এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • htar1991 | 113.5.132.50 | ১১ জানুয়ারি ২০১৫ ২০:২১667032
  • ২৮শে আগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টির এক ছাত্রীর ওপর যৌন হেনস্তা হয়েছিল বলে সেই ছাত্রী অভিযোগ করেছিলেন। এই অভিযোগের পর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কোনও ব্যবস্থাই সেভাবে নিয়ে ওঠেন নি, ব্যবস্থা যতটুকুও বা নেওয়া হয় তা সাংবিধানিক ধারা ও সরকারি আইন মোতাবেক হয়নি। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয়-সরকারি-প্রশাসনিক-কর্তৃপক্ষীয় অপঐতিহ্যের ধারা বজায় রেখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নানাভাবে নিন্দনীয় ভূমিকা পালন করে।
    এর উল্টো দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দলীয় পতাকাহীনভাবে এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবাদে সামিল হয়। বিশেষভাবে আর্টস ফ্যাকাল্টির নানা মতের ছাত্রীছাত্ররা শুরুতে প্রশংসনীয় দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করেন। দলীয় পতাকাহীনভাবে নানা মতের ঐক্যবদ্ধ ছাত্রীছাত্র আন্দোলনের ঐতিহ্য এই দেশে ও রাজ্যে খুব বেশী নয়। সম্ভবত সে কারনেই প্রথম দিকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে নানান মতপার্থক্য সামনে এসেছিল স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু ক্রমশ নানা প্রকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আন্দোলনকারীরা ক্রমশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকরী ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ সংগঠিত করতে পারছিল।
    ঘটনা অন্য মোড় নেয়, যখন ১৭ই সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থানকারী ছাত্রীছাত্রদের ওপর সশস্ত্র পুলিশি সন্ত্রাস নামিয়ে আনে। পুলিশ ও সাদা পোশাকের গুণ্ডারা ছাত্রছাত্রীদের নির্মমভাবে আহত, রক্তাক্ত করে, আহত ও অচৈতন্য অবস্থায় বহু ছাত্রছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি হয়, বহু নির্যাতিত, আহত ছাত্রী ও ছাত্র গ্রেপ্তার হয়, এবং লক্ষণীয়, যৌন হেনস্থার প্রতিকারের দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর পুলিশের তরফে যৌন হেনস্থা ঘটে।
    এর পরের ঘটনা এখন ইতিহাস।
    যতটুকুও বা মতপার্থক্য-জনিত দুরুত্ব আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিল, তা গৌণ হয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষীয় প্রধান হিসাবে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীকে সামনে রেখে স্বাধীন ও দলীয় পতাকাহীনভাবে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রছাত্রী আন্দোলন ক্রমশ ফেটে পড়ে ‘কলরব’এর রূপে।
    যুব প্রজন্ম ছাড়াও সমাজের নানা অংশের মানুষ সক্রিয় সংহতিতে সামিল হন, সারা রাজ্য জুড়ে ছাত্রছাত্রী আন্দোলন ফেটে পড়ে, দেশ ও বিশ্ব জুড়ে এই প্রতিবাদের পাশে দাঁড়ান লক্ষ লক্ষ মানুষ।
    ‘কলরব’ থেকে উঠে আসা বৈচিত্র্যপূর্ণ সংগ্রামী ঐক্যের শিক্ষা নিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠিত পার্টি বা পার্টি ধারণার ওপর নির্ভরতা ছাড়াই ঐতিহাসিক এই আন্দোলন শুরুর ৪ মাস পরেও আজও জীবন্ত।
    স্বভাবতই, যারা এই মুহূর্তে এই ‘বহুবর্ণ সংগ্রামী ঐক্য’ চাইবেনা, চাইবে না এই আন্দোলন জয়যুক্ত হোক, তারা চাইবে আজ নতুন করে সংবেদনশীল সেজে আন্দোলনের মূল ফোকাস ঘুরিয়ে দিতে।
    মাননীয় রাজ্যপালের আজকের প্রেস-নোটের পর এই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় ঃ
    ১) ২৮ শে অগাস্টের ঘটনা তো ২৮শে অগাস্টই ঘটেছিলো, রাজ্যপাল এতো দিন কি করছিলেন ?
    ২) ঐ ঘটনায় অভিযোগকারিণীর অভিযোগের বিচার-বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন লড়াকু ছাত্রছাত্রীরা গণভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দাবী ৩ নং-এ স্পষ্ট করে লেখা আছে। এতদিন বাদে এই ঘটনা সম্পর্কে উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট চাওয়া বিষয়টিকে লঘু করা এবং ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ ধরণের কাজ !
    ৩) যৌন হেনস্থা বিষয়ে নিজেকে সংবেদনশীল করতে চাইছেন কি ত্রিপাঠিজী? এতদিন সংবেদন কোথায় ছিল? আর ১৭ সেপ্টেম্বরের অতো বড়ো যৌন হেনস্থা (পুলিশের তরফে) ওনার নজর এড়িয়ে গেলো, নাকি ইচ্ছে করে চেপে দিচ্ছেন ?
    ৪) রিপোর্ট চাওয়ার কিছু নেই স্যার, জানেন আপনি সবই ! আপনি আসলে উসকে দিতে চাইছেন ২৮শে অগাস্ট-পরবর্তী কিছু মতপার্থক্য ! কিন্তু জল অনেক দূর গড়িয়েছে। লড়াকু ছাত্রছাত্রীরা অভিজ্ঞতা থেকে ভালোমতো শিখে নিয়েছে কিভাবে পার্থক্যচর্চার পাশাপাশি সংগ্রামী ঐক্য মজবুত রাখতে হয়। সেটা তো এই আন্দোলনের অন্যতম রেসিপি।
    আর লিঙ্গ-সংবেদনশীলতা আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বিরোধিতা এই দুই প্রশ্নে ছাত্রসমাজের ভিন্ন ভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন জোরের জায়গা থাকতে পারে, কিন্তু কোন অংশের প্রতিবাদী চরিত্র এতো লঘু নয় যে, এই কারণে তারা লড়াইয়ের ঐক্য ভেঙে ফেলবে। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীকে লঘু করে অন্য দাবীতে আপাত-জোর ফেলার ইঙ্গিত আগেও থেকেছে কর্তৃপক্ষের নানা প্রস্তাবে, লড়াকু পড়ুয়ারা সে সব ফাঁদে পা দেয় নি, দেবেও না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন