এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • দেওঘরে সাত দিন

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৩১১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • বড়দিনের ছুটিতে সৌমেন বৌ, ছেলে, শ্বশুর, শাশুড়ী, বৌয়ের মাসী, মেসোর সাথে এসেছে দেওঘর। উঠেছে একটা আশ্রমের অতিথিশালায়। সৌমেনের শাশুড়ী খুব ভ্রমণপিয়াসী। আগেও কয়েকবার দল বেঁধে এসেছেন এখানে। তাই সবা‌ই ওনার পরিচিত। ওখান‌কার সবার ব‍্যবহার‌ও খুব আন্তরিক। 

       অনেকটা জমির ওপর ১৩০ বছরের প্রাচীন দ্বিতল বাড়িটাই বর্তমানে অতিথি‌নিবাস। চারপাশে বড় বড় প্রাচীন গাছ, চর্চিত ফুলের বাগান‌। একদা এটা ছিল কলকাতার এক ব‍্যবসায়ী পরিবারের অবসর নিবাস। সেই ব‍্যবসায়ী কয়েক বিঘে জমি সমেত বাড়িটি আশ্রমকে দান করে দিয়েছেন। সর্বাঙ্গে অতীত জড়িয়ে বাড়িটি এখন অলস অজগরের মতো পড়ে আছে সেই বিশাল জমি‌তে। এমন জায়গায় কদিন শুয়ে বসে কাটালে বেশ একটা মিষ্টিক চার্ম অনুভব করা যায়। যেমন প্রেমেন মিত্তিরের 'তেলেনাপোতা আবিস্কার' গল্পের ওপর  মৃণাল সেনের 'খন্ডহর' সিনেমায় ক‍্যামেরা হাতে আবিস্কার করে বেড়াচ্ছি‌ল নাসির। তবে শাবানার কোনো গল্প নেই এখানে। বেড়াতে গিয়ে ধোপা‌র লিস্টি ধরে দৌড়ঝাঁপ  অনেক হয়েছে। তাই ইদানিং ওর একাকী বা দলের সাথে অলস ভ্রমণের আমেজ ভালো লাগে।  

        প্রাচীনত্বের বিষন্ন সাহচর্যে  অনেকে‌রই হাঁফ ধরতে পারে। বর্তমানের উত্তেজনা উপভোগে আসক্ত‌ মানুষ শান্ত ঝিম ধরা  অতীতের পরিমণ্ডলে অস্বস্তি বোধ করে। তবে সৌমেনের বেশ লাগে। তাই ও একাকী ভ্রমণে অনেকবার নানা পর্যটকবিরল, নির্জন, ভগ্নপ্রায়, পরিত্যক্ত কেল্লা, প্রাসাদের আনাচে কানাচে বহুক্ষণ ঘুরে বেড়িয়েছে নিজের মনে। এমন জায়গা ওকে নিশির ডাকের মতো টানে। বরং তাজমহলের মতো পরিবেশে ওর দমবন্ধ লাগে। 

    হয়তো নির্জনতাপ্রিয়‌তার বীজ ওর শৈশবে‌ই রোপিত হয়ে গেছি‌ল। ওর বড় পিসি ছিলেন নিঃসন্তান বাল‍্যবিধবা। নদীয়া জেলার এক অজ পাড়াগাঁয়ে স্বামী‌র রেখে যাওয়া বড় জমি‌ওয়ালা একটি বাড়িতে তিনি একা থাকতেন। পাঁচ বছর বয়সে সৌমেন সেই বাড়িতে একটি বছর কাটিয়ে‌ছিল। আশপাশে ঝোপঝাড়, বাঁশবনে নির্জন দুপুরে ঘুরে বেড়াতো বালকটি। কখনো আরো দুরে চলে যেতো ছমছমে আখের ক্ষেতে। মুক্তবিহঙ্গের মতো উন্মুক্ত গ্ৰামীণ পরিবেশে একটি বছর যাপনের সেই মধুর স্মৃতি বহু রোমন্থনে আজ‌ও অম্লান ওর মনে। তারপরেও ছোটোখাটো মফঃস্বল শহরে কৈশর কাটানো‌র ফলে পরিণত বয়সে‌ও মেগাসিটি‌র প্রতি ওর এক ধরণের মানসিক বিক‍র্ষণ জন্মে গেছে।

        দলের বাকি সবাই এক একদিন আশে পাশে ঘু্রতে যায় - বৈদ‍্যনাথ মন্দির, অনুকূল ঠাকুরের স‌ৎসঙ্গ আশ্রম, বালানন্দ আশ্রম বা বাজারে। সৌমেন যায় না। ওর ওসব আগেই দেখা। তাছাড়া ভীড়ভাট্টায় ঘোরাঘুরি ওর পছন্দ নয়। ও সকাল বিকেলে নন্দনপাহাড়ে একাকী হাঁটতে যায়। পাহাড়‌টাকে‌ও এক চক্কর মারে। তাতে এই অতিথি‌নিবাস থেকে যাতায়াতে হয়ে যায় পাঁচ কিমি। দুবেলা‌য় রোজ দশ কিমি হাঁটা হয়। বেশ লাগে। এটা দরকার‌ও। কেননা খাওয়া দাওয়া বেশ ভালো। দেওঘরের হজমি জলের জন‍্য বেশ ক্ষিধে‌ও পায়। ফলে সাতদিনের এমন অলস যাপনে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। 

       নন্দনপাহাড়ে সকালে চক্কর মারতে গিয়ে কদিন ধরে সৌমেন দেখেছে একটি তরুণী ট্র‍্যাকস‍্যূট পরে দৌড়ায়। লম্বা, সুঠাম স্বাস্থ্য। পেন্ডুলামের মতো দুপাশে দোলে তার হর্সটেল করে বাঁধা চুল। এভাবে এতক্ষণ দৌড়ানো রীতিমত সামর্থ্য ও অভ‍্যাসে‌র ব‍্যাপার। এখন তো প্রশ্ন‌ই আসে না, অল্প বয়সে‌ও সৌমেন একটা‌না এত দৌড়াতে পারতো না। মেয়েটির স্ট‍্যামিনা ওকে মুগ্ধ ক‍রে। একদিন উল্টো দিক থেকে দৌড়ে এসে সৌমেনের একটু দুরে দাঁড়িয়ে পড়ে ও দম নেয়। কৌতুহলী চোখে দেখে সৌমেনকে। সৌমেন জিজ্ঞাসা করে, তুমি কি ম‍্যারাথন দৌড়ের জন‍্য প্র‍্যাক্টিস করছো নাকি? সে বলে, না, না, পুলিশে ভর্তি হবার জন‍্য। আপনাকে‌ও কদিন ধরে দেখছি পাহাড়‌টাকে চক্কর দিতে। আগে তো কখনো দেখি‌নি? আপনি কি এখানে নতুন এসেছেন? সৌমেন বলে, আমি এখানে সাতদিনের জন‍্য বেড়াতে এসেছি। এই শনিবার চলে যাবো। তোমার যা স্ট‍্যামিনা দেখছি মনে হয় তোমার সিলেকশন হয়ে যাবে। মেয়েটি উজ্বল মুখে হেসে বলে, থ‍্যাঙ্ক ইউ আঙ্কল। নন্দন‌পাহাড়ে ওঠার সিঁড়িতে‌ সকালে কয়েকটি অল্পবয়সী ছেলে নিয়মিত শরীর‌চর্চা করে। দেখে ভালো লাগে। 

       ফিরে এসে প্রাতরাশ করে ছাদে বসে খানিক ব‌ই পড়ে সৌমেন। কিছু লিখতে ইচ্ছে হলে মোবাইলে মনপানসী ভাসায় আপন খেয়ালে। একটা নাগাদ চানে যাওয়ার আগে শীতের মিঠে রোদে বসে গায়ে খানিক তেল মাখে। বাড়িতে এসব হয় না। ওদের ছেলে নীলাদ্রি‌ একটু হুঁশো টাইপের। ওকে একদিন সৌমেন বলেছিল, বাবাই, পিঠে একটু তেল মাখিয়ে দিবি? দাঁড়াও, ভালো করে ম‍্যাসাজ করে দিচ্ছি, বলে দুপুর রোদে সৌমেন‌কে আদুর গায়ে মাদুরে ফেলে চাপড়ে, চটকে একসা করে সারা গা লাল করে দিলো। ছাড়, ছাড়, লাগে তো, বলে শেষে নিস্তার পায়। আর বলেনি তারপর।

      মধ‍্যাহ্ন‌ভোজের পর নিঝুম দুপুরে মৃদু দিবানিদ্রা দিয়ে উঠে শরীর‌টা ঝরঝরে লাগে। কমলালেবু খেতে খেতে সবাই মিলে খানিক গজালি হয়। কখনো অন‍্য কোনো গল্পবাজ অতিথি‌ আসেন ঘরে। সৌমেনের শ্বশুরমশাই নির্বিরোধী আড্ডা‌বাজ মানুষ। চৌকিদার থেকে চিকিৎসক বা পি‌ওন থেকে প্রফেসর - সবাইকে অল্প সময়ে আপন করে নেওয়ার বিরল চরিত্র‌গুণ আছে তাঁর। এ জিনিস চেষ্টা করে হয় না। ভেতর থেকে আসে। নীলাদ্রি একতলায় বাঁধানো রোয়াকে বসে আশ্রমের কর্মচারী, অতিথি‌দের সাথে ক‍্যারাম খেলে। রেড গুটি ফেলতে পারলে কখনো 'ইয়াহু' বলে দু হাত মাথার ওপর তুলে চেঁচিয়ে ওঠে। কখনো ভোলুরামকে ধরে চটকায়। কুকুরদের সাথে ওর সহজেই দোস্তি হয়ে যায়।

       প্রথমদিন এসেই আশ্রমের দাওয়ায় বিস্কুট রঙের  দেশী কুকুরটাকে দেখেছে সৌমেন। খুব শান্ত। সারাক্ষণ‌ই প্রায় শীতের রোদে পড়ে পড়ে ঘুমোয়। এই কদিনে একবার‌ও তার আওয়াজ পাওয়া যায়নি। মুখের কাছে মোবাইল বাগিয়ে ছবি তুলেছে সৌমেন। চোখ পিটপিট করে দেখেছে কিন্তু এতটুকু বিরক্তি প্রকাশ করেনি। কত অতিথি আসে যায়। টুঁ শব্দ‌টি করেনা। তাই সৌমেন ওর নাম দিয়েছে ভোলুরাম। 

       আশ্রমের পরিচালক দত্তবাবুর খাস সহকারী শ‍্যামল। সৌমেন জিজ্ঞাসা করে, আচ্ছা শ‍্যামলদা, আপনাদের এই অতীব ভদ্র ভোলুরাম কি পাহারা টাহারার কোন কাজে আসে নাকি কেবল‌ই শো পিস? উনি বললেন, না না, মোটেই তা নয়। এমনিতে চুপচাপ কিন্তু রাতবিরেতে অচেনা কাউকে গেটের কাছে ঘুরঘুর করতে দেখলে চেঁচিয়ে আশ্রম মাথায় করবে। সৌমেন ভাবে কিভাবে ওরা রপ্ত করে এমন আশ্চর্য সহবৎ! এমন সুক্ষ বিচারবোধ! রাতে, দুপুরে, সবার আগে খাবার দেওয়া হয় ভোলুরামের থালায়। তারপর ডাক পড়ে অতিথিদের। তার মানে আশ্রমে ভোলুরামের ভিআইপি স্ট‍‌্যাটাস।

        দোতলায় ওরা পাশাপাশি দুটো ঘরে আছে। তার একটা বিশাল বড়। পুরোনো আমলের উঁচু কড়ি বরগার ছাদ। খড়খড়ি দেওয়া জানলা। খিলানের দরজায় মান্ধাতা আমলের কাঠের পাল্লায় পেতলের ছিটকিনি, লোহার শেকল। ইয়াব্বড় পেল্লায় খাট। তিনজনের বিছানায় অনায়াসে পাঁচজন শুতে পারে। প্রাচীন আসবাব‌গুলি‌ও বাড়িটা যাঁরা দান করেছেন তাঁদের। তার সাথে যোগ হয়েছে হাল আমলের একটা ফঙ্গবেনে কাঠের আলনা, যেটা এই প্রাচীন পরিবেশে‌, বনেদি আসবাবের পাশে একটু বেমানান লাগে। তবে বহুদিন পর সৌমেন এই উপযোগী বস্তুটি দেখলো। ছোটবেলায় অনেক বাঙ্গালী বাড়ির মতো ওদের বাড়িতে‌ও ছিল একটা কাঠের আলনা।

        ১৩০ বছর আগে বিজলী বাতি ছিল না। ছিল না জসিডি দেওঘর ট্রেন‌। চলতো গরুর গাড়ি বা নাল লাগানো ক্ষুরে কপ্‌কপ কপ্‌কপ আওয়াজ তুলে ঘোড়ায় টানা টাঙ্গা। ছেলে মেয়ে, বৌমা, জামাই, নাতি নাতনি নিয়ে পরিবারের মাথা কর্তামশাই হয়তো তখন তাঁর জমজমাট সংসার নিয়ে কদিনের জন‍্য ছুটি কাটাতে এসে জাঁকিয়ে বসতেন এই বাড়িতে অবসরযাপনে। শীতের সকালের মিঠে  রোদে বাগান গমগম করতো  ছোটদের হুটোপুটি, কলকন্ঠে। সন্ধ্যায় জ্বলতো সেজবাতী। দম দেওয়া কলের গানের চল তখন‌ও হয়নি। হয়তো কোনো সন্ধ্যায় বৈঠক‌খানায় হারমোনিয়াম, এস্রাজ, তবলা সহযোগে বসতো গানের আসর। কোন সুকন্ঠী নতুন বৌকে হয়তো শ্বশুরমশাই আবদার করতেন, ঐ গানটা তোমার গলায় বেশ লাগে বৌমা, আজ আর একবার গাও না, শুনি। হয়তো কখনো খোল, করতাল, খঞ্জনী নিয়ে বসতো কীর্তনের আসর‌। হয়তো ভাবে বিভোর কোনো বালবিধবা বৃদ্ধার গাল বেয়ে নামতো অশ্রু।

       কচিকাঁচাদের গান বাজনায় উৎসাহ নেই। সেজবাতির আলোয় বাড়ির আনাচে কানাচে তৈরি হয়েছে আদুরে অন্ধকার। অমন আলোছায়া‌ময় পরিবেশ চোর-পুলিশ খেলার জন‍্য অনবদ‍্য। ছোটরা তাতেই মত্ত। পুলিশ চোরকে ধরে ফেলায় আচমকা ওঠে মিলিত শিশুকণ্ঠে গানছাপানো চিৎকার। বড়দের মুখে খেলে যায় প্রশ্রয়ে‌র হাসি। আহা, সবাই মিলে কদিন প্রাণ ভরে খেলে নিক, আবার কবে এভাবে একসাথে আসা হবে কে জানে।

        এমন নানা মধুর প্রাণবন্ত স্মৃতি হয়তো জড়িয়ে আছে এখন নিস্প্রাণ এ‌ই বাড়ি‌র আনাচেকানাচে, চকলা ওঠা মলিন পলেস্তারা‌য়। এসব আমেজ ঝাঁ চকচকে হোটেলে কোন মূল‍্যে‌ই পাওয়া যায় না। ছাদে একা বসে সৌমেন নিজের মনে এমন নানা হয়তো‌র  আলোয়ান গায়ে জড়িয়ে কল্পনায় ওম নেয়।

    পুনশ্চঃ-

       দেওঘরে এহেন এলায়িত লয়ে অবকাশ‌ যাপনের আখ‍্যান পড়ে তিন দশক আগে সৌমেনের অনেক ভ্রমনের সঙ্গী প্রিয় বন্ধু উৎপল লিখলো - তারপর? 

    সৌমেন মানসিক হোঁচট খেয়ে থমকে যায়। অতঃপর লেখে, তুই একদা কবিতা লিখতিস। তাই তোর কাছে এই ‘তারপর’ আশা করিনি। জীবনভর শুধু‌ চলতেই থাকবো? দু দণ্ড দাঁড়িয়ে দম নেবো না? তবে এও ঠিক আমৃত‍্যু একটা 'তারপর' অনেককেই কলুর বলদের মতো তাড়িয়ে বেড়ায়। পৌঁছে দেয় দেশ দেশান্তরে,  নানা সাফল‍্যের দিগন্তে। কারুর ক্ষেত্রে আবার ‘তারপর’ এর প্রত‍্যাশা পূরণ না হয়ে চলতে থাকে থোর-বড়ি-খাড়ার দিনগত পাপক্ষয়। তবে চোখ থাকলে তার মাঝেও কখনো দেখা যায় মেঘের ফাঁক দিয়ে ঝিলিক মারা একফালি রোদ্দুর। মন থাকলে অনুভব করা যায়, নানা অকিঞ্চিৎকর‌তা সত্ত্বেও বেঁচে থাকা সুন্দর! 
     
    সৌমেনের মন্তব্য পড়ে উৎপল আর কিছু লেখে না। আসলে, চামড়ায় বলি রেখা পড়ার আগেই অনেকে‌র মনে‌ রোমান্টিসিজমে পলি পড়ে। অতীতচারণা‌য় আসে ক্লান্তি। অনেক মধূর স্মৃতি হয়ে যায় 'ধূসর পাণ্ডুলিপি'। আধ্যাত্মিকতা বোধের উন্মেষ সবার আসে না। তবে প্রচলিত প্রথায়, অনেককে দেখে অবোধ অভ‍্যাসে আসে নানান আচার পালনের প্রবণতা। জাঁকিয়ে ধরে লক্ষ‍্য ভুলে উপলক্ষে মজে থাকা‌র নেশা। দ্বিতীয় শৈশবে ঐ পুতুল‌ খেলাতেও মজে থাকে অনেকে। তবে ওসব করে মনে শান্তি পেলে তা পরনিন্দা পরচর্চা করে সময় কাটানো‌র থেকে অন্ততঃ ভালো‌।  

    প্রচলিত ধারণা‌য় ঈশ্বরভক্তি সৌমেনের স্বভাবে নেই। ওর নস্টালজিয়া বোধ খুব গাঢ়। তাই ওর ইচ্ছে হয়, নানা বিশেষ স্মৃতি বিস্মৃতির অতলে চলে যাওয়ার আগে শব্দের মোড়কে ধরে রাখতে। অতীতের নানা রঙিন অনুভূতি‌র রঙ এখনো ওর মনে দৈনন্দিন যাপনের একঘেয়েমি‌তে ধূসর হয়ে যায়নি। জাঁকিয়ে ধরেনি  মানসিক বার্ধক্য। নিটোল ভাবে লিপিবদ্ধ করা তথ‍্যসমৃদ্ধ নিবন্ধ ঐতিহাসিক দলিল - ব‍্যক্তির, সমষ্টির, সময়ের। তেমন নিবন্ধ রচনার এলেম সৌমেনের নেই। ওর শখ কল্পনায় ডালপালা বিস্তারের। তার জন‍্য‌ও প্রয়োজন সৃজনশীল‌তার। সেই বুৎপত্তি‌ও নেই সৌমেনের, তবু সেই চেষ্টায় মজে থেকেও অমল আনন্দ পায় ও। 
     
    আফশোষ, একদা প্রিয় বন্ধু উৎপল সেটা অনুভব করতে পারলো না। জানতে চাইলো এরপরে‌ও আরো ‘তারপর’।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৩১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন