এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ডটপেন

    T
    অন্যান্য | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ | ৪৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • T | 212.142.119.118 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৭:৩৪366113
  • পার্টি অফিসের বাইরের দেওয়ালে হাতে লেখা ছোট্ট পোস্টার, লেলিনের জন্মদিন সম্পর্কিত। লাল রঙে লেখা। ঝড়জলে অস্পষ্টপ্রায়। তার ঠিক নীচে আরেকটিতে রাইটার্স অভিযানের ডাক। সন তারিখ পুরোনো। দরজার কড়ায় ঝুলছে ছোট্ট মরচে ধরা তালা। ভিতরে টিমটিমে আলোয় মান্ধাতার আমলের দলিল দস্তাবেজ। জ্যোতি বসুর ছবি। তিনটি লোক, একটি তক্তপোষ, একটি চেয়ার, আধখানা আরশোলা। হবে হয়তো।
    দরজার বাইরেটায় হরেক পশরা সাজিয়ে হকার বসেচে। মাটিতে শতরঞ্চি কি প্লাস্টিকের তেরপল। তার উপর প্লাস্টিকের টিয়া, কাকাতুয়া, মুরগী, ও হেলিকপটার। তীরধনুক, ছোট মোটরগাড়ী। সন্ধ্যের হ্যাজাকের আলোয় সেসব থেকে কৃত্রিম জেল্লা ফুটে বেরোচ্চে। উপচে পড়ছে ভীড়। কেউ কিনছে, কেউ কিনছে না। মেলা বসেছে, চড়কের মেলা।
    পাশাপাশি অনেক লোক। ক্রেতা বা বিক্রেতা। ছোট্ট পার্টি আপিসটার দিকে সেরকম তাকাচ্ছে না কেউ। ভিতরের আবহাওয়া বাইরের তুলনায় অনেক শান্ত, সময় স্থির। উপায়ান্তর না দেখে আপিসের ভেতর ঢুকে পড়া গেল।
    তিনজনের বয়সই একরকম। যেন থেমে রয়েছে। কাঁচাপাকা চুল। তোবড়ানো গালে না কামানো দাড়ি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। কালো পাতলুন। অল্প আলোয় দেখা যাচ্ছে বহুদিনের হেঁটে বেড়ানো পা। সাদা বা মলিন জামার পকেটে সাদাকালো ডটপেন। ঘরের ভেতরে কোনো শব্দও নেই, অথচ বাইরে সুবিস্তৃত এবং অনিয়ন্ত্রিত ভীড়। মাইকে রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং চড়কের বাঁশে দুটি অর্ধনগ্ন দেহ। একটু পরেই ওরা বোধহয় ঝাঁপ দেবে।
    একজনের চোখদুটো একটু ঘোলাটে। ছানি পড়া কি! হতে পারে। এ কি আমাকে দেখতে পাচ্ছে? এই যে আমি ঘরে ঢুকে নমষ্কার করলুম। নিজের নাম পরিচয় দিলাম, এই যে আমার প্যান্টের পকেটে একশ টাকার নোট, এ কি ঠাহর করতে পারছে যে বাইরের ভিড় ঠেলে এক আগন্তুক এসেছে পাঁচ মিনিট কথা বলার জন্য।
    হড়বড়িয়ে অনেক কিছু বলতে চাইছিলাম। গণ সংগঠনের সদস্য হওয়ার কি পদ্ধতি। কোথায় কি কাজ করতে হবে। কর্মসূচি কি। আমি কি নাম জিজ্ঞাসা করেছিলাম। আশ্চর্য! ও কি দেখতে পাচ্ছে না আমাকে! এই যে আমি পাশে বসে আছি, নিতান্ত রক্তমাংসের প্রাণী, ওই যে চেয়ারে ঐ ভদ্রলোক, একই রকমের বৃদ্ধপ্রায় এবং ওঁরও সেই একই ডটপেন, হাতের কবজিতে দমদেওয়া ঘড়ি এবং তার সামান্য ধুকপুকুনি, ও কি বুঝতে পারছে আমায়? কিছু একটা প্রশ্ন করি যদি। নিশ্চয়ই উত্তর আসবে।
    আপনারা পার্টি আপিস খোলেন কখন-- জিজ্ঞাসা করে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া গেল যেন। কিছু একটা উত্তর এইবার আসবে। আসবেই। বাইরে ভীড় বেড়েছে এখন। বাঁশের পোলে দুলে দুলে অর্ধনগ্ন দেহপট ঘুরে চলেছে। তা দেখে জনতা চীৎকার করছে, হাততালি দিচ্ছে। পাঁপড় খাচ্চে কেউ, ছবি তুলছে কেউ। কারোর কপালে হাত, কেউ চুরি করছে মানিব্যাগ। কেউ ঘুরছে নাগরদোলায়। পেশিবহুল হাতে টাকা গুনছে কেউ, কারোর হাতে হাত, জামায় লেগে গেছে আলুকাবলির রঙ। পাঁচসিকে মানতের প্রাণী, শিবমন্দিরের দেওয়ালে দেওয়ালে ছবি। কতরকম।
    ঘোলাটে চোখের মালিক কিছু একটা বলল। কি বলল শুনতে পেলুম না। বাইরে যা ভীড়। তবে আমি মাথা নাড়লুম। মানে না বুঝলেও নাড়লুম। দশটা পাঁচটার সময়সারণী নাকি মার্শাল জুকভ, নাকি ঐ ফেরিওয়ালার প্লাস্টিকের চাইনিজ টিয়া। কিছু না বুঝলেও আমি ঘাড় নাড়লুম। উত্তেজনায় সাড়া দেওয়ার মতন। লোকটা এইবার একটা কাগজে খসখস করে আমার নাম লিখে চলেছে। পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি ওর ঐ ডটপেন। নিবের কাছটা একটু ভাঙা। আবছা রুপোলী রঙ। আমি জানি ডাঁটির কাছটায় চাপ দিলে টিক টিক করে শব্দ হয়। সাদা স্লিপে কালো রঙে লিখে চলেছে আমার নাম। বাইরে তাসা পার্টির আওয়াজ বেড়েছে।
    ঝাঁপ দিলো বাঁশে ঝুলে থাকা লোকটা। এইটা আমি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। অত উপর থেকে পড়ল। আশে পাশে সবাই হই হই করে উঠেছে। সাদা বালির উপর কায়দা করে আছাড় খেয়ে পড়েছে লোকটা। তারপরই একপ্রস্থ ডিগবাজি খেয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। আশ্চর্য! ওর কিচ্ছুটি হয়নি। সবাই হাততালি দিচ্ছে খুব। ড্রাম বাজছে খুব জোরে। দুটো টিয়া আরো বেশী বিক্রী হ’ল।
    এদিকে পার্টি আপিসের ভিতর লোকটা লিখে চলেছে আমার নাম। আমার নাম তো ছোট্ট। পাঁচ সেকেন্ডের বেশী লাগার কথা নয়। অথচ ও এখনও লিখে চলেছে। একসময় রিফিলও ফুরিয়ে গেল। লোকটা ধীরে সুস্থে মাথা তুলে তাকালো আমার দিকে। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। কেননা কোনোদিন কোনো স্লিপে আমার নাম লেখার সময় কখনো পেনের কালি ফুরিয়ে যায় নি। এটা সম্পূর্ণই নতুন অভিজ্ঞতা। অজানা। অপ্রস্তুত আমি চোখ ফিরিয়ে রঙ দেখতে লাগলুম। কত রকম শাড়ী জামাকাপড়, গয়নাগাঁটি, চুড়ি হাতপাখা। জলের বোতল। ঝাঁপের লোকটা ওদিকে আবার লাফ ঝাঁপ দিচ্ছে। বাহবা কুড়োচ্ছে। ভীড় থেকে কেউ কেউ ওর দিকে টাকা ছুঁড়ে দিচ্ছে। ফলে ওর অর্ধনগ্ন পেটে একটা প্রলেপ তৈরী হল। দেখাদেখি আরেকজন উঠছে ঝাঁপের মগডালে। মন্দিরে আরতি চলছে। একজন পুরোহিত যার পিছনে অগুনতি ভক্ত।
    পার্টি অফিসের ভিতরে, লোকটা একটা ড্রয়ার খুঁজে বার করেছে। এই টেবিলটা আমি আগে দেখিনি। কিছু কাগজপত্র সরাতেই আচমকা একটা অবয়ব তৈরী হয়েছে। ড্রয়ারের ভেতরে রয়েছে ওই ডটপেনের রিফিলের প্যাকেট। সরু সরু আঙুল ঘেঁটে বের করতে চাইছে একটা কিছু। বোঝাই যাচ্ছে এতে ওর অনেক সময় লাগবে। আমি অন্যদিকে তাকালাম। ঘরের অন্য দুজন লোক আমায় দেখছে একমনে।
    একটা রাঙতা জড়ানো প্যাঁচ। সেইটেকে ঘোরালেই নীল সবুজ আলো জ্বলছে। টিয়া হাঁটছে। বাঁদর লাফাচ্চে। চরকি ঘুরছে। তাতে আলোর মালা তৈরী হচ্ছে। কয়েকটা কিম্ভুত জামাকাপড় পড়া ছেলেমেয়ে তাদের ঠাম্মার হাত ধরে সেসব খাবলাচ্ছে। দর সবারই এক। গোণাগুনতি মাথা। অথচ কারো ভাগে কম পড়ল তো কারো ভাগে বেশী। পাশের ময়রার দোকানে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কাত করে জিলিপি ছাড়ছে, বাসী তেলে। একটুকুনি ল্যাম্পের আলো। জহুরীর চোখের মত, হাতে শিক, উলটে পালটে দেখছে কোনটা কত বেশী ভাজা হ’ল যেন। পাশের দোকানে এইরকমই আরো। সারি সারি।
    ড্রয়ারটা কি বন্ধ করেচে? খেয়াল পড়তে চোখ ফিরিয়ে দেখি, লোকটা নতুন উৎসাহে ফের নামটা লিখতে শুরু করেছে, প্রথম থেকে। অন্য দুজন এখনো স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। আমি দেখতে পাচ্ছি আমার নাম। ধীরে ধীরে অবয়ব পাচ্ছে। লোকটার কোনো তাড়া নেই। হলুদ ঘোলাটে চোখে সে নিজের খেয়ালে লিখে চলেছে।
    বিরক্তি এল। ওদিকে একটা চোরকে ধরেছে কেউ। তার জামার লুকোনো আস্তিন থেকে অবশ্যই পাওয়া গেছে দুটো চুরি করা মানিব্যাগ। সেই নিয়ে নিলাম চলছে। একেবারে মাঝখানে। মাঝখানেই। বুড়োরা বিরক্ত হয়ে মন্দিরের একপাশে সরে গেছে। গলার কলার তোলা, বাবরি চুলের পিক, তাকে ধরে মারছে কেউ কেউ। আনমনে ভীড়ে মাঝে, দুএকবার লাথিয়েও গেলো বোধহয় কেউ। ওদিকে অন্য লোকটা উঠে পড়েছে ঝাঁপের মগডালে। সে এবার লাফ দেবে। উন্মত্ত জনতা খানিক শান্ত হয়ে উপরে তাকাল। চড়কের মেলা, সবই দুদন্ড, দুমুঠোর জন্য।
    এইবারে একটা নাগরদোলায় কিছু বুড়ো উঠে পড়েছে। তাদের উল্টোদিকের ঝোলায় কচিরা সব। কচিরা একবার উপরে উঠছে তো বুড়োগুলো হইহই করে উঠছে। বুড়োরা উপরে উঠলে কচিরা দুয়ো দিচ্ছে। হেসে খুন হচ্ছে সবাই। প্রতি রাউন্ড দশ টাকা পার হেড। কেউ বমি করলে তাকে আর উঠতে দেবে না। মাথা ঘুরে যায়, নির্দোষ আনন্দ।
    নাম লেখা হ’ল? এইবার একটু বিরক্ত হয়েছি যেন। শেষ আঁচড়টা এখনো পড়েনি দেখছি। অন্য লোক দুটো ঝুঁকে পড়ে ওর নাম লেখা দেখছে। নতুন রিফিল এখনো অনভ্যাসের ঘোর কাটিয়ে ওঠেনি। কালি নামছে খুব ধীরে। ওরা তিনজনে মিলেই চেষ্টা করে চলেছে এখনো। রেগেমেগে স্লিপটা ছিনিয়েই নিয়েছি প্রায়। দরকার নেই, আমি নিজেই লিখে দিচ্ছি আমার নাম।
    ফলে স্বীকার করতে একপ্রকার বাধ্যই হচ্ছি যে, পেনটা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ভীষণ ভারী। যতগুলো নাম ওই পেন লিখেছে তাদের প্রত্যেকের শারীরিক ওজন যেন জমা হয়েছে ঐ পেনে। দুলাল, মিহির, শ্যামাপদ, যতীন, মতিলাল, মেহের। নাম, ধাম, বয়স, মুখের বাঁদিকে কাটা দাগ আছে। ঠেলতে পারা যায় না, অ্যাত ভারী। ভীষণ ভীষণ ভারী। অ্যাত ভারী পেন রাখেন কেন আপনারা। ঝাঁঝিয়েই উঠেছি যেন। স্লিপটা ছিঁড়ে না যায় আবার।
    অবশ্য যায়ও নি। অনেক জোর খাটিয়ে লিখেই ফেলেছি কোনোরকমে। পরিষ্কার। বানান ভুল নেই। গোটা গোটা অক্ষর সমেত। ছুঁড়ে দিয়েছি ওর দিকে, কাগজটুকুন। ওরা তিনজনে এখন স্লিপটা দেখে চলেছে আনমনে। একটা কার্বনপেপারও ছিল বোধহয়। যা লিখেছি কপি হয়ে গেছে। রেকর্ডেড। স্লিপটা তবু খুঁটিয়েই দেখে চলেছে ওরা তিনজন।
    লাস্ট নির্বাচনে হেরে গেছে পার্টি। জামানত জব্দই হয়েছে একপ্রকার। ছোট আপিস তার হিসেবমতো বেছে নিয়েছে ভীড়। সদস্য সমর্থকরা মুখ চুন করে ফিরে গেছে ঘরে। আর কেউ আসবেনা মেয়ের বিয়ে বা সার্টিফিকেটের জন্য। সবাই জেনে গেছে রেশনের চালগমের দখল এখন অন্যদের হাতে। ক্ষমতা পাল্টেছে রঙ, ফিকে হয়েছে ভীড়। তিনটি লোক, একটি তক্তপোষ, একটি চেয়ার, আধখানা আরশোলা। হবে হয়তো।
    মগডালে চড়ে থাকা অন্য লোকটাও এবার ঝাঁপ দিল। একই রকমের কায়দায় আলতো বালিতে পড়েছে সে। বাহবা কুড়োচ্ছে। শিবমন্দিরের চাতালে মাথা ঠুকছে অনেকে। একজন পুরোহিত, পিছনে অগুণতি ভক্ত। হাত ধরাধরি কত হাত ঘুরছে মেলায়। মাটির পুতুল সব এখন প্লাস্টিক। পুকুরের একপাশে সারি সারি খাবারের স্টল। ঐ আরেকজন উঠছে ঝাঁপের মাথায়।
    ওরা তিনজনে এখনো আমাকে দেখে চলেছে। স্লিপ চলে গেছে ড্রয়ারের ভেতর। ড্রয়ার ঢুকে পড়েছে টেবিলের যথাস্থানে। আমার আর কোনো কথা বলার নেই। ছিটকে বেরিয়ে আসি মূলস্রোতে। সামনের দোকানীর পশরার আদ্দেক বিক্রী হয়ে গেছে। সে হাসিমুখে আমার দিকে তাকাল।
    ভীড় ঠেলে হাঁটছি কোনোমতে। আমার কোনো কিছু কেনাকাটি করার নেই। একমাত্র উদ্দেশ্য যে বাড়ী পৌঁছতে হবে। সামনে পিছনে আশে পাশে অগুণতি মানুষের স্রোত। মন্দিরে আরতি শুরু হয়েছে আবার। চাতালে সাতজন লোক দুলে দুলে নাচছে। কেউ একজন নির্দেশ দিচ্ছে চেঁচিয়ে। সাতজন একসাথে লাফাচ্ছে, একসাথে ঝাঁপ খাচ্ছে, একসাথে গড়াচ্ছে। শিব খুশি হচ্চেন। একজন পুরোহিত।
    ঐতো দুবিনুনি দরদাম করছে হাতপাখার। তেঁএঁটে দোকানি কিছুতেই পাখাটা ছাড়বে না কমদামে। চানাচুরওয়ালার প্যাঁচানো কাগজের কোণ। ঘাম মুছে ফরমাশ অনুযায়ী ঝালমুড়ি মাখছে। এ বোধহয় এসেছে সেই আমতা থেকে। হয়তো বাড়িতে দুটো বাচ্চা, বৌ। ওর পাশেই বেলুনওয়ালার শ্বেতী হওয়া হাত। হরেদরে এরও হয়তো তাই। আরেকটা অর্ধনগ্ন দেহ ঝাঁপ দিয়ে পড়ল মাটিতে।
    আমার কোনো কিছু কেনাকাটি করার নেই। ফলে আমি দ্রুতগতিতে হাঁটতে পারি। কিন্তু সে একপ্রকার অসম্ভবই লাগছে যেন। এত ভীড়, ধাক্কাধাক্কি। কিন্তু এ বাদে নিজেকেও বড্ড ভারী মনে হয়। মেলায় আসার সময় এত ভারী অবশ্যই ছিলাম না। পার্টি অফিসে লোকগুলো বোধহয় এখনো স্লিপটা দেখেই চলেছে।
    নিজের পায়ের দিকে তাকাই। চটিগুলো ছেতরে যাচ্ছে যেন খানিক। গতবছর পুজোয় কেনা চটি। অনেক দরদাম করে কেনা হয়েছিল। সে চটির স্ট্র্যাপ প্রায় ছিঁড়ে পড়ার উপক্রম। ওজনটা সর্বত্র বিস্তৃত যেন। দ্রুত পা চালাতে চেষ্টা করি।
    এক ছাতাওয়ালা এসেছে। সে ছাতা বিক্রী করছে, ট্যারাবেঁকা শিকের ছাতা। বাতিল কাপড় দিয়ে তৈরী। ক পয়সা দাম হবে এর। ভাবতে গিয়ে দেখি ওজনটা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে যেন। মুশকিল হ’ল, এখনও অনেকটা দূর। এইদিকে প্রচুর ঘোড়া বিক্রী হচ্ছে। আরো একটা ঝাঁপ। দ্রুত এই মহাসমুদ্র পেরোতে হবে।

    এবং এইসব মহাসমুদ্র পেরোতে গিয়েই খেয়াল হ’ল ডট পেনটা এখনো বুক পকেটে রয়ে গেছে। নিবের কাছটা একটু ভাঙা, রুপোলি রঙ, ভীষণ ওজন। ডাঁটির কাছটায় চাপ দিলে টিক টিক করে শব্দ হয়। ওটা দিয়ে একটু আগেই আমি লিখেছি আমার নাম। যেমন লিখেছিল দুলাল, মিহির, শ্যামাপদ, যতীন, মতিলাল, মেহের।
  • dd | 59.207.61.181 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৭:৫৮366114
  • ভালো লেখা।

    মন খারাপের লেখা।
  • swati | 127.194.45.232 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৮:৩৮366116
  • বড় ভাল লাগল.
  • swati | 127.194.45.232 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৮:৩৮366115
  • বড় ভাল লাগল.
  • সিকি | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৯:৫৪366117
  • আয় ভাই, বুকে আয়।
  • প্রবঞ্চক পানকৌড়ি | 131.241.218.132 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৯:৫৭366118
  • জিও বেটা।
  • dc | 132.174.169.80 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ১১:২৭366119
  • কয়েকটা পুরনো কথা মনে পড়লো। আমার বাপ যেবছর পটোল তোলে সেবছর পুজোর সময়ে বাড়ি গেছি, মানে শ্রাদ্ধ ইত্যাদির কমাস পরে। সন্ধ্যেবেলা বাড়িতে দুতিনজন পাড়ার বয়স্ক ভদ্রলোক এসেছিলেন, বাবার অনেকদিনের বন্ধু, আমার আর মার সাথে খানিক কথা বলবেন বলে। আক্ষেপ করেছিলেন, পাট্টির আরেকজন ডেডিকেটেড ভোটার কমে গেল, এমনিতেই তো ভোট কমছে ইত্যাদি। মাকে জিগ্যেস করেছিলেন, দিদি আপনি সামনেরবার ভোট দেবেন তো? তারপর বলেছিলেন, আমাদেরও তো বয়স হয়ে এল, পাট্টিটাকে যার ধরে রেখেছিল তাদের প্রজন্মের যাওয়ার পালা, এদিকে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসেনি। এইসব।
  • sm | 52.110.188.3 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ১৩:৪২366120
  • পার্টির এই স্থবিরত্ব দেখলে কষ্ট হয়।এ বলছে ও বেশি কথা বলছে ও বলছে সে, মুখ না খুললেই ভালো।
    খি অবস্থা!
    তবে ক্ষমতায় আসলেই তো সেই বন্ধ ,হরতাল আর শোষণ নিয়ে ভাষণ!
    কাজের কাজ কিছুই না করে বাড়ি বাড়ি নাক গলানো।
    পার্টি অফিসে প্রোমোটার ,ব্যবসায়ী দের অবাধ গতি বিধি।
    লোক্যাল সেক্রেটারি,এলসিএম ,জোনাল সেক্রেটারি-সে এক এলাহী ব্যাপার!অতো ঝক্কি ,ভালো লাগে না।
  • রোবু | 213.132.214.83 | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ১৪:০০366121
  • :-(
    দারুণ হয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন