এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • দেশ-বিদেশের সম্পর্কের জটিলতা - স্যোশাল মিডিয়ার অবদান

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৫১২ বার পঠিত
  • বর্তমানের স্যোশাল মিডিয়ার যুগে যে কোনো দেশের খবর খুব সহজেই সারা পৃথিবীর লোক জানতে পেরে যায়। আর সব দেশেরই লোকেদের এখন অর্থ উপাজর্নের বা সহজে পরিচিতি পাওয়ার মাধ্যম হলো স্যোশাল মিডিয়া। স্যোশাল মিডিয়ার যেমন ভালো দিক আছে বা ভালোভাবে লোকেরা ব্যবহার করছে এই মাধ্যমকে তেমনি বহুলোক আছে যারা এই মাধ্যমকে অত্যন্ত খারাপভাবে ব্যবহার করছে। আবার বহুলোকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে কিছু বিতর্কিত বিষয় নিয়ে চর্চা করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যেমন বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে পাকিস্থান-ভারতবর্ষ বা বাংলাদেশ-ভারতবর্ষ নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা (অবশ্য সেগুলোকে আলোচনা বলা যায় কিনা সেটাই প্রশ্ন) করা বেশ কিছু লোকের নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল দেশ ভারতবর্ষ ভেঙে পাকিস্থান এবং বাংলাদেশ তৈরী হয়েছে এবং সেটা ধর্মের ভিত্তিতে। সেই কারণেই এই তিন রাষ্ট্রের মধ্যে এত রেষারেষি। ভারতবাসীর মনে পাকিস্থান বা বাংলাদেশ নিয়ে খুব এমন যে দুশ্চিন্তা আছে বা ঈর্ষা আছে তা বলা যায় না। বরং বড়রা যেমন ছোটদের খুব এমন পাত্তা দেয়না সেইরকম মানসিকতাই বহন করে ভারতবাসীরা। কিন্তু পাকিস্থান এবং বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ উল্টো। তারা ভারতবর্ষের উন্নতি এবং শৌর্য সহ্য করতে পারে না। তাদের আচরণ কোনো ভাবেই প্রতিবেশীসুলভ নয় (নাকি আমাদের সামাজিক প্রতিবেশীদের মতোই ঈর্ষাপরায়ন!)। পাকিস্থানের লোকেদের তৈরী কিছু ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় দেখে মনে হয়, তাদের এই মুহূর্তে কোনো কাজ নেই, ভারতবর্ষকে গাল দেওয়া ছাড়া। এই ভিডিওগুলোতে বিভিন্ন লোকেরা মানে, ইউটিউবাররা বিভিন্ন কাজের বা পেশার লোকেদের, এমনকি বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ভারতবর্ষ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে আর তারা তাদের ক্ষোভ উগড়ে দেয় ক্যামেরার সামনে। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার, আবার হাসিরও ব্যাপার। প্রত্যেকের মনেই ভারতবর্ষ সম্পর্কে নিদারুণ বিষাক্ত গাছ লালিত-পালিত হচ্ছে। কোনো যুক্তির পরোয়া নেই, কারণ দর্শানোর চেষ্টা নেই, প্রত্যেকের একটাই মত, হিন্দুদের মারতে হবে। কথাবার্তা শুনলে পরিষ্কার, এরা এক একটা জিহাদি, ছোটো হোক আর বড় হোক। বিষয়গুলো প্রথমতঃ বিতর্কিত আর দ্বিতীয়তঃ একাধিক দেশ-সম্পর্কিত। ফলে লক্ষ-লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ভিডিওগুলো। অনেক পয়সা রোজগার হচ্ছে সেই ইউটিউবারদের। ভিডিওগুলোয় প্রচুর বিতর্কিত এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্য হচ্ছে, ফলে উত্তর-প্রত্যুত্তরে ভেসে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। কিছু কিছু উত্তর, অর্থাৎ পাকিস্থান এবং বাংলাদেশবাসীর উত্তর তুলে দিলে বোঝা যাবে বিষয়টি।

    ১. চাঁদে কোনো দেশ আজঅব্দি যেতে পারেনি, যেতে পারবেও না। চাঁদ আল্লাহর সৃষ্টি, ফলে কেউ সেখানে যেতে পারবে না।
    ২. ভারতবর্ষের সাথে একটাও যুদ্ধে পাকিস্থান হারেনি, সব যুদ্ধেই পাকিস্থান জিতেছে।
    ৩. পাকিস্থানের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো। ভারতবাসীরাই বরং এখন দারিদ্রতার সাথে লড়াই করছে।
    ৪. পাকিস্থানের উচিত ভারতবর্ষ আক্রমণ করা, কাশ্মীরসহ গোটা ভারতবর্ষ দখল করে নেওয়া।
    ৫. বেশীরভাগ পাকিস্থানের লোক G20, CEO (Google ইত্যাদি)-র মানে বোঝে না।
    ৬. পাকিস্থানবাসীরা দেশের চেয়েও ধর্মকে গুরুত্ব বেশী দেয়।

    তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশবাসীরা একটু বেশী জানে। কিন্তু তাদেরও দেশের চেয়ে ধর্মের প্রতি ঝোঁক বেশী। ভারতবাসীর কোনো ক্ষতি হলে তারা অনেকবেশী আনন্দিত হয়। বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে ভারতবর্ষের অবদানকে স্বীকার করে না। ভারতবর্ষ থেকে যে কোনো জিনিস আমদানী না হলে যে তারা খেতে পাবে না, সেটাও স্বীকার করে না। বাংলাদেশী মৌলবাদীরা নিত্য দেশের লোকদের প্ররোচনা দেয় হিন্দুদের বিরুদ্ধে, ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে।

    সম্প্রতি ভারতবর্ষের আর এক প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা লক্ষ্য করা গেলো। মালদ্বীপও একটি মুসলিম প্রধান দেশ। দেশটির অর্থনীতি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল এবং সেই পর্যটনের সিংহভাগ আসে ভারতবাসীদের কাছ থেকে। মালদ্বীপে পর্যটকদের অর্ধেকের বেশী ভারতবাসীরা। সম্প্রতি মালদ্বীপের তিনজন মন্ত্রী অহেতুক ভারতবর্ষের লাক্ষাদ্বীপ সম্পর্কে মন্তব্য করেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণে গিয়ে কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। উদ্দেশ্য লাক্ষাদীপের পর্যটনকে প্রচার করা। কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই দেশের একটি জায়গার পর্যটনের প্রচার করছেন, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? এই প্রচারের সাথে দেশীয় রাজনীতি জুড়ে থাকলেও (যদিও একেবারেই থাকা উচিত নয়, কিন্তু আমাদের দেশে বিরোধী দলের একমাত্র কাজ বিরোধীতা করা তাই সবক্ষেত্রেই তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরোধীতা করেন) বাইরের কোনো দেশের এতে মন্তব্য করা মানে অহেতুক জটিলতার সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর মালদ্বীপের মন্ত্রীরা শুধু মন্তব্যই নয়, কুরুচিকর মন্তব্য করে বসলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিশ্চুপে আসল কাজটি করে দিলেন। তাঁর কূটনৈতিক চালে মালদ্বীপ দাবার বোর্ডে চেকমেট হয়ে গেলো। আমাদের দেশের যারা বিমানের টিকিট কাটেন বা ট্যুরিজম ব্যবসা চালান তারা একযোগে মালদ্বীপের ট্যুর বন্ধ করে দিল। বহু ভারতবাসী সেই মন্ত্রীদের কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে তাদের মালদ্বীপ ভ্রমণ বাতিল করে দিল। একদিনের মধ্যেই মালদ্বীপের হোটেলগুলো মরুভূমির চেহারা নিল। মালদ্বীপের সরকার সেই তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হল। পরবর্তীতে কি কি হবে সেটাও দেখতে হবে। মালদ্বীপের নতুন রাষ্ট্রপতি চীনপন্থী। তিনি সরকারে এসেই ভারতবর্ষকে সটান বলে দিয়েছেন মালদ্বীপ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে। চীনের ঋণ নিয়ে ইতিমধ্যেই সেই দেশ জর্জরিত। সুতরাং সেই দেশের নতুন সরকারের জমানায় ভারতবর্ষের সাথে সম্পর্কের অহেতুক জটিলতা তৈরী হচ্ছে বারেবারে।

    প্রতিবেশী দেশগুলোর ক্ষেত্রে এইসব জটিলতার অনেক কারণ আছে। খুব গভীরভাবে দেখলে দেখা যায়, মালদ্বীপে পর্তুগিজ, ওলন্দাজ এবং ফরাসী আধিপত্য থাকলেও (১৫৫৮ - ১৭৯৬) থাকলেও ১৭৯৬ সাল থেকে ব্রিটিশ আধিপত্য কায়েম হয়। যা ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত চলে এবং এরপরে দেশটি স্বাধীন হয়। মালদ্বীপের অধিবাসীদের সাথে ভারতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য যোগ থাকলেও বহু প্রাচীনকাল থেকেই চীনের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্পর্ক ছিল। সুতরাং সেই দেশ যে চীনের ছলনায় ভুলে তাদের পাতা ফাঁদে পা বাড়াবে তাতে আশ্চর্য্যের কিছু নেই। দেশটির একশো শতাংশ জনগণ মুসলিম এবং তারা সুন্নি মুসলিম বা ধর্মান্তরিত মুসলিম। আমাদের দেশের আশেপাশে যে সব মুসলিম দেশ আছে তাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই একটি সাধারণ জিনিস দেখা যায় এবং সেটি হলো ভারতবর্ষের বিরোধীতা, অহেতুক বিদ্বেষ, হিন্দু বিরোধীতা, ঘৃনা এবং ভারতবর্ষকে খাটো করে দেখার ও দেখানোর চেষ্টা।

    অথচ সবকটি প্রতিবেশী দেশই ভারতবর্ষের চেয়ে যে কোনো দিক থেকেই অনেক পিছিয়ে। আগামী একশো বছরেও তারা ভারতবর্ষের সাথে তুলনায় আসতে পারবে কিনা সন্দেহ। এই প্রতিবেশী দেশগুলো সবই মুসলিম দেশ এবং মৌলবাদকে যথেষ্ট প্রশ্রয় দেয়। আর ইসলামী মৌলবাদে শিক্ষার কোনো স্থান নেই। একটি জাতিকে শেষ করে দেওয়ার, ধ্বংস করে দেওয়ার পক্ষে ইসলামী মৌলবাদ যথেষ্ট। এই উপমহাদেশে যেহেতু সব মুসলিমই ধর্মান্তরিত এবং সনাতন ধর্ম থেকে বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তারা শেষ অব্দি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে, তাই তাদের মূল কাজ হলো সনাতন ধর্ম বা হিন্দু ধর্মকে ঘৃনা করা, কিছু না বুঝে বিরোধীতা করা।

    ভারতবর্ষ সরকারীভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হলেও যেহেতু এইদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাধান্য, তাই প্রতিবেশী দেশের মুসলিমদের কাছে ভারতবর্ষ একটি হিন্দু রাষ্ট্র। বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি কিছুই শেখানো হয়না মাদ্রাসাগুলোতে। ফল হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত (?) মুসলিমরা দেশের আর্থিক অবস্থা বোঝে না, দেশের ইতিহাস জানে না, বিজ্ঞান বোঝে না, আমেরিকা উন্নত অস্ত্র দিলেও সেগুলো চালনা করতে পারে না, ধর্ম তাদের কাছে দেশের চেয়েও আগে। তারা জানে পাকিস্থানের কাছে পরমাণু বোমা আছে, কিন্তু বোঝে না যে পাকিস্থান ভারতবর্ষে একটা পরমাণু বোমা ফেললে ভারতবর্ষের কতটুকু জায়গার ক্ষতি হবে আর ভারতবর্ষ পাকিস্থানে একটা পরমাণু বোমা ফেললে গোটা পাকিস্থানটাই পৃথিবীর মানচিত্র থেকে উধাও হয়ে যাবে। তারা বোঝে না, ভারতবর্ষের অর্থনীতি কতটা বড় এবং মজবুত। সেই মজবুত অর্থনীতির কারণেই যে পৃথিবীর তাবড় তাবড় দেশ ভারতবর্ষকে সমীহ করে, গুরুত্ব দেয় এবং একই কারণে পাকিস্তানকে পাত্তা দেয় না। একটা দেশের কূটনীতি, দেশকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যায় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ভারতবর্ষের বিগত দশ-পনেরো বছরের ইতিহাস। সেই কূটনীতিতে দক্ষ হতে গেলে সর্বপ্রথম চাই শিক্ষা। পাকিস্থান বা বাংলাদেশ ক্রমশঃ পিছিয়ে যাচ্ছে সেই শিক্ষার অভাবের কারণে। সেই শিক্ষার অভাবের কারণেই চীনের ফাঁদে পা বাড়াচ্ছে পাকিস্থান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ এবং অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ।

    সবচেয়ে হাসির ব্যাপার হলো, পাকিস্থান-বাংলাদেশ-মালদ্বীপ - এদের বাসিন্দাদের অন্য দেশ নিয়ে মন্তব্য করলে সেই দেশের চেহারা বা অবস্থা তাদের কথামত হয়ে যাবে সেটা তো নয়। তারা ভারতবর্ষকে যতই গালাগাল করুক না কেনো, ভারতবর্ষ তার নিজের জায়গাতেই থাকবে এবং ক্রমশঃ উন্নতি করবে। "দেখবি আর জ্বলবি - লুচির মত ফুলবি" - এই কথাটি বোধহয় সবচেয়ে বেশী প্রযোজ্য এইক্ষেত্রে। তারা স্বীকার করুক আর না করুক, ভারতবর্ষ দীর্ঘকাল ধরেই একটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। এবং অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। আর বর্তমানে তো ভারতবর্ষের কূটনীতি দেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমাদের দেশের অর্থনীতি বর্তমানে চার ট্রিলিয়ন ডলার পেড়িয়ে গেছে। বিশ্বের সমস্ত দেশ এমনকি বিশ্বে সুপার পাওয়ার বলে পরিচিত দেশগুলোও ভারতবর্ষকে মান্যতা দিচ্ছে, গুরুত্ব দিচ্ছে। ISRO-র সাফল্য দেশকে বিশ্বের প্রথমসারিতে নিয়ে গেছে। পাশাপাশি পাকিস্থান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপের না আছে অর্থনৈতিক স্থিরতা, না আছে কূটনীতি, না আছে উন্নত বিজ্ঞান, না আছে বৃহৎ সৈন্যবাহিনী, না আছে উন্নত অস্ত্রশস্ত্র। কেবল পাকিস্থানের কাছে পরমাণু বোমা আছে, কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে আদৌ তারা সেই অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারবে কিনা সেটা পরীক্ষিত নয়। আমেরিকার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েও তো তারা উন্নত অস্ত্রশস্ত্র চালাতে পারে না, সেটা প্রমাণিত। তাই এইসব দেশগুলোর বর্তমান পরিস্থিতিতে কোথায় প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করবে, উল্টে সম্পর্ক খারাপ করার কাজে উঠেপড়ে লেগেছে। বাংলাদেশবাসীদের এদেশে আসার ভিসা বাতিল করে দিতেই তো তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে। পাকিস্থানের সাথে বাণিজ্য বন্ধ করে দিতেই তাদের অর্থনীতি অতলে তলিয়ে গিয়েছে। মালদ্বীপে বেড়াতে যাওয়া বন্ধ করে দিতেই তাদের ঝটকা লেগে গিয়েছে, চাপে পড়ে মন্ত্রীদের বরখাস্ত করেছে তারা।

    পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়ায় এই ধরনের আলোচনার ফলে সেই দেশের মানুষের মনের কথা, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অন্য দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে সরাসরি। রাজনৈতিকভাবে বা কূটনৈতিকভাবে এক দেশের সাথে অন্য দেশের সম্পর্ক থাকাটাই বাঞ্ছনীয়, নইলে যে কোনো ছোটো ছোটো ঘটনায় এইরকম হঠাৎ করেই অবনতি ঘটতে পারে সম্পর্কের। মুসলিমদের মনে রাখা উচিত তাদের কাছে দেশের চেয়ে ধর্ম আগে হতে পারে কিন্তু আমাদের কাছে মানে সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে দেশ আগে। দেশের কোনরকমের অপমান আমরা সহ্য করতে পারি না। আমরা দেশকে মাতৃরূপে পূজা করি। সেই দেশমাতৃকার অপমান আমাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেই দেখা গিয়েছে নিশ্চয়ই। দেশমাতৃকার নামেই সমস্ত যুবকেরা হাসিমুখে প্রাণ বলিদান দিয়েছে। আর আমাদের বর্তমানের কূটনীতি যে কোনো দেশকে ধ্বংস করে দিতে পারে যে কোনো সময়। আমাদের বর্তমানের কূটনীতির ঝাঁঝ আমেরিকা, রাশিয়া বুঝতে পারছে প্রতি মুহূর্তে আর তোমরা তো আমাদের কাছে হিসেবের মধ্যেই পড় না।
    পাকিস্থান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপের অধিবাসীদের বোঝা উচিত যে, তাদের রাজনৈতিক নেতারা তাদের খাদ্য-বাসস্থান-উন্নয়ন দিতে পারে না এবং তাদের জীবনের প্রাথমিক চাহিদাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধর্মের অন্ধকূপে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। ইসলামিক রাষ্ট্র, ইসলামিক নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে, হিন্দুদের মারতে হবে, হিন্দুরা কাফের, ভারতবর্ষকে মুসলিম রাষ্ট্র বানাতে হবে, ভারতবর্ষে জেহাদি ঢুকিয়ে সেখানে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে, বিশেষ করে আরব দুনিয়ায়, সেখানে কিন্তু ধর্মের করাল গ্রাসে নাগরিক ছন্দ নষ্ট হচ্ছে না। অথচ আমাদের প্রতিবেশীরা তাদের গর্বের দুনিয়া থেকে কি শিক্ষা পাচ্ছে বা নিচ্ছে? বর্তমান পরিস্থিতিতে তোমরা তো ধর্মীয় আচার আচরণ করতে মক্কাও যেতে পারবে না, সেসব দেশ তোমাদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু হিন্দু কেনো কাউকেই শত্রু ভেবো না, এইসব ভেবে নিজের জীবন নষ্ট কোরো না। বরং বিজ্ঞান শেখো, ইতিহাস শেখো, অর্থনীতি শেখো, শিক্ষিত হয়ে ওঠো। নিজের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাও, উন্নত থেকে উন্নততর করো। উন্নত দেশের নাগরিক হওয়ার চেষ্টা করো, তাহলেই দেখবে ইসলামিক দুনিয়া তোমাদের আর জোচ্চোর, পকেটমার ভাববে না। মাথা উঁচু করে মক্কায় হজ করতে যেতে পারবে।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সেসব দেশ তোমাদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে | 136.226.50.121 | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৪527523
  • আচ্ছা? কবে হল এসব? 
  • dc | 2401:4900:1f2b:3368:3c79:4a0b:2b07:50c8 | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৩৯527524
  • " ভারতবাসীর মনে পাকিস্থান বা বাংলাদেশ নিয়ে খুব এমন যে দুশ্চিন্তা আছে বা ঈর্ষা আছে তা বলা যায় না। বরং বড়রা যেমন ছোটদের খুব এমন পাত্তা দেয়না সেইরকম মানসিকতাই বহন করে ভারতবাসীরা।"
     
    অ্যাঁ তাই নাকি? তাহলে কেন সারাক্ষন ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় আর টিভিতে অবিরাম অনন্ত পাকিস্তানকে গাল দেওয়া হয়ে চলেছে? কেন সারাক্ষন শাসানো হয়ে চলেছে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে? কেন বিজেপির একেবারে প্রথম নেতা থেকে একেবারে সবচেয়ে নীচুতলার নেতারা আর কর্মীরা সারাক্ষন পাকিস্তানের নামে ভোট চাইছে? কেন অবিরাম লাখ লাখ কোটি কোটি পোস্ট আর ভিডিও ছড়ানো হয়ে চলেছে পাকিস্তানের জুজু দেখিয়ে? 
  • dc | 2401:4900:1f2b:3368:3c79:4a0b:2b07:50c8 | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪২527525
  • "কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই দেশের একটি জায়গার পর্যটনের প্রচার করছেন, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? "
     
    এর চেয়ে খারাপ খবর কিছু হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর কাজ নাকি পর্যটনের প্রচার করা!! তাহলে পর্যটন মন্ত্রী কি করছে? 
  • 4z | 65.95.162.63 | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৭527526
  • "... তেমনি বহুলোক আছে যারা এই মাধ্যমকে অত্যন্ত খারাপভাবে ব্যবহার করছে। আবার বহুলোকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে কিছু বিতর্কিত বিষয় নিয়ে চর্চা করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।"
     
    একদম একমত। এই লেখাটাই তো জলজ্যান্ত প্রমাণ।
  • | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:২৩527529
  • "কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই দেশের একটি জায়গার পর্যটনের প্রচার করছেন, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? " -
    সেই আর কোন কাজ নেই,  টেলিপ্রম্পটার ছাড়া এক অক্ষর বলার মুরোদ নেই  গো অ্যাজ ইউ লাইক খেলাই কাজ। 
     
     
    তবে ল্যাঞ্জা (গরু হোক বা ছাগু) ইজ আ টাফ থিং ট্যু হাইড। 
  • সনাতনী জুজু  | 103.151.156.76 | ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৯527544
  • "অথচ সবকটি প্রতিবেশী দেশই ভারতবর্ষের চেয়ে যে কোনো দিক থেকেই অনেক পিছিয়ে। আগামী একশো বছরেও তারা ভারতবর্ষের সাথে তুলনায় আসতে পারবে কিনা সন্দেহ।"
     
    বাস্তব কিন্তু অন্য কিছু বলছে | ২০২৩ সালের শেষেও মালদ্বীপের মাথাপিছু আয় ছিল 17,558.75 ডলার যেখানে একই সময়ে ভারতের মাথাপিছু আয় ছিল 2,612.45 ডলার | বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ২০২৩ সালের শেষে  $2,621 ডলার |  
     
    তবে হ্যাঁ ​​​​​​​একটা ​​​​​​​ব্যাপারে ​​​​​​​আমরা ​​​​​​​সব প্রতিবেশীর থেকে এগিয়ে | বিশ্বের ​​​​​​​মোস্ট polluted cities এর ​​​​​​​তালিকাতে ভারত থেকে ৯ টি শহর আছে প্রথম ২৫ টি শহরের মধ্যে | বাদবাকি প্রতিবেশীদের থেকে অন্ততঃ অনেকটাই এগিয়ে এব্যাপারে |
  • dc | 2401:4900:7b8e:d23b:f450:357c:7744:a99a | ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১০527546
  • শুধু পার ক্যাপিটা ইনকাম না, HDI তেও ভারত প্রতিবেশীদের থেকে অনেকটা পিছিয়ে। ২০২১ e শ্রীলংকার এইচডিআই র‌্যাংক ছিলো ১৯১টা দেশের মধ্যে ৭৩, তারপর চীন ৭৯এ, তারপর ভুটান ১২৭এ, বাংলাদেশ ১২৯এ, তারপর ভারত আর ভুটান দুজনেই ১৪৩এ।  অর্থাত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের দিক দিয়ে ভারত এই সাবকন্টিনেন্টে সবচেয়ে পিছিয়ে। এদিকে আমাদের প্রধানসেবক লাক্ষাদ্বীপে ডুব সাঁতার কাটছে laugh
  • খ্যাখ্যা | 2405:8100:8000:5ca1::136:43fb | ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪৯527547
  • প্রধান সেবকের ভক্তরা তো শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান সবের অর্থনীতিকেও কোলাপ্স করিয়ে দেয় পারলে। সব ডুবে গেল, খাবার কেনার পয়সা নেই বলে রটায়। অথচ স্বয়ং অমর্ত্য সেন শ্রীলঙ্কার প্রশংসা করেছেন।
  • r2h | 192.139.20.199 | ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩৮527552
  • ওরেব্বাস, "মালদ্বীপের মাথাপিছু আয় ছিল 17,558.75 ডলার" - এ তো অনেক টাকা!
    এটা কি বড়লোক টোকদের আয় ধরে? স্ট্যাটিস্টিকসে কী যেন একটা বলে ওটাকে...
    নাকি সত্যিই ওখানে ফসলের সুষম বন্টন?
  • dc | 2401:4900:7b82:fb9:1d6f:6abb:c8b9:93ad | ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২৪527553
  • এই হলো ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ, আর পাকিস্তানের পার ক্যাপিটা ইনকাম (গুগল সার্চ রেজাল্ট)
     
     আর এই হলো মাল্দ্বীপের পার ক্যাপিটা ইনকাম (গুগল সার্চ রেজাল্ট)
     
    গুগলকাকু আরও বলছে, মালদ্বীপের জিনি ইনডেক্স .৩, অর্থাত বেশ সুষম বন্টন। তবে এও বলছেঃ 
     
    The Gini coefficient for the Maldives is 0.313. The Gini coefficient for Malé is slightly higher than in the Atolls, indicating that inequality is higher in Malé compared to the Atolls.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন