এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • একশো চুয়ান্নাতম রবিজয়ন্তীর গপ্পো

    Sankha subhra Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১০ মে ২০১৫ | ২৫৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sankha subhra Ghosh | ১০ মে ২০১৫ ০২:০৭677287
  • কাল রাত থেকে হেভি টেনশান। অফিস যাবার সময় টের পাইনি। অফিসেও অ্যাজ ইউজুয়াল "ফ্রাইডে তো কার বাপের কি" টাইপ কলকাতাসুলভ অ্যাটিচুড। প্রথম মালুম হোলো নারকেল বাগানের ট্রাফিকে দাঁড়িয়ে। অন্য সব দিনই বেড়ালের কান্নার মত মিহিসুরে কিছু না কিছু গান বাজে। কালকে মনে হলো স্পীকারের 'দম' বাড়ানো হয়েছে। গুমোট গরমে নানাবিধ বিজাতীয় হর্নের ফাঁকে ফোঁকরে ভেসে আসছে, 'তোমার খোলা হাওয়া'।

    ষাট সেকেন্ডের বিরতি মেনে বামফ্রন্ট পাল্টে তিনোমুল এলো আর আমরাও যে যার মতো হুসহাস বেরিয়ে গেলুম বটে কিন্তু মনে কাঁটা খচখচ করতেই থাকলো।

    এফ এম চালালুম। প্রধানমন্ত্রীর বারো টাকার বীমার ব্যাপারে জানলুম। পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে রোজগার করা টাকা গুলো দিয়ে আগে শুনছিলুম প্যাটেলের মূর্তি হবে, লেডি লিবার্টির মাফিক, হাতে খুব সম্ভবতঃ পদ্মফুল থাকবে মশালের জায়গায়; এখন ওবামা কেয়ারের মত আরেকটি মোদী কেয়ার হতে চলেছে শুনে খুব একটা উৎফুল্ল হলুম না, বলাই বাহুল্য। বীমা পেরোলে আরো দু একটি আলতু ফালতু অ্যাড, তারপরে আসল কথাটি শুনতে পেলুম। রাত পোহালেই রবীন্দ্র-জয়ন্তী, সেই নিয়ে এফেম চ্যানেলের নানাবিধ প্ল্যান-প্রোগ্রামের ফিরিস্তি। ভুলেই গেছলুম বলে এত আত্মগ্লানি হলো যে ভাবলুম কোন একটা গড়িয়া গামী বাসে উঠে পড়ি। ভিড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে খানিক প্রায়শ্চিত্ত হবে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলেছি, জানেন!

    বাড়ি ফিরে ফেসবুক খুলে দেখলুম অবস্থা গুরুতর। চব্বিশ ঘন্টা না পেরোলে কি হবে বলা যাচ্চ্ছে না। কেউ কেউ পরের দিনের ভিড় এড়াতে সক্কাল সক্কাল দাদুকে নিয়ে দু চারটে কথা লিখে ফেলেছেন। এঁরা চালাক এবং আনডাউটেডলি ক্যালকেসিয়ান, বস্তুত অকালবোধন করে রাম ফুটেজ খেয়ে গেলেও, চতুর্থী বা পঞ্চমী থেকেই অকালতরবোধন পুজো এঁদের হাত ধরেই এসেছে এবং মাদুর্গাই যখন ডিসকাউন্ট পাননি দাদু কোন ক্ষেতের মুলো? পরের দিন সকাল থেকেই হাজার হাজার লোকে উপবাস করে দাদুর মাথায় জল ঢালবে বা দাদুর কবিতা, প্রবন্ধে দন্ডী কাটতে কাটতে এগোবে, তারচেয়ে ফাঁকায় ফাঁকায় পুজো সেরে ফেলা ভালো।

    সাইটে সাইটে প্রশ্ন, কালকে কি করবেন? অনেকে উত্তরও দিয়ে দিচ্ছেন, আমাদের স্পেশাল দাদু বিরিয়ানি কিনুন সঙ্গে রোদ্দুর রায়ের একটি এমপিথ্রি ডাউনলোড করুন একদন ফ্রি। কেউ বিক্রি করছেন 'ভানু-কবচ কুন্তল', এতে আছে ভানুমতীর ম্যাজিকাল পাওয়ার এবং কবচের পেছনে খুদে খুদে অক্ষরে সম্পূর্ণ ভানু সিংএর পদাবলী। এই কবচ-কুন্তল ধারণ করলে জীবন হবে 'রবি'ময় এবং সপ্তাহের সব দিনই মনে হবে 'রবি' বার।

    খুবই বিভ্রান্ত হয়ে ঘুমুতে গেলুম। প্রোজেক্টের চিন্তা চলে গিয়ে মাথায় ঘুরছে 'আজ জুটেছে কাল কী হবে? -- কালের ঘরে রবি/ আমার ঘরে ঝুলছে নাতো দাদুর কোনো ছবি'। কাল থেকে সমাজে আর মুখ দেখানো যাবে না। লোকে অবাক বিস্ময়ে বলবে আপনি এমন দিনে ঘরে বসে মুড়ি-চানাচুর দিয়ে চা খাচ্ছেন? শালা তুই বাঙ্গালি? ধোপা নাপিত সব একঘরে করে দিলেও বলার কিছু নেই।

    ********

    রাতে দাদু নিউটাউনের মোড় থেকে টেকনোপলিস অবধি চিমটে নিয়ে তাড়া করলেন, আমিও পাঁই পাঁই দৌড়োলুম, ট্রেডমিলের ডিসপ্লে বললো আমি নাকি বারো স্পীডে চার রাউন্ড দৌড়েছি, আমার ক্যালোরি বার্ন আউট একশো দশ, আমি দৌড়াতে দৌড়াতেই আর্গু করলুম এই ক্যালকুলেশান অমিত মিত্র মশাই করেছেন, বিস্তর জল মেশানো আছে এবং ইনফিকে সেজ না দেওয়া হলে বড়, মেজ, রাঙা বা ন কোনো কিছু একটা দিতেই হবে, ওদিকে দাদু আমাকে ধরতে না পেরে বললেন দেখা দিলেম তবে টাকা দিলেম না, এই নে আমার শর্টেস্ট রেজিগনেশান লেটার, ডিয়ার শঙ্খ, থুঃ, বলে একদলা থুতু ছিটিয়ে দিলেন, আমি আঁতকে উঠে দেখলুম টাইমার দেওয়া এসি বন্ধ হয়ে গিয়েছে আর গুমোটে একেবারে ঘেমেনেয়ে গেছি।

    ঘুম যখন ভেঙ্গেই গেছে ধ্যাষ্টামি করে পড়ে থেকে লাভ নেই। সুপ্ত সিংহের মুখে হরিণ কেন দাদু বা ব্রেকফাস্ট কিছুই প্রবেশ করে না। আজি এ প্রভাতে রবির কর ইত্যাদি আউড়াতে আউড়াতে মাকে নিমের দাঁতন চাইলুম। যদ্দুর জানি সেই যুগে বাবুল বা সেনসোডাইন ছিলো না এবং দাদু শুনেছি নিমের রস খেতেন কাজেই ডালগুলো কি আর ফেলে দেবেন, নিশ্চয়ই দাঁতনেই দাঁত মাজতেন। মা দেখি আকাশ থেকে পড়লো, আমি একটু দিনের সিগনিফিকেন্সটা বোঝাবার চেষ্টা করলুম, না পেরে রণে ভঙ্গ দিয়ে হে মোর দূর্ভাগা দেশ ইত্যাদি গজগজ করতে করতে টয়লেটে ঢুকে গেলুম। এখানেও সমস্যা। দাদু ও টয়লেট শীর্ষক কোন রিসার্চ পেপার পড়িনি বটে কিন্তু ডেফিনিটলি দাদু শান্তিনিকেতনে কমোড ফিট করান নি, আর আমার নাগালে ইন্ডিয়ান নেই। কি করে বজায় রাখবো আমার বাঙ্গালী সত্ত্বা? সাধে কি দাদু লিখেছিলেন দাও ফিরে সে সোনাঝুরি, লও এ রিয়েল এস্টেট?

    তবুও টয়লেটে বসে বেগ ও আবেগ দুইই এসে গেল, দুলাইন ভেঁজে ফেললুমঃ

    বাকি সব দিন চুদুরবুদুর
    আজকে দিনটা শুধুই দাদুর

    বাঃ অক্ষরবৃত্ত হয়েছে, আর অন্ত্যমিলও আছে। আধুনিক কবিতার মত

    রবীন্দ্রনাথ আমার বুকে দিলেন
    ...
    ...
    ...
    কী, কী, ক্ষীইইই?

    ধাক্কা!!

    টাইপের অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু নয় যেখানে কনটেন্ট আর ফর্মের মধ্যে কে কার কাপড় খুলতে পারে সেই নিয়ে লড়াই চলছে।

    মনটা খুশি খুশি লাগছে। ব্রেকফাস্টে পাঁউরুটি আর ডিমভাজা পেয়েও বিশেষ অসন্তুষ্ট হলুম না কেননা তখন টিভিতে কাদম্বরীর প্রোমো দেখাচ্ছিল, ভাবলুম, দাদুও তো কত কিছু পাননি, যা চেয়েছিলেন তা ভুল করে চেয়েছিলেন, যা পেলেন তা আদপেই চাননি, তবুও সেটা ডায়েরিতে লিখে গেছেন, শিক্ষণীয়।

    ********

    বন্ধুরা শুনলুম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে মাটন এনেছে সঙ্গে একটু নিয়মরক্ষার সাত্ত্বিক সাদা বাকার্ডি। আজকের দিনে বিয়ার স্ট্রিক্টলি নো নো। দাদু শুনেছি পোর্ট ওয়াইন খেতেন, এখন পোড়ার কলকাতায় ওসব ছাইপাঁশ মেলে না, যা পাওয়া যায় তাই দিয়েই চালাতে হবে, শুধু বিয়ার চলবে না, ওতে অসম্মান করা হয়।

    অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত হয়ে বাড়িতে দাবী জানালুম একটু মাটন হোক। শাহী গরমমশল্লার বদলে একটু পুরোনো একটা গীতাঞ্জলি আছে, ওর কয়েকটা পাতা বেটে দিলেই রবি সুবাসে পাড়া একেবারে ম ম করবে। ডিশটার নাম রাখা যেতে পারে মাটন রবিয়ালি।

    লোকে কৃস্টফর নোলন-কৃত ইন্টরস্টেলর-এর আইডিয়া পরিত্যাগ করিয়াছে, তাহারা আজ 'আইআইএন' লইয়া হাসি মস্করা করে, সুতরাং আমার আইডিয়া যে গবাক্ষ দিয়া ছুঁড়িয়া ফেলিবে ইহাতে আর আশ্চর্য্য কি? বাধ্য হইয়া আপন হইতে বাহির হইনু, মহানগরের পথে পথে ঘুরিয়া ফিরিনু।

    সাদার্ন অ্যাভেন্যুতে দেখলুম লোকজন তাঁবু খাটিয়ে কিসব প্রোগ্রাম করছে। লোকজন পাঞ্জাবি পরে একগাল দাড়ি আর হাসি নিয়ে ঘুরছে। আপনারা বলবেন, এর পেছনে গব্বরের অক্ষয় আর কাদম্বরীর আতাব্রতর যথেষ্ট অবদান আছে, কিন্তু বাজি রাখছি ওদের রাখা দাড়ির আসল উৎস হলেন আদি এবং আমাদের কোনো শাখা নেই, সেই দাদুই। রবীন্দ্রসদনের সামনেও একটা লেন বন্ধ করে নীল-সাদা তাঁবু টাঙ্গানো হচ্ছে, ডেফিনিটলি বিকেলে মোচ্ছব আছে। ধর্মতলা অবধি গিয়ে ফিরে এলুম বলে আর কোথায় কি হচ্ছে স্বচক্ষে আর দেখা হল না।

    দুপুরের দিকে আবার নেটে ঢুকে ব্যোমকে গেলুম। তিলধারণের জায়্গা হয়তো আছে, দাদুধারণের নিতান্তই সংকুলান অবস্থা। ফেসবুকে রবি লিখে কন্ট্রোল এফ মারলে এত এত সার্চ রেজাল্ট বেরোবে যে পেজ হ্যাং হয়ে যেতে পারে। অল্পবয়েসীরা HBD লিখে রেহাই দিলেও, অনেকেই আকুল হয়ে পড়েছেন। কেউ লিখেছেন সকাল থেকেই রেজওয়ানা বন্যা আর জর্জদা চালিয়ে বসে আছি, ধুমকি লেগে গেছে। কেউ লিখেছেন উনি ছিলেন আমার প্রথম পুরুষ, প্রথম প্রেমিক। তারপরে একটা ছোটলোককে বিয়ে করেছি। নিচে লাইকের বন্যা আর চোখ মটকানো স্মাইলি। অনেকেই আফশোস করছেন, শনিবারে পড়ে একটা ছুটি মাঠে মারা গেল, উইকেডে হলে পিসি পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় ছুটি ডিক্লেয়ার করতেন এবং বাকি দেশে এই ছুটি কেন পালন হবে না, মোদী সরকার জবাব দাও পোস্টার মারতেন।

    দাদুকে নিয়ে কবিতা, আটলাইন প্রবন্ধের ছড়াছড়ি, ইউটিউবের লিংকের বন্যা বয়ে যাচ্ছে, সবাই নিজে যেটা শুনছেন, বিশ্বকে শোনাতে পণ করেছেন। কেউ কেউ আইডিয়া এবং সময়ের অভাবে দাদুর তেলেই দাদুকে নতুন করে ভেজে ফেলেছেন দাদুর কিছু কবিতা বা গানের লিরিক্স লিখে এবং তাতেও গুটি কয়েক লাইকও পড়ে গেছে। অনেকে আরো অন্য লেভেলের প্লেয়ার, এঁরা কিছুতেই ফেলে আসা সময় ভুলতে পারেন না, স্কুলের পরীক্ষার অভ্যেস অনুযায়ী এখনো ভালো স্টুডেন্টের খাতা থেকে দু একটা প্যারা তুলে পুরো নম্বর পাবার আশা রাখেন, দাদুকে ঘিরে তাঁদের আজ অনেক আশা ভরোসা। আপনার আমার মত পাতি পাবলিক পুরোনো খবরের কাগজ সাত আট টাকা কিলোয় বেচে দেই, এঁরা বারো টাকা কিলোয় আবার ঐ কাগজ কিনে নেন এবং খেটে খুটে পুরনো আর্টিকেল তুলে আনেন অভ্র এডিটরে। দুঃখের বিষয়, সংবাদপত্রগুলি নিজেরাই আর্কাইভ রাখতে শুরু করার ফলে এসমস্ত সাধু প্রচেষ্টা সন্দীপ রায়ের সিনেমাগুলির মত ডি-ভ্যালুয়েশানে ভুগছে।

    কেউ কেউ আজকের দিনে এতই বিহ্বল যে শুধু কান্দিতেছেন। উই গোডাউন তাই আই গো আপ মানে রবিঠাকুরের হাতে গড়া শান্তিনিকেতনের গোডাউনে রিয়েল এস্টেটের উইপোকা লেগেছে দেখে গোরু অর্থাৎ গোমাতার চক্ষে জল আর মায়ের চোখে জল দেখে কোন বাঙালি নিজেকে ধরে রাখতে পারে? আজকের দিনে দাদু থাকলে কিছুতেই এমনটি হত না, এই সব ভেবে অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে ভক্তিরসে ভিজে যাওয়া কাঁথা শুকোতে দিচ্ছেন ছত্রিশ ডিগ্রির তপ্ত নিদাঘের বৈশাখের দুপুরটিতে। পরের চৈত্র সেলে নতুন কাঁথা কিনতে হবে কেননা দাদুর কঠিন আদেশ, চির নূতনেরে দিল ডাক, পঁচিশে বৈশাখ, অর্থাৎ কিনা বৈশাখ মাসে পুরোনো মাল চলিবে না, হাতিবাগান এবং গড়িয়াহাটের হকারদেরও তো দেখিতে হইবে।

    ********

    সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। রবীন্দ্রজয়ন্তী কিছুই পালন করা হয়ে উঠছে না। একবার ভাবলুম আজকের দিনে দাদু হয়তো একটু সাফসুতরো হতে চাইতেন, প্লাস বাঙালি যে রেটে দাদুরই বুকে বসে দাদুর দাড়ি গোঁফ উপড়ে চলেছে তাতে ক্লিন শেভড দাদুর কনসেপ্টটা মার্কেটে খেলেও খেতে পারে। ইমেজ এডিটরে দাদুর একটা অল্পবয়েসের ছবিতে ইরেজার দিয়ে দাড়ি গোঁফ মুছে দেখলুম খুব সুবিধের হল না, অনেকটা আজমল কাসভের মত লাগছে।

    বিরক্ত হয়ে খবর দেখতে বসলুম। চারিদিকে ব্লান্ডার। টাইমসের পাতায় পিসি অ্যাড দিয়েছে 'কবিগুরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'। আরে জলপাইগুড়ি হয়, শিলিগুড়ি হয় এমনকি আর কে নারায়ণ বলে গেছেন মালগুড়িও হয় আর কবিগুরি হতে পারে না, ধ্যুস!! হতে পারে কোন একটা নতুন নগরীর নাম রাখা হচ্ছে।

    রাত্তিরে দুএকজন বন্ধুর সঙ্গে জোরদার তক্কো করলুম। সবাই বলছে দাদুর যা বাজার আর কারুর নেই। দাদুকে নিয়ে যত মাতামাতি, দাদা আর দেবকে বাদ দিয়ে আর কোন বাঙালিকে নিয়ে এতো আদিখ্যেতা নেই। বাঙালি আত্মবিসৃত জাতি। ইত্যাদি। যত ফুটেজ সব 'ত' বর্গের লোকজন খেয়ে যাচ্ছে।

    অনেক বোঝালুম, দাদু একটা ব্রীজ পেয়েছেন, দুটো মেট্রো স্টেশান। বিদ্যাসাগর একটা ব্রীজ, বিবেকানন্দও তাই। জগদীশ বসু আর প্রফুল্ল চন্দ্র একটা করে ফ্লাই ওভার। সুভাষ বোস পেয়েছেন দুটো মেট্রো স্টেশান। আরে বাবা সবার একটা হায়ারার্কি তো আছে। ওমা, বলে কি রামমোহন একটা রাস্তা ছাড়া কিছুই পেলেন না, এটা কি ঠিক হলো? জন্মদিনটাও কেউ মনে রাখে না। নজরুলের থেকে জিৎ গাঙ্গুলি বেশি পপুলার। ওদিকে দাদুকে নিয়ে শুধু মন্দির গড়াটাই যা বাকি আছে।

    ঝগড়াঝাঁটি করে রাগে রাগে দুটো ভাত বেশি খেলুম। সারাটা দিন বেকার গেল। দাদু হলে এর মধ্যেই কত কিছু করে ফেলতেন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে নর্মাল দিনে বারো পাতা লিখতেন, বিখ্যাত কেউ দেখা করতে এলে দশ, আলতু-ফালতু এলে তেরো, প্রেমে পড়লে পনেরো আর বৃষ্টি পড়লে একুশ। যেদিন লেখা পেতো না, সেদিন আগের দিনের লেখায় কাটাকুটি করে ছবি আঁকতেন। হায় এখন অনলাইন ব্লগে কাটাকুটি করার কোনই উপায় নেই।

    ********

    রাগ এলে গান শুনতে হয়। গুনগুন করে গাইতে পারলে আরো ভালো। পাশের ফ্ল্যাটে 'আও রাজা' বাজছে। রিপিট লুপ।

    বেশ খানিকক্ষণ শোনার পর মনের মেঘ কেটে গেল। দাদুই পথ দেখালেন। এক বন্ধু বলেছিলো সে নানান রকম গানে 'কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি' দিয়ে লিরিক্স বসিয়ে গায়। আমিও তাই করলুম।

    কি বলবো, একেবারে খাপে খাপ বসে গেল। বিশ্বাস হচ্ছে না? ইউটিউবে গানটা কারাওকে মোডে চালিয়ে কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি দিয়ে গাইতে থাকুন। একটা শব্দও সুর থেকে সরবে না।

    যাক অন্ততঃ দিনের শেষে এসে একটা কাজের কাজ করলুম। কেউ যদি এই ভাবে গানটা গেয়ে ইউটিউবে আপলোড করেন তো প্লিজ লিংক শেয়ার করবেন। এখন শুধু প্রশ্ন একটাই থেকে গেল, চিত্রাঙ্গদা সিং এই গানের সঙ্গে শান্তিনিকেতনি পেটেন্ট নাড়ুনৃত্যের কোরিওগ্রাফি করলে কতটা জমত?

    ঐটুকু থাক কল্পনাশক্তির বিচারাধীন। এইটে ভাবতে ভাবতে ঘুমটাও বেশ জমিয়ে হবে। আগের রাতে দাদু এসেছিলেন, আজ চিত্রাঙ্গদা এলে মন্দ হয়না, আর কি কান্ড দেখুন, একদম এই নামের একটি নৃত্যনাট্য দাদু একশো তেইশ বছর আগে লিখে গেছলেন। দাদুকে বাদ দিয়ে পালাবেন কোথায়?

    দাদু হে তুমিই সত্য।

    -শঙ্খ
  • adhuli | 230.245.40.217 | ১০ মে ২০১৫ ০২:২২677292
  • দুর্দান্ত
  • ranjan roy | 24.96.62.9 | ১০ মে ২০১৫ ০৫:২৭677293
  • খাসা হইয়াছে! পয়সা উসুল!
  • Rit | 213.110.246.23 | ১০ মে ২০১৫ ০৮:৩০677294
  • দারুন দারুন।
  • সিকি | ১০ মে ২০১৫ ০৯:২৮677295
  • একঘর।
  • ন্যাড়া | 172.233.205.42 | ১০ মে ২০১৫ ১১:৫২677296
  • খুবই মচৎকার হইসে।
  • শিবাংশু | ১০ মে ২০১৫ ১২:০০677297
  • কী লিকেচে ছেলেটা....!!
  • cb | 11.186.70.250 | ১০ মে ২০১৫ ১৩:০৭677298
  • রবীন্দ্রনাথ আমার বুকে দিলেন
    ।।।
    ।।।
    ।।।
    কী, কী, ক্ষীইইই?

    ধাক্কা!!

    সুন্দর গান হয়, "হায় রে হায় তেরা ঘুংটা" এর সুরে :p

    গেয়ে ফেলুন
  • sosen | 212.142.68.130 | ১০ মে ২০১৫ ১৩:১১677299
  • ঃ)
  • k | 106.28.172.6 | ১১ মে ২০১৫ ০৫:২৯677288
  • প্রনাম জানাই দাদু ও লেখক কে।
  • d | 144.159.168.72 | ১১ মে ২০১৫ ১২:৩৬677289
  • হা হা হা এইটা ব্যপক হইছে। ফাটাফাটি।
  • de | 24.139.119.175 | ১১ মে ২০১৫ ১২:৫৭677290
  • :))))))
  • Arindam Bhattacharya | 213.99.211.18 | ১২ মে ২০১৫ ১৬:০৫677291
  • প্রচুর বানান ভুল করেছিস শঙ্খ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন