এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • বাংলা বইয়ের গ্রুপ 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ১০ অক্টোবর ২০২৩ | ৯৮১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ফেসবুকে বাংলা বইয়ের গ্রুপগুলো হয়েছে এক অদ্ভুত জায়গা। কদিন আগে সুবোধ সরকার আনন্দবাজারে একটা লেখা লিখেছিলেন। তাতে এরকম একটা লাইন ছিল, যে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সা বলতে জানতেন, তারপর কোনো বাঙালি লেখক আর পারেননি। পেরেছেন কি পারেননি, সে নিয়ে মতভেদ থাকাই স্বাভাবিক, তর্কাতর্কিও। কিন্তু ও মা, কোথায় কী। একখানা বইয়ের গ্রুপ খুলে দেখি, গাদা গাদা লোকে প্রশ্ন করছেন, এই সা বলাটা কী জিনিস। এত অ-আ-ক-খ থাকতে খামোখা লোকে সা বলবে কেন। তারও হাজারে হাজারে উত্তর। এবং সেসব আরও চমকপ্রদ। কেউ বলছেন সা মানে স্বাগতম। কেউ বলছেন সা মানে সাধারণজ্ঞান। দু-একজন মিনমিন করে সা মানে ষড়জ, সেটা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেসবে কে কান দেয়। অন্যের লেখা-টেখা কেউ পড়েও না। কিচ্ছু না জেনেও কিছু একটা উত্তর দিয়ে দিলেই হল। কেউ যে সা মানে সারে জাঁহাসে আচ্ছা বলেননি এই ঢের। তা, বাঙালি লেখক ও সা নিয়ে আমারও বিস্তর বক্তব্য আছে, কিন্তু সব পড়ে মাথাটা, যাকে বলে আউলে গেল। বাঙালি লেখক সা বলতে পারেন কিনা সে পরের প্রশ্ন, বইয়ের গ্রুপের পাঠকরা সা শুনতে জানেন তো?

    এ তো গেল প্রথম এপিসোড। তার কদিন পরে দেখলাম, কে বলেছেন বিভূতিভূষণ ওভাররেটেড। ব্যক্তিগত মত লোকের থাকতেই পারে, সে নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু যেটা ভারি মজার, সেটা হল, এইসব গ্রুপে রিভিউ-টিভিউ দেখে যা বোঝা যায়, বিভূতিভূষণের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখা, না পথের পাঁচালি না, তারানাথ তান্ত্রিক। আশ্চর্য হবেন না, বি-ভূত-ই-ভূষণের নামের মধ্যেই যখন ভূত আছে, তাইই হওয়া উচিত। এবং জনপ্রিয় মানে শুধু হিট নয়, যাকে বলে সুপারহিট। তার অনেক পিছনে থেকে দুই নম্বরে আছে আদর্শ হিন্দু হোটেল। সেটা অবশ্য এমনি এমনি হয়নি। রহস্যরোমাঞ্চের কোন এক ইউটিউব চ্যানেল নাকি জিনিসটা জনপ্রিয় করেছে। শুধু তারাই করেছে তা না, এমনিতেই ভূত-প্রেত-তন্ত্র-মন্ত্রকে আড়াল থেকে জনপ্রিয় করার একটা বিপুল চেষ্টা চলে, দেখতেই পাই। ভূত নিয়ে গাদাগাদা শারদীয়া বেরোচ্ছে, কারো নাম বুদ্ধুভুতুম, কারো নাম ভুতভুলাইয়া। না, ভূতের গপ্পে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দলে-দলে প্রাপ্তবয়স্ক লোক স্রেফ শিশুপাঠ্য ভূতের গপ্পো পড়ছে, সেটাকেই তারা সাহিত্য ভাবছে, এ যেন কেমন একটু।

    অবশ্য শুধু ভূত না, বাজারে রহস্যরোমাঞ্চও হট-কচুরির মতো চলে। এখন খুব হইচই হচ্ছে হেমেন্দ্রকুমার রায়কে নিয়ে। যখের-ধন, আবার-যখের-ধন, এইসব যিনি লিখেছিলেন। আমার বয়স নয়নয় করে খুব কম না। যদিও এই দুটো লেখা আমি পড়েছি কচি বয়সে, কিন্তু হেমেন্দ্রকুমার আমার প্রজন্মেরও আগের লেখক। এবং কিশোরপাঠ্য। এই লম্বা জীবনে, কদিন আগে পর্যন্ত কখনও কোনো প্রাপ্তবয়স্ক লোককে হেমেন্দ্রকুমার পড়তে দেখিনি। হ্যাঁ গবেষণা-টবেষণা করলে আলাদা কথা। যা গতি দেখছি, এর কিছুদিন পর স্বপনকুমারকেও রহস্যরোমাঞ্চের শেষ কথা আখ্যা দিয়ে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে। এবং ইয়া-ইয়া গোঁফওয়ালা পুরুষ, আর খোঁপা-এলানো মহিলারা কিনে পড়বেন।

    না, এইটা পাঠকদের গাল দেবার জন্য লিখছিনা। বইয়ের কারবারে অনেকদিন আছি, 'সাধারণ পাঠক'রা মোটেও এরকম না, এইটুকু মনে হয়, বলার জায়গায় আমি আছি। এই ভূত-প্রেত-তন্ত্র-মন্ত্র-রহস্য - পুরো ব্যাপরটাই ফাঁপিয়ে তোলা বুদবুদ মনে হয়। কোনো এক শিবিরের গন্ধ পাই। কিন্তু খুঁজে বার করা মুশকিল। কারণ হুজুগটা একবার তুলে ফেলার ফলে, স্রেফ নাম করবেন বলে বা চলতি হাওয়ায় গা ভাসাবেন বলে, অনেকেই এইগুলো লিখছেন, যাঁদের সঙ্গে ওই শিবিরের বিশেষ যোগাযোগ নেই। অবশ্য থাকতেও পারে, আমি আর কী জানি। মোদ্দা ব্যাপার যা দাঁড়িয়েছে, সব্বাই ধীরেসুস্থে এই ছকে ঢুকছেন, যাঁদের ঢোকার কথা ছিলনা, তাঁরাও। ফুলে ফেঁপে উঠছে বুদবুদটা। আর নিজের জন্যও কষ্ট হয়। আগে দিস্তে-দিস্তে লেখার জন্য গাল দিতাম কাকে? না সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে। এখন ভূত-প্রেত-তন্ত্র-মন্ত্র-রহস্য নিয়ে লিখছি। ক্রমাগত নিচু মানের কথা, তর্কে ঢুকতে থাকলে নিজের মানও নেমে যায়। হায়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • র২হ | 96.230.209.161 | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫১524443
  • হুঁহুঁ। মহর্ষিকে গাল দিয়ে পাপ হচ্ছে এ আমি আগেই জানতাম :)
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১২524444
  • সা তো সাহিত্যের সা, ষড়জ কেন হবে? গানের কথা তো হচ্ছে না, আর লোকে যেন দিনদিন গাধা হচ্ছে মাগো মা!
  • π | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৩524445
  • প্রত্যয়ভুক্ত, সা লাগানো কথাটা শোনেননি বা তার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করেননি হয়ত।
  • &/ | 107.77.237.153 | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৩524447
  • স্বপনকুমারের লেখা থেকে নাকি সিনেমা হচ্ছে ,সেই দুই হাতে দুই উদ্যত রিভলবার  আর ডানহাতে টর্চ ওয়ালা গোয়েন্দা 
  • &/ | 107.77.237.153 | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৯524448
  • একটি সাইক্লোট্রন এনে মোহন তাতে একমুঠো এটম ফেলে চালিয়ে দিত ,কড়র মড় ড় করে এটম ভেঙে দিব্য গোলালো এক এটম বোমা তৈরী হত ।মোহন সেই বোমা নিয়ে শত্রুদমনে বেরোত . বলা যায় না সেই সিনেমাও হয়তো তৈরী হবে 
  • জিজ্ঞাসু | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৪৫524452
  • সাহিত্যের প্রেক্ষিতে "সা লাগানো" শব্দ‌বন্ধ‌টি আমি‌‌‌ও আগে শুনি নি। অর্থাৎ দিন দিন হয়ে যাচ্ছি নয়, অনেকদিন ধরেই হয়ে আছি গর্দভ। বাবা গো!
     crying

    লেখক, পাঠকদের এই প্রসঙ্গে কিছু শ্লেষাত্মক উক্তি দেখা গেল। শ্লেষ, বক্রোক্তি সাহিত্যের অলংকার। তবে এক্ষেত্রে কেউ অনুগ্ৰহ করে ঐ শব্দ‌বন্ধটির অর্থ প্রাঞ্জল ভাবে জানালে ভালো লাগবে। যদি ঋদ্ধসত্তাদের মনে হয় ওটার ব‍্যাখ‍্যা প্রদান Insult to their Intellect অর্থাৎ মর্যাদা হানিকারক এবং গাধাদের ওটা না জানলেও চলে - তাহলে তাই স‌ই।
  • upal mukhopadhyay | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:১২524455
  • আবার দীপক বলে সিরিজ শুরূ করব তাতে স্বপন কুমার থারটি পারসেন্ট থাকবে ।
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪৪524459
  • সা লাগানো বা সা বলা কাকে বলে, তা মোটামুটি জানি, সঙ্গীত প্রভাকর সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত পরীক্ষা দিয়েছি, তানপুরা F# এ বেঁধে বলতেও জানি একরকম, কিন্তু এখানে সেই প্রসঙ্গে সা বলার উপমা দেওয়া হচ্ছে না, এখানে সাহিত্যের সা বলা হচ্ছে, মানে অর্থটা হয়তো এরকম নিতে হবে-" সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তবু কিছুটা সাহিত্য পারতেন, বাকিরা তো সাহিত্যের সা(সাহিত্য শব্দের আদ্যক্ষর) ও বলতে পারতেননা।" এবার এই মতামত নিয়ে প্রচুর বিতর্কের অবকাশ আছে, সুধীজন সেই নিয়ে সুস্থ বিতর্কের পরিসর তৈরি করলে আনন্দিত হবো। ধন্যবাদ। -_-
  • জিজ্ঞাসু | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪৪524460
  • "লোকে যেন দিনদিন গাধা হচ্ছে মাগো মা!" উপলব্ধি করে প্র.ভু প্রথমে বিষ্মিত, বিমর্ষিত বোধ করলেও পরে সাহিত্যের ক্ষেত্রে "সা বলা" বলতে তিনি কী বোঝেন, তা পরিস্কার জানি‌য়েছেন। এই ধরণের উচ্চমানের ফোরামে - সিরিয়া‌স বিষয়ে ছেঁদো ফাজলামি‌র পরিবর্তে এই ধরণের নৈর্ব্যক্তিক ভঙ্গিতে মুক্ত আলোচনা‌ই বাঞ্ছিত। 
     
    মূলগায়েন, টুসকি‌টা ফোরামে ছেড়ে, অতঃপর টুঁ শব্দটি করেন নি যদিও তাঁর - "বাঙালি লেখক ও সা নিয়ে বিস্তর বক্তব্য আছে"। 

    পাই লিখলেন - "প্রত্যয়ভুক্ত, সা লাগানো কথাটা শোনেননি বা তার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করেননি হয়ত।" - শেষে "হয়ত" ছিল, নয়ত এটা একটা Verdict গোছের লাগতো। পাই "প্রকৃত অর্থ" কী অনুধাবন করেছেন, প্র.ভু'র পরে,  "হয়ত" ফোরামে তা দেখা যাবে।
  • π | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:০০524462
  • জিজ্ঞাসুর কী অন্য আজেন্ডা আছে?  জিজ্ঞাস্য রইল laugh
  • জিজ্ঞাসু | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১২524464
  • তা আছে বৈকি and that is not COVERT but OVERT -  একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যেতো - সেটা আগের মন্তব‍্যের মাঝেই পরিস্কার ভাবে উল্লেখিত  :-  laugh
     
    "এই ধরণের উচ্চমানের ফোরামে - সিরিয়া‌স বিষয়ে ছেঁদো ফাজলামি‌র পরিবর্তে এই ধরণের নৈর্ব্যক্তিক ভঙ্গিতে মুক্ত আলোচনা‌ই বাঞ্ছিত।"
  • একক | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১৯524465
  • সবাই আবাপ পড়ে এইটা ধরে না নিয়ে, মূল লেখাটির লিংক জুড়ে দিলে ভালো হত। সত্যিই পড়িনা। যদি না কেও কোন লিংক শেয়ার করে। 
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৫৭524468
  • উফ বাবাঃ বাবা, এতোক্ষণে সব সন্দেহ নিরসন হলো, এই কান মুলছি, নাকখত দিচ্ছি original text check করবো এবার থেকে, ন‌ইলে এ তো তিল থেকে তিলভান্ডেশ্বর হবার জোগাড় হয়েছিল বাপরে বাপ!! বাংলা কাগজ পড়িইনা, এই লেখাতে পুরো উদ্ধৃতিটা না তুলে এমনভাবে লেখা, আমার কাছে ওই অর্থ‌ই পৌঁছালো, অন্তত 'সা' এভাবে উদ্ধৃতিচিহ্ন দিয়ে লিখলেও চুকে যেত। পাই, সরি। আর লেখনীর খুরে খুরে নমস্কার!
  • kk | 2607:fb91:140e:8383:255b:fd8e:2b43:644c | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০০:১৭524469
  • এই লেখাটার সাথে অনেক জায়গায় একমত হলাম। তবে লেখাটা আরো একটু বড় হলে আমার ভালো লাগতো। সবাই আবাপ ও পড়েনা, সবাই ফেবুও পড়েনা (নিজেকে ধরেই বলছি)। তাই এখানে যে পয়েন্টগুলো ঐ দুই জায়গার রেফ এ জাস্ট ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে সেগুলো নিয়ে আরেকটু বিশদে আলোচনা পড়তে বেশ ভালোই লাগবে।
    আমারও মনে হয়েছে যে স্বপনকুমার টাইপের বই এলে ইয়া ইয়া মহিলা ও খোঁপা এলানো পুরুষরাও লাফিয়ে পড়ে কিনবেন। উপলবাবু, লিখে ফেলুন।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০১:২০524470
  • আনন্দবাজারের লেখাটা আগে পড়া হয় নি। এখন লিংক পেয়ে পড়লাম। অনেক ধন্যবাদ।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৩০524471
  • স্বপনকুমার ছদ্মনামে যিনি রোমহর্ষক ওইসব কাহিনি লিখতেন তাঁর জীবনকাহিনি নাকি আরও রোমহর্ষক। তিনি নাকি রেলস্টেশনে ওয়েটিংরুমে বসে রাতে রোমহর্ষক কাহিনি লিখতেন কারণ ওয়েটিংরুমে আলো আর পাখার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া তিনি শ্রীভৃগু ছদ্মনামে জ্যোতিষের বইও লিখতেন, যেগুলো প্রচন্ড বিক্রি হত। আমি হেন ল্যাবা ল্যাবোরিশ পর্যন্ত পঞ্জিকায় বিজ্ঞাপন দেখেছি শ্রীভৃগুর লেখার।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৩৭524472
  • ভূতপ্রেততন্ত্রমন্ত্রের এই রেনেসাঁ বাংলায় কবে থেকে হল? কারাই বা করল? একেবারে ছেয়ে গেছে। যেদিকে তাকাই ভূতের নেত্য, তন্ত্রের নরমুন্ডমালা, ডাকিনি জুকিনি প্রেতিনীরা মহানন্দে লাফালাফি করছে। একেবারে যা তা অবস্থা। এটা কি ২০১১ এর পর থেকে শুরু হল?
  • জিজ্ঞাসু | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৫৯524474
  • বর্তমান প্রসঙ্গে প্র.ভুর (প্রত‍্যয় ভুক্ত) প্রথম মন্তব্যের একটি শব্দ‌চয়ন চোখে লেগেছিল। তাই আমার প্রতিমন্তব‍্য‌ একটু তীক্ষ্ম হয়ে গেছি‌ল। কয়েকবার এখানে মূলগায়েনের দাবি দেখেছি - গুরুচন্ডা‌৯র জাত নানা ফেকলু গ্ৰুপের থেকে আলাদা। প্র.ভুর ব‍্যাখ‍্যা সহ দ্বিতীয় মার্জিত মন্তব্য‌ সেই শ্রেণীর সাথে মানানসই। তৃতীয় মন্তব‍্যে তিনি ভুল স্বীকার করে বলেছেন ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবেন। ভুল বুঝতে পেরে সর্বসমক্ষে স্বীকার করলে যে সম্মান বাড়ে সেটা অনেকেই বোঝে না। তারা ভাবে মঞ্চ থেকে তেরপলে বসা দর্শকদের উদ্দেশ্যে উন্নাসিক ভঙ্গিতে করা অস্পষ্ট মন্তব‍্য ব‍্যাখ‍্যা করা বা তা ফিরিয়ে নেওয়া - ফুঃ - নৈব নৈব চ।

    উচ্চমানের ফোরামের উপযুক্ত প্র.ভুর আর একটি প্রতিক্রিয়া আগে‌ও দেখেছি। মলয় রায়চৌধুরী ২২.১০.২২ পোষ্ট করেন -  "নোরা বার্নাকলকে লেখা জেমস জয়েসের প্রেমপত্র (কেউ অনুবাদ করলে ভালো হয়)"। প্র.ভু চারটি চিঠি অনুবাদ করেন। অনুবাদের শৈলী নিয়ে KK unbiased মন্তব্য ক‍রেন। মলয় রায়চৌধুরী‌ও প্র.ভুকে মুক্ত‌কণ্ঠে প্রশংসা করেন। এসবই উচ্চকোটির ফোরামের শ্রেণী সূচক। যেমন সেদিন শৌভিক ঘোষাল মূলগায়েনের আর একটি পোষ্ট "বিকল্প মিডিয়া" প্রসঙ্গে দীর্ঘ পাঠমন্তব‍্য দিলেন। তাতে অনুষ্টুপ ও অনীক নামক দুটি কুলীন পত্রিকার উল্লেখ করলেন। গুরুতে পাঠ মন্তব্য হিসেবে বহুল অবান্তর কথার বন‍্যা বা খেউড় চলে। সেই প্রেক্ষিতে শৌভিক‌বাবুর অমন পাঠমন্তব‍্য‌ একটি সুলিখিত নিবন্ধ হিসেবে বিবেচিত হ‌ওয়ার যোগ্য।

    ফিরে আসি বর্তমান প্রসঙ্গে। প্র.ভু কী বোঝেননি পাই তা জানালেন কিন্তু তিনি কী বুঝেছেন - এতো কথার প‍রেও তা জানালেন না। আমার সহজ, অকপট জিজ্ঞাসা‌র পশ্চাতে কোনো Agenda আছে কিনা খুঁজতে শুরু করলেন - যেমন মহামান্য সরকার নিউজক্লিক এর ক্ষেত্রে চায়না ফান্ডিং লিংক খোঁজায় মগ্ন। তাহলে মুক্ত মিডিয়ায় গলা টিপে ধরতে চাওয়া সরকার আর উদার, বিকল্প ফোরামের কোর গ্ৰুপের এক সদস‍্যের চিন্তা‌ধারায় বিশেষ তফাৎ আছে কী?

    চার্চিলের একটি কোট মনে ধরেছি‌ল - “You will never reach your destination if you stop and throw stones at every dog that barks.” আমি কালেভদ্রে গুরুতে আসি কোনো গন্তব্যে সন্ধানে নয় - পার্কে হাওয়া খেতে আসার মতো। পদচারণা‌র  সময় কোথাও গোবর বা বমি পড়ে থাকলে পাশ কাটিয়ে যাই। তেমনি গুরুতেও পাঠমন্তব‍্যে অযথা কথা বা খেউড় উপেক্ষা করি। 

    কিন্তু গোলাপ বাগানে শেয়ালকাঁটার ফুল দেখলে মালিকে ডেকে বলতে ইচ্ছা হয়, এখানে এসব কেন। তেমনি ঐ মন্তব্য‌টা গুরুর এক কর্মকর্তা পাইয়ের বলে জানতে চেয়েছিলাম তিনি কী বোঝেন। ওটা হেহে, হ‍্যাহা জাতীয় কারুর হলে উপেক্ষা করতাম। দেখা যাক কবে পাই - পাই কী বুঝেছেন তার হদিশ।
  • একক  | 103.154.234.169 | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩৮524480
  • @দীপাঞ্জন ধন্যবাদ। পড়লুম
  • π | ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:২৭524481
  • প্রত্যয়নভুক্ত,  ঠিক আছে, অনেক ধন্যবাদ!  :)
  • সুদীপ্ত | ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১০:০৫524541
  • উদ্ভট ভুত-প্রেত আর তন্ত্র-মন্ত্রের গল্পের সঙ্গে জড়ো হয়েছে যত রাজ্যের শারদীয়া সংখ্যা! মানে একেবারে পিল পিল করে গাদায় গাদায় এত নামের এত শারদীয়া দেখে রীতিমতো ভির্মি খাওয়ার জোগাড়, এটাও ইদানীং বেড়েছে মনে হয়! এবার শারদীয়া সংখ্যাও মনে হয় সংস্করণ হবে, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, চার মাসে চারখানা সংস্করণ! বাজার অনুযায়ী দামের হেরফের-সহ।
  • ইন্দ্রাণী | ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৪৮524575
  • পাঠকের প্রকারভেদ তো থাকবেই- কে কী পড়ে বড় হয়েছেন, সাহিত্যবোধ, কেউ কোনোদিন হাতে ধরে শিল্পের স্বাদ চিনিয়েছেন কী না আদৌ- এই সব কারণ তো থাকেই ..এছাড়া ব্যক্তিগত পরিস্থিতি, অবস্থা, অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা তো রয়েছেই- সব মিলিয়ে কেউ সারাজীবন শিল্পের খোঁজে কাটাবেন, কেউ ক্ষণিকের আনন্দ / উত্তেজনা পেয়ে অন্য একটি বই হাতে নেবেন, স্বল্পসময়ে পূর্বপঠিত বইটির কথাও বিস্মৃত হবেন, কেউ আবার স্রেফ ব্লার্ব পড়ে .. -

    একজন লেখক সেদিন খানিক এই প্রসঙ্গেই গুহায় বন্দীদের কথা বলছিলেন, বস্তুত তিনি প্লেটোর অ্যালিগরি অফ কেভের কথা তুলতে চেয়েছিলেন- গুহায় বন্দীরা শিকলে বাঁধা,মাথা ঘুরিয়ে দেখা সম্ভব নয়, তাঁদের পিছনে অগ্নিকুন্ড -তার সামনে দিয়ে কিছু মানুষ এটা সেটা নিয়ে এমন একটি তলে চলাফেরা করছে যে বন্দীদের সামনের দেওয়ালে সেই বস্তুগুলিরই ছায়া পড়ছে, বন্দীরা সেই সব ছায়াদের নাম দিচ্ছে নিজের মতো করে, পিছনের বাহক মানুষেরা যে কথা বলছে তা গুহার দেওয়ালে প্রতিধ্বনিত হছে-বন্দীরা ভাবছে ঐ ছায়ারাই কথা বলছে।
    গুহার থেকে এবার একজন ছাড়া পেলেন হয়তো, প্রথমে বাইরের আলোয় তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যাবে, চোখ খুলতেই পারবেন না , তারপর একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে বহির্বিশ্বের সৌন্দর্য দেখবেন নয়ন ভরে। তিনি চাইবেন বন্দীদের এই গুহার বাইরের জীবন, তার সৌন্দর্যের কথা জানাতে, ফলত আবার গুহায় ফিরবেন তিনি, এতদিনের সূর্যালোকে অভ্যস্ত চোখ গুহার অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাবেন না আর বন্দীরা ভাববেন, বাইরের দুনিয়ায় গেলে এই হালই হয়, তাঁরা গুহাতেই থেকে যেতে চাইবেন ; যদি কেউ তাঁদের গুহার বাইরেই নিয়েও যেতে চান, তাঁকে বন্দীরা হত্যা করতেও পিছপা হবেন না সম্ভবত ।

    যা মনে হয়, আজকের যুগে একজন প্রকৃত লেখকের কাজটা অসম্ভব কঠিন। সত্য বা সুন্দরকে সামনে আনতে গেলে তাঁকে অন্ধ অথবা নিহত হতেই হবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন