এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • শংকর ভাষ‍্যে - বশী বন্দনা

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬০০ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  •    শঙ্করীপ্রসাদ বসু ছিলেন পেশায় অধ‍্যাপক। নেশায় বিবেকানন্দ গবেষক। সাত খণ্ডে "বিবেকানন্দ ও সমকালীন ভারতবর্ষ" গ্ৰন্থ রচনার জন‍্য তিনি সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কারে সম্মানিত হন। একদা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শঙ্করীপ্রসাদ দীর্ঘদিন ওখানে বাংলা বিভাগে অধ‍্যাপনা করে অবশেষে নয় বছর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করে অবসর নেন। গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারে ১৯৯৫তে স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কিত আর্কাইভের জন্মলগ্ন হতে আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন। হয়েছিলেন সেই আর্কাইভের ডিরেক্টর। ডঃ নিমাইসাধন বসু‌ও একজন ঐতিহাসিক, শিক্ষাবিদ। মাধ‍্যমিকে ওনার ইতিহাস ‌ব‌ই পড়ে‌ছি। সাবলীল ভাষা, সুন্দর বিষয় বিন‍্যাস, আকর্ষণীয় উপস্থাপনা, ঝকঝকে ছাপার ব‌ই‌টি ছিল আমার খুব প্রিয়। ডঃ ভোলানাথ চক্রবর্তী ছিলেন এক প্রখ‍্যাত হোমিওপ্যাথ। রাষ্ট্রপতি, রাজ‍্যপালের চিকিৎসার জন‍্য‌ও ওনার ডাক পড়তো।
     

       উপরোক্ত তিন বিখ‍্যাত ব‍্যক্তিত্ব‌ই ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হা‌ওড়া বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশন নামক স্বনামধন‍্য বিদ‍্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৫৬ সালে সেই  বিদ‍্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক শাখার ভবনটি‌র উদ্বোধন করেন আর এক মহান ব‍্যক্তিত্ব - তদানীন্তন রাজ‍্যপাল ডঃ হরেন্দ্রনাথ মুখার্জী।  মণিশংকর মুখোপাধ্যায় বা জনপ্রিয়, সাহিত‍্য আকাদেমী পুরস্কার‌প্রাপ্ত লেখক - শংকর‌ও ছিলেন বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউশনের ছাত্র। বয়সে ৫ বছরের অগ্ৰজ বিবেকানন্দ স্কুলের শঙ্করীপ্রসাদ শংকরকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহভরে তুই তোকারি করতেন। লেখা‌র ব‍্যাপারে উৎসাহ, তথ‍্য, পরামর্শ, দিশা জুগিয়েছে‌ন। অবশ‍্য শংকর তাঁর স্বভাবজ বিনয়ে অনেক অগ্ৰজ লেখকের স্নেহ‌ভাজন ছিলেন - যেমন বিমল মিত্র। শংকরের প্রথম ব‌ই "কত অজানারে" ও দ্বিতীয় ব‌ই "চৌরঙ্গী" প্রকাশের পর শঙ্করীপ্রসাদ অনুজ শংকরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন - হাইকোর্টের অভিজ্ঞতা, হোটেলের আখ‍্যান তো হোলো - এবার নতুন কোনো বিষয়ে লেখ্। দীর্ঘ এক বছরের প্রচেষ্টায় শংকর লিখলেন - "নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি"। 
     

     ২০২২ এর সেপ্টেম্বরে - "শারদীয়া বর্তমান" ১৪২৮এ প্রকাশিত শংকরের একটি বিশেষ রচনা - "কেমনে তোমারে ভুলি?" পড়ে বেশ লাগলো। নানা অজানা বিষয় জানলাম। যেমন ঐ নিবন্ধের কেন্দ্রীয় বাস্তব চরিত্র - বশী সেনের আদলেই নির্মিত হয়েছিল নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র - বিজ্ঞানী জীমূতবাহন সেন।



    শংকরের এই বিশেষ রচনার চরিত্র - বিশ্ববিখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন - আদিতে  বিষ্ণু‌পুর নিবাসী বশী সেন। হায়! এনার প্রেক্ষাপট, কর্মকাণ্ড তো দুরের কথা - ২০২২এ শংকরের লেখাটি পড়ার আগে অবধি আমি ওনার নাম পর্যন্ত শুনিনি‌। কী লজ্জা! শংকরের লেখা‌য় ওনার সম্পর্কে অনেক কথা জানলাম - যেমন কীভাবে লেওনার্ড এলমহার্স্ট বারংবার ওনাকে নানাভাবে আর্থিক সাহায্য করেছে‌ন। কেমব্রিজ ও কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত এই বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ কৃষি‌বিজ্ঞানী‌র কথা অবশ‍্য কিছুটা জানা ছিল। জানতাম তিনি শান্তি‌নিকেতনে বেশ কিছুদিন থেকে রবীন্দ্রনাথের আশ্রমে কাজ করেছেন, সেখানে স্থাপনা করেছেন Institute of Rural Reconstruction. 
     

    শংকরের ঐ লেখায় মহান বিজ্ঞানী আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কিছু চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা জেনে দুঃখ পেলাম। বশী সেন তাঁর সাহায্য‌কারী হিসেবে বারো বছর কাজ করে একদিন‌ও ছুটি নেননি - কিন্তু ছোট ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুস্থতার জন‍্য একটি রবিবার না আসায়, আচার্য্য বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বশী সেন তিন বছরের মেহনতে তৈরী করে তাঁর মৌলিক গবেষণার খসড়া দেখতে দিয়েছিলেন জগদীশ‌ চন্দ্রকে। মহান আচার্য্য বশী সেনের নামোল্লেখ অবধি না করে তা বিদেশে‌র জার্নালে নিজের নামে ছাপিয়ে দিলেন! 
     
     অন‍্য লেখা‌তে পড়েছি সমসাময়িক ঋষি‌প্রতি‌ম বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রকাশিত গবেষণা‌পত্রে সেই গবেষণায় তাঁর সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো। জগদীশ‌ চন্দ্রর তেমন সৌজন্য‌বোধ, মানবিক উদারতা ছিল না। তাই জগদীশ চন্দ্রের র প্রকাশিত গবেষণা পত্রে তাঁর বিশেষ সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো না।

       একবার আমেরিকা‌ন গবেষক গ্ৰেন ওভারটন বশীকে এক বছরের জন‍্য সহকারী হিসেবে নিয়ে যেতে চাইলে‌ন। বশী আচার্য্য‌র কাছে এক বছরের ছুটি চাইলেন। বিরক্ত হয়ে আচার্য্য বসু বললেন -"যদি তোমার এখানে কাজ করতে ভালো না লাগে তাহলে যেখানে খুশী যেতে পারো"। একযুগ ধরে নিরলস কর্মসেবার যোগ‍্য পুরস্কার! 
     
      চলে গেলেন বশী আমেরিকা‌য়। তবু বশী যে দুজন মানুষের শতায়ু কামনা করতেন - তাঁদের একজন রবীন্দ্রনাথ। অন‍্যজন জগদীশ‌ চন্দ্র‌। এতেই 'সদানন্দ‌র কুত্তা' বশীশ্বর সেনের মহানুভবতা উপলব্ধি করা যায়।
     
     
      বিবেকানন্দ যখন স্বামী‌জী হয়ে বিশ্ববিখ্যাত হননি, সেই তখন যে মানুষটি নির্দ্বিধায় এক অচেনা রমতা যোগীর শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করে হেলায় উত্তরপ্রদেশে হাতরাশ স্টেশনের রেল কর্মচারী‌র চাকরি ছেড়ে বিবেকানন্দ‌র সাথে অনির্দিষ্ট সন্ন‍্যাসযাত্রায় পথে নামেন - স্বামী‌জীর সেই  প্রথম শিষ‍্য‌ই সদানন্দ। পরে বশী সেন শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করেন সদানন্দ‌র। বশীদের বিষ্ণুপুরের নিবাসে‌ স্বামী সদানন্দ এসেছেন, থেকেছে‌ন। বশী পেয়েছেন গুরুসেবার সুযোগ। মৃত্যুর আগে বশীশ্বর, ভাই মতীশ্বর ও বশীর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সহপাঠী বিভূতি ঘোষকে সদানন্দ সস্নেহে বলেছিলেন - "যা শালারা ডালকুত্তা রেখে গেলাম - তোদের কিছু করতে পেরেছি কী পারিনি জানি না - তোদের কর্তার (স্বামীজীর) সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি"। আজীবন বশী তাই তাঁর গুরু সদানন্দ‌র কুকুর হতে পেরে নিজেকে ধন‍্য মনে করেছেন। 

      আমেরিকা থেকে ফিরে বশী পুনরায় আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কাছে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে যোগ দিতে চাইলেন। ইচ্ছা প্রকাশ করলেন আচার্য্য একটি ঘর দিলে বশী নিজের মতো কিছু গবেষণা করতে পারেন। আচার্য্য বশী‌র ইচ্ছা‌য় সাড়া দিলেন না। 
     
       তখন বশী কলকাতা‌য় তাঁদের আট নম্বর বোসপাড়া লেনের ছোট্ট বাড়ির রান্না‌ঘরে স্থাপনা করলেন - "বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি"। ঐ বাড়িতে‌ই ১৯১১তে দেহাবসানের আগে অবধি বশী ও ভাই মতী দু বছর তাঁদের মৃত্যুপথযাত্রী গুরু সদানন্দ‌র সেবা করেছেন। মৃত্যুর পর দোতলায় সদানন্দ‌র স্মৃতি রক্ষিত। একতলায় একটিমাত্র কক্ষ। তাই রান্নাঘরে দুটি চাকা লাগানো বাক্সের ওপর শুরু হোলো ল‍্যাবরেটরি‌র কাজ। রাতে যন্ত্রপাতি সরিয়ে ওটাই শোয়ার জায়গা।
     

      আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র পিছিয়ে গেলে‌ও এহেন অভিনব বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা‌য় এগিয়ে এলেন অন‍্য অনেকে। যেমন বিবেকানন্দের আমেরিকা‌ন বন্ধু (হ‍্যাঁ, তিনি নিজেকে স্বামীজীর শিষ‍্যার বদলে বন্ধু‌ই ভাবতেন) যোশেফিন ম‍্যাকলাউড। বিবেকানন্দে নিবেদিত‌প্রাণা এই মহিলা বহুভাবে অর্থসাহায্য করে গেছেন। বেলুড় মঠের স্থাপনা‌তে‌ও তাঁর আর্থিক সাহায্য ছিল। এগিয়ে এলেন শিল্পী নিকোলা বোয়েরিস, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয়। এবং আবার সেই লেওনার্ড এলমহার্স্ট! তিনি বিনামূল্যে কিছু যন্ত্রপাতি পাঠানো ছাড়াও নিয়মিত বশীকে ডলার পাঠাতেন। লন্ডনের রয়‍্যাল সোসাইটি পাঠাতো বছরে সত্তর পাউন্ড অনুদান।  
     

      পরে সেই ল‍্যাবরেটরি স্থানান্তরিত হয় আলমোড়ার কুন্দন হাউসে। ১৯৪৩এর দুর্ভিক্ষ দেখে বিচলিত বশী উচ্চফলনশীল বীজের গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। আজ‌ও উইকিপিডিয়া খুললে দেখা যাবে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সময়ে পাঞ্জাবে যে সবুজ বিপ্লবের শুরুয়াৎ হয়েছিল - তার রূপকার ছিলেন কৃষি বিজ্ঞানী এম এস স্বামী‌নাথন - সেই এন্ট্রি‌তে বশী সেনের কোনো উল্লেখ অবধি নেই। কিন্তু স্বামী‌নাথন জানতেন বশী সেনের বৈজ্ঞানিক অবদান। মান‍্য করতেন তাঁকে। বশী সেন সম্পর্কে লিখিত গিরিশ মেহরার গ্ৰন্থের ভূমিকা‌য় স্বামী‌নথন কৃষি‌বিপ্লবে বশী‌ সেনের অবদান কৃতজ্ঞ‌চিত্তে স্মরণ করে লিখে‌ছেন - one of the greatest classics of our time.

    বশী সেনের সাথে নেহরুর সুসম্পর্ক ছিল। ১৯৫৭ সালে বশী পদ্মভূষণ উপাধি পান। ১৯৫৯ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার হাবালবাগে কৃষি গবেষণা‌র জন‍্য বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি‌কে ২১৫ একর জমি দান করে। বশীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধীর উদ‍্যোগে সেই ল‍্যাবরেটরি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে সংযুক্ত হয় ভারতীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র - ICAR বা Indian Council of Agricultural Research এর সাথে। তখন ICAR এর ডিরেক্টর ছিলেন স্বামী‌নাথন। বশী‌র অনুরোধ ছিল ল‍্যাবরেটরি‌র জন্মলগ্ন থেকে জড়িত "বিবেকানন্দ" নামটি যেন বাদ না যায়। কথা রেখেছি‌লেন স্বামী‌নাথন। বশী সেন স্থাপিত সেই গবেষণা‌গারের নাম হয় - "বিবেকানন্দ পার্বত‍্য কৃষি অনুসন্ধান সংস্থা‌ন"। 

    শংকরের সেই লেখা‌তেই পড়েছিলাম এমন একটি বৈজ্ঞানিক তথ‍্য যা সেযাবৎ ছিল আমার অজানা। ইলেকট্রিসিটি, কম্প্রেসর ছাড়াই শূণ‍্য ডিগ্ৰি অবধি তাপমান নামিয়ে দিতে সক্ষম ১৯২০ দশকের এক  গুপীযন্ত্র - কেরোসিন রেফ্রিজারেটর! মৃত্যুর চার বছর আগে রবীন্দ্রনাথ বশী সেনের আমন্ত্রণে আলমোড়ায় এসে কিছু‌দিন ছিলেন। তাঁর জন‍্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল সেন্ট মার্কস ভবন। বিবেকানন্দের মতো রবীন্দ্রনাথ‌ও ছিলেন আইসক্রিমের ভক্ত। আলমোড়ায় কবি‌র সেই বাসভবন থেকে মাঝে মাঝে ডাণ্ডিতে করে নিয়ে আসা হোতো বশী সেনের গবেষণা‌গার কাম বাসস্থান কুন্দন হাউসে। কেরোসিন ফ্রী‌জে জমানো আইসক্রিম তৃপ্তি সহকারে খেতেন কবি।

    জানলাম বশী সেন ছিলেন এক বিশেষ ধরণের বডি ম‍্যাসাজে দক্ষ। বশী সেন দিল্লিতে গেলে নিদ্রা‌হীনতায় আক্রান্ত জহরলালের কপালে ম‍্যাসাজ করে দেওয়ার জন‍্য কখনো তিনমুর্তি ভবনে সাদর ডাক পড়তো বশীর। তাঁর আঙুলের জাদুচলনে অচিরেই ঘুমিয়ে পড়তেন নেহরু। 

    এমনই সব নানা বিষ্ময়কর, অজানা তথ‍্যের খাজানা শংকরের ঐ লেখাটি। এমন লেখা পড়ে সেই পাঠানন্দ নিজের মধ‍্যে রেখে দেওয়া মুশকিল। তাই তার কিছু নির্যাস এখানে শেয়ার করলাম।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সমরেশ মুখার্জী | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৫২528097
  • @ মত,

    “সমরেশবাবু যা ভিডিও দিয়েছেন সে প্রায় নিউটনের আমলের (রসিক মানুষ আপনি, বক্তব্যটা বুঝবেন নিশ্চয়)! পার্টিকেল ফিজিক্স, কোয়ান্টাম মেকানিক্স - বহুদুর চলে গেছে। এবং নিউরোসায়েন্সও।”

    আমি শুধু রসিক নয়, নিম্ন‌মেধা‌র‌ও - তাই বৈজ্ঞানিক আলোচনা‌য় আপনাদের মতো অগ্ৰগামী‌দের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। তবে ইলেকট্রন-নৃত‍্য যে পদ্ধতিতে বোঝা গেছে (এক্সরে ক্রিস্টালোগ্ৰাফি) তা নিউটনের আমলে তো নয়‌ই, জগদীশ চন্দ্র যখন “response in the living and non-living” নিয়ে গবেষণা করছি‌লেন তখন‌ও ছিল কিনা - জানালে ঋদ্ধ হবো। আমার বিদ‍্যের বহর পাবলিক‌লি স্বীকার করাও পরেও তা নিয়ে খোঁটার কারণ বোঝা গেল না। তবে নিম্ন‌মেধা সত্ত্বেও এটুকু জানি জগদীশ চন্দ্র‌ই প্রথম প্রমাণ ক‍রেছিলেন যে গাছের‌ও প্রাণ আছে।  

    আমি কেবল 42.105.141.15 এর ৩০.১/২১:৩৪ এর বক্তব্য - “উনি নাকি জড় পদার্থেও উত্তেজনা আবিষ্কার করেছিলেন?” - সেই প্রসঙ্গে‌ জানতে চেয়েছিলাম  - “ইলেকট্রনবাবুর নেত‍্যকে কী জগদীশ চন্দ্র প্রস্তাবিত “জড় পদার্থের উত্তেজনা” বলা যায়?” (১)

    @মত বললেন - “জগদীশচন্দ্র এই দুটোর একটা যোগসূত্র খুঁজতে চেয়েছিলেন। যে মানুষ প্রানের সংজ্ঞার লিমিট এক্সটেন্ড করে গাছ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন - তাঁর কাছে এই অ্যাম্বিসান কি সত্যিই বাড়াবাড়ি? উনার অ্যাপ্রোচ তো বিজ্ঞানসম্মতই বলতে হবে।” 

    অর্থাৎ @মতের ধারণা আমার জিজ্ঞাসা (১) বিজ্ঞান‌সম্মত  ভাবে সঠিক। তো সেটা বললেই তো হয়। তার সাথে বিজ্ঞান কতো এগিয়ে গেছে এবং আমি কোথায় রয়ে গেছি তার উল্লেখে অতিরিক্ত কী জানা গেল?
     
  • Arindam Basu | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৬528099
  • সমরেশবাবু, " প্রসঙ্গে বহু আলোচনা হচ্ছে - খুব ভালো কথা - কিন্তু বিষয়টা‌ই এমন - মনে হয় শেষবেশ পাহাড় খুঁড়ে ইঁদুর‌ও বেরোবে না - ধুলো ওড়ানো‌ই সার হবে। "
     
    "ধুলো ওড়ানো সার হবে কেন, চেতনার স্বরূপ নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। 
    এখানে অনিল শেঠ এর একটা ছোট বক্তৃতা রইল, আশা করি কি বলছেন বুঝতে অসুবিধা হবে না।
     
     
    পরিশেষে বলা ভাল যে, এই আলোচনা নিজস্ব টই এর দাবী রাখে। 
  • Arindam Basu | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩৪528336
  • অবশেষে নিতাই নাগ প্রণীত বইটির একটি ইলেকট্রনিক সংস্করণ হাতে এসেছে। 
     
    পড়বার পর জগদীশচন্দ্রকে ছাত্রের লেখা নিজের নামে চালানোর চৌর্যবৃত্তির এবং তাঁর অনুদার চরিত্রের অভিযোগ করে সমরেশবাবুর শংকরের লেখার রিভিউ তে লিখেছিলেন,
     
    > শংকরের ঐ লেখায় মহান বিজ্ঞানী আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কিছু চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা জেনে দুঃখ পেলাম। তিন বছরের মেহনতে তৈরী করে তাঁর মৌলিক গবেষণার খসড়া দেখতে দিয়েছিলেন জগদীশ‌ চন্দ্রকে। মহান আচার্য্য বশী সেনের নামোল্লেখ অবধি না করে তা বিদেশে‌র জার্নালে নিজের নামে ছাপিয়ে দিলেন! 
     
    এ প্রসঙ্গে নিতাইবাবু তাঁর বইতে যা লিখেছেন, 
     
    "আবার আরেকটি ঘটনা | একদিন শিষ্য বশীকে আচার্য ইংল্যাণ্ডে রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশের জন্য কাগজপত্র টাইপ করতে বললেন। এগুলি পরদিনই তাড়াতাড়ি পাঠাতে হবে | এটা ছিল বশী সেনের নিজস্ব গবেষণাকর্ম যা তিনি সারা বছর করেছেন আচার্যের তত্ত্বাবধানে | এই কাজের সারাংশ সে টাইপ করে আচার্যের হাতে তুলে দিল। কিছুদিন পর যখন জার্নালে বিষয়টি প্রকাশিত হল তখন দেখা গেল তাতে বশী সেনের নাম বিন্দুমাত্র নেই -- কেবল আচার্য বসু ও তাঁর আরেকজন ছাত্রের নাম ছাপা হয়েছে যার গবেষণা ক্ষেত্রে কোন ভূমিকাই ছিল না" (পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯, "বিবেকানন্দ প্রশিষ্য বিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন") 
     
    "তিন বছরের মেহনত", "মৌলিক গবেষণা" (অথচ তিন বছর আচার্যের তত্ত্বাবধানে করা), ইত্যাদি কোন কিছুর উল্লেখ কিন্তু নিতাই নাগ মশাইয়ের লেখা "বিবেকানন্দ প্রশিষ্য বিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন" বইটিতে নেই। | এমনকি কোন পেপারের কথা বলা হচ্ছে সেটারও কোন উল্লেখ নেই |  অন্য ছাত্রটির গবেষণায় ভূমিকাই ছিল না অথচ জগদীশচন্দ্র বসু, যিনি প্রায় কোন লেখা নিজের নাম এককভাবে ছাড়া প্রকাশ করতেন না (লেখাটিতেই দেখা যাচ্ছে সমরেশবাবু নিজে রীতিমতন জোর দিয়ে লিখেছেন, "জগদীশ‌ চন্দ্রর তেমন সৌজন্য‌বোধ, মানবিক উদারতা ছিল না। তাই জগদীশ চন্দ্রের র প্রকাশিত গবেষণা পত্রে তাঁর বিশেষ সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো না।"), এহেন মানুষ সেই ছাত্রকেই বা অন্য একজন author হিসেবে নিলেন, তারও কোন সদুত্তর নেই | কাজেই এই কথাগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য কে জানে |
     
    > শংকরের ঐ লেখায় মহান বিজ্ঞানী আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কিছু চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা জেনে দুঃখ পেলাম। বশী সেন তাঁর সাহায্য‌কারী হিসেবে বারো বছর কাজ করে একদিন‌ও ছুটি নেননি - কিন্তু ছোট ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুস্থতার জন‍্য একটি রবিবার না আসায়, আচার্য্য বিরক্তি প্রকাশ করলেন।
     
    ১২ বছর যে বশী সেন জগদীশচন্দ্র বসুর সঙ্গে কাজ করেছিলেন, এই বইয়ের হিসেব থেকে সেটা মনে হয় না, কারণ নিতাই নাগের বইটিতে (৩৫ পাতায় লেখা) লেখা আছে জগদীশচন্দ্র বসুর কাছে বশী সেন ১৯১২ সালে কাজ করতে শুরু করেন, আর ১৯২৩ সালের মার্চ মাসে তিনি গ্লেন ওভারটনের এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকায় চলে যান, তার আগের দু সপ্তাহ তিনি ওভারটনদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করছিলেন, এদের সঙ্গে সেই বছরেই এনার সদ্য আলাপ। এবং এদের সঙ্গে ঘোরার পর যখন জগদীশচন্দ্রের কাছে এসে এক বছরের ছুটি চান, জগদীশচন্দ্র বিরক্তবোধ করেন এবং এই ব্যাপারটি থেকে জ্গদীশচন্দ্রের চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা নাকি প্রকাশ পায় । 
    তার মানে বারো বছর কাজ করে একদিনও ছুটি নেননি কথাটা কি বিশ্বাসযোগ্য? 
    বিশেষ করে যে ঘটনাটির কথা লেখা হয়েছে, তার উল্লেখ নিতাই নাগের বইতে এইরকম (৩৮ এর পাতায়),
     
    "যাহোক, দুসপ্তাহ ধরে ওভারটন দম্পতিকে তিনি ভারতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঘুরে দেখালেন | ...
    ইতিপূর্বে বেশ দু'একটি ঘটনা ঘটেছে যা বশী সেনের অনুভূতিপ্রবণ মনকে আচার্য়ের আচরণ আঘাত করেছে। একদিন ভাই মতীশ্বর হঠাৎ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়। রোগের বাড়াবাড়িতে সেদিন ল্যাবরটরিতে হাজির হওয়া সম্ভব হয়নি। ... কিনতু আচার্য তাঁর একদিনের অনুপস্থিতি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেন নি। অথচ প্রায় বারো বছর ধরে আচার্যের সঙ্গে কাজ করার সময় একটা রবিবারও ছুটি নেননি তিনি | "
     
    এর সঙ্গে "সাহায্য‌কারী হিসেবে বারো বছর কাজ করে একদিন‌ও ছুটি নেননি - কিন্তু ছোট ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুস্থতার জন‍্য একটি রবিবার না আসায়, আচার্য্য বিরক্তি প্রকাশ করলেন।",  এর কি সম্বন্ধ? 
     
     
     
     
     
     
     
     
     
     
     
  • π | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩৩528341
  • বশীবাবুর নিজের আর কোন কাজ পরে পাব্লিশড?  উনি পরে আর কী করেছিলেন জানা যায়?  এনিয়ে আগে কথা হয়ে থাকলে হয়তো মিস করেছি।
  • Arindam Basu | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:০২528348
  • বশীশ্বর সেনের ৫০টার ওপর পেপার আছে বেশীর ভাগই এগ্রিকালচার সংক্রান্ত, আর প্রথম দিককার কাজ প্রায় সবই বায়োফিজিক্স রিলেটেড, বিশেষ করে plant electrophysiology, membrane permeation সংক্রান্ত | কিন্তু খেয়াল করে দেখলে বোঝা যায় সবটা জগদীশচন্দ্র বসুর কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। সেটা স্বাভাবিক। 
     
  • ar | 71.174.70.185 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৭528354
  • Girish N Mehra বইতেও একই কথা বলা অছে।
    "At this time, before any regular mail service. there used to be what was called the ' home mail' steamer going out to England, on a fixed day, periodically. Bose had a paper almost ready to send for publication in the Proceedings of the Royal Society. He said to Boshi, "You had better stay back and type the paper tonight so that it ban be posted tomorrow, to catch the mail". Boshi stayed behind and typed the paper. It was a summary of work Boshi had carried on under Bose's supervision for a whole year. He handed over the typed manuscript to Bose. It was accepted for publication by the Royal Society, but when it appeared in print, it was credited to J.C. Bose and another student who had had nothing whatsoever to do with the experiments. Boshi hadn't been mentioned at all!! 'I never knew whether Bose was trying to put me down or push the other fellow up', Boshi told me. 'I never did understand'. Not unnaturally, however, he felt hurt."

    (Ref: Nearer Heaven Than Earth: The Life and Times of Boshi Sen and Gertrude Emerson Sen. Girish N Mehra (2007), p. 231)

    জে সি বোসের সহকারীদের সাথে বেশ কয়েকটা পেপার আছে। নেট সার্চ করে কয়েকটা পেলাম।

    https://royalsocietypublishing.org/action/doSearch?field1=Contrib&text1=bose+jc&ConceptID=&ConceptID=&publication=&Ppub=&AfterMonth=1&AfterYear=1900&BeforeMonth=1&BeforeYear=1939&access=on&startPage=0&sortBy=EPubDate

    https://en.wikisource.org/wiki/Life_Movements_in_Plants_Vol_1/The_%22Praying%22_Palm_Tree

    বশী সেনের প্রথম "single author পেপার প্রসঙ্গে লেখাও আছে। মনে হয় ১৯২৩ সাল!!

    "Boshi had received excellent scientific training under Bose and had now been able to acquire the necessary instruments for research. Though full of enthusiasm about doing independent research, putting into practice some of the precepts and exhortations of Swami Vivekananda, Boshi naturally was apprehensive about the future without any assured support from any quarter. Also, was he over-confident about his own scientific ability, he wondered!! In England, however, on this way home, a pleasant surprise awaited him. He learned that his first independent research paper, 'On the relation between permeability variation and plant movements', communicated nearly a year before, had been accepted for publication and was due to appear in the "Proceedings of the Royal Society" before the end of 1923. This inspired a new self-confidence in Boshi." (p 234)

    পেপারের "Acknowledgement Section"থেকে তুলে দিলাম।
    "I take this opportunity of acknowledging the encouragement received from Prof. S. H. Vines, F.R.S., and the many helpful suggestions and criticisms from Sir W. M. Bayliss, F.R.S., in this humble offering of the disciple to his master, Sir J. C. Bose, F.R.S"

     
  • Arindam Basu | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:২১528370
  • খুব ইন্টারেস্টিং।
    তখনকার দিনে জার্নাল সাবমিশনের সময় মূল পেপারে অথরদের নাম লিখতে হত না? মনে হয় আলাদা করে করেসপণ্ডিং অথর নামের তালিকা লিখে পাঠাতেন। তা না হলে যে পেপার পরের দিন সাবমিট করা হবে, বশী সেন টাইপ করছেন, এবং যেখানে তাঁর নিজের কাজ বলে পরবর্তীকালে দাবী করছেন, সেই পেপারে অন্য একজনের নাম ছাপা হয় কিভাবে? 
    কোন পেপার?
    ১৯২২ সালে যেটি জগদীশচন্দ্র বসু সত্যেন্দ্র গুহ'র সঙ্গে লিখেছিলেন? 
    আরেকটা ব্যাপার লক্ষণীয় যে প্রায় ১০ বছর কাজ করার পর ১৯২৩ সালে বশী সেনের প্রথম পেপার নিজের অথরশিপে পাবলিশড, এবং সেই বছরেই তিনি বোস ইনস্টিটিউট ছাড়ছেন। 
    ১৯২৩ সাল বশী সেনের জীবনে একটি 'turning point' মনে হয়। 
    ১৯২২ এর জগদীশ বোস+সত্যেন গুহ'র পেপার আর ১৯২৩ এর বশী সেনের পেপারের কনটেন্ট অ্যানালিসিস করলে হয়ত ওভারল্যাপ দেখা যাবে। 
    বশী সেনের ওভারটনের সঙ্গে আমেরিকা যাবার গল্পটা খুব abrupt decision, পড়ে মনে হয়েছে। 
     
  • ar | 71.174.70.185 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:০২528371
  • ১৯২২ পেপারটাই মনে হয়।
    বশী সেনের প্রথম পেপারটার অ্যাফিলিয়েশন কিন্তু Bose Instituteএর।
    আমেরিকার যাওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য জগদীশ বোসের উদাসীনতাও কিছুটা দায়ী (লেখকের মতে)। মেহরা থেকে টুকে দিলাম।

    "As Boshi put it to me, "Bose was a great scientist, thinker and inventor, but he was not a Vivekananda". Boshi decided to accept Overton's invitation. He went to Bose and said, "Sir, I am going to ask for a long leave, may be a year" Bose merely replied, "If this place doesn't suit you, go an look elsewhere.' Boshi said later, 'If he had shown the least kindness or affection--one small phrase, such as, 'Oh, how can I spare you', or ' who will take your place'?, I wouldn't have dreamed of leaving him'. But Boshi took Bose's apparent indifference as giving him his freedom to go, freeing him from further obligations. He also realised that in going out on his own, he would be able to decide for himself the price of immediate values and where they were worth it, and he decided that they definitely were. He sailed with the Overtons for San Francisco via the Pacific in March 1923. Was a new door opening, he wondered? Apparently, yes.
     
  • Arindam Basu | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৩৬528372
  • বশী সেনের প্রথম সোলো অথরশিপে ১৯২৩ সালের পেপার বোস ইনস্টিটিউটের অ্যাফিলিয়েশনে হওয়া স্বাভাবিক। যেহেতু বশী ১৯২২ এর মার্চ মাসে ইনস্টিটিউট ছেড়েছেন, তার মানে এ পেপার হয়ত ১৯২২ নাগাদ লিখে জমা দিয়েছিলেন। 
     
  • Arindam Basu | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৫৬528373
  • "আমেরিকার যাওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য জগদীশ বোসের উদাসীনতাও কিছুটা দায়ী (লেখকের মতে)। মেহরা থেকে টুকে দিলাম।"
     
    এটাও খুব ইন্টারেস্টিং, যেভাবে মেহরা বশী সেনের মুখে শুনে লিখেছেন আর যেভাবে মেহরা থেকেই সম্ভবত নিতাই বাবু এবং শংকর অনুবাদ করেছেন। অনেকটা chinese whisper এর কেস। পুরো কনটেকসটটা বিচার করে দেখলে মনে হয় বশী সেন শুনতে চাইছিলেন যে জগদীশচন্দ্র তাঁকে "বাবা-বাছা, থেকে যাও, তুমি চলে গেলে কি করে চলবে" ধরণের কিছু বলবেন শুনতে চাইছিলেন। আর এও হতে পারে জগদীশচন্দ্রের মনে হয়েছিল বশীর ওখানে কাজে মন নেই, নাহলে দুম করে আরবিট দুজন ভিজিটরকে নিয়ে ল্যাব থেকে দু সপ্তাহের জন্য হাওয়া হয়ে গিয়ে ফিরে এসেই বলছেন স্যার আমার এক বছরের লিভ চাই, :-)
     
    আমার মনে হয় (নিজের ল্যাব চালানোর অভিজ্ঞতায়, :-)), প্রায় যে কোন বসই, এই কেসে জগদীশচন্দ্রের মত বলবেন হয়ত, বেশ তো, এখানে কাজ করতে তোমার হয়ত ভাল লাগছে না, না করতে ভাল না লাগলে অন্য জায়গায় যাও না কেন। এটা জগদীশচন্দ্রের ঔদাসীন্য না বশী সেনকে রিলিজ করে দেওয়া, এইটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে মনে হয়। 
     
  • ar | 71.174.70.185 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:১৩528374
  • ঠিক তাই! অনেকে সিনিয়র প্রোফরাই এটা করে থকেন। এই পুশটা না দিলে ছাত্ররা বাইরে যেতে চায় না। আর (নিজের ল্যাবের জগতের) বাইরে না গেলে গবেষণার পরিমন্ডল বৃদ্ধি হয় না। সেই সময়ে জগদীশ বোসের বয়স প্রায় ৬৫। F.R.S. আর নাইটহুড পেয়ে গেছেন। বলা যায় যে, ওনার প্রাইম সময় পেরিয়ে এসেছেন। মনে হতেই পারে যে, এই ছাত্রটি খুব ভাল, কিন্তু বড্ড লয়াল। বি আই ছেড়ে আমেরিকাতে না গেলে এর professional development হবে না। এইটা হলে হয়ত বশী independent scientist হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্টা করতে পারবে।

    এই নিয়ে বিনায়ক লোহানি লিখেছেন।।।।
    "Elmhirst first suggested Boshi to join him at Santiniketan and help strengthen the Science Department at the newly started Viswa Bharati University. Boshi, who had the experience of working for long years in assisting Bose, now wanted to work independently and hence declined the offer. Also, because Tagore and Bose were close friends, he thought leaving Bose Institute for Tagore’s University might possibly trigger a misreading of the situation by some people. He requested Elmhirst to sponsor equipment for setting up a small laboratory where he could work by himself, a proposal to which Elmhirst agreed.

    Thus, on return to India, Boshi planned to set up a small unit at Bose Institute where he could take up independent projects. He discussed the plans with J.C. Bose, but the latter was not very receptive of this. To be fair to Bose, he perhaps thought it might be better if Boshi started on his own independent path instead of setting up a centre at the Bose Institute. Boshi, though a bit disappointed at his mentor’s response, became clear that he had to set up his lab on his own. He tendered his resignation at the Bose Institute and decided to set up a small laboratory in his kitchen at the Bosepara Lane house."

    বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে অনেক মিথ আছে। জগদীশ বোসও ব্যতিক্রম নন।
    ১। নিবেদিতা ওনার রিসার্চ পেপার ঠিক করে দিতেন!!
    ২। ছাত্রদের নাম না দিয়ে তাদের কাজ সব নিজের নাম দিয়ে ছাপাতেন, ইত্যাদি।।

    কিন্তু এর উল্টোদিকে, জগদীশ বোস কিভাবে আধুনিক উদ্ভিদবিদ্যার ইতিহাসে পাতায় (আরো ভালোভাবে বলতে গেলে, উদ্ভিদ-স্নায়ুবিদ্যার ইতিহাসে) দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকে গেলেন, সেই নিয়ে বেশী "দেশী" লেখালেখি দেখি নি। রডিও ট্রান্সমিশন নিয়ে ওনার কাজের কথাও আজকাল দেখা যায় না।

     
  • Arindam Basu | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৯528376
  • "বলা যায় যে, ওনার প্রাইম সময় পেরিয়ে এসেছেন। মনে হতেই পারে যে, এই ছাত্রটি খুব ভাল, কিন্তু বড্ড লয়াল। বি আই ছেড়ে আমেরিকাতে না গেলে এর professional development হবে না। "
     
    স্পট অন!
    এই ব্যাপারটাই খুব সম্ভবত হয়েছিল | কারণ জে সি বোস চাইলে বশী সেনকে আটকে দিতে পারতেন (বশী সেন নিজেও তাই আশা করেছিলেন "ভাল কিন্তু লয়াল" বিশেষ করে আবেগপ্রবণ লয়ালদের যা হয়, সেই ব্যাপারটা তাঁর কথাতেও বোঝা যাচ্ছে), দেন নি, এবং বশী সেন নিজেও যে কারণে জগদীশ বোসের কাছে পরে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন |  নিতাই নাগ তাঁর বইতে এই ব্যাপারটা খেয়াল করেন নি বা ভেবে দেখেন নি, বরং এর অন্য মানে করেছিলেন |
  • | 42.110.168.88 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:১২528377
  • @AR গিরিশ মেহরা কি হার্ড কপি? নইলে... 
    @Arindam Basu নিতাই নাগ সফট কপি কোথায় পাওয়া গেল? একটু যদি... 
     
    পুরোটার সোর্স গিরিশ মেহরা সম্ভভত এখনও বেঁচে। কথা বলা যায় বোধয়। যখন তিনি নিজে শুনেছেন পুরোটা বশীশ্বর সেনের মুখে।
  • Arindam Basu | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০১528378
  • @Arindam Basu নিতাই নাগ সফট কপি কোথায় পাওয়া গেল? একটু যদি... 
     
    পাবলিক ডোমেন এ নেই, আপনি (বা যারা পড়তে ইচ্ছুক), এখানে আপনার ইমেল এড্রেস শেয়ার করলে বা আমার ইমেল এড্রেসে ([email protected]) জানালে, আপনার সঙ্গে ডকুমেন্ট শেয়ার করতে পারি। 
  • ar | 71.174.70.185 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০১528384
  • গিরিশ মেহরা হার্ড কপি।
  • Arindam Basu | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১৩528428
  • গিরিশ মেহরার বইটাও পড়ে দেখলাম। 
    অনেক ব্যালানসড, এবং সেখানে কোথাও জগদীশচন্দ্র বসু যে অনুদার, তার উল্লেখ নেই। বরং লেখাটা পড়লে মনে হয় জগদীশচন্দ্র প্র্যাগমাটিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন