এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সিপিয়া রঙের ছবি

    Ishani
    অন্যান্য | ১৯ জুলাই ২০১৪ | ১১৯৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ishani | 233.239.152.116 | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১১:০৪647101
  • সিপিয়া রঙের ছবি
    ................................

    ( ১ )

    আজ চোখে জড়িয়ে ছিল ঘুমের আঠা | হঠাত মনে হল কে যেন ঝুমঝুমিয়ে চলেছে | বৃষ্টি | জলের দানাগুলো পীচের রাস্তায় পড়ে একটু একটু ছিটকে যাচ্ছে এধার ওধার | গাছগুলো স্নান করে উঠে সবুজ রঙের ভিজে চুল মুছতে ব্যস্ত | আকাশের মুখ ভার | কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ ফুলিয়ে একসা | তিস্তা হাত বাড়িয়ে দিল জানালার গ্রীলের ফাঁক দিয়ে | দূর ছাই , রেইন শেড এমন বিশ্রী , জলের ঝিরিঝিরি নাগালের বাইরে ! মাটি ফুঁড়ে ভিজে গন্ধ | দুপুরবেলা টেলিফোনটা একঘেয়ে সুরে বেজে যাচ্ছিল | ঘুঘু পাখির মতো |
    -- হ্যালো …
    -- এতক্ষণ লাগল ফোন তুলতে ? কী রাজকার্য কর সারাদিন ? শোনো , সাইকিয়াট্রিস্ট সময় দিয়েছেন সন্ধে ছটায় | আজকেই | চেনো তো জায়গাটা | একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে যেও |
    -- পাগলের ডাক্তার ?
    -- অশিক্ষিতর মতো কথা বোলো না | পাগলের ডাক্তার মানে ? মনোরোগ বিশেষজ্ঞ |
    -- আমার কি মনের রোগ ?
    -- তোমার যে কী , তা বোঝা শিবের বাবারও অসাধ্য | তোমার যা রোগ, তার নাম সুখে থাকে ভূতে কিলোনো | যাক গে, শোনো , মিটিং -এ ঢুকছি | ঠিক সময়ে পৌঁছে যেও | আর গিয়ে দয়া করে আমাকে একটা এস এম এস করে দিও |

    তিস্তা ফোন নামিয়ে চুপটি করে বসে থাকল কয়েক মিনিট | তারপর ডায়াল করল | অন্য নম্বরে |

    -- কী ব্যাপার ? এখন ফোন করলে যে ?
    -- না, মানে আমি ডাক্তার দেখাতে যাব |
    -- ও , একাই ?
    -- হুঁ |
    -- বেশ | সাবধানে যেও |
    -- জিজ্ঞেস করলে না তো..কোন ডাক্তার , কেন ডাক্তার …
    -- সে তো বলার হলে তুমি নিজেই বলবে তিস্তা | না বলতে চাইলে বলবে না | তুমি তো জানো , আমার অযথা কৌতূহল নেই |
    -- জানি |
    -- যাক গে, তুমি তো আবার তালকানা টাইপ | পৌঁছে বরং খুব অসুবিধা না হলে একটা মেসেজ কোরো |
    -- করব |

    এবার উঠতে হবে | তিস্তা একটা অফ হোয়াইট দক্ষিণী তাঁতের শাড়িতে , অফ হোয়াইট ব্লাউজে , ছোট্ট মেরুন টিপে , হালকা লিপগ্লসে প্রসাধিতা অথচ প্রসাধনহীন | এটাই তিস্তা | একটু সময় হাতে নিয়ে বেরোনই ভালো |

    রিসেপশনে বসে একটা সাত বাসী সিনেমা পত্রিকার পাতা উল্টোচ্ছিল সে | কেন যে এরা সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলো রাখে না কে জানে ! অবশ্য রাখলেও কি আর পড়ত সে ? অন্যমনস্ক চোখ ঘুরে ফিরে পাক খায় একই পাতায় | ঠিক ছ'টায় ডাক পড়ল ভেতরে | বিশেষজ্ঞর স্ত্রীলিঙ্গ কী , কে জানে ! নাকি অনেক জ্ঞানগম্যি হয়ে গেলে আর পুরুষ নারী ভেদ থাকে না !

    ঘরের চারিদিকে চোখ বোলাচ্ছিল তিস্তা | কী ভীষণ সাদা আর ফাঁকা দেওয়াল | তিনটে দিক খাঁ খাঁ করছে | শুধু একদিকের দেওয়ালে একটা বিশাল বড় ল্যান্ডস্কেপ | এই ধরনের ছবি দেখলে তিস্তার মাথার ভেতরটা কেমন শূন্য হয়ে যায় | চিরকাল |

    -- বসুন তিস্তা |

    ঘন নীল কুশন মোড়া চেয়ার | শরীর ডুবে যায় | নীল আলো | নাকি নীল নয়..তিস্তার চোখে নীল ঠেকছে ! টেবিলের ওপারে রীমলেস চশমার আড়ালে একজোড়া ঝকঝকে চোখ | ন্যাচারাল নেলপলিশে সাজানো আঙুলগুলো একটা কাচের কাগজচাপাকে ঘোরাচ্ছে খুব আস্তে আস্তে | কী পরেছেন উনি ? ও : , শাড়িই তো ! বা : কটন ব্যোমকাই | দুর্ধর্ষ দেখতে তো ! তিস্তা একটু একটু করে সহজ হচ্ছিল |

    -- কিছু বলুন তিস্তা |
    -- কী বলি বলুন তো ?
    -- এই আপনার যা মনে হয় |
    -- আমার ? আমার কী মনে হয় , তাই তো জানি না |
    -- ছোটবেলার কথা ..
    -- সবার ছোটবেলাই এক | লাল ফ্রক , চুলে রিবন , স্কুলে পরীক্ষা , বৃষ্টিতে ভেজা , চুরি করে আচার আর টোপাকুল...
    -- সবার ছোটবেলাই এক ? তাই কি তিস্তা ? ধরুন যে বাচ্চাটার খুব ছেলেবেলায় মা মারা গেছেন বা বাবার ফ্যাক্টরিতে লক আউট ...
    -- দেখুন ডক্টর , আমি আপনার আমার মতো মেয়েদের কথা ভেবে কথাটা বলেছি |
    -- বেশ | তবে..আমি ডক্টর নই , আমি মিত্রা |
    তিস্তা একটু হাসল |
    --মিত্রা | বন্ধুনী | খুব সিগনিফিক্যান্ট নাম কিন্তু !

    ওপক্ষের ঠোঁটেও হাসি |

    -- তিস্তা , এক কাজ করি | আপনার বিয়ের গল্প বলুন | প্রেম করে ?
    -- জানি না তো ! ভাবিনি কখনো | প্রেম ঠিক কী করে হয় ? হ্যাঁ , চিনতাম | ও আমার থেকে বয়সে বেশ খানিক বড় |
    -- কতটা তিস্তা ?
    -- সাত বছর | পারিবারিক চেনাজানার সূত্রেই |
    -- বিয়ের আগে ঘোরাঘুরি ?
    -- কিছুটা |
    -- কোনো ঝামেলা ? বাড়িতে ?
    -- না : |
    -- বা : , দারুণ তো ! আপনাদের ছেলেমেয়ে ...
    -- একটি | হোস্টেলে থাকে | উইকএন্ডে আসে |
    -- আপনার ছেড়ে থাকতে কষ্ট হয় ?

    তিস্তা অবাক চোখে তাকাল |

    --কষ্ট হবে কেন ? দেখা তো হয় | প্রতি সপ্তাহেই | আর ও তো ভালই আছে | বন্ধুবান্ধব, পড়াশুনো , গানবাজনা , ক্যাম্প ...

    -- বাড়িতে তার মানে আপনারা শুধু দু'জন ? গল্প আড্ডা হয় ?
    -- কথা হয় |
    -- কথা আর আড্ডা এক নয় তিস্তা |
    -- নয় ? কী জানি !
    -- বেড়াতে যান ? দেশে , দেশের বাইরে, সিনেমা , থিয়েটার ..
    -- যাই তো !
    -- আপনার কোনো বন্ধু আছে তিস্তা ?

    তিস্তা নড়েচড়ে বসল | তারপর স্পষ্ট গলায় বলল ,
    -- আছে |
    -- অনেক পুরনো ? অনেক দিনের বন্ধু ?
    -- পরিচয়ের নিরিখে বছর পাঁচেক , তবে বিনিময়ের নিরিখে ..অনেক দিনের |
    -- পুরুষ না মহিলা ?
    -- তাতে কী এল গেল ?
    -- না: , জাস্ট কৌতূহল |
    -- মিথ্যে কথা বলতেই পারতাম | কিন্তু মিথ্যে বলি না আমি | পুরুষ | আপত্তি ?
    -- আরে না | আপত্তি হবে কেন ? আচ্ছা , এই এতক্ষণ কথা বলে কি আমাকে খুব পিসিমা টাইপ মনে হচ্ছে আপনার ?

    তিস্তা হেসে ফেলল |
    -- স্বামী হিসেবে আপনার হাজব্যান্ডকে ১০ এ কত নম্বর দেবেন তিস্তা ?
    -- সাত |
    -- সাত কেন ? আপনাকে কি ভালোবাসেন না ? যথেষ্ট মনোযোগী নন ? অন্য কোনো দোষ ? মদ , সিগারেট , মহিলা ..
    -- না: . ওই জন্যই তো সাত |
    -- তিন নম্বর কাটলেন কেন তিস্তা ?
    -- সত্যি বলব ? মন খুলে ? একটু যেন হৃদয়হীন |
    -- মানে ? কখনো কখনো বিশ্রীভাবে কথা বলেন ?
    -- ঠিক তাও নয় |
    -- তাহলে ?
    -- উমম , এই ধরুন আমার ইচ্ছে করছে না যে রান্না করি , বললাম ; তাও বলবে না ,'' আজ রান্নাটা বাদ দাও |" মানে বলবে ; কিন্তু যেদিন ওর ইচ্ছে হবে বাইরে খেতে | অফিস চলে গেল , আমি একা ..বাড়িতে সারাদিন...ঘুরঘুর করি , এখানকার জিনিস ওখানে রাখি , টুকটাক বই পড়ি .. বাড়িটা যেন গিলে খেতে আসে ... তবু একবার সারাদিনে ফোন করে খোঁজ নেবে না | ফিরে এসেও নিজেরটুকু ঠিকঠাক পরিপাটি হলেই হল | ছেলে ছোট ছিল যখন , ওকে নিয়ে পার্কে বেড়াতে যেতেও আমি, জ্বরে রাত জেগে মাথায় জলপটি দিতেও সেই আমিই | কেমন জানি , অদ্ভুত | ভালো আছি ..যাকে সবাই ভালো থাকা ভাবে | কিন্তু কোথায় যেন একটা কিছু নেই | মানে ছিল হয়ত কখনো...হারিয়ে গেছে | নাকি হারিয়ে ফেলেছি | কিংবা আছে ; আমি দেখতে পাইনি , দেখতে পাই না.. | আসলে যে যার নিজের মতো তো | আমি কি আপনাকে বোঝাতে পারছি , মিত্রা ?
    -- আর কোনো অভিযোগ ?
    -- অভিযোগ নয় তো ! অনুযোগ | কিংবা তাও নয় , স্টেটমেন্ট | আসলে আমাদের পছন্দ অপছন্দগুলো মেলে না তো ! ও খুব কৃতী | কাজের জায়গায় খুব জনপ্রিয় | কিন্তু মানে , কেমন একটু রোবটের মতো | সব কিছু মেপেজুপে | আমার মতো বেনিয়মী বেহিসেবী স্বপ্নে থাকা টাইপ নয় | আমাকে নিয়ে..মনে মনে..হাসে বোধহয় !
    -- আপনি বুঝি খুব রোম্যান্টিক তিস্তা ? আর আপনার প্রিয় বন্ধুটি ? সেও আপনার মতো ? কত নম্বর দেবেন তাকে ? বন্ধু হিসেবে ? নাকি প্রেমিক হিসেবে দিতে চান ?
    -- না :, আমাদের সম্পর্কটা ঠিক বন্ধুর নয় , প্রেমেরও নয় ..কী জানি কিসের ! একটা নির্ভরতা আছে | বিশ্বাস আছে | আমরা সুখের ভাগ যতটা না করি .. দু:খগুলো ..কী জানি ! কেমন একটা আনডিফাইন্ড ব্যাপার...
    -- বেশ তো..এই সম্পর্কটাকে কত নম্বর দেবেন তিস্তা ? দশে দশ ?
    -- না না ... সাড়ে সাত ..মেরেকেটে আট....
    -- কেন তিস্তা ? এতগুলো নম্বর আপনি এখানেও কেন কাটলেন ?
    -- উদাসীনতার শাস্তি হিসেবে, বুঝলেন মিত্রা | হৃদয়হীনতার জন্য তিন নম্বর কাটা গেল আর উদাসীনতার জন্য আড়াই |
    -- কী রকম ? একটু শুনি |
    -- এই যেমন , আমি এখানে আসছি , ও জানতেই চাইল না..কেন |
    -- সেটা হয়ত আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করেন , তাই | উদাসীনতা নাও তো হতে পারে !
    -- আমি যদি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাই... ওর কিছুই হেলদোল হবে না | আমি জানি |
    -- আপনি কি বেরোনোর কথা ভাবছেন তিস্তা ?
    -- না তো ! বললাম | মনে হয় |
    -- শুধুশুধুই মনে হয় ? নাকি ওনার আচরণ এতদিন ধরে সেই কথাই ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে ?
    -- না তো ! কিন্তু কেমন যেন..মাঝেমাঝে কোল্ড আর ডিসট্যান্ট |
    -- ও | তার মানে উদাসীনতা ? হৃদয়হীনতা নয় ? হাজব্যান্ডকে বেনিফিট অফ ডাউট দিতে আপত্তি ? তিস্তা ? কেন ? উনি বন্ধু হতে পারেননি বলে নম্বরের ফারাক ? আপনিই তো বললেন তিস্তা ..সবাই একরকম নয় | অন্য অন্য রকম...|

    তিস্তা দু'হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরল | চোখ তুলে তাকাল উল্টোদিকের দেওয়ালের ল্যান্ডস্কেপটার দিকে | আকাশ আর জল | মিশে গেছে প্রায় -অদৃশ্য দিগন্তরেখায় | একটা থেকে অন্যটাকে আলাদা করা যাচ্ছে না তো ! সমুদ্র বুঝি ? আকাশ আর সমুদ্র | কী নীল বিস্তার ! দুইয়ের মধ্যে ফারাক কত ? কত নম্বরের ? আধ ? এক ?

    তিস্তা দু'হাতে মুখ ঢেকে হু হু করে কেঁদে উঠল |

    -- জানি তো ! উদাসীনতা মিশে যায় হৃদয়্হীনতায় | সময়ে সময়ে | কিন্তু... সবাই হৃদয়হীন...আমার আশেপাশে সবাই হৃদয়হীন... এই সত্যিটা নিয়ে আমি কীভাবে থাকি বলুন তো ! তাই..ওই আধ নম্বর এক নম্বরে ফটো ফিনিশে এগিয়ে থাকে আমার বেঁচে থাকার পাসওয়ার্ড |

    (২ )

    অধৈর্য হাতে হ্যান্ডব্যাগটা আঁতিপাতি করে খুঁজছিল তিস্তা | উফ, দরকারের সময় একটা জিনিস যদি হাতের কাছে পাওয়া যায় ! এবার পুরো ব্যাগটাই উল্টে দিল সে | খাটে জংলা ছাপের চাদরে ছড়িয়ে গেল তিনটে সেফটিপিন , একটা চিরুনি , টিপের পাতা , ক্ষয়ে আসা লিপস্টিক , একদম নতুন একটা ভেসলিন , কবেকার পুরনো ক'টা রসিদ , না -খোলা ছোট্ট মাউথ ফ্রেশনারের শিশি , এক প্যাকেট ফেস টিস্যু , ট্যামপনের বাক্স | ছোট্ট একটা নোটবুক আর একটা জেল পেন | তিনটে কুঁচকে থাকা রুমাল আর বড় নোট আর খুচরো মিলিয়ে শ' পাঁচেক টাকা | নেই তো ! এবার সাইডের ছোট্ট খাপে হাত ঢুকিয়ে দিল তিস্তা | এই তো ! আইভরি ফিনিশ ভিজিটিং কার্ড | ডক্টর মিত্রা সেনশর্মা | কনসালটেন্ট সাইকো অ্যানালিস্ট | মোবাইল আর চেম্বারের নম্বর | পেছন ফিরে দেওয়াল ঘড়িতে সময় মিলিয়ে বিড়বিড় করে নম্বর আওড়াতে আওড়াতে ফোনের বোতাম টিপতে লাগল তিস্তা | এখন অসময় | মোবাইলই ভালো |

    ওপাশে রিং হচ্ছে | বা: , গান বাজছে... আজ যেমন করে গাইছে আকাশ....| তিস্তা অন্যমনস্ক চোখে তাকাল জানলার বাইরে | শুকনো রাগী আকাশ একটুকরো | ঠিক ন' টা রিঙের পর ওপাশ থেকে ..
    -- মিত্রা বলছি |
    -- আমি | আমি বলছি |
    -- নামটা বলবেন প্লীজ ?
    -- ওহ , স্যরি | আমি তিস্তা | আপনার কাছে কিছুদিন আগে...
    -- নামটুকুই যথেষ্ট তিস্তা | যা কিছু অন্যরকম, আমি ভুলি না | বলুন |
    -- আপনার সঙ্গে একটু দেখা করা যাবে ?
    -- নিশ্চয়ই | পরশু ? বিকেলে ?
    -- পরশু ! সে যে অনেক দেরী মিত্রা | কাল হয় না ? দুপুরে ? আপনার চেম্বার তো দুপুর তিনটে থেকে | প্লীজ মিত্রা ..
    ওপারে আধমিনিট সব চুপ | তারপর..
    -- আসুন | দেখা হবে |

    ছড়িয়ে থাকা জিনিসগুলো মুঠো করে করে ব্যাগে ভরছিল তিস্তা | পুরনো রসিদ বাজে কাগজের ঝুড়িতে | আরও কিছু টাকা রাখতে হবে ব্যাগে | কাল লাগতে পারে | ক্রেডিট কার্ড আছে বটে দুটো , কিন্তু ভরসা করে নিয়ে বেরোয় না তিস্তা | একা বেরোলে | কী জানি ! যদি ভুল করে ফেলে আসে দোকানে | আজকাল মাঝেমাঝেই ভুল হয়ে যায় | টুকিটাকি বাজার করে হয়ত ব্যাগ খুলে দেখে টাকা কম পড়েছে | খুব লজ্জা করে | অবশ্য এখন আর বড়সড় বাজার একা করেই বা কোথায় ! সন্দীপের সঙ্গে যায় | সন্দীপই দাম মেটায় | কাগজে বা প্লাস্টিকে |

    দুপুরেই ভালো | সন্দীপ অফিসে | টুক করে ঘুরে আসা যাবে | তেমন হলে বলে রাখবে..ক'টা টুকিটাকি জিনিস কেনার আছে | সন্দীপ জানতেও চাইবে না কী জিনিস !
    শাড়ি জামা বের করে রাখতে হবে আজ | কোথায় যে ঘাপটি মেরে থাকে ব্লাউজগুলো ! কিছুতেই আর ঠিকটা চট করে নজরে পড়তে চায় না | সকালে রান্না আছে | একেবারে সময় হবে না | তারপর কাজের লোক , স্নানপর্ব , ভাতপর্ব ..আজকেই ভালো | তিস্তা এখন থেকে সিস্টেম্যাটিক হবে !

    সন্দীপ আধশোয়া হয়ে টিভি দেখছিল | এদিকে বুকের ওপর আই প্যাড | সেটাতেও খুটুরখুটুর | আচ্ছা, দুটো কাজ পারে কী করে একসঙ্গে ?
    -- শুনছ !
    -- শুনছি | বল |
    --কাল দুপুরে একটু বেরোব | ক'টা জিনিস কেনার আছে |
    -- আজকাল বুঝি বেরোনোটা অনুমতিসাপেক্ষ ?
    -- বললাম |
    -- শুনলাম | তবে দয়া করে টাকাপয়সা রেখো সঙ্গে | আর বাড়ির চাবি | তোমার তো আজকাল ভুলভাল হয়ে যায় এসব | আমার ফিরতে রাত হবে | আটটা পর্যন্ত মিটিং |
    তিস্তা মনে মনে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলল | আটটা ! সে অনেক সময় | এত ফ্রী টাইম তাকে আজকাল দেয় কে !

    তিস্তা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ির কুঁচি ঠিক করছিল | আজ একটা অরেঞ্জ কোটা | তাতে কাঁথা স্টিচ | এটা দিয়েছিল অনুবৌদি | অনেকদিন আগে | অরেঞ্জ ব্লাউজটা …আজ না | দুপুরে বিশ্রী ক্যাটকেটে দেখাচ্ছে | অফ হোয়াইট সুতোর কাজ আছে | ওই রংটাই ভালো | আর তো সব ছিমছাম | দরজার ইয়েল লক টেনে দিল তিস্তা | তারপর... ব্যাগ খুলে দেখল চাবি নিয়েছে কিনা !

    আজ আর কোনো ফোন করেনি কাউকে | কেন করেনি ? কী বলবে মিত্রাকে ? আদৌ কিছু বলার আছে কি ?
    ফোন আসেওনি | অথচ ... নিয়মমাফিক আসার কথা তো ছিল | আশ্চর্য ! তিস্তার কেন সারাটা সকাল মনেই পড়ল না ..ফোন আসেনি !

    চেম্বার এখন ফাঁকা | রিসেপশনিস্ট মেয়েটা মন দিয়ে মাথা নীচু করে নখ ফাইল করছে | তিস্তাকে দেখে চমকে উঠল |
    -- ভেতরে যান ম্যাডাম | উনি ওয়েট করছেন |
    তিস্তা ঘাড় ঝাঁকিয়ে দু'পা দূরে ভারী নীল পর্দাটা সরাল ডান হাত দিয়ে |

    -- আসুন তিস্তা |
    -- মিত্রা ..মানে আমি...মানে কেন যে এলাম , কী যে বলি ..
    -- তাড়া নেই তো কিছু ! আমরা না হয় এমনি গল্প করি | বা: শাড়িটা খুব আনইউজুয়াল তো ! কোত্থেকে ?
    তিস্তা খানিক উজ্জ্বল হল |
    -- আমার এক বৌদি দিয়েছিল | কোনো একটা বুটিকের | ভালো না ? অনেকদিন বাদে পরলাম |
    -- খুব ভালো | আমার টেস্টের সঙ্গে এক্কেবারে মিলে যায় | আজ আমরা একটু চা খাই তিস্তা ? আমি জাস্ট লিকার | সামান্য চিনি |
    --- আমিও তাই !

    টেবিলের ওপরে ঘন্টি বাজিয়ে বাইরে বসে থাকা মেয়েটিকে দু'কাপ চা আনতে বলল মিত্রা | টুকিটাকি কথা | অল্প হাসাহাসি | মিত্রা | বন্ধুনী | তিস্তা আস্তে আস্তে সহজ হয়ে আসছিল |

    চায়ের কাপটা ভারী সুন্দর | একেবারে স্বচ্ছ কাচের | প্লেটটাও | কোনো নকশার হিজিবিজি নেই | যত হিজিবিজি আমাদের মনে !

    -- আপনি কি কোনো কারণে ক্লান্ত , তিস্তা ?
    তিস্তা চমকে উঠল | চা চলকে পড়ল প্লেটে |

    -- কী করে জানলেন ? ক্লান্ত ? হুঁ , তাই তো !
    -- কেন তিস্তা ? বাড়িতে কাজের চাপ খুব বেড়েছে ?
    --কই না তো ! তবু খুব ক্লান্ত লাগে জানেন ! শরীর ভেঙে ঘুম পায় | কিন্তু ঘুম পালিয়ে যায় | এত ডাকি....
    -- কাকে ডাকেন তিস্তা ?
    -- ঘুমকে ...ঘুমকে...
    -- -- বই পড়েন না ? গান শোনেন না ?
    -- কত বই পড়ব বলুন তো ! গান...সেও তো আজকাল ভোলাতে পারে না কিছুই...
    -- আপনি গান করতে পারেন তিস্তা ? শিখেছেন কখনও ? ছোটবেলায় ?
    -- না : | না : |
    -- দু'বার বললেন কেন তিস্তা ?
    -- আপনি বিশ্বাস করবেন না ভেবে জোর দিলাম |
    -- বিশ্বাস করব না কেন ? আপনিই তো আগের দিন বললেন , আপনি মিথ্যে কথা বলেন না |
    তিস্তা একটু লাল হল |
    -- আমি যা শিখেছিলাম ..ওকে গান বলে না | খামখেয়াল |
    -- আপনার স্বামী ..
    --সন্দীপ |
    -- ওনাকে শোনাননি ?
    -- না তো ! শোনাবার মতো গান জানিই না আমি | ও ইংরিজি গান শোনে খুব | ইংরিজি বই পড়ে |
    -- হুম | আর ছেলেকে ? যখন ছোট ছিল ?
    -- আয় ঘুম যায় ঘুম ...আমি ঘুমোই না ! ঘুম আসে না ...
    -- আপনার বন্ধু ? সে জানে যে আপনি এক সময় গান করতেন ?
    -- জানি না | মনে নেই |

    তিস্তার চোখ দুটো নিষ্প্রভ |

    -- ক্লান্তি কিসের তিস্তা ? কী ইচ্ছে করে আপনার ? ঘুমোতে ? শুধুই ঘুমোতে ?
    -- আমার ..আমার মরতে ইচ্ছে করে | রোজ | রোজ মরতে ইচ্ছে করে | কোনদিন রান্নাঘরে, কোনদিন বাথরুমে, কোনদিন শোবার ঘরে , কোনদিন বারান্দায় ...
    -- কীভাবে ?
    -- রান্নাঘরে মনে হয় শাড়ির আঁচলে টুক করে জ্বলন্ত দেশলাই , বাথরুমে জলভরা বাথটাবে মাথা ডুবিয়ে রাখা , শোবার ঘরে অনেক ছেঁড়া ঘুমের ওষুধের ফয়েল , বারান্দায় ঝুঁকে দেখলেই এত নীচে মাটি ..এত ওপরে আকাশ..যেন পাখি হয়ে উড়ে যাই...
    -- ড্রয়িং রুম বাদ ?
    --- হ্যাঁ হ্যাঁ , ওখানেও | না..ওখানে নয় | শিরা কেটে কার্পেটে শুয়ে থাকলে রক্তের দাগ লেগে যাবে | খুব দামী কার্পেট | সন্দীপের শখের |
    -- এত অভিনব আইডিয়া | তা আটকাচ্ছে কোথায় ?
    -- ইচ্ছে আছে বুঝলেন মিত্রা | ইচ্ছে আছে খুব | কিন্তু উপায় নেই | এই মনে পড়েছে ! এটার জন্যই আপনার কাছে আসা | উপায় নেই |
    -- উপায় নেই কেন ?
    -- সাহস নেই | এক্কেবারে সাহস হচ্ছে না | ইচ্ছে আছে , আবার ভয়ও করছে | লুকিয়ে প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে কালিঘাটে বিয়ে করার মতো খানিকটা |
    -- জানলা দিয়ে আকাশ দেখেন তিস্তা ?
    -- সন্দীপ খালি জানলা বন্ধ করে দেয় | কাচের জানলা | নাক মুখ ঠেসে ধরি | হাওয়া আসে না | ভুলে গেছি....
    -- উনি অফিস বেরিয়ে গেলে খুলে দেবেন |
    -- খুলি তো ! তারপর বন্ধ করতে ভুলে যাই | টের পেয়ে বকে | খালি বলে ধুলো বালি মশা ....
    -- বারান্দায় যান তো ?
    -- মিস্ত্রী ডেকেছে | বারান্দায় গ্রিল আর কাচ বসবে | প্রাইভেসি | সেন্ট্রালি এয়ার কন্ডিশনড বাড়ি পছন্দ ওর |
    -- আপনার ?
    -- আমার ? কী জানি !
    -- আপনি আমার কাছে ঠিক কী চান তিস্তা ?
    তিস্তা নড়েচড়ে বসে বড় করে শ্বাস নিল একটা |
    --কী চাই ! আপনি আমাকে ওই ঘরটা থেকে বেরোবার রাস্তা বলে দিন |
    -- কোন ঘর তিস্তা ? সন্দীপের ?
    -- ওই ঘর ! যে চারটে দেয়াল আমায় গিলে খেতে আসে .. চারদিক থেকে একটু একটু করে এগিয়ে আসে আমার দিকে চিতাবাঘের মতো গুঁড়ি মেরে ... জানলা এঁটে বন্ধ করা , ঘরে স্তূপ যত আবর্জনা ..আমার গা ঘিনঘিন করে ওঠে | নিজের গন্ধে নিজেরই পাগল পাগল লাগে ....উফফ , অসহ্য !
    -- জানলা না হয় নাই খুললেন মিত্রা ...দরজা খুলে ফেলুন..পা রাখুন চৌকাঠে ...পেরিয়ে যান ...

    তিস্তা অসহায়ের মতো খিমচে ধরল ট্রের ওপরে বিছানো সাদা লেসের বাহারী ট্রেক্লথ | ফিসফিস করে বলল ...

    -- পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি !
  • byaang | 132.172.233.86 | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১১:১৬647109
  • নিঃশ্বাস বন্ধ করে পড়ছি।
  • সায়ন | 59.200.243.147 | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১২:০৮647110
  • যতিচিহ্ন, বানান... খুব যত্ন করে লেখা।
    গল্প প্রসঙ্গে, এটা কি শেষ হয়ে গেছে?
  • Ishani | 233.239.152.116 | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১২:২৫647111
  • সায়ন ,
    আমি খুব একটা গল্পটল্প লিখি না | মানে লিখতে পারি না | বড় কিছু ভাবনাচিন্তা মানেই ছড়িয়ে লাট করে ফেলি | আমি তো ভেবেছিলাম..শেষ হয়ে গেছে | আর কিছু কি বলার আছে ? কী জানি ! এ লেখা আমার তরফে সামান্য চেষ্টা করা শুধু | তবে..বানান , যতিচিহ্ন .. আমি কিন্তু এ ব্যাপারে সত্যিই খুঁতখুঁতে | :) :)
  • | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১২:৩৫647112
  • আমার তোশেষই মনে হল। মানে এ গল্প আর কোথায় যাবে? টেনে হিঁচড়ে নেওয়া যায় অবশ্য।
    না ঈশানী, আমার কাছে এই গল্প এখানেই শেষ। বাকীটুকু আমার কল্পনার জন্য খোলা থাক।
  • সায়ন | 59.200.242.20 | ১৯ জুলাই ২০১৪ ১২:৫৫647113
  • ঈশানী, উপযুক্ত শেষ হয়েছে। ছোটগল্পের বিধান মেনে ঃ)
    আর, সাধু উদ্যোগ। এরকম আরও গল্প লেখা শুরু হোক। চটজলদি। ঃ)
  • সিকি | ১৯ জুলাই ২০১৪ ২১:২৪647114
  • নাহ্‌, ছোটগল্পের উপযুক্ত শেষ। হাততালি দিলাম। দীর্ঘ হাততালি।

    গুরু আবার চেনা ছন্দে ফিরে আসছে।
  • nina | 78.37.233.36 | ২০ জুলাই ২০১৪ ০২:০৮647115
  • বাহ! টানটান লেখা---অনেক দূরে টেনে নিয়ে যায় মনকে---
  • pharida | 52.104.24.98 | ২০ জুলাই ২০১৪ ০৫:০৭647116
  • বাহ। যত্ন ও পরিমিতি ঠিকঠাক।
  • i | 134.171.1.245 | ২০ জুলাই ২০১৪ ১১:১২647102
  • ভালো লাগল। বেশ ভালো।
  • arindam | 69.93.240.2 | ২০ জুলাই ২০১৪ ১২:৪৩647103
  • এইজন্যই কবি বলেছেন- যাও, আজীবন অশান্তি ভোগ কর...
    ভাল লেখা।
  • Ishani | 233.239.132.254 | ২০ জুলাই ২০১৪ ১৩:১৭647104
  • ইস, এত সতর্ক থেকেও ভুল হয়ে গেছে | শেষ থেকে তৃতীয় লাইনে "মিত্রা"র জায়গায় "তিস্তা" হবে | কারণ সংলাপটি মিত্রার |
  • kiki | 127.194.64.196 | ২০ জুলাই ২০১৪ ২৩:৩০647105
  • ঃ) ................ ঃ(
  • jol | 134.125.50.16 | ২১ জুলাই ২০১৪ ১৪:৩০647106
  • ভালো লাগল। সুন্দর।
  • - | 109.133.152.163 | ০৬ আগস্ট ২০১৪ ০২:৪৮647107
  • কিন্তু ঢোকার সময় তো পাসওয়ার্ড লাগে, বেরিয়ে যাবার জন্য তো দরকার নেই!!
  • Ranjan Roy | ০৬ আগস্ট ২০১৪ ০৩:১৭647108
  • মানে দরজা খোলার জাদু-পাসওয়ার্ড-- চিচিংফাঁক!

    খুব ভালো লেগেছে। গুরু নিজ ছন্দে ফিরছে সত্যিই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন