এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কিছু (অ)সাধারণ মানুষ

    Tim
    অন্যান্য | ১৪ আগস্ট ২০০৭ | ৮৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ০৭:১৩392947
  • আমরা বইতে পড়ি দেশ-কাল পেরিয়ে জ্বলজ্বল করা নক্ষত্রদের কথা। দারুণ মেধাবী অথবা/এবং অধ্যবসায়ী ক্ষণজন্মা সব মানুষের কথা বলতে বেশির ভাগ সময়েই ইতিহাস ভুল করেনা। কিন্তু এঁদের বাইরেও পড়ে থাকেন আরো অনেকে। আমার আপনার জীবনের পথে ছড়িয়ে থাকেন তাঁরা। আমরা চলতে চলতে একপলক মুগ্‌ধ হয়ে দেখি, তারপর ভুলে যাই। যদিও সেই বিস্মরণ সাময়িক। কখনো কখনো প্রবলভাবেই ফিরে আসেন তাঁরা, যাঁদের জীবনী আমরা বিশেষণভারাক্রান্ত ভাষায় মুখস্থ করে লিখে আসিনি পরীক্ষায়। সেই তাঁদের মনে রেখে, তাঁদের মনে করেই খোলা হল স্মৃতির এই পাতা। অতীত খুঁড়ে তুলে এনে চিনিয়ে দিন এঁদের। সেইসব অমূল্য নুড়ি-পাথর, যাদের আংটিতে স্থান হয়নি।
  • tan | 131.95.121.132 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ০৭:১৯392958
  • টিম,
    পাতাটি খোলার জন্য অভিনন্দন। স্মৃতি হাতড়াতে হাতড়াতে এত আলো কোনোদিন পাবো বুঝতে পারিনি!
    লেখো এনাদের কথা।
  • Blank | 74.138.157.69 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ০৭:৩৩392965
  • টীমের লিস্টি তে আমি আমার নাম ঢুকিয়ে দিলুম সবার আগে
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ০৮:২৬392966
  • এখানে যাঁদের কথা বলব এবং শুনবো, তাঁরা অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন। যেহেতু প্রচারের আলো, সে যত ক্ষীণই হোকনা কেন, এঁদের কাছে বড় ভয়ের, তাই বেশিরভাগ নামধাম কাল্পনিক হবে। অন্তত আমার লেখাগুলোয়। ঘটনার সত্যতা বিশ্বাস করানোর দায় যেহেতু নেই (কারণ এতো আর বিস্ময়বালক-বালিকার গল্প নয়) তাই এতে কেউ আপত্তি করবেন বলে মনে হয়না।
    ---------------
    প্রথমেই আসবে সুশীল রায়চৌধুরীর কথা। নামটা যতটা জমকালো, ততটাই সাদাসিধে এই ভদ্রলোক। তারাতলার কাছে কোন একটা কারখানায় কাজ করতেন, আয় যা হত তাতে কোনমতে চলে যেত ওঁদের। তিনজনের ছোট্ট সংসার, স্ত্রী আর ছেলে নিয়ে। আদ্যন্ত সৎ আর সরল এই ভদ্রলোককে দেখে প্রথমদর্শনে আলাদা করে কিছুই মনে হয় না। হওয়ার কথাও নয়। হাফহাতা শার্ট আর ঝলঝলে প্যান্ট পড়ে সাইকেল চড়ে কারখানা যেতেন। তবে বারকতক দেখা হবার পর লক্ষ্য করতাম ওঁর হাসিটা। হাসি কত করুণ হতে পারে তার মাপকাঠি হতে পারেন সদাহাস্যময় সুশীলবাবু।
    তারপর ধীরে ধীরে কিছুটা আলাপ হওয়ার পর একদিন রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে গেলেন বাড়িতে। কিন্তু কিন্তু করেও গেলাম। ভাগ্যিস গেছিলাম! নইলে অসামান্য ঐ মানুষটির কাহিনী অজানাই থেকে যেত। মূল গল্পটা বলার আগে ওঁর বাড়িটার একটা বর্ণনা দি। অবশ্য বাড়ি বলতে ভাড়া বাড়ি। দোতলার চিলেকোঠায় একফালি ঘর আর তার সাথে একটা বারান্দা মিলে সুশীলবাবুর ""বাড়ি""। প্রায়ান্ধকার (বিকেল থেকে আলো জ্বালালে বিল মেটাবে কে?) সেই একটি ঘরেই খাওয়া-বসা-ঘুম। বারান্দায় রান্না। ভদ্রলোকের স্ত্রীর সাথে আলাপ হল। ক্রমশ কথাবার্তায় ধরা পড়লো দুজনেই বেশ শিক্ষিত। তখন জানলাম সুশীলবাবু ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রপ আউট। আর কিছুনা, স্রেফ টাকার অভাবে। আর ওনার স্ত্রী (ততক্ষণে তাঁদেরকে কাকু-কাকিমা বলতে শুরু করেছি) অঙ্কে স্নাতকোত্তর করছিলেন, তারপর বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ায় শেষ হয়নি।
    সে যাই হোক, কাকুর টেকনিকাল জ্ঞান দেখে একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলাম, উনি অন্য কোন ভাল চাকরি করার চেষ্টা করেন নি কেন। তখন জানা গেল, উনি আগে ভাল চাকরি-ই করতেন, কিন্তু কম্পানিতে কি একটা গোলমাল হওয়ায় ""আদর্শগত কারণে"" তার দায় নিয়ে ইস্তফা দেন। ততদিনে তাঁর বয়স প্রায় চল্লিশ ছুঁইছুঁই। তাই নতুন করে ভাল কিছু জোটেনি। অবশ্য ডিগ্রীর ব্যাপারটাও ছিল। এইসব শুনে বেশ শ্রদ্ধা হল, কিন্তু অবাক হইনি। আমরা তো দেখেই থাকি কত খারাপ ভাবে থেকেও কত মানুষ সৎ থাকেন, আবার কত প্রাচুর্য্যেও ... সে কথা থাক।
    এরপর আবার একদিন ওঁর বাড়ির পাশ দিয়ে আসছি, দেখলাম একতাড়া কিসব প্যাকেট নিয়ে ঢুকছেন। ওষুধের প্যাকেট বলেই মনে হল। ডেকে জিজ্ঞেস করায়, বললেন, স্ত্রী অসুস্থ। মুখে তখনো সেই ম্লান হাসি। দেখতে গেলাম। ঐ একটা ঘরেই মশারি টাঙ্গিয়ে রুগীর বিছানা হয়েছে। কাকিমা অচেতন অবস্থায় ওখানেই শুয়ে। স্যালাইন চলছে। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলাম। বাইরে ডেকে নিয়ে গেলেন। তখন শোনা গেল কাকিমার এক জটিল নার্ভের অসুখ আছে। প্রায়-ই অ্যাটাক হয়, তখন অজ্ঞান হয়ে যান। কারণ হিসেবে ডাক্তাররা যা বলেছেন, পালক ছাড়ালে তার মানে দাঁড়ায়, বেঁচে থাকার লড়াইতে হেরে যাওয়ার গ্লানি আর ভবিষ্যত অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওঁদের একমাত্র ছেলেটি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে।
    এইবার অনেকটা যেন বুঝতে পারছিলাম ওঁর ম্লান হাসির রহস্য। কাকিমার অসুখ কোনদিন সারবার নয় জেনেও প্রচন্ড আশা নিয়ে উনি ছুটোছুটি করছিলেন, ছেলেকে দেখছিলেন, আর আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন স্বাভাবিক থাকার। কোন অনুযোগ নেই, হাহুতাশ নেই, রাগ নেই। সব-ই যেন ঐ হাসির আড়ালে ঢেকে রাখা। ফেরার সময় অন্ধকার সিঁড়ি অবধি এগিয়ে দিয়ে বললেন, এই চাকরিটাও যাবে নির্ঘাত। তাহলে কিন্তু দেশে চলে যাবো। তাই আর দেখা নাও হতে পারে, বুঝলি।ওঁর অনুমানই সত্যি ছিল। ভাগ্যিস সেদিন ফেরার আগে প্রণাম করেছিলাম।
    সত্যজিৎ রায় তাঁর প্রিয় এক অভিনেতার মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন, "".... সৎ, ভালোমানুষ হওয়া কোন কৃতিত্বের ব্যাপার নয়। তা যদি হত তাহলে রাষ্ট্র সেইজন্যে খেতাব দিত। একটা লোকও দেখাতে পারেন, যিনি সততার জন্য খেতাব পেয়েছেন?...""। খুব সত্যি কথা।
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ০৯:৪৪392967
  • কিন্তু এইসব ছাড়িয়ে আমার কাছে সুশীলকাকু শুধুই একজন জীবনযুদ্ধে হার না মানা, সদানন্দ মানুষ হিসেবেই সবার থেকে আলাদা। ঐ শেষ যেদিন দেখা হয়েছিল, সেদিনও ওঁর নিজের দু:খ কষ্টের থেকে অন্য গল্পগাছাই বেশি করেছিলেন। ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, রাজস্থানে ঘুরতে গেলে কিভাবে প্ল্যান করতে হবে, বা আগ্রার ঐতিহাসিক মুডটা ঠিকঠাক ধরতে হলে অন্তত কতদিন চাই। এরপর আরো তো কত মানুষ দেখলাম। বেঁচে থাকার এবং দু:খকে জয় করার এরকম ক্ষমতা আর কারুর মধ্যে দেখিনি।
    মাঝখানে অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। দেশে চলে যাবার পর ওঁদের আর কোন খবর পাওয়া যায়নি।
    ------------------------------
  • r | 59.162.191.115 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ১০:১৯392968
  • আমার নামটাও আসবে, শুধু ঐ দুটো ব্র্যাকেট ছাড়া। ;-)
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৪ আগস্ট ২০০৭ ১০:৩৬392969
  • :-))
    ব্র্যাকেট দেয়ার প্রশ্নই নেই। সেই ""চেনা বামুনের"" কনসেপ্ট।:-))
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৫ আগস্ট ২০০৭ ১৩:০০392970
  • অনেক ছোটোবেলায় দেখা একজনের কথা আবছা মনে পড়ে। আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন এক দম্পতি। কত সহজেই তখন মানুষ নিজেদের আত্মীয়তায় জড়াতে পারতেন। সেই হিসেবে আমি ওঁদের জেঠু-জেঠি বলতাম। জেঠু বাঁশী বাজাতেন। খাতায় কলমে সেটাই তাঁর পেশা ছিলো। কিন্তু তেমন বিষয়ী ছিলেন না, শিল্পীরা যেমন হন আর কি। রেডিওতে বাজাতেন, মাঝেমধ্যে অনুষ্ঠান করতেন। তাই দিয়ে মোটামুটি চলে যেতো। বেশ পালোয়ান চেহারা ছিলো জেঠুর, আর জেঠি ছিলেন খুব রোগা। কিন্তু দারুণ প্রাণবন্ত ছিলেন।
    খুব ভোরে উঠেই জেঠুর ঘর থেকে বাঁশীর আওয়াজ শোনা যেত। গিয়ে হাঁ হয়ে শুনতাম। কিছুই বোঝার বয়স হয়নি তখনো, তবু শুনতে অদ্ভুৎ ভালো লাগতো। পরে বাবার কাছে শুনেছিলাম, পছন্দসই অনুষ্ঠান হলে নাকি জেঠু বিনা পয়সায় বাজাতেন। শুধুই মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য বাজাতে ভালবাসতেন। আর ঐ আনন্দই ওঁর পারিশ্রমিক হত। শিল্পীদের চরিত্র নিয়ে পরে অনেক কথা শুনেছি। সেসব কিছু ছিলনা জেঠুর। খুব সৎ ছিলেন, সময়ে সব কিছু করতে চাইতেন। আর, যেটা আমার কাছে খুব দামী গুণ বলে মনে হয়েছিলো বড়ো হয়ে তা হল, সবার সাথে সমান গুরুত্ব দিয়ে কথা বলতেন। সেই সময়ে তো দূরের কথা, এখনো এ জিনিস আমাদের দেশে খুব কম পাওয়া যায়। বেশির ভাগ মানুষ সুযোগ পেলেই অন্যের ওপর প্রভুত্ব করতে চায়। আর কি বিচিত্র এ জগৎ! তাঁদের কথাই ফলাও করে লেখা হয় পাতায় পাতায়, যদিও আমরা সেমিনারে মানুষের "ইকুয়ালিটি"" নিয়ে ধুয়ো তুলি।
    সে যাই হোক, এইভাবে মোটের ওপর ভালই কাটছিলো ওঁদের। তারপর একদিন জেঠু হঠাৎই অসুস্থ হলেন, কাজে যাওয়া বন্ধ হল। পরীক্ষা করে জানা গেলো, গলায় ক্যান্সার। এরপর মাস ছয়েক বেঁচেছিলেন। তখন তাঁর বয়স হবে বড়জোর পঞ্চাশ। জেঠি চলে গেলেন মফস্বলে দাদাদের কাছে।

    সেই প্রথমবার খুব কাছ থেকে মৃত্যু দেখেছিলাম । আরো একজন ভালোমানুষ জীবন থেকে মুছে গেলেন। বাঁশী থেমে গেল চিরকালের মত।

  • Tim | 204.111.134.55 | ১৫ আগস্ট ২০০৭ ১৩:৪০392971
  • মৃত্যুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে আরো একজন বিরল প্রজাতির মানুষের সাথে। খুব বেশিদিন আগেকার কথা নয়। ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। একটি ছেলের সাথে পরিচয় হল, নাম মহাবীর। ক্যানিং ছাড়িয়ে কোন এক প্রত্যন্ত গ্রামে ওর বাড়ি, জায়গাটার নাম শুনে চিনতে পারিনি। চেহারা আর হাবভাবে বোঝাই যেত খুব খারাপ অবস্থা ওদের। চিন্তা করত কিভাবে এই প্রচন্ড স্মার্টনেসের যুগে ও চাকরি পাবে। পড়াশোনায় বেশ ভালই ছিলো, প্রচন্ড খাটতো আর ফাঁকিবাজি সহ্য করতে পারতো না। আগে অন্য টইতে লিখেছিলাম পার্ট টুতে মাত্র কয়েকজন একবর্ণ না টুকে পরীক্ষা দিয়েছিলো। মহাবীর তাদের একজন।
    পরীক্ষা শেষ হল যেদিন সেদিন হাসিমুখে এসে বললো, "" জানিস, একটা চাকরি পেয়েছি। পি.এস.সি (SSC না কিন্তু, PSC থেকে এইভাবে খুব সামান্য কিছু শিক্ষক নেওয়া হত; এখন এই পরীক্ষা আছে কিনা জানিনা) থেকে সরকারি স্কুলের টিচার রিক্রুট হয়। সেই পরীক্ষাটা দিয়েছিলাম মনে আছে? সেই চাকরিটা পেয়ে গেছি ।""
    আমরা জানতাম ও পরীক্ষা দিয়েছিলো। এও জানতাম ইন্টার্ভিউ হয়ে যাওয়ার পরে লোক মারফৎ ঘুষের প্রস্তাব পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলো। এখানে বলা দরকার, এই টাকা পয়সার ব্যাপারটা যাতে ক্যান্ডিডেটের ওপর খুব চাপ না হয়, তাই একটা ইনস্টলমেন্টের বন্দোবস্তো-ও ছিলো, যার ফলে মাস মাইনের থেকে কেটে কেটে একসময় ঐ ""ঋণ"" শোধ করতেন চাকরি পাওয়া হতভাগ্যরা। সুতরাং, অবস্থা খারাপ বলে ঘুষ দিতে মহাবীর অস্বীকার করে নি, অন্যায়টা মানবে না বলেই করেছিলো। তাই, সবাই জানতো চাকরিটা হবে না। তবু হল যখন, সবাই খুশি হলাম।
    ফেরার সময় ট্রেনে এইসব কথা হচ্ছিলো। ভালোদিন আসছে, অতএব মহাবীর ওর পরিকল্পনার কথা শোনাচ্ছিলো। বাড়িতে বাবা-মা আছেন, আর দাদা। প্রচন্ড অনটন। এইবার দিন পাল্টাবে।
    ট্রেনের দরজার কাছে দরজার দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়েছিলো সে। উল্টোদিকে আমি, আমার পাশে অংশুমানদা, আমাদের সাথেই পরীক্ষা দিয়ে ফিরছে। মহাবীর গল্প করছিলো কোথায় পোস্টিং হতে পারে, অংশুমানদা অন্যমনস্ক হয়ে ভাবছিলো বোধহয় কিছু। এমন সময় একটা অস্ফুট আওয়াজ পেয়ে দেখলাম মহাবীর পড়ে যাচ্ছে। মাত্র কয়েকহাত দূরে এটা হল, কিন্তু আমি ছাড়া কেউ টের পেলনা। ট্রেন তখন ফুলস্পীডে চলছে।
    এইভাবে দুর্ঘটনায় মারা গেল মহাবীর। প্রচুর এনকোয়ারির নামে হয়রানি হল, ফোন, ফ্যাক্স চালাচালি হল। রেল কম্পানি ক্ষতিপূরণের মামলার ভয়ে মিথ্যে কেস সাজালো। আমরা জানলাম, মহাবীর ট্রেন থেকে ঝুলছিলো, হাত ফসকে পড়ে গেছে।
    কিন্তু কি-ই বা এসে যায়। মর্গে মহাবীরের মৃতদেহ এক সপ্তাহ পড়েছিলো, বাড়িতে খবর দেওয়া যায়নি বলে। এমন কতই তো হয়! এইসব নিয়ে ভাবলে দেশ চলবে? অনেক ফার্স্ট সেকেন্ড হওয়া বন্ধু পেয়েছি আমার ছাত্রজীবনে। কিন্তু আর একজনও ""মহাবীর"" খুঁজে পাইনি কখনো।
  • saa | 82.13.28.184 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ০১:২৯392948
  • এতো মনখারাপ করা কথা লিখলে এবারে টিমকে টীম থেকে বহিষ্কার করা হবে!হুঁ !!
  • Du | 67.111.229.98 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ০২:৫৮392949
  • আনন্দমেলায় পড়েই সেই নাটকি সোমের দুর্ঘটনা মন থেকে মোছেনা, আর তোমার সামনে এটা ঘটলো ? টেরিবল!
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ০৩:৫৯392950
  • saa
    ইতিহাস আসলে অনেকটা উঁচুনিচু জমির মত। আমরা শুধু মাথাগুলো দেখি, মানে আমাদের দেখানো হয়। আর এইসব নিচু, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাগুলো সযত্নে মুছে দেওয়া হয়, রক্তের দাগ আর কার-ই বা ভাল লাগে বলুন। কিন্তু এগুলো বাদ দিলে ছবিটা অসম্পূর্ন থেকে যায়। আমরা স্বাধীনতার ৬০-৭০-৮০ বছর পালন করি, কত আলো, বক্তৃতা, হাততালি, কিন্তু কেউ এঁদের কথা বলে না। তাই ইচ্ছে হল।
    তবে, লেখার সময় বুঝলাম, এনাদের পুরোপুরি বুঝে ওঠা আমার সাধ্যাতীত। তাই যাই লিখিনা কেন, তার বাইরে অনেক কিছু থেকে যাচ্ছে। অতএব, শুধু শুধু নিজের আর বাকিদের মন খারাপ নাই বা করলাম। যে তিনজনের কথা লিখলাম, তাঁদের এবং এরকম আরো অনেককে মনে পড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই সুতো রইলো। নাহয় একটা স্মৃতিসৌধ হিসেবেই থাকুক। আর মন খারাপ করাব না। সরি।
    দু,
    কোনদিন ভাবিনি এরকম একটা অভিজ্ঞতা হবে। এখনো সমস্তটাই দেখতে পাই সেদিনটা মনে করলে।
  • rini | 72.211.192.17 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ০৪:১৯392951
  • কোলকাতা থেকে বহুদিন দূরে থাকার ফলে, কখনো কেউ ওখান থেকে এসেছে শুনলে দেখা করতে ছুটতাম।একদিন মায়ের থেকে ফোনে খবর পেলাম, আমার এক দূর সম্পর্কের দাদা আসছে তার অফিস ট্যুরে।দু-একদিনের মধ্যে সে অফিসের গাড়িতে আমাদের সাথে দেখা করে গেল, অফিস তাকে কত তোয়াজ করে রেখেছে আর নানা প্লান্ট-এ ac গাড়ি করে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে তার গল্পো করল আর সব শেষে সে যে স্টেশানের পাশে 3 star হোটেলে আছে সেখানে যাওয়ার নেমতন্ন করে গেল।যদিও সে কি কাজ করে তার একটা ধারনা আমার ছিল, কিন্তু তখন সেটা কোন ভাবে গুরুত্ব পাই নি বিচার করার।একদিন আমরা দুজন গেলাম সেই তথাকথিত হোটেলে।দাদার সাথে ওর এক কলিগ ছিলেন সেই রুমে শেয়ারে।এ কথা সে কথার পর দাদা গেলেন চায়ের কথা বলতে, আর আমরা ঐ ভদ্রোলোকটির সাথে কথা বলছিলাম।ওনার নাম যাই হোক, ওনার সাথে কথা বলে সৎ ও সরল মানুষের সাথে মেশার যে সুখ তা অনুভব করেছিলাম সেদিন।উনি বলছিলেন, দাদা ওকে আমাদের বাড়ি যাবার কথা বলেছিলেন, কিন্তু উনি গাড়িওলা, দুজন চাকুরের বাড়ি যেতে চান নি।ওনার মনে হয়েছিল, উনি একজন সাধারন ফিটার মেকানিক, সেখানে গিয়ে মানাতে পারবেন না। ইংরাজী তে কথা বল্লে উত্তর করতে পারবেন না, তার চেয়ে ভালো উনি হটেলের ac তে একটু আরাম করে নেন।কলকাতা ফিরলে আবার তো সেই ওভার টাইম আর ভিড় পাবলিক বাসে,ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে টালির ঘরের বাড়িতে পৌছেঁ লোডশেডিং।ঊনি এত প্রানবন্ত করে কথাগুলো বলছিলেন যে আমরা ওনার সঙ্গ প্রচন্ড উপভোগ করছিলাম।
    আমরা সাধারন মানুষরা আজকাল নিজেকে কেউকেটা দেখাতে এতো ব্যস্ত, যে আমাদের মধ্যের সেই সরল মানুষটাকে আজ এই সমাজে শত খুঁজলেও পাওয়া যায় না, এতেই অভ্যস্ত আমরা(একে অপরের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসিতে, আর আমিই বা কম কিসে দেখাতে)।কিন্তু ভাগ্যক্রমে যখন দেখা মেলে, তখন পার্থক্যটা বিরাট করে চোখে পরে।এই artificial জগতে বাঁচতে বাঁচতে আমরা ভুলে গেছি সাধারন সৎ একটা মানুষ কত অসাধারন হতে পারে!
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ০৫:০৬392952
  • ধন্যযোগ রিনি। খুব সত্যি কথা।
  • kd | 59.93.240.194 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ১৫:৫৩392953
  • Tim, saaএর commentsdisheartened হয়োনা। যদিও তোমার লেখা পড়ে আমারও reactionও সাএর থেকে ভিন্ন নয়। তবে ওটা first reaction - তার পরেই কিন্তু মনে হয় এই গুটিকয়েক মানুষের জন্যেই পৃথিবীটা এখনও বাসযোগ্য। কবে যেন শুনেছিলুম, সত্যযুগের শুরুতে ১০০% ভালোলোক ছিলো, ত্রেতার শুরুতে ৭৫%, দ্বাপরের শুরুতে ৫০%, কলির শুরুতে ২৫% - এই লোকগুলির জন্যেই মনে হয় apocalypseএর সময় এখনও হয়নি।

    সুতরাং, please আরো লেখো এই অসাধারণ সাধারণ মানুষের কথা।

    আর একটা কথা, যদি সম্ভব হয়, সারাজীবন শিক্ষকতা কোরো। তোমার লেখা পড়ে মনে হয়, তুমি জাত-শিক্ষক - তোমাদের দেখা সচরাচর পড়ে না।
  • saa | 82.27.244.194 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ১৯:০০392954
  • হা টিমাটিম টিম,
    দিদি একটা কথা ঠাট্টা করে বল্লে বুঝি মুখ ভার করতে আছে? আসলে ঐ মহাবীরের কথাটা পড়তে পড়তে সামনের ঝাপসা পাতায় আরো কতো মুখ ভেসে উঠলো কি করে বোঝাবো।
    তাদের কথাও এই স্মৃতিসৌধে রেখে দেবার ইচ্ছে রইলো। তবে তুমি আরো এমন মানুষের কথা লেখো যাঁরা সৎ, আগাগোড়া আদর্শপুর্ণ এবং জীবনে অন্যায়ের সাথে সমঝোতা করেননি। আমাদের সবার শ্রদ্ধার অঞ্জলিতে ভরে উঠুক স্মৃতিসুধার পাত্রখানি
  • Tim | 204.111.134.55 | ১৬ আগস্ট ২০০৭ ২২:০৫392955
  • kd
    আমি saa-দির কথায় কিছু মনে করিনি আর মোটেই disheartened হইনি। কিন্তু লেখার পরে আমারো খুব খারাপ লাগছিলো। আর সবথেকে বড়ো কথা, নিজের সীমাবদ্ধতা টের পাচ্ছিলাম লিখতে গিয়ে।
    পড়িয়ে সবসময় আনন্দ পেয়েছি। সেসব স্মৃতি সারাজীবনের সঞ্চয়।

    saa-দিদি
    তোমাদের মন খারাপ করিয়ে দিয়ে খুব খারাপ লাগছিলো। তাই ভাবছিলাম লিখবোনা আর। তোমরা চাইলে লেখা চলবে। তবে, শর্ত আছে। দিদিকেও লিখতে হবে। আমার বিশ্বাস, এই অ-সাধারণ মানুষেরা সবার জীবনেই ছড়িয়ে আছেন। সবাই মিলে সেইসব স্মৃতি ভাগ করে নিলে সেটাই সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানানো হবে।

  • Tim | 204.111.134.55 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০০:৫৭392956
  • আরো কয়েকজনের কথা বলে যাই। এঁরা সবাই নেশা অথবা পেশায় শিক্ষক, এঁদের সবারই চরিত্রে অদ্ভুত ঋজুতা আছে, এবং সবথেকে বড়ো কথা হল, পেশাগত সাফল্যের নিরিখে না, শুধুই সৎ এবং সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে এঁদের আলাদা করে চোখে পড়ে।
    এঁদের মধ্যে প্রথমেই আসবে লালমাটির দেশের এক দাদার কথা, আমার প্রথম জীববিদ্যার শিক্ষক। সরল, অমায়িক ঝকঝকে এক যুবক। মাঝেমধ্যেই জোরে হেসে উঠতেন। বিশ্বাস করতেন, কোন কাজই ছোট নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ কৃতি ছাত্রটিকে নিজের হাতে বাড়ির সমস্ত কাজ করতে দেখতাম। স্বপ্ন দেখতেন, একদিন ভারতের শাসনব্যবস্থা দূর্নীতিমুক্ত হবে, লালফিতের গেরো ছিঁড়ে উন্নয়ন সবার ঘরে কড়া নাড়বে। সেই লক্ষ্যে IAS, WBCS এর পরীক্ষা দেওয়ার কথা বলতেন ছাত্রদের। নিজেও তখন সেই পথের পথিক। শেষ চিঠিতে অনেক কথা ছিলো, কিন্তু কোথায় আছেন, কি করছেন জানাননি। এরপর বেশ কয়েকটা চিঠি ওঁর দেশের বাড়ির ঠিকানা থেকে ফেরত এলো। জীবন থেকে হারিয়ে গেলেন আরো একজন অন্যরকম মানুষ।
    এরপরেই মনে পড়লো আমাদের ইংরেজীর মাষ্টারমশাইয়ের কথা। বয়স প্রায় ষাট ছুঁইছুঁই, চোখে পুরু ফ্রেমের চশমা পড়ে সাইকেলে চেপে আমাদের পড়াতে আসতেন। স্কুল, কলেজে পড়িয়েছিলেন কয়েক বছর, তারপর ছেড়ে দিয়ে প্রাইভেট টিউশন শুরু করেন। কেন অমন ভালো চাকরি ছেড়ে দিলেন?-আমরা জানতে চেয়েছিলাম। বললেন, ""ধুর, ওখানে পড়িয়ে মাত্র কয়েকজনকেই ঠিকঠাক শেখানো যায়, বেশিরভাগেরই কোন উপকারে লাগে না ক্লাস লেকচার। তার থেকে এইখানে সবাইকে ধরে ধরে পড়াতে পারি।"" একসাথে ১০০-১৫০ জনকে পড়ানোর নামে চালিয়াতি করার ব্যবসা করলে এই ভদ্রলোক সহজেই বড়লোক হতে পারতেন। কিন্তু কখনো ৩-৪ জনের বেশি একসাথে পড়াতেন না। তাই ভোর থেকে রাত ১২টা অবধি কেটে যেত, ওদিকে অবস্থার কোন পরিবর্তন হত না। কর্তব্যে অবহেলা নেই, পক্ষপাতদুষ্ট ব্যবহার নেই (নিজের ছেলেমেয়ের পরীক্ষার আগের দিনও নিয়ম করে পড়াতে যেতেন, এর ফলে তাদের অসুবিধে হলেও শুনতেন না)। অনেকসময়েই বিনা পয়সায় পড়াতেন, কিন্তু কেউ কিচ্ছুটি টের পেতনা। আমরা ইংরেজীর পাশাপাশি কোনদিন হয়ত বাংলা সাহিত্যের কোন জায়গা বুঝতাম, বা এমনি আগ্রহেই দর্শনের কোন বই নিয়ে আলোচনা করতাম, উনি সাগ্রহে উৎসাহ দিতেন। এঁর চরিত্রেও কোন মনমরা ভাব দেখিনি। জীবনের একটা সময় সব ছেড়েছুড়ে বেকার হয়ে গিয়েছিলেন, বড়োদের কাছে শুনেছি তখনো সব সময় বাঁধভাঙ্গা হাসিতে ভেসে যেত ভবিষ্যতের চিন্তা। এখনও উনি আছেন, একইরকম।
    এবার বলি আরেক দাদার কথা, যাঁর কাছে আমাদের পদার্থবিজ্ঞান শেখার হাতেখড়ি। এই দাদা মাত্র হাতেগোনা কিছু ছেলেমেয়ে পড়াতেন। বছরে তাঁর মোট ছাত্রসংখ্যা ১০ ছাড়াতো না। শুরুতে কাউকেই ফেরাতেন না। একমাস পরে, এক পয়সাও না নিয়ে অপছন্দের ছাত্রদের অন্য কোথাও ভর্তি করে দিতেন। আমাদের পড়া হত গল্পের মত। সবাই অবাক হত আর পরীক্ষায় আমাদের কি দুর্দশা হবে ভেবে খুব চিন্তা করত, কারণ আমরা কোন নোটস পড়তাম না, বই পড়তে বলে আর সেটা নিয়ে আলোচনা করে দাদা বুঝিয়ে দিতেন একেকটা বিষয়। পড়ার সাথে সাথে পড়ার বাইরের বিষয় নিয়ে তুমুল তর্ক হত, এর ফলে কোন কোন দিন পড়া বন্ধ হয়ে তর্কটাই চলত সমস্ত সময়। দাদা জানতেন আমরা কেউ জয়েন্ট দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হতে চাইনা। তাই নিশ্চিন্তে সিলেবাস না মেনে পড়াশুনো চলতো। তবে বোর্ডের পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, এই শর্ত রেখেছিলেন। কারণ তা না হলে তো পড়াশুনোর পথটাই বন্ধ হয়ে যাবে। টাকা জিনিসটা নিয়ে না ভাবলেও যে চলে, সেটা যদি আমরা কখনো কাউকে দেখে শিখে থাকি, তো সেই ব্যক্তি এই দাদা। আবার যতটুকু টাকা বেঁচে থাকার জন্যে দরকার সেটাও উনি রোজগার করতেন, পাশাপাশি চলতো নিরলস পড়াশুনো। শুধুই শেখানোর জন্য এবং শেখার জন্যে এই বিদ্যাচর্চা। এই মাল্টিপ্লেক্স যুগে অপার্থিব মনে হয়, তাই না?
    সবশেষে আসবে দুজন দিদির কথা। এঁদের কারুর কাছেই আক্ষরিক অর্থে আমরা পড়িনি। প্রথমজন আমাদের এক বন্ধুর দিদি হিসেবে আমাদের ইউনিভার্সাল দিদি। ইনি চশমা পড়ে গম্ভীর হয়ে ইশ্‌কুলে পড়াতেন। যাকে বলে পারফেক্ট দিদিমনি। কিন্তু স্কুলের বাইরে এলেই অন্য রূপ। তখন এলাকার সমস্ত বাচ্চাদের আদরের দিদি। নিজে সংসার করেন নি, কারন সে নাকি একরকম বোঝা হয়ে থাকা। বই পড়ে আর এর তার উপকার করে সময় কেটে যায়। সরল অনাড়ম্বর জীবন যাপন করেন, বৃদ্ধা মা এবং ভাইকে সামলে হাসিমুখে রোজ কাজে যান। এবং সেখানেও হেসে, যত্ন করে পড়িয়ে, সকলের সমস্যা সমাধান করে ফিরে আসেন দিনশেষে। অবশ্য জেনেশুনে করা এইসব কাজের বাইরেও থেকে যায় অজ্ঞাতসারেই অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠার গল্প, তাই সবাই ব্যস্ত হয়ে পা খুঁজে নেয় তাঁর। নাহ, ভুল বললাম, সবাই না। অনেকেই এরপরেও দিদির চরিত্র নিয়ে ""ভালো ভালো"" মন্তব্য করে আনন্দ পান।
    আরেকদিদি একেবারে ""লীলা মজুমদার""এর দলের লোক। চুটিয়ে পড়াশুনো করে ফার্স্ট সেকেন্ড হয়েছেন, দারুন আদর করে অপোগন্ড পাড়াতুতো ভাইবোনেদের অঙ্ক শিখিয়েছেন অবসর সময়, এবং বিনা পয়সায়। কেউ কোনকিছু নিয়েই অভিযোগ করতে পারেনি এঁর সম্পর্কে। এত ""ভালো"" হয়েও অসম্ভব শক্ত মেরুদন্ড, ঝগড়া না করেও স্পষ্টভাবে আপত্তি জানিয়ে দিতে এই জুড়ি মেলা ভার। আমরা এঁর কাছেও পড়িনি কখনো। শুধু মাঝে মধ্যে গপ্প করতাম। তার ফাঁকেই শেখাবার চেষ্টা করতেন মানুষ হওয়ার টেকনিক।
    যাঁদের কথা বললাম তাঁদের বেশিরভাগেরই ঠিকঠাক জায়গা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা দিতে পারেনি। দিতে পারলে হয়ত টই খুলে শিক্ষকদের কুকীর্তির গল্প লেখা হতনা।
  • tan | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০৩:০৪392957
  • খুব ভালো লাগছে টিম। ধন্যবাদ জানিয়ে ছোটো করবো না। যত শুনছি ততই ভালো লাগছে।
  • ranjan roy | 122.168.68.159 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ০৬:৫৬392959
  • কি বলবো! আমার জানা অসাধারণ-সাধারণ মানুষদের কথা ভাবতে গেলে দেখছি বেশির ভাগই শিক্ষক! একজন তো আমার ছোটকাকা, প্রয় বন্ধুর মত। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলা পড়ে হাওড়াজেলার আমতার কাছে গেলেন মাস্টারি করতে। উদ্দেশ্য ওখানে কৃষক আন্দোলন গড়ে তুলবেন। পড়াতেন খুব যত্ন করে।
    তখন ষাট-সত্তরে মাইনে-পত্তর বলার মত ছিলো না। দু-তিন মাসে একবার পাওয়া যেত। ফলে মুদির দোকান থেকে সর্বত্র ধার অবধারিত। কিন্তু অসম্ভব আত্মমর্যাদা সম্পন্ন এই মানুষটি চাকরির শেষদিন অবদি বিনে পয়সায় টিউশন করতেন। ওনার কথা হল- কোন ছাত্র ঘরে পড়তে আসছে, মানে আমি ক্লাসে ওকে ঠিকমত পড়াতে পারিনি। ফলে --। কোন অভিভাবক যদি পূজোর সময় ধূতি দিতেন তাহলে ফেরত দিতেন - এটাও প্রকারান্তরে টিউশনের পয়সা দেয়ার চেষ্টা ভেবে। পরীক্ষার সময় কড়া ইনভিজিলেটর। কাউকে টুকতে দেবেন না। ছাত্ররা অনুনয় করলে বলতেন যখন তোমাদের মাস্টারমশায় ক্লাস নেননি, তখন ওনাকে অনুনয় করা উচিত ছিল। কিন্তু উনি আদৌ ভগবান ছিলেন না। ছিলেন এক্‌জন স্বাভাবিক সাধারণ মানুষ।
    ধার নিলে ঠিক তারিখে ফেরত দিতেন, আরেকটি ধার করেও। আবার পার্কসার্কাসে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় রাতজেগে মুসলমানবস্তিতে পাহারা দিতে দেখেছি।
    আরেকজন অরুণ সোম, আমার কাকার বন্ধু- মানিকজোড়। বাংলার মাস্টারিছেড়ে রাশিয়ান ভাষায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম হয়েও পুলিশের ছাড়পত্র না পাওয়ায় গেলেন রাশিয়ান এমব্যাসিতে। সোজা রাশিয়ান ভাষায় কথা বলে আদায় করলেন ভিসা। ওখানে গিয়ে অনুবাদক হিসেবে জমে গেলেন। ওনার আইখমাতভের "" বিদায় গুলসারি'' পড়ে যেন ভেড়ার ইয়ের গন্ধ পেয়েছিলাম। "রুশ সাহিত্যের ইতিহাস'' ও অসম্ভব ভালো লেখা। একজন সুসংস্কৃত রাশিয়ান মহিলাকে বিয়ে করলেন। ও দেশে ব্যাংকে কিছু পয়সাকড়ি হল। কিন্তু পেরেস্ত্রৈকা-গ্লাসনস্ত জমানায় বাজারে রুবলের দাম খুব নেমে যাওয়ায় ফকির হয়ে গেলেন। বৌ-দুই মেয়ে নিয়ে কোলকাতায় ফিরে এলেন।কষ্ট করে মেয়েদের বড় করলেন। "আজকাল'' লিখিয়ে নিয়ে পয়সা দেয় নি। পবিত্র সরকার মশায়ের বন্ধু, সহপাঠি, কিন্তু সাহায্য নেবেন না। কিছু পত্রিকা বর্তমান রাশিয়ার জনজীবনের রগরগে গালগল্প লেখাতে চেয়েছিলো, মোটাটাকার বিনিময়ে; রাজি হন নি। কাকিমা রুশ নাগরিক হিসেবে কিছু পেনশন পান। তা' নিয়ে ক'বছরে একবার বাপের বাড়ি ঘুরে আসেন। আজ বাজারে রাশিয়ান শেখার কোন তাগিদ নেই। ফলে কে পুছবে অরুণ সোমদের?

  • Tim | 204.111.134.55 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ০৯:৪১392960
  • খুব ভালো লাগছে রঞ্জনদা। আরো লিখুন ।
  • ranjan roy | 122.168.68.159 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ২১:৩৪392961
  • একজন মহাবীরের কথা
    ------------------------
    ছোটবেলায় ছুটিছাটায় দু'বছরে একবার কোলকাতা ছেড়ে ভিলাইয়ে বাবা-মার কাছে যেতাম। ষাটের দশক। একদিন স্টীল প্ল্যান্টের দিক থেকে হাওয়ায় ভেসে এল প্রচন্ড এক বিস্ফোরণের মত শব্দ। চারদিকে ছুটোছুটি, আতংক। জানা গেল পাওয়ার জেনারেশনের একটি টারবাইন গেছে উড়ে; আহত ক'জন, মৃত একজন।
    বাবা চুপ্‌চাপ। ক'দিন পড়ে মা'র মুখে শুনলাম মৃতমানুষটির পরিচয়। তিনি মি: ভট্টাচার্য্য, ইয়ং ইঞ্জিনিয়র, আমাদের বাসার কাছেই থাকতেন। স্ত্রী এবং ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে। ডিউটি দিচ্ছিলেন টার্বাইন রুমে। যখন কোন টেকনিক্যাল কারণে দেখা গেল যে বড় অ্যাকসিডেন্ট হতে যাচ্ছে তখন তিনি একটা লিভার বা অন্য কোন মেশিনের পার্‌ট্‌স চেপে ধরে চীৎকার করে সবাইকে "" পালাও, পালাও'' বলে সাবধান করে দিচ্ছিলেন, নিজে পালিয়ে যান নি। প্রথমে একটা হাত উড়ে গেল, তারপর গোটা শরীর
    কয়েক টুকরো। ওনার স্ত্রী ম্যাট্রিক পাশ ছিলেন না। ফলে পেলেন সরকারী নিয়ম মাফিক সামান্য কিছু টাকা। সেসব দিনে আজকের মত এত বীমা-টিমা করা হত না।
    আর পেলেন পিয়নের চাকরীর অফার। কলকাতা ফিরে গেলেন ছোট্টমেয়েকে কোলে নিয়ে। প্রথমে শ্বশুরবাড়ী, পরে বাপের। আর কোন খবর রাখি না।
    এবার একজন জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া লোকের কথা।
    --------------------------------------------
    নাম সমীর রায়, বরানগরের গঙ্গার ধারে কুঠিঘাট রোড পাড়ায় ওনাকে সবাই ভব রায় নামে জানতো। সুদর্শন, আকর্ষণীয় বাগভঙ্গি। সমীরদা আমার রামকৃষ্ণ মিশনের হোস্টেল থাকাকালীন সেভেন থেকে নাইন অব্দি একবেলা বাংলা ও ইংরেজি পড়াতেন।
    তারচেয়ে বড় কথা উনি আমাকে এবং আরো অনেককে ঐ বয়সেই সাহিত্যপাঠের স্বাদ পাইয়েদিয়েছিলেন। কবিতা আবৃত্তি করতে, নাটক করতে, হাতে লেখা ম্যাগাজিন চালাতে- কি নয়। ক্লাস এইটে হাতে এল "শেষের কবিতা''। নাইনে একটি চটি বই-"আধুনিক বাংলা কবিতার ভূমিকা"। জীবনানন্দ দাশের লেখা সম্ভবত: "কবিতার কথা'' বা ওমনি কিছু। যখন বললাম- স্যার, বুঝতে পারছিনে। ওনার জবাব,-- কবিতা বুঝবার জন্যে নয়, বাজবার জন্যে।
    নাটক করালেন "ডাকঘর"। আমি আর উনি দ্বৈত আবৃত্তি করলাম "গান্ধারীর অবেদন" থেকে ধৃতরাষ্ট্র এবং দুর্যোধনের অংশটুকু। শেখালেন প্রেমেন্দ্র মিত্রের "ফেরারী ফৌজ" এবং আরও অনেককিছু। ওনার সংগে গেলাম শেয়ালদার এঁদোগলিতে এককামরার ঘরে
    ওনার বন্ধু ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রসঁগীতে পুরস্কার প্রাপ্ত রঞ্জন সেনগুপ্তের গান শুনতে। অবাক হয়ে দেখছিলাম অমন ছন্নছাড়া ঘরে কি দামি একটা হার্মোনিয়াম। উনি কবিতা লিখতেন।তাতে থাকতো ষাটের দশকের বামপন্থী কবিদের উনিশশতকীয় রোমান্টিক আশাবাদ।
    এমনসময় উনি আমাদের মিশনের স্কুলে করণিকের চাকরিতে যোগ দিলেন। ভালো লাগলো, কিন্তু আমাদের পড়ানো বন্ধ হয়ে গেল। যোগাযোগ কমে গেল। আমরা অনেকেই ওনার প্রায় প্রেমে পড়ে ছিলাম। উনি ছিলেন মিশনের অচলায়তনের দাদাঠাকুর।
    শুনলাম- বিয়ে করেছেন। জিজ্ঞেস করায় হেসে বলেন মেয়েটি আমার ছোটবেলার খেলার সাথি।
    তারপর আমি মিশন ছেড়ে এগারো ক্লাসে নাকতলায় গেলাম।
    পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতে ওরা জানালো সমীরদা স্কুলের ক্যাশ থেকে কিছু সরিয়ে পরে মেলাতে না পারায় চাকরি খুইয়েছেন। বৃদ্ধবপের কান্নাকাটিতে স্বামীজিরা আর পুলিশে দেন নি। অনেকে আমাকে নকল করে দেখালো যে কিভাবে বুড়োমানুষ স্বামিজিদের হাতেপায়ে ধরছিলেন।
    আমার মুখের চেহারা দেখে একবন্ধু জিজ্ঞেস করলো যে এরপরও কি তুই ওনাকে ভালবাসবি?
    কি বলবো? ভালোবাসা যে অহৈতুকী!

  • Blank | 65.82.130.9 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ২১:৪০392962
  • রঞ্জন দা বড্ড সত্যি লেখেন
  • Tim | 204.111.134.55 | ২৫ আগস্ট ২০০৭ ১০:০৪392963
  • আরো এক হেরে যাওয়া মানুষের গল্প বলি। এক যে ছিলো ছেলে। তার মাথায় বুদ্ধির চকমকি খেলতো ছোট থেকেই। গানের গলা চমৎকার, তবলার হাতও মন্দ নয়। ছিপছিপে চেহারার নম্রস্বভাব এই ছেলেটিকে দেখলে লোকের চোখ জুড়াতো। পড়ার বাইরের নানা বই পড়তো সে ছোট থেকেই। স্কুলে থাকতেই মহাযুদ্ধের ইতিহাস শেষ করে বিভূতিভূষণে মশগুল, তারপর কলেজে ঢুকেই মুজতবায় মজে গেল সে। কিন্তু আধুলির অন্য একটা দিকও ছিলো। ঘরে ছিলেন ""প্রাগৈতিহাসিক"" পিতা। স্কুল ফাইনালের পর থেকেই তাঁর দূরদৃষ্টি আর সমাজসচেতনতার মূল্য চুকিয়ে আসছিলো এই ছেলেটি। বাবা মনে করেন, গান গাইলে ছেলেদের চরিত্র নষ্ট হয়, অতএব গান বন্ধ। বিজ্ঞান পড়লে অনেকদিন পড়াশুনো করার অনর্থক ঝোঁক বাড়ে, অতএব আর্টস পড়ো। শেষে বই পড়াও বন্ধ হল, কারণ এতে মানুষ বেশিমাত্রায় কল্পনাবিলাসী হয়ে পড়ে, আর তা সংসারের পক্ষে ""অমঙ্গলজনক""। ছেলেটির একটাই দোষ ছিলো, সে বড্ড ভালমানুষ, বড়োদের সাথে তর্ক করতে পারতোনা। এইভাবে একে একে সব বন্ধ হল। লেখার কলম থেমেছিলো অনেক আগেই, পড়ার উপায়টুকুও রইলো না। অন্তত যতদিন না সে একটা চাকরি জোটাতে পারে। আর ভারতবর্ষে ""ভালো"" চাকরি পেতে গেলে যেসব জানতে হয়, তার কোনটাই তার আয়ত্ত ছিলো না। সুতরাং ছেলেটি বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় বসার জন্য বাঁধা ছকে পড়তে শুরু করলো। মার খেতে খেতেও মেধার যেটুকু বাকি ছিলো তাতে সে চাকরিও পেয়ে গেল বছর পাঁচ-ছয়ের মধ্যেই। কিন্তু প্রথম মাসের মাইনে পেয়ে সে আবিষ্কার করল, বহুদিন ধরে তিলে তিলে তার ভেতরের মানুষটা মারা গেছে, সে টেরও পায়নি। তাই একসময় যে শবনম পড়ে পাতায় পাতায় আলোর খেলা দেখতে পেত, আরণ্যকের বর্ণনায় যার মন হু হু করে উঠতো কিংবা গোর্কির লেখায় শক্ত হত চোয়াল, আজ তাকে এসব কিছু স্পর্শ করেনা আর। এখন সে আর সমস্ত ""স্বাভাবিক"" মানুষের মতই দশটা-পাঁচটা আপিস করে, সিপিএম-তৃণমূল নিয়ে ঝগড়া করেই দিন কাটিয়ে দেয়।
    আমার বই পড়ার শুরুর দিকে এই দাদার সাথে আমার আলাপ। অদ্ভুৎ স্মৃতিশক্তি ওর। গোর্কি থেকে দস্তয়েভস্কি, পরশুরাম থেকে ত্রৈলোক্যনাথ, ডিকেন্স কিংবা হার্ডি, সর্বত্রই অবাধ বিচরণ। দেখা হলেই প্রশ্ন, রেমার্ক পড়ছিস? একেবারে বই ধরে ধরে আলোচনা করতো, কখনো রেফারেন্সের অভাব হত না, সব মুখস্থ। এমনকি কোন একটা বইয়ের একাধিক অনুবাদের কোনটায় কি সমস্যা আছে সেটাও বলে দিত কখনও সখনও।
    বছর তিনেক আগে শেষবার যখন দেখা হল, দেখলাম মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই। চেহারা হয়েছে কাঠির মত। রোজ ডাক্তার দেখাচ্ছে, কোনমতে অফিস থেকে ফিরেই আপন খেয়ালে হাঁটতে বেড়িয়ে যায়। দেখা হতে ইচ্ছে করেই বইয়ের কথা জিগ্যেস করলাম। অনেকক্ষণ ভাবল, তারপর ম্লান হেসে বলল, "" শরীরটা খারাপ বলে কিনা কে জানে, আজকাল কিছু মনে পড়ে না। তুই বোস। আমি একটু হেঁটে আসি। "" বলেই ব্যস্ত হয়ে বেরিয়ে গেল একদা সবার ঈর্ষার পাত্র আমার সেই দাদা। বড়ই প্রতীকি এই চলে যাওয়া। এভাবেও চলে যাওয়া যায়... তখনি শিখলাম।
    ---------------
  • tkn | 122.161.165.148 | ১২ ডিসেম্বর ২০০৯ ১৫:৫৩392964
  • খুব ভালো লাগল পড়ে.. আবার কেউ কিছু লিখুন না এই টইটায়
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন