পরিবারে সরস্বতীর আত্তীকরণ একান্তভাবে বাংলার ফেনোমেনন । এ নিয়ে কোথাও আগে লিখেছিও বোধ হয় । সময় পেলে আবার লেখা যাবে। :-)
  • rivu | 78.232.116.14 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:০০73951
  • লেখাটা পড়তে গিয়ে একটা প্রশ্ন মনে এলো। এইযে দুর্গার সাথে সরস্বতী একসাথে পূজিত হন, এই ধারণাটা কোত্থেকে ইভলভ করলো? একটু অন্য লাইনে, দুর্গাপুজোর ইতিহাস নিয়ে এরকম লেখাপত্রের রেফারেন্স কেউ দিতে পারবেন?
  • dd | 132.167.39.17 (*) | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৫:৩২73955
  • অ। বোঝলাম। সরস্বতী টরোস্বতী নিয়ে আপনেদের কোনো মাথাব্যাথা নেই। খুবই তামসিক চরিত্র।

    তা হোক। এ টুকু জানাবই।

    বেদে কিন্তু সরস্বতী আদৌ বাগদেবী ছিলেন না। অথর্ববেদে একটি শ্লোকে বলা আছে বাগ্দেবী হচ্ছেন পরমেষ্ঠিনি, মানে (টেনেটুনে) ব্রহ্মার বউ। সে হিসেবে দুয়ে দুয়ে ছয় করে বাগ্দেবী=সরস্বতী এরকম একটা ইকুয়েশন করা যায়, কিন্তু সেটা জজে মানবে না।

    তবে ঐতেরয় আর আরেকটা কোন ব্রাহ্মণে "বাকই সরস্বতী" এরকমটা লেখা আছে। ব্যাস। বাকীটা পুরাণের দান।

    এদিক ওদিক ব্রহ্মা ইঃ'র বউ ছিলেন, দ্যাট অ্যাপার্ট, ঋগ্বেদে আছে অশ্বীদুজনের বউ ছিলেন সরস্বতী এবং সেই ক্রমে তাঁর গর্ভে ইন্দ্রর জন্ম হয়। ফর্সা ছিলেন। সেটা ঠিক। বেদেই আছে। তবে কুমারী ছিলেন না।
  • শিবাংশু | 127.201.164.41 (*) | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৮:২০73956
  • ওয়েলকাম dd, :-)
  • Ranjan Roy | 24.97.74.169 (*) | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫৭73957
  • চমৎকার যুগলবন্দী!
  • শিবাংশু | 127.201.146.138 (*) | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১০:৪৬73958
  • কিছু সংযোজন
    -----------------------------------------------
    লেখাটি নিয়ে নানা প্রাসঙ্গিক আলোচনা হয়েছে, যা সরস্বতীর বিভিন্ন মাত্রাকে ধরার আকর্ষণীয় প্রয়াস।

    খুঁজতে গিয়ে দেখলুম, বেদের সরস্বতী, পুরাণের সরস্বতী এবং বেদপুরাণের ওভারল্যাপিং যুগে যে সরস্বতী তারা কেউ 'এক' দেবী নয়।

    যেমন আমার একটি মন্তব্য থেকে অন্যত্র প্রশ্ন উঠেছে, শুধু সরস্বতী কেন, গঙ্গা-যমুনা-নর্মদাকেও তো দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ প্রসঙ্গে বলি আমার মন্তব্যটি প্রযোজ্য বৈদিক সরস্বতীর ধারণা কেন্দ্র করে । এই লেখাটিতেও আছে, আদি বৈদিক দেবতারা, যেমন পূষণ, বরুণ, অশ্বিনী, রুদ্র ইত্যাদিদের সঙ্গে ঊষস ও সরস্বতীও নিজেদের স্থান করে নেন । লক্ষ্যনীয় এই সমস্ত বৈদিক দেবতাই বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রতীক, কারণ বৈদিক সভ্যতাই প্রকৃতিবাদী । অথচ সেখানে সিন্ধুনদ অনেক অধিক প্রতাপশালী প্রতীক হওয়া সত্ত্বেও কেন সরস্বতীর স্থান হয়েছিলো সেটা দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমার মনে হয়েছে সরস্বতীর সঙ্গে আর্যদের নিগূঢ় বৌদ্ধিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাওয়াই এর কারণ। যে সময় এই ধারণাটি দানা বাঁধছিলো, তখন আর্যদের মধ্যে পরিবারপ্রথা পরিণতি লাভ করলেও পরিবারতন্ত্র ( পড়তে হবে, পুরুষতন্ত্র ) শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি। একজন 'নারী' দেবতা যে একাকী সম্পূর্ণ হতে পারেনা, পরবর্তীকালের তন্ত্র ও পুরাণের এই ধারণা তখনও বদ্ধমূল হতে পারেনি। তাই ঋগবেদের প্রাচীন অংশগুলিতে সরস্বতী একা এক নারী দেবতা । অবশ্য পরের দিকে ঋগবেদের বিভিন্ন সংযোজনে ব্রহ্মার সঙ্গে সরস্বতীকে বিভিন্ন সূত্রে বাঁধার প্রয়াস চোখে পড়ে। সেগুলি আদিপুরাণ যুগের সমসাময়িক ছিলো।
    ---------------------------------

    ২. পুরাণযুগ থেকে ভারতবর্ষে সব নদীকেই দেবী হিসেবে ভাবা শুরু হয়, তাদের প্রজয়িতা শক্তির প্রতীক হিসেবে। শুধু উত্তরের গঙ্গা, যমুনা নয়, মধ্যের নর্মদা বা দক্ষিণের কৃষ্ণা, গোদাবরী, কাবেরীও তার মধ্যে পড়ে। আদি বৈদিকযুগে হস্তিনাপুরের পূর্বদিকে স্থিত ভূভাগ সম্বন্ধে আর্যরা বিশেষ শ্রদ্ধাশীল ছিলোনা । গঙ্গানদীর প্রতি 'ভক্তি' পরবর্তীকালের ব্যাপার । আর্যরা যতো পূর্বদিকে এগিয়েছে, গঙ্গা বা যমুনা সম্বন্ধে তাদের অনুরক্তি বেড়েছে এবং ভগীরথ নামক প্রতীকটি বস্তুত আর্যদের স্কাউট সার্ভেয়র । গঙ্গাসাগরেও হিরো হচ্ছেন কপিলমুনি, 'গঙ্গাদেবী' ন'ন, কারণ প্রতীক হিসেবে কপিলমুনি আর্যদের সেরিব্রাল আইকন। সরস্বতী, বৈদিক আর্যদের বৌদ্ধিক আধিপত্যের প্রতীক, তাই আদিকাল থেকেই এই দেবী মুখ্য দেবী হিসেবে স্বীকৃত, গঙ্গা-যমুনার মতো গৌণ, প্রায় লৌকিক দেবীর পর্যায়ে গণ্য হতেন না। একটি প্রাকৃতিক জলধারার সম্মানস্বীকৃতির এই উত্তরণ সরস্বতীর মতো অন্য কোনও দেবীর নসিব হয়নি।
    ---------------------------------------------

    ৩. পুরাণযুগে বিভিন্ন বৈদিক দেবতার বিবর্তন হয়েছিলো সমসাময়িক কালের অগ্রাধিকারকে মনে রেখে। বেদোক্ত ব্রহ্মা আর পুরাণোক্ত ব্রহ্মার মধ্যে নানা পার্থক্য রয়েছে । বিষ্ণু বা শিব তো মূল বৈদিক দেবতাই ন'ন । পুরাণযুগ ও তৎপরবর্তী তন্ত্রযুগে ইতর মানুষের প্রতি প্রযোজ্য পরিবারতন্ত্র, দেবতাদের প্রতিও সমানভাবে প্রযোজ্য হয়ে পড়েছিলো। এই ব্যব্স্থায় কোনও একাকী নারীর সেরিব্রাল অস্তিত্ত্ব স্বীকার করা হতোনা । যে দেবীকে সমস্ত সৃষ্টির জননী হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে, সেই শক্তিরূপিনী জগদম্বারও একটি পুরুষ সঙ্গী শিব প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো। এই তত্ত্বটিকে ব্রাহ্মণ্যব্যবস্থা একটি লোকশিক্ষের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলো। গৃহস্থ দেবতার মডেলে মানুষের গার্হস্থ্য জীবনের রূপরেখা তৈরির স্মৃতিশাস্ত্র। আদি বৈদিক সরস্বতীর ধারণার সঙ্গে এই ব্যবস্থাটি খাপ খায়নি, কারণ ততোদিনে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক বস্তুস্থিতিও একেবারে পাল্টে গিয়েছিলো। পৌরাণিক সরস্বতী বনাম ব্রহ্মা, বিষ্ণু বা শিবের সম্পর্কভিত্তিক নানা কল্প আখ্যান ছিলো সমাজজীবনের বিভিন্ন বাস্তবিক অনিবার্যতা ও টানাপড়েন কেন্দ্রিত। এর মধ্যে কোনও রকম স্যাক্রোস্যাংক্ট সূত্র খুঁজতে যাওয়া মনে হয় পন্ডশ্রম, কল্পকাহিনীর মুন্সিয়ানাকে প্রশংসা করাই আমাদের ভূমিকা হতে পারে। সাত-আটশো বছরের পুরাণকালে বারম্বার বিভিন্ন আখ্যানসূত্র বদলে গেছে । বদলে গেছে প্রায় সমগ্র প্যান্থিয়নের স্বরূপ ও চারিত্র্য। দেবতারা পূর্বে কে কী ছিলেন এবং পরে তাঁহারা কে কী হইলেন, তার মধ্যে এতো রকম স্ট্রাকচারাল অসঙ্গতি আছে যে তা নিয়ে দিগভ্রান্ত না হওয়াই ভালো।
    ---------------------------------------

    এসব নিয়ে অনন্ত আলোচনা চলতে পারে। মন্ডল-ব্রাহ্মণ ধরে ধরে বা পুরাণ-তন্ত্র ঊদ্ধৃত করে । কিন্তু তার আধার হিসেবে এই মঞ্চটি অপ্রতুল এবং হয়তো বিদ্বৎমন্যতা দোষে পীড়িত হয়ে পড়বে। যাঁরা লেখাটি পড়েছেন তাঁদের সবাইকে আবার ধন্যবাদ জানিয়ে আপাততঃ সম্বৃত হই।
  • ম্যাক্সিমিন | 127.194.227.207 (*) | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৭:১৭73959
  • এই লেখাটা কতবার যে পড়লাম। আজ আবারও। শিবাংশুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম।
  • শিবাংশু | 69.92.67.221 (*) | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১১:৪৫73960
  • অনেক ধন্যবাদ, ম্যাক্সিমিন.... :-)
  • Des | 228.248.49.2 (*) | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৭:২৫73961
  • উত্তরাখন্ডের কালিমঠে একটি মন্দিরকে সরস্ব্তীর মন্দির বলে চিহ্নিত করা হয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন