এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কার্ফিউড নাইট: আগ্নেয়গিরির শিখরে পিকনিক

    Sakyajit Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ০২ আগস্ট ২০১৫ | ২৪৩২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sakyajit Bhattacharya | ০২ আগস্ট ২০১৫ ০১:৪৯682810
  • দক্ষিণ কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রামের এক ভীতু মানুষ, হুসেন । শান্ত চোখ, সংকুচিত ভংগীতে বসেছিল ডাক্তারখানায়। হুসেনের ধারণা সে ইমপোটেন্ট হয়ে গেছে। তার ডাক্তার ভাইয়ের ভাষায়, ‘হুসেনের আর দাঁড়ায় না’। হুসেন বিয়ে করতে চায় না, কারোর সাথে মিশতে চায় না। নিজের ছোট্ট দোকান-ঘরের মধ্যে জড়োসড়ো হয়ে কাটিয়ে দেয় সারাদিন। হুসেন এক একলা ভাঙ্গাচোরা মানুষ।

    ১৯৯০ সালে যখন কাশ্মীরে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ডাক ওঠে হুসেন তখন কলেজে পড়ে। তেরোজন বন্ধুর সাথে হুসেন রওনা দিয়েছিল এল ও সি পেরিয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের দিকে ‘ট্রেনিং’ নিতে। কুপওয়ারা থেকে একটু দূরে বিএসএফ তাদের ট্রাক থামায় এবং অ্যারেস্ট করে কাছের আধা-সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালবেলা ইন্টেরোগেশন রুমে নিয়ে আসা হয় তাদের। জোর করে উলংগ করিয়ে দুই হাতে তামার তার বেঁধে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হতে থাকে। হুসেনের গলা ফাটিয়ে ঠিকরে আসতে চায় বমি, কিন্তু করতে পারে না কারণ মুখে গোঁজা ছিল তুলোর বল। রক্ত লালা এবং বমিতে সেই বল ভিজে গেলে ফেলে দিয়ে নতুন বল ঢোকানো হচ্ছিল। এরপর হুসেনের পুরুষাংগের ভেতর তার ঢুকিয়ে দেওয়া হয় জোর করে। শক পেতে পেতে মনে হয় ছিঁড়ে যাবে পুরুষাংগ। হুসেন পরে বুঝেছিল, এগুলো শুধুই কথা বার করার জন্য নয়। কারণ সকলেই একটা না একটা সময় মুখ খোলে, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মুখ খুলতে বাধ্য হয়। ইন্ডিয়ান আর্মিও জানে সেটা। তারা দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে এই টর্চার চালায় নিছক স্যাডিস্ট আনন্দ পাবার জন্যেই।

    অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হুসেন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল একসময়। তাকে জাগিয়ে তুলে আবার শক দেওয়া হয়। হুসেন প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে, কিন্তু হিসির বদলে রক্ত বেরিয়ে আসে। ফুলে ওঠে অন্ডকোষ। বিপদ বুঝে আর্মি হাসপাতালে ট্রান্সফার করে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর আবার অত্যাচার। দুই বছর বাদে হুসেন যখন ছাড়া পায় তখন তার পুরুষাংগ আর শক্ত হয়না। বাড়ি ফিরে আসার পর গুটিয়ে যায় সে। বাড়ির লোক বিয়ে করার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকে, একসময় সে জানায় যে সে বিয়ে করতে পারবে না, কারণ তার “দাঁড়ায় না”। কোনও ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না লজ্জায়। গোটা সময় কাটায় গ্রামের মসজিদে। হুসেন ধর্মপ্রাণ এক মুসলিম হয়ে যেতে শুরু করে, যাকে অনায়াসে ভারতীয় মিডিয়া দাগিয়ে দিতে পারে ধর্মান্ধ মৌলবাদী নামে।

    হুসেন কোনও কাল্পনিক চরিত্র নয়। বসারাত পীরের লেখা কার্ফিউড নাইট-এর পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে এমন অসংখ্য হুসেনের সাক্ষাতকার, যারা কাশ্মীরে ইন্ডিয়ান আর্মীর অত্যাচারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এই বই ডকুমেন্ট করেছে মুবিনা আর রশিদের কথা। বিয়ের রাতেই বিএসএফ বাস থেকে নামিয়ে মুবিনাকে গণধর্ষণ করেছিল। অপরাধ? মুবিনাদের বাস আসার আগে জঙ্গীদের একটা জিপ গিয়েছিল সেই রাস্তা দিয়ে এবং সেখান থেকে বি এস এফ-এর উদ্দেশ্যে কয়েকটা গুলি ছোঁড়া হয়েছিল শুন্যে। কেউ হতাহত হয়নি। কিন্তু সেই জিপকে ধরা যায়নি। এই রাগে পরের বাস থামিয়ে এক নববিবাহিতা মেয়েকে নামিয়ে সারারাত ধরে গণধর্ষণ না করলে সামরিক বাহিনীর দেশপ্রেমী-দর্পিত পুরুষাংগ শান্ত হত না। এই বই ডকুমেন্ট করেছে গুলজারের কথাও। ক্লাস টু্যেল্ভের ছাত্র গুলজার নিছক মজা করার জন্য স্কুলের এক জুনিয়ারকে একটু র‍্যাগ করেছিল। জানত না যে সেই ছেলেটি এক ইন্ডিয়ান আর্মি অফিসিয়ালের পুত্র। আর্মি গুলজারের বাড়িতে এসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং হাত পা বেঁধে কাছের এক গোডাউনে ঢুকিয়ে মাইন ফাটিয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল তার শরীর। অফিসিয়াল ডকুমেন্টে লেখা হয়েছিল গুলজার এক বিপজ্জনক জংগী যার মাইন ভুল করে হাতে ফেটে গেছিল। আছে ১৭ বছরের শফির কথাও। শফি এবং তার ভাইকে ইন্ডিয়ান আর্মি একদিন রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর শফির পেটে মাইন বেঁধে পাঠিয়ে দেয় কাছের এক বাড়িতে যেখানে নাকি জংগীরা লুকিয়ে ছিল। শফির মা সেকথা শুনে ছুটতে ছুটতে সেখানে গিয়ে দেখেন শফির ছোটভাই বিলালের পেটেও মাইন বাঁধার তোড়জোড় চলছে। আর্মির সঙ্গে হাতাহাতি করে বিলালকে ছাড়িয়ে আনা গিয়েছিল। কিন্তু শফিকে ফেরানো যায়নি। তার ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহের সবকটা অংশ খুঁজেও পাওয়া যায়নি কবর দেওয়ার জন্য।

    বইটা পড়তে পড়তে গা গুলিয়ে ওঠে। অসুস্থ লাগে। কয়েক দশক ধরে দেশের ঐক্যের নাম করে ইন্ডিয়ান আর্মি যে জাস্ট সাম্রাজ্যবাদী অ্যাগ্রেসন চালাচ্ছে গোটা কাশ্মীর ভূখণ্ডে তার জীবন্ত ডকুমেন্টেশন এই বই-এর পাতায় পাতায়। লেখক নিজে জীবনের প্রথম ১৮ বছর কাটিয়েছেন কাশ্মীরে। জংগী হতে হতেও হননি। কিন্তু স্পষ্ট ভাবে দেখিয়েছেন কেন হাজার হাজার ছেলেপুলে এল ও সি ডিংগিয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে ‘ট্রেনিং’ নিয়ে আসে। খুব সঠিকভাবে বসরাত দেখিয়েছেন যে কাশ্মীরের মানুষ কোনও কালেই নিজেদের ভারতের অংশ ভাবেনি। শারজার সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে যেখানে জাভেদ মিঁয়াদাদ শেষ বলে ছয় মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন, রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার পর উল্লাসে ফেটে পড়েছিল প্রায় গোটা কাশ্মীর। ব্যাপারটা পাকিস্তানকে সমর্থন নয়। বরং যে ভারতের বিপক্ষে খেলবে তাকেই সমর্থন। দশকের পর দশক ধরে দেশপ্রেম এবং জাতীয় সংহতির নাম করে এই ভূখণ্ডে দাপিয়ে গিয়েছে ভারতীয় রাজনীতি। ভারতীয় সেনা এবং আধা-সামরিক বাহিনী, খুন-ধর্ষণ-নিখোঁজ-এর বীভৎস মজায় ভারতবাসীকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এই সারসত্যটা যে কাশ্মীর ঐতিহাসিকভাবে ভারতের অংশ কখনোই ছিল না। বরং আজাদ কাশ্মীরের দাবীর থেকে আর কোনও মহত্তম দাবী এই সময়ে দাঁড়িয়ে সম্ভব নয়। সেই জাতীয়তাবাদী আগ্রাসনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ছুঁড়ে দিতে পেরেছিল শুধুই নীরব অসমর্থন। আর তাই ১৯৮৭ সালে নির্বাচনের নামে যখন প্রহসন করে ভারতীয় সরকার, তার বিপরীতে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে উঠে আসে ইয়াসিন মালিকের জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট। ১৯৯০ সালের জানুয়ারি মাসে স্বাধীনতাকামী শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে যখন আর্মি শতাধিক মানুষ মারে, তার উত্তরে হাজার হাজার ছেলে লাইন অফ কন্ট্রোল পেরিয়ে ‘জিহাদী ট্রেনিং’ নিতে চলে যায় এবং ফিরে এসে বীরের সংবর্ধনা পায় সাধারণ্যের কাছে। কাশ্মীরের বাস্তব এটাই। ভারতীয় দেশপ্রেমিকদের বুটের তলায় মাথা তুলবে বিচ্ছিন্নতাবাদের গর্জন।

    কিন্তু বসারাতের এই বই শুধুই বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের গল্প নয়। বরং গত কয়েক দশক ধরে আগ্নেয়গিরির শিখরে বসে পিকনিক করছে যে ভূখণ্ড, এই বই তার এলিজি। বাসারাত জানেন পক্ষ নিতে হয়। ফেন্স-সিটার মানবতাবাদীদের মতন তিনি মহত্বের সুঊচ্চ প্রাসাদের চূড়ায় বসে দিক-নির্দেশ করে দেন না। বলেন না যে আর্মী এবং জংগী দুই পক্ষই সমান খারাপ। বসারাত এই ঐতিহাসিক সত্যের সঙ্গে অবগত যে নিরপেক্ষ অবস্থান আসলে দিল্লীতে বসে থাকা নিও-হিন্দুত্ববাদী শাইনিংদের চামচা রাজনীতির হাত-ই শক্ত করে। ভারতীয় মিডিয়া রাজনীতি ব্যাবসায়ী গোষ্ঠির সবচেয়ে পছন্দের অবস্থান এই নিরপেক্ষতা, যার আড়ালে স্ট্যাটাসকুয়োর বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয়ে যায়। বসারাত স্পষ্টত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষ নিয়েছেন। বারবার দেখিয়ে দিয়েছেন কেন ঐতিহাসিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে আজাদ কাশ্মীরের দাবীতে যুবক যুবতীরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। কেন সেই অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়াটা এই সময়ের একমাত্র দাবী। কেন পাপা-টু নামের ইন্ডিয়ান আর্মির টর্চার সেলে মার খেতে খেতে বুকের কলজে ফাটিয়ে ফেলার জবাব দিতে হাতে হাতে বদল হয় কালাশনিকভ। কেন ইয়াসিন মালিককে একটার পর একটা মিথ্যে কেসে জেলখানার মধ্যে বছরের পর বছর পচিয়ে মারার বদলা নিতে শ্রীনগরের রাস্তা ফেটে পড়ে জনবিক্ষোভে। এই বই-এর অসাধারণত্ব এখানেই যে বসারাত পক্ষ নেন বারবার। আর সেই পক্ষ-নির্বাচনে তাঁর কোনো ভুল হয় না।

    কিন্তু এতটা লেখার পর মনে হল কিছুই বলা হল না। এই বই-এর যে পার্সনাল টাচ, যে মানবিক কাহিনীগুলো, সেগুলো কিছুই ধরা গেল না। বসারাত যখন বর্ণণা করেন যে হাতের কালাশনিকভ একপাশে সরিয়ে জংগীরা নেমে পড়ে স্কুলের ছেলেপুলের সাথে ক্রিকেট খেলতে, দুম করে মনে হয়, আরে এ তো আমাদের নক্সাল ছেলেদের গল্প, যারা নিজেদের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই কয়েক মিনিটের জন্য থামিয়ে দিত যখন পাড়ার বল্টুর ঠাকুমা রাস্তা পার হতেন। বসারাত গল্প করেছেন সেই সব স্থানীয় জংগী নেতাদের যারা দেখা হলে প্রথমেই জানতে চাইত যে বাচ্চাটা লেখাপড়া ঠিকমতন করছে না কি শুধুই এই ভারত-পাকিস্তান করে করে বখে যাচ্ছে। বসারাত স্কুলে পড়ার সময় এক জে কে এল এফ-এর স্থানীয় কমান্ডারের কাছে বারবার আবদার করতেন যে তাঁকে দলে নিতে হবে। সেই কমান্ডার তাঁদের গ্রামের-ই ছেলে, প্রথমে ধমক ধামক দিত “অ্যাই পড়াশোনা কর, এসব করতে হবে না” ইত্যাদি বলে। তাতেও কাজ হয়নি দেখে সটান গিয়ে বসারাতের দাদুর কাছে গিয়ে নালিশ করে আসে। সেই জংগী ছিল দাদু যে স্কুলের হেডমাস্টার, তার ছাত্র। মাস্টারমশাই-এর নাতি উচ্ছন্নে যাচ্ছে, বসে দেখা যায় নাকি?

    তাই সবকিছুর পরেও এই বই সেই মানুষদের গল্প বলে, সেই ভূখণ্ডের গল্প বলে, আধিপত্যবাদের নিষ্পেষণে গুঁড়িয়ে যেতে যেতেও যা তুমুল জীবনের উদযাপনে বাঁচতে চায়। গ্রামের স্থানীয় মসজিদে গিয়ে সৌদির ক্যাম্প থেকে ফেরা কট্টর ইসলামিস্ট ছোকরা যখন চোখ-মুখ পাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে ‘কবীরন কবীরা’ (শ্রেষ্ঠ কে?) তার উত্তরে কেউ ‘আল্লাহু আকবর’ চেঁচিয়ে ওঠে না, বরং একে অন্যের মুখ চাওয়া-চায়ী করে। চেঁচাবে কি করে? আরবি জানলে তো! ছেলেপুলের কাছে তুমুল প্যাঁক খেয়ে চোখমুখ লাল করে সেই ইসলামিস্ট বুঝিয়ে দেয় যা এই স্লোগানের উত্তরে আল্লাহু আকবর বলাটাই নিয়ম। তারপর আব্বার চেঁচিয়ে ওঠে ‘কবীরন কবীরা”। দুই একজন মিনমিন করে বলে ওঠে ‘আল্লাহু আকবর’। প্রোগ্রাম সুপারফ্লপ হবার পর এক বছর ধরে সেই ছোকরা আওয়াজ খেতে থাকে গ্রামের অন্য ছেলেপুলের কাছে। ততদিনে কিন্তু ধর্মের হাত ধরে রেজিস্টান্স পৌঁছে গেছে কাশ্মীরের ঘরে ঘরে। পণ্ডিতদের মাস এক্সোডাস ঘটে গেছে, শ্রীনগরের রাস্তা উজিয়ে উঠছে আজাদ কাশ্মীরের দাবীতে, হাজার হাজার ছেলেমেয়ে নিখোঁজ এবং ঘরছাড়া। কিন্তু জীবন যেখানে যেটুকু চেটেপুটে নেবার, নেবেই। আগ্নেয়গিরির চূড়ায় বসে পিকনিক করার নাম-ই কাশ্মীর, বারবার মনে করিয়ে দেয় এই বই।

    বসারাত চাইলেই ইন্ডিয়ান মিডিয়ার ব্লু-আইড বয় হতে পারতেন যদি জংগী এবং আর্মির সমান নিন্দেমন্দ করে সাধারণ মানুষের কথা বলতেন। যেটা বসারাত ভোলেননি, কিন্তু আমরা ভুলে যাই, যে কাশ্মীরে জংগী আর সাধারণ মানুষের কোনও তফাত নেই। তাই কোনও এক মায়াময় হিমেল রাতে এক সাধারণ ওষুধের দোকানদার বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে জংগী ক্যাম্পে চলে যায়। সে এবং তার মতন আরো অসংখ্য মানুষ জানত যে এর অন্তে টর্চার এবং মৃত্যু নিশ্চিত। হয়ত বধু শুয়েছিল পাশে, হয়ত শিশুটিও ছিল, তবুও তাকে নন-কনফর্মিস্ট বানিয়ে ছাড়ল এক অমোঘ মরণফাঁদ। তবুও সিনেমায় যেমন হয়, শেষ দৃশ্যে হাতের কালাশনিকভ ত্যাগ করে সে সোজা হেঁটে যাবে না কিছুতেই। মরতে মরতেও আঁকড়ে ধরে থাকবে অস্ত্র। কাশ্মীর মানে এই নন-কনফর্মিস্ট ভূখণ্ডের গল্প। অসামান্য এ বই, ভোডাফোন ক্রসওয়ার্ড পুরষ্কার পাবার পরেও খুব জানা কারণেই ইন্ডিয়ান মিডিয়াতে বেশি আলোচনায় আসবে না। বুট পরা শ্রীরামচন্দ্রের পদদ্ধনিতে কেঁপে ওঠা আজকের ভারতবর্ষে দাঁড়িয়ে এই বই ফ্লপ হতে বাধ্য। তবে নন-কনফর্মিস্টরা পড়বেন। এটুকু আশা রইল। যেমন উট শুকনো কুয়ো থেকেও জলপান করে বলার পরেও গদার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে উট জলপান করতে বাধ্য নয়, তাঁর নিজের মতন করে, খেয়াল-খুশি অনুযায়ী...

    Curfewed Night: Basharat Peer; Random House (2010)
  • কল্লোল | 125.242.158.205 | ০২ আগস্ট ২০১৫ ০৮:২৩682811
  • বইটি নিজে পড়ুন ও পড়ান। একই গল্প মনিপুর, নাগাল্যান্ডেও।
    শাক্যকে আর ধন্যবাদ দিয়ে কি হবে। বরং একদিন গুলবটি কাবাব নিয়ে যাবো।
    এছাড়াও পড়ুন মহসীন হমিদের দ্য রিলক্টেন্ট ফন্ডামেন্টলিস্ট।
    এই বইটা নিয়ে একটা সিনেমা হয়েছিলো। সেটা কি মুক্তি পেয়েছে?
  • potke | 126.202.167.82 | ০২ আগস্ট ২০১৫ ০৮:৫৮682812
  • হ্যাঁ, কল্লোল দা। নেটে পাবে।
  • সিকি | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১০:৪৯682813
  • বইটা নামিয়ে নিলাম - পড়ব।

    বইয়ের লিংকে বলছে এই বই থেকেই নাকি হায়দার সিনেমাটা বানানো - সত্যি?
  • 4z | 79.157.35.160 | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১১:০৪682814
  • সিকি, না। পীর হায়দারের কো-স্ক্রীপ্টরাইটার। কিছুটা হাল্কা ছায়া আছে জাস্ট।
  • কল্লোল | 111.63.195.191 | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১২:০৪682815
  • দ্য রিলক্টেন্ট ফন্ডামেন্টলিস্ট ইউটিউবে নাই। ওটি যে অ্যাকউন্টে ছিলো সেটা টার্মিনেটেড হয়ে গেছে
  • সিকি | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১২:৫৪682816
  • এটাও নামিয়ে নিলাম।
  • সিকি | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১৭:১৫682817
  • এবং নামিয়ে দেখলাম, এটা ফাঁকা।
  • Sakyajit Bhattacharya | ০২ আগস্ট ২০১৫ ১৭:২৩682818
  • বইটা কিনে নিন। ২০০ টাকা মতন দাম পড়বে।

    বইটার কয়েকটা সিকোয়েন্স হায়দারে ব্যবহার হয়েছে। পাপা-টু, তারপর বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এবং চেকিং না হলে ঢুকতে না পারার মানসিক রোগ। প্রসংগত, হায়দারে যে লোকটা বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল, চেকিং না হলে ঢুকছিল না, সে বসারাত নিজে। ক্যামিও করেছিল ওখানে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন