এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • যেমন কাটছে দিন

    SAUMITRA BAISHYA লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৮ মার্চ ২০২৪ | ২৮১ বার পঠিত
  • গান্ধীজী সবে তাঁর সান্ধ্য ভজন সেরে, আশ্রমের বারান্দায় বসে চরকা চালাচ্ছেন। বারান্দায় একটা সুদৃশ্য সেজ বাতি ঝুলছে। এটি এনে দিয়েছেন ঘনশ্যাম দাস। এটা তাঁর ডাক নাম। দেশের বড় শিল্পপতি। বিড়লা সাম্রাজ্য তাঁরই উদ্যোগে আজ দেশে প্রভুত বিস্তার লাভ করেছে। তবে, তাঁর ঘনিষ্ট মহলে তিনি সংক্ষেপে জি.ডি. বিড়লা নামেই অধিক পরিচিত। মূলত, মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের হলেও, তাঁর তুখোড় ব্যবসায়িক বুদ্ধি ও দূরদৃষ্টির সুবাদে, তিনি দেশের বাণিজ্য ও রাজনীতিতে একজন  অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গান্ধীজীর সাথে তাঁর অতি মধুর সম্পর্ক। তিনি ঝাড়বাতি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, অনাড়ম্বর জীবনে অভ্যস্ত গান্ধীজী এসব দিতে নিষেধ করেন। গান্ধীজী তাঁর আশ্রমে বিদ্যুতের আলোই জ্বালাতে দেননি। ঘনশ্যাম দাস জানেন, গান্ধীজীর একটি নিষেধ বা অপছন্দ, কখনো কত সুদূরপ্রসারী হতে পারে। গান্ধীজীর চরকা চালানোর শব্দ শুনতে পেয়ে, কস্তুরবা এক গ্লাস ফলের রস নিয়ে এলেন। বারান্দার যে কোণটায় সেজ বাতির আলো, অন্ধকারকেই ঘনীভূত করে তুলেছে, সেখানে একটি চারপাইয়ের উপর, আধ শোয়া ভঙ্গীতে এক দীর্ঘদেহী, ফর্সা চেহারার ভদ্রলোক বসে আছেন। কেউ কেউ তাঁকে পন্ডিতজী বলে ডাকে। তবে, তিনি কোনো শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত নন। এটা কাউকে সম্মান জানানোর, এক রকমের সামাজিক রীতি বলা যায়। গান্ধীজীকেও মহাত্মা বলা হয়। চিত্তরঞ্জন দাসকে বলা হয়, দেশবন্ধু। আর, একমাত্র সুভাষচন্দ্র বসুকেই বলা হয় - নেতাজী। এই ‘নেতাজি’ অভিধাটি যেন সুভাষচন্দ্র বসু ছাড়া আর কাউকে মানায়ই না। আজো তাই নেতাজী বললেই, একমাত্র সুভাষচন্দ্র বসুর মুখটিই, মানুষের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। 
    এই পন্ডিতজী মানুষটিকেও কস্তুরবা এক গ্লাস ফলের রস দিয়ে গেছেন। কিন্তু, তিনি এখনো গ্লাসে চুমুক দেননি। 
    গান্ধীজী মৃদু কণ্ঠে বললেন, মন খারাপ করে কী করবে! বুকে গুলি আর এত ঘৃণা নিয়েও তো বেঁচে আছি আমি। বহু লোকে এখনো বিশ্বাস করে, দেশ ভাগের জন্য আমিই দায়ী। সেই বিশ্বাসের উপহার এই গুলিটা।
    গান্ধীজী একটু সময় নীরব রইলেন। পন্ডিতজীও নীরব। আশ্রমের চারপাশে মৃদু অন্ধকার। 
    নীরবতা ভঙ্গ করে পন্ডিতজী বললেন - বাপু, আমি তো একটা ভগ্ন ইমারতকে নতুন করে বানাবার চেষ্টা করেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অন্ন যোগানোর চেষ্টা করেছি। দেশের জন্য কী করেছি, সবই তো আপনি জানেন, বাপু। আমাদের প্রতিবেশীই হয়ে উঠল আমাদের শত্রু। উদ্বাস্তুদের ঢল নামছে। দেশভাগের ফলে পাঞ্জাব, বাংলা তখন বিধ্বস্ত। আমার কাছে তো এই উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাই ছিল বড় সমস্যা। পাঞ্জাব তো আজ স্বনির্ভর রাজ্য। আমার রাজনৈতিক সমালোচনা কেউ করতেই পারে। কিন্তু তা বলে, আমাকে চরিত্রহীন বলা হবে, আমার বাবাকে মুসলমান বলে অপমান করা হবে -- আমি কোনোদিন কল্পনাই করতে পারিনি। 
    – দেখো, আজ মানুষ কী বলছে, সেটা নিয়ে এত উতলা হবার মত কিছু নেই। কারণ, তুমি সত্য ও ন্যায়ের পথে কতটা নিষ্ঠাবান ছিলে, ভুলভ্রান্তিকে শিক্ষক করতে পেরেছিলে কিনা, নিজেকে এরপর সংশোধন করতে আন্তরিক ছিলে কিনা - সেটাই আসল কথা। আমিও সারাজীবন নিজেকে সত্যের পথে রাখার জন্য নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। খুব অল্প বয়সেই আমি উপলব্ধি করি যে, নৈতিকতাই আমাদের সমস্ত কাজকর্মের উৎস আর এই নৈতিকতাকে রূপ দেয় সত্যের প্রতি অবিচল আস্থা। তখন থেকে আমার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল সত্যের সন্ধান এবং যত দিন যেতে লাগল ততই এই প্রবণতা আমার চরিত্রের প্রধান লক্ষণ হয়ে দাঁড়াল। মনে আছে, আমার তেরো বছর বয়সে আমি তুলসীদাসের রামচরিত মানস পাঠ শুনি। তাতে আমি এতটাই প্রভাবিত হই যে পরিণত বয়সে, আমি বুঝতে পারি, রামচরিত মানস পৃথিবীর সমস্ত ভাষায় রচিত ভক্তিমূলক গ্রন্থের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তবে, রাম নামের মহিমা আমার চেতনায় বীজের মত রোপন করে দিয়েছিল, রম্ভা নামের এক ধাত্রী। বাল্যকালে ভূত প্রেতে  আমার মারাত্মক ভয় ছিল। রম্ভাই আমাকে বলে,  যে নিয়মিত রাম নাম জপ করলে, ভূতপ্রেতের ভয় থেকে মুক্তি মিলবে। সেই থেকেই রাম আমার চিত্তে স্থায়ী আসন করে নিয়েছিলেন। 
    — কিছু মনে করবেন না, বাপু। আপনি ব্যক্তিগত জীবনের ধর্মবিশ্বাসকে রাজনীতির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিলেন। সেটাই আজ দেশের রাজনীতির মুল চালিকা শক্তি হয়ে গেছে। 
    পণ্ডিতজীর মুখে এই কথা শুনে, গান্ধীজী খুবই মর্মাহত হলেন। কয়েক মুহূর্ত নীরব থেকে গান্ধীজী বলেন - এ তুমি কী বললে? খিলাফতের সময় গো-সুরক্ষাকে আমি একই কর্মসূচিতে আনতে দেইনি। আমার মনে হয়েছিল, এটা মুসলমানদের সাথে দরকষাকষির বিষয় নয়। চাপ দিয়ে নয়, স্বেচ্ছায় যেদিন মুসলমানরা গোহত্যা বন্ধ করবে সেদিনই এই কাজ মহৎ বলে গণ্য হতে পারে। মৌলানা হসরত মোহানি এবং স্বামী শ্রদ্ধানন্দজিকে স্বেচ্ছায় আমার মতের সমর্থনে আনতে পেরেছিলাম। আর, তুমি কেন ভুলে যাচ্ছ, আমার রাম কিন্তু সত্য ও ন্যায়ের প্রতিমূর্তি। যে রামরাজ্যের স্বপ্ন আমার ছিল, সেটা এমন এক রাষ্ট্র, যেখানে ন্যায়, অনুশাসন এবং আমীর-গরীবের সমান অধিকার থাকবে। আমার রামরাজ্য কখনোই শুধু হিন্দুর রাষ্ট্র নয়।

    এইটুকু বলে গান্ধীজী থামলেন। তবে, তিনি মোটেই কুপিত হননি। সেটা তাঁর স্বভাব নয়। পন্ডিতজী অধোবদনে বসে রইলেন। এমন সময় ঘনশ্যামের প্রবেশ ঘটল। ঘনশ্যামের মোটর গাড়ির একচ্ছত্র সাম্রাজ্য অস্তমিত হয়েছে। পণ্ডিতজী সম্প্রতি ঘনশ্যামের উপর কিঞ্চিৎ রুষ্ট। মাস খানেক আগে এক অধ্যাপকের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। সেই সুবাদে অধ্যাপক তাঁকে কিছু তথ্য জানান। এই তথ্যগুলো ঘনশ্যামের নিজের হাতে লেখা ডায়েরীতে আছে। ডায়েরীটি আবার একদা তাঁরই নামাংকিত সংগ্রহশালায় রক্ষিত ছিল।  ঘনশ্যাম তো ভেবেছিলেন, যে কলকাতাও পাকিস্তানে চলে যাবে। তাই, কলকাতা থেকে তাঁর বাণিজ্য তুলে নিয়ে যান বোম্বেতে। এমনকি কাশ্মীরও পাকিস্তানে চলে গেলে ভালো হবে বলেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত ছিল। এদিকে, ঘনশ্যামও পন্ডিতজীর উপর মনে মনে ক্ষুব্ধ। সঞ্জয় জাপানী গাড়ি কোম্পানীকে এনে, তাঁর গাড়ির ব্যবসার বারোটা বাজিয়ে দিল। জামশেদজীর বংশধররা যাত্রিবাহী গাড়ি বানাতে লেগে গেল। পাটের বেওসা নেই। চায়ের বেওসাতেও টাটা। অথচ কী না করেছেন তিনি গান্ধীজী ও কংগ্রেসের জন্য। একসময়, পন্ডিতজী বললেন - ঘনশ্যাম, তুমি তো সভারকারকেও মাসোযারা দিতে। ঘনশ্যাম হেসে বলেন - বেওসা চালাতে গেলে, সব্বাইকে খুশ রেখে চলতে হয়। এমন সময় গান্ধীজীও না বলে পারলেন না, যে ঘনশ্যাম ইস্পাহানীদের সাথে মিলে দেশভাগের পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন। ঘনশ্যাম এতটুকু না ঘাবড়ে বলেন - দেশভাগ  না হলে রোজ দাঙ্গা হতো । আর, কাশ্মীর যদি পাকিস্তানেই চলে যেত, তাহলে আজ এতো সমস্যা থাকত না। 
    ওদের কথার মাঝে বাধা দিয়ে কে যেন বলে উঠল — কিছু মনে করবেন না আপনারা। সুভাষ চন্দ্র বসুকে হেনস্তা করে, কংগ্রেস ছেড়ে দিতে বাধ্য না করলে, দেশের ইতিহাস আজ অন্য রকম হতো। 

    এবার সবাই কথা থামিয়ে বারান্দার এক পাশে আধো অন্ধকারে দাঁড়ানো এক যুবকের দিকে তাঁদের নজর গেল। সাদা ধুতি আর হাফ হাতা পাঞ্জাবী পরিহিত ছেলেটির দাঁড়ানোর ভঙ্গিটি ভারী অদ্ভুত। দু’ হাত তার পিছমোড়া, ঘাড়টা বাঁকানো, উন্নত শির। খুব চেনা লাগছে। কিন্তু চিনতে পারছেন না কেউ। তরুণটি বলল - আপনারা অহিংস আন্দোলনে এত মগ্ন ছিলেন, যে দেশে আরেকটি সমান্তরাল আন্দোলনকে আপনারা গুরুত্বই দিলেন না। আর, গান্ধীজী, আপনি তো অজান্তেই গুজরাটী কাপড় কলের মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করে গেলেন। আপনি বিলাতী কাপড়ে আগুন না দিলে, ম্যানচেস্টারের কাপড় ফেলে আহমেদাবাদের মিলের কাপড় কেউ কিনত? তাও তো বিশুদ্ধ খাদি নয়, আপনি তো বিলাতী সুতোও আপনার আশ্রমে চরকায় ব্যবহার করতেন। আত্মপক্ষ সমর্থনে গান্ধীজী এবার না বলে পারলেন না, যে এই সুতো বিলেত থেকে আমদানী করে ফেলা হয়েছিল। ওগুলো ব্যবহার না করলে, নষ্ট হয়ে যেত। কত টাকা ক্ষতি হত বলো? 
    তরুণটি নির্দ্বিধায় বলে ওঠে - সে তো বটেই। গুজরাটী মিল মালিকদের ক্ষতি হলে, কংগ্রেসের ক্ষতি। 

    এমন অভিযোগ শুনে গান্ধীজী হতবিহ্বল। তরুণটি বলে যাচ্ছে - আপনাকে তো জাতির জনক বলা হয়। কিন্তু জনকোচিত কাজ কী করেছেন আপনি? রাম আপনার ব্যক্তিগত ধর্মীয় বিশ্বাস। কিন্তু, সেই রামকে আপনি রাজনীতির সাথে মিলিয়ে দিলেন! ওদিকে আর্য সমাজ যখন ক্রমাগত হিন্দী ভাষার প্রসারের জন্য পাঞ্জাবেও উর্দু হটিয়ে হিন্দী চালু করতে চাইল, তখন কংগ্রেস তো এর সামান্যতম বিরোধিতা করেনি। খিলাফতের সময় আপনার মনে হয়েছিল, হিন্দী ও উর্দু মিশ্রিত একটি ভাষাই হতে পারে এদেশের ভাষা। কিন্তু, পরে আপনি হিন্দীকেই বেছে নিলেন রাষ্ট্র ভাষা হিসেব। কারণ, তাহলেই হিন্দী হিন্দু হিন্দুস্থান, এই পরিকল্পনাটি দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যাবে। কী আশ্চর্যের ব্যাপার, একজন কংগ্রেস সভাপতি হিন্দুমহাসভারও সভাপতি হয়ে যান। কংগ্রেস তখন থেকেই নরমপন্থী হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির দোসর। নেহেরুজী তো ইউরোপীয় সভ্যতার ইতিহাস জানতেন। দেশটাকে যখন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে চাইলেন, তখন কেন রাষ্ট্রের কাঠামোয় হিন্দু আচার, মুসলিম আচারকে প্রশ্রয় দিলেন। সেক্যুলার মানে তো রাষ্ট্র সব রকমের ধর্মাচারণ থেকে দূরে থাকবে। মন্দির-মসজিদ নিয়ে যে বিবাদ ছিল, কেন সেটার সমাধান করলেন না? জনমত আপনার সাথে ছিল। আপনিও সাধু সন্ত এবং মৌলবীদের কাছে নতি স্বীকার করে নিলেন। আর, রাজীব গান্ধী তো মন্দিরের তালাই খুলে দিলেন। তাও আবার ভোট রাজনীতির স্বার্থে। গান্ধীজীও তাঁর ব্যক্তিগত ধর্ম বিশ্বাস, রামরাজ্য - তাঁর রাজনীতির সাথে মিশিয়ে দিলেন। 
    এবার গান্ধীজী আর নীরব থাকতে পারলেন না। তিনি বললেন - আমি যে রামরাজ্যের কথা বলতাম, সেটা কোনো ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়। আমি তো বলেছিলাম, যে এখন রামও নেই, সেই অযোধ্যাও নেই। রাম আর রাবণ আসলে আমাদের মধ্যেই আছে।  যখন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয় ঘটে, সেটাই ধর্ম। মানুষের মধ্যে নিরন্তর এই শুভ এবং অশুভ আসুরিক শক্তির লড়াই চলছে। 

    সেই তরুণটি বলল - এটা তো আপনার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। এই দেশ ধর্মের দেশ। আপনার রাম ও রামরাজ্যের কথা দেশের কিছু মানুষ ধর্মীয় অর্থেই গ্রহণ করেছে। কংগ্রেসের নরম হিন্দুত্বের জন্যই মুসলিমদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারেনি। যেসব হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গো-সুরক্ষা নিয়ে সরব ছিল, আপনারা তাদেরও নিরস্ত করতে তো পারেনই নি, বরং আপনি নিজেও গো সুরক্ষার সমর্থক ছিলেন। খিলাফতের সময়, আপনি একটা মধ্যাপন্থা নিয়ে গো সুরক্ষার দাবিটিকে ধামচাপা দেন। হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষের কট্টরপন্থীদের সাথে নিয়ে চলতে চেয়েছিলেন। অথচ, জিন্নাহ কিন্তু প্রথম দিকে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষেই ছিলেন। তবে কেন জিন্নাহকে মুসলিম লীগে ভিড়তে হলো? ততদিনে তো জল অনেকদূর গড়িয়ে গেছে। ইস্পাহানী সহ মুসলিম পুঁজির স্বার্থ রক্ষার নেতা হলেন জিন্নাহ, আর আপনি হলেন গুজরাটি পুঁজির স্বার্থ রক্ষক। আপনার স্বদেশী কাপড় তো আজকের মেক ইন ইন্ডিয়ার মত, আহমেদাবাদের কাপড় কলের মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। শুনতে অপ্রিয় হলেও, কংগ্রেসের পতাকায় চরকার চিহ্নটি তারই প্রতীক। ঘনশ্যামজীর দৌলতে পার্সি টাটাও এই দলে ছিলেন। আপনাদের সেদিনকার নরম হিন্দুত্বের যে বীজ দেশের মাটিতে রোপিত হয়েছিল, তা আজ ফলে-ফুলে পূর্ণ বিকশিত। এই দেশটির জন্যই কি আমরা প্রাণ দিয়েছিলাম?

    গান্ধীজী, পন্ডিতজী নীরবে তার কথা শুনছিলেন। অকস্মাৎ টের পেলেন, তরুণটি কিছু বলছে না। এমন সময়, দিব্য এবং ভব্য এক দৃশ্য তাঁদের গোচরে এল। প্রয়ান্ধকার যে পথে তরুণটি যাচ্ছে, সেটি যেন দিব্য আলোয় ভরে উঠেছে। কিন্তু, চারপাশে নিকষ আঁধার। আর, তার পিছুপিছু এক চারণ কবি গাইছে - একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি…। এমন সময়, ঘনশ্যামজী লাফিয়ে উঠলেন। তিনি বাংলা বোঝেন। গান শুনেই বললেন, ওহ লড়কা তো বঙ্গাল কা হ্যায়। নাম ইয়াদ নেহি। ফিলহাল ক্যায়া বোলতে হ্যায় না, ইয়ে লোগোকো, মনে পড়েছে, মনে পড়েছে, আর্বান নকশাল। 

    (কিছু তথ্য প্রয়াত ইতিহাসবিদ সুজিৎ চৌধুরী রচিত গ্রন্থ, “ধর্ম, রাজনীতি, সম্প্রদায়িকতা : উৎস ও পটভূমি”, খ-প্রকাশনী, শিলচর থেকে আহৃত )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দেবাশিস চক্রবর্তী | 117.198.63.2 | ০৮ মার্চ ২০২৪ ২২:০৬529121
  • খুব ভালো লেগেছে।
  • কৃষ্ণেন্দু রায় বাপি | 106.222.224.38 | ০৮ মার্চ ২০২৪ ২২:১৯529122
  • ভালো লাগলো।
  • Mrinmoy Roy | 2401:4900:3d33:acc6:d7ad:f894:f65c:c512 | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:২০529132
  • খুব ভালো লাগল। চমৎকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন