এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কুড়ি কোটি

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৪ জুলাই ২০২২ | ৮২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • কুড়ি কোটি নিঃসন্দেহে অনেক অনেক টাকা, কিন্তু বিষয়টা তার থেকেও অনেক বেশি সিরিয়াস। শিক্ষাক্ষেত্রে বছরের পর বছর বেনিয়ম, আদালত দুর্নীতির জন্য পরপর নজিরবিহীন নির্দেশ জারি করছে, একজন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমান মন্ত্রীও বটে)  শিক্ষাসংক্রান্ত দুর্নীতির কারণে গ্রেপ্তার হচ্ছেন, এমনকি এর চেয়েও বড়। আমি পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়ব্যবস্থা নিয়ে বিশেষ কিছুই জানিনা, তাতেও এদিক-সেদিক থেকে যা কানে আসে, তা ভয়াবহ। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত। চাকরি এবং বদলির রেট আকাশছোঁয়া। সব মিলিয়ে আস্ত শিক্ষাব্যবস্থাই বেহাল। সরকারী এবং সরকার অনুমোদিত ইশকুলে ছাত্রছাত্রী কমছে, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ইংরিজি মাধ্যমের কৌলিন্য এবং অর্থদন্ড যুগপৎ ক্রমবর্ধমান। এর মধ্যে কখনও গরম, কখনও কোভিড, অর্ধেক সময়ই বিদ্যালয় বন্ধ। এর চোটে প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের কী হাল কেউ জানেনা। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বোর্ডের অনলাইন শিক্ষা রমরম করছে। টিউটোরিয়াল সংস্থা, অ্যাপেদের প্রচার প্রসার বাড়ছে। এগুলো কোনোটাই ঠিক বিচ্ছিন্ন ব্যাপার বলে মনে হয়না। সব মিলিয়ে কোথাও একটা বোঝপড়া আছে মনে হয়, যা সরকারি শিক্ষা তুলে দেবার দিকে ধাবিত। তাতে গ্রামের এবং প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের সর্বনাশ। কাদের লাভ কে জানে?  

    আমি এই পুরো জিনিসটায় অনধিকারী, বিদ্যালয়-ব্যবস্থা নিয়ে কিচ্ছু জানিনা। কিন্তু যাঁরা জানেন, অন্তত যাঁদের জানার কথা, তাঁরাও পুরো চিত্রটা নিয়ে কিচ্ছু লেখেননা। শিক্ষকরাও না। কেউ সার্ভে-টার্ভে করেও কি দেখেছে? প্রতীচী  টতিচি করে থাকতে পারে, জানিনা, কিন্তু সাধারণ পরিসরে কিছু দেখিনি। আগেও না, এই ঘটনার পরও না। বরং চারদিকে যা দেখছি, বৈদ্যুতিন এবং সামাজিক মাধ্যমে, এই পুরো চিত্রটা নিয়ে কেউ মনে হয় লিখতে বা বলতেও চাননা। বড় চিত্র না দেখুন, অন্তত কুড়ি কোটি বা চুরিচামারি নিয়ে কথা হলেও একরকম হত, সেটাও না। পুরোটা কীরকম যেন পরিণত হয়েছে হাস্যরসে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, যৌন ইঙ্গিতমূলক হাস্যরসে। পরনিন্দা পরচর্চায়। কোন জুটি আগে? শোভন-বৈশাখী না পার্থ-অর্পিতা? কার চেহারার কী মাপ? কার বান্ধবীর সংখ্যা কত। যেন রিয়েলিটি শোয়ের দুই জুটি। এখনই তাঁরা  নামবেন ধুন্ধুমার প্রতিযোগিতায়। রিয়েলিটি শোর মতই চলছে বিষয়টা। একদিকে টাকা গোনা হচ্ছে, যেন ভোটের ফলাফল। ঠিক কতগুলো ট্রাঙ্কে টাকা বয়ে আনা হল, এ জেনে কার কী লাভ কে জানে। অন্যদিকে গোনা হচ্ছে 'ঘনিষ্ঠ'র সংখ্যা। আমি স্রেফ ফেসবুক আর সংবাদপত্রের কল্যাণে তিন-চারটে নাম জেনে ফেললাম। অথচ, কথাটা হল, কোনো মন্ত্রীর একজন বা দুজন বা দশজন মহিলাবন্ধু থাকতেই পারেন, এমনকি তিনি প্রেম-টেমও করে থাকতে পারেন, করে থাকলে বেশ করেছেন, না করলেও কোনো ক্ষতি নেই, কিন্তু সেটা এখানে ইস্যু তো নয়ই, এমনকি নির্দোষ খিল্লিও না, বস্তুত রক্ষণশীল সুড়সুড়িকে  তোল্লাই দেবার কল। "জানিস তো অমুক মহিলা তো আসলে পানু করে" ধরণের। এ নয়, এটা কেউ জানেননা, এমনকি ইস্যুটা কী তাও সকলেই জানেন। কিন্তু তারপরেও, এই নিয়ে দীর্ঘ চর্বিতচর্বণ আর পরচর্চা চলবেই। গোটা বিষয়টাকে সব মিলিয়ে নেহাৎই একটা ছোটোখাটো খিল্লিতে পর্যবসিত করে তারপর থেমে যাওয়া হবে। এটাতেও কাদের লাভ কে জানে?

    পুঃ কেউ হয়তো কোথাও সত্যিই পুরো বিষয়টা নিয়ে লিখেছেন, সব তো চোখে পড়েনা। চারদিকে দেখে-টেখে যা নজরে পড়ল, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে লিখে ফেললাম। কেউ সত্যিই লিখলে,  তাঁর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Aranya | 2600:1001:b007:b6cc:f13b:a9bb:1539:8903 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০২:১১510274
  • *# সবার উপরে শিক্ষা #*

    ফ্রেন্ডলিস্টে যাঁরা রয়েছেন, শাসকদলের কর্মী-সমর্থক, তাঁদের প্রতি কাতর অনুরোধ, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবি নিয়ে কথা বলুন। আপনার সন্তানও তো কোনো না কোনো স্কুলে পড়তে যায় ! (গ্রামবাংলায় বেসরকারি স্কুল আর ক'টা !)। দলের প্রতি আপনার আনুগত্য থাকা উচিত মানলাম, কিন্তু পরিবার ও সন্তানের প্রতিও তো আপনার কর্তব্য রয়েছে। মাননীয়া মমতা ব্যানার্জিকে জননেত্রী অগ্নিকন্যা বলে সত্যিই যদি বিশ্বাস করে থাকেন, জনগণের প্রতিবাদ আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ার আগে আপনিই না-হয় একটু আওয়াজ তুলুন। মেজ-বড়-সেজ নেতা, যার সঙ্গে আপনার আলাপ রয়েছে, একটু বুঝিয়ে বলুন, বাচ্চাদের শিক্ষাদীক্ষা না-দিলে অদূর ভবিষ্যতে খুব খারাপ সময় আসতে চলেছে। বিদ্যাসাগরের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত ভূবনের কান কামড়ানো গল্পের মতো, পুরো সমাজ লুম্পেনদের দখলে চলে গেলে তখন আর কিছুই করার থাকবে না। এখন শিক্ষক নিয়োগ না-করলে এমন সময় আসবে, যখন মাথাপিছু পুলিশ দিয়েও সমাজ আর ঠিক রাখা যাবে না।

    ফ্রেন্ডলিস্টে যাঁরা রয়েছেন, শিক্ষক-অধ্যাপক-শিক্ষাবিদ-শিক্ষানুরাগী, দয়া করে দু'-কলম লিখুন বাংলার স্কুলগুলির পরিস্থিতি নিয়ে। প্রতিদিন তো দেখছেন খবরের কাগজে, কয়েক হাজার স্কুল উঠে গেছে অলরেডি। নদীয়ার কালিগঞ্জের একটি স্কুলে ৪৫৯ জন ছাত্র, শিক্ষক একজন !  তিনিই প্রধান, তিনিই সহকারী, তিনিই মিড ডে মিল, তিনিই কন্যাশ্রী। অন্য একটি স্কুলে  আট বছর ধরে কোনো শিক্ষকই নেই, ছাত্রছাত্রীরা আসে আর যায়, সাংবাদিক ফোন করলে ডিআই সাহেব বলেন, খোঁজ নিচ্ছি। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের একটি স্কুলে ১২০০ জন ছাত্রছাত্রী, অঙ্ক বিজ্ঞানের একজনও শিক্ষক নেই সেখানে, গত চার বছর ধরে। এরকম কত বলবো ?  পশ্চিমবঙ্গের এমন স্কুল-মাদ্রাসা বিরলের মধ্যে বিরলতম, যেখানে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ঠিক রয়েছে। এত বড় একটা ইস্যু নিয়ে সরব হবেন না ?  দু'-কথা বলবেন না নিজের পরিসরে ?  তাহলে স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে লাভ কী হলো ?  শিক্ষক যদি শিক্ষার অধিকার নিয়ে কথা না বলেন, কে বলবে ?

    ফ্রেন্ডলিস্টে যাঁরা রয়েছেন,
    গ্রামের মানুষ, প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীর গরিব ছাপোষা অভিভাবক, আপনি কি জানেন আপনার ছেলে বা মেয়েকে যে স্কুলে পাঠাচ্ছেন, সেখানে তাকে পড়ানোর মতো মাস্টারমশাইই নেই ?  প্রতিদিন আটখানা ক্লাস নিয়মিত নেবার জন্য, সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত তাকে পড়ানোর জন্য, নিয়ম-শৃঙ্খলায় ধরে রাখার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নেই আপনার এলাকার বিদ্যালয়ে ?  আপনার সন্তান শুধু মিড ডে মিল খেতে পায় বলে আর কন্যাশ্রীর টাকা পায় বলে আপনি ভাবছেন খুব শিক্ষা হচ্ছে ?  আসল যে কাজ আর যার জন্য আপনি বিদ্যালয় পাঠাচ্ছেন আপনার সন্তানকে, সেটা কতটুকু হচ্ছে, একবার খোঁজ নিয়েছেন ?  শিক্ষক নেই কেন, লাইব্রেরি নেই কেন, যখন তখন বিভিন্ন অজুহাতে স্কুল ছুটি পড়ে যায় কেন, চায়ের দোকানে এইগুলো নিয়ে একটু আড্ডা মারুন দেখি। গরিব গ্রামবাসীর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অধিকার আছে, সুন্দর একটা স্কুলে পড়তে যাওয়ার সাধ তাদেরও থাকতে পারে, এই কথাটা শুনিয়ে দিন জোর গলায়। আর-পাঁচজন চাষি-বাসি মানুষ, যারা আপনার কাছের লোক, তারাও জানুক আপনার সন্তানের জন্য শিক্ষা চাইছেন আপনি, ভিক্ষা নয়। চাকরি চাইছেন আপনি, ভাতা নয়। 

    ফ্রেন্ডলিস্টে যাঁরা রয়েছেন,
    শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, আপনাদের পায়ে পড়ি, স্কুলশিক্ষা নিয়ে দুটো কথা লিখুন আপনাদের সোনার লেখনি দিয়ে। তাতে না-হয় কেউ সাময়িক একটু ক্ষুণ্ন হবে, যে পুরস্কার পরের মাসে পাওয়ার কথা,পরের বছর পাবেন। 

    পশ্চিমবঙ্গের বাংলা মাধ্যম স্কুলের দুরবস্থা নিয়ে দুটো প্যারাগ্রাফ লিখুন না-হয় শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে আপনার জনপ্রিয়তায় একটুও ভাঁটা পড়বে না। এত এত কবিতা লেখেন, গান লেখেন, ভারি ভারি উপন্যাস লিখে বাংলা সাহিত্যকে ভারাক্রান্ত করেন প্রতিদিন, বাংলার বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে গিয়ে শিক্ষক পাচ্ছে না, শেখার পরিবেশ পাচ্ছে না-- এই নিয়ে একটু লিখলে আপনার কলমের কালি কি ফুরিয়ে যাবে ? 

    বর্ষীয়ান কবি, মাননীয় জয় গোস্বামী, নমস্য ব্যক্তি আপনি। আপনার তো আর পাওয়ার কিছুই নেই। আপনি লিখুন না-হয় দু'-চার কথা এই নিয়ে ?  আপনাদের লেখা তো উপরমহল পর্যন্ত পৌঁছায়। 

    শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় স্যার, আপনি বলুন, বাচ্চা ছেলেদের যদি ঠিক করে লেখাপড়া শেখানো না হয়, আপনার 'দূরবীন' 'ঘুণপোকা' এইসব মোটা মোটা বই কারা পড়বে আর দশ-বিশ বছর পরে ?  বাচ্চারা লেখাপড়া না শিখলে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কি পারবেন এই সমাজকে রক্ষা করতে ? 

    চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, আপনার অনবদ্য বাগ্মীতা দিয়ে একটা মিনিট-ছয়েকের ভিডিও ছাড়ুন না !  আপনার কণ্ঠস্বর তো চোদ্দতলা অবধি পৌছোবে !  নাকি আপনি এগুলোকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মনে করেন না আজকাল ? 

    মাননীয় মৃদুল দাশগুপ্ত, ইন্টারনেট দেখে জানতে পারলাম আপনি এখনও জীবিত। ক্লাস টুয়েলভে আপনার লেখা কবিতা পড়াতে গিয়ে খুব হাসি পায়। আপনার নাকি প্রগাঢ় সমাজচেতনা, সমাজের জন্য ভেবে নাকি আপনার নির্ঘুম রাত্রি কাটে ?  আপনার বিবেক নাকি বারুদের মতো তেজালো, যখন তখন বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে চায় ?  'ক্রন্দনরতা জননী'র পাশে থাকবেন বলে আপনার প্রতিশ্রুতির কথা দ্বাদশ শ্রেণীর সদ্য তরুণেরা আর বিশ্বাস করতে চায় না, জানেন !  একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনার সমাজচেতনার চারাগাছটা কি ছাগলে মুড়িয়ে খেয়ে নিয়েছে ?  নাকি, সমাজ অশিক্ষিত থাকলেই আপনাদের সমাজচেতনা আরও বেশি মাল্য-চন্দনে বিভূষিত হবার সম্ভাবনা ? 

    শ্রেণীব্যবস্থার উঁচু ডালে বসে রয়েছেন যেসব চিত্র পরিচালক, ছবি আঁকিয়ে, গাইয়ে-বাজিয়ে, অভিনেতা, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, বাচিকশিল্পী, যাঁরা ভালো সংস্কৃতি বানাবেন বলে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন, কিছুদিন পরে আপনাদের ভালো সংস্কৃতির খদ্দের জুটবে তো ?  কে বুঝবে ভালো আর মন্দের ফারাক ?  সেই চর্চা কোথায় ?  সেই শিক্ষার গোড়াপত্তন হয়েছে কতখানি-- খোঁজ নিয়ে দেখেছেন একবারও ?  বাংলার বিদ্যালয়গুলো যদি মরুভূমি হয়ে যায়, শিক্ষাহীন ভিক্ষাসর্বস্ব জাতিতে যদি পরিণত হয় পরবর্তী প্রজন্মের বাঙালি, কে দেখবে আপনার বুদ্ধিদীপ্ত সিনেমা-থিয়েটার ?  কে শুনবে ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা, জগন্নাথ বসুর শ্রুতিনাটক ?  নোংরা ইউটিউব ভিডিওর রমরমা পেরিয়ে, ওদের বিনোদন জগতে আপনাদের ঠাঁই হবে তো ?

    ফ্রেন্ডলিস্টে যাঁরা রয়েছেন
    মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত, বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম আর লার্নিং অ্যাপ দিয়ে বাচ্চার স্বর্ণপ্রসূ ভবিষ্যতের কল্পনায় বুঁদ হয়ে আছেন যাঁরা, তাঁরাও জানবেন, এই সমাজেই আপনাদের থাকতে হবে। এই শিক্ষাহীন-শৃঙ্খলাহীন প্রজন্মই কিন্তু আপনার সন্তানের সহনাগরিক হবে। হয়তো নেতা হয়ে মাথায় চড়ে বসবে কোনোদিন। নগর পুড়লে আপনার দেবালয় অক্ষত থাকবে না। সমাজের বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষা-সংস্কৃতিহীন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠলে, কেউই আমরা নির্বিঘ্নে বাঁচতে পারবো না।

    সবার উপরে, সবার আগে, সবকিছু ছেড়ে, আগে চাই শিক্ষা। আগে চাই শিক্ষক। স্কুলে চাই শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা। চাই শিক্ষার পরিবেশ। চাই পূর্ণ সময়ের শিক্ষামন্ত্রী। তাঁবেদার-মুক্ত, দক্ষ ও স্বচ্ছ একটা পরামর্শদাতা কমিটি, যাঁরা সবদিক বিবেচনা করে সময়োচিত পরামর্শ দিতে জানেন। চাই সৎ ও সুদক্ষ মূল্যায়ন ব্যবস্থা, উন্নত আধুনিক পরিকাঠামো। চাই এই সবকিছুই, কারণ, মানুষের বেঁচে থাকার মান উন্নত করার একমাত্র উপায় হলো মানুষকে শিক্ষিত করা। 

    এই পোস্ট শিক্ষার দাবিতে, শিক্ষকের দাবিতে। আমার-আপনার বাড়ির নিষ্পাপ কচিকাঁচাদের কণ্ঠস্বর এই লেখা। ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থ ছাড়া, অন্য কোনো মোটিভ নেই এই লেখার পিছনে। রাজনৈতিক-বিরোধিতা নয়, সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি-তৃণমূল... কারোর পক্ষে বা বিপক্ষে নয় এই লেখা।

    শেয়ার করে, কপি-পেস্ট করে, মুখে মুখে-- যেভাবে হোক ছড়িয়ে দিন এই লেখা, এই দাবি। পাড়ার চা-দোকানি থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি-- সবার কানে পৌঁছে যাক জ্বলন্ত এই দাবি। 

    সবার উপরে, সবার আগে, সবকিছু ছেড়ে, প্রথমে চাই শিক্ষা। স্কুলে চাই যোগ্য শিক্ষক।  চাই শিক্ষার পরিবেশ।
  • Aranya | 2600:1001:b007:b6cc:f13b:a9bb:1539:8903 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০২:১২510275
  • এই লেখাটা পেলাম 
  • &/ | 151.141.85.8 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৪:১৩510277
  • পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়ব্যবস্থা নিয়ে তেমন কিছুই কথাবার্তা আসবে বলে মনে হয় না। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এই ব্যবস্থা থেকে আপন সন্তানদের সরিয়ে নিয়ে গেছে বাধ্য হয়ে। সরকারী স্কুলগুলোকে লঙ্গরখানায় পরিণত করা হয়েছে, শিক্ষাটিক্ষা সেখানে গৌণ হয়ে গেছে। একদিনে হয় নি, বছর দশেক কি তারও বেশি সময় ধরে ধরে হয়েছে। যারা এসব নিয়ে একটু আধটু লেখেন টেখেন তারাও অনেকেই শেয়াল পন্ডিত, আপন সন্তানদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে কুমীরের বাচ্চার জন্য আহা উহু করছেন। আদতে কিছুই এসে যায় না তাদের। 
  • পব নিয়ে একটু লিখুন - আপানারা না লিখলে কে লিখবে? | 2600:1010:b060:4484:55a9:7c0f:3e3a:cada | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৫:৪৭510279
  • কিছুই জানিনা বলে - ভয়ংকর এক ন্যাকামিটা বন্ধ করুন আগে। বহুলোক বলেছেন পব মূলতঃ একটা 'পার্টি সোসাইটি' হয়ে গেছে। আজকে নয় সেই বামফ্রন্ট আমল থেকেই চলে আসছে - শিক্ষাক্ষেত্রে চুড়ান্ত পার্টির হস্তক্ষেপ এককালে 'অনিলায়ণ' নামে খ্যাত হয়েছিলো। নাকি সেটাও জানতেন না? দয়া করে এইসব ভন্ডামিগুলো বন্ধ করুন। পব র এই ভয়ংকর অবস্থা - সেটা আগে জানতেন না? সত্যি একথাটা বিশ্বাস করতে হবে? কোনোদিনও শোনেনি - কয়লা পাচার বালি পাচার, গরু পাচারের কথা? শোনেনি বেআইনি ভাবে গাছ কাটার কথা?  
     
    কিভাবে গরু পাচার হয় - ইউটিউবে গেলেই অজস্র লিংক আসে। একটু সময় করে দেখে নিন না - নাকি সময়ের এতো অভাব!
     
    অথচ সারা সমাজের যে পচন ঘটছে চোখের সামনে সে নিয়ে কোনো শক্তিশালী কলাম নেই। কলাম নেই - মানে কারুর নেই - বাংলা এই দুরবস্থা নিয়ে কোনো বিখ্যাত বুদ্ধিজিবীর কোনো কোনো লেখা নেই। সবাই ভারতের দুরবস্থা নিয়ে কথা বলতে ব্যাস্ত। যা হবার তাই হয়েছে। কোটি কোটি টাকায় চাকরি বিক্রি হচ্ছে - আগামী ৩০/৩৫ বছর পব র কাচ্চা বাচ্চারা এই ঘুষ-দিয়ে-চাকরি-নেওয়া লোকের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহন করবে। চিন্তা করবেন না - ২৫ বছর বাদে এই শিক্ষকদেরই সরকার টীচার্স ডে তে সম্বর্ধনা জানাবে। তখন আবার আপ্লুত হয়ে কলাম লিখবেন।
     
    যদি বুকের পাটা থাকে তো পবর এই 'পার্টি সোসাইটি' হওয়া নিয়ে  কিছু লিখুন। এসব খুচখাচ লেখায় কারোর কিছু আসে যায় না। 
     
     
     
     
  • ভাবা প্র্যাকটিস করুন | 2601:205:c280:2890:1178:89de:a6e2:a3b7 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৬:১৯510281
  • আজ হোক কাল হোক, অনুব্রত মন্ডলের মুর্তি উন্মোচন হবেই বীরভূমের আশেপাশে বাংলার অন্যতম মহাপুরুষ হিসেবে  - এই ধরুন রবীন্দ্রনাথের পাশেই। তো কি করবেন? চুপ করে থাকবেন? একটু ঠিক করে নিন আগেভাগে।
  • politician | 2603:8001:b143:3000:2444:61ea:29a8:812b | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৬:৩১510282
  • পার্টি সোসাইটি নিয়ে কিছু না বলে পার্থর ঘুষ খাওয়া নিয়ে কিছু বলা যাবে না!! শুনে ভারী আপ্লুত হলাম। বিজেপিও বলে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে না বলে ভারতে মুসলমান নিপীড়ন নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বা সিপিএম বলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শ্ৰাদ্ধ না করে আর কিছুই বলা যাবে না। 
     
    পার্টি সোসাইটি নিয়ে আপনি নিজেই বলুন না। আমি শুনব। অন্যের ওপর বরাত দেওয়া কেন? 
  • জেনে বুঝে মন্তব্য করুন | 2601:205:c280:2890:1178:89de:a6e2:a3b7 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৭:০১510283
  • উফফ - আমার মন্তব্য পড়ে এটাই মনে হলো? যে 'পার্টি সোসাইটি নিয়ে কিছু না বলে - পার্থ চ্যাটার্জির ঘুষ খাওয়া নিয়ে কিছু বলা যাবে না!' ধন্য ধন্য! 
     
    কে তৃণমূল  বিজেপি কংগ্রেস বা সিপিএম - আমার তাতে আমার একেবারেই ইন্টারেস্ট নেই। 
  • মানতেই হবে | 2601:205:c280:2890:1178:89de:a6e2:a3b7 | ২৫ জুলাই ২০২২ ০৭:০৩510284
  • নিকটা যথার্থ নিয়েছেল কিন্তু 
  • হজবরল | 199.249.230.70 | ২৫ জুলাই ২০২২ ১১:২৯510296
  • "শিক্ষাক্ষেত্রে চুড়ান্ত পার্টির হস্তক্ষেপ এককালে 'অনিলায়ণ' নামে খ্যাত হয়েছিলো" - এই অনিলায়ণ ব্যাপারটা নিয়েও কেউ গুরুতে বা অন্য কোথাও বিশদে লিখেছেন ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন