এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  কাব্য

  • শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা - অলোকরঞ্জন দাসগুপ্ত (২০১৩) , স্কুল অফ কালচারাল টেক্সট এন্ড রেকর্ডস 

    sanatan pathak
    কাব্য | ২২ মার্চ ২০২২ | ৯২১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • শক্তির মৃত্যদিনে এই স্মারক বক্তৃতাটি আপনাদের ভালো লাগতে পারে | ভিডিও লিংক টাও থাকল |  অলোকরঞ্জনের অননুকরণীয় বাচনশৈলী ধরা পড়বে না, কিন্তু দ্রুত পঠন ও ক্রলারের ইনডেক্সিং এর জন্য টেক্সট বেশ কাজের |


    ###
    "গোধূলি গগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা, আমার যা কথা ছিল হয়ে গেলো সারা ।"

    আমি আজকে কৃতার্থ যে আমার নিবিড় বন্ধুরা এখানে উপস্থিত | একজনকে আমি প্রথম থেকেই খুঁজছিলাম, তাঁকে আমি আগলে রাখি সব সময়, আড়ালেই লুকিয়ে থাকেন, শুধু রাজনৈতিক বিবৃতির জন্য কোথা থেকে দেখে যায় শুধু তাঁর ওষ্ঠাগ্র | তিনি কোথায়, তিনি লুকিয়ে আছেন? এই প্রথম আমার সামনে লুকোলেন তিনি | আর যাঁরা এসেছেন, আমি ভাবতেই পারি না, আমার ভাগ্যকে আমি ঈর্ষা করি | শরৎকে কতদিন পরে দেখলাম, বিজয়াকে দেখলাম, আর মীনাক্ষীকে কতদিন পরে দেখলাম | আমরা তো একই বাড়ির সন্তান আসলে, কাজেই এখানে কিছু যুক্তি <missing word> হিসেবে বলার সুযোগ আমার নেই, কিন্তু কথা বলার আমার অজস্র আছে |

    আমি প্রথমেই, আমাদের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে একটা ব্যাপার আছে, ধরতাই, "পাকড়" বলে যেটা ধরে নেওয়া যায় | কতগুলো স্বর এক একটা রাগকে চিহ্নিত করে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় | ভোরের রাগ, রাতের রাগ, আবার যখন ভোরবেলা রাখালেরা চলেছে ধেনু চরাতে, এই সমস্ত রাগ গুলির এক একটা "পাকড়" থাকে এবং আজকের পাকড়টা হচ্ছে সুভাষ দাস । শান্তিনিকেতনে যাওয়ার আগে শক্তি একদিন এসেছিলো - ভারী ভারিক্কি গলায় বললো "পড়াতে যাচ্ছি",  শুনে ওর ক্লাস করতে আমার খুব ইচ্ছে করছিলো | কবিতা তো লেখা হয় ভাবের ঘোরের মধ্যে, পরে কি তার পুনরুদ্ধার সম্ভব ? এই ব্যাপারটা যাঁরা জানেন বা কথা যাঁরা মন দিয়ে শোনেন তাঁরা বুঝেই নিতে পারেন যে শক্তি শিক্ষক এবং শিক্ষক হয়েই এসেছিলো | বাদল সরকারের মতো নয়, বাদল সরকার এখানে পরীক্ষার্থী হয়ে এসেছিলেন | কিন্তু সে আমাদের কাছে শিখতে আসেনি, আমাদের পরীক্ষা করতে এসেছিলো । শিক্ষক । 

    এবং এই ব্যাপারটা আমরা ভুলে যাই, ভীষণভাবে ভুলে যাই | যদি আজকে আমার স্বগতকথনের মধ্যে কোনো কোনো সূত্র থেকে যায় আপনাদের স্মৃতিতে, তাহলে সেই স্মৃতিটার, তার যে ফল্গুসূত্র তা হলো এই যে শক্তি শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন |  এখন আপনারা জানেন, আমি আশা করছি এখানে তুলনামূলক সাহিত্যের কেউ কেউ আছেন, যাঁরা এখানে পড়াশুনা করছেন, তুমি তুলনামূলক সাহিত্যের? তুমি? আমি দেখেই বুঝেছি (হাস্য)
    আমরা যখন, অমিয় দেব যখন বললেন, তখন ক্লাসের ব্যাপারটা একটু অন্য রকম ছিল  জানেন ? সবাই, এখন যেটা  হয়ে গেছে যে ক্লাস হচ্ছে, নবনীতা কফি বানাচ্ছেন এবং সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বাইরে দঁড়িয়ে আছেন - "আর কতক্ষন পড়াবে" ?  তাঁকে ঢুকিয়ে কফি খাওয়ানো হলো অথবা আর একদিন হয়তো তিনি পড়াচ্ছেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম -- "আপনি আর কতক্ষন পড়াবেন" ? এরকম একটা ব্যাপার ছিল । তা এই আবহাওয়ার মধ্যে একটা নান্দনিক কুসংস্কার ছিল শক্তি সম্পর্কে | শক্তি যখন এসেছেন আমরা ভয়ে ভয়ে কাঁপছি এবং শক্তি সম্পর্কে একটা ধারণা ছিল -- শক্তি "নাইভ কবি" | এই ধারণাটা এসেছিলো শিল্পাচার্য শিলারের এর কাছ থেকে - naive und sentimentalische dichtung --  প্রাকৃত এবং মন্ময়ের কবিতা | সেই অনুযায়ী তখন এরকম একটা অদ্ভুত বিভাজন ছিল শক্তি হচ্ছে প্রাকৃত: প্রকৃতির দুলাল । যা ইচ্ছে করতে পারে । তিনি সাড়ে নটা খুন করলেও পুলিশ তাকে ধরবে না । এবং এই ধারণাটার সুযোগ সে নিতো কিন্তু । "পোয়েটিক লাইসেন্স" যাকে বাংলায় বলে। (হাস্য)

    সেটা, সেই সুযোগগুলো, সে নিতো । আর একজন সে আমাদের মধ্যে ছাত্র ছিল, প্রণবেন্দু, সে নিজেকে বলতো -- "আমি মন্ময় কবি, আমি প্রকৃতির থেকে আলাদা" | তা এইখানে এই ধারণাগুলো প্রায় সবসময়, দীর্ঘদিন সে লালন করে এসেছে, লালন করে মজা পেয়েছে শক্তি -- আমি পেয়েছেন বলছি না, মৃত্যুর পর সবাই তুমি হয়ে যায় | সেখানে আমার যে একটা কথা মনে  যে তাকে নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন -- যেমন সমীর আজীবন শুধু শক্তিকে নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন -- তিনি কিছু কিছু ভুল ধারণা, তিনি আমাকে ক্ষমা করবেন, তিনি (ও উদয়ন, তুমি এসেছো !) অদ্ভুত অদ্ভুত কথা আছে, তিনি বলেছেন একটি লেখা, কবিতা হয়ে গেলে তিনি তার অঙ্গ স্পর্শ করতেন না । এখন এখানে "স্কুল অফ টেক্সট" হয়েছে, পাণ্ডুলিপিগুলো আপনারা দেখবেন, কাটতে কাটতে রক্তাক্ত সব পাণ্ডুলিপি |

    এবং সেখানে আমার যেটা মনে হয়েছে, যখন ঊনিশশো আটষট্টিতে চব্বিশ থেকে বোধহয় সাতাশে এপ্রিল, তখন আমার নিবিড় বন্ধু শঙ্খ ঘোষ ওদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন । আমি যখন ওদেশে যাই তখন জানাজানি হয়ে যায় যে লোকটা ওদেশে পলাতক । উনি যখন যান তখন কেউ জানতে পারেনি | উনি সবসময়  এমার্জেন্সির সময় পালিয়ে যান, এবং যাই হোক দেশ ও দেশের তিনি জনক প্রায় এখন | তার ফলে যেটা হয়েছে তিনি নেই কিন্তু আমরা একটা প্রদর্শনী করবো । কবিতার । সেটা একটা আশ্চর্য প্রদর্শনী হয়েছিল তাতে আমরা শক্তির কবিতা সব প্রদর্শনী করেছিলাম, এবং সেখানে দেখতে পাই যে -- সেই সমস্ত রচনা সব পাওয়া গেছে কিনা আমি ঠিক জানি না -- ( আচ্ছা আজকে হোতা কোথায়? যিনি পুরো ব্যাপারটা দূরভাষ্যে আমাকে বললেন , তিনি নেই ? তিনি কোথায়? "অবশ্যই আছি - হোতা কোথায় ? আমি বার্তাবহ" । না না, ওটা বললে হবে না ।) তো তাতে আমার মনে হয়েছে, এটা জীবনানন্দের ক্ষেত্রেও তাই, অনেকের ক্ষেত্রেও তাই, এই কতগুলো কুসংস্কার আমি আজকে ভাঙবো । 

    আমি এবার, আজকে সত্যি কিন্তু আমাকে থামানো একটু মুশকিল হবে । আমার একটু delirium হচ্ছে, delirium কথাটা মনে হচ্ছে । শক্তি যেদিন প্রথম ক্লাস করতে এলো, সবাইকেই -- কবির তো একটু মোহিনী ময় থাকা উচিত -- সে সবাইকেই ক্লাস থেকে তাড়িয়ে দিলো । সে এসে করলো কি, একটা চিরকুট আমার হাতে ধরিয়ে দিলো, যে চিরকুটকে আমি আজও বহন করছি । বললো -- "অলোকদা , এই যে এজরা পাউন্ড বলছেন - 
    "Thus saith Kabir: 'Politically' said Rabindranath
     they are inactive. They think, but then there is
    climate, they think but it is warm or there are flies or some insects' -- 
    কী ? কী বলছেন ? কী ? পাগল ? একজন কবি যদি delirium ও করে, তার তো একটা মাথা মুন্ডু থাকতে হবে ।" এই শব্দটা ব্যবহার করেছিল । এটা থেকে বোঝা যায় শক্তি পাগল ছিল না । পাগলামির কন্সট্রাক্টটাকে বানাতে হয়েছিল, সে কথায় আমি পরে আসছি । 

    আমাকে বাঁচালেন সত্যি, এজরা পাউন্ডের এ লাইন এর পরমার্থ বোঝাবার কারুরই কোনো উপায় নেই । আমি কিছু কিছু ব্যাখ্যা করেছি, আজকে সেই ব্যাখ্যাটা সম্পূর্ণতর হয়েছে, কিন্তু আজকে যদি আমি সেটা বলতে যায়, তবে অন্যদিকে চলে যাবো । আমি সেদিকে যাচ্ছিনা । ফাদার ফালোঁ যাচ্ছিলেন । তা ফাদার ফালোঁর দিকে যাচ্ছে শক্তি । ফাদার ফালোঁ ভেবেছিলেন হয়তো দীক্ষিত হবার জন্য যাচ্ছে । ফাদার ফালোঁ কী করতেন, বাইরের যে ঐহিক পোশাক, সারাদিনের, ফেলে দিয়ে উনি এসে স্নান করতে একটা জায়গায় । স্নান করে পরিশ্রুত হয়ে উনি আসতেন । তখন উনি যখন ঢুকতেন, উনি খুবই মুক্ত ছিলেন, শক্তির সাথে পরিচয় করে দিলাম, তারপর শক্তি ঘন্টা খানেক দেড়েক পরে ফিরে এলো বললে  -- আমি যেন, আমার একটা দীক্ষা হলো মনে হচ্ছে। আমি বললাম, না, কি হয়েছে ? বললে যে, না । আমি বললাম কিছু লিখেছেন? বললে না, কিরকম যেন মাথাটা ঘোলাচ্ছে । আমার সঙ্গে 'আপনি'র সম্পর্ক ছিল, শরতের সঙ্গেও আছে, এবং অনেকদিন শরৎকে তুমি বলতে আমার ইচ্ছে করেছে, কিন্তু সুযোগটা পাই নি । এখানে ব্যাপারটা আমি জানলাম ফাদার ফালোঁর সাথে কথা বলে যে তিনি তাকে ওই সুযোগে দান্তে ও ওনার পূর্বসূরী ভার্জিলের কিছু কিছু কথা বলে ছেড়ে দিয়েছেন ।  তারপর বললে যে আচ্ছা উনি কোথায় থাকেন? উনি শান্তি ভবনের সাথে যুক্ত ছিলেন । ওখানে যাওয়া আসা করত শক্তি । এবং আমি পরে বুঝলাম যে কোন জায়গাগুলো উনি শুনিয়েছিলেন । দান্তের তৃতীয় সর্গের এই লাইনগুলো আপনাদের সবারই জানা । অসাধারণ সে সমস্ত লাইন - সে লাইনগুলো হচ্ছে এরকম । এটা আপনাদের বলি যে একটা মৃত্যুর আগে এবং গীতাঞ্জলি পর্বের রবীন্দ্রনাথ গ্রীক শিখতে চেষ্টা করেছিলেন, শক্তি সেই একটা ঘোরে কতগুলো ইতালিয়ান শব্দ শিখবার চেষ্টা করতো, বলবার চেষ্টা করতো  । একটা লাইন সে মুখস্থ রেখেছিলো দান্তের -
    Per me si va ne la città dolente,
    সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা, এবার যখন শান্তিনিকেতনে গেলাম, যারা ওকে দূর থেকে লক্ষ্য করতো তারা বলেছে । এই লাইনগুলো অসাধারণ লাইন আপনারা, সুকান্ত তো জানেনই,
    <missing lines>
    যেমন শরৎ শেষে হেমন্তে পাতা ঝরে যায়,
    মানবশিশুরা তেমন ঝাঁপ দিয়ে পড়ে তরণীর আকুল আহ্বানে,
    ওরা ভেসে চলে যায় অন্য পাড়ে |
    পাখিরা যেমন গিয়ে পাখিধরাদের ফাঁদে পড়ে,
    যেনবা স্বয়ং জমি পাখিধরা শয়তানের মতো
    টেনে নেয় এক একটি স্বতন্ত্র সত্তাকে |

    এটার মূল স্বরলিপি কি ছিল ? এটা ভার্জিলের , তোমরা সবই জানো , তবু বলছি ভার্জিলের ষষ্ঠ সর্গে খুব অল্প রেখায় আঁকা । এরকম
     
    "হেমন্তের পাতা ঝরে পরিযায়ী পাখীদের গায়ে,
    সমুচ্চ সমুদ্র থেকে ওরা যে সমতলে আসে
    বিশেষত শীতের কবল থেকে বাঁচার লিপ্সায় |"

    যে একটু বদল হলো সেই বদলটা, এই বদলটা  ওর কিরকম যেন মনে হলো , একই লেখা অন্যভাবে লেখা হয়েছে । ভেরিয়েশন, এই ব্যাপারটা শক্তিকে ভয়ঙ্কর ভাবে পীড়িত করেছিল । কিন্তু কিছুতেই, আমাকে প্রচুর খাটিয়ে নিয়েছে । এই জায়গাগুলো বার করতে  আমার দম  বেরিয়ে গিয়েছে । এক এক সময় বলছে, ওই যে, ওই যে পাখি যারা ধরে, ওই জায়গাটা অলোকদা বার করুন ? আমি বার করেছি । একদিন ওর সঙ্গে বুদ্ধদেব ছিল, বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত । সেও দেখি তার পরে একটা ছবিতে পাখিধরাদের ঠান্ডার মধ্যে  পাখি ধরার ব্যাপারটা ধরেছে । এবং এই জায়গায় আমার যেটা অদ্ভুত লাগছে, শক্তিকে এটা  ভয়ঙ্কর তাড়িত করেছিল এবং শক্তি এসে একদিন আমাকে বলছে - "আচ্ছা অলোকদা  থিমেটিক কন্টিন্যুইটি ব্যাপারটা কী ?" তা আমি বলে বোঝাবার চেষ্টা করি, যেটা তুলনামূলক সাহিত্যের একটা প্রাণসূত্র । এবং সেখানে বলতে ও বারবার বলে - "সেই কন্টিন্যুইটি তে আমার কি হবে যাকে যদি আমি ভাঙতে চুরতে  না পারি । বিনির্মিতি --  এইটাই সারা জীবন সে করে এসেছে । 

    করে এসে তার পরে বুদ্ধদেবকে নিয়ে মাঝখানে যথেষ্ট ও ঝামেলায় ফেলেছিল । অমিয়, আপনি জানেন যে বুদ্ধদেব তুলনামূলক সাহিত্যে আসবার অনেক দিন আগে থেকেই রিলকের অনুবাদ করছিলেন । এবং বারবার গিয়ে, শক্তির তো, ওর সমস্ত চিরায়ত সম্ভ্রমের ব্যাপারটা ছিল না, বলতো - "কেন আপনি চতুর্থ সর্গটা করেননি ?" এইসব বার হয়ে যেত । তখন আমি রিলকে পড়ছি ওর সঙ্গে । অর্থাৎ যে অনুবাদ বুদ্ধদেব করেছিলেন, এগুলোর অনেকগুলো ভাষ্য আছে | 
     
    "পাতা ঝরে, পাতা ঝরে, শুন্য থেকে ঝরে পড়ে যায়,
    যেন দূর আকাশে বিশীর্ণ হলো অনেক বাগান,
    এমন ভঙ্গীতে ঝরে প্রত্যাখ্যানে যেন প্রতিশ্রুত।"

    অসাধারণ অনুবাদ রিলকের । শক্তির সাহস ছিল বলতে, "এটা কীরকম যেন", "পানসে" এই শব্দটা ব্যবহার করেছিল । বুদ্ধদেব সহ্য করতেন ।  তখন ওর মনে হলো যে ও নিজে চতুর্থ সর্গটা অনুবাদ করবে । তখনও মুকুল গুহ ওর সঙ্গে যুগলবন্দীতে যুক্ত হয়নি । রিলকের এই " থিমেটিক কন্টিন্যুইটি" টা দেখাবার জন্য ও রিলকের এই চতুর্থ সর্গটা অনুবাদ করলো যার বিশাল ব্যাখ্যা করেছে সে, বিশাল ব্যাখ্যা । বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বোধ্য কবিতা, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো দুর্বোধ্য হতেই হবে । এই লাইনে, এই কবিতার মধ্যে, এমন একটা ব্যাপার আছে যেটাকে আমাদের সারা জীবন ধরে গড়তে এবং ভাঙতে হবে । অনুবাদটা যখন করলো, সেই অনুবাদের ভেতরে আমরা দেখতে পাচ্ছি একটা জিনিস যে শক্তির নন্দনসূত্রের সূত্রটা আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে । চতুর্থ সর্গ, এখানে লক্ষ্য করুন আপনারা, ভার্জিল, দান্তে হয়ে রিলকে, রিলকের এলিজি যেটা অমিয় পড়লেন, সেই এলিজি, Duineser Elegien, সেইখান থেকে এসে তারপরে ও অনুবাদ করলো -

    "ওহে জীবনবৃক্ষেরা, কখন আসবে শীত তোমাদের
    আমরাও কোনোদিন একমনস্ক নই ,
    যাযাবর পাখিদের মতন কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমরা ।
    আমাদের দেরী হয়, পিছনের আকর্ষণ ছেড়ে
    সহসা বাতাসে মেলি ডানা । তারও চেয়ে দ্রুত পড়ে যাই
    কঠিন পুকুরে, উন্মোচিত হই, আর একসঙ্গে কুঁকড়ে যাই ।

    শ্রুতিসৌকর্য নেই । মূলটা  শুনুন একটু -

    O Bäume Lebens, o wann winterlich?
    Wir sind nicht einig. Sind nicht wie die Zug-
    vögel verständigt. Überholt und spät,
    so drängen wir uns plötzlich Winden auf
    und fallen ein auf teilnahmslosen Teich.

    এর পরের লাইন হচ্ছে -
    Blühn und verdorrn ist uns zugleich bewußt.

    ফুটে ওঠা আর বাসি হয়ে যাওয়া । এটার শক্তি অনুবাদ করেছে - "উন্মোচিত হই, আর একসঙ্গে কুঁকড়ে যাই ।"  এইটেই হচ্ছে গ্রহণ এবং বিনির্মাণ । এবং এইখানে এই যে অনুবাদ করছে শক্তি, সেদিকে লক্ষ্যটা এই যে, যে শক্তি বলেছিলো, গদ্যই ওর আসল এলাকা, অর্থাৎ গদ্যের মতন যেন কবিতা স্বচ্ছ হয়, এতো স্বচ্ছ হয় যে তার মতো রহস্য আর কিছু নেই । মধ্যাহ্নের রৌদ্রের মতো চোখধাঁধানো ।

    অর্থাৎ এইটাকে যদি আমি বলি বীজমন্ত্র, একটা বীজকে ফাটিয়ে দেখা । একসঙ্গে hermetic আর hermeneutical । আপনারা জানেন যে এ দুটি শব্দের মধ্যে একই, একজন, একটি শব্দ আছে, hermes, দেবতাদের ডাকহরকরা । তার মধ্যে একটা আছে যে ওই সমস্ত কবিতার বা শাস্ত্রের ভিতরকার কথাটা - "নিভৃত বাণীর বিবৃতি" । নিভৃত বাণীকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়া, এটা ভীষণ  শক্তির মধ্যে ছিল । আর ঠিক তার উল্টো hermetic, যে একেবারে বুকের মধ্যে, 'রক্তমণির হার' করে যারে তুলছে সেটাকে ধরে রাখবার চেষ্টা । এই যে এই ধরে রাখবার যে চেষ্টাটা তার সবটা আমি দেখাব না, আমি লুকিয়ে রাখবো একটা জিনিস , এই দুটো মেলাতে গিয়ে এটা প্রবাদপ্রসিদ্ধ যে একটা কবিতা আপনারা জানেন - "দিন যায়" ।
    "শুধু ঝড় থমকে আছে গাছের মাথায়
    আকাশমনির ।"
    অসাধারণ । আমরা এতো মূর্খ নই যে এ লাইনগুলো বুঝতে পারবো না । আমাদের ততটুকু আমরা তার সংবেদায়িত হয়েছি, আমরা ততটুকু sensitized । শক্তি কী করলো ? আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে, hermeneutically,

    "ঝড় মানে ঝোড়ো হাওয়া, বাদ্‌লা হাওয়া নয়"

    খুব রাগ হয়েছিল শক্তির ওপর আমার । আর ব্যাপারটা কি, ঐরকম ঠিক উপনিষদের সেই ব্যাপারটা আপনারা জানেন যে, গুরু বললেন - "এই দেখ, গাছটা আছে "। "কোথায় গাছ আছে, গাছ তো দেখছি না " । তখন বললে - "এই বীজটাকে তুমি ফাটাও" । ফাটিয়ে ফাটিয়ে ফাটিয়ে ফাটিয়ে ফাটিয়ে যখন শূন্যতা এলো, তখন গুরু বললেন "এর মধ্যেই গাছটা আছে ।" শক্তি তখন কি করতো সেই শূন্যতাকে আবার জোড়া জোড়া জোড়া দিয়ে আবার একটা গাছ তৈরী করার চেষ্টা করতো । এখানে একটা ব্যাপার দাঁড়ালো যে ওকে একটা পাগলামির একটা স্টান্স, একটা আত্মনাট্যের একটা মুদ্রা ওকে তৈরি করে নিতে হলো বাঁচবার জন্য । এরকম হয় না? কবিদের এরকম হয় । ইয়েটস সিঁড়ি ঘুড়ে ঘুড়ে নামছেন, দেখছেন টাইটা ঠিক আছে কিনা, কবির মতো দেখাচ্ছে কিনা । ঠিক এইরকম ব্যাপার । এবং শক্তি এটা করছে, আর আমি তার ঠিক দুটি, দুটি উদাহরণ আপনাদের উপহার দিচ্ছি । (ক্রমশঃ)
     
     
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সনাতন পাঠক  | 2603:8080:d01:14e7:68f5:6afe:9a05:e28d | ২৪ মার্চ ২০২২ ১৭:২৫736073
  • Duineser Elegien - Die Vierte Elegie (German)
    O Bäume Lebens, o wann winterlich?
    Wir sind nicht einig. Sind nicht wie die Zug-
    vögel verständigt. Überholt und spät,
    so drängen wir uns plötzlich Winden auf
    und fallen ein auf teilnahmslosen Teich.
     
    ###
    Blühn und verdorrn ist uns zugleich bewußt.
    O trees of life, when is your winter season?
    We are divided. Lack the knowledge of
    migrating birds. Belated and outstripped,
    we hurl ourselves suddenly on the wind
    to tumble on a pond of misconceptions.
    Both growth and withering present to our minds.
    And somewhere lions wander in their glory,
    and know in all their days no dearth of power.
    ###
     
    ওহে জীবনবৃক্ষেরা, কখন আসবে শীত তোমাদের
    আমরাও কোনোদিন একমনস্ক নই ,
    যাযাবর পাখিদের মতন কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমরা ।
    আমাদের দেরী হয়, পিছনের আকর্ষণ ছেড়ে
    সহসা বাতাসে মেলি ডানা । তারও চেয়ে দ্রুত পড়ে যাই
    কঠিন পুকুরে, উন্মোচিত হই, আর একসঙ্গে কুঁকড়ে যাই ।
  • সনাতন ​​​​​​​পাঠক  | 2603:8080:d01:14e7:68f5:6afe:9a05:e28d | ২৪ মার্চ ২০২২ ১৭:৪৪736074
  • "এই কবিতা-নির্মাণই হল হয়ে ওঠার একটি অংশ, এক ধরণের অনুশীলন। সে কথা বলতে গিয়ে শক্তি ‘এত কবি কেন?’ লেখাটিতেই বলছেন, “আমার কাছে যদি কোনও তরুণ কবি আসে, লেখা দেখায়, আমি সঙ্গে সঙ্গে তাকে শেক্সপীয়রের সনেট অনুবাদ করতে বলি। বলি, বেশ কিছুকাল কর, তারপর অনুবাদগুলো নিয়ে আমার কাছে এস। নিজস্ব কবিতা পরে লিখবে।” এবং এর পরেই প্রচণ্ড হতাশায় বলছেন, “আমি এখনও সেই তরুণের প্রতীক্ষায় আছি যে অনুবাদ নিয়ে আসবে।” একইসঙ্গে উল্লিখিত হচ্ছে তাঁর প্রিয় বন্ধু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও, “সুনীল কবিতার যত বড় পৃষ্ঠপোষক, তত বড় শত্রু”। কারণ? “সহনশীলতা আর সম্পাদকীয়তা ওর রক্তে। ও ঘষে-মেজে সেই তরুণের (যাকে শক্তি শেক্সপীয়র অনুবাদ করার অনুশীলন দিয়েছিলেন নিজস্ব কবিতা লেখা থামিয়ে) একটি কবিতা ‘দেশ’-এ ছেপে দেয়। হয়তো বছরে ওই একটিই প্রকাশিত হল। সেই তরুণ কিন্তু হয়ে উঠল জবরদস্ত কবি।” এখান থেকে বোঝা বেশ সহজ নয় কি যে কবির তীব্র প্রশ্নের উৎস কোন ঘটনাক্রম? কোনোরকম অনুশীলন, অভ্যেস ছাড়া হাজার হাজার পত্রপত্রিকায় অনবরত প্রকাশিত হয়ে চলেছে প্রায় সমসংখ্যক ‘প্রতিশ্রুতিবান’, ‘উদীয়মান’, ‘তরুণ’ কবির লেখা। তাঁরা কবিতা লেখেন – পয়ারে নয়, “এক ধরণের ভাঙচুরময় গদ্যে”। এককালে ‘আরও কবিতা পড়ুন’ আন্দোলনে মানুষের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া কবিতা শেষ অব্দি বাজারের সামগ্রী হয়ে উঠবে, তাঁর গুণগত মান হারিয়ে ফেলে সে হয়ে উঠবে ব্র্যান্ড-সর্বস্ব একটি ‘প্রোডাক্ট’, তাঁর নিরিখেই কবির বক্তব্য, “এখনকার কবিদের দেখি আর দুঃখ হয় এজন্যে যে ‘দেশে’ একবার অন্তত প্রকাশিত হতে পারলে তারা কৃতকৃতার্থ বোধ করে। এমন লালচ দেখে আমার ঘেন্না হয়”। এরই সার্বিক মূল্যায়নে বোধ করি তাঁর প্রশ্ন, “এত কবি কেন? কবিতা লিখে ফেলা আপাতত সহজ বলে?”
     
  • - | 103.76.82.50 | ২৪ মার্চ ২০২২ ২০:২৪736075
  • অডিওফাইল থেকে সরাসরি বাংলা টেক্সট-এ ট্রান্সক্রিপ্ট করা যাচ্ছে?কীভাবে জানাবেন? নাকি শুনে শুনে টাইপ করলেন? 
  • সনাতন পাঠক   | 2603:8080:d01:14e7:68f5:6afe:9a05:e28d | ২৪ মার্চ ২০২২ ২৩:১৪736076
  • শুনে শুনে টাইপ করলাম | ইউরোপীয়ান ভাষার জন্য অডিও-টু-টেক্সট সফটওয়্যার আছে | একটু খুঁজলাম কিন্তু বাংলার জন্যে পেলাম না | পরে আরও রিসার্চ করার ইচ্ছে আছে | খুব প্রয়োজনীয় টুল | শুনে শুনে টাইপ করতে অনেক সময় লাগে | আমার তিরিশ মিনিট অডিও ট্রান্সক্রাইব করতে প্রায় দু ঘন্টা লেগে গেলো |
  • - | 103.76.82.50 | ২৫ মার্চ ২০২২ ০১:৪২736081
  • সেটাই তো ব্যথা। আমার ৬ ঘন্টার ইন্টারভিউ ট্রান্সস্ক্রিপ্ট করার আছে, গুগুল ডক এ মুখে কথা বললে সেটা বাংলা ইউনিকোড এ ট্রান্সক্রিপ্ট করে। কিন্তু অডিও ফাইল থেকে কীভাবে করা যায় জানিনা। গুগুল ট্রান্সলেট এ ও করা যায় একটু একটু করে। কিন্তু সবই মুখে বলা কথার ট্রান্সস্ক্রিপ্ট।
  • - | 103.76.82.50 | ২৫ মার্চ ২০২২ ০২:১৬736082
  • https://y2mate.is/en79/  এখান থেকে ইউটিউবের ভিডিও বা তার অডিও ফাইল নামানো যায়।
    কেউ কেউ বলছে গুগুল ডক এ টুল থেকে ভয়েস টাইপিং চালু করে ল্যাঙ্গুয়েজ বাংলা সিলেক্ট করে মাইক্রোফোন চিহ্নে ক্লিক করে সিস্টেম প্লেয়ার-এ অডিও ফাইলটা চালিয়ে দিলেই ট্রান্সক্রিপ্ট হয়ে যাবে। আমার সেটা হচ্ছে না।
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:198a:6992:771b:d7f8 | ২৫ মার্চ ২০২২ ০৪:৫৬736083
  • উচ্চারণের হের ফেরে ইংরিজিও ঠিকমতো হয় না, বাংলা তো অবহেলিত ভাষা, তার ওপর যুক্তাক্ষর আছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন