এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • টুকরো- টাকরা

    Ramkrishna Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ নভেম্বর ২০১৪ | ২০৮৭ বার পঠিত
  • উহ্যনাম পণ্ডিত

    ====================

    আজকাল, ভোরের দিকে শরীরটা শিন শিন করে অল্প ঠাণ্ডায় । কুয়াশা না পড়লেও, বেশ একটা মায়াবী পরিবেশ ।

    গলির ঢোকার মুখটাতে, কালভার্ট নতুন করে তৈরি হয়েছে- হরির দোকান ঘেঁসে । একটা ক্রংকিটের স্ল্যাব জোগাড় করে, তার নীচে ইট দিয়ে, দোকানের সামনে বসার জায়গা তৈরি করেছে হরি ।

    ষ্টোভে সাঁ সাঁ করে জল ফুটছে । এখনও সে রকম চাতাল রা আসে নি ।

    নাগের বাজারের দিক থেকে রিক্সা করে এসে, একজন নামলেন, দোকানের সামনে ।

    সায়েবী পোষাক পরণে, তবে পুরোনো ধাঁচের । কলারটা উঁচু আর সেই কলারে বাঁধা আছে মোটা টাই । চোখে সেই আদ্যিকালের গোল গোল চশমা । বেশ রাজপুত্তুর টাইপ চেহারা ।

    বসার জায়গা দেবেন প্লিজ ! অনুরোধ করলেন - রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে । স্বরটা মনে হলো ব্যারিটোন ভয়েস ।

    সরে গিয়ে বসার জায়গা করে দিলাম । ভদ্রলোকের চেহারাটা বড়ই পরিচিত তবে ঠিক কোথায় দেখেছি- মনে করতে পারছি না !
    ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করলাম- স্যার ! ( সম্ভাষণটা আপনা আপনি চলে এলো মুখে) আপনাকে তো এই পাড়ায় দেখিনি ! নতুন এলেন বুঝি ?

    নাহে ! আমি ঘুরে ঘুরেই বেড়াই আজকাল । থাকি একটা অজানা জায়গায়, তবে মাঝে মাঝে আসি কোলকাতায় ।

    বুঝলাম না স্যার !

    “সাগর যেথা লুটিয়ে পড়ে নতুন মেঘের দেশে
    আকাশ-ধোয়া নীল যেখানে সাগর জলে মেশে।
    মেঘের শিশু ঘুমায় সেথা আকাশ-দোলায় শুয়ে-
    ভোরের রবি জাগায় তারে সোনার কাঠি ছুঁয়ে।”

    এই হলো আমার দেশ ।

    কবিতাটা বেশ চেনা চেনা লাগছে, তা স্যার, আপনার নামটা ?

    উহ্যনাম পণ্ডিত !

    নামটা উহ্য আবার পণ্ডিত ? আমার মুখটা হাঁ হয়েই রইল ।

    হেসে আবার পদ্য আউড়ালেন :-

    “এক যে রাজা”–”থাম্ না দাদা,
    রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা৷”
    “তার যে মাতুল”–”মাতুল কি সে?—
    সবাই জানে সে তার পিশে”
    “তার ছিল এক ছাগল ছানা”—
    “ছাগলের কি গজায় ডানা?”
    “একদিন তার ছাতের ‘পরে”—
    “ছাত কোথা হে টিনের ঘরে?”
    “বাগানের এক উড়ে মালী”—
    “মালী নয়তো! মেহের আলী৷”
    “মনের সাধে গাইছে বেহাগ”—
    “বেহাগ তো নয়! বসন্ত রাগ৷”

    আমাকে ছাগল বললেন ? রাগই হলো আমার ।

    উদাত্ত হেসে বললেন :- তোমাকে ছাগল বলবো কেন হে ? যে যা, সেটা কখনও বলতে নেই – শাস্তরে মানা আছে ।

    মুখটা গোমড়া হলো আমার ।

    একি ! ওমনি গোমড়া থেরিয়াম হয়ে গেল ? হরি ! চা দাও এই বাবুকে । হরির চা খাও, তবেই মাথা খুলবে, বোয়েচ ?

    গোমড়া থেড়িয়াম ? এটা আমার খুব চেনা ! সুকুমার রায়ের লেখা !

    হ্যাঁ হ্যাঁ ! ওই ঢ্যাঙ্গা মাণিকের বাবা সুকুমার রায় ।

    ঢ্যাঙ্গা মাণিক ?

    আরে, তোমাদের সত্যজিৎ রায় ! ওই যে কমলবাবু ছিলেন না, সাউথ পয়েন্টের শিক্ষক, তিনি ওই নামেই ডাকতেন মাণিককে ।

    কমল বাবু মানে, কমলকুমার মজুদার ?

    হ্যাঁ রে বাবা ! সাউথ পয়েন্টে ছোট ক্লাসে ক্রাফ্ট পড়াতেন ।

    আপনি এত জানলেন কি করে ?

    জানার কথা নয়, তবে জেনেছি । মাণিকের তিন বছরের বয়সেই তো আমি গড়পার পার !

    হ্যাঁ, সুকুমার রায় সত্যজিৎ বাবুর তিন বছর বয়সেই মারা গেছিলেন, সেটা শুনেছি ! আপনি সুকুমার রায়ের বন্ধু ছিলেন বুঝি ?

    বন্ধু কি হে ? একেবারে হরিহর আত্মা । সুকুমারই তো উহ্য হয়ে গেছিল ।

    কেন স্যার ?

    হুঁকোমুখো হ্যাংলা
    বাড়ী তার বাংলা, মুখে তার হাসি নাই, দেখেছ ?
    নাই তার মানে কি ?
    কেউ তাহা জানে কি ? কেউ কভু তার কাছে থেকেছ ?

    ওঃ ! কিছুই বুঝতে পারছি না ।

    আজ তারিখ কত ?

    ত্রিশে অক্টোবর !

    হুম্ ! মনে রেখ এই দিনটাতেই আমি জন্মেছিলাম ।

    একটা রিক্সা ডেকে পদ্য আউড়াতে আউরাতে চলে গেলেন :-

    এইত সে দুপ'রে
    ব'সে ওই উপরে, খাচ্ছিল কাঁচকলা চট্‌‌কে-
    ওর মাঝে হল কি ?
    মামা তার মোলো কি ? অথবা কি ঠ্যাং গেল মট্‌‌কে ?
    হুঁকোমুখো হেঁকে কয়,
    আরে দূর, তা তো নয়, দেখ্‌ছ না কি রকম চিন্তা ?
    মাছি মারা ফন্দি এ,
    যত ভাবি মন দিয়ে, ভেবে ভেবে কেটে যায় দিনটা।

    ==========================
    ভেবেই পেলাম না- ভদ্রলোক কে?
    ( এই ঘটনা কাল্পনিক । বাস্তবের জীবিত বা মৃত কোনো চরিত্র, ঘটনা , পরম্পরারম বর্তমান পরিস্থিতির সাথে কোনো মিল নেই । এই রকম ঘটনা যদি আগে কোথাও ঘটে থাকে, তবে সেটা সম্পূর্ণ কাকতালীয় )
    ===========

    বেশী দিন আগের কথা নয় । বছর তেরো হবে ! আমি সদ্য অবসর নিয়েছি চাকরী থেকে । তখনও সেভাবে সোসাল নেটওয়ার্কিং চালু হয় নি, তাই হরির দোকানেই আড্ডাটা হয় ।

    পাল বাবুর হঠাৎ সখ জাগলো- আমার ফ্ল্যাটের ঠিক উল্টো দিকেই ,পাড়ার মধ্যেই যাত্রা পালা করা হবে ।

    যাত্রা করার জন্য প্রচুর পয়সা নেবে, চিৎপুর পার্টিরা – কর বাবুর সময়োচিত ভাবনা, কথার মাধ্যমে বেরিয়ে এলো ।

    কেন ? আমরাই পালা করবো, বাইরের পার্টি আনবো কেন ? পাল বাবুর জবাব ।

    এবারে সবাই একটু নড়ে চড়ে উঠে, স্মৃতি মেদুর হয়ে অনেকেই নিজের নিজের যাত্রা দেখার কথা বলতে লাগলেন ।

    ঘন্টা খানেক পর অনেক বাত বিতণ্ডার পর ঠিক হলো, আমাদের চাতালের শেষে যে ক্লাব ঘর আছে, সেখানেই রিহার্সাল হবে ।

    চাতালটা আইনত মিউনিসিপ্যালিটির রাস্তা হলেও কানা গলি । গাড়ী – ঘোড়ার ঝামেলা নেই ।

    জায়গাও লম্বা হওয়ার ফলে, দর্শকদের অসুবিধে হবে না । ক্লাবঘরের সামনেই যাত্রাটা হবে ।

    ঠিক ষ্টেজ না হলেও একটু উঁচু না করলে, সবাই আবার দেখতে পাবে না, তাই ঠিক হলো- ডেকোরেটারকে বলতে হবে, পাটাতন লাগাতে , অল্প উঁচু করে ।

    এবারে যাত্রা পালার বিষয় বস্তু নির্বাচন । বাকবিতণ্ডার পর ঠিক হলো- রামায়ণের একটা অংশ নিয়ে পালা হবে ।

    হনুমান – রাবণের যুদ্দু টুদ্দু থাকবে, বেশ মারকাটারি জমজমাটি ব্যপার সাপার ।

    মুখার্জ্জী বাবু অনেক উৎসাহ নিয়ে- কলেজ ষ্ট্রীটে গিয়ে দু তিনটি রামায়ণের ওপর লেখা যাত্রা পালার বই কিনে নিয়ে এলেন ।

    ওই বইগুলো থেকেই অনেক সংশোধন আর পরিমার্জনের পর লেখা হল পালা – হনুমানের লঙ্কা বিজয় ।

    ব্যানার্জ্জী বাবুর অনেক চেনা জানা চিৎপুরে । গদা , পোশাক সব নিয়ে তিনি গাড়ী করে হাজির পাড়াতে, যাত্রা পালা হওয়ার আগের দিন । ক্লাব ঘরেই রাখা হলো সব ।

    মহেন্দ্রক্ষণে মেক আপ ম্যান আসবে বিকেল চারটের সময় । রোববারের বাজারে, উত্তেজনায় সবাই থরথর করে কাঁপছে ।

    হঠাৎ দেখা গেল- হনুমানের গদাটাই নেই । কেউ নিয়ে গেল নাকি ? না যাতে পালা না হয়, তার জন্য কারও কীর্তি ?

    যা!!!!!!!! এবারে কি হবে ? রোববার , তাই দোকান পাট সব বন্ধ ।

    অভিজ্ঞ মেক আপ ম্যান বলল – আরে দাদা ঘাবড়াচ্ছেন কেন ? ক্রিকেটের উইকেট তো আছে দেখছি । তার ওপরে একটা বড় ডাবের খোলা লাগিয়ে দিচ্ছি । তার ওপরে রাংতা । দেখতে একদম গদা লাগবে ।

    যথা সময়ে অভিনয় আরম্ভ হলো । চরম ক্ষণে হনুমান বীর দর্পে রাবণের দিকে তেড়ে গেল- গদা ঘুরিয়ে ।

    অত স্পিডে গদা ঘোরানোর ইমপ্যাক্ট, গদার মুণ্ডু মানে ডাবটা নিতে পারল না ।
    ছিটকে দর্শকদের মাঝে ।
    যার মাথায় পড়লো- সে তো চিৎপটাং ।

    কোঁকাতে কোঁকাতে বলল – আমিই গদাটা লুকিয়ে রেখেছিলাম । হনুমান আমায় শাস্তি দিলেন ।

    সমস্বরে আওয়াজ :- জয় বজরং বলীর জয় ।

    ==========
    গদার আঘাত এখনও চলছে ।

    চিন্তা ভাবনা
    +++++++
    আমার ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় বেশ কিছু বিবাহযোগ্য বা যোগ্যা , ছেলে- মেয়ে ( আমি সাধারণত, মহিলাদের কথাই আগে উল্লেখ করি, তবে এই ক্ষেত্রে সেটা কেমন যেন বেমানান হবে ) আছে, যারা বিয়ে করবো করবো করেও করতে পারছে না ।
    না না, কোনো যৌতুকের কৌতুক নেই তবে ব্যাপারটা অন্য ।
    একটি মেয়েকে জানি- যে উচ্চশিক্ষিতা, সুন্দরী , বিদেশেও গেছে, তার আর ছেলে পছন্দ হয় না । এদিকে, প্রেম করাটাও মানতে পারে না !
    মা – বাবা হন্যে হয়ে বিভিন্ন ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন । সংবাদপত্রেও চলছে সেগুলো । প্রচুর ফোন, মেইল, চিঠি । একেবারে এলাহি ব্যাপার ।
    ছেলেদের কারও হাইট ছোট, কারও বা তোতলামি আছে, কেউ বা শ্যামবাজারী “ শ”য়ে অভ্যস্থ ।
    আবার কেউ এটিকেট জানে না । বিকট শব্দ করে হেঁচেছে, নিভৃতে কথা বলার সময় , নানান বায়নাক্কা ।
    শেষমেষ, একটি ছেলে ( ও আগেই শুনেছিল এসব ) বলল – শোনো হে সুন্দরী, বিয়ে আমি তোমাকেই করবো, বুইলে । তুমি আমার পছন্দ ।
    ব্যাস্- মেয়েটি গলে জল । আজকেই তার বিয়ের নেমন্তন্ন পেলাম, নভেম্বরেই বিয়ে হচ্ছে ।
    একটি ছেলের খালি বাতেলা ! বিয়ে করবো করবো বলেই চেল্লায় । এদিকে মেয়ে দেখলেই কাঁচু মাচু ।
    ছেলেটি এই কিছুদিন আগেই ফোন করল ।
    ঘনাদা, মেয়ে দেখতে যাচ্ছি
    বেশ বেশ, তা কোথায় ? তোদের পাড়ায় বা রাস্তাঘাটে দেখতে পাস না ? তুই তো আবার ঝাড়িও মারতে পারিস না !
    উফ্ ! এই মেয়ে দেখা, সেই দেখা নয় । বিয়ের জন্য ।
    অ ! তা যে সেদিন খুব বাতেলা ঝাল্লি, ওসব মেয়ে দেখা টেখা সামন্ততান্ত্রিক লক্ষণ !
    উফ্ ! পাগল হয়ে যাবো ! শোনো শোনো, ভালো করে শোনো আগে
    বলবি, বল্ তালে !
    আমি তো বলেছিলাম, মা বাবার পছন্দ মানেই আমারও ! তা মেয়ের বাবা একদিন ফোন করে আমায় বলল, বিয়েটা কে করবে শুনি ? তুমি, না তোমার বাবা ?
    খাইসে ! তাপ্পর ?
    তাই আজ যাচ্ছি । খুব নার্ভাস লাগছে জানো ? তুমি যাবে আমার সাথে ?
    বলি- আমিও তো বিয়ে করবো না , গিয়ে কি লাভ ?
    লাভের মধ্যে দুটো গুড ব্যাড খেতে পাবে এই যা !
    বলছিস ?
    হ্যাঁ – তা ছাড়া বেশী দূর যেতেও হবে না । তোমাদের অঞ্চলেই ! রিক্সা করেই চলে যাবো দুজনে । আমি তোমার বাড়ী আসছি সন্ধে ছটার সময় ।
    তা গেলাম । গিয়েই অবাক আমি ! এতটা আশা করি নি । ভদ্রলোক আমার চেনা!একসাথে ঢুকু ঢুকুও করেছি ।
    আরে ! আসুন আসুন রামকৃষ্ণ দা । আপনি এর সাথে ?
    মানে ? ওকি সমাজবিরোধী নাকি, যে ওর সাথে আসবো না ?
    না না, উফ্ । আপনার কে হয় ?
    আমার ফেসবুক তুতো ভাই ।
    কি ভাই ?
    তুমি যা ভাবছো, সেই ভাই নয় । আমি তো চিনি তোমাকে !
    একেবারে থার্টি টু অল আউট ভদ্রলোকের ।
    ওরে মিনু, এদিকে আয় !
    মিনিও আমার ফেসবুক তুতো বোন ! ও এসেই বলল :- তোমরা ভাই ভাই, আমরা ভাই বোন । তা হলে- ওই ছেলেটা আর আমিও তো ভাই বোন, তাই না ?
    ভাইফোঁটা ওভার ! এসব প্রশ্ন আর নয় । এবারে তোরা কথা বল । তোর বাবা আর আমি ওঘরে গিয়ে বসি ।
    সেদিন গুড ব্যাডের সাথে ভাল পিনাও জুটেছিল । ছেলেটা জুল জুল করে দেখলেও, ওর কিছু করার ছিল না ।
    -------
    ওদের বিয়ের কার্ডও পেলাম আজ । অবশ্য তারিখ দুটো আলাদা !
    যাত্রার কথা লিখেছিলাম ।
    আজ পাড়ার নাটক । এটা অবশ্য আগে লিখেছি বলে মনে হচ্ছে, তবে না হয় নতুন করেই লিখলাম ।
    =======
    বাঘাযতীনে একবার ঠিক হলো- দুর্গা পূজার সময় নাটক হবে । ভূতো দা খুব ভালো ষ্টেজ অ্যারেঞ্জার ।
    মানে হল গিয়ে- কখন, কোন দৃশ্যে কি লাগবে বা গোটা নাটকে প্রয়োজনীয় জিনিস ঠিক সময়ে হাজির করাটাই কাজ, এই ষ্টেজ অ্যারেঞ্জারের ।
    এত নিঁখুত ভাবে পাড়াতে আর কেউ করতে পারতো না- ভূতোদা ছাড়া ।
    এহেন ভূতোদা এবারে জেদ ধরে বসলেন- তিনিও পার্ট করবেন ।
    সর্বনাশ ! কপালে হাত, পরিচালকের । ভূতোদা পার্ট করলে- আর দেখতে হবে না । ওই সব প্রয়োজনীয় জিনিস সিন ওয়াইজ জোগাড় দেবে কে ?
    অনেক বোঝানো হল – ভূতোদাও নাছোড় বান্দা । শেষে, মধুদিকে গিয়ে ধরা হলো । আর কয়দিন পরেই ভূতোদার বিয়ে মধুদির সঙ্গে ।
    ভূতোদা রাজী হলেন অগত্যা।
    যথাসময়ে নাটক শুরু । জমে ওঠেছে , দর্শক মুগ্ধ । ভূতোদার অ্যারেঞ্জমেন্ট নিঁখুত ।
    শেষের সিনে নায়ক ধরতে পারবে, আসল ষড়যন্ত্র কে করেছিল ! হাতে রিভলবার, আর কোমোরে ছোরা নিয়ে ভিলেনের কাছে হাজির নায়ক ।
    অনেক তর্কা তর্কির পর নায়ক গুলি করল, ভিলেনকে ( এই সময় ভূতোদা পটকা ফাটাবে ষ্টেজের পেছনে, যাতে মনে হয় রিভলবারের গুলি চলল ) ।
    পটকা আর ফাটে না ! নায়ক বেগতিক দেখে- ছোরা বের করে ভিলেনের বুকে বসালো।
    ঠিক সেই সময়েই – দুম্ করে পটকার আওয়াজ ।
    ভূতোদা উধাও । দর্শকদের মধ্যে হাসির ফোয়ারা ।
    ড্রপসিন ।
    ============
    এখনও কত কি যে উল্টাপাল্টা হচ্ছে- জীবন রঙ্গ মঞ্চে !!!
    পাল বনাম সাহা

    =====================

    আমি, এবার থেকে পণ করেই ফেলেছি- বেশী রাস্তাঘাটে বেরুবো না !!!
    বিশেষ করে সন্ধের দিকে ।
    বেরুলেই ঘটনার ছড়াছড়ি চোখে পড়বেই , আর এমনি কপাল যে তার মধ্যস্থতা; আমাকেই করতে হবে ?
    নাগের বাজার মোড়েই দেখেছিলাম- রঘু পাল, ফটিক পাল, পঞ্চু সাহা আর পলু সাহা, গুরুদেবের আশ্রম থেকে বেরিয়ে; টলমল করতে করতে আসছে সাতগাছি মোড়ের দিকে ।
    আমার অন্য একজনের সঙ্গে দেখা –বাবুতলার কাছে । কুশল বিনিময় কালীনই দেখলাম, ওরা চারজন খুব জোরে জোরে কথা বলে হাঁটছে ।
    সাতগাছি মোড়ে দুলালের দোকানে সিগারেট কেনার সময়, ওরা আমায় দেখে ফেলল।
    পলু সাহা আমাকে মোড়ে, ঐ ভীড়ের মধ্যে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করছে :-

    ক ক ক কয়েন দেহি, রা রা রামকিসনোদা !!!
    কি ?
    পাল বড়ো না সাহা বড় ?
    মুশকিল !‍ !!! আমি জানবো কি করে ?
    না না‍!‍ এ এ এর একটা বিহিত করণ লাগে- রঘু পাল মরীয়া !!
    পঞ্চু সাহাও নাছোড় বান্দা !!! আরম্ভ করলো :-
    কি কি কি বিহিত করণের আসে ক দেহি !!! আমাগো- ম্যাঘনাদ সাহা, বি বি বিজ্ঞানী !!! আরতী সাহা সাঁতরাইয়া স স সমুদ্র পাড়ি দেছিল !!!! কোলকাতার বি বি বি.কে সাহা পুলিশ কমিশনার আছিল । তোগো পালেরা কি আছিল ?
    এবার আসরে, ফটিক পাল – আমাগো পালেরা নাই ?
    না নাই !
    পালেরা নাই ?
    ক ক কইলাম তো, নাই !!!
    তোগো বি কে সাহা, কার আণ্ডারে কাম করতো, ক দেহি !!!
    কার ?
    হঃ !!! জানে না , আবার বড় বড় কথা কয় !!!
    কি কইলাম ?
    ওই যে সাহা- রা বড় !!
    বড়ই তো !!
    তইলে শোন !! বি কে সাহা কাম করতো কার আণ্ডারে !!!
    কার !!
    রাইজ্য পাল !!!! হুঃ !!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ নভেম্বর ২০১৪ | ২০৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কান্তি | 113.24.190.106 (*) | ০২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০২73343
  • ওনেক দিন পরে ঘনা দাকে ফুল ফর্মে পেয়ে বিগলিত হলাম। তাই আগাম জন্মদিনের শুভেচ্ছা
    জানালাম।
  • Ramkrishna Bhattacharya | 125.187.58.249 (*) | ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০৫:৩২73344
  • ধন্যযোগ কান্তি দা
  • Ramkrishna Bhattacharya | 125.187.58.249 (*) | ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০৫:৩৩73345
  • ধন্যযোগ কান্তি দা
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন