এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • তুমি তো প্রহর গোনো, তারা মুদ্রা গোনে কোটি কোটি

    অতনু চক্রবর্তী 
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ জুলাই ২০২২ | ১২০২৪ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৭ জন)
  • রাজ্য রাজনীতিতে বিরাট  তোলপাড় তুলে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা,  দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার  পার্থ চট্টোপাধ্যায় যিনি রাজ্য মন্ত্রীসভার দ্বিতীয় ব্যক্তি । শুধু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীই নন, তিনি তৃণমূল দলের বিরাট মাপের এক নেতা, শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির চেয়ারম্যান ও বটে । শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যার উপর দল  সঁপেছিল তিনিই এতো বড় কেলেঙ্কারি, আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন --- নির্মম পরিহাসের এর থেকে বড় উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে রয়েছে কিনা সন্দেহ আছে । তাঁর সাঙাততন্ত্রের  কদর্য চেহারাও  দেখলো গোটা রাজ্য। কিভাবে তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিলাসবহুল আবাসন থেকে উদ্ধার হল গুপ্তধন, কোটি কোটি টাকা,  অঢেল বিদেশি মুদ্রা ও সোনার অলঙ্কার! মিলল কি বিপুল স্থাবর  সম্পত্তির হদিশ । কুৎসিত বৈভবের নির্লজ্জ প্রদর্শনী চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল ক্ষমতার অলিন্দে থাকা এই সমস্ত হোমরা চোমরা নেতা - মন্ত্রী কত বড় বহরের অন্যায় - অবিচার - কে গোপনে সংগঠিত করেছিল বছর বছর ধরে। এতোবড় দুর্নীতির সাথে নাম জড়ানো  সত্ত্বেও রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে পার্থবাবুকে বরখাস্ত করা হল না। বোঝাই গেল, দুর্নীতির প্রশ্নে শূন্য সহনশীলতার নীতি আমাদের নীতিবাগিশ  মুখ্যমন্ত্রীর না- পসন্দ। আর তারপরেও সবাইকে  অবাক করে  মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তিনি নাকি এই সমস্ত কিছুর বিন্দু - বিসর্গ ও জানতেন না!!  

    কিন্তু, এতো বড় অন্যায়ের শিকার যাঁরা হলেন, তাঁদের কি হবে?  রাজ্যের সাধারণ ঘরের অগুনতি  ছেলে মেয়েরা বহু পরিশ্রম করে এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে মেধা তালিকায় নাম ওঠার পরও দেখলেন তাঁদের চাকরি হলো না। উল্টে তা বিপুল টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেল।   এদিকে, ডাহা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাঁচাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন।  বঙ্গ - সম্মান প্রদানের মঞ্চকে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের মঞ্চে পরিনত করে অবলীলায় জানালেন যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি আগে কিছুই জানতে পারেননি। অথচ কে না জানে, ২০১৯ সালের এসএলএসটি - র মেধা তালিকায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে- র নাম হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসল আর তিনি চাকরি পেয়ে গেলেন "যাদুকরী"  স্পর্শে।  গেজেট অনুযায়ী নিয়োগ না করার প্রতিবাদে ২০১৯ -র ২৮ শে ফেব্রুয়ারি কলকাতার মেয়ো রোডে প্রেস ক্লাবের সামনে ' যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ' এর ব্যানারে দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে শুরু হয় অনশন আন্দোলন। ২৯ দিনের মাথায় হঠাৎ অনশনস্থলে আবির্ভূত হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি এসএসসি কে ঘুঘুর বাসা হিসাবে আখ্যায়িত করেন। তিনি সেখানে গঠন করেন একটা কমিটি ---- আর, সেখানে তাঁদেরই রেখে দিলেন  যাঁরা ইতিমধ্যেই দুর্নীতিবাজ হিসাবে চিহ্নিত।  কে না জানে, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এসএসসি - র মাধ্যমে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অচিরেই বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে যে পরীক্ষা হয়, তাতেও লেপ্টে ছিল দুর্নীতির বড়সড় অভিযোগ। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে যে এলো, তাও কি মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না?  হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি - র নিয়োগ দুর্নীতি যাচাই করতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এটাও কি জানতেন না মুখ্যমন্ত্রী? হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটি এসএসসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে আঙুল তুলেছিলেন, তাও কি শুনতে পাননি মুখ্যমন্ত্রী?  না কি শুনতে চাননি? একদিকে   ক্ষমতার দম্ভ ও দাপটের মিশেল, অন্যদিকে ঠগ খুঁজতে দল উজাড় হওয়ার আশঙ্কায় তিনি নীতিহীন আপোষ করেছেন দুর্নীতির সাথে। 

    ২০১৫ সালে সংঘটিত আপার প্রাইমারি প্যানেলের মধ্যে বিরাট অসঙ্গতি থাকায় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল অবিলম্বে তা সংশোধন করতে।   আজও ওই প্যানেলের নিয়োগ সম্পন্ন হলো না। ফলে, প্যানেলের মধ্যে থাকা চাকুরিপ্রার্থীরা ২০১৫- ২০২২ - --- এই দীর্ঘ সাত বছর ধরে যে স্বপ্ন সযত্নে লালন পালন করেছিলেন, তার ভ্রূণ হত্যা হল। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসলেও তার সমাধান আজ পর্যন্ত হল না। এদিকে,  সংকট থেকে পরিত্রাণ খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রী আদালতের দিকে দায় ঠেলে দিলেন। হাইকোর্ট ও শিক্ষা সচিবের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে কোন কোন শূন্যপদ পূরণ আদালতের রায়ের কারণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, তা হলফনামা পেশ করে জানাতে। 

    সাম্প্রতিক দুর্নীতি কান্ডে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে রাজ্যে আতঙ্কজনক কর্মহীনতার ছবি। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ঘনিয়ে ওঠা সরকার - সৃষ্ট নৈরাজ্য, পড়ুয়া -পিছু শিক্ষকদের লজ্জাজনক ঘাটতি, রাজ্য সরকারি - আধা সরকারি - স্বশাসিত সংস্থাগুলোতে বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণে শূন্যপদ না পূরণ করার আখ্যান। পড়ুয়া - শিক্ষক অনুপাতের চরম দৈন্যতা আজ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গিলে খাচ্ছে। সংবাদে প্রকাশ, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে সাকার ঘাট জুনিয়ার হাই স্কুলে উচ্চ প্রাথমিকে ৭৭২ জন পড়ুয়া পিছু শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১! এটা কোন ব্যতিক্রমী উদাহরণ নয়। বহু উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে মাত্র এক বা দু' জন শিক্ষকের উপর পঠন পাঠনের পুরো দায়ভারটি ন্যস্ত। এমনও দেখা যায়, সেই এক বা দু'জন শিক্ষক ছুটিতে গেলে স্কুলের গ্রুপ -  ডি কর্মীকে ক্লাস নিতে হয়। কখনও বা আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে এই অবস্থার সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলে। শিক্ষার প্রতি এই নির্দয় অবহেলা অপরাধসম। শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড বলে ক্লান্তিহীন বিজ্ঞাপন যতই দেওয়া হোক না কেন, এই রাজ্য সরকার তিলে তিলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকেই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছয় মাস পার হওয়া সত্ত্বেও  ২০২১ সালের টেট লিখিত পরীক্ষায় পাশ করা কর্মপ্রত্যাশীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই করা গেল না। আরও উল্লেখ্য, এই নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে কোন ধরনের মামলাই দায়ের করা হয়নি।

    শুধু পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবই নয়, সরকার এবং সরকার - পোষিত স্কুলগুলোতে শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশ, পরিকাঠামো পর্যন্ত নেই। নেই পর্যাপ্ত স্কুল ঘর, কোথাও খোলা আকাশের নীচে চলছে পঠন পাঠন, কোথাও শিক্ষক নেই, নেই শৌচাগার - পরিশ্রুত পানীয় জল - এমনই করুন অবস্থা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে। গোটা শিক্ষাক্ষেত্র জুড়ে কত শূন্যপদ রয়েছে ( শিক্ষক - অশিক্ষক পদে)  তার কোন সরকারি হিসাব আজ পর্যন্ত পেলনা রাজ্যবাসী। অথচ, তুমুল মস্করা করে, ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন রাজ্যে নাকি ৩০ হাজার চাকরি তৈরি! সরকার নাকি শুধুমাত্র নিয়োগ পত্র দেওয়ার অপেক্ষায়। আর, ঠিক ক'দিন আগে সংবাদে প্রকাশিত হল রাজ্যে কর্মসংস্থানের আরেকটি মর্মান্তিক ছবি। সংবাদে প্রকাশ, মালদায় সরকারি কর্মসংস্থান কেন্দ্র পরিচারিকাদের জন্য একটা প্রশিক্ষণ শিবির সংগঠিত করে, যাতে অংশ নেয় ৪০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মহিলারা। 

    এতো বড় একটা ঘটনার পরও রাজ্যের নাগরিক  সমাজ নীরব নিশ্চল! ক্ষমতার উদ্ধত চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন তোলার মূল্যবোধ এ রাজ্যে যেন বড়ই বিষম বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, যে সমস্ত টগবগে প্রাণ কাউকে তোয়াক্কা না করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশকে পরিনত করেছেন তাঁদের প্রতিবাদ প্রতিরোধের তীর্থস্থান, এক গণ আদালত, এক গণ সংসদে -- সেটাই আগামীতে রাত্রির গভীর বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে আনবে এক ফুটন্ত সকাল! সেই অবিচল, অবিনশ্বর বিশ্বাসের উপর ভর করেই উত্তাল সমুদ্রে বেয়ে চলেছে নবজীবনের তরনী। সমস্ত বাধা বন্ধনকে উপেক্ষা করে।

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ জুলাই ২০২২ | ১২০২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 42.110.145.93 | ১৫ মে ২০২৩ ১৯:২৪519832
  • দীপ | 42.110.145.93 | ১৫ মে ২০২৩ ১৯:২৪519833
  • মাথা কি একেবারেই পেগলে গেছে?
  • দীপ | 42.110.145.93 | ১৫ মে ২০২৩ ২১:০৭519834
  • দীপ | 42.110.164.19 | ১৮ মে ২০২৩ ১৭:৫৪519877
  • দীপ | 42.110.136.250 | ২০ মে ২০২৩ ২৩:০৬519943
  • সেটিং বেশ ভালোভাবেই হয়েছে!
  • দীপ | 2402:3a80:a09:7576:516e:59a3:34ee:4741 | ২৩ মে ২০২৩ ১৮:৪০520003
  • 'তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক... সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে নবজোয়ার কর্মসূচিতে অধিবেশন করলেন। তাঁর নিরাপত্তায় আসা পুলিশকর্মীরা বিষ্ণুপুরের রামানন্দ কলেজে ওঠায় সোমবার ও মঙ্গলবার দু'টি সিমেস্টারের 'ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট' দু'দিন পিছিয়ে দিলেন কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষা... জানান, রবিবার পুলিশের চিঠি পেয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার নোটিস দেন তিনি। এ দিন কলেজে ক্লাস হয়েছে। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) ... বলেন, "কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার কথা জানালে কর্মীদের অন্যত্র রাখা হত।" (আবাপ ২৪ মে '২৩)
     
    দেশ ও রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি!
    চোপ, গণতন্ত্র চলছে!
  • Atanu Roy | ২৪ মে ২০২৩ ১২:১৮520028
  • কেউ যদি RTI file করে মুখ্য মন্ত্রী আর মন্ত্রী দের মাধ্যমিক থেকে শুরু করে সব পরিক্ষআর marksheet বার করে, এটা পরিস্কার হয়ে যাবে, কারা রাজ্য চালা চ্ছে ল
  • দীপ | 42.110.137.92 | ২৮ মে ২০২৩ ১৫:১০520079
  • একদিকে হাজার কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করে নতুন সংসদ ভবন হচ্ছে; আরেকদিকে কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো কে গ্রেফতার! 
    গণতন্ত্রের শ্রাদ্ধ ভালোভাবেই চলছে!
  • দীপ | 42.110.137.92 | ২৮ মে ২০২৩ ২০:৪২520085
  • দীপ | 42.110.137.92 | ২৮ মে ২০২৩ ২০:৪৩520086
  • নির্লজ্জ শাসকের অসভ্য ঔদ্ধত্য!
  • দীপ | 2402:3a80:a02:a02:0:65:fa9:5801 | ০২ জুন ২০২৩ ২১:৪৫520188
  • দীপ | 2402:3a80:a02:a02:0:65:fa9:5801 | ০২ জুন ২০২৩ ২১:৪৬520189
  • কাকুর গুণের শেষ নেই!
  • দীপ | 42.110.145.210 | ০৩ জুন ২০২৩ ১৩:২৭520203
  • 'মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, সিবিএসই, আইসিএসই পরীক্ষার কৃতীদের সংবর্ধনা' দেওয়া হয়েছে গতকাল। রাজ্য সরকারের তরফে। কে দিলেন সংবর্ধনা? রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই! ধুর মশাই, শিক্ষা বা শিল্প, কৃষি বা সংস্কৃতি, অর্থ বা বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন দফতরের জন্য মন্ত্রী বরাদ্দ করতেই হয়, খুব সম্ভবত সাংবিধানিক বাধ্যতার কারণেই, কিন্তু ওগুলো যে নাম কে ওয়াস্তে, শুধুমাত্র রাখতে হয় বলেই রাখা, রাজনৈতিক গুরুত্বহীন ওগুলোর প্রত্যেকটাই, দুর্নীতির দায়ে জেলে-যাওয়া ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ মাত্রই জানেন। মুখ তো একটাই। দল হোক বা সরকার। 
     
    সংবর্ধনায় ১২টা বই উপহার পেলেন কৃতীরা। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী...র লেখা আলোকবর্তিকা, কবিতা বিতান, উপলব্ধি ও ইংরেজিতে লেখা 'আর্থ সং' এবং 'মাই জার্নি' রয়েছে।
     
    এটা কিন্তু রীতিমতো মানসিক অত্যাচার, নিষ্ঠুরতার শামিল। ওই পড়ুয়াদের জন্যেই। অনৈতিকও বটেই। নিশ্চিতভাবেই সরকারি কোষাগারের অর্থাৎ জনগণের অর্থে ওই আবর্জনা পদার্থগুলো কেনা হয়েছে। অবশ্য 'অনুপ্রেরণায়' অনুপ্রাণিত সরকারের কাছে, নীতি-নৈতিকতার প্রত্যাশা কে-ই বা করে, অনুগৃহীত বিদ্বজ্জন কবি-সাহিত্যিকরা ও গায়ক-ফায়ক ছাড়াও, 'ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা'র অজুহাতে ওই ভদ্রবিত্ত সংসদীয় নকশালপন্থীদের সঙ্গেই সংগ্রামী অতিবামপন্থীরা, কিছু স্বঘোষিত সমাজকর্মীও। 
     
    'এ ছাড়াও রয়েছে সুভাষচন্দ্র বসুর তরুণের স্বপ্ন, নজরুলের সঞ্চিতা, রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা, বিবেকানন্দের...'
    ওঁদের বই কিন্তু ওই একটা করেই!
     
    '... পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলার কিংবদন্তিরা এবং এ বারের মেধাবীদের নিয়ে 'জেমস অব বেঙ্গল ২০২৩'। পড়ুয়ারা পেয়েছেন 'ইউনিক ই-গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল' নামে একটি বই। উপহারে রয়েছে একটি ল্যাপটপ, দু'টি হাত-ঘড়ি, কফি মাগ, চকোলেট, মিষ্টি, বাঁধানো মান পত্র, নোট-প্যাড, মেডেল, ফুলের স্তবক, বাঁশের ট্রে এবং তিনটি জুট-ব্যাগ।'
     
    কৃতী ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চিতভাবেই বুদ্ধিমান, কোন কোন বই পড়া তো দূরের কথা, খুলে-দেখলেও ঝুঁকি থাকতেই পারে, মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হতেই পারে, ওঁরা নিশ্চয়ই বোঝেন। কৃতী বলে কথা!
     
    ভাইপো-ও কী বই-টই লেখেন নাকি? কবিতা-টবিতার বই?
     
    কোনও বই-লেখককেই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেতেই চাই না। কৃতী ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবেই! ন্যূনতম শ্রদ্ধাযোগ্য, আত্মমর্যাদার বোধসম্পন্ন কেউ? সম্ভাবনা খুবই কম, নেই বললেই চলে।
     
    কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়
  • দীপ | 2401:4900:3fab:936e:4c80:fb52:a4dd:4f04 | ০৩ জুন ২০২৩ ১৪:৩১520204
  • দীপ | 2401:4900:3fab:936e:4c80:fb52:a4dd:4f04 | ০৩ জুন ২০২৩ ১৪:৩৩520205
  • শেয়ার না করে থাকতে পারলাম না।
  • দীপ | 2402:3a80:196f:2f5e:878:5634:1232:5476 | ০৫ জুন ২০২৩ ২১:০৯520248
  • দীপ | 2402:3a80:a06:b9df:0:46:2b1c:8801 | ০৬ জুন ২০২৩ ২৩:১৮520267
  • দীপ | 2402:3a80:a06:b9df:0:46:2b1c:8801 | ০৬ জুন ২০২৩ ২৩:২৭520268
  • সাতের দশকে সিদ্ধার্থশঙ্কর ও তার চ্যালারা ঠিক এটাই ভেবেছিল। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম সেই দিনগুলো দেখেছিলেন। কিন্তু তারপর তাদের কি হয়েছিল সেটাও আমরা জানি। ইন্দিরা গান্ধী, কেন্দ্রীয় সরকার; কেউ তাদের রক্ষা করতে পারেনি!  বাংলা থেকে তারা ধুয়েমুছে গেছে! 
    এই শুয়োরের বাচ্চা সেটা ভুলে গেছে! 
    যে মাতব্বর "আমরা ২৩৫, ওরা ৩০" বলে লাফালাফি করেছিল; সে নিজেই এখন অর্ধমৃত হয়ে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে!
    জানোয়ারের তাতেও শিক্ষা হয়নি!
  • দীপ | 42.110.144.204 | ১২ জুন ২০২৩ ১৫:১০520384
  • হুজুরের নতুন ফতোয়া!
  • দীপ | 42.110.145.190 | ০৪ জুলাই ২০২৩ ২২:৩০521003
  • শাসকের ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ! 
     
  • PIJUS SARKAR | ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৫২525472
  • চাকরি দেওয়ার মুরোদ নেই অথচ ঢওল পিটছে শাসকদল।
  • দীপ | 2402:3a80:196f:1f36:878:5634:1232:5476 | ১৫ মার্চ ২০২৪ ১২:২৪529388
  • দীপ | 2402:3a80:a3b:e0e3:0:44:b15e:3d01 | ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৬:১২529397
  • দীপ | 2402:3a80:a11:695a:0:55:7503:4801 | ১৬ মার্চ ২০২৪ ১২:২৪529454
  • দীপ | 42.110.139.117 | ১৮ মার্চ ২০২৪ ২১:১২529566
  • Kolkata Corporation ২০১০ সালে দখল করেছিল তৃণমুল কংগ্রেস। গত ১৪ বছরে শুধু কোলকাতা করপোরেশন এলাকায় ৫০০০ এর উপর জলাভূমি বেআইনি ভাবে বুজিয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলর - বিধায়ক - মন্ত্রী - প্রশাসন - প্রমোটার নেক্সাস । সবার কাট মানি আছে । ২২ টা গ্যারেজের মালিক বিধায়ক হয়ে, ডিসপিউট জমিতে ভারত মাতার মন্দির বানিয়ে ,আর এস এস এর প্রতি তার রাজনৈতিক ঋণ শোধ করেছেন , একদিকে । এই যাদবপুরের আরেক কাউন্সিলর তো রেলের জমিতে প্রমোটিং করে দিলেন , এক জেলে থাকা মন্ত্রী কুকুরের হাসপাতাল বানাবেন বলে কলোনির পার্কের জমি দখল করলেন , কতো লিখব । শুধু যাদবপুর নিয়ে লিখলেই একটা বই হয়ে যাবে ।  কোলকাতা নিয়ে লিখলে বইয়ের সিরিজ হবে । আর বাংলা নিয়ে লিখলে মহাকাব্য । এরা যেভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ, মানুষের বাঁচার মৌলিক নিরাপত্তা লুঠ করেছে , সেটার সাথে বিজেপির দেশ বেচা তুলনীয়।

    গার্ডেনরিচ - এ যে বাড়িটা ভেঙে পড়েছে ,সেটা ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে । কাউন্সিলর সামস ইকবাল । ৫ কোটি টাকার গাড়ি করে পৌরসভা আসেন । ৯৮.৩৪% ভোট পেয়ে জিতেছেন । ববি হাকিমের ডানহাত । শুধু গার্ডেনরিচ অঞ্চলেই ৮০০র উপর বেআইনি নির্মাণ আছে । এই সমস্ত কিছুর পেছনে ওই নেক্সাস , যার মুখ সমস ইকবাল । পুরানো বাড়ি গুলির রক্ষণাবেক্ষণ করতেও ব্যর্থ তৃণমুল। "আই লাভ আমার পায়খানার দরজা " - মার্কা বলদা বলদা গ্লো শাইন, আর অকারণ আলো দিয়ে মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স হয় না।  ব্রিজ ভেঙে পড়ে ,বাড়ি ভেঙে পড়ে। মানুষ মরে যায় । যারা চোখ থেকেও অন্ধ তারা দেখতে পান না । যারা দেখতে পান , তারা কথা বলুন ।

    [ অবিন দত্তগুপ্ত ]
  • @দীপ | 2601:5c0:c280:d900:a09c:ff80:ca4d:69e6 | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৫৮530323
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:83:64de:a4d6:fa58 | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৯530337
  • বেচারা দীপচাড্ডি ভোটের বাজারে কটা টাকা উপায় করছে, স্প্যাম ইত্যাদি বলে ইনকামের পথ বন্ধ করে দেওয়াটা কি ঠিক হবে? 
  • দীপ | 2402:3a80:196f:cbec:878:5634:1232:5476 | ২০ মে ২০২৪ ১৯:০৩532024
  • পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীদের গলা দিয়ে এখন অবশ্য কোনো আওয়াজ বের হবেনা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন