ওফ, যত ভাবি ঝামেলিতে জড়াব না তত দেখি অবলিক রেফারেন্স এসেই যায়!
অরণ্য, সর্বদা মনে রাখবেন গাছচাড্ডিদের থেকেও বিপজ্জনক হল হাফচাড্ডিরা। এই উপনয়ন আর শূদ্র নিয়ে হ্যাজ নামছে দেখে বলি, এ বিষয়ে সেরা বই হল রামশরণ শর্মার প্রাচীন ভারতে শূদ্র। কে পি বাগচীর বই, দাম মাত্র ৩০০ টাকা। কিনে ফেলুন (সম্ভবত পিডিএফও পাওয়া যায়)।
কেনার আগে আমি আপনাকে একটা টাইম স্প্যানের কথা বলি। বৈদিক যুগের পরেই গৃহ্যসূত্র ও শ্রৌতসূত্রের যুগ (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮০০-৪০০ অব্দ)। এর পরে আসছে ধর্মসূত্র (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬০০-৩০০ অব্দ)। এর মধ্যে প্রধান হলেন গৌতম, বৌধায়ন, আপস্তম্ব ও বশিষ্ঠ। ঠিক এর পরেই শ্রেষ্ঠতম শুবা মনু (আনুমানিক ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ-২০০ খ্রিস্টাব্দ)। এবং এই ব্যাপারে গুরুতে আমি আর রঞ্জনবাবু ছাড়া বাকিরা স্রেফ দুধুভাতু। তো মনু নিদান হাঁকছেন:
চণ্ডালশ্চ বরাহশ্চ কুক্কুটঃ শ্বা তথৈব চ।
রজস্বলা চ ষণ্ঢশ্চ নেক্ষেরন্নশ্নতো দ্বিজান্।। ৩.২৩৯
অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের ভোজনের সময় চণ্ডাল, গ্রাম্যবরাহ, কুক্কুট, কুকুর, ঋতুমতী নারী ও ক্লীব--- এরা যাতে তাঁদের [ব্রাহ্মণদের] দেখতে না পায়, এমন উপায় করবে।
মনুর আরেকটা নিদান হল:
বিস্রব্ধং ব্রাহ্মণঃ শূদ্রাদ্ দ্রব্যোপাদানমাচরেৎ।
ন হি তস্যাস্তি কিঞ্চিৎ স্বং ভর্ত্তৃহার্য্যধনো হি সঃ।। ৮.৪১৭
মানে এবারে আর চণ্ডালের আড়ালটুকুও থাকছে না। সোজা বলা হচ্ছে, ব্রাহ্মণ নির্দ্বিধায় তার শূদ্র দাসের ধনসম্পদ নিতে পারে, কারণ শূদ্র ধনের অধিকারী হতে পারে না।
আর আপনি শূদ্রদের উপনয়নের গপ্পোতে বিভোর হচ্ছেন? হুতো কবি মানুষ, একটু নরমসরম করে বলেছে। আমি নিকষ গদ্যের কারবারি, চিরকাল কোদালকে কোদাল বলতে অভ্যস্ত।
ও, টাইম স্প্যানটা পি ভি কাণে থেকে নেওয়া। আর শ্লোকগুলো নেওয়া ভরতচন্দ্র শিরোমণি থেকে। মনে রাখবেন মেধাতিথি ও কুল্লুকভট্টের ভাষ্যের একবাক্যতা না থাকলে সেটা অথেন্টিক মনুসংহিতা হতেই পারে না।