এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • এসরাইড সম্পর্কে দু একটা কথা যা আমি জানি

    শঙ্খ
    অন্যান্য | ২১ এপ্রিল ২০১৮ | ৬০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শঙ্খ | 55.112.70.155 | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১২374125
  • এখন মার্কেটে নতুন বাজওয়ার্ডঃ এসরাইড। যদিও এই কারপুল অ্যাপটি কয়েক মাস ধরেই বেশ পপুলার হয়েছে কর্পোরেট অ্যাডভার্টাইজিং এর হাত ধরে, কিন্তু লোকজন এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা করে এনরোল করছে, এবং একদুটো রাইডের পরেই বনলতা সেনের মত হোয়াটায়াবাউটেরি করছে, এতদিন কোথায় ছিলেন? অন্ততঃ কোলককাতায়।

    কারপুলিং কোন নতুন কনসেপ্ট না। যুগে যুগে ইহা বিদ্যমান। সান ফ্রানসিস্কোতে কারপুল করলে টোলে কি একটা যেন ছাড় মিলত। জার্সিতে বন্ধুবান্ধব কারপুল করলে হয় তেল ভরে দিতে হত, নইলে ডিনার খাওয়াতে হত। কোলকাতাতেও আমি অনেককে জানি, যারা এক গাড়িতে করে অফিস যায়, প্রতি সপ্তাহের তেল খরচা কেউ একজন দেয়, কেউ হাতে নগদ নারায়ণ টাকা গুনে নেয়। কিন্তু কিছু মুশকিল আছে।

    আমি নিজে দেখেছি, প্রোজেক্টের লোকজন রাত্তির হলেই আবদার জুড়ত, এখানে ড্রপ করে দাও, ওখানে নামিয়ে দিলে সুবিধে হয়। এক ম্যানেজার প্রায় প্রতিদিনই চেষ্টা করত জুড়ে বসার, অথচ পেট্রল পাম্পে গাড়ি ঢুকলে খুব মনোযোগী হয়ে মোবাইলে মনোনিবেশ করত। ইচ্ছে থাকলেও বলতে পারা যেত না, মুকুন্দপুরে নামলে পঞ্চাশ টাকা দিও, পাটুলিতে নামলে সত্তর।

    ঠিক সেই জায়গাটা কেটার করতে এখন এসে গেছে এসরাইড। কারপুলিং অ্যাপ। কার, বাইক এবং রাইডার মানে যাত্রী, এই তিনরকমের রাইড অপশান আছে। যদি আপনার গাড়ি থাকে, রেজিস্টার করুন, কর্পোরেটে যুক্ত থাকলে মেইল আইডি দিন, কোন রুটে, কটার সময় অফিস যান আর ফেরেন, ডিটেলস দিন, ঐ দিনে, ঐসময়ে যারা যারা আপনার রুটে যাবেন/ফিরবেন, আপনি দেখতে পাবেন, ইচ্ছে হলে আর গাড়িতে জায়গা থাকলে আপনি রাইড অফার করতে পারেন। যদি যাত্রী হোন, তাহলে রাইড রিকোয়েস্ট করতে পারেন। সকালে রাইড নিলে, অনেক সময় অফার থাকে, সন্ধ্যের ফেরার রাইড ফ্রী। রেফারাল আছে। পার রাইড এসরাইডকে দিতে হয় চারটাকা পার পার্সন। রাইডের পরে আপনি যাত্রীকে এবং যাত্রী আপনাকে রেটিং দিতে পারবে, কমেন্ট দিতে পারবে। সবথেকে ভালো ব্যাপার হল, ওলা, উবেরের মত হাতে হাতে টাকার গল্প নেই, আপনি যাত্রী হলে, আপনাকে ব্যাংক বা পেটিয়েমে টাকা দিতে ব্যালেন্স লোড করতে হবে। রাইড বুকিং সাকসেসফুল হলে এসরাইড টাকা কেটে নেবে, কিন্তু যতক্ষণ না রাইড কমপ্লিট হচ্ছে, ড্রাইভার টাকা পাবে না। মোটামুটি এই হল গল্প। যে টাকাটা নেয় বা দেয়, বেশ রিজনেবল। পার কিলোমিটার প্রায় তিন-চার টাকার মত, ওলা-উবেরের থেকে অনেক সস্তা, আর গাড়ি-অলার লাভ না হলেও পেট্রল খরচা উঠে আসে। এই টাকাটা জমা হবে এসরাইড ক্রেডিট হিসেবে। এখন যেই গাড়িতে ড্রপ চায়, সোজা বলে দিতে পারেন, অবশ্যই, হোয়াই নট? জাস্ট এসরাইড দিয়ে বুক করো আর ডেস্টিনেশান দাও। ফেলো কড়ি মাখো তেল, আমি কি তোমার পর?

    কারপুলিং এর সুবিধে? নিজেই ভাবুন। যে ড্রাইভার, তার লাভ না হোক, তেলের খরচাটা উঠে আসে। ছিয়াত্তর টাকা লিটারে এটা যে কতখানি, ভুক্তভোগী মাত্রেই জানে। আর যিনি যাত্রী, তিনি অনেক কম খরচে, চেনা জানা অথবা মোটামুটি একই রকম কোম্পানির আরেক কোলিগের গাড়িতে, রেগুলার বেসিসে, অনেক কম সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন। রিলায়েবিলিটি বলুন, সেভিং বলুন, টাইম বলুন, সব দিকেই আপনার লাভ। দু পক্ষেরই। প্লাস, রাস্তায় কম গাড়ি চললে এক তো, জ্যাম কম হয়, অন্যদিকে পলিউশানও অনেক কমে। একা বা দুজনে একটা গাড়িতে আসার থেকে চারজেন মিলে একটা গাড়িতে এলে, এভরিবডি ইজ গেটিং বেনিফিটেড, ইনক্লুডিং এনভায়রনমেন্ট।

    সব গল্পেই ভিলেন থাকে। আমাদের এই গল্পে ভিলেন হলো মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট। কিছু আইনি কচকচি পড়ে ফেলা যাক। সেকশান ৬৬(১) এ বলা আছেঃ "No owner of a motor vehicle shall use or permit the use of the vehicle as a transport vehicle in any public place whether or not such vehicle is actually carrying any passengers, save in accordance with the conditions of a permit granted…authorizing him the use of the vehicle in that place in the manner in which the vehicle is being used"

    সেকশান ২(৪৭) বলছে "transport vehicle means a public service vehicle…"
    আর সেকশান ২(৪৭) বলছে "public service vehicle means any motor vehicle used or adapted to be used for the carriage of passengers for hire or reward…"

    বাংলায় বললে, কারপুলিং ফ্রীতে করা যেতেই পারে, কিন্তু কোনরকম পয়সা বা লাভজনক কিছু মাধ্যম থাকলে অসুবিধে আছে। করলেও নাকি কমার্শিয়াল ভেহিকল চাই, কমার্শিয়াল ড্রাইভিং লাইসেন্স চাই। ওদিকে ইনসুরেন্স বলছে, তুমি একা অ্যাকসিডেন্ট করো, পয়সা দেবো, কারপুলিং এ অ্যাকসিডেন্ট হলে কাঁচকলা।

    সম্প্রতি নাকি কেন্দ্র বলেছিল কারপুলিং আরো পপুলার হোক, কিন্তু রাজ্য তাতে বাধ সেধেছে। চাপান উতোর চলছে তো চলছেই। প্রাইভেট কার কখন যে প্রফিট করে ফেলে, সেই নিয়ে সব্বাই সন্ত্রস্ত।

    চেঞ্জ ডট অর্গে দেখলুম, অলরেডি কারপুল লিগাল করার জন্যে পিটিশান পড়েছে। লোকজন অলরেডি এই নিয়ে ভাবছে। কারপুল করে জে ক্রেডিট জমা পড়েছে, সেই নিয়ে দেখলুম অনেকেই চিন্তিত। এই টাকার ট্যাক্স কি হবে, এটা আলাদা ইনকাম হবে কিনা, রাস্তায় পুলিশ গাড়ী দাঁড় করিয়ে কেস দেবে কিনা এই নিয়ে দেখলুম প্রচুর অলোচনা চলছে। একজন এসরাইড এর মেম্বার হিসেবে আমিও ভাবছি কী করা যায়।

    আপনারাও একটু ভাবুন।
  • | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:১৭374126
  • আইব্বাস! কারপুলিঙের অ্যাপ বেরিয়েছে? বেশ তো।

    ২০১৬ তে আমরা আমাদের অফিসে গ্রিন ইনিশিয়েটিভের পার্ট হিসেবে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর উদ্দেশ্যে 'রাইড ফর প্রাইড' চালু করেছিলাম। তো তখন এই কমার্শিয়াল ভেহিকল সংক্রান্ত পুরো বিষয়টা জানতে পারি। জানা যায় এমনকি কোম্পানি পোর্টালে যে ফ্রী অ্যাড দেবার ব্যবস্থা আছে তাতেও কেউ পয়সাকড়ির উল্লেখ করলে অডিটের সময় কোম্পানি কেস খেতে পারে, যেহেতু 'রাইড ফর প্রাইড' কোম্পানি ইনিশিয়েটিভ এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো হচ্ছে দেখানো হচ্ছে। তা এ নিয়ে আমাদের PCMC র প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনাও হয়েছিল। কিন্তু ঐ যে হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় কোথাও কিছু লেখা টেখা থাকবে না। রাইড দেনেওয়ালা ও লেনেওয়ালাদের মধ্যে 'আলাপ আলোচনা'র ভিত্তিতে স্থির হবে। ফলে কিছু লেনেওয়ালা ঠিক করে মুখ ফুটে বলতে পারেন না, কিছু লেনেওয়ালা ওলার চেয়েও বেশী চান। আর এর কোনওটারই কোনও কন্ট্রোল রাখা সম্ভব হয় না।
    ফলে ইনিশিয়েটিভটির বর্তমানে মুথাপ্রাপ্তি ঘটেছে।
  • dc | 132.174.249.74 | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৪১374127
  • এটা কি চেন্নাইতেও আছে? তাহলে ট্রাই করবো। আর আমার গাড়িটা কারপুলে লাগিয়ে দুপয়সা ইনকামও করতে পারি।
  • dc | 132.174.249.74 | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৪৩374128
  • আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাম্বারাম অবধি যাবার পথে দুয়েকজনকে রাইড দিয়ে যদি এক প্লেট সাম্বার বড়ার পয়সা উঠে যায় তাহলে মন্দ কি?
  • শঙ্খ | 52.110.148.180 | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ১১:১৩374129
  • দদি, ডিসিবাবু, হ্যাঁ, ভালো অ্যাপ এই এসরাইড। নিশ্চয়ই চেন্নাই বা অন্য শহরে আরামসে চলবে। ট্রাই করে দেখুন। আমি তো আর কয়েকটা রিভিউ পেলেই গোল্ড ব্যাজ পেয়ে যাবো। বেশিদিন হয়নি যদিও।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন