![]() বইমেলা হোক বা নাহোক চটপট নামিয়ে নিন রঙচঙে হাতে গরম গুরুর গাইড । |
এই সুতোর পাতাগুলি
[1] এই পাতায় আছে1--4
বিষয় : ভূতের গল্প
বিভাগ : অন্যান্য
শুরু করেছেন : Indralekha Bhattacharya
IP Address : 2345.110.564512.110 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:04 AM
Name: Indralekha Bhattacharya
IP Address : 2345.110.564512.110 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:05 AM
আসানসোলের সেই বাড়িটা।।
ঘটনাটা বহুযুগ আগের।আমার মায়ের ছোটবেলায় ঘটেছিল। মায়ের, ও দিদার মুখ থেকে যেমনটি শুনেছি তেমনটাই বলছি।
আমার মায়ের বাবা, মানে দাদুর মৃত্যু হয় ভারি অকালেই। পিছনে পড়ে রইলেন দিদা, আর তাঁদের ছেলেমেয়েরা, মানে আমার মা ও অন্যান্য মামা-মাসিরা। কেউ সদ্য কৈশোর পেরিয়েছেন, কেউ বা একেবারেই ছোটো। মোটের উপর অধিকাংশই তখনো পেরোননি নাবালকত্বের চৌকাঠ।
কিন্তু হলে কি হবে, মাথার উপর থেকে বাবার ছায়া হারিয়ে ইতোমধ্যই শুরু হয়ে গেছে তাঁদের জীবন-সংগ্রাম। মাসিরা তখন কেউ চাকরি খুঁজতে, ও কেউ চাকরি করতে শুরু করে দিয়েছেন। মা, ও বড়মামা তখনো স্কুলে। ছোটোমামা খুবই ছোটো।
রেলওয়ে-অফিসার দাদুর প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা যথাযথ পেলেও, দিদাকে ছাড়তে হলো সরকারি আবাসন। আসানসোল শহরে তখন বাসার তেমন অভাব না থাকলেও সদ্যবিধবা অনভিজ্ঞ দিদা ও অল্পবয়সী মামা মাসিরা সাধ্যের মধ্যে বাসোপযোগী, মনোমত বাসা খুঁজতে যথেষ্ট অসুবিধা ভোগ করছিলেন। পরপর কয়েকবার বাসা পাল্টানোর পর দিদা তাঁর ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুঁজেপেতে অল্প ভাড়ায় একটি সেকেলে বাড়িতে এসে উঠলেন ( বলতে ভুলে গিয়েছি যে, তখন ওঁরা সব ছিলেন আসানসোলের বাসিন্দা)। এতোবড় বাড়িটি সস্তায় ভাড়া পেয়ে খুশি সবাই।
কিন্তু নতুন বাড়িতে আসার কিছুদিনের মধ্যেই কেমন যেন এক অজানা ভয়ের গন্ধ এসে লাগলো সবার নাকে। যেন হঠাৎ বয়ে আসা কোনো অশুভ হাওয়া থেকে থেকেই গায়ে লাগিয়ে যেতে লাগলো কেমন অদ্ভুত শিরশিরানি। টের পেয়েছে প্রত্যেকেই, বিভিন্ন দিন ও মূহুর্তে।
পড়াশুনা-খেলাধূলো-কাজকর্মে ভরা দিনগুলো মাঝে মাঝেই থমকে দাঁড়াতে শুরু করলো ভয়ের চাবুকে। নিত্যিরাতে নিয়মিতসময়ে বাড়ির ছাদে এমন ভারি শব্দ হয় যেন জোড়াপায়ের লাফ। সবাই সবার মুখ চায়, আর মনের ভয় লুকিয়ে কপট আত্মবিশ্বাসে নানা সম্ভাব্য কারণের ব্যাখ্যান করে। কিন্তু জিজ্ঞাসাটা থেকেই যায়, শব্দের উৎস জানা যায়না।
চাঁদনি রাতে বারান্দায় দাঁড়ালো রোম্যান্টিক ছোটোনমাসি। আহা, কি অপরূপ জোছনা! কিন্তু ওকি?! ছাদের ভাঙ্গা পাঁচিলের ধার ঘেঁষে লম্বা খোলাচুলে কে যেন এদিকে উঁকি মারছেনা?! ওমাগো!! চিৎকার করে ওঠার আগেই সে গায়েব! যেন চোখের পলকে! সত্যি না চোখের ভুল? মাসি ততক্ষণে সেখান থেকে পড়িমরি ছুট। টলটলে জোছনায় সেদিন যেন লেগেছিলো ভয়ের রঙ।
একবার চিকেনপক্স হল আরেক ডানপিটে বোন মিতুনমাসির। অন্ধকারে একলাঘরে ঘুমোচ্ছিল।ভাইবোনেরা দরজার ঠিক বাইরেই লাগানো বারান্দায় বসে পড়াশুনায় ব্যস্ত। হঠাৎ সবার কানে এলো মিতুনমাসির ভয়ার্ত চীৎকার, “ওরে, তোরা এখানে আয়! শিগগির!" দৌড়ে গেলো সবাই। ভয়ে কাঁপছে তখন সাহসী মিতুনমাসি। ভয়ের কারণ হিসাবে মাসি যা বলেছিল, তা হল, আধো জ্বর ও আধো তন্দ্রার ঘোরের মধ্যেও ওই অন্ধকার ঘরে সে ঠিক অনুভব করে কে যেন তৃতীয় ব্যক্তি রয়েছে তার শিয়রের কাছেই। তার মুখের উপর ঝুঁকে দেখছে। মাসি অন্ধকারে তাকে চোখে দেখতে পাচ্ছিলোনা ঠিকই, কিন্তু মুখের উপর টের পাচ্ছিলো তার ঠাণ্ডা নিঃশ্বাস।
আবার একদিন ধরো, সবাই পড়ছে; হঠাৎ সবাইকে চমকে দিয়ে বন্ধ দরজার ওপারে যেন কেউ দড়াম করে ধাক্কা দিয়ে পড়লো। চট করে লাফিয়ে উঠে দরজা খুললো বড়মামা। ওমা, কোথায় কী!কেউ নেই। সব নিঝুম। পাড়ায় শুক্লামাসিমার বাড়িতে প্রথম বেড়াতে যাওয়া হলো। কথার ফাঁকে একবার বললেন, ‘‘ওবাড়িটা নিলে?’’ ‘কেন মাসিমা, কেন মাসিমা?’ আর উত্তর নেই। “না, থাক। কিছু নয়।”
বলা বাহুল্য ওবাড়িতে থাকতে পারেননি ওঁরা। পরে জানা গেছিলো আসানসোলের একটা কুখ্যাত ভূতুড়েবাড়ি ওটা। প্রায় দশবচ্ছর খালি পড়েছিলো, হাজার চেষ্টাতেও বেচা যায়নি। আবার বাড়তি সংযোজন হল বাড়ির ইতিহাসের সাথে জড়িত একটি করুণ স্টোভ অ্যাকসিডেন্ট-এর গল্প। শিকার এক গর্ভবতী মহিলা। আবার তার উপর সংযোজন হল, বাড়ির খুব কাছে অবস্থিত শেরশাহের আমলের একটি ঐতিহাসিক ইঁদারা। যাকে বলে সোনায় সোহাগা।
এসব বহুযুগের কথা। এখন সে বাড়ির কী হাল, জানিনা। মায়ের মুখে যেমন শুনেছি, বললাম। বিশ্বাস না করলে কিছু করার নেই।
Name: Atoz
IP Address : 125612.141.5689.8 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:13 AM
প্রোমোটাররা নিয়ে হয়তো ভেঙে বহুতল করেছে। ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে যে কী অবস্থা! আস্তিকে নাস্তিকে ভূতে ভগবানে ছয়লাপ কান্ড। ঃ-)
Name: aranya
IP Address : 3478.160.342312.238 (*) Date:01 Feb 2019 -- 07:07 AM
তেনারা আছেন, এ আমি বরাবরই জানি :-)
বেশ লাগল। আরও হোক অলৌকিক জগতের কথা।
Name: সিকি
IP Address : 562312.19.4534.88 (*) Date:01 Feb 2019 -- 10:06 AM
সেই নায়হাতির শ্বেতা যে কোথায় গেল ...
এই সুতোর পাতাগুলি [1] এই পাতায় আছে1--4
বিষয় : ভূতের গল্প
বিভাগ : অন্যান্য
শুরু করেছেন : Indralekha Bhattacharya
IP Address : 2345.110.564512.110 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:04 AM
Name: Indralekha Bhattacharya
IP Address : 2345.110.564512.110 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:05 AM
আসানসোলের সেই বাড়িটা।।
ঘটনাটা বহুযুগ আগের।আমার মায়ের ছোটবেলায় ঘটেছিল। মায়ের, ও দিদার মুখ থেকে যেমনটি শুনেছি তেমনটাই বলছি।
আমার মায়ের বাবা, মানে দাদুর মৃত্যু হয় ভারি অকালেই। পিছনে পড়ে রইলেন দিদা, আর তাঁদের ছেলেমেয়েরা, মানে আমার মা ও অন্যান্য মামা-মাসিরা। কেউ সদ্য কৈশোর পেরিয়েছেন, কেউ বা একেবারেই ছোটো। মোটের উপর অধিকাংশই তখনো পেরোননি নাবালকত্বের চৌকাঠ।
কিন্তু হলে কি হবে, মাথার উপর থেকে বাবার ছায়া হারিয়ে ইতোমধ্যই শুরু হয়ে গেছে তাঁদের জীবন-সংগ্রাম। মাসিরা তখন কেউ চাকরি খুঁজতে, ও কেউ চাকরি করতে শুরু করে দিয়েছেন। মা, ও বড়মামা তখনো স্কুলে। ছোটোমামা খুবই ছোটো।
রেলওয়ে-অফিসার দাদুর প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা যথাযথ পেলেও, দিদাকে ছাড়তে হলো সরকারি আবাসন। আসানসোল শহরে তখন বাসার তেমন অভাব না থাকলেও সদ্যবিধবা অনভিজ্ঞ দিদা ও অল্পবয়সী মামা মাসিরা সাধ্যের মধ্যে বাসোপযোগী, মনোমত বাসা খুঁজতে যথেষ্ট অসুবিধা ভোগ করছিলেন। পরপর কয়েকবার বাসা পাল্টানোর পর দিদা তাঁর ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুঁজেপেতে অল্প ভাড়ায় একটি সেকেলে বাড়িতে এসে উঠলেন ( বলতে ভুলে গিয়েছি যে, তখন ওঁরা সব ছিলেন আসানসোলের বাসিন্দা)। এতোবড় বাড়িটি সস্তায় ভাড়া পেয়ে খুশি সবাই।
কিন্তু নতুন বাড়িতে আসার কিছুদিনের মধ্যেই কেমন যেন এক অজানা ভয়ের গন্ধ এসে লাগলো সবার নাকে। যেন হঠাৎ বয়ে আসা কোনো অশুভ হাওয়া থেকে থেকেই গায়ে লাগিয়ে যেতে লাগলো কেমন অদ্ভুত শিরশিরানি। টের পেয়েছে প্রত্যেকেই, বিভিন্ন দিন ও মূহুর্তে।
পড়াশুনা-খেলাধূলো-কাজকর্মে ভরা দিনগুলো মাঝে মাঝেই থমকে দাঁড়াতে শুরু করলো ভয়ের চাবুকে। নিত্যিরাতে নিয়মিতসময়ে বাড়ির ছাদে এমন ভারি শব্দ হয় যেন জোড়াপায়ের লাফ। সবাই সবার মুখ চায়, আর মনের ভয় লুকিয়ে কপট আত্মবিশ্বাসে নানা সম্ভাব্য কারণের ব্যাখ্যান করে। কিন্তু জিজ্ঞাসাটা থেকেই যায়, শব্দের উৎস জানা যায়না।
চাঁদনি রাতে বারান্দায় দাঁড়ালো রোম্যান্টিক ছোটোনমাসি। আহা, কি অপরূপ জোছনা! কিন্তু ওকি?! ছাদের ভাঙ্গা পাঁচিলের ধার ঘেঁষে লম্বা খোলাচুলে কে যেন এদিকে উঁকি মারছেনা?! ওমাগো!! চিৎকার করে ওঠার আগেই সে গায়েব! যেন চোখের পলকে! সত্যি না চোখের ভুল? মাসি ততক্ষণে সেখান থেকে পড়িমরি ছুট। টলটলে জোছনায় সেদিন যেন লেগেছিলো ভয়ের রঙ।
একবার চিকেনপক্স হল আরেক ডানপিটে বোন মিতুনমাসির। অন্ধকারে একলাঘরে ঘুমোচ্ছিল।ভাইবোনেরা দরজার ঠিক বাইরেই লাগানো বারান্দায় বসে পড়াশুনায় ব্যস্ত। হঠাৎ সবার কানে এলো মিতুনমাসির ভয়ার্ত চীৎকার, “ওরে, তোরা এখানে আয়! শিগগির!" দৌড়ে গেলো সবাই। ভয়ে কাঁপছে তখন সাহসী মিতুনমাসি। ভয়ের কারণ হিসাবে মাসি যা বলেছিল, তা হল, আধো জ্বর ও আধো তন্দ্রার ঘোরের মধ্যেও ওই অন্ধকার ঘরে সে ঠিক অনুভব করে কে যেন তৃতীয় ব্যক্তি রয়েছে তার শিয়রের কাছেই। তার মুখের উপর ঝুঁকে দেখছে। মাসি অন্ধকারে তাকে চোখে দেখতে পাচ্ছিলোনা ঠিকই, কিন্তু মুখের উপর টের পাচ্ছিলো তার ঠাণ্ডা নিঃশ্বাস।
আবার একদিন ধরো, সবাই পড়ছে; হঠাৎ সবাইকে চমকে দিয়ে বন্ধ দরজার ওপারে যেন কেউ দড়াম করে ধাক্কা দিয়ে পড়লো। চট করে লাফিয়ে উঠে দরজা খুললো বড়মামা। ওমা, কোথায় কী!কেউ নেই। সব নিঝুম। পাড়ায় শুক্লামাসিমার বাড়িতে প্রথম বেড়াতে যাওয়া হলো। কথার ফাঁকে একবার বললেন, ‘‘ওবাড়িটা নিলে?’’ ‘কেন মাসিমা, কেন মাসিমা?’ আর উত্তর নেই। “না, থাক। কিছু নয়।”
বলা বাহুল্য ওবাড়িতে থাকতে পারেননি ওঁরা। পরে জানা গেছিলো আসানসোলের একটা কুখ্যাত ভূতুড়েবাড়ি ওটা। প্রায় দশবচ্ছর খালি পড়েছিলো, হাজার চেষ্টাতেও বেচা যায়নি। আবার বাড়তি সংযোজন হল বাড়ির ইতিহাসের সাথে জড়িত একটি করুণ স্টোভ অ্যাকসিডেন্ট-এর গল্প। শিকার এক গর্ভবতী মহিলা। আবার তার উপর সংযোজন হল, বাড়ির খুব কাছে অবস্থিত শেরশাহের আমলের একটি ঐতিহাসিক ইঁদারা। যাকে বলে সোনায় সোহাগা।
এসব বহুযুগের কথা। এখন সে বাড়ির কী হাল, জানিনা। মায়ের মুখে যেমন শুনেছি, বললাম। বিশ্বাস না করলে কিছু করার নেই।
Name: Atoz
IP Address : 125612.141.5689.8 (*) Date:01 Feb 2019 -- 02:13 AM
প্রোমোটাররা নিয়ে হয়তো ভেঙে বহুতল করেছে। ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে যে কী অবস্থা! আস্তিকে নাস্তিকে ভূতে ভগবানে ছয়লাপ কান্ড। ঃ-)
Name: aranya
IP Address : 3478.160.342312.238 (*) Date:01 Feb 2019 -- 07:07 AM
তেনারা আছেন, এ আমি বরাবরই জানি :-)
বেশ লাগল। আরও হোক অলৌকিক জগতের কথা।
Name: সিকি
IP Address : 562312.19.4534.88 (*) Date:01 Feb 2019 -- 10:06 AM
সেই নায়হাতির শ্বেতা যে কোথায় গেল ...
এই সুতোর পাতাগুলি [1] এই পাতায় আছে1--4