এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বাইনারি | 208.169.6.50 | ১৯ জুন ২০১২ ০৩:৪১559355
  • অচিন্তি-র মেক্সিকো-র টই পড়ে এন্থু পেয়ে গেলাম। এমনিতেই ইপ্সিতা, লাস্ট তিন বছর ধরে মাঝে মাঝে খোঁচাচ্ছে। সেই ভয়ঙ্কর রোমহর্ষকর 'ফ্রাঙ্কফুর্টে দুইরাত' লেখার জন্য।

    -- জানুয়ারীর দুই তারিখ সারাদিন বাক্স পুনরায়-বাঁধন-ছাদন করতে সন্ধ্যে হয়ে এল। কলকাতা যাবার সময় ব্যাগপত্তর-সুটকেস থার্মোডাইনামিক্সের এনট্রপি মেনে চলে। মামাতুতো বোনঝি-কাকাতুতো জামাইবাবু-জেঠতুতোবৌদি-পাড়াতুতোভাইপো জন্য ঘড়ি-টিসার্ট-রান্নাকরার হাতা(যেটা এদেশে বলে স্প্যাচুলা)-নখপালিশ আর কিরিম (যা এখ্‌ন হাতিবাগানের হকার পট্টিতেও পাওয়া যায়) ভর্তি ঢাউস সুটকেস আসে দুই/তিনখান। আবার সেগুলো-ই নারোকোল-চিঁড়ে-মুড়ি-মোয়ার পাল্‌স্টিকের প্যাকেট, জ্যাঠ্‌তুতোবৌদির দেওয়া হলদিরামের সনপাপড়ি, ঝর্না ঘিয়ের শিশি, খবরের কাগজে মোড়া নলেন গুড়ের খন্ড, কলেজ স্ট্রিট ঘেঁটে কেনা বাংলা উপন্যাসের বই, পুরোনো দেশ/আনন্দবাজারের পূজোস্‌ংখ্যা ইত্যাদি তে পেটমোটা হয়ে ফেরে।

    তো এইসব খুলে-ছড়িয়ে, সুটকেসে ভরে, আবার খুলে (সর্ষের তেলের টিন ঢোকানো হয়নি তাই) আবার ভরতে ভরতে সন্ধ্যে হয়ে গেল। আমার জননী হাইব্লাড প্রেসারের রুগী। তাঁর আবার কোনো শুভকাজে অ্যাডভান্স টেনসন সুরু হয় একসপ্তাহ আগে। তো তিনি গত সাতদিন, 'কি রে ? এয়ারপোর্ট যাওয়ার গাড়ি বুক কল্লি না ?', প্রতিদিন তিনবেলা তিনবার করে মাথার ঘিলু নড়িয়ে দেয়েছেন। তো সে গাড়ি আসবে রাত ১১ টায়। গিন্নি এমনিতেই ব্যস্ত। দাদা-বৌদি-দিদি-বোন-পুরোনো বান্ধবী-দের সাথে ক্রমান্বয়ে শেষ বিদায়ের ফোনালাপ চলছে। এইসব কত্তে কত্তে, রাতের খাওয়া সেরে, বাবার হার্টের ডাক্তার, বাড়ি মেরামতির প্ল্যান, মায়ের হাইপারটেনসনের চিকিৎসা, আরো কিছু পারিবারি কাজকম্ম বাবা-মায়ের সাথে আলুচোনা কত্তে কত্তে-ই রাত ১১-টা বেজে গেল। কম বেশি দেরি করে গাড়িটাও এসগেল ১১ঃ১৫ তে। ছলোছলো চোখের মা আর বেজায় গম্ভীর মুখের বাবাকে প্রনাম-টনাম করে ঘুমন্ত মেয়ে-কে ধাক্কা মেরে তুলে, ঢাউস-ঢাউস ৩/৪ টে সুটকেস হাঁইমাই করে গাড়ীর ডিকি-তে ভরে, রওনা দিতে দিতে ১২ টা। ভোর সারে তিন্টে, লুফথান্সা, দুটোয় চেকইন, সুতরা ংচিন্তা নাই।

    চেকইনের লাইন দেখি লম্বায় বেশ বড়। চওড়ায়-ও। এক একটা পরিবারিক ইউনিটের পাহাড় প্রমান সুটেকেসের বোঝা। ঠেলাগাড়ীর মাথায়। আমায় একবার কোপেন্‌হাগেনের চেকইন কাউন্টারের তিরিক্ষে টাইপের মহিলা, ঠিক এইরকম মালাত্তকর অবস্থায় দেখে "হোয়াট ডু ইউ থিংক ? ইস ইট অ্যা কার্গো ফ্লাইট ?' বলে গালি দিয়েছিলো। তাপ্পর থেকে মালের বহর এট্টু কম-ই রাখার চেষ্টা করে থাকি। দমদমে আবার চেকইনের আগে মালপত্তর স্ক্যান করে, সিকিউরিটি বেল্ট বেঁধে নিতে হয় (কে যানে কেন, এরম ব্যবস্থা ?), সেখানে-ও লাইন আর ৩০ কেজির বাক্স নিয়ে টানামানি কত্তে হল। মানে এককথায় চুড়ান্ত হ্যাঁচোড়-প্যাঁচোড় পরিস্থিতি।

    যাগ্গে, শেষে চেকইনের লাইনে যখন স্থিতু হলাম, তকন দেখি লুথান্সার কোট পরা দুজন, হাতে ফাইলপত্তর নিয়ে, "এনি ভলেন্টিয়ার ? ওয়ান্ট-টু রিবুক ?' করে হাঁকপেরে হাঁকপেরে যাচ্ছে। শুনলাম নাকি ওভার বুকড, তাই পরশুদিন রিবুক কল্লে, ১৫০০ ইউরো পার-হেড দেবে, আর ৫ তারিখের কনফাম্‌র্ড বুকি ংদেবে। লোভ যে হচ্ছিলো না, তা নয়, কিন্তু মেয়ের স্কুল আর নিজের আপিশের স্কিডিউল চিন্তা করে হজম করে নিলাম।

    তখন কি আর জানি ? হাতের লক্ষী ..........

    (চলবে)
  • Nina | 22.149.39.84 | ১৯ জুন ২০১২ ২৩:১৯559365
  • মালত্তকর ই বটে -- :-D
  • achintyarup | 125.111.248.6 | ২০ জুন ২০১২ ০০:২১559366
  • হুঁ, তারপর কি হল?
  • বাইনারি | 208.169.6.50 | ২০ জুন ২০১২ ২১:৫৭559367
  • আমাদের সঙ্গে একই রুটে একই উড়ানে যাচ্ছিলো মুকুল আর সোমা। ওরা আমাদের শহরতুতো ভাই-ভাইবৌ, ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করে। তো মুকুল, সেই ১৫০০ ইউরো-র টোপটা প্রায় গিলেই ফেলেছিলো, আমার ভুজু ংভাজু -ংএ নিরস্ত হল। তখন কি আর জানতাম ?

    যাউগ্গা, ইমিগ্রেশন অফিসারের খেঁকুরে মুখ আর পাসপোর্টের সামনে পেছুনে চামড়া তোলা পরীক্ষা-য় পাস করে লটবহর নিয়ে গোঁতাগুতি করে প্লেনে ওঠলাম। সেই মালের বোঝা থেকে, চেকইনের পরে-ও রক্ষা নেই। কাঁধে ঢাউস শোল্ডার ব্যাগ দু হাতে সুটকেস (সাইজে ছোট, ওজনে মন খানেক)। তো, বাম দিকের (আমার কেন জানিনা প্রতিবার বামপন্থী আইলে সীট পরে) আইলে লম্বা লাইন। লাইনের শেষ মাথায় এক বেঁটে মাঝবয়সি লোক দুই সীটে দুই পা দিয়ে ওভারহেডবীনে কোস্তাকুস্তি করে প্লাস্টিকের প্যাকেট ভত্তি বালিস-সোয়েটার ঠেসেঠুসে ঢোকাচ্ছে, আর আমার মত কিছু লোক মোট-বহর নিয়ে (ওদের সীট মাঝবয়সীর পেচুনে) দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনে মনে মাঝবয়সির বাপান্ত করছে। তো এইসব করে, মাথার ওপরে মাল রেখে, খোট্টা জার্মান মেয়ে কেবিন-ক্রু দিয়ে গেল, সেই অরেঞ্জুস খেয়েটেয়ে যখন উড়োজাহাজ ঢু ঁমেরে আকাশে উঠল, তখন পৌনে চারটে। মানে ১০ ঘন্টার উড়ানে ১৫ মিনিট লেট। বলতে গেলে কিছুই না।

    এইসব উড়ানে একটা বিরক্তিকর 'খাবারদেওয়া' রোগ আছে। তাও আবার সময়-টময়ের ঠিক নেই। উপরে উঠেই ভোরবেলা ডিনার দিলো, ডিনার টা কোন নিয়মে কে যানে । আমি সাধারণতঃ এইসব যাত্রায় কম্বলমুড়ি দিয়ে কাটীয়ে দি। প্রতিবার খাবার-দেওয়ার বদমাইসি কত্তে আসলে, কম্বলের ভেতর থেকে হাত বাড়িয়ে 'ন ন ন' বলে দি। তো এবারে, মেয়ে পাশ থে ক্রমাগত 'বাবা - বাবা' খোচানিতে কম্বলমুড়ি দেওয়া হয় নি, তাই খাবার-দাবার যা দিলো, নিতে হল। তো, কাঁচা পাউরুটি, ঠান্ডা সসেজ রোল, এক চিমটে বিরিয়ানি ইত্যাদি খেয়ে বেজায় অম্বল, তাও কোনো রকমে অদ্দেক ঘুমিয়ে অদ্দেক সীটের মনিটারে অখাদ্য অক্ষয়কুমারের অখাদ্য নাচন-কোদন দেখে সাড়ে-নয় ঘন্টা কেটে গেল। এবারে ফ্রাঙ্কফুর্টে অবতরনের পালা। স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল দশটায়। ঐ যেরকম হয়, আগে থেকে পাঁয়তারা কসা সুরু হয়ে গেল। সীটে হেলান দিয়ে বসবেননা, কোমড়ে দড়ি পরে নিন, ইত্যাদি প্রভ্‌তি।
    আসে পাসে সক্কলেই দেখি, বাথরুমে চলেছে। কে জানে কেন, নামার তোড়জোড় সুরু হতেই লোকে বাথরুমে ছোটে। যেন এর আগে যাওয়া বারণ ছিলো। মনে হয় শেষ ইচ্ছাটা বাথরুমেই সেরে আসে। মানে যত সব দুর্ঘটনা-তো নামার সময়-ই ঘটে কিনা। যাগ্গে, আমিও মুখ-টুক ধুয়ে নিলাম। হাওয়া-ই চটি পরেছেলাম, খুলে মোজা-জুতো পরে নিলাম। গিন্নি ঘুমন্ত মেয়েকে চুলের মুঠি ধরে তুলে, সেই চুল বেঁধে-টেধে দিলো।

    তো সবাই তৈরী হয়ে ঘাড় সোজা করে বসে ইষ্টনাম জপ কচ্চে নামার অপেক্ষায়, সীনেমা দেখার হেডফোন গুলো পজ্জন্ত নিয়ে নিয়েছে, অপেক্ষা কচ্চে তো কচ্চে-ই, ১৫ মিনিট-৩০ মিনিট- হয়ে গেল নামার কোন লক্ষণ নেই। আমি টুক করে, মনিটারের চ্যানেল চেঞ্জকরে, সেই যেটা আগু-পিছু সময়, প্লেনের গতি, ম্যাপ এইসব দেখায় সেটায় গেলাম। দেখি, এখন আর
    ফ্রাঙ্কফ্রুর্টের মাথায় নেই, ডান দিকে সরে আল্প্‌সের মাথায় একটা ডিমের মত রুটে চক্কর দিচ্ছে। নিঘ্‌ঘাত কিছু গন্ডোগোল। এইসব কেসে, আমার তক্ষুনি মনে হয় 'কি করে লাইপ জ্যাকেট গায়ে দেব ?' আমাদের আবার স্থানীয় সময় দেড়টায় ফ্রাঙ্কফ্রুট থেকে ক্যালগেরির উড়ান। সেটার-ই বা কি হবে ?

    তকন কি আর জানি ? ....
  • Rit | 213.110.243.21 | ২০ জুন ২০১২ ২২:৪০559368
  • এটা কি সেই আইসল্যান্ডের অগ্ন্যুৎপাতের সময়ের গল্প। আমি ঐ দিনই ফ্রাংকফুর্ট হয়ে দোহা গেছ্লাম। দোহাতে সে কি টেনশন। ফিরতে পারব তো ? যাই হোক ৭ দিন পর ফিরতে পেরেছিলাম ভোগান্তি ছাড়াই।
  • Binary | 208.169.6.50 | ২০ জুন ২০১২ ২৩:১৬559369
  • আরে না এটা তার আগের। এ সুধু-ই ফ্রাঙ্কফুর্টের গপ্প।
  • Nina | 22.149.39.84 | ২০ জুন ২০১২ ২৩:৪৪559370
  • উফ! জমে ক্ষীর ঃ-)
    এই মালপত্তর এখন কমে কি শান্তি----মানে নেয়া কম করতে হয়। আর সবসময় আমাদের মানে মেয়েদেরই দুর্নাম জোটে মালাত্তকর হওয়ার--
    কিন্তু আমাদের বাড়ীতে ঠিক উল্টো--সাহেব দুদিনের জন্যে কোথাও গেলেও এক বস্তা জামাকাপড় সঙ্গে নেন ঃ( আর ঐ পেলেনে অসভ্য খাওয়ার যন্ত্রণাও নিজে তো নেনই আমাকেও খুঁচিয়ে তুলে দেন--উফ!
  • lcm | 202.12.85.64 | ২১ জুন ২০১২ ০৪:৫১559371
  • তারপর? তারপর?
  • hu | 22.34.246.72 | ২২ জুন ২০১২ ০১:৩০559372
  • হ্যাঁ, তারপর কি হল?
  • pi | 147.187.241.6 | ২২ জুন ২০১২ ০১:৩৫559356
  • এখনো চক্কর দিচ্ছে ? ঃ(
  • বাইনারি | 208.169.6.50 | ২২ জুন ২০১২ ০৩:৫১559357
  • আরে রোসো বাপু, হাত খালি হোক তাপ্পর লিখি।

    তো, ঘন্টা দেড়েক আকাশের মাথায় বিলি কাটার পর, আবার বল্ল ,'ঘাড় টান করে কোমড়ে দড়ি বেঁধে বসুন'। প্রথমে ভাবলুম, নিচ্চই এমার্জেন্সি ল্যান্ডি ংহবে। আমার যেমন স্বভাব, সবসময় পেছনে টেনশন। তাপ্পর গ্যাঙর-গ্যাঙর করে আরেট্টা কি অ্যানাউন্স হল, সেটা আবার জার্মান ভাষায় (সবচেয়ে দরকারি খবরটা কেন শুধু জার্মান ভাষায় সেটাও বুঝলাম না)। তারপর যখন, এমার্জেন্সি ল্যান্ডি-ংএর ভয়ে হ্‌দপিন্ড গলার কাছে, তকন বুঝলাম (পাশ থেকে কে যেন বল্ল), হ্যানোভারে ল্যান্ড কচ্চে।

    তো হ্যানোভারে কেন, সেটা অবশ্য কেউ বল্ল না। আর আমাদের ক্যাল্গেরি বা বাকিদের অন্যান্য অনওয়ার্ড উড়ানের কি হবে তাও কেউ বল্ল না। তার্পর হ্যানোভারে মুল রানওয়ে থেকে সরে এসে ফাঁকা মাঠে, ট্যাক্সিওয়েতে ঘ্যাচা ংকরে ব্রেক দিয়ে দাঁড়ালো, সবাই কোমড়ের দড়ি-টরি খুলে ভ্যাবাচ্যাকা মুখে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে, তখন সেই খোট্টা-জার্মান ময়ে কেবিন ক্রু এসে বল্ল, ফ্রাঙ্কফুর্টে নাকি রানওয়েতে বরপ, তাই হ্যানোভার। এবারে কি করবে ? আবার খেতে দেবে নাকি ? এইসব আলোচনা হচ্ছে, এদিক ওদিক কিছু কুচো বাচ্চা চ্যাঁভ্যা ঁসুরু করেছে, এর মধ্যে দেখি পেছনের দজ্জা খুলে দিলো, জানুয়ারীর কনকনে ঠাণ্ডায়, এক চুটকিতে কানের ডগা পজ্জন্ত ঠান্ডায় লাল হয়ে গেল। সেই খোট্টা-কেবিন-ক্রু উপর তম্বি করাতে সে বলে কিনা, রিফুয়েল হচ্চে, এই সময় দজ্জা খুলে রাখার কড়া আইন, ওর কিছু করার নেই। গিন্নি রাগেচ্চোটে কম্বল আর মেয়েকে বগলদাবা করে আগে গিয়ে কোনো একটা বেওয়ারিস সীটে ধপাস করে বসল (পারলে সীটটাই খুলে নেওয়ার মতলব ছিলো মনে হয়)।

    যাহোক, রিফুয়েল হল, তাপ্পর আরো পাক্কা পঁয়তাল্লিশ মিনিট স-ংএর মত দাঁড়িয়ে থেকে, শেষে আবার আকাশে। আর কোনো রকম চালিয়াতি না করে, বেলাদুটোর সময় ফ্রাঙ্কফুর্টে নামল। যাক বাঁচা গেল। আমাদের দেড়টার ক্যাল্গেরির উড়ানের কি দশা সে অবশ্য জানা নেই। আমার ধারণা ছিলো, এই উড়ান লেট করেছে, তো পরেরটাও আমাদের জন্য সোনামুখ করে দাঁড়িয়ে থাকবে। এই আশাতেই নিচ্চিন্ত মনে গটগটিয়ে টার্মিনালে ঢুকলাম। কাঁধে সেই শোলডার ব্যাগ আর হাতে মনখানেক ওজনের ক্যারি-ওন সুটকেস।

    তো ফ্রাঙ্কফুর্ট এয়ার্পোটের তখন মেরমত চলছিলো। তো, মেরামতের গলতা গুলো, সিকিউরিটি গেট দিয়ে ভত্তি করে রেখেছে। যেদিকে-ই দুই পা যাই, সিকিউরিটি গেট। তার সামনে বেজার মুখের লম্বা-কালো-সাদা-বেঁটে-মোটা লোক লাইন দিয়ে। গিন্নির আবার সিকিউরিটি গেটের ভুত আছে। যতবার মেটাল ডিটেকটারের তলায় যান, ততবার ট্যা-ঁট্যা, ঁআর প্রতিবার বডি চেক। এ আমি বিগত ১৫ বছরে অবিচ্ছিন্ন দেখে আসছি। তাই তেনার সিকিউরিটি গেট দেখলেই আমাকে ধমক আর মেয়েকে গাঁট্টা মরতে ইচ্ছা করে। মানে জগতের যত সিকিউরিটি গেট যেন আমাদের ক্‌নস্পিরেসি থিওরি। তো আমি, আমার মিনিয়াপুলিস এয়াপোর্টে, জামা-জুতো-বেল্ট-কোট (ভাগ্যে প্যান্টটা খুলে নেয়নি) খুলে স্পেসালি সিলেক্টেড বডি চেকে-এর গপ্প বলে তেনাকে ঠান্ডা করি।

    তো, যাক এরম দু/তিন্টে সিকিউরিটি গেট পেরিয়ে শেষে একটা বড় ইন্‌ফোডেস্কের সামনে এসে, লুফ্‌থান্সার রিবুক কাউন্টার কোথা জিগাইলাম। তো গোঁপওয়ালা তাগড়া জার্মান এজেন্ট বাঁদিকের একটা হলঘর দেখিয়ে দিলো। তো সেখানে ঢুকে .......... উরে ফাদার !!!!! ......

    না থাক, আবার পরে . ........
  • Nina | 78.34.167.250 | ২২ জুন ২০১২ ০৭:০৪559358
  • উফ! কোন মানে হয় এখানে থেমে গেল----
  • kiki | 69.93.240.175 | ২২ জুন ২০১২ ২২:২৮559359
  • হ্যাঁ, হ্যাঁ তাপ্পর?

    আরে দশের জুনে সিঙাপুরে আমায় অমন চটি বেল্ট সব খুলে নিলো। এদিকে তখন আমি আবার রোগা হতে শুরু করেছি। পেন্টু বেল্টের দয়াতেই কোমরে আটকে ছিলো। ক্ষি চাপ! হাত দিয়ে টেনে ওপাশে গিয়ে দাঁড়ালুম। তো হতাচ্ছাড়ারা হাত তুলে দাঁড়াতে কয়। ক্ষি টেনসনের মুহুর্ত।ঃ(
  • বাইনারি | 208.169.6.50 | ২৩ জুন ২০১২ ০১:৪৭559360
  • উরে ফাদার ........

    হলঘরের সুদুর প্রান্তে ছ-সাতটা কাউন্টার। সেগুলো-র মধ্যে পাঁচ/ছটা লুফান্সার আর একটা এয়ার কানাডার (লুফথান্সার পাসেই এয়ার কানাডা কেন, তা জিগাবেন না)। কাউন্টার গুলো এতই দুরে যে কাউন্টারের এজেন্ট গুলো ছেলে না মেয়ে বোঝা যাচ্ছে না। তবে গপ্পটা কাউন্টার নিয়ে নয়। কাউন্টারের সামনে থেকে প্রায় এই ঢোকার দজ্জা পজ্জন্ত কিল্বিল কচ্চে মানুষ। অন্তত দুহাজার লোকতো হবেই (দু - এক হাজার এদিক-ওদিক-ও হতে পারে)। লাইনের কোনো ঠিক নেই। কিল্বিলে লোক গোঁতাগুঁতি করছে আগে যাবার জন্য। কাউন্টারের আগে মনে হয় দড়ি দিয়ে বেড়া দেওয়া, তার সামনে মুশকো মুশকো ছয়-সাতটা সিকিউরিটির লোক ভীড় সামলাচ্ছে (মানে, মাঝে মাঝে জনতা কে ঘুঁষি দেখাচ্ছে) আর একদুজন-কে সামনে থেকে, ঘেঁটি ধরে কাউন্টারে পাঠাচ্ছে। এখেনে বলে নেওয়া ভালো, যে টার্নিনালে ঢুকেই আমি বোর্ডে আমাদের ক্যাল্গেরির উড়ানে খোঁজ করেছিলাম (আমি যেটা ভেবেছিলাম আমাদের জন্য লাল কার্পেট নিয়ে অপেক্ষা করে আছে)। তো সেটা দেখালো 'ডিপার্টেড ওন টাইম'।

    তো, রিবুকি ংকাউন্টারের এই ভয়ংকর অবস্থা দেখে একে তাকে টোকা মেরে জানলাম, সকালে নাকি বরপের জন্য আশিটা (এই নম্বরটা নিয়ে আমার সন্দ ছিলো) উড়ান আমাদের মত এদিক-সেদিক ডিঙ্গি মেরে লেট করে ল্যান্ড করেচে। আর ঐ সব উড়ানে আমাদের মতো হাভাতে যারা যারা ছিলো তাদের সব, ওনওয়ার্ড উড়ান 'ডিপার্টেড ওন টাইম'। তারপর সেই আশিটা উড়ানের দুহাজার লোক এই রিবুকি ংডেস্কে। বরপের জন্য নাবতে দেরী কল্ল আর যাওয়ার গুলো সব 'ওন টাইম' চলে গেল, এটা ঠিক হজম হচ্ছিলো না। একটা দাড়িওয়ালা কেরালীয় (ও নিজেই বল্ল, কোজিকোট থেকে ব্যাঙ্গালুর এসে ফ্রাঙ্কফুর্টের প্লেনে এসেছে), আমায়, 'রানওয়ে স্লিপারি না, টেক ফ ইজি, ল্যান্ডি ংরিস্কি না' বলে জলবত-তরল ংকরে বুঝিয়ে দিলো।

    তো মনের দুঃখে সেই কিল্বিলে জনতার পেছনে দাঁড়ালাম আমি আর মুকুল (মানে এছাড়া আর কোনো করার নেই বলে)। গিন্নি, মেয়ে আর মুকুলের বৌ সোমা-কে, দুতিন্টে চেয়ার ঘেরা (একটু নিরিবিলি) জায়গায় গ্যারেজ করে এলাম। এই প্রথম কাঁধের শোল্ডার ব্যাগ নামিয়ে রেখে একটা বেস ফুরফুরে ভাব, আবার তারস্‌ঙ্গে রিবুকি-ংএর ভবিষ্য ভেবে ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি। তো সেই কিল্বিলে জনতার মাঝে গিয়ে দেখি আমাদের দেশীয় জনতা-ই বেশী (লুফথান্সার ব্যাং-কোল-দিল্লি-হায়া-মুম সবকটা উড়ান, প্রায় একসঙ্গেই সকালে ফ্রাঙ্কফুর্টে নামে। আজ সবকটাই খাবি খেয়েছে)। আরো কিছু কিছু রাশিয়ান, ইউক্রেনিয়ান আছে (এটা-ও আমাদের অনুমান, মানে প্‌চ্চিমে কোন সাদা লোক আতান্তরে পল্লেই ধরেই নি এ ব্যাটা সিওর রাশিয়ান, তাই এই অবস্থা)।

    তো সেই লাইনে দেখি প্রায় দক্ষযজ্ঞ হচ্চে। 'কার আগে প্রাণ' - অবস্থা। কিছু কিছু লোক বাক্স-প্যাঁটরা সমেত লাইনে দাঁড়িয়েছে। তো কেউ কেউ সেই বাক্সে হুমড়ি খেয়ে বাক্সের মালিকের আদ্যশ্রাদ্ধ কচ্চে। তাপ্পর বাক্সের মালিক এসে, কি ভাষায়, কি বল্ল না দুঝেই, উল্টে নিজের ভাষায় পিত্‌দেব-মাত্‌দেব আওড়াচ্ছে (আমিই কি আর বুঝলাম, মানে চোখমুখ দেখে মনে হল)। প্রবল ঠেলাঠেলি-গুঁতোগুঁতি। মাঝে, একটা সেই সিকিউরিটির মোটালোক এসে হুমকি দিয়ে গেল, যে, শিশুসহ পরিবারদের অগ্রাধিকার। মুকুল, আমার মেয়ে-কে শিশু হিসাবে চালানোর জন্য হই চই সুরু করেছিলো, ওকে 'পাঁচ বছরের উপরে হলে, শিশু নয়' বলে নিরস্ত কল্লাম, নইলে ভর দুপুরে প্রেস্টিজ নিয়ে টানামানি হত।

    এরমধ্যে দেখি মাইক বাজিয়ে প্রথমে জার্মানিতে আর তাচ্চেও অবোধ্য ইংরাজিতে ঘোষনা হল, যারা যারা লা আর রাতের খাবারের কুপন চায় তারা যেন পাশে হলঘরের ৪/৫ নম্বর কাউন্টারে যায়। নিমেষে এক হরেন্ডাস দ্‌শ্য। সিকি লোক বাঁই-বাঁই করে পাশে দৌড়ালো, সিকি লোক সেই ধাক্কায় মাটিতে গড়াগড়ি। যারা লাইনের সামনে ছিলো তারা ভ্যাব্লা মত (সরে গেলেই যায়গা চলে যাবে)। কিছু লোক তারস্বরে গ্যারেজ করা (বসে আছে) স্‌ঙ্গি-র নাম ধরে চিল্লানো আরম্ভ কল্লো।

    এই সুযোগে আমি আর মুকুল কিলবিলে লাইনের পেছন থেকে এট্টু সামনে এগিয়ে এলাম .....
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৩ জুন ২০১২ ০১:৪৯559361
  • * লাঞ্চ
  • achintyarup | 24.99.223.71 | ২৩ জুন ২০১২ ১৯:০৮559362
  • এতক্ষণে নিশ্চয়ই লাঞ্চ হয়ে গেছে
  • মিলা | 212.156.10.246 | ৩০ জুন ২০১২ ০৯:০১559363
  • এক সপ্তাহ ধরে লাঞ্চ করেই যাচ্ছে :(
  • মিলা | 134.155.204.47 | ০২ অক্টোবর ২০১২ ০৭:৫৬559364
  • লান্চ এখনো শেষ হলনা :(
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন