এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তুমি মেয়ে

    Jolly
    অন্যান্য | ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ | ৯৬৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Jolly | 124.29.225.20 | ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ১৫:০৪371980
  • 'একা স্কুলে যেতে পারবি তো হিয়া?' জানতে চায় হিরণ্ময়ী|

    'পারব মা|' হেসে জানায় হিয়া|

    'কোনদিন তো তোকে একা ছাড়িনি‚ ভরসা পাচ্ছি না| তোর বাবাও এইসময় এখানে নেই যে তোকে স্কুলে দিয়ে আসবে|' অনেকটা যেন স্বগতোক্তির মত করেই কথাগুলো একবারে বলে শ্বাস টানতে থাকে| সামান্য কথা বলাতেও কষ্ট হচ্ছে| এবারের জ্বরটা বিছানায় ফেলে দিয়েছে এমন যে কিছু করতেই কষ্ট হচ্ছে| অথচ একা ঘরে কিছু না করেও তো থাকা যায় না| মেয়েটা নেহাত ছোট‚ ওর জন্য ভাতে ভাতটাও তো ফুটিয়ে দিতে লাগে| কিন্তু বাইরে বেরতে পারছে না হিরণ্ময়ী| সমানে মাথা ঘুরছে| মনে হচ্ছে পড়ে যাবে|

    'তুমি কিচ্ছু ভেবো না মা‚ আমি ঠিক স্কুলে যেতে পারব| এই তো বড়রাস্তায় গিয়ে বাসে উঠেই বলে দেবো কাকুকে আমি কোথায় নামব| কাকু ঠিক নামিয়ে দেবে|' হিয়া বেশ বিজ্ঞের মত কথাগুলো বলে|

    'দিন দিন পাকা বুড়ি হচ্ছিস' মেয়ের কথা শুনে হেসে বলে ওঠে হিরণ্ময়ী|

    হিয়াকে বাসের ভাড়া আর কিছু বেশি টাকা দিয়ে মন না চাইলেও বিদায় জানায় হিরণ্ময়ী| দিনকাল মোটেই ভালো না| আজকাল চারিদিকে যা ঘটছে‚ তাতে ভরসা হয় না| বয়স-অবয়সটা এখন আর কোন ব্যাপার না| তার ওপর হিয়ার বয়সের তুলনায় বাড়বাড়ন্তটা একটু বেশিই| মেয়েটাকে তাই নানা বাধা-নিষেধের মধ্যে বেঁধে ফেলেছে| পাড়ার মুদির দোকানে পাঠাতেও এখন দ্বিধা হয়| পাড়ার ছেলেগুলোর সাথে এই সেদিনও মেয়েটা খেলেছে‚ কিন্তু এখন তাদের দৃষ্টি গেছে বদলে|

    'মা মাগো মেয়েটাকে রক্ষা করো মা'| দুহাত ক্পালে ঠেকায় হিরণ্ময়ী|

    ....

    হিয়ার মনে আজ বড় আনন্দ|কত্তদিনের মনের ইচ্ছে আজ তার পূরণ হবে| তাদের বাড়িটা স্কুল থেকে বেশ খানিকটা দূরে| রোজ রোজ মা পৌঁছতে যায়‚ বাবা কলকাতায় থাকলে বাবাও নিয়ে যায়| কিন্তু এমন নিছক একা স্কুলে যাবার কথা বাবা-মা ভাবতেই পারে না| ভাগ্যিস মায়ের জ্বরটা জব্বর হল তাই তো একা একা যাওয়ার সুযোগ হল| তাদের ক্লাসে কত মেয়েই তো একা আসে| তাদের বেশিরভাগের বাড়ি অবশ্য কাছাকাছির মধ্যে| তাতে কি সে তো রাস্তা চেনে| রোজই তো যাচ্ছে| অবশ্য পিঠের ব্যাগটা আজ তাকে বইতে হচ্ছে‚ অন্যদিন তো মা বয়| সে বেশ খালি-হাত পায়ে দুলে দুলে হাঁটে| মা অবশ্য এই দুলে দুলে হাঁটা হাঁটাট একদম পছন্দ করে না| ওতে নাকি শরীর দোলে| তার শরীরটা একটু বেশি ভারী| ক্লাসের সবার থেকেই সে একটু বেশি লম্বা আর ভারিক্কি| ভারী বলেই তো মা সেই কবে থেকেই তাকে বডিস পরায়| অথচ দিতি‚ রুপরেখা‚ অনুশীলা ওরা তো সবে শুরু করেছে|

    বড়রাস্তায় পৌঁছতেই বাসটা এসে দাঁড়ায়| উঠে যায় হিয়া| এইসময় রোজই ভালো ভিড় থাকে| অফিসযাত্রীদের ভিড়টাই বেশি| একটাও বসার সিট পায় না| তবে দাঁড়াবার জায়গাটা পেয়ে যায়| একটা করে স্টপেজ পেরোয় আর ভিড় বাড়তে থাকে| বাড়তে বাড়তে শরীরের ওপর চাপ আসতে থাকে|

    'এই মেয়েটা ব্যাগটা সামনের দিকে নাও' জনৈকা যাত্রীনি বলে|

    মেয়েটা তাই নেয়| রোজ তো এসবের ভার তাকে বইতে হয় না| আজ বইতে গিয়ে বুঝে উঠতে পারে না ঠিক কি করবে| মা তো বলে দিলেই পারত যে ব্যাগটা সামনের দিকে নিতে হয়| মা তার গায়ে চাপ আসতেই দেয়না|

    ভিড় আরও বাড়ে| সিঁড়িতে লোক ঝুলছে| গরমে দরদর করে ঘাম ঝরছে সবার| গায়ের ওপর গা দিয়ে একটা লোক সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছে‚ বিরক্ত লাগে হিয়ার| বার কয় 'সরে দাঁড়ান না' বলেছে সে| সরে দাঁড়ায় আবার গায়ের ওপর চলে আসে|

    'এই মেয়ে এদিকে আয়‚ বসবি|' ডাকে একজন যাত্রীনি|

    ভিড় ঠেলে ঠেলে একটু একটু করে এগিয়ে যায় হিয়া যাত্রীনির দিকে|

    'আজকে তোর মা আসেনি?'

    'না| মায়ের শরীর ভালো নেই|'

    'এখানেই দাঁড়া| পাশের জন সামনের মোড়টায় নেমে গেলে‚ আমি সরে যাবে‚ তুই এখানটা বসে যাবি'

    ঘাড় কাৎ করে সন্মতি জানায় হিয়া| আসলে মায়ের সাথে যায় যখন বসার জায়গা পেলেই মায়ের মোবাইল নিয়ে খুটখাট করে‚ গেম খেলে| মা অনেকের সাথে কথা বলে| এই অ্যান্টিটার সাথেও নিশ্চয় কথা বলে| না হলে তো আর অ্যান্টিটা তাকে চিনত না|

    নির্দিষ্ট মোড়ে সে বসার জায়গা পায়| ব্যাগটা কোলের ওপর নিয়ে বসে পড়ে| বেশ নিশ্চিন্ত লাগে| আর তিনটে স্টপেজ গেলেই তার স্কুল| নেমে গেলে শান্তি| ভিড়টা এখন একটু একটু করে হালকা হচ্ছে| তবু তার গায়ের ওপর চাপটা আসছে| তাকিয়ে দেখে ঐ লোকটা তার শরীরের ওপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে|একটা শক্ত কিছু অস্বস্তিকর তার শরীরে ঠেকছে| হঠাৎ করেই খুব বমি পায় তার|

    'অ্যান্টি' বলেই পাশের যাত্রীনিকে পেড়িয়ে মুখটা বাড়িয়ে দেয় জানলা দিয়ে| হুড় হুড় করে বমি হয়ে যায় বেশ খানিকটা|

    'আর করবি'? পাশের যাত্রীনি পিঠে হাত বুলোতে বুলোতে জানতে চায়|

    ঘাড় নেড়ে জানায় না|

    ব্যাগ থেকে জল বার করে ঘাড়ে- মুখে- গলায় ছিটিয়ে দেয় জনৈকা যাত্রীনি|

    'সুস্থ লাগছে তোর এবার'?

    'হ্যাঁ| অ্যান্টি তুমি প্লিজ আমায় জানলার ধারে বসতে দেবে?'

    'নে বস'|

    হিয়া বসে সেখানে| লোকটা কোথায় গেল| দেখছে না তাকে| একটা আতঙ্ক কেমন যেন তাকে তাড়া করে| আর কোনদিন সে একা একা স্কুলে আসবে না| কোনদিন না| চোখ দিয়ে নিস্তব্ধ জল নিঃশব্দে গড়িয়ে পড়ে| স্টপেজ আসে‚ নেমে যায় হিয়া| স্কুলে পৌঁছে যায় সে| স্কুল করে কোনরকমে| একটা অস্বস্তি সারাক্ষণ তাকে তাড়া করে বেড়ায়| স্বাভাবিক হতে পারে না কিছুতেই| মাত্র বারো বছরের হিয়ার শরীরটাকে দুশমন মনে হয়| 'কেন ভগবান এমন একটা শরীর তাকে দিলে| ছেলেদের মত শরীর হলে কি খুব খারাপ কিছু হত? ' মনে মনে বলে সে|

    ঢং ঢং করে ঘন্টা পড়ে ছুটির| হিয়ার যেন কাঁপুনি আসে শরীর জুড়ে| আবার তো বাসে করেই ফিরতে হবে তাকে| আবার যদি ঐ লোকটা ওঠে বাসে| ধীরে ধীরে বের হয় স্কুল থেকে| বেশিরভাগেরই মা এসেছে‚ কারও কারও বাবা‚ দিদি‚ দাদা বা অন্য কেউ|

    স্টপেজে দাঁড়াতেই বাস পেয়ে যায়| সিটও| এবার আর কিছু হয় না| সে নির্বিগ্নে বাড়ি পৌঁছে যায়| দেখে মা দরজা খুলে দুরের পথে চোখ মেলে অসুস্থ শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে| ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মাকে|

    'মা আমাকে আর কখনও তুমি একা পাঠিও না মা স্কুলে| তুমি সুস্থ হয়ে যাও'| কেঁদে ফেলে হিয়া|

    'কি হয়েছে মা‚ বল আমাকে'| চিন্তিত হয়ে পড়ে হিরণ্ময়ী|

    হিয়া খুলে বলে সব| হিরণ্ময়ীর বুক কাঁপে| মেয়ের মা হওয়া যে কি সেই মেয়ের মা মাত্রেই জানে| বুক বুক করে মেয়েকে সব ঝড় ঝাপটা থেকে রক্ষা করে সে|

    তুমি শুধু বুঝে নাও‚ তোমার নিজেকেই তোমাকে রক্ষা করতে হবে| না হলে কামুক কিছু পুরুষের হাত তোমার শরীর ছোঁয়ার জন্য তৈরি| শরীরের সামনের দিকে ব্যাগ নিয়ে চলতে তোমাকে হবে‚ যাতে তা অন্যকে প্ররোচিত না করে| বাসের সিটে তোমাকে সিঁটকে বসতে হবে যাতে কারও শরীর উত্তপ্ত না হয়ে উঠতে পারে‚ দাঁড়িয়ে থাকলেও তোমাকে এমনভাবে দাঁড়াতে হবে যাতে তার মাংসল অঙ্গানু উত্তেজিত হয়ে তোমাকে পীড়ন করতে না পারে‚ আর করলেও তোমার নিজের ভিতরে পুষে রাখতে হবে রাগ আর লজ্জা| তুমি বলতে পারবে না| তোমার পোশাক সুরুচিপুর্ণ হতে হবে যাতে পুরুষের তোমাকে দেখে লালসা জাগে না| সব তোমাকে করতে হবে মা| পুরুষের কোন দায় নেই| সে বলবে শিকার সামনে থাকতে কি সে উপোস করবে| সব দায় মেয়েদের |

    না এত কিছু হিরণ্ময়ীর বলা হয় না হিয়াকে| শুধু শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরে হিয়াকে বলে ফিসফিসিয়ে ''কিছু হয়নি মা ‚ কিচ্ছুটি হয়নি| '
  • | ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ১৯:১৫371981
  • ধুসস পোষাল না। এই হিরন্ময়ী দেবী অন্তত মেয়েকে সেফটিপিন ব্যবহারের শিক্ষা দিতে পারতেন। জোরে চিৎকার করার শিক্ষা দিতে পারতেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন