এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তোমার অভিসারে, যাবো অগম পারে ...

    সিকি
    অন্যান্য | ১৩ আগস্ট ২০১৪ | ৪১৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিকি | 135.19.34.86 | ১৩ আগস্ট ২০১৪ ১১:৩৭649618
  • ছোটাইদির লেখা ভাট থেকে কপি পেস্ট করে দিলাম -

    যখন পায়ের তলায় সর্ষে পড়েছিল অর্থাৎ পা হড়কে গতিজাড্যে চলতে শুরু করেছিলাম , তখন সদ্য বে করেছি।সত্যি কথা বলতে কি, আমার প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতেই পায়ের তলায় প্রথম সর্ষে পড়ল।

    সে সময় কর্মসূত্রে আমরা ভিন্ন প্রদেশবাসী-ঠিক হোলো বিয়ের এক বছর পূর্তিতে আমি যাবো তাঁর শহরে-ছুটির মেয়াদ সাত দিন।
    ঠিক এক মাস আগে তাঁকে যেতে হ'ল ম্যানিলায়, ফেরার দিন অনিশ্চিত; কোম্পানীর লোকজন আর আত্মীয়স্বজনের সৌজন্যে আমার ভিসা যোগাড় হয়ে গেল-ঐ সাত দিন ম্যানিলায় কাটাবো।
    আগে যেমন ঠিক ছিল সেইমতো বিকেল বিকেল রাজধানীতে চড়ে বসলাম, পরদিন রাতে ফ্লাইট দিল্লি থেকে; জম্পেশ খেয়ে দেয়ে তো রাতে ঘুম দিয়েছি, যত বারই ঘুম ভাঙে , ট্রেনের নট নড়ন নট চড়ন নট কিচ্ছু।।।
    সকালে শুনি বিশাল লেট-কোথায় কোন মালগাড়ী উল্টে পড়েছিল সেজন্যই এই হাল-যত বেলা বাড়ে, গাড়ী তত লেট হয় আর আমার টেন্‌শন তত বাড়ে -খাবার দাবার, বাথরুমের জল একে একে ফুরিয়ে সন্ধ্যে ৭টায় দিল্লি স্টেশনে নামলাম-আমাকে তখন কোম্পানীর কর্তার সঙ্গে দেখা করতে হবে, তিনি যেন কি দেবেন সঙ্গে নিতে, টাকা বদলাতে হবে-রাত সাড়ে ১১টায় ফ্লাইট।নিজের স্নান, খাওয়া, পোষাক বদলানোর কথা সেই মুহূর্তে ভাবাটাই বিলাসিতা।
    গাড়ী খারাপ হওয়া ইত্যাদি আরো কিছু বিপর্যয় পেরিয়ে প্লেন ধরতে পেরেছিলাম, ভোররাতে হংকং নামতে হবে, সেখান থেকে ম্যানিলা-সেটাই আমার প্রথম বিদেশে পাড়ি।

    ভোররাতে হংকং পৌঁছলাম-খিদেয় চোখে অন্ধকার-আগের দিন প্রায় কিছু পেটে পড়ে নি, প্লেনে মধ্যরাতে যখন খেতে দিয়েছিল তখন আমি ঘুমিয়ে কাদা।লাউঞ্জে ঢুকেই সসেজ আর কোক কিনে দাম দিতে গিয়েই মাথা বোঁ করে ঘুরে গেল। প্রথম বিদেশ পাড়ি, ডলার খরচ করতে গেলেই তাকে পঁয়তাল্লিশ দিয়ে গুণ করে ফেলি-দুটি সসেজ আর কোকের ক্ষেত্রে সেই গুণফলে আমি হতবাক-আর কিছুটি দাঁতে কাটলাম না বাকি বারো ঘন্টা-বিকেল ৪টেয় ম্যানিলার প্লেন।
    সেই প্লেনে হাস্যময়ী বিমান সেবিকা খাবার দিয়ে গেলেন-নুডলস, সব্জী-খেতে গিয়ে দেখি নুডলসের মধ্যে চিংড়ি মাছ-কি সব্বনাশ-আমার যে চিংড়িতে অ্যালার্জি-এত ভয়ানক বোকা ছিলাম বা খিদের জ্বালায় এতটা বোকা হয়ে গিয়েছিলাম যে খাবার বদলে দিতে না বলে চিংড়ি ফেলে দিয়ে শুধু নুডলস খেয়ে নিলাম গবগবিয়ে। তারপর শুরু হল খেলা।

    মিনিট দশের মধ্যে প্রবল বমনেচ্ছা-পাশের চীনা /জাপানী সহযাত্রীর তখনও খাওয়া শেষ হয় নি, বেচারীকে ঠেলে মেলে আমি বাথরুমে দৌড়-পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে বেরোতেই বল্লো প্লেন ম্যানিলায় ল্যান্ড করছে।প্লেন ল্যান্ড করল, দরজা খুললো, যাত্রীরা লাইন দিয়ে নামছে-আমার আবার প্রবল বমনেচ্ছা-কি ভাবে যে ইমিগ্রেশন পেরিয়ে, লাগেজ কালেক্ট করে বাইরে বেরোলাম বিস্তারিত করব না-আমার গুজরাতি কাজকরা আনকোরা শখের চাদরটি ম্যানিলা এয়ারপোর্টের ট্র্যাশক্যানে বিসর্জন দিতে হয়েছিল এটুকু বলাই যথেষ্ট।
    বাইরে নবীন স্বামীটি কম্পিত বক্ষে দন্ডায়মান-এয়ারপোর্টের কাচ দরজা দিয়ে যিনি বেরোলেন তাঁকে দেখে তো স্বামী ভির্মি খান আর কি-বৌ না চিংড়ি? আমার ততক্ষণে চোখ মুখ ভয়াবহ ফুলে গেছে, যে নতুন শালোয়ার কামিজটি পরেছিলাম দুদিন আগে তার থেকে হলুদ রং বেরিয়ে সমস্ত মুখ গলা হলুদ।।।
    হোটেলে পৌঁছে, ডাক্তার বদ্যি, ইনজেকশন-

    ছুটির মেয়াদ তো সাত দিন, তার মধ্যে দু দিন চিংড়িতেই উৎসর্গীকৃত-হাতে রইল পাঁচ। শহর দেখা, নিমন্ত্রণ রক্ষা সেরে একটা সকাল পাওয়া গেল তাল ভল্ক্যানো দেখার।
    ম্যানিলা থেকে প্রায় ৭০/৮০ কিলোমিটার দূরে লেক, তার মধ্যে একটা ছোটো দ্বীপে তাল ভলক্যানো, মজার ব্যাপার হ'ল, এই আগ্নেয়গিরির ক্রেটারেও আরেকটি লেক, আমাদের অত্যুৎসাহী ফিলোপিনো ড্রাইভার বললেন ক্রেটারের লেকের মধ্যেও নাকি।।।
    ক্রেটারের লেকে সাঁতার কাটা যায় অল্প সময়ের জন্য।
    আমাদের সময় খুব কম -চোখের দেখা দেখেই ফিরবো।
    পাহাড়ী পথ, গাড়ী এঁকে বেঁকে উঠছে-হঠাৎ কোথা থেকে মেঘ না কুয়াশায় চারিদিক একদম ঢেকে গেল-হেড্‌লাইট জ্বালিয়ে একধারে দাঁড়িয়ে থাকা -সমস্ত পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন যেন-কিছু দেখা যায় না কোন দিকে-অনেকক্ষণ পরে আস্তে আস্তে একটু পরিষ্কার হ'ল -গাড়ী আবার চলতে শুরু করল।
    লেক-এর কাছে পৌঁছে ডাক ছেড়ে কাঁদার যোগাড়-লেকের সামনে টুকু সামান্য দেখা যাচ্ছে-বাকি সব কুয়াশায় ঢাকা-কোথায় আগ্নেয়গিরি কোথায়ই বা তার মাথায় লেক।।।
    অনেকে বোটে তারপর ট্রেক করে ক্রেটার লেকে যায়, আমাদের তেমন কোন প্ল্যান ছিল না, লোকজনের কথা শুনে ভেবেছিলাম এভাবেই দেখা যাবে বেশ।
    অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে ফিরে চললাম।
    হাঠাৎ-ই আমাদের ড্রাইভার চেঁচিয়ে উঠলো-শিগ্গির পিছনে ঘুরে দেখে নিন, এক্ষুণি আবার ঢেকে যাবে-ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি-দূরে লেকের মাঝখানটিতে পাহাড়-চূড়াটি তার কেউ যেন কামড়ে খেয়ে গেছে-কেমন গা ছম ছম করে-আর সেই রহস্যময় মেঘ কুয়াশা দৌড়ে দৌড়ে আসছে তাকে ঢেকে দিতে ।সেখান থেকে গাড়ী ঘোরানোর কোনো উপায় নেই-যতক্ষণ না সম্পূর্ণ পাহাড়টি কুয়াশায় ঢেকে গেল আমরা তাকিয়েই রইলাম।
    শুনলাম তাল ভলক্যানোটি এখনও সক্রিয়-মাঝে মাঝে ছোটোখাটো উদ্‌গীরণ হয়-তখন এই পাহাড়ী পথসমূহ, আশে পাশের জনবস্তি অন্ধকারে ঢেকে যায়-হাতে লন্ঠন নিয়ে পথ চলতে হয়--

    দু বছর পরে, আবারও ফিরে গিয়েছিলাম রহস্যময় তাল-এ, একই অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে এসেছি।

    এই আধো দেখা, না-দেখার জন্যই মনে থেকে যায় এই হ্রদ, হ্রদের মাঝে আগুনেপাহাড়, সেই পাহাড় চূড়োয় হ্রদ,সেই হ্রদের মাঝে।।।জানি না।।।
    হয়তো এ'জন্যই পায়ের তলার সর্ষেদানাটি এখনও ঝেড়ে ফেলতে পারি নি।
  • সিকি | 135.19.34.86 | ১৩ আগস্ট ২০১৪ ১১:৩৮649619
  • ভাগী সোসেনের গপ্পোটা কি কেউ ভাট থেকে কমপাইল করে তুলে দিতে পারবে?
  • de | 69.185.236.54 | ১৩ আগস্ট ২০১৪ ১৩:৩৬649620
  • ছোটাইদির গপ্পো দারুণ!!!

    সোসেনও লিখুক এখেনে!
  • শিবাংশু | ১৩ আগস্ট ২০১৪ ১৫:৫১649621
  • দানাটি থাক... কতোদিন হলো? :-)
  • kiki | 122.79.37.251 | ১৩ আগস্ট ২০১৪ ২০:১৭649622
  • ঃ)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন