এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাতাঞ্চী | 132.167.237.169 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৪৮369841
  • ফেসবুক গুরু থেকে
    ###############

    Ipsita Pal
    কী মতামত? অনেকেই নিশ্চয় একমত হবেন না। তাঁদের কথাটাও শুনি। ধর্ষণ রেটোরিক কেন ব্যবহৃত হল, সেই তর্ক নাহয় আপাতত থাক।
    -------------------------------------------------------------
    ।।শৈশব ধর্ষণ।।
    Debalina Ghosh
    আজকাল চতুর্দিকে ধূম পড়েছে ধর্ষণের। যে পারছে যাকে পারছে ধর্ষণ করছে। যেভাবে খুশি ধর্ষণ করছে। কতো রকমারি অভিনবত্ব তার! বেশিরভাগ অপরাধী যে ধরা ছোঁয়ার ঊর্ধে বলাই বাহুল্য। তবে, ঘরে ঘরে যে আরেক রকমের ধর্ষণ হয়ে চলেছে, এখনো তার বিচারযোগ্যতার কোনো প্রশ্নই ওঠেনি। অপরাধীরা নিশ্চন্তে আছে, কারণ তাদের অপরাধকে কেউ অপরাধ বলে গ্রাহ্যই করেনা। সবাই সমস্যার কথা আলোচনা করছে ঠিকই, কিন্তু সমাধানের বেলা, বুড়ো আঙুল তুলে কলাগাছ দেখিয়ে দিচ্ছে। এঁজ্ঞে, ঘরের ছেলেপিলেগুলানের 'নেকাপড়া'র কতা কইচিনেগো কত্তামশাইরা। বলছি, ফিউচার সোসাইটির ইয়ংস্টারদের কেরিয়ার ওরিয়েন্টেড এডুকেশনের মতো গালভরা সিরিয়াস কথা।
    এইসব ভবিষ্যতের সিপাহীরা ব্যাগ বোতল নিয়ে ডেরায় ভর্তি হয়, দেড় থেকে দুই বছর বয়সে। অলিতে গলিতে বিখ্যাত বাবারা ডেরার ব্রাঞ্চ খুলে রেখেছে। পরিবারের লোকজন (বাবা-মা) হাত ধরে, পরম বিশ্বাসে ডেরায় দিয়ে আসে দুধের শিশুদের। বিশ্বাস করে বাবারা যোগবলে না হোক, পরম কৌশলে, পড়াশোনার অগাধ জলের তরণী পার করিয়ে দেবে। এই বয়সের শিশুরা অনেকে কথাই বলতে শেখেনা ভালো করে। তবু তাদের স্কুলে পাঠাতে হয়। যুক্তি হলো, ওরা প্লে স্কুলে যায়, সোস্যাল হতে, ভদ্রতা শিখতে। এক্ষেত্রে শিশুরা 'ম্যানারস্' শিখতে না পারলে, গার্জেন কল হয়। প্রশ্ন হল, কোন ধরণের ম্যানারস্? ক্লাসে বসার কায়দা, মনোযোগ দেখানোর কায়দা, টিচারের কথা শোনা, টিফিন খাওয়া, মারামারি না ক‍রা, Good morning, sorry, thank you, excuse me বলবার কায়দা! দুই বছরের শিশুর পক্ষে এসবের অন্যথা নিতান্তই মেনে নেওয়া যায় না। তাই স্কুল, গার্জেনদের নির্দেশ দেয়, বাড়িতে তাদের ঠিকমত সুশিক্ষা এবং শিষ্ঠাচার শেখানোর জন্য। তাদের আ্যটিটিউডে অনুক্ত বক্তব্য থাকে, 'বাপ-মা হয়েছেন, আর বাচ্চাকে শিক্ষা দিতে পারেন না? বাড়ি থেকে সব শিখিয়ে পাঠাবেন'।

    বাবা-মা অবাক হয়ে ভাবে, যে আমরাই যদি সব শেখাব, তবে এই বয়সে স্কুলে পাঠানোর দরকার কি? কিন্তু, প্রথম থেকে ভর্তি না করলে নামী দামী স্কুলে সিট পাওয়া মুশকিল। অগত্যা! এখন, স্কুল তো আর চব্বিশ ঘন্টার জন্য বাচ্চার দায়িত্ব নেয় না। তাই বাচ্চাকে শিক্ষিত ক'রে তোলার তাগিদে, অফিস ফেরত মা-বাপের ওভার স্ট্রেসড্, ডিপ্রেসড, ফ্যাটিগড্ দায়িত্ববোধ যখন চাগাড় দেয়, শিশু টি হয়তো তখন স্কুল আর সারাদিনের 'একলা' খেলার শেষে ক্লান্ত। এমন সময় সৌজন্যমূলক শিক্ষাদানের প্রক্রিয়া শুরু হলে, গোড়াতেই বাবা-মায়ের শীতল স্নেহের আশ্রয়টুকু হারিয়ে ফেলে শিশু। বাবা-মা নিজেরা না পারলে, প্রাইভেট টিউটর রাখে। যারা স্কেল, বেত, ইত্যাদি ব্যবহার না করলেও, গলাবাজির চোটে দাবড়িয়ে রাখে শৈশবকে। ইনসেস্ট রেপ, টিচারের রেপ, এর থেকে ঠিক কতোটা আলাদা? একটা চোখে দেখা যায় না, কোনো প্রমাণ থাকেনা, আর অন্যটায় থাকে!

    প্লে স্কুল নামক এই হাস্যকর ধোঁকার টাঁটির পর্ব সমাপ্ত হলে, প্রবেশ ঘটে, ডেরার খাস মহলে। বই-খাতার মোট কাঁধে, পড়াশোনার দৌড় শুরু হলে, সেই যে তারা ঝুঁকতে শেখে, কলার বোন আর শিরদাঁড়া সোজা করতে ভুলে যায়। রেস, রেস আর রেস! ইঁদুর দৌড় নয়, ভালো করে ভেবে দেখবেন, খচ্চরের দৌড়! শুধু সবাই মিলে ঘোড়া ভেবে, ওদের দু-চোখের পাশে ঢাকনি এঁটে দেয়। ওরা রেস জিতে গেলে, মা-বাবা, টিউটর, স্কুল সবাই নাকি লটারি পাবে। কিন্তু ঘোড়াগুলো লাল ফিতের ফিনিশিং লাইন ছাড়া আর কিছুই চিনতে শেখেনা। যাহোক, রেস শুরু হলে রেপও শুরু হয়। শিশুটির সুকুমার মন কর্ষিত হবার বদলে, ঘরে বাইরে লাগাতার ধর্ষিত হবার ফলে, নিতান্তই বঞ্জর হয়ে পড়ে। ক্রমে খচ্চরের মতো মোট বওয়া ছাড়া, তারা আর কোনো কাজে লাগেনা।

    স্কুলে ঘনঘন ডাক পড়তে থাকে বাবা মায়ের। প্রতিবার, অপরাধীর মতো একরাশ হীনমন‍্যতা নিয়ে, জোড়ায় কিংবা একা একাই তারা হাজিরা দেয় স্কুলে। শুনতে হয় অনেক কিছু। পড়াশোনায় ভালো নয়, এমন ছেলে-মেয়েরা কোনোদিনই, 'ভালো' ছিল না। কিন্তু, তাদের বাবা-মাও ভালো না, এটা হাল-ফ্যাশন। স্কুল শুধু গোছ গোছ টাকা নেবে, চোদ্দ বছর পরের বোর্ড এক্সামে টপ র‍্যাঙ্কের আসনটা কায়েম রাখতে। একজনও যদি এইট্টি পার্সেন্টের নীচে নম্বর পায়, স্কুলের মান থাকবে? সেই মান বাঁচানোর দায় আজ থেকেই নিতে হবে গার্জেনদের। নার্সারির প্রগ্রেস রিপোর্ট দেখে মধ্যমেধার দিদিমণিরা ভয় দেখাবে, শিশুর অন্ধকার ভবিষ্যতের। ভন্ড বাবারাও তো, ঠিক এভাবেই পরকালের ভয় দেখায়, তাই না? এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, 'মা' নামক গার্জেনটির ওপর টিচারদের বড্ড গায়ের জ্বালা থাকে। বাবা-মা একসঙ্গে গেলেও, মা মানুষটিকেই আগে ওরা আক্রমণ করে, 'আর ইউ ওয়র্কিং, ম্যাম?'। তখন, 'বেরোজগার' মায়েরা পড়ে মহা ফ্যাঁসাদে। বাচ্চা পিছিয়ে থাকলে, সব দায় তার। করেটা কী সে সারাদিন? মা হয়েছে, বাচ্চা কে কিছু শেখাতে পারেনা? টিচারের কথার টোনে, ঊহ‍্য থাকে ঠোঁট বাঁকানো কটাক্ষ 'তাও যদি রোজগার করতেন!' কিন্তু, তাই বলে রোজগেরে মায়েরা যে নিস্তার পায়, তা মোটেও নয়। কারণ, সময় কম বলে, তাদের এক ছিঁটে শ্বান্তনা বাক্য বেশি পাওনা মাত্র। কিন্তু, অফিস থেকে ফিরে বাচ্চাকে সময় বেঁধে পড়ানো, পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, বন্ধুদের বাড়ি নিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি নির্দেশের দাওয়াই একইরকম থাকে। পাপমুক্তির আশায়, বেরোজগার মায়েরা দিনভর স্কুলগেটের কাছে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকে, আর সন্তানের উজ্বল ভবিষ্যতের পথ প্রশস্থ করার উপায় খোঁজে। এসব মিটিং এ টিচাররা সন্তানপালনের ক্ষেত্রে বাবাদের ভূমিকাকে (স্পেশাল কেস ছাড়া) ধর্তব্যের বাইরে রাখে। কারণ, তারা একে রোজগেরে, তায়, বাবা!

    এখন, যারা বছরের পর বছর মেশিনের প্রোডাকশন করে, তারা তো কখনই ভাবতেও পারেনা, মানুষের মধ‍্যে প্রত্যেকটা শিশু আলাদা মনন ও ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। ফলে, যখনই কোনো বাচ্চাকে ছকভাঙা আচরণ করতে দেখে, ভড়কে যায়। নিজেরা তাদের বুঝতে পারেনা। এবং নিজেদের সেই অক্ষমতা ঢাকতে কুড়ি হাজারের মাস মাইনে করা, সার্টিফিকেটধারী সাইকোলজিস্ট কে শিখণ্ডী ক'রে বাবা-মায়ের সামনে হাজির করে। সেই সাইকোলজিস্ট আপনার শিশু কে মেশিনের দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ ক'রে, 'অস্বাভাবিক' ঘোষণা করে। তারপর আপনাকে এমন সমাধানের নির্ঘন্ট বাতলায়, যা পালন করতে গেলে আপনাদের দুজনকেই যাবতীয় কাজকর্ম মাথায় তুলে, নিজেদের জীবনপাত করে বাচ্চা মানুষ করতে হবে। ত্রাস তৈরি করা হয়। আপনার সন্তান পিছিয়ে পড়ছে, কিন্ডার গার্ডেনে প্রোমোশন পাবেনা! সোসাইটি তে রেপুটেশন, সন্তানের কেরিয়ারের চিন্তা আপনার রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। আপনি বাড়ি গিয়ে, টিউটর, আয়া, হবি ক্লাসের ইনভেস্টমেন্ট বাড়িয়ে দেন। সন্তানকে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টার্গেট ফুলফিল করানোর জন্য, তাকে ঘুষের পর ঘুষ দেন। তার আবদার মতো খেলনা, চকলেট, কার্টুনের সেই তালিকা, ক্রমশ বাড়তে বাড়তে ইউরোপের ভেকেশন, লেটেস্ট মোবাইল, ব্র্যান্ডেড প্রোডাক্টে পৌঁছে, কবে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, আপনি টের পান না। এসব সামাল দিতে গিয়ে নাকানি-চোবানি, আপনি একলাই তো খাবেন না! নিজের জীবনে বাঁচার মজা হারিয়ে ফেলেও, যখন সন্তানের আশাপ্রদ উন্নতি দেখতে পাবেন না, তখন, মনের মধ্যে গেঁজিয়ে ওঠা , ঝাঁঝালো ফ্রাস্টেশন, খরচ করবেন কার ওপর? ঘরে বর/বৌ- বাচ্চা আছে, বাইরে সমাজ আছে। বাচ্চাটা আল্টিমেটলি আপনার সেই অসভ্যতাটুকু ঝপ ক'রে কপি করে নেবে। আপনি ঠ্যাকাতে পারবেন না। আর আপনি যেমন তাকে দিনের পর দিন কার্টুনের লোভ দেখিয়ে, হোম ওয়র্ক করিয়েছেন, সেই পথে হেঁটেই সে একদিন আপনাকে ব্ল‍্যাকমেল করবে নিজের স্বার্থে। না পেলে আত্মহত্যা! জীবন যাদের কাছে যন্ত্রণা, তারা জীবনের মূল্য কেন দেবে? যেকোনো মুহূর্তে শেষ হয়ে যেতে পারে, শিশুর ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আপনার এতো ত্যাগ, নিজের এবং সন্তানের প্রতি বঞ্চনা। কচি বয়স থেকে, যে শুধু আঘাত পেতে, আর করতে শিখছে, তাকে আর হাতে করে কী শেখাবেন? ম্যানার শেখাবে স্কুল? ছো! ওরা পয়সা গুণবে, আর আপনার ওপর চাপ দেবে, আপনার সন্তানের ওপর চাপ দেবে। আপনার যা হয় হোক! কিন্তু, যার ভবিষ্যতের জন্যে এতো কিছু, তার দায় কে নেবে?

    বাইরের লোকে যখন ধর্ষণ করে, যতো না যন্ত্রণা হয়, ঘরের লোকের কথার বিষ, তার থেকে অনেক, অনেকগুণ বেশি যন্ত্রণা দেয়। আজও বহু রেপ ভিকটিম, প্রাণে বেঁচে গেলেও, সমাজের ভয়ে সুইসাইড করে। সমাজের মুখটা তাদের কাছে তুলে ধরে বাড়ির লোক। সেটাও তো রেপ! ইনসেস্ট রেপের মতোই জঘন্যতম, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ! তবে আর স্কুলের কথায় তাল মেলানো কেন? বাচ্চাগুলো আজকাল বড্ড একা। ওদের সঙ্গী নেই, ভাই-বোন নেই, বন্ধু নেই, ঠাকুমা-দিদিমা নেই (তাঁদের চিরন্তন ভূমিকা পালনের অর্থে) কল্পনা নেই, রূপকথা নেই, আনন্দ নেই, হৈচৈ নেই, ভালোবাসা নেই, ভাগাভাগি নেই, মনুষ্যত্ব নেই! আছে কেবল বাবা আর মা। তাদের তো অন্তত পাশে থাকতে হবে। নয়তো নীল তিমি এসে গ্রাস করবে যখন, আমরা শুধু দর্শক হয়ে থাকব, আর ভাবব, আগে কেন খেয়াল করিনি!

    আমাদের দেশে বাচ্চাদের মোটর স্কীল ঠিকঠাক ডেভেলপ করে, পাঁচ বছর বয়সে। তাই শিশুদের হাতেখড়ির চল ছিল পাঁচ বছরে। পাঁচ বছরেই গুরুগৃহে শিশু কে দান করত বাবা-মা। কাজেই তার আগে যে বাচ্চারা ঠিকমতো পেন- পেনসিল ধরতে পারেনা, তা' স্পষ্ট। তবু পশ্চিমের কিছু দেশের টুকলি ক'রে আমরাও আমাদের বাচ্চাদের বুলি ফোটার আগে স্কুলে পাঠাচ্ছি। কিন্তু সেই সব দেশের মতো, এইসব স্কুলে ওয়র্কিং পেরেন্ট্সদের সুবিধার্থে অফিস আওয়ারে বাচ্চাদের রাখা হয়না। তার জন্য বাবা মাকে অতিরিক্ত খরচ ক'রে, আয়া বা ক্রেশের ব‍্যবস্থা করতে হয়। নতুবা গ্র‍্যান্ড পেরেন্টের সাহায্য এবং খোঁটা উভয় সহ‍্য করতে হয়। আমরা এমন দেশের স্কুলের কপি করিনা, যাদের জলবায়ুর কারণে, বছরে মোটে ছ'মাস ক্লাস হয়। দেশের বাইরে যাবারও প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশেই, হিমালয়ের কোলে প্রত্যন্ত এলাকায় মাত্র ছ'মাসের স্কুল বসে, তারাও বোর্ড পাশ করে, ভালো রেজাল্ট করে। হয়তো সবাই খুব ভালো নয়। কিন্তু বড়ো হয়ে সবাই নিজের ভাগ্যে ক'রে খায়, লড়ে খায়। বড়ো হবার পরই তো ল'ড়ে মজা, হার-জিতে মজা। তার আগে একটু নাহয় খেলতে শিখুক ছোটরা, শুধুমাত্র খেলার আনন্দে! সবাই জেতে না। না জিতলেও বাঁচার আনন্দ কমে যায় না। লড়াই করাটাই আসল, টিকে থাকাটাই আসল, সেটুকু শিখুক ওরা। আমাদের দেশের নোবেল পাওয়া কবি স্কুল পাশ করেনি, চার্লি চ্যাপলিন ভিক্ষে করেছে, পিকাসো অন্যের ছবি বিক্রি করতে গিয়ে ছবি আঁকতে শিখেছে, আইনস্টআইন অঙ্কে ফেল, এসব আমরা জানি। চোখ তুলে চারপাশে তাকালে দেখতে পাই, কোনো ডিগ্রী নেই, এমন হাজারো ব্যবসায়ীদের কোম্পানিতে চাকরি করছে বড় বড় ডিগ্রীধারী অসংখ্য মানুষ! বাস্তব হলো, এদেশে খবরের কাগজওয়ালা সাইন্টিস্ট এবং প্রেসিডেন্ট হয়ে দেখিয়েছে। এক বস্তির মেয়ে এই রাজ্যের তিরিশ বছরের ইতিহাস বদলে দিয়ে দেখিয়েছে। তাই ঘাবড়ে না গিয়ে, সন্তানকে সাইকোলজিকাল ধর্ষনের থেকে রক্ষা করুন। খচ্চরের রেসের থেকে বেরিয়ে আসুন। চোখের ঢাকনি খুলে দিয়ে পৃথিবীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিন শিশুর। প্রয়োজনে স্কুলের অন্যায়ের মোকাবেলা করুন। ঢাল হয়ে দাঁড়ান। ভরসা জুগিয়ে সন্তানকে শুধু বলুন 'ল'ড়ে যা বাচ্চু, ময়দান ছাড়িস না' ।

    ---দেবু
    -------------------------------------------------------------
    Rajashri Sarkar
    https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1077483469050684&id=845072138958486&hc_location=ufi
    আমাদের এলাকার একটি school. এরকম initiative শুনেছি এই রাজ্যে প্রথম
  • Shixa | 116.222.14.140 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৫369842
  • এগুলো কি কলকাতার সমস্যা? পঃ বঃ অন্য দু একটা ছোট শহরে বা ভারতের রাজধানীতে এসব কথা কানে আসেনা, নিজের অভিজ্ঞতাও নেই।
    আজই দুজন মা এর সাথে আলাপ হল, সেপ্টেম্বর-পরীক্ষা-পুজো এসব কথাও হল। তাদের বাচ্চারা গোয়েঙ্কা আর একটা কোন স্কুলে পড়ে, কেজি টু আর ক্লাস টু। তারা বলল বাচ্চাদের সেপ্টেম্বরে কোন আলাদা করে পরীক্ষা হয়না, কিচু ইন্ফর্মাল ক্লাস টেস্ট হয়। আমার সন্তানও এভাবেই তার শিশুবেলা কাটিয়েছে। এখন মিডল স্কুলে তাকে রীতিমত ১১ টা পেপারের পরীক্ষা দিতে হয়, তবে তাতে তার এবং আমাদের কোন সমস্যা হয়না। আর হ্যাঁ কোনদিন আমাদের 'গার্জেন কল' ও হয় না, 'পিটিএম' গুলো ভীষন কন্স্ট্রাকটিভ। তিন বছর বয়সে আমার সন্তান স্কুল শুরু করে ও সব মিলিয়ে বিভিন্ন জায়গার চারটে স্কুলে সে পড়াশোনা করেছে/করছে। একই অভিজ্ঞতা। তবে স্কুল গুলো একটাও কলকাতার নয় !
  • swati | 127.194.43.23 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২১:০১369843
  • দু কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। শৈশব ধর্ষণ – কাকে বলছি এবং কেন? আমার বাবা আমি জানি বড় হয়েছেন গ্রামের মধ্যে – মাঠে ঘাটে ঘুরে বেরিয়ে তার যে জীবন কেটেছে, আমার কলকাতা-গত শৈশব তার থেকে অনেকটাই আলাদা। আমরা অনেক কিছু বেশি পেয়েছি আবার অনেক কিছুই পাই নি। আবার আমার সময়ের থেকে আমার সন্তানদের শৈশব অন্য রকমের, অন্য সময়ের। এবার আসি চাপের প্রশ্নে। আমি স্কুলে যেতে শুরু করেছি পাঁচের পরেই। বেসরকারী কিন্ডারগার্ডেন স্কুল। হ্যাঁ শিক্ষার বেসরকারীকরণ কিন্তু সেই সত্তরের দশকের থেকেই শুরু। তারপর একটু বেলাইন হয়ে শেষে যে স্কুলে স্থিতু হলাম, সেখানে লোক মুখে শোনা গেল অসম্ভব চাপ। বাচ্চারা দিন রাত পড়েও পাস করতে পারে না নাকি। এবং সত্যিই ক্লাস এইট থেকে নাইনে উঠতে আমাদের স্কুলে একটি সেকসন প্রায় ঘচাং ফু করে উড়িয়ে দেওয়া হত – সেই বাড়তিদের ধরিয়ে দেওয়া হত টিসি। ... এবার কথা হল সেই চাপটা কে কি ভাবে নেবে! যদি অভিভাবকের কোন স্ট্যাটাস-ইস্যু থাকে যে সন্তান ক্লাসে ফেল করলে জীবন বৃথা, তাহলেই সর্বনাশ! আর অভিভাবকের যদি সন্তানের গুণ-দোষ সম্বন্ধে ঠিক মত ধারণা থাকে, এবং তিনি যদি অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য জীবনপাত না করেন, তাহলে তো তাঁরই উচিত সন্তানের পাশে দাঁড়ান। অভিভাবক যদি ঠিক থাকেন, তাহলে স্কুলের সাধ্য নেই শিশুদের উপর চাপ তৈরি করার। হাজারটা গার্জেন কল, আর পিটিএম করেও না! ওসব গার্জেন কলের ভয় দেখাবেন না মশাই, বছরে একটা করে ছোটবেলায় বাঁধা ছিল!

    তাহলে যে অভিভাবকরা সন্তানের উপর এহেন চাপ তৈরি করেন, তাঁরা কেন করেন ? কারণটা মুলত দু রকমের – সন্তানটির ভবিষ্যতে কি হবে? আর একটি কারণ অভিভাবকের নিজস্ব অতৃপ্ত মানসিকতা। আমি যা পাই নি বা পারি নি, সেটা সন্তানের মধ্যে দিয়ে মিটিয়ে নেওয়ার সাধ। তৃতীয় কারণটি অভিভাবকের অবুঝপনা। সন্তানের সুখ-অসুখের তুলনায় ইগো, স্ট্যাটাস, নিজের কম্পিটিটিভ মানসিকতাকে বেশি মাথায় রাখা। কিছু অপরিণত মনের শিক্ষক তাতে ইন্ধন যোগাতে পারেন মাত্র! কিন্তু দায়টা কি শুধু তাদের? অভিভাবক ঠিক থাকলে, পিটিএমের কথা এ কান দিয়ে শুনে ও কান দিয়ে বার করেও দিতে পারেন!

    আর শৈশবের নিঃসঙ্গতা কিন্তু অতটাও চিন্তার বিষয় না। শৈশব কিন্তু স্বপ্ন দিয়ে ফাঁক ভরানর মন্ত্র জানে। আমরা ছোটবেলায় শুনেছি অবহেলিত বাচ্চারা নাকি ছোট বয়েসে প্রেমে পড়ে। তখন প্রেম ব্যাপারটা সমাজে একটু ট্যাবু ছিল তো। পড়ে শুনলাম লোনলি চাইল্ডরা ড্রাগস নেয়। আর এখন শুনছি তারা ব্লু হোয়েল খেলে। তাই কেমন সন্দ লাগে যে নিঃসঙ্গতার আড়ালে কি আর কোন আর্থ-সামাজিক কারণ লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, যে দোষ আসলে শৈশবের না, বড়মানুষেরই ?
  • pi | 24.139.221.129 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২১:২৩369844
  • শৈশবের নিঃসঙ্গতা কিন্তু অতটাও চিন্তার বিষয় না।

    এটাই কালকের তর্কে লিখছিলাম। মা বাবাকে সব সময় সন্তানকে সময় দিয়ে যেতেই হবে, নইলে একাকিত্ব আসবে, অনেক সমস্যা হবে, এমন নাই হতে পারে। হয়না এমন অনেক কেস আছে।
    একা থাকা মানেই কিন্তু একাকিত্ব নয়। একা নিজের একটা জগত, বইপত্তর , গাছপালা, খেলাধূলা নিয়ে , এও কিন্তু দিব্বি গড়ে নেওয়া যায় আর তাতে দিব্বি মজাসে থাকা যায়। নিজের জগত তৈরি হয়ে গেলে কিন্তু তার মজাই আলাদা। তবে হ্যাঁ, এই বইপত্তর, বন্ধুবান্ধব , খেলাধূলা , নাটক, নানারকম অনুষ্ঠান, এসব কিছুই না থাকলে একাকিত্ব আসতে পারে। সেগুলো কেন থাকছে না অনেক ক্ষেত্রে, সে প্রশ্ন রইল।
  • Rabaahuta | 132.167.22.211 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২১:৩১369845
  • 'শৈশবের নিঃসঙ্গতা কিন্তু অতটাও চিন্তার বিষয় না। '

    খুবই একমত। অ্যালোন আর লোনলি নিয়ে কি যেন বলে ইঙ্গরেজীতে।
  • pi | 24.139.221.129 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২১:৩৬369846
  • হ্যাঁ, একা থাকা মানে নিঃসঙ্গতা, আর একাকিত্ব। আলোন আর লোনলি মনে হয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন