এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্টিফেন হকিংয়ের কাজ সম্পর্কে দু-চার কথা

    কালকেতু
    অন্যান্য | ১৫ মার্চ ২০১৮ | ৭৮৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কালকেতু | 55.249.82.86 | ১৫ মার্চ ২০১৮ ১৯:৪৬373032
  • আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের মূল বক্তব্য ছিল অভিকর্ষের সৃষ্টি হয় স্থান ও কালের বক্রতা থেকে। ধরুন একটা চাদর চার কোণে টানটান করে বাঁধা আছে। এবার ঐ চাদরের ওপর একটা ভারী লোহার বল রাখুন। চাদরটা ঝুঁকে যাবে। এরপর আরেকটা অপেক্ষাকৃত হালকা বল চাদরের রাখলে হালকা বলটা ভারী বলের দিকে গড়িয়ে যাবে। যেন হালকা বলটাকে ভারী বলটা টানছে। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে কোনো বস্তুর ভর এবং শক্তি যত বেশি হবে, সেই বস্তু স্থান ও কালে তত বেশি বক্রতা সৃষ্টি করবে। ১৯১৫ সালে এই তত্ত্ব যখন আবিস্কার হয়, তখন মনে করা হত আমাদের মহাবিশ্ব হচ্ছে স্থিতিশীল, অর্থাৎ মহাবিশ্বের আয়তন সর্বদা একই থাকে। কিন্তু গন্ডগোলটা হল ১৯২৯ সালে। এডুইন হাবল দেখলেন দূরের নীহারিকা, ছায়াপথ ইত্যাদি ক্রমাগত পালাচ্ছে আরো দূরের দিকে। অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে। জর্জ গ্যামো ব্যাপারটা খোলসা করে বোঝালেন বেলুনের গায়ে কালির বিন্দুর উদাহরণ দিয়ে। বেলুন যত ফুলবে, কালির বিন্দুগুলো তত সরে সরে যাবে একে অপরের কাছ থেকে। অবধারিতভাবে লোকজনের মাথায় প্রশ্ন এল, তাহলে কি অতীতে কোনো একসময় মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল একটি বিন্দু থেকে, যে বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত ছিল মহাবিশ্বের সমস্ত ভর ও শক্তি? তারপর এক বিস্ফোরণ বা বিগ ব্যাং দিয়ে শুরু হল মহাবিশ্বের প্রসারণ? গল্প সাজালেই তো হবে না, অঙ্ক দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। কে করবে? কিভাবেই বা করবে? ইতিমধ্যে জ্যোতির্বিদ্যার দুনিয়ায় শুরু হয়েছে নতুন এক কৌতুহল। নক্ষত্রের জ্বালানী হচ্ছে হাইড্রোজেন। ফিউশান প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন পরমাণু যুক্ত হয়ে পরিণত হয় হিলিয়ামে আর মুক্ত হয় প্রভূত শক্তি। তাই জন্যেই সূর্যকে এত উজ্জ্বল দেখায়। কিন্তু এরকম চলতে চলতে একদিন সব হাইড্রোজেন যাবে ফুরিয়ে। তখন কি হবে? ১৯৩১ সালে মাত্র কুড়ি বছরের এক ছেলে সুব্র্যমনিয়ম চন্দ্রশেখর অঙ্ক কষে দেখালেন যে সব নক্ষত্রের ভর সূর্যের ভরের ১.৪ গুণের চেয়ে বেশি, তারা নিজের অভিকর্ষের টানে নিজের চারদিকেই গুটিয়ে আসবে এবং ধীরে ধীরে পরিণত হবে প্রচণ্ড ঘনত্বের এক জ্যোতিস্কে, যার অভিকর্ষীয় টান এত বেশি যে আলোও পালাতে পারে না তার কাছ থেকে। এরকম বস্তুর অস্তিত্ব এডিংটন, ল্যান্ডাওয়ের মত তখনকার বাঘা বাঘা জ্যোতির্বিদরা তো মানতেই চাইলেন না। তাঁরা বললেন, কোনোভাবে এরকম গুটিয়ে আসাটা বন্ধ হবে। ১৯৩৯ সালে রবার্ট ওপেনহাইমার ও তাঁর সহকর্মীরা প্রমাণ করলেন ফিজিক্সের কোনো সূত্র লঙ্ঘন না করেই এভাবে একটি তারার 'ব্ল্যাকহোলে' পরিণত হওয়া সম্ভব। অর্থাৎ চন্দ্রশেখরই ঠিক। তাঁর নামে সূর্যের ভরের ১.৪ গুণ সীমাটির নাম দেওয়া হল 'চন্দ্রশেখর সীমা' আর ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর নামটি দিয়েছিলেন জন হুইলার অনেক পরে, ১৯৬৭ সালে।
    আইনস্টাইন সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ দেবার কয়েকমাস পরেই কার্ল সোয়ার্সচাইল্ড আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণগুলির এক অদ্ভুত সমাধান বের করেন। তিনি দেখিয়েছিলেন যে একটি বিন্দুভরের চারদিকে একটি বিশেষ ব্যাসার্ধের গোলক যদি কল্পনা করা হয়, তাহলে ঐ গোলকের বাইরে আইনস্টাইনের সমীকরণগুলি যথাযথভাবে প্রযোজ্য হলেও ভিতরে ঐ সমীকরণগুলি প্রয়োগ করলে কিছু কিছু রাশির মান পাওয়া যাবে অসীম। আর অসীম কোনো উত্তর নয় ফিজিক্সে। ঐ বিশেষ ব্যাসার্ধের নাম হয়ে গেল সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ। যদিও এই আবিস্কারের মর্ম তখনো বোঝা যায়নি। অঙ্ক থেকে জানা ছিল সাত লক্ষ কিলোমিটার ব্যাসার্ধবিশিষ্ট সূর্যের মত ছোটো নক্ষত্রের ক্ষেত্রে সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ মাত্র তিন কিলোমিটার। তাত্ত্বিকভাবে কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কারের পর নতুন তাৎপর্য পেল সোয়ার্সচাইল্ডের গবেষণা। ওপেনহাইমার বললেন যে রাম যদি কৃষ্ণগহ্বরের দিকে পড়তে থাকে এবং শ্যাম যদি তাকে দূর থেকে দেখতে থাকে, তবে রাম যে মুহূর্তে সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ অতিক্রম করবে, সেই মুহূর্ত থেকে শ্যাম দেখবে রাম অসীম সময় ধরে কৃষ্ণগহ্বরের দিকে পড়ছে। অর্থাৎ সময় বা কাল যেন থমকে আছে। এ তো গেল শ্যাম কি দেখবে। কিন্তু রামের অবস্থাটা কি হবে? ১৯৫৮ সালে ডেভিড ফিঙ্কেলস্টাইন বললেন যে কৃষ্ণগহ্বরের চারদিকে সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধবিশিস্ট গোলকটির পৃষ্ঠতল আসলে 'ইভেন্ট হরাইজন' বা ঘটনা দিগন্তরূপে কাজ করে। রাম যেই একবার ঘটনা দিগন্ত পেরিয়ে গেল, ব্যাস! খেল খতম! ব্যাপারটা মরে যাওয়ার থেকেও খারাপ। মরে গেলে রামের দেহের ভর ও শক্তি কোনো না কোনো রূপে থেকে যেত এই মহাবিশ্বে। কিন্তু ঘটনা দিগন্ত পেরিয়ে গেলে আর কোনো অণু, পরমাণু, আলো, শব্দ কিচ্ছু ফেরত আসার উপায় নেই। এতদিন আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে চর্চা করার মূল সমস্যা ছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সীমাবদ্ধতা। এইবার পাওয়া গেল কৃষ্ণগহ্বর, যার বৈশিস্ট্যগুলো থেকে জানা যেতে পারে অভিকর্ষ বল এবং মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিনাশ সম্পর্কে অনেককিছু। বিজ্ঞানীদের মধ্যে সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে নতুন উৎসাহ দেখা দিল। ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ রজার পেনরোজ বক্তৃতা দিলেন তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত গাণিতিক মডেলটি সম্পর্কে। এই জটিল মডেলটির মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে মোটামুটিভাবে সব কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রেই থাকবে একটি সিঙ্গুলারিটি। সিঙ্গুলারিটি হচ্ছে এমন একটা জায়গা (জায়গাটা একটা বিন্দু, রেখা বা তল যা খুশি হতে পারে) যেটা 'জিওডেসিক্যালি ইনকমপ্লিট', অর্থাৎ যেখান থেকে স্থান-কাল অন্ততঃ একটি দিকে প্রসারিত হতে পারবে না। কৃষ্ণগহ্বরের সিঙ্গুলারিটিতে স্থান-কাল হচ্ছে অসীম বক্রতাসম্পন্ন। সেখানে ফিজিক্সের নিয়মগুলি আর খাটে না। পেনরোজের বক্তৃতা শুনতে এসেছে অনেক ছাত্র। তাদের মধ্যে বসে রয়েছে আধুনিক মহাবিশ্বতত্ত্বের অন্যতম পুরোধা ডেনিস স্কিয়ামার সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট ডক্টরাল স্টুডেন্ট স্টিফেন উইলিয়াম হকিং। বছরদুয়েক আগে ১৯৬৩ সালে মাত্র ২১ বছর বয়েসে তার দেহে ধরা পড়েছে দুরারোগ্য মোটর নিউরন ডিজিজ।
    পেনরোজের বক্তৃতা শুনে হকিং খুব অনুপ্রাণিত হন এবং ষাটের দশকের শেষদিকে পেনরোজের সাথে তিনি একযোগে গবেষণা করে প্রমাণ করেন হকিং-পেনরোজ সিঙ্গুলারিটি থিয়োরেম। এটি আসলে পেনরোজের আগের কাজেরই বিস্তৃতি। এইখানে তাঁরা দেখান যে শুধু কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রেই নয়, সাধারণভাবে অভিকর্ষ কিভাবে সিঙ্গুলারিটির জন্ম দিতে পারে। এই উপপাদ্য প্রমাণ করতে তাঁরা ব্যবহার করেন অমল রায়চৌধুরীর বিখ্যাত 'রায়চৌধুরী সমীকরণ'। হকিং দাবি করেন যে মহাবিশ্বের শুরুতেও ছিল একটি সিঙ্গুলারিটি। পরে অবশ্য তিনি এই দাবী সম্পর্কে তাঁর অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছিলেন, কারণ হকিং-পেনরোজ থিয়োরেম প্রমাণ করা হয়েছিল সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ দিয়ে, যা মহাবিশ্বের জন্মের 'প্ল্যাঙ্ক মুহূর্তের' (প্লাঙ্ক দূরত্ব অতিক্রম করতে আলোর যে সময় লাগে) মধ্যে আর খাটে না। সেখানে প্রযোজ্য কোয়ান্টাম মেকানিক্স। তাই হকিংয়ের দাবী প্রমাণিত হয়নি। যাইহোক, ১৯৭০-এর দশক থেকেই হকিং কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বার্ডিন, বার্কেনস্টাইন, হকিং প্রমুখ বিজ্ঞানীরা তাপগতিবিদ্যার আলোকে কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাখ্যা দেন। তাপগতিবিদ্যার চারটি সূত্রের অনুসরণে কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কেও তাঁরা চারটি সূত্র দেন। বার্কেনস্টাইন মাথা ঘামাচ্ছিলেন কৃষ্ণগহ্বরের এনট্রপি নিয়ে। এনট্রপি হচ্ছে যেকোনো সিস্টেমে বিশৃঙ্খলার পরিমাপ। বাতাসে বিভিন্ন গ্যাসের কণাগুলি যতটা বিশৃঙ্খলভাবে ছোটাছুটি করে, তরলে সেই বিশৃঙ্খলা কমে যায়। জল বরফে পরিণত হলে এনট্রপি হ্রাস পায়। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র থেকে জানা যায় যে মহাবিশ্বের এনট্রপি ক্রমশই বেড়ে চলেছে। ১৯৭০-এর দশকে কৃষ্ণগহ্বরের গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রে আছে একটি সিঙ্গুলারিটি আর তাকে ঘিরে সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ দূরে রয়েছে ঘটনা দিগন্ত। ঘটনা দিগন্ত অতিক্রম করলে আর কিছুই ফিরে আসে না। বার্কেনস্টাইন প্রশ্ন তুললেন, তাই যদি হয়, তাহলে যখন কোনো বস্তুকে কৃষ্ণগহ্বর গিলে ফেলে, বস্তুটার এনট্রপির কি হয়? যদি কৃষ্ণগহ্বর থেকে কিছুই বেরিয়ে না আসে, তাহলে তো যে মুহূর্তে কোনো বস্তুকে কৃষ্ণগহ্বর গিলে নেয়, তক্ষুনি মহাবিশ্বের এনট্রপি একটুখানি কমে যায়। ফ্রিজে জলকে বরফে পরিণত করতে আমাদের বিদ্যুৎশক্তি ক্ষয় করতে হয়। এক্ষেত্রে ফ্রিজের অভ্যন্তরে এনট্রপি কমে বটে, কিন্তু ফ্রিজ থেকে নির্গত তাপশক্তি পারিপার্শ্বিকের এনট্রপি বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ মহাবিশ্বের এনট্রপি সবসময়ই বাড়তে থাকে। কৃষ্ণগহ্বরে উলটো হচ্ছে কি করে? বার্কেনস্টাইন তখন বললেন, কৃষ্ণগহ্বরের নিজস্ব এনট্রপি আছে আর যখনই কৃষ্ণগহ্বর কিছু গিলে নেয়, ওর পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল একটু হলেও বাড়ে। ফলে ওর এনট্রপি বেড়ে যায়। অর্থাৎ, কৃষ্ণগহ্বরের এনট্রপি = হকিং ধ্রুবক x পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল। একটা নতুন ব্যাপার পাওয়া গেল এই যে, এনট্রপি সাধারণত যেকোনো সিস্টেমের আয়তনের সমানুপাতিক হয়। যেমন, একটা ঘরের এনট্রপি বা ঘরের অণু-পরমাণুগুলির বিশৃঙ্খলা ঘরের আয়তনের সাথে সমানুপাতিক। কারণ আয়তন যত বাড়বে, ঘরে অণু-পরমাণুর সংখ্যা তত বাড়বে। ফলে বিশৃঙ্খলা বা এনট্রপিও বাড়বে। কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রে কিন্তু দেখা গেল এনট্রপি ক্ষেত্রফলের সঙ্গে সমানুপাতিক।
    ১৯৭৪ সালে হকিং আরো এগিয়ে নিয়ে গেলেন কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গিকে। তিনি বললেন, কৃষ্ণগহ্বর পুরোপুরি কৃষ্ণ নয়। যেকোনো উত্তপ্ত কৃষ্ণবস্তু থেকে যেমন বিকিরণ নির্গত হয়, তেমনি কৃষ্ণগহ্বর থেকেও বিকিরণ নির্গত হয়। এই বিকিরণ ঠিক কৃষ্ণগহ্বর থেকে আসে না, বরং কৃষ্ণগহ্বরে কিছু পড়লে ঘটনা দিগন্তের কাছ থেকে কোয়ান্টাম এফেক্টসের দরুন তৈরী হওয়া ভার্চুয়াল পার্টিকেল-অ্যান্টিপার্টিকেল জোড়ায় জোড়ায় উগরে দেয় কৃষ্ণগহ্বর। এরই নাম দেওয়া হয় 'হকিং বিকিরণ'। সনাতন কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ বা ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশনের সাথে হকিং বিকিরণের পার্থক্য ছিল এই যে, কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ কৃষ্ণবস্তুটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু হকিং বিকিরণ শুধুমাত্র কৃষ্ণগহ্বরের ভর, কৌণিক ভরবেগ ও বৈদ্যুতিক আধানের ওপর নির্ভর করে। কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে বা যে বস্তুটি কৃষ্ণগহ্বরে পড়ছে সেটি সম্পর্কে বাকি সমস্ত ইনফরমেশন চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়। ব্ল্যাকহোলস হ্যাভ নো হেয়ার। এটাই হুইলারের কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে 'নো-হেয়ার থিয়োরেম'। এইখানেই হল গণ্ডগোল। ফিজিক্সের একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে তাত্ত্বিকভাবে ইনফরমেশনকে কখনও নস্ট করা যায় না। ইনফরমেশন মানে হচ্ছে বিভিন্ন সজ্জা। কম্পিউটারে ইনফরমেশন জমা থাকে ১ ও ০ বিটের সাহায্যে। কিন্তু যখন আমরা কিছু ডিলিট করি তখন কি হয়? বিটের সজ্জাগুলো নস্ট হয়ে যায়। কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে পারিপার্শ্বিকের বাতাসে অণু-পরমাণুর এলোমেলো গতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ঐ ডিলিট হওয়া ইনফরমেশন। যদি আমরা বাতাসের প্রতিটি অণু-পরমাণুর গতি অনুসরণ করতে পারতাম, তাহলে আমরা কিন্তু ঐ ডিলিট হওয়ায় ইনফরমেশন ঘরের বাতাস থেকে অনায়াসে ফিরে পেতে পারতাম। হকিংয়ের তত্ত্ব অনুযায়ী কৃষ্ণগহ্বরে যাই পড়ুকনা কেন, বের হয়ে আসবে একই জিনিস। অর্থাৎ নির্গত বিকিরণ থেকে রাম পড়েছে না শ্যাম পড়েছে সে সম্পর্কে কিছুই জানা যাবে না। ইনফরমেশন যদি ধ্বংস করা না যায়, কৃষ্ণগহ্বর সেকাজ করছে কি করে? এটারই পোশাকী নাম ব্ল্যাক হোল ইনফরমেশন প্যারাডক্স। হকিং দাবী করেছিলেন যে ইনফরমেশন ধ্বংস করা যায়। কিন্তু লিওনার্ড সাসকিন্ড, জেরার্ড হুফ ইত্যাদি বিজ্ঞানীরা হকিংয়ের কথা মেনে নেননি। পরে প্রমাণিত হয় হকিংই ভুল। ব্ল্যাক হোল ইনফরমেশন প্যারাডক্সের সমাধান হিসাবে হাজির হয় হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপল। স্ট্রিং থিয়োরীর আলোয় হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপলকে ব্যাখ্যা করেন সাসকিন্ড। হকিংয়ের কাজ থেকে অবশ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিসের সংকেত পাওয়া যায়। সেটা হচ্ছে এতদিন সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ দিয়ে যে কৃষ্ণগহ্বরকে ব্যাখ্যা করা হচ্ছিল, হকিং সেখানে প্রয়োগ করলেন কোয়ান্টাম তত্ত্ব। তিনি খুব আশান্বিত হয়েছিলেন যে হয়তো আপেক্ষিকতাবাদ ও কোয়ান্টাম তত্ত্বকে কৃষ্ণগহ্বরের পটভূমিকায় মিলিয়ে ফিজিক্সের হোলি গ্রেল 'থিয়োরী অফ এভরিথিং' শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাবে। যদিও তা ঘটেনি এবং জীবনের শেষদিকে এসে হকিং 'থিয়োরী অফ এভরিথিং' সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতেন।
    ১৯৭৪ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়েসে হকিং লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। সাধারণত যিনি ফেলো হন, তাঁকে উঠে গিয়ে একটি খাতায় সই করতে হয়। হকিংয়ের জন্যে খাতাটি নামিয়ে আনা হয় তাঁর হুইলচেয়ারের কাছে। হকিং সই করেন সেই ঐতিহাসিক খাতাটিতে, যার প্রথমদিকের কোনো এক পাতায় আছে স্যার আইজাক নিউটনের স্বাক্ষর। কার্ল স্যাগান রয়্যাল সোসাইটিতে ওইদিন একটি কনফারেন্সে গিয়েছিলেন এবং এই ঘটনাটি তিনি প্রত্যক্ষ করেন। তাঁর 'ব্রকাস ব্রেনঃ রিফ্লেক্শান অন দ্য রোম্যান্স অফ সায়েন্স' বইয়ে সুন্দর বর্ণনা আছে ঘটনাটির। হকিং তাঁর পরবর্তী জীবন মহাকাশতত্ত্বের চর্চাতেই কাটান। ১৯৮০-এর দশকে হকিং আমেরিকান পদার্থবিদ জিম হার্টলের সঙ্গে বিগ ব্যাং তত্ত্বের পরিবর্তে দেন 'নো বাউন্ডারি প্রোপজাল'। বিগ ব্যাং তত্ত্ব বলে যে মহাবিশ্বের জন্মের মুহূর্ত থেকে ১০^-৩২ সেকেন্ডের মধ্যে স্থান-কালের প্রসারণ ঘটেছিল এক্সপোনেনসিয়ালি, যাকে বলে ইনফ্লেশন। তারপর থেকে এখনও মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে, কিন্তু সেই প্রসারণের হার অপেক্ষাকৃত কম। এই তত্ত্বের সমস্যা হচ্ছে ইনফ্লেশনের আগে কি হয়েছিল তা এই তত্ত্বে জানা যায়না। হকিং না-সীমানা প্রস্তাবে বলেছিলেন যে মহাবিশ্বের আসলে কোনো শুরু নেই, শেষও নেই। আমাদের পৃথিবীর উদাহরণ দিয়ে তিনি বুঝিয়েছিলেন যে যদি উত্তর মেরুতে ভাবি মহাবিশ্বের শুরু আর যত দক্ষিণে যাচ্ছি তত সময় এগোচ্ছে, তাহলে উত্তর মেরুর উত্তরদিকে কি আছে এই প্রশ্নের কোনো মানে হয়না। পৃথিবী সসীম কিন্তু পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো সীমানা নেই। সেরকমই আমাদের মহাবিশ্ব। হকিংয়ের এই মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্ব ক্লোজড। ক্লোজড মহাবিশ্বের একসময় সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে নিজের অভিকর্ষের প্রভাবেই শুরু হওয়া উচিত সংকোচন। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে যখন আবিস্কার হল যে আমাদের মহাবিশ্ব, হাবল যেমন বলেছিলেন, শুধু সেরকমই প্রসারিত হচ্ছে না, বরং প্রসারণের হারও ত্বরিত হচ্ছে, তখন আর নো বাউন্ডারি প্রোপজাল ধোপে টিকল না। ফিজিক্সের তত্ত্বে এল ডার্ক এনার্জির কথা। হকিং সারাজীবন প্রচুর চেষ্টা করেছিলেন আপেক্ষিকতাবাদ ও কোয়ান্টাম তত্ত্বকে মিলিয়ে কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটির তত্ত্ব আবিস্কার করতে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। স্ট্রিং থিয়োরীর সত্যতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে তিনি এবং অনান্য অনেক পদার্থবিদ একবিংশ শতাব্দীতে এসে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অসম্ভব মনের জোরে শারীরিক ত্রুটি অতিক্রম করে হকিং গবেষণার কাজ করে গেছেন সারাজীবন। একইসঙ্গে বিজ্ঞানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যে লিখেছেন নানা বই এবং পেয়েছেন বিশ্বজোড়া খ্যাতি। স্টিফেন হকিংকে আইনস্টাইনের সমকক্ষ ভাবলে যেমন ভুল হবে, তেমনি তাঁকে পপুলার সায়েন্সের লোক ভাবলেও একই ভুল হবে। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির পদার্থবিদ। মহাবিশ্বতত্ত্বে তাঁর অবদান আপন গরিমায় চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
  • sm | 52.110.148.237 | ১৫ মার্চ ২০১৮ ২৩:২৩373043
  • খুব ভালো লেখা। প্রাঞ্জল ও মনোমুগ্ধকর।
  • কালকেতু | 55.249.82.86 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০০:০৬373052
  • ধন্যবাদ :)
  • Ishan | 202.189.128.15 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০০:৪৬373053
  • "আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের মূল বক্তব্য ছিল অভিকর্ষের সৃষ্টি হয় স্থান ও কালের বক্রতা থেকে। ধরুন একটা চাদর চার কোণে টানটান করে বাঁধা আছে। এবার ঐ চাদরের ওপর একটা ভারী লোহার বল রাখুন। চাদরটা ঝুঁকে যাবে। এরপর আরেকটা অপেক্ষাকৃত হালকা বল চাদরের রাখলে হালকা বলটা ভারী বলের দিকে গড়িয়ে যাবে। যেন হালকা বলটাকে ভারী বলটা টানছে। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে কোনো বস্তুর ভর এবং শক্তি যত বেশি হবে, সেই বস্তু স্থান ও কালে তত বেশি বক্রতা সৃষ্টি করবে।"

    এই উদাহরণটা চারদিকে দেখছি। কিন্তু চাদরের 'উপর' হাল্কা বল কেমন করে রাখব মহাবিশ্বে? রাখলে চাদরটা ঝুঁকেই বা যাবে কেন? চাদরের একপাশে আরেকটা হাল্কা বল রাখলে সেটা ভারি বলের দিকে গড়িয়েই বা যাবে কেন? মানে, এর সবকটাই ঘটবে, যদি পৃথিবীর উপর হয় পুরোটা। অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণ থাকে। কিন্তু মাধ্যাকর্ষণ থাকলে আর চাদর, বল এসবের দরকার টা কী? ঃ-)

    মোদ্দা কথা হচ্চে, এটা শুনতে সে 'পৃথিবীর কানার দিকে গেলে ধপ করে বাইরে পড়ে যাবেন কিন্তু" টাইপের লাগছে।
  • কালকেতু | 55.249.82.74 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০১:৫২373054
  • আসলে এই চাদরের উদাহরণটা এতো লোভনীয় হয়ে গেছে সাধারণ আপেক্ষিকতা বোঝাতে যে ব্যবহার করলাম। :3 ব্যাপারটা হচ্ছে, সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ অভিকর্ষকে ক্ষেত্র হিসাবে ব্যাখ্যা করে, যেখানে নিউটনের তত্ত্ব অভিকর্ষকে বল হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিল। তাতে সমস্যা কি ছিল? ফিজিক্সের একটা নিয়ম হচ্ছে লোক্যালিটি প্রিন্সিপল। মানে ক বিন্দুতে ঘটা কোনো ঘটনার ফল খ বিন্দুতে তৎক্ষণাৎ পাওয়া সম্ভব নয়। নিউটনের তত্ত্ব এই নিয়মকে লঙ্ঘন করে। দুটি ভরকে রাখলেই যেন তারা পরস্পরকে কাছে টানবে। আসলে তা নয়। আইনস্টাইন লোক্যালিটি প্রিন্সিপলকে গাণিতিকভাবে ব্যক্ত করেন যে, ক বিন্দুতে ঘটা ঘটনার ফল খ বিন্দুতে অন্ততঃ ক থেকে খয়ের দূরত্ব অতিক্রম করতে আলোর যে সময় লাগে, সেই সময় পরে পাওয়া যাবে। যেমন, সূর্য এই মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে গেলেও পৃথিবী নিজের কক্ষপথে যেমন ঘুরছিল তেমনই ঘুরবে আট মিনিট কুড়ি সেকেন্ড পর্যন্ত, কারণ ঐ সময়টা লাগে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছতে। এবার লোক্যালিটি বজায় রেখে আইনস্টাইন যে সমীকরণটা দিলেন সেটার বাঁদিকে রয়েছে স্থান-কালের বক্রতা আর ডানদিকে রয়েছে ভর ও শক্তির ঘনত্ব। বাঁদিক = ডানদিক। অর্থাৎ বস্তুর ভর ও শক্তির ঘনত্ব স্থান-কালকে বক্রতা দেয়, স্থান-কালের বক্রতা বস্তুর গতিপথ নির্ধারণ করে। বক্র স্থান ও কালের মধ্যে বস্তু সেই পথেই চলে যে পথটা সবচেয়ে সোজা বা সরলতম রেখা। যেমন, পৃথিবীর গায়ে আঁকা সব রেখাই তো বক্ররেখা, কিন্তু নিরক্ষরেখা হচ্ছে সরলতম বক্ররেখা। যেকোনো বক্রতলের ওপর এরকম সরলতম বক্ররেখাকেই বলে 'জিওডেসিক'। সুতরাং, আইনস্টাইনের তত্ত্ব অভিকর্ষকে ব্যাখ্যা করে স্থান-কালের বক্রতার দরুন সৃষ্ট পর্যবেক্ষণগত প্রভাব হিসেবে। তাই চাদরের উদাহরণে যেমন বাহ্যিক অভিকর্ষের দরকার পড়েছিল, এক্ষেত্রে তা আর পড়ে না। এই আর কি! ;)
  • pinaki | 90.254.154.67 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৫373055
  • আসলে আমার মনে হয়েছে স্থানের তিনটে মাত্রাকে যেমন আমরা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে ভাবতে পারি, সময়কে সেরকমই একটা মাত্রা হিসেবে কল্পনা করাটা একটু কষ্টকর। প্রথমে 'কাল'কে 'স্থান'এর মতই একটা মাত্রা হিসেবে ভাবতে হবে, তারপর আবার তার বক্রতা কল্পনা করতে হবে - দুয়ে মিলে ব্যাপারটা বেশ জটিল হয়ে যায়। আর এর তো সত্যিই কোনও বাহ্যিক উদাহরণ হয় না। লোকে দেবেই বা কোথা থেকে? চাদর ফাদর যতই বলুক, আল্টিমেটলি সেগুলো তো সবই স্থান বিষয়ক উদাহরণ। এর মধ্যে 'কাল'কে গোঁজা বেশ মুশকিলের ব্যাপার।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৩:৪৫373056
  • ঈশানের প্রশ্নটা দেখে একটা 'অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ' মনে পড়ে গেল - " all analogies are flawed. " :)
    তবে ঈশানের একদমই অঙ্ক পড়া উচিৎ ছিল। এই উপমাটায় আসলে ইমপ্লিসিটলি মাধ্যাকর্ষণ ধরে নেওয়া আছে আর তাই উপমাটা সার্কুলার, এইটা ভেবে বার করতে পারা তারিফযোগ্য অ্যানালিটিকাল এবিলিটির পরিচয়বাহী।

    লেখাটা ভাল লাগল, যদিও কয়েকটা কথা মনে হল।
    ১) মহাবিশ্বের প্রসারণ বলার সময় ফ্রীডম্যান মডেলের কথা এলে আরও একটু ভাল হত মনে হয়।
    ২) "তাঁরা বললেন, কোনোভাবে এরকম গুটিয়ে আসাটা বন্ধ হবে।" --- বস্তুত চন্দ্রশেখর লিমিটের কম ভরের তারাদের সত্যিই হবে, ফের্মি প্রেশারের জন্যে। সেইটা আলোচিত হয়নি বলে হঠাৎ কেন সূর্যের ভরের 1.4 গুণের বেশী ভর হওয়াটা জরুরী পরিষ্কার হয়নি।
    ৩) লেখাটায় খানিক আলোচনা হয়েছে সোয়ার্চাইল্ড মেট্রিক নিয়ে, হকিং-পেনরোজ সিঙ্গুলারিটি থিওরেম প্রসঙ্গে। কিন্তু হকিং-পেনরোজ থিওরেম যতদূর মনে পড়ছে আসলে কের মেট্রিক নিয়ে, সোয়ার্চাইল্ড মেট্রিক নয়।
    ৪) এনট্রপি অংশটা লেখাটায় খুব পরিষ্কার লাগল না, মানে পড়ে খুব কিছুই বুঝলাম না।
    ৫) আর শেষত, জিওডেসিক-কে সরলতম বক্ররেখা ইত্যাদি না বলে যা তাইই বলাই ভাল মনে হয়, বোঝানোর সুবিধার্থে। মানে সবচেয়ে কম দূরত্বের পথটা সরলতম বক্ররেখার থেকে সহজ বোঝা।

    এইগুলো সবকটাই নেহাতই ব্যক্তিগত মতামত। আবারো, লেখাটা মন্দ লাগেনি।

    @পিনাকী,

    আসল মুশকিল বোধহয় চারমাত্রিক কিছু কল্পনা করা, সেইটা কালের মাত্রা বা স্থানের মাত্রা তাতে আলাদা অসুবিধে কিছু হয়কি?
    আর একটা অসুবিধে বক্রতা আমরা extrinsic ভাবে ভাবতে ও বুঝতে অভ্যস্ত, মানে বেঁকা ব্যাপারটা বাইরে থেকে দেখে বেঁকা বুঝি। বলার উপরে পিঁপড়ে চলার সময় ( পিঁপড়ে তৃতীয় মাত্রা দেখতে পাচ্ছে না কল্পনা করে নিয়ে) পিঁপড়ে বলটা বেঁকা বুঝতে পারত কিনা... এই intrinsic curvature এর ধারণা খুব স্বাভাবিকভাবে আসে না আমাদের মাথায়।
  • কালকেতু | 55.249.82.119 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৪:১৭373057
  • ধন্যবাদ সবাইকে :) আমার মনে হয় যে ফিজিক্স ঠিকঠাক বুঝতে গেলে টেক্সটবই পড়া উচিত, পপুলার সায়েন্স ব্যাপারটা থেকে কিছু কিছু ইন্টুইশন পাওয়া যেতে পারে মাত্র, অঙ্ক ছাড়া উপমা দিয়ে তত্ত্ব বোঝা অসম্ভব। হাজার হোক, উপমা-টুপমার তেমন কোনো মূল্য নেই ফিজিক্সে। এ তো আর কথামৃত নয়। ;)
  • দ্রি | 203.90.12.116 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:০৪373058
  • সেই। অভিকর্ষ অভিকর্ষই। ঠিক কেমন সেটা জানতে গেলে ইকুয়েশানাগুলোর দিকে তাকাতে হবে। বেশী তাকালে যদি মাথা ভনভন করে তখন এই চাদরের উপমাটা সাহায্য করতে পারে ম্যাক্সিমাম।

    না, টই পড়ে ইকুয়েশান বোঝা ইম্পসিব্‌ল ব্যাপার। তবে ফিজিক্সের টেক্টবই আর পড়া হয় কই? তাই টইই সই।

    আমি ভাবতে পারি (একজন সাধারণ ক্লাস টুয়েলভ পাস মানুষ হিসেবে) পৃথিবী ইলিপ্টিকাল পথে ঘোরে মাধ্যাকর্ষনের জন্য। অথবা ভাবতে পারি সূর্য্যের চারদিকে স্থান-কালটাই ব্যাঁকা। আমার পৃথিবী ঐ ব্যাঁকা স্থান-কালে সোজাই যাচ্ছে। এতে একই অবজার্ভেশানের দুরকম ব্যাখ্যা হল। ভালো কথা। কিন্তু দ্বিতীয়টাকে আমরা প্রেফার করছি কেন? নিশ্চয়ই দ্বিতীয়টা এমন কিছু অবজার্ভেশান ব্যাখ্যা করছে যেটা প্রথমটা করছেনা। সেইগুলো যদি একটু লিস্ট করেন খুব ভালো লাগবে।

    আরো একটা ব্যাপার বুঝলাম না। শেষ হিসেবে স্টিফেন হকিং কী বিশ্বাস করতেন? বিগ ব্যাং থিওরী না নো বাউন্ডারী প্রোপোজাল?

    আপনার কী প্রেফারেন্স? বিগ ব্যাং থিওরী কতটা বিশ্বাস করা যায়?
  • pinaki | 90.254.154.99 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:১৬373033
  • না না, উপমার কিন্তু ভ্যালু আছে। নিউটোনিয়ান ডিটারমিনিজমে তো আছেই। তার পরের লেভেলটাতেই সমস্যা। সেখানে উপমা একটা এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে সাহায্য করতে পারে। প্রাথমিক জড়তা কাটাতে। কিন্তু ম্যাথামেটিকাল অ্যাবস্ট্রাকশনকে অ্যাবস্ট্রাকশন হিসেবেই নেওয়া এবং চর্চা করা - এটা একটা আলাদা করে শেখার বিষয়। অভ্যাসেরও। সেটাও মাথায় রাখা দরকার।
  • দ্রি | 188.209.42.84 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:২০373034
  • "তবে রাম যে মুহূর্তে সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ অতিক্রম করবে, সেই মুহূর্ত থেকে শ্যাম দেখবে রাম অসীম সময় ধরে কৃষ্ণগহ্বরের দিকে পড়ছে।"

    আচ্ছা, রাম কৃষ্ণগহ্বরে পড়ছে, অ্যান্ড দ্যাট টু, সোয়ার্সচাইল্ড ব্যাসার্ধ ক্রস করে গেছে। শ্যাম অ্যাট অল দেখছে কী করে? কৃষ্ণগহ্বর থেকে তো লাইট আসে না।
  • pinaki | 90.254.154.99 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:২১373035
  • এপ্রসঙ্গে বলি। ব্রায়ান গ্রিনের 'লাইট ফলস' খুব ভালো লেগেছে। অডিও বুক শুনলাম। আমার মত অশিক্ষিতদের জন্য বেশ ভালো।
  • sm | 52.110.136.243 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:৩৬373036
  • লার্জ হেড্রন কলাইডারে কৃষ্ণ গহ্বর সৃষ্টি হলো--এটা নিশ্চয় মিনিয়েচার ভার্সন।
    এর প্রকৃত রূপ কি রকম?
    এর অস্তিত্ব বোঝা গেলো কি?
  • দ্রি | 188.209.42.84 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৫:৩৮373037
  • "এ তো গেল শ্যাম কি দেখবে। কিন্তু রামের অবস্থাটা কি হবে? ... রাম যেই একবার ঘটনা দিগন্ত পেরিয়ে গেল, ব্যাস! খেল খতম! ব্যাপারটা মরে যাওয়ার থেকেও খারাপ।"

    কিন্তু সত্যিই কী রাম কিছু দেখবে না? শ্যামের গায়ে পড়া আলো তো রামের চোখে পৌঁছতে কোন বাধা নেই।

    নাকি, রাম কী দেখবে না দেখবে সেই নিয়ে আমরা কিছু জানতে পারব না। সেই অর্থে 'রাম কিছু দেখবে না'?
  • কালকেতু | 55.249.82.119 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১৭:১৭373038
  • @দ্রি আপনার দুটো ব্যাখ্যার একটা নিউটনের, আরেকটা আইনস্টাইনের। কেন আইনস্টাইনের ব্যাখ্যাটা বেশি ঠিক সেটা ওপরে একটা কমেন্টে লিখেছি।
    'সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ অভিকর্ষকে ক্ষেত্র হিসাবে ব্যাখ্যা করে, যেখানে নিউটনের তত্ত্ব অভিকর্ষকে বল হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিল। তাতে সমস্যা কি ছিল? ফিজিক্সের একটা নিয়ম হচ্ছে লোক্যালিটি প্রিন্সিপল। মানে ক বিন্দুতে ঘটা কোনো ঘটনার ফল খ বিন্দুতে তৎক্ষণাৎ পাওয়া সম্ভব নয়। নিউটনের তত্ত্ব এই নিয়মকে লঙ্ঘন করে। দুটি ভরকে রাখলেই যেন তারা পরস্পরকে কাছে টানবে। আসলে তা নয়। আইনস্টাইন লোক্যালিটি প্রিন্সিপলকে গাণিতিকভাবে ব্যক্ত করেন যে, ক বিন্দুতে ঘটা ঘটনার ফল খ বিন্দুতে অন্ততঃ ক থেকে খয়ের দূরত্ব অতিক্রম করতে আলোর যে সময় লাগে, সেই সময় পরে পাওয়া যাবে। যেমন, সূর্য এই মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে গেলেও পৃথিবী নিজের কক্ষপথে যেমন ঘুরছিল তেমনই ঘুরবে আট মিনিট কুড়ি সেকেন্ড পর্যন্ত, কারণ ঐ সময়টা লাগে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছতে।' অর্থাৎ কিনা নিউটনের ব্যাখ্যা প্রিন্সিপল অফ লোক্যালিটিকে লঙ্ঘন করে, আইনস্টাইনের ব্যাখ্যা তা করেনা।
    https://en.wikipedia.org/wiki/Principle_of_locality

    আইনস্টাইনের তত্ত্ব একটা গুরত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করেছিল। সেটা হচ্ছে বুধগ্রহের পেরিহিলিয়ন প্রিসিশন। সব কক্ষপথই ইলিপটিক বটে, তবে সূর্যের যত কাছে যে গ্রহ অবস্থিত, তার কক্ষপথ তত বেশি উৎকেন্দ্রিক। এইটার ব্যাখ্যা নিউটনের তত্ত্ব থেকে পাওয়া যায় না। আইনস্টাইনের তত্ত্ব বুধের কক্ষপথ যেরকম প্রেডিক্ট করে, সেটা বাস্তবের সাথে যথাযথভাবে মিলে যায়। বিজ্ঞানের ইতিহাসে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদকে যতবার যাচাই করা হয়েছে, তত নাকি আর কোনো তত্ত্বকে করা হয়নি। বিভিন্ন পরীক্ষাগুলো নিজের লিঙ্কটা থেকে পড়তে পারেন (যদিও উইকিপিডিয়া খুব নির্ভরযোগ্য নয়)।
    https://en.wikipedia.org/wiki/Tests_of_general_relativity

    যাঁরা সায়েন্স নিয়ে ইলেভেন-টুয়েলভ অব্দি পড়েছেন, তাঁরা বোধহয় লিওনার্ড সাসকিন্ডের লেকচারগুলো ইউটিউবে ফলো করলে ফিজিক্সের থিয়োরীগুলো বুঝতে পারবেন। ওগুলো পপুলার সায়েন্স আর জটিল ম্যাথেমেটিক্সের মাঝামাঝি আর কি!
    বিগ ব্যাং সম্পর্কে হকিংয়ের মতামতের ব্যাপারে ওনার 'বিগিনিং অফ টাইম' লেকচারটা পড়ে দেখতে পারেন।
    http://www.hawking.org.uk/the-beginning-of-time.html
    ওনার একটা বেশ ভুলভাল ধারণা ছিল যে মহাবিশ্ব যদি সংকুচিত হতে শুরু করে তাহলে সবকিছু উল্টোদিকে চলবে। যেমন, বিবর্তন ঘটবে উল্টোদিকে। ক্রমশ বুদ্ধিমান থেকে বোকা প্রাণীদের উদ্ভব ঘটবে। বিগ ব্যাং তত্ত্বের একটা মূল সমস্যা হচ্ছে যে ইনফ্লেশনের আগে কি ঘটেছিল। কিছুদিন আগে 'ইউনিভার্স ফ্রম নাথিং' বলে একটা বইয়ে একজন পদার্থবিদ বলেন যে আমরা যেটাকে নাথিং ভাবছি, সেই নাথিংয়ে আসলে রয়েছে ভ্যাকুয়াম এনার্জি। অর্থাৎ মহাবিশ্বের কোনো একটা জায়গা থেকে সব কণা, বিকিরণকে সরিয়ে নিলেও থেকে যাবে ভ্যাকুয়াম এনার্জি, যাকে সরানো ইম্পসিবল। এই ভ্যাকুয়াম এনার্জি কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের দরুন জন্ম দিতে পারে স্থান ও কালের। এই দাবীটা নিয়ে নিওঅ্যাথিস্টরা খুব উল্লসিত হয়ে ওঠেন যে এতদিনে ধর্মওয়ালাদের 'কি করে মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল ঈশ্বর না থাকলে?' প্রশ্নের সরাসরি জবাব পাওয়া গেছে। কিন্তু এইসব ফচকেমি বাদ দিয়ে স্রেফ যাঁরা পদার্থবিদ্যা নিয়ে মাথা ঘামান, তাঁরা খুব রাগ করেছিলেন। কারণ ভ্যাকুয়াম এনার্জির কথা কোয়ান্টাম তত্ত্ব বললেও তা থেকে স্থান-কাল সৃষ্টি কি করে হতে পারে সেটার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই এখনো পর্যন্ত। বিগ ব্যাং এখনো অব্দি তাই অসম্পূর্ণ তত্ত্ব। কিন্তু এই তত্ত্ব মানুষের চিন্তাধারায় একটা ভীষণ উল্লেখযোগ্য মাইলস্টোন।
    তবে বিশ্বাস কিচ্ছুটি করবেন না। বিজ্ঞান স্রেফ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা। :D

    @পিনাকি উপমা কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে সেটার ওপরই সব ডিপেন্ড করে। উপমার অপব্যবহারের উদাহরণ হিসাবে একটা বইয়ের নাম করি। মণি ভৌমিকের 'কোড নেম গড'। রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন 'বিজ্ঞানে ঈশ্বরের সংকেত।' চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়াকে বলছে কোয়ান্টাম লিপ! ইলেকট্রনকে বলছে তীর্থযাত্রী! উপমা বুঝুন। আর রঞ্জনবাবু তো আবার রবীন্দ্রনাথের মানসপুত্র। পুরো বই জুড়ে রবীন্দ্রনাথের কবিতার যা খুশি ব্যাখ্যা। প্রতি প্যারার শেষে 'তাই তো রবীন্দ্রনাথ বলেছেন...' :p :p

    @দ্রি ব্ল্যাক হোলে পড়ার ব্যাপারটা কিরকম হবে সেটা সাসকিন্ডের এই লেকচারে খুব সুন্দর বোঝানো আছে।


    @এসএম এই ব্যাপারটা আমি একদম জানি না শেষ অব্দি কি হয়েছিল। ওরকম ব্ল্যাক হোল কি ডিটেক্ট হয়েছিল? নিচের লিঙ্কটা পড়লুম। পড়ে দেখতে পারেন।
    https://phys.org/news/2015-03-mini-black-holes-lhc-parallel.html
  • দ্রি | 186.10.99.200 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ২২:৩২373039
  • সাসকিন্ডের লেকচার শুনলাম। কিছু বুঝলাম, কিছু ঘেঁটে গেলাম। তবে এইটুকু বুঝলাম আসল যেখানে ঘেঁটে যাচ্ছি সেটা হল ইভেন্ট হরাইজন। ঐটা মনের মতো করে বুঝে গেলে ব্ল্যাক হোলকে মেনে নিতে আর অত কষ্ট হবে না। ইভেন্ট হরাইজন ব্যাপারটা বড্ড কাউন্টারইন্টিউটিভ কনসেপ্ট।

    বব আর অ্যালিস। একজন ইনার্শিয়াল রেফারেন্স ফ্রেম, অন্যজন ইউনিফর্মলি অ্যাক্সিলারেটেড রেফারেন্স ফ্রেম। দুজনের দৃষ্টিভঙ্গি দুরকম। ফাইন। আমরা যখন ব্ল্যাক হোল দেখি, আমরা নিশ্চয়ই বব নই, অ্যালিস। অর্থাৎ আমরা ইউনিফর্মলি অ্যাকসিলারেটেড রেফারেন্স ফ্রেম। এইটা কেন?
  • দ্রি | 186.10.99.200 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ২২:৩৮373040
  • এই লোক্যালিটি প্রিন্সিপ্‌লের ব্যাপারটা নিউটনের তত্ত্বের সময় ওঠে। কিন্তু সেটা তো ঠেকা দেওয়া হয় ফিল্ডের কনসেপ্ট দিয়ে। যেখানে বলা হচ্ছে যে একটি অবজেক্ট থাকলেই তার গ্র্যাভিটেশানাল ফিল্ড রয়েছে, ইরেস্পেক্টিভ অফ অন্য বডি আছে কি নেই। অন্য বডি থাকলে সেটা ইনস্ট্যান্টেনিয়াসলি ঐ ফিল্ডের সাথে ইন্টার‌্যাক্ট করবে। এতে করে ঐ ইন্ট্যার‌্যাকশান স্পীড হ্যান ত্যান বাপাস করে দেওয়া হয়। একই ব্যাপার ইলেকট্রিক, ম্যাগনেটিক ফিল্ডের ক্ষেত্রেও। যদ্দুর মনে পড়ে আমরা ঐভাবেই পড়েছি।
  • দ্রি | 186.10.99.200 | ১৬ মার্চ ২০১৮ ২২:৪২373041
  • আর সাসকিন্ড কিন্তু লেকচারের শেষে প্রশ্নোত্তর সেশানে ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারে এম্পিরিকাল এভিডেন্স পাওয়া, এবং এক্সপেরিমেন্ট করার শর্টকামিংএর কথাও স্বীকার করলেন।
  • কালকেতু | 113.51.149.147 | ১৭ মার্চ ২০১৮ ০০:২৯373042
  • ১) ওইটাই তো আপেক্ষিকতাবাদের 'আপেক্ষিক' অংশটা। ;) কে বব কে অ্যালিস সেটা মূল ব্যাপার নয়। মূল ব্যাপার একজন অভিকর্ষের টানে পড়ছে, মানে আক্সিলারেটেড হচ্ছে। অন্যজন হচ্ছে না। ফলে রিলেটিভলি দুজনেই দেখবে অপরজন অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে কিন্তু সে নিজে হচ্ছে না। লাইট কোনের ছবিটায় হরাইজন্টাল অ্যাক্সিসটা একমাত্রিক স্থান (x axis), ভার্টিকালটা সময় (t axis)। মানে ভেলোসিটি হচ্ছে গ্রাফের স্লোপের রেসিপ্রক্যাল। এবার অ্যাক্সিলারেটেড গতিপথটা হবে হাইপারবোলা আর ইউনিফরম ভেলোসিটির গতিপথটা হবে সরলরেখা। বব যদি পড়ে, অ্যালিস দেখবে বব অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে, অর্থাৎ হাইপারবোলা, অর্থাৎ অ্যাসিম্পটোটিক্যালি ইভেন্ট হরাইজন অ্যাপ্রোচ করছে। অসীম সময় পর হরাইজন পেরোবে। কিন্তু বব নিজে দেখবে সে ইউনিফরমলি যাচ্ছে এবং ফট করে হরাইজন পেরিয়ে গেল। সে বলবে অ্যালিস আসলে অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে। এই আর কি! এছাড়া আপনি যদি ভাবেন অ্যালিস অবজারভার, সে স্থির থাকবে না কেন? সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা হচ্ছে তখন ঐ হাইপারবোলা আর সরলরেখা এই দুটো গতিপথের মধ্যে সরলরেখাটা স্রেফ ভার্টিকাল হবে (স্লোপের রেসিপ্রোকাল শূন্য), বাকি ব্যাখ্যাটায় কোনো পরিবর্তন ঘটবে না সেটার জন্যে।
    ২) হ্যাঁ, ওরকমই পড়েছি বটে। তবে ফিল্ডের কনসেপ্টটা নিউটনের পরে এসেছে।
    https://en.wikipedia.org/wiki/Gravitational_field
    ৩) সে তো বটেই। ব্ল্যাকহোলের ব্যাপারস্যাপার সবই তাত্ত্বিক, অঙ্ক কষে বের করা। কিছুদিন আগে বোধহয় ব্ল্যাকহোলের ছবি তোলা গেছে। নাকি এখনো যায়নি? মনে পড়ছে না ঠিক কোথায় খবরটা পড়েছিলাম।

    সাসকিন্ডের সেন্স অফ হিউমারটা কিন্তু লক্ষ্য করার মতো। :3 ফেইনম্যান সম্পর্কে ওনার টেড টকটা অনেকেই নিশ্চয় দেখেছেন। আমি লিঙ্কটা এখানে দিয়ে রাখলাম।
  • pinaki | 90.254.154.67 | ১৭ মার্চ ২০১৮ ১৪:৫১373044
  • সাসকিন্ডের অ্যারো অফ টাইম লেকচারটা গতকাল শুনলাম। কিছু প্রশ্ন আছে। আসলে সিস্টেম্যাটিক পড়াশুনো ছাড়া এরকম খাপচা খাপচা পড়ে শুনে প্রশ্ন করা উচিৎ কিনা সেটাই বুঝতে পারছি না।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 | ১৮ মার্চ ২০১৮ ১৪:৩২373045
  • দ্রি -এর
    "আমরা যখন ব্ল্যাক হোল দেখি, আমরা নিশ্চয়ই বব নই, অ্যালিস। অর্থাৎ আমরা ইউনিফর্মলি অ্যাকসিলারেটেড রেফারেন্স ফ্রেম। এইটা কেন?"

    এইটার উত্তর প্রসঙ্গে কালকেতু লিখলেন "মূল ব্যাপার একজন অভিকর্ষের টানে পড়ছে, মানে আক্সিলারেটেড হচ্ছে। অন্যজন হচ্ছে না।"
    এইটা ঠিক বুঝলাম না। যে পড়ছে তার ফ্রেমটাই তো নন-অ্যাক্সিলারেটেড-এর মত ( মানে গ্র্যাভিটেশনাল ফিল্ডের জায়গায় শুধুই অ্যাক্সিলারেশন থাকলে আর না থাকলে যা হত সেই হিসেবে), নয়?
  • কালকেতু | 55.249.82.62 | ১৮ মার্চ ২০১৮ ১৮:০৩373046
  • প্রশ্নটা ঠিক বুঝলুম না। মনে হচ্ছে আমিও ঠিক বোঝাতে পারিনি। মিসকমিউনিকেশন! :p
    আরেকবার চেস্টা করছি, কেমন?
    বব কৃষ্ণগহ্বরের দিকে পড়ছে। অ্যালিস পর্যবেক্ষক (অর্থাৎ স্থির হয়ে আছে অথবা ইউনিফরম ভেলোসিটিতে চলছে)।
    ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    অ্যালিস কি দেখবে?
    ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    অ্যালিস দেখবে বব অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে। অর্থাৎ অ্যালিসের ফ্রেম অফ রেফারেন্স থেকে লাইট কোনের ছবিতে ববের গতিপথটা হবে হাইপারবোলা, অ্যালিসের নিজের গতিপথটা হবে সরলরেখা (অ্যালিসের বেগ শূন্য হলে সরলরেখাটা ভারটিকাল হবে)। অর্থাৎ অ্যালিস দেখবে বব আসিম্পটোটিক্যালি ইভেন্ট হরাইজনকে অ্যাপ্রোচ করছে এবং অসীম সময় পর হরাইজনে পৌঁছবে। কারণ অ্যালিসের গতিপথের যেকোনো বিন্দু থেকে ৪৫ ডিগ্রি স্লোপের সরলরেখা (যা কিনা যেকোনো ফ্রেম অফ রেফারেন্সে আলোকরশ্মির গতিপথ) টানলে তা ববের হাইপারবোলিক গতিপথকে সবসময় ছেদ করবে।
    -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    বব কি দেখবে?
    -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    বব দেখবে অ্যালিস অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে। অর্থাৎ ববের ফ্রেম অফ রেফারেন্স থেকে লাইট কোনের ছবিতে অ্যালিসের গতিপথটা হবে হাইপারবোলা, ববের নিজের গতিপথটা হবে সরলরেখা (এই ছবিটাই সাসকিন্ড এঁকেছেন)। অর্থাৎ বব দেখবে সে দিব্যি ইভেন্ট হরাইজন পেরিয়ে গেল। কিন্তু ইভেন্ট হরাইজন পেরিয়ে যাবার পরে আর সে অ্যালিসকে দেখতে পাবে না। কারণ ইভেন্ট হরাইজন পেরোনোর পর ববের গতিপথের কোনো বিন্দু থেকে ৪৫ ডিগ্রি স্লোপের সরলরেখা (অর্থাৎ আলোকরশ্মি) টানলে তা আর অ্যালিসের হাইপারবোলিক গতিপথকে কোনো বিন্দুতে ছেদ করবে না।
    --------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    ফুটনোটঃ
    --------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    ১) ব্যবহারের সুবিধের জন্যে পদার্থবিদরা অনেকক্ষেত্রে আলোর বেগকে একক (১) ধরেন। তাই লাইট কোনের ছবিতে ৪৫ ও -৪৫ ডিগ্রি স্লোপের সরলরেখা পজিটিভ ও নেগেটিভ এক্স অক্ষ বরাবর আলোর গতিপথকে নির্দেশ করে।
    ২) অ্যাক্সিলারেশন আছে মানেই যেহেতু কোনো বল কাজ করছে (নিউটনের প্রথম সূত্র), তাই অ্যালিস (এবং অ্যালিসের ফ্রেম অফ রেফারেন্সে বসে আমরা) ববের অ্যাক্সিলারেশনের কারণ হিসাবে বলবে কৃষ্ণগহ্বরের অভিকর্ষীয় টান ববের ওপর কাজ করছে।
    ৩) আবার উল্টোদিকে, বব তার ফ্রেম অফ রেফারেন্স থেকে অ্যালিসের অ্যাক্সিলারেশন ব্যখ্যা করতে গিয়ে বলবে অ্যালিসের ওপর একটা বল কাজ করছে। এই বলটাকেই বলা হয় অলীক বল বা সিউডো ফোর্স। এর একটা সহজ উদাহরণ সকলেরই পড়া। সেটা হচ্ছে সেন্ট্রিফিউগ্যাল ফোর্সের ব্যাখ্যা। ধরুন, মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাতে একটা ঢিল-বাঁধা সুতোর একপ্রান্ত ধরে ঢিলটাকে বাঁইবাঁই করে ঘোরাচ্ছি। আমি আঙ্গুলের ওপর যে টান অনুভব করব সেটা অভিকেন্দ্র বল। কিন্তু আপনি যদি ঐ মাঠের চারদিকে ঢিলটার সঙ্গে সমান্তরালভাবে ঘুরতে থাকা একটা ট্রলির ওপর দাঁড়িয়ে থাকেন, আপনি দেখবেন ঢিলটা সুতোর প্রান্তে স্থির হয়ে আছে আর সুতোটা টানটান হয়ে রয়েছে। যেন সুতোটা একটা লাঠি। কিন্তু আপনি জানেন যে সুতোটা ওরকম টানটানভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, যদি না সুতোটার প্রান্তে বাঁধা ঢিলটাকে বাইরের দিক থেকে কেউ টেনে রাখে। এই যে সিদ্ধান্তে আপনি এলেন যে, ঢিলটাকে কেউ বাইরে থেকে টেনে রেখেছে অর্থাৎ ঢিলটার ওপর কোনো বল প্রযুক্ত হচ্ছে, এইটাই সিউডো ফোর্স।

    আগের কমেন্টটা বাদ দিয়ে শুধু এই কমেন্টটা পড়ে দেখুন ব্যাপারটা বোঝাতে পারলুম কিনা। :)
  • sswarnendu | 41.164.232.149 | ১৮ মার্চ ২০১৮ ১৯:৫৫373047
  • এখনো ঠিক বুঝিনি। দুঃখিত হয়ত খুবই বিরক্ত করছি।

    আমিই বরং একটু বুঝিয়ে বলি কোথায় অসুবিধে হচ্ছে।

    ১) বব বলবে অ্যালিস অ্যাক্সিলারেটেড ফ্রেমে আছে। অ্যালিস বলবে বব। তাই তো? তাহলে "অ্যালিস পর্যবেক্ষক (অর্থাৎ স্থির হয়ে আছে অথবা ইউনিফরম ভেলোসিটিতে চলছে)।" --- এইটার মানে কি? মানে অ্যালিসের ফ্রি ফল হচ্ছে না বলতে চাইলে বুঝলাম, নইলে বুঝিনি।

    আর যা বুঝিনি সেইটা ফুটনোট দুই ও তিন। মানে 'অভিকর্ষীয় টান' ও সিউডো ফোর্সের ধারণা সবই নিউটনিয়ান। সিউডো ফোর্স নিঊটনিয়ান মেকানিক্সে অ্যাক্সিলারেটেড ( নন-ইনার্শিয়াল) রেফারেন্স ফ্রেমে দ্বিতীয় গতিসূত্রের কারেকশন ফ্যাক্টর মাত্র। জেনেরাল রিলেটিভিটিতে ইনার্শিয়াল রেফারেন্স ফ্রেম বলেই কিছু নেই আর অভিকর্ষও 'বল' নয়, স্পেসটাইমের কার্ভেচারের ম্যানিফেস্টেশন। আর ইক্যুইভ্যালেন্স প্রিন্সিপল অনুযায়ী ম্যাধ্যাকর্ষণের এফেক্ট ও ফ্রেমের অ্যাক্সিলারেশন তুল্যমূল্য, একই কথা। এইটা ওইটা, অন্যটা নয়-- এমন কথার কোন মানে নেই। তাই নয়?

    কে কি দেখবে নিয়ে অসুবিধে কিছু নেই, সেইটা এমনিই আঁক কষে বার করা যায়। ব্যাখ্যাগুলো বুঝতে পারছি না আসলে। সেইটা আপনার বোঝানোর খামতি বলে ধরে নেবেন না। আমি বেশিরভাগ ফিজিক্সের বই এর এক্সপ্ল্যানেশনই বুঝতে পারি না, ভীষণ গোল গোল লাগে। সেইজন্যেই আপনি লিখছেন তাই যুক্তিগুলো বুঝতে চেষ্টা করছি মাত্র। ফিজিক্সে আমি খুবই কাঁচা।
  • দ্রি | 61.15.63.229 | ১৮ মার্চ ২০১৮ ২২:১২373048
  • "------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    অ্যালিস কি দেখবে?
    ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    অ্যালিস দেখবে বব অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে। অর্থাৎ অ্যালিসের ফ্রেম অফ রেফারেন্স থেকে লাইট কোনের ছবিতে ববের গতিপথটা হবে হাইপারবোলা, অ্যালিসের নিজের গতিপথটা হবে সরলরেখা (অ্যালিসের বেগ শূন্য হলে সরলরেখাটা ভারটিকাল হবে)। ...

    -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    বব কি দেখবে?
    -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    বব দেখবে অ্যালিস অ্যাক্সিলারেটেড হচ্ছে। অর্থাৎ ববের ফ্রেম অফ রেফারেন্স থেকে লাইট কোনের ছবিতে অ্যালিসের গতিপথটা হবে হাইপারবোলা, ববের নিজের গতিপথটা হবে সরলরেখা ..."

    এই দুই ক্ষেত্রের দুটো হাইপারবোলা কি ভিন্ন রকম দেখতে? সাসকিন্ডের আঁকা হাইপারবোলা তো দেখেছি। অন্য হাইপারবোলাটা কি অন্যরকম?
  • দ্রি | 151.255.162.38 | ১৮ মার্চ ২০১৮ ২২:২৭373049
  • ১) রসিক বুড়োদের লেকচার শুনতে আমারো খুব ভালো লাগে। মানে একটা ওয়ার্ম ফাজি ফীলিং হয়। কিন্তু সে এক জিনিষ, আর বোঝা অন্য জিনিষ।

    ২) স্বর্নেন্দুঃ "দুঃখিত হয়ত খুবই বিরক্ত করছি।"

    এই ব্যাপারটা আমারও মাঝে মাঝে মনে হয়। তাই এ প্রসঙ্গে বলি, এত প্রশ্ন সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেওয়ার কোন দরকার নেই। যত খুশি সময় নিন। মনে রাখবেন টই হল টাইমপাস। টাইম থাকলে তবে তো পাস।

    ৩) পিনাকীঃ "আসলে সিস্টেম্যাটিক পড়াশুনো ছাড়া এরকম খাপচা খাপচা পড়ে শুনে প্রশ্ন করা উচিৎ কিনা সেটাই বুঝতে পারছি না।"

    বুঝতেই পারছেন, জীবনযুদ্ধ সামলে সিস্টেম্যাটিক পড়াশুনোর সম্ভাবনা খুবই কম। খাপচা খাপচা প্রশ্নই করে ফেলুন লজ্জা না করে। ছোট্ট একটা কনসেপ্ট বুঝতে পারলে সেটাও একটা লাভ। বিরাট গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরী আমরা বুঝে যাব, টই পড়ে, কিংবা ইভেন বই পড়ে সেই আশা না করাই ভালো।
  • দ্রি | 15.9.158.75 | ২১ মার্চ ২০১৮ ১২:৪৬373051
  • ও, তাহলে শিফটটা কিরকম হবে সেটাই বুঝতে পারছি না। কারণ, একই যদি হত, তাহলে --

    "কারণ অ্যালিসের গতিপথের যেকোনো বিন্দু থেকে ৪৫ ডিগ্রি স্লোপের সরলরেখা (যা কিনা যেকোনো ফ্রেম অফ রেফারেন্সে আলোকরশ্মির গতিপথ) টানলে তা ববের হাইপারবোলিক গতিপথকে সবসময় ছেদ করবে।"

    এইটা হত না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন