এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • আবার মোহনের মানুষখেকো - ৯

    উপল মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৯ মার্চ ২০২৪ | ৫৬৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | | | |
    ছবি: সুনন্দ পাত্র


    (৯)


    আনিসকে কেন্দ্রে রেখে আসরাফুলের আর আদমখোরের ব্যাপারে দুটো সুস্পষ্ট মত বেরিয়ে এসেছে।প্রথম মত , ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সার্চ পার্টি খুবই তৎপর ছিল কিন্তু তারা আসরাফুলের শরীরের কিছু পাচ্ছে না। দ্বিতীয় মত, করবেট আর ডাঃ রাওয়াতের টিম খুঁজে পাচ্ছে আসরাফুলের ডান হাত যা আদমখোর খায়নি। দুজনে মিলে এই সিদ্ধান্তে এলেন : বাঘটা মেয়ে বাঘ, যার সঙ্গে দুই সাব অ্যাডাল্ট। দ্বিতীয় মতটা যেহেতু ববিচাঁদের স্টেটমেন্টের সঙ্গে মেলেনি, তাই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাহাবরা ওটার সম্পর্কে চুপ। মিডিয়াও ববিচাঁদের কথাই বলে চলে কারণ সে জীবিত ,কথা বলতে পারে, যা হাজার চেষ্টা করলেও আসরাফুল পারবে না ।
    আমরা সব শুনে টুনে খাওয়ার জন্য ক্যান্টিনে চললাম। রাত সাড়ে সাতটা-আটটার মধ্যে ডিনার সারার অভ্যাস না থাকলেও খেয়ে নিতে হবে। সবাই দুপুরে ধিকালা যাবার পথেই বাঘ দেখে খুব খুশি হয়েছিল, ড্রাইভার কাম গাইড, মুকুলও । কাল ভোরবেলা আবার সকালের সাফারি হবে । কুমু বলল , '' প্রভাবিত হবার কিছু নেই। ''
    ------ কিসে ?
    ------ এইসব নানা কন্ট্রাডিক্টরি ওপিনিয়নে।
    ------ করবেটের কথা ভুল হবে ?
    ------ বারবারই হয়েছে পড়নি ?
    ------ তা পড়েছি।
    ------ তবে ? আর আমাদের কাছে কোনটা বড় ?
    ------ কোনটা ?
    ------ ওভিয়াসলি যে বাঘ দেখেছি সেটা। অন্য বাঘ সে আদমখোর কিনা , হলে ছেলে না মেয়ে , একা না ছানা নিয়ে -এসব আমরা ভাববো কেন ?
    রাজু বলল, '' কারণ আছে। '' কুমু বলল , '' ভাট বকা শুরু হল। '' আমরা অন্যরা কিছু বলছি না। জঙ্গলে খাওয়া বারণ তাই কুমু লুকিয়ে একটা সিগারেট ধরায় , আমাকে দেয়। লুকিয়ে সিগারেট খেতে খুবই ভালো লাগে , ছোটবেলার মতো লাগতে থাকে। রাজু বিড়বিড় করছে দেখে বাঘা ওকে খোঁচায় , আমি আর পার্থ ইশারায় বারণ করি., কুমু বলে , '' বেশি তোল্লাই দিওনা তো ওকে। এক্ষুণি আবার গন্ধ পেতে শুরু করবে।‘’ রাজু বলতে শুরু করে , আনমনে বলে ,'হলেও হতে পারে।'
    ----- কী?
    ----- যেটা আমরা দেখলাম সেটাই
    ------ কী?
    ------ আদমখোর।
    ------ মানুষখেকো?
    ------ হ্যাঁ, হতেও পারে। মায়ের সঙ্গে ছিল।
    ------ আর এখন?
    ------ এখন আলাদা হয়ে গেছে।
    ------ তা হলে কী এও মানুষখেকো থেকে গেছে?
    ------ আদমখোর হয়েছে কিনা বলতে পারব না। সাধারণত বুড়ো বাঘেরাই হয় বা চোট খাওয়া।
    ------ সঙ্গে থাকতে থাকতে হয় না?
    ------ সঙ্গদোষে?
    ------ বলতে পারব না। তবে তোমার সঙ্গ দোষে আমি আদমখোর হয়ে খেয়ে ফেলব।
    ------ কাকে খাবি ?
    ------ কেন তোমাকে ? আমি ঘুমোতে চলি , কাল ভোরে বেরোতে হবে মনে থাকে যেন সবার।
    ------ মূল প্রশ্ন একটা থেকেই গেল।
    ------ কী ?
    ------ আদমখোর বাঘটা আসরাফুলের ডান হাতটা খেল না কেন ?
    ববিচাঁদ অনেকদিনই হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছে আবার লাঠি হাতে রাউন্ডে বেরোচ্ছে অন্যদের সঙ্গে । এখন অবশ্য সবসময়ই বন্দুকধারী থাকে তাদের সঙ্গে। সময় এগিয়েছে কিনা, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে কিনা পরিষ্কার নয় কারণ মোহনের মানুষখেকো এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে।। সে একা হতে পারে অথবা তার সঙ্গে দুটো সাব অ্যাডাল্ট রয়েছে এমনও হতে পারে, ছেলে অথবা মেয়ে ।ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের কর্তারা তাঁদের কথা গুরুত্ব না দেওয়ায় করবেট বা ডাঃ রাওয়াতও মুখ খুলছেন না। লাখপত সিং রাওয়াতের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন করবেট। তখন ধনগড়ি গেটে আঁধার নেমে আসছে আর ওরা দুজনে বাঘ , লেপার্ড আর রাইফেল নিয়ে আলোচনা করছিলেন। লাখপত সিং রাওয়াত বললেন, 'বাঘের হাত থেকে বাঁচতে গেলে জঙ্গলে না গেলেই চলবে।'
    ----- কিন্তু লেপার্ড- চিতাবাঘ?
    ----- গুলদার একটা রাস্তা দিয়ে যাবে, তো অন্যটা গ্রামের ধারে বসে থাকবে।
    ----- কতক্ষণ অপেক্ষা করবে? কার জন্য অপেক্ষা করবে?
    ------ কুকুর হতে পারে সাহাব - কুত্তা।
    ------ হতে পারে বলছ কেন?
    ------ কারণ ও বাড়িটাকে টার্গেট করে ফেলেছে।
    ------ ও।
    ------ ও আদমখোর হবে ।
    ------ ম্যান ইটার?
    ------ হ্যাঁ সাহাব । খরগোশ , হরিণ, শিয়াল সব কমে গেছে।
    ------ তাই?
    ------ আদমখোরের পেছু পেছু চলতে গিয়ে দেখছি।
    ------তাই?
    ------ হ্যাঁ সাহাব।
    ------ আদমখোরের পেছু চলতে গিয়ে দেখছি ,তারা খুবই কম পাওয়া যাচ্ছে।
    ------ বেশি পাচ্ছ কাকে?
    ------ আদমিকে। সব জায়গায় সাহাব। ওই জন্য বাড়িটাকে……
    ------ কী?
    ------ টার্গেট করে ফেলেছে সাব।
    ------ ঠিক।
    ------ তারপর অপেক্ষা করে আছে। সাত ঘন্টা। আট ঘন্টা। ন ঘন্টা।
    ------ তাই থাকে। রুদ্রপ্রয়াগের চিতাবাঘও করত।
    ------তারপর কুত্তাকে ধরবে। কুত্তার খোঁজে বাচ্চা এল। আদর করতে এল।
    ------ তো ?
    ------বিচ মে বাচ্চা- চলে এল। বাচ্চা নিয়ে নিল ।
    ------ এতো শুরু।
    ------ হ্যাঁ সাহাব ,শুরু। তারপর একটার পর একটা বাচ্চা নিতে থাকে।
    ------ বাচ্চা নেয় ?
    ------ শুধু বাচ্চা সাহাব। স্কুলের বাচ্চা। গুলদার।
    ------ বড়দের নেয় না।
    ------ নিচ্ছে সাহাব।
    ------ তবে ?
    ------ কেউ কেউ নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ শুধু বাচ্চাদেরই নেয়।
    ------ আগেও হোত।
    ------ বলছেন।
    ------ একই ভাবে।
    ------ তাই সাহাব ?
    ------ হ্যাঁ।
    ------ এখন অনেক বেশি সাহাব , বেশি হচ্ছে।
    ------ হুম।
    ------- একটা কুকুর খাচ্ছে তিনটে গুলদার।
    ------- সেকি ?
    ------- হ্যাঁ সাহাব।
    ------- লেপার্ড তো একলা শিকার করে ?
    ------- বদলে যাচ্ছে সাহাব।
    ------ কী ?
    ------ একটা ছোট এলাকায় চারটে লেপার্ড থাকছে।
    ------ মারামারি করছে না ?
    ------ সব সময় মারামারি করছে না সাহাব।
    ------ সেকি ? দুটো মেল থাকলেও করছে না ?
    ------ কোন সময় তিনটে মেল এক সঙ্গে থাকছে সাহাব। একটা কুকুরে বিষ দিয়েছিল সাহাব।
    ------ তাতে ?
    ------ তিনটে লেপার্ড একসঙ্গে খেল।
    ------ র্তারপর ?
    ------ তিনটেই মারা গেল সাহাব।
    ------ বলো কী !
    ----- তিনটেই মেল ছিল সাহাব। বিহেভিয়ার বদলে গেছে।
    ----- তাইতো দেখছি।
    ------ হ্যাঁ সাহাব ।
    ------ তারপর ল্যান্টানার ঝোপ সাহাব।
    ------ ল্যান্টানার ঝোপেই লেপার্ড লুকোবে।
    ------ ল্যান্টানার ঝোপ বেড়ে গেছে সাহাব , তাতে ভালো হচ্ছে না।
    ------ কী হচ্ছে না?
    ------ খারাপ হচ্ছে সাহাব।
    ------ ল্যান্টানার ঝোপ যারা খাচ্ছে সেই হরিণ, খরগোশ আর তৃণভোজী সব, তাদের মাস খাট্টা হয়ে যাচ্ছে সাহাব।
    ------ কী ?
    ------ এসিডিক সাহাব , তাতে ক্ষয়ে যাচ্ছে।
    ------ তুমি বলছ তাতে লেপার্ড বা বাঘের দাঁত তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যাচ্ছে ?
    ------ ঠিক তাই সাহাব। আমি এটা অনেকদিন ধরে বলে আসছি লেপার্ডের দাঁত ক্ষয়ে যাবার কথা । আদমখোর হচ্ছে আরো তাড়াতাড়ি ।
    ------ তাই !
    ------ কেউ পাত্তা দিচ্ছে না সাহাব।
    ------ আর বাঘ ?
    ------ বাঘের কথা বলতে পারবো না সাহাব। সার্ভে করিনি।
    ------ কর ! করছ না কেন ?
    ------ আপনি তো সবই জানেন সাহাব।
    ------ না কিছুই জানি না। এখন তুমি -তোমার জান ।
    ------ মোদ্দা কথা সাহাব …..
    ------ কী ?
    ------ ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাহাবরা শোনে না। পারমিশন তো দূরের কথা !
    ------ সাহাবরা বলছ কেন ?
    ------ সাহাবরাই সব , ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাহাবরা।
    ------ আগেও ছিল।
    ------ এখনো আছে সাহাবরা ।

    করবেট উত্তর দিচ্ছেন না। তিনি লাখপতি সিং রাওয়াতের রাইফেলটা দেখেন। তাঁর পছন্দ হয় না। রাইফেলে টেলিস্কোপিক লেন্স লাগানো আছে। তাতে লক্ষ্যভেদ সহজ হয়েছে কিন্তু মোহনের মানুষখেকোকে দেখা গেছে কি ? কী হবে টেলিস্কোপে, যদি দেখাই না যায়। ট্র্যাকিং করতে না পারলে কী হবে ? তা করতে গেলে টেলিস্কোপ কী করবে ? আগে তো বিশেষ বাঘের, বিশেষ ছাপ চিনতে হবে , তারপর সেই ছাপ ধরে এগোতে হবে , নইলে এক বাঘ মারতে গিয়ে অন্যটা দেখা যাবে বারবার। যন্ত্র এ ব্যাপারে কী করতে পারে ? কিছু করতে পারবে কি ? ভাবছেন করবেট। মনে পড়ে যায় অতীত দিনের ট্র্যাকিংয়ের কথা। নিঃশব্দে চলে যেতেন কাছাকাছি। মানুষখেকোর কাছাকাছি - তিরিশ ফুট , কুড়ি ফুট…. কাছে তারপর গুলি করতেন।
    ------ ক্লোজ রেঞ্জ থেকে – কী নিচ্ছ ?
    ------ কী সাহাব ?
    ------ রাইফেল।
    ------ রাইফেল?
    ------ হ্যাঁ।
    ------ পয়েন্ট তিনশো পনেরো।
    ------ বড্ড হাল্কা। আমি পয়েন্ট পাঁচশো দোনলা নিতাম। পয়েন্ট সাড়ে চারশো-চারশোর কমে নয়।
    ------ সে তো বড়া বাঘ ছিল সাহাব। তাছাড়া এখন অনেক দূর থেকে গুলি মারা যায় সাহাব।
    ----- কত দূর ?
    ----- চারশো গজ থেকে মারছি সাহাব , তিনশো ,দেড়শো। দেখা যাচ্ছে সাহাব , পরিষ্কার দেখছি। দেখাটাই সব সাহাব।
    ----- সে তো জানি।
    ----- আপনাকে বলাটাই ভুল সাহাব ,. আপনারা কত কাছে যেতেন , কত কাছে যেতে পারতেন নিঃশব্দে।
    ------ তখন আলোই ছিল না। চোখের ওপর ভরসা করে….. ভারী রাইফেল লাগতই।
    ------- এখন আমরা জানোয়ারের থেকেও বেশি দেখি সাহাব। টেলিস্কোপিক লেন্স , নাইট ভিশন …..
    ------- আমাদের সময় কেরোসিনের আলো। তবু পৌঁছে গেছি।
    ------- আপনার মতো জানোয়ারের কাছাকাছি কেউ পৌঁছতে পারেনি সাহাব।
    ------- এই ম্যানইটারটার কাছে যেতে পারছি কই।
    ------- পারবেন সাহাব।
    ------- সবসময় পারা যায় না। ওরাও আমাদের থেকে শিখছে।
    ------- অনেক শিখছে সাহাব , বিশেষ করে গুলদার।
    ------- আর বাঘ ?
    ------- বাঘ মানুষের ওতো কাছাকাছি আসে না সাহাব।
    ------- ঠিকই বলেছ লেপার্ড অনেক বেশি শিখছে। যত মানুষের কাছাকাছি আসছে শিখছে।
    ------ আপনি তো উনিশটা বাঘ মেরেছেন সাহাব।
    ------হ্যাঁ ,আর চোদ্দটা লেপার্ড।
    ------ গুলদার কটা সাহাব?
    ------ বললাম তো চোদ্দটা। আর তুমি?
    ডাঃ রাওয়াত কিছু বলেন না। উনি বোটানির ডক্টরেট। গোধুলির আলোয় গাছ দেখতে থাকেন। করবেট ন্যাশানাল পার্কের জঙ্গলে অনেক দেরি করে রাত আসে। সে কি শুধু করবেটের জন্য ? এমনটা ভেবে রাওয়াত দেখেন পোকারা চলাচল করছে, কেঁচো মাটি ওগরায়, যে দেওয়ালে করবেট আঁকা রয়েছেন তার ঠিক গা ঘেঁষে একটা উইঢিবি। নানান পাখি আর প্রজাপতি মানুষের সান্নিধ্যে আসছে। কত মানুষ যাতায়াত করছে শুধু বাঘ দেখার জন্য। রাস্তা তৈরি করতে গাছ কাটা পড়ছে। কখনো কুমায়ুনে আবার কখনোবা গাড়োয়ালে উনি পয়েন্ট তিনশো পনেরো নিয়ে আদমখোর ট্র্যাক করছেন আর পাগ মার্ক, থাবার ছাপ দেখতে দেখতে যাচ্ছেন। খরগোশ , হরিণ, শিয়াল সব কমে গেছে। হাতিদের করিডোর আটকাচ্ছে মানুষ , রাস্তা বানাচ্ছে । ট্র্যাক করছেন আদমখোরকে। করবেটকে উনি বলছেন, “এখন শুধু গুলি নয়, রিহ্যাব সেন্টারও আছে সাহাব, আদমখোরের অভ্যাস ছাড়ানোর জন্য আর নেহাতই না হলে চিড়িয়াখানা……. ‘’ । ক্রমশ নিশ্চিত গতিতে সময় বয়ে দিন ছেড়ে রাত ঘনিয়ে আসে , আস্তে আস্তে জঙ্গলে অন্ধকার ঢুকে এলে আর করবেটের ছবিও দেখা যায় না। তিনি কিছু উত্তর দিলেন কিনা তাও জানা যায় না। লাখপত সিং রাওয়াত দেখলেন তিনি একাই কথা বলে চলেছেন ।
    এত সব আনিস শুনতে পেয়েছে এরকম তো মনে হয় না। সে ববিচাঁদকে কথা বলতে দেখেছে টিভিতে আর ভাবছে তার দোস্ত আসরাফুলের কথা। আদমখোর ধরার আগে তাদের শেষ কথা হয় কী নিয়ে? সম্ভবত বাইকের ট্যাঙ্কে কতটা তেল আছে তা নিয়ে। আসরাফুলের ডান হাত তাকে দেখানো হলে সে চিনতে পারে কারণ তাতে একটা উল্কি ছিল—বাঘের। করবেটের জঙ্গল বোঝানোর জন্য। সেই লোগোটা সব জায়গায় আঁকা থাকে বলে আসরাফুলও আঁকিয়েছিল আর তাতে বাঘের সব কটা পেশী ফুটে ফুটে ওঠে। নিজের ছবি আঁকা দেখে বাঘ তার ডান হাতটা ছেড়ে রাখে কি ? এটা শেষমেষ আমাদেরও মূল প্রশ্ন ছিল যার উত্তর নেই। সত্যি কথা বলতে কোনো মূল প্রশ্নেরই উত্তর পারিনি আমরা। বাঘা বলল , " এতো প্রশ্ন করারই বা কি দরকার ছিল ?" কুমু বলল ,"তা বলে প্রশ্ন করবে না !" রাজু বলল , " করা যেতে পারে তবে উত্তর …..'' । পার্থ কিছু বলছে না দেখে আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম ," তুই কী বলিস ?" ও বলেছে ," দেখছি। "
    যখন জিজ্ঞেস করা হল, কে তাকে একচুয়ালি বাঁচায়, আনিস বলে বসল , ''কেন? করবেট সাহাব।'’ ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লোকেরা আশ্চর্য হওয়ায় সে বলল, “প্ল্যাটিনা।‘’ শুনে পার্থ বলে, " আরে ও তো আবার সেই মোটর বাইকের কথায় ফিরে এল !"
    ------ আবার ?
    ------ হ্যাঁ।
    ------ আশ্চর্য!
    ------ আশ্চর্য হবার কিছু নেই ওই ট্রমার পর ওর মাথা বিগড়েছে।
    ------ মনে হয় না।
    ------ নিশ্চিত মনে হয়।
    ------ আমার মনে হয় না।
    ------ না হওয়াটা স্বাভাবিক।
    ------ কেন ?
    ------ কারণ তোমার- কী বলে -ওই মাথাটা, কোন ট্রমা ছাড়াই আগে থেকেই বিগড়ে আছে।
    ------ কিন্তু আদমখোরের গল্পে বারবার মোটর বাইক আসছে কোত্থেকে ?
    ------ গল্প ?
    ------ গল্প নয় ?
    ------ না।
    দিন জুড়ে আর সন্ধের কথাবার্তা এক সময় চুপ হয়ে আসে। তখন শোনা যায় নানান ডাক -জীবজন্তুর কল। তারা নিজেদের ভাষায় কথা বলছে। এর মধ্যে সবাই আছে , এমনকি ভোরে যাদের ঘুম ভাঙে সেই পাখিরা- তারাও ঘুমের মধ্যে নানান স্বপ্ন দেখছে আর শব্দ করছে। সশব্দে স্বপ্ন দেখে পাখিরা। রাতচরা জন্তু জানোয়ার ঘুরতে বেরোয়,তাদের অনেকেরই পেটে খিদে। একমাত্র মানুষ খিদে ছাড়াই ঘুরে বেড়ায় সবসময়, তার না আছে রাত, না দিন। সবসময় সে সশস্ত্র হয়ে শিকার খুঁজছে তো খুঁজছেই , অকারণে । এক বিশাল চাতালে পা থেকে মাথা অবধি সশস্ত্র মানুষ, একা।
    অন্ধকার ঘনিয়ে এলে জঙ্গলে তাপমাত্রাও আবার কমে এল। সবাই বাংলোর বারান্দায় ঢুকে পড়ল খোলা চাতাল ছেড়ে। বাইরে গেট আগেই বন্ধ করা হয়েছে আর চারপাশে তারে সৌর বিদ্যুৎ চালনা করা আছে। বাঘা রাতের পাখিদের খোঁজ করতে করতে ঠিক নাইট জার পেয়ে গেল। মনে পড়ে গেল আসামে তাকে বলে জোনাক পাখি। চুপ করে মাটির সঙ্গে শুয়েছিল , গায়ে আলো পড়লে চকচক করে। কিন্তু বাঘা খুব আলো জ্বালায় না। পার্থকে সে মাটির সঙ্গে মাটি হয়ে থাকা নাইট জার দেখালো। এরপর ওরা মদ খেল। খাবারদাবার খেয়ে রাতের শব্দ শুনতে বেরল বারান্দায়। সামনের অন্ধকারে কিছু দেখা গেল না। সামনের জঙ্গলের তাপমাত্রা আরো নামতে নামতে কোথায় চলে গেল বোঝা গেল না। তারপর বাংলোর মধ্যে যে ঘর আছে তাতে ওরা পাঁচজন শোয়ার আয়োজন করতে লাগল। দশটার মধ্যে সব সারা হয়ে গেছে। কে কোথায় শুয়ে পড়বে তার হিসেব করাই ছিল।
    কুমু আস্তে আস্তে লাগোয়া রান্নাঘরের জানলায় চোখ রাখল। ঘন অথচ পরিষ্কার দেখা যায় এমন পাতলা তারের জালির ওপরে স্টাফ কোয়ার্টারের আলো পড়েছে আর সৌর বিদ্যুতের সরু তারের ফাঁক গলে একটা একটা করে চিতল হরিণ লাফিয়ে নেমে আসছে বনবাংলোর চাতালে। সেখানে ঘাস আছে। হয়ত পড়ে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট আছে। কোথাও হয়ত নির্দিষ্ট জায়গায় প্লাস্টিক বা চিপসের প্যাকেটের টুকরো আছে। হরিণের দল নামছে তারের ফাঁক গলে গলে। একটা দুটো করে নামতে নামতে তারা একপাল হয়েছে। তাদের ছেলেদের শিঙ আছে আর মেয়েরা কেবল দেখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে , তারা বড়সড় হতে পারে কিন্তু তাদের শিঙ হবে না, কিছুতেই না। বড় চেহারা হলে বাঘ তাদের পছন্দ করবে আর খাবে। কিন্তু শিঙ তাদের হবে না।
    আস্তে আস্তে রান্নাঘরের থেকে বাইরে যাবার দরজা খুলল কুমু। আর নিঃশব্দে এগিয়ে চলল হরিণের পালের দিকে। শুধু চিতল কেন, অন্য হরিণেরা কেন এই চত্বরে ঢোকে না ? কেন শম্বররা ঢোকে না ? বড়সড় চেহারা বলে ? বার্কিং ডিয়াররা তো ছোট ছোট , তারা তো ঢুকতে পারে ? নাকি চিতল হরিণদের মতো তারা বিদ্যুতের তার টপকাতে শেখেনি ? কুমু বুঝতে পারে না স্টাফ কোয়ার্টারের ছিটকে পড়া আলোর মধ্যেই বা কেন হরিণের দল দাঁড়িয়ে থাকবে — খোলা চত্বরের অনেক অন্ধকার জায়গায় ওরা চলে যায় না কেন ? তখন রাত হয়ে এসেছিল। তাপমাত্রা কমাতে গাছেদেরও কোন সন্দেহ ছিল না। পাতারাও যথেষ্ট নেতিয়ে মাটির সঙ্গে মাটি হয়েই ছিল। কুমুর পায়ের শব্দ শোনা যায়নি। একই সময় বাঘ ও তার ছানারাও নিঃশব্দে জায়গা বদল করছিল কারণ এ তাদের করে যেতেই হবে জঙ্গলের তাপমাত্রা বাড়াকমার সঙ্গে সঙ্গে।
    এইভাবে আমরা কথা চালিয়ে জঙ্গল ভ্রমণ করছি আর তখন উত্তরাখণ্ডের ডাঃ লাখপত সিং রাওয়াতের পরিচয় পাওয়া গেল। ভারতে সবচেয়ে বেশি ম্যানইটার মেরেছেন—আদমখোর। এখনও পর্যন্ত , চিতাবাঘ তিপান্নটা আর বড় বাঘ দুটো। ।ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাহাবরা ওনাকে মোহনের নয়া আদমখোরকে ট্র্যাক করার দায়িত্ব দেন । সেই থেকে করবেটের সঙ্গে ওনার কথোপকথন হয়েই চলেছে। সে সব আমরা কেউ শুনতে পাইনি এ একরকম নিশ্চিত। তবে মোহনের মানুষ-খেকোকে যে করবেট আবারও ট্র্যাক করছেন এতে কুমায়ুন- গাড়োয়ালের আম জনের কোন সন্দেহ ছিল না। নইলে আসরাফুলের ডান হাতটা পাওয়া যেত কি ?
    মুশকিল হয়েছে আনিসের। সে ঠিকই চিনতে পেরেছিল যে হাতটা আসরাফুলের , সেটা যে ডান হাত, তাও পরিষ্কার। কিন্তু হাত পাওয়া গেলে আর কী হয় ? হাত কি কথা বলতে পারে ? যেমন বেঁচে এসে বলছে ববিচাঁদ আর বলছে বলেই সবাই তার কথাই শুনছে। শুধু ডান হাত দিয়ে কেউ কথা বলতে পারে না , তাই আসরাফুলের নিজের কোন কথাই শোনা যাবে না। কখনই জানা যাবে না কোন বাঘ তাকে খেয়েছে - সে মেয়ে না পুরুষ অথবা একা না সঙ্গে দুটো বাচ্চা আছে , এটাই ভাবছিল আনিস।



    সমাপ্ত


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    | | | | | | | |
  • ধারাবাহিক | ০৯ মার্চ ২০২৪ | ৫৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ইন্দ্রাণী | ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:১২529378
  • পর্ব অনুযায়ী, স্টিকি নোটসে পেনসিলে লিখে রাখতামঃ

    .................................................................
    পর্ব ১- মানুষ যা হতে পারত, যা হারিয়েছে-..." সেই প্রাণী তার মস্তিষ্কের ঘ্রাণের আশ্চর্য ক্ষমতা কবেই হারিয়েছে, হারিয়েছে মস্তিষ্কের সেই সব বিখ্যাত অঞ্চল যা দিয়ে বিশেষ রকম করে সামান্য শব্দও শোনা যায়"।
    এই ন্যারেটিভের কাউন্টার ন্যারেটিভ জঙ্গলে ঢোকার পরে- টায়ারের পাশে পাগমার্ক দেখছিল কুমু, পার্থ বিশেষ আলো দেখছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে ঝরা পাতার ওপর পায়ের আওয়াজ, এবং আলম কানখাড়া করে সব শুনতে পাচ্ছে-
    লক্ষ্যণীয়, সবাই সব কিছু দেখতে শুনতে পাচ্ছে না।

    পর্ব ২- শহরের মানুষের গতে বাঁধা অভ্যাস- অফিস ( সেই অফিস যা একটা বিশেষ অঞ্চলকে শহর বলে চিহ্নিত করে গাছ পশু ধ্বংস করে যেখানে আপিস করে ফেলা -রেফারেন্স প্রথম পর্ব) থেকে ছুটি পাওয়া, চিকেন, ইনোভা, অর্থাৎ শহরই ডমিনেট করছে পর্বের শুরুতে অথচ পর্বের শেষে ঘ্রাণেন্দ্রিয় সক্রিয় হচ্ছে চরিত্রদের অর্থাৎ জঙ্গল ঢুকে পড়ছে প্রবলভাবে-

    পর্ব ৩- অবলোকনকারী কে? আদমখোর নয় তো? ধন্ধ তৈরি হচ্ছে-

    পর্ব ৪- রিসর্ট জঙ্গলে ঢুকছে, বেরিয়েও আসছে।
    ভয়? জঙ্গলের ঢুকে পড়া এড়াতে চাওয়া? উপেক্ষা?
    বাঘই কী তবে অবসারভার?

    পর্ব ৫- করবেট ঢুকলেন আখ্যানে- অবশ্যম্ভাবী।

    পর্ব ৬- করবেট অবলোকনকারী, কথকও। কে বলছে ববিচাঁদের গল্প? আদমখোরের ন্যারেটিভ ছিল -এবার কাউন্টার ন্যারেটিভ শিকারীর? ন্যারেটিভ শিফ্ট? শিকার থেকে এবার শিকারীর দিকে?

    পর্ব ৭- আসরাফুল, আনিস, আবার ববিচাঁদ। ববি শিকারও নয়, শিকারীও নয়, শিকারীও নয়।

    পর্ব ৮- প্রাচীন ও নতুন সময়ের মোলাকাত, কথোপকথন- এক সময় ঢুকে পড়ছে অন্য এক সময়ে।
    করবেট ও রাওয়াত আসরাফুলে হাত খুঁজে পাচ্ছেন - সে হাতে অথচ করবেট উদ্যানের লোগো ( এই অলীকত্বে শিউরে উঠতে হয়)। শিকারী ও শিকারে মোলাকাত সময় অতিক্রম করে।

    পর্ব-৯- কাউন্টার ন্যারেটিভ ঃ করবেটের খুঁজে পাওয়া আসরাফুলের ডান হাত বনাম সার্চপার্টির কিছুই খুঁজে না পাওয়া।
    দুই সময়ের কথোপকথনে ধরা পড়ছে স্পষ্ট- 'এখনও আছে সাহেবরা'।
    বাঘ কেন হাত খেলো না? লোগো দেখে? অর্থাৎ বুঝতে পারল আসরাফুলও আসলে তারই মতো এক শিকার (এখনও আছে সাহেবরা)?
    ন্যারেটিভ আর তার কাউন্টার মুখোমুখি, ব্যাকড্রপে আলো আর অন্ধকার, হরিণরা স্থানবদল করছে, বাঘ তার শাবক নিয়ে জায়গা বদলাচ্ছে, তাপমাত্রা বাড়াকমার সঙ্গে।

    আসল সত্যি জানা গেল না। যায় না। আসলে একটা সত্যি বলে কিছু হয়ই না সম্ভবত।
    .........................................................................
    উপলের 'কুইলাপাল' সংকলনের গল্পদের কথা মনে হয়, যেখানে প্রতিটি গল্পই একসকারশানের, যেখানে স্মৃতি ও তৎসহ সময়ের চলাফেরা গল্পের সর্বাঙ্গ জুড়ে, প্রতিটি ন্যারেটিভের পাল্টা...
    এই আখ্যানও তাই, অনিবার্যরকম বিমূর্ত।
  • ইন্দ্রাণী | ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৪529380
  • যেটা বলার তা হল, এই যে প্রতিটি পর্বের বিবিধ উপাদান তা পাঠকের সামনে শাদা পাতা খুলে দেয় , লিখতে বলে, সমাপ্তি কল্পনা করতে বলে পাঠকের মতো করে; অথচ সমস্ত অন্বেষণ, সময়ের যাবতীয় অলীক চলাফেরা, আখ্যান, পাল্টা আখ্যানের শেষে যে সমাপ্তি তা এক মহান শূন্যতা - ঢালা ন্যারেটিভের সম্পূর্ণ বিপরীতে এক অসম্ভব মেধাবী নির্মাণকে এই নগণ্য পাঠক কুর্ণিশ করে।
  • upal mukhopadhyay | ১৫ মার্চ ২০২৪ ১০:১১529384
  • এই নিবিড় পাঠাভ্যাসের জন্য লেখক ইন্দ্রানী একক ।তিনি তাঁর নিজেরা লেখাও এভাবে পাঠ করেন কলম দিয়ে  মনের অপূর্ব কলম ।
  • শৈলেন সরকার | 2401:4900:733b:5a12::c23:96b9 | ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৫৫530215
  • খুব ভাল লেগেছে উপন্যাসটি। ভাল লেগেছে শব্দ ব্যবহারে, বাক্যের পরম্পরায় পরিমিতিবোধ। নির্লিপ্তি। আর পাঠকের জন্য অনেকটা জায়গা ছেড়ে দেওয়াও।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন