এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Mani Ruzzaman | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১০:৪৯371390
  • মানুষের মতই দেখতে বুঝলেন! নাক, কান, চোখ, হাত, পা একদম মানুষেরই মত। দেখে আলাদা কিচ্ছু বোঝার জো নেই। অভিষেক রায়ের কথা বলছি। ফেসবুক প্রোফাইল দেখলাম ওর। স্ত্রীকে নিয়ে ছবি পোস্ট করা। স্বাভাবিক ফ্যামিলি ম্যান। আরেকজন মফিজুদ্দিন, সে বোধয় ফেসবুকে নেই। কিন্তু তাকে দেখেও মানুষ বলেই মনে হবে নিশ্চয়! নাক, কান, চোখ....। যারা জানেন না এরা কারা, তাদের বলি, এই দুজন একটা চারবছরের বাচ্চাকে ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত। চার বছর! ওইটুকু বাচ্চাকে দেখেও কারো কাম জাগতে পারে! ভীষন, ভীষন অসুস্থ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। গনধর্ষন, শিশুধর্ষনও আমাদের আর বিচলিত করেনা। একেকটা ঘটনা ঘটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই হয় কদিন, টিভি চ্যানেলে এক্সপার্টদের রোজগার হয় কদিন, তারপর যেই কে সেই। কঠোর শাস্তি চাই এদের জন্য। জেল- ফেল নয় প্রকাশ্যে তড়পে তড়পে মারা হোক এই মানবেতর কীটগুলিকে। তবে যদি পৃথিবীর পাপের বোঝা কিছু কমে।

    ওপরের বালছাল র‍্যান্টিং পড়লেন? এবার একটু কাজের কথায় আসা যাক। শিশুকাম বা পিডোফিলিয়া একরকমের মানসিক বিকার। Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders অনুসারে, পিডোফিলিয়া হল,” paraphilia( sexual perversion) involving intense and recurrent sexual urges towards and fantasies about prepubescent children that have either been acted upon or which cause the person with the attraction distress or interpersonal difficulty.” পিডোফিলিয়া কোন নতুন ব্যাপার নয় বা ইদানিং কালে বেড়ে গেছে তাও নয়। সব যুগে, সব সময়ে, ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে শিশুরা এই বিকৃতকাম মানুষদের শিকার হয়েছে। এখন ইন্টারনেটের যুগে, মিডিয়ার যুগে আমরা বেশী বেশী এসব ঘটনার কথা জানতে পারছি এই যা।

    পিডোফাইল নারী বা পুরুষ দুইই হতে পারে এবং এদের শিকার মেয়ে বা ছেলে বাচ্চা দুইই হতে পারে। ছেলে বাচ্চারা পিডোফাইলদের থেকে সুরক্ষিত এমনটা ভাবার কোন কারন নেই। পরিসংখ্যান বলছে, চেনা পরিচিত লোকদের হাতেই বাচ্চারা বেশী নিগৃহীত হয়। চেনাপরিচিতের একটা বিরাট অংশ আবার আত্মীয়স্বজন। কাকা, দাদা, জ্যেঠা, মামা, মামী, দিদি এমনকি বাবা অবধি হতে পারে নিগ্রহকারী। কার হাতে বাচ্চাকে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকবেন আপনি? আরো ভয় দেখাই আসুন। পিডোফাইলরা নানান ভাবে প্ল্যান করে শিশুদের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে। একজন পিডোফাইলের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক এমন চাকরির চেষ্টা করা, যেখানে প্রচুর শিশুর সঙ্গ পাওয়া যায়। একটা শিশুর সাথে ভাব জমানো, তার সাথে স্বাভাবিক মেলামেশা করা, চকলেট ইত্যাদি দিয়ে তার বিশ্বাস অর্জন করা, এসবই হতে পারে একজন পিডোফাইলের প্ল্যানের অংশ। এরপরের ধাপে আসে নানান ছলে শরীরে হাত দেওয়া, তার শরীর ছুঁতে বলা, পর্ণোগ্রাফিক ম্যাটেরিয়াল দেখানো- গ্রূমিং বলে একে।

    কথা হচ্ছে তাহলে করনীয় কি? সত্যি বলতে জানি না। বাচ্চাদের বেসিক গুড টাচ, ব্যাড টাচ শেখান দরকার। কেউ যদি তার প্রাইভেট পার্টসে হাত দেয় বা নিজের প্রাইভেট পার্টস ছুঁতে বলে তাহলে সে যেন আপত্তি করে। কেউ ওরকম করলে সে যেন বাবা মা কে এসে জানায় এসব। কোন বাচ্চা যদি কারো কাছে যেতে না চায়, বা ভয় পায় তাহলে সেটাকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে- সেই ব্যাক্তি সম্পরকে আপনার যতই ভাল ধারনা থাকুক না কেন। ইন্টারনেটে এসব নিয়ে গাদাগাদা আর্টিকল আছে। সেগুলো পড়ুন, সচেতন হন।

    এ তো গেল একদিক। পিডোফাইলদের দিক থেকে দেখি এবার। বেশীরভাগ পিডোফাইলের এই বিকৃতি জন্মগত। একজন সাধারন মানুষ যেমন সমকামী বা বিষমকামী হয়, তেমনি এরাও শিশুকামি হয়। শিশুর প্রতি কামভাব তাদের চয়েস নয়। কারো মধ্যে এই বিকৃতি থাকলেই যে সে শিশুনিগ্রহ করবে এমন কোন ব্যাপার নেই। অনেকেই তাদের বিকৃতির বিপদ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং এইজন্য তারা ডিপ্রেশনে ভোগে। কিছু সার্ভেতে দেখা গেছে অনেক শিশু নিগ্রহ করে এতটাই অপরাধবোধে ভোগে যে তারা আত্মহত্যা করার কথাও চিন্তা করে বা কিছু ক্ষেত্রে চেষ্টাও করে।

    পিডোফিলিক টেন্ডেন্সি থাকলেই যে সে শিশুনিগ্রহ করবে তা জরুরি নয়। এই কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা শিশুনিগ্রহ করতে চাই না অথচ তাদের মধ্যে সেই টেন্ডেন্সি আছে, তাদের যদি কাউন্সেলিং করা যায় তাহলে শিশুনিগ্রহ অনেক কম হতে পারে। জার্মানি এই ব্যাপারে পথপ্রদর্শক। project Dunkelfield( ইংরেজিতে ডার্ক ফিল্ড) এ পুরো জার্মানি জুড়ে ট্রিটমেন্ট এবং কাউন্সেলিং প্রোগ্র্যাম চলে।পেশেন্টের পরিচয় স্ট্রিক্টলি গোপন রাখা হয়। এমনকি পরিচয় অবধি জানতে চাওয়া হয়না সেখানে। দুঃখের বিষয় খুব কম দেশেই এই ধরনের সুবিধে আছে, ভারতে তো অনেক দুরের কথা। অথচ এরকম সুযোগ থাকা খুবই জরুরি। প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিউর তো সবাই জানি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন