এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শুভেন্দু দেবনাথ | 53.251.90.170 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৫:০০687019
  • এবং বাংলা সিরিয়াল
    আমার বউ আমাকে খুব ভালোবাসে, আমার বউ বাংলা টিভি সিরিয়ালও খুব ভালোবাসে। আমিও অনেক কিছুকেই ভালোবাসি। প্রতিদিন সাড়ে পাঁচটা থেকে শুরু রাত ১০টা অব্ধি, তারপরের টেলিকাস্ট রিপিট টেলিকাস্ট কোন কিছুতেই ছুটি নেই। আগে চাকরজীবী হবার দরুণ এড়ানো যেতো খানিকটা সময় , কিন্তু সম্প্রতি বেকার জীবন যাপন করায় সে পথটিও বন্ধ। অগত্যা কোলাপুরি (ইংলিশ ভারসানে লাপটপ) নিয়ে খুটুর খুটুর করার ফাঁকে কান টেনে নেয় অনেক কিছুই।
    শুরু হয় ইচ্ছে নদী দিয়ে ঠিক সাড়ে পাঁচটায়, একে একা ৬টায় বধুবরণ সাড়ে ৬টায় ইস্টি কুটুম, ৭টায় তুমি আসবে বলে সাড়ে সাতটায় চোখের তারা তুই ৮টায় কিরণমালা সাড়ে আটটায় বোঝে না সে বোঝে না, লিস্টি ক্রমশ বেড়েই চলে। এক্সপ্রেশানের ক্ষনে ক্ষনে বদলে আমার পেত্নি থুড়ী পত্নী দেবীরও মুখের এক্সপ্রেশানের বদল ঘটে এমনকি মেজাজেরও। সেই সময় যদি আমার চা পিপাসার দরুণ চায়ের ফরমাইস তার কাছে করজোড়ে নিবেদন করি তাহলে তার দীঘল বড়ো বড়ো চক্ষু দ্বিগুন আকার ধারন করে প্রথমে রাগ পরে অশ্রু এবং সর্বশেষে সেন্টিমেন্টাল বানী বর্ষণ করে। এবং বড়োই করুণ স্বরে সিরিয়ালের নায়িকার মতন ছলছলে বলেন বেশতো এই সময়টায় আমাকে সময় দাও তাহলে তো আর এসব দেখতে হয়না, এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, যে কোনদিন যদি আমার সাথে তিনি সেই সময় চড়তে বেরোন তাহলে মুহুর্মুহু এই আক্ষেপই করে থাকেন ইশ আজকের এপিসোড টি মিস হলো এবং বাড়ী ফিরে এবং তারপর দিন সকালেও বসে যান রিপিট টেলিকাস্টে, তবুও টাটকা খাবার হারানোর জ্বালাটা কিছুতেই ভুলতে পারেন না।
    আবার কখনো কখনো ইচ্ছে নদীর নায়কের মিনমিনে এবং খানিকটা ঘ্যানঘ্যানে প্রেম দ্যাখে আমাকে বলেন দেখো পারো তুমি এরকম। আমি যে সত্যিই পারিনা সে কথা আগে ভাগে স্বীকার করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ তিনি আমার প্রোফাইলেই আছেন এবং বোধ করি এই লেখাটিও পড়বেন এবং তারপর যাহা যাহা আমার উপর বর্ষিত হবে...... থাক আপাতত সাহসে ভড় করাই যেতে পারে।
    সমস্ত সিরিয়াল গুলির বক্তব্য এক, গল্পও তাই শুধু নাম লোকেশান বদলে যায় মাত্র। পুজোর সময় নিয়ম করে সমস্ত সিরিয়ালের নায়ক নায়িকার বাড়ীতে পুজো দেখানো হয়, এবং শীল পঞ্জিকামতে পালন করা হয়, এবং ঠিক সেই সময় নায়িকা দেবী মুর্তিও ধারণ করেন প্রতিটি সিরিয়ালে। এদিকে তুমি আসবে বলের নায়িকা নন্দিনী ভিলেন কে মাটিতে ফেলে বুকের উপর পা তুলে দেবী রূপেন সংস্থিতা হন তো বধু বরণের কনকও বা পিছিয়ে থাকেন কেনো? তিনিও অমিত বিক্রম শত্রুর বুকে দাঁড়ান। সে যাক গে আমার সহধর্মিনীও এনাদের কাছ থেকে মাঝে মাঝে ইন্সপায়ার হন। এনারা ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে ঘুমতে যাওয়া অবধি দামী শাড়ি এবং গয়নায় সুসজ্জিত থাকেন। ঘুম থেকেও উঠে আসেন আঁখিপল্লবে মাসকারা সহযোগে। নায়ক ভারত বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট হওয়া সত্ত্বেও মায়ের বোকা বোকা ছল চাতুরি ধরতে পারেন না, এবং অপরাধীকে ক্ষমা করে দেন। এবং একটি সিরিয়ালে তো বহু বিবাহ তো এক প্রকার নিয়ম করে ফেলাই হয়েছে। বাবার দুটো বিয়ে মায়ের দুটি, হিরোর দুটি বিয়ে, হিরোর ভাই এরও, এবং নায়িকা ক্রমশ অগ্রসর হন দ্বিতীয় বিবাহের জন্য। এই সব সিরিয়ালের পরিচালকেরা আবার আইন কেও বুড়ো আঙুলে দেখিয়ে আইন নিজের মতোন করে বানিয়ে নেন। ফলে দুষ্ট লোক বামাল সমতে গ্রেফতার হবার হলে নিমিষে জামিন পান, আবার গল্পের দরকারে পানও না। এবং বিঞ্জাপন বিরতির মতো সমস্ত বিচার বুদ্ধিও সাময়িক বিরতিতে চলে যায়। আগত্যা চক্ষু কর্ণ এবং বুদ্ধি সাময়িক বিসর্জিত। তবু মাঝে মাঝে আশা যাগে হয়তো রূপকথা আশ্রিত ধারাবাহিকে একটু রেহাই পাওয়া যাবে, কিন্তু তাও কি হয় দর্শক! সেখানেও রূপকথা তো রুপো কথাকেও হার মানিয়ে দেয়। যদিও বা বিঞ্জাপন বিরতি নামক রেহাই আছে, তবুও সেই সময় যদি আবার নিবেদন করি একটু চা হবে? অসহ্য নামক একটি উক্তি আমার উপর বর্ষিত হয় এবং তড়িঘরি উঠে বাটিতে চা জল দুধ চিনি একত্রে বসিয়ে একটি ফুটন্ত তরল আমার সামনে নিক্ষেপ করে তিনি মগ্ন হন আবার। যদি কখনো আমি বলি অ্যাটলেকো দি কোলকাতার ম্যাচটা .................. কথা শেষ হয় না কোলকাতার মা মাসি এবং সমস্ত পুরুষ নিমেষে চোখা চোখা বাক্যবানে পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হয়। এবং এই অত্যাচারের কোনরূপ 498 বা 498A ধারায় নথিবদ্ধ হয় না এবং হায় আমার মত অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকায়ে যায় মার্কামুখে কোলাপুরি তে মুখ গুঁজে এবং যথা সম্ভব কানকে নিউট্রাল গিয়ারে দিয়ে বসা ছাড়া উপায় থাকে না।
  • রোবু | 113.10.210.154 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৫:১৬687020
  • বোকা বোকা।
  • তাপস | 11.39.38.62 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:২৩687021
  • চা টুকু নিজে করুন। সিরিয়ালের চরিত্রের মতন চায়ের জন্য স্ত্রীর কাছে আবদার/আবেদন/আদেশ এসব কেন!
  • রিমোট | 132.177.110.138 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:৪০687022
  • Arpan | 125.118.76.91 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:৪৭687023
  • গো সোলো।

  • কল্লোল | 111.63.85.165 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৮:৪৪687024
  • তবে এটা বাপু সাংঘাতিক। আমি মাঝে মাঝে দেখি বাংলা সিরিয়াল। একটা পরিবারে এতো বদমাইশ লোকজন একসাথে একটা কি দুটো ভালো লোককে চোখ সরু সরু করে নিত্যিনতুন বাঁশ দিচ্ছে। আর অন্য গুলো কেমন ভ্যাবলা টাইপ হয়ে একবার বদমাইশদের ছলনায় ভুলছে, একবার বদমাইশদের বদমাইশিতে বাক্যিহারা হয়ে যাচ্ছে। এ মাইরী নিত্যউদ্ভাবনী বুদ্ধির উচ্চ্ফলনশীল চাষ।
    এসব পরিচালক ও লেখকেরা আঁশবিযুক্ত পিচ্ছিল মৎস্য লগ্নে জম্মেছিলেন।
    আর হ্যাঁ, বহুবিবাহ। উঃ। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, শেষকালে কোনদিন সবকটা সিরিয়াল অয়দিপাউস বা লোলিটা না হয়ে যায়।
  • Atoz | 161.141.84.176 | ২৯ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:২৩687025
  • ক্যানো ? আপনাদের পরমপূজ্য লেখকের পরমপূজ্য গুরুদেব তো বলেই দিয়েছেন, প্রতিটি ব্রাহ্মণপুরুষের চারটি ভার্য্যা, প্রতিটি ক্ষত্রিয়পুরুষের তিনটি ভার্য্যা, প্রতিটি বৈশ্যপুরুষের দুইটি ভার্য্যা, আর প্রতিটি শূদ্রপুরুষের একটি ভার্য্যা থাকা বিধেয়। নানা অসুবিধায় যদি সবটা নাও পারা যায়, তাও অন্তত খানিকটা পূরণ করতে হবে।
    ঃ-)
  • PT | 213.110.243.23 | ২৯ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:২৭687026
  • জল নুপুর দেখেন কেউ?
    সম্প্রতি প্রয়াত পীযুষ গঙ্গুলী একটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে কি অসামান্য দক্ষতায় চিত্রনাট্যকার সিরিয়ালের গপ্পের অভিমুখটাই বদলে দিলেন তার জন্য তাঁর "নিত্যউদ্ভাবনী বুদ্ধির" তারিফ না করে পারা যায় না।
    এই সিরিয়ালে এর আগে আরো একজন পুরুষ অভিনেতার বাস্তবে জলে ডুবে মৃত্যু হওয়ায় তখনো গপ্পের অভিমুখ আরেকবার বদলানো হয়েছিল। এই মৃত্যুর কারণে বিধবা হওয়া চরিত্রটিকে খুব আস্তে আস্তে সাদা শাড়ী থেকে সাদা-কালো ও বর্তমানে বাদামী-কালো রঙের শাড়ীতে উন্নিত করে দ্বিতীয় বিবাহের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে!!
  • Atoz | 161.141.84.176 | ২৯ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৪687027
  • সিরিয়াল এরকম হলে কেমন হয়?

    এক ব্যাটা ভুড়িয়ালা বদমাশ লোক বসে বসে কাগজ পড়ছে আর বৌকে দিয়ে চা করাচ্ছে। যেন বাদশা আওরঙ্গজেব!
    "অ্যাই হরিদাসী, চা করে নিয়ে আয়। এখনই যা। ঝা !!!!"

    ভদ্রমহিলা ঐ গরম চা এনে ভাড়িয়ালার মাথায় ঢেলে দিয়ে কইলেন, "বৌকে দিয়ে চা করানো? এই বোঝ তার ফলাফল। মুহা হা হা হা। দ্যাখ ক্যামোন লাগে। "

    জমে যাবে। শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ।

    ঃ-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন