এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • দ‍্য গ্ৰেট আ্যাপালেচিয়ান ট্রেল

    Samaresh Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৪২৭ বার পঠিত
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে পশ্চিমে গাল্ফ অফ মেক্সিকোকে আগলে রেখে পূবে উত্তর এ্যাটলান্টিক মহাসাগরের মধ‍্যে তর্জনীর মতো প্রসারিত ফ্লোরিডা রাজ‍্য - যার কিছু মূল আকর্ষণ মায়ামি সৈকতে উচ্ছ্বল সমূদ্র‌স্নান বা নেশা ধরানো নিশাজীবন। মায়ামির সানি আইল‍্যান্ডের শুভ্র বালুকা সৈকতে আছে ডোনাদার চোখধাঁধানো ট্রাম্প রিসর্ট। এখানে আছে নানা থিম পার্ক - ডিজনি ওয়ার্ল্ড যার শিরোমনি। সেইসব কল্পলোকে বাচ্চা থেকে বুড়ো টিকিট কেটে দেখতে যায় মনুষ‍্যনির্মিত নানা আজব কান্ডকারখানা।

    মেক্সিকো উপসাগরে‌র উপকুল ধরে পশ্চিমে গেলে দেখা যাবে ফ্লোরিডা ও লুইসিয়ানা রাজ‍্যের দাপটে সৈকতে সলজ্জে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে আলাবামা ও মিসিসিপি‌ রাজ‍্যের কয়েকটি করুণ আঁচিল। লুইসিয়ানার আঁকাবাঁকা সৈকতরেখা ধরে আরো পশ্চিমে এগোলে দেখা যাবে দীর্ঘাঙ্গী গ্ল‍্যামারাস আমেরিকা‌ন পোলভল্টার স‍্যান্ডি মরিসের সার্ফবোর্ডের মতো মসৃণ তলপেট সদৃশ টেক্সাসের দীর্ঘ অর্ধচন্দ্রাকার সৈকত। তথায় আদুরে আঙ্গুল বোলাচ্ছে উপসাগরের মোলায়েম ঊর্মিমালা। 

     কলকাকলি মুখরিত সৈকতের আনন্দ‌হাটে ছাতার তলায় আরামকেদারায় শুয়ে বিয়ার পানে, উচ্ছলিত জলকেলিতে, রোদচশমা এঁটে বালুকাবেলায় শুয়ে রোদে পুড়ে শুঁটকি মাছ হ‌তে হয়তো অনেকে‌র আগ্ৰহ নাও হতে পারে। বিস্তীর্ণ অরণ‍্যে‌র সবুজ নির্জন‌তা, আদিগন্ত পাহাড়ের ঢেউ খেলানো আহ্বানে যারা পায় মনের মুক্তি, প্রাণের তৃপ্তি - তেমন অকৃত্রিম প্রকৃতির সান্নিধ‍্য‌ও খুব দূরে নয়। ফ্লোরিডার বিলাস, বৈভব, উচ্ছ্বাস এড়িয়ে উত্তরে জর্জিয়া রাজ‍্যে অনিন্দ্য সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে প্রকৃতিরাণী বসে আছেন। এখান থেকেই শুরু The Great Appalachian Scenic Nature Trail.

    আ্যাপালেচিয়ান পর্বতাঞ্চলে ৩৬৫০ কিমি দীর্ঘ এই মাউন্টেন নেচার ট্রেলটি পৃথিবীর দীর্ঘতম লং ডিসটান্স হাইকিং ট্রেল। কন‍্যাকুমারী থেকে মিজোরামের আইজলের দূরত্বের কাছাকাছি। এক শতাব্দী আগে ১৯২১ সালে, জর্জিয়া থেকে মেইন, এ‌ই সুদীর্ঘ অরণ‍্য‌ময় পথ পায়ে হেঁটে যাওয়ার প্রথম পরিকল্পনা করেন বেনটন ম‍্যাককে নামক বনদপ্তরের এক নিবেদিত‌প্রাণ বনকর্মী। সদ‍্যমৃতা পত্নী‌র মৃত্যুশোকের বিমর্ষতা ভুলতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যজ্ঞে নিজেকে সঁপে দেন বেনটন।  অনেকে তাঁর উৎসাহে এগিয়ে আসেন। ১৯২৩ সালে আংশিক উদ্বোধন হয়ে ১৯৩৭ সালে সম্পূর্ণ পথ হাইকারদের জন‍্য খুলে যায়। সময়ের সাথে এ পথের অনেক পরিবর্তন‌ও হয়েছে। এই নেচার ট্রেলটি সিজনড্ হাইকারদের কাছে AT বা এ্যাপালেচিয়ান ট্রেল বলে‌ পরিচিত। যেমন অভিজ্ঞ ট্রেকারদের কাছে ABC বা EBC মানে অন্নপূর্ণা বা এভারেস্ট বেস ক‍্যাম্প ট্রেক।

    বছরে প্রায় কুড়ি লক্ষ হাইকার এই পথে নামলে‌ও অধিকাংশই যায় বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দিনের বা কয়েক সপ্তাহের আংশিক ট্রেকে। খুব কম লোক‌‌ই - বছরে মাত্র হাজার খানেক যায়  সম্পূর্ণ হাইকিং করতে - যা AT-Thru নামে পরিচিত। প্রথা অনুযায়ী তা এক সিজনে বা বেশী সময় নিলে‌ও এক বছরের মধ‍্যে করার কথা। অধিকাংশ‌ই করে ছমাসের মধ‍্যে। প্রথম একাকী মহিলা হাইকার এমা গেট‌উড "মাত্র ৬৭" বছর বয়সে ১৯৫৫ সালে প্রথমবার AT-Thru হাইক সম্পূর্ণ করেন ১৪৬ দিনে! অর্থাৎ তিনি গড়ে হেঁটেছিলেন দিনে ২৫ কিমি এবং বিশ্রামের দিন বা জিরো ডে বাদ দিলে আরো বেশী। দু বছর বাদে তিনি আবার করেন AT-Thru এবং তৃতীয় ও শেষবার করেন ১৯৬৩ সালে ৭৫ বছরে! 'ধন‍্যি মেয়ে' বটে - থুরি ধন‍্যি ঠাকুমা!

    আমেরিকার পূর্বাঞ্চলে চোদ্দটি রাজ‍্যের মধ‍্যে দিয়ে চলে যাওয়া এই সুদীর্ঘ প্রকৃতি অবলোকন পথটি দক্ষিণ-পূর্বে জর্জিয়া রাজ‍্যের স্প্রিঙ্গার পর্বত (৩৭৮২') থেকে শুরু হয়ে নর্থ ক্যারোলাইনা, টেনেসি, ভার্জিনিয়া, পশ্চিম ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ড, পেনসিলভানিয়া, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, ভারমন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ার হয়ে শেষ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে মেইন রাজ‍্যে কাটাহ্‌দিন পর্বতে (৫২৬৭')। 

    এ পথে সর্বোচ্চ পয়েন্ট ক্লিংম‍্যানস ডোম (৬৬৪৩')। অবশ‍্য  হিমালয়ে যে কোনো ট্রেকেই এর থেকে অনেক বেশী উচ্চতা‌য় উঠতে হয়। যেমন ঘরের কাছে সন্দকফুর উচ্চ‌তাই ১১,৯৩০'। বা পঞ্চকেদারের উচ্চতম তুঙ্গনাথের শিবমন্দির ১২,০৭৩' - তার শিরে চন্দ্রশিলা গেলে ১৩,০০০'। মেইন থেকে উত্তর-পূবে মেইন উপসাগর ধরে শ দেড়েক কিমি জলযাত্রায় পড়বে কানাডার নোভা-স্কটিয়া। মেইন থেকে স্থলপথে সোজা উত্তরে গেলে পড়বে কানাডার  নিউ-ব্রুন্স‌উইক প্রদেশ। উত্তর-পশ্চিমে কানাডার কিউবেক প্রদেশ।

    আমেরিকা‌‌ অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আশীর্বাদ‌ধন‍্য। তার কিছু আবার অতিকায় - গ্ৰ‍্যান্ড ক‍্যানিয়ন, যোশিমিতি এবং ইয়োলোস্টোন জাতীয় উদ‍্যান, মনুমেন্ট ভ‍্যালির দিগন্ত‌বিস্তারিত মিস্টিক চার্ম। আমেরিকার বাড়ি, গাড়ি‌ সব‌ই বড় মাপের। মেয়েরাও। ও দেশের দীর্ঘাঙ্গী মহিলাদের হৃদয়‌ও তাদের হৃষ্ট মন বা পুষ্ট শরীরের মতোই বড়ো মাপের‍। ফলে মধ‍্যযৌবনে আমার মতো দুব্বল কোনো বঙ্গসন্তান‌কে বন্ধু‌র পথে পা মচকে কোঁতাতে দেখলে  হয়তো স্বাস্থ্য‌বতী কোনো মহিলা হাইকার‌ আপৎকালীন বন্ধু‌র মতোই অবলীলায় কোমর জড়িয়ে নিকটবর্তী স্বাস্থ্য‌কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে হাত নেড়ে বাই করে চলে যাবে। অমন জায়গায় পা মুচকেও সুখ।

    মার্কিন যুক্ত‌রাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এক অবিশ্বাস্য ধনী শহর। আমেরিকার মাত্র ১% ভৌগোলিক এলাকায় অবস্থিত নিউইয়র্ক সিটির জিডিপি ২০১৭ সালে ছিল আমেরিকার ৮% এবং কানাডা ও  দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপি‌র সমান। নেদারল্যান্ডস থেকে ১৬৫০ সালে আগত এক অভিবাসী  (immigrant) চাষার উত্তরপুরুষ কর্নেলিয়াস ভ‍্যান্ডারবিল্ট নিজ উদ‍্যমে জাহাজ ও রেলপথ ব‍্যবসায় অমেয় অর্থ উপার্জন করেন। ১৮৭৭ সালে মৃত্যুকাল অবধি তিনি ছিলেন আমেরিকার তৎকালীন এক নম্বর ধনকুবের। তাঁর‌ই পৃষ্ঠপোষক‌তায় টেনেসি রাজ‍্যের ন‍্যাশভিলে বিশাল, সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রায় দেড়শো বছর আগে স্থাপিত হয় ভ‍্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়। তখন তিনি দান করেছিলেন এক মিলিয়ন ডলার যা আজকের বাজারে ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি টাকা! 

    ঐ ধনী পরিবার নিউইয়র্কের ফিফথ্ এ্যাভেনিউতে একদা দশটি  প্রাসাদপ্রতিম সৌধ নির্মাণ  করে বিপুল আভিজাত্য প্রদর্শনের যে ঐতিহ্য‌ শুরু করেন সেই ট্রাডিশনে‌ই মাত্র তেরো মাসে ১৯৩১ সালে ফিফথ্ এ্যাভেনিউতে নির্মিত হয় ১০২ তলা এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং‌। ১৯৭০ সালে লোয়ার ম‍্যানহাটানে নির্মিত দ্বৈত মিনারে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র তৈরী হ‌ওয়া ইস্তক দীর্ঘ চল্লিশ বছর ওটি‌ই ছিল বিশ্বের উচ্চতম আকাশ আঁচড়ানো ভবন। তবে কোনোদিন আমেরিকা‌য় না গিয়ে‌ও মনে হয় ওখানে গেলেও নিউইয়র্কের নগরকেন্দ্রিক বৈভব আমায় আকর্ষিত, আচ্ছন্ন করবে না। তবে  ঐ শহরের মাঝে‌ স্বর্গোদ্যান সদৃশ বিশাল সেন্ট্রাল পার্কের কথা ভাবলে মনে হয় ওখানে পদচারণার সুযোগ পেলে ভালো লাগতো‌।

    ব‌ই পড়া বিদ‍্যে থেকে জানি, তথাকথিত বস্তু‌তান্ত্রিক প্রাচুর্যময় নিউইয়র্ক শহর আমেরিকা‌র কালচারাল ক‍্যাপিটাল‌ও বটে। তবে শুধু নিউইয়র্ক শহর নয়, যে রাজ‍্যের অন্তর্ভুক্ত সেই অত‍্যাধুনিক শহর, সেই নিউইয়র্ক রাজ‍্যে‌ই অবস্থিত অরণ‍্যময় আ্যাডিরোন্ডাক পার্বত্য নেচার রিজার্ভ - লেক শ‍্যাম্পলেনের পশ্চিমে ৬০ লক্ষ একর বা ২৪ হাজার বর্গকিলোমিটার ব‍্যাপী এক বিস্তৃত অরণ‍্যাঞ্চল। তুলনা হিসেবে সিমলিপাল ২৮০০, সুন্দরবন ৩৩০০ বা নাগরহোল অরণ‍্য ৬০০০ বর্গকিলোমিটারে বিস্তৃত। তাই বলেছি‌, প্রাচুর্য, প্রতিপত্তি, প্রকৃতি, প্রাণশক্তি - আমেরিকার অনেক কিছুই বেশ বড়ো মাপের।

    ১৮৯৪ সালের এক আইনবলে এর মধ‍্যে দু লক্ষ একর অতি প্রাচীন অরণ‍্যে নগর বা শিল্প উন্নয়নের নামে কুড়ুল ছোঁয়া‌নো নিষিদ্ধ। এই বিস্তৃত প্রাকৃতিক অঞ্চলে আছে দশ হাজারের বেশী হ্রদ, পঞ্চাশ হাজার কিলোমিটার ব‍্যাপী ছোট বড় নদী নালা। এখান দিয়ে‌ই প্রবাহিত হয়েছে আমেরিকা হয়ে কানাডায় প্রবাহিত বারোশো কিমি দীর্ঘ এক বৃহৎ নদী - সেন্ট লরেন্স। আরো পশ্চিমে আছে বিখ‍্যাত নায়াগ্ৰা জলপ্রপাত। এসবের মাঝেই আছে  শতাধিক জনপদ‌। দায়িত্ব‌শীল নগরসভ‍্যতা ও প্রকৃতির সুষ্ঠ সহাবস্থানের (sustainable coexistence) সুন্দর নজির এই অঞ্চল।

    আ্যাডিরোন্ডাক রিজার্ভের লেক প্ল‍্যাসিডে ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল উইন্টার অলিম্পিক। তার জন‍্য প্রয়োজন হয়নি অঢেল অরণ‍্য নিধনের। সদিচ্ছা ও সুপরিকল্পনা থাকলে মানুষ প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে থাকতে‌ই পারে। ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জেয়ার বোলসোনারোর মতো উন্নয়নের নামে কুৎসিত লোভে নির্বিচারে আ্যামাজন অরণ‍্য বিনষ্টকারী অবিমৃষ‍্যকারী রাষ্ট্রনেতা হলে অবশ‍্য অনেক বিপর্যয়‌ই হতে পারে।

    কিছুদিন আগে একটি ভিডিও দেখে বেশ আপ্লুত হয়েছিলাম। টরোন্টো‌ শহরের উত্তরে গভীর অরণ‍্যে‌র মাঝে শন জেমস দীর্ঘ দু বছর ধরে একাকী জীবনযাপন করছি‌লেন। আমার‌ও কখনো একা ঘুরতে ইচ্ছা হয় বলে বাষট্টি‌তে‌ও বছরে একবার শীতে ব‍্যাকপ‍্যাকার শৈলী‌তে অতি কম খরচে, জনবাহনে, হেঁটে, বাইকে হিচহাইক করে দুমাস ধরে একাকী ভ্রমণ অবধি আমার দৌড়। শনের  মতো শুধু একটি গোল্ডেন রিট্রিভার বন্ধু সঙ্গী করে দু বছর ধরে নির্বাক অরণ‍্য‌জীবন যাপন তাই আমায় অবাক করেছিল। এই সব দেখি বলে YT Algorithm এধরনের নানা কিছু সাজেস্ট করে।  
     
    সেভাবেই সেদিন এসেছি‌ল আ্যাপালেচিয়ান নেচার ট্রেলের ওপর ১০১ মিনিটের একটি এ্যামেচার ভিডিও। দেখতে শুরু করে জমে ক্ষীর। ৩৫  বছরের জ‍্যাসন এক‌ই কোম্পানি‌তে ১৪ বছর ধরে IT বিভাগে কাজ করে ক্লান্ত। ভাবতে শুরু করেছে হয়তো ৬৫ বছর অবধি ওকে এভাবেই কলুর বলদের মতো জোয়াল‌ টেনে যেতে হবে। কারণ প্রচলিত ছকের বাইরে গিয়ে ঝুঁকি নে‌ওয়ার সাহস ওর নেই। এই ভাবনাতেই স্বভাবে অন্তর্মূখী জ‍্যাসন ক্রমশ মানসিক‌ অবসাদে ডুবে যায়। 
     
    হাসিখুশি প্রিয় বান্ধবী ক্রিস্টির পেলব বুকে আঁকা সঙ্গী‌তের নোটেশন। তবু সেই মেদুর উপত্যকায় ডুবে গিয়ে‌ও জ‍্যাসনের সত্তায় বাজে বিষন্নতার সুর। শীতার্ত সন্ধ‍্যার ধোঁয়াশার মতো জ‍্যাসনের জীবনে যে নেমে আসছে দীর্ঘ‌মেয়াদী অবসাদ, ক্রিস্টি তা বোঝে। তবু ছেড়ে যায় না ওকে। বরং আরো আঁকড়ে ধরে মায়ায়। জ‍্যাসনকে সত্যিই ভালো‌বাসে যে। তবু ক্রমশ জ‍্যাসন সবার থেকে মানসিক‌ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে থাকে। জেঁকে বসে গভীর ডিপ্রেশন।  তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ - জীবনের এক উল্লেখযোগ্য সময়ে  জ‍্যাসন পরিণত হয় স্থবির সেতুস্তম্ভে - মেঘলা বিকেলে‌র মতো সময়, ঘোলা জলের মতো একঘেয়ে জীবন প্রবাহিত হয়ে যায় ওর বিষন্ন অস্তিত্ব ছুঁয়ে।

    জীবন যখন কিনারায় এসে ঠেকে, কখনো হঠাৎ‌ই দেখা দিতে পারে সূড়ঙ্গের ওপাশে আলো।  জ‍্যাসনের মনে হয়, যে ভাবেই হোক ওকে এই নিত‍্যনৈমিত্তকতার ছন্দ ভাঙ্গতে হবে। অন্তত একবার। চাকরি, ঘর, আত্মীয়, পরিচিত পরিবেশ, ক্রিস্টির সাহচর্য - সব ছেড়ে জ‍্যাসন এক বছরের জন‍্য পথে নামে AT-Thru হাইকিং‌য়ে - বছরে কুড়ি লক্ষের একজন হয়ে। লক্ষ‍্য হাজার খানেকের একজন হতে পারা। জ‍্যাসনের কাছে তা নিছক পদযাত্রা নয় - এক তীর্থ‌যাত্রা - Rediscover his lost rhythm of লাইফ।

    ক্রিস্টি যাত্রা‌র শুরুতে জর্জিয়া‌য় AT পথের ধারে হাসিমুখে রান্না করে খা‌ওয়ায় ওকে। প্রথম দুদিন ওর সাথে কিছুদূর হেঁটে সঙ্গ‌ও দেয়। তারপর ফিরে যায় ক্রিস্টি। এগিয়ে চলে জ‍্যাসন - সেই বিশাল সুন্দর নির্জন প্রকৃতির মাঝে একলা পথ চলতে চলতে জীবনের হারানো ছন্দ খুঁজে নিতে। এই হাইকিং তাই জ‍্যাসনের কাছে নিছক এক দীর্ঘ পদাচারণা মাত্র নয় - গভীর আত্মানুসন্ধান স্বরূপ। তাই শুকনো ডাল দিয়ে কারুর মাটিতে সাজানো ৫০০ মাইল পথচিহ্ন দেখে জ‍্যাসন বিহ্বল হয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলে - দীর্ঘ মানসিক প্রস্তুতি স্বত্ত্বেও প্রথমদিকে গড়ে দিনে ২৫ কিমি হেঁটে ও যে সত‍্যি‌ই এতটা পথ আসতে পারবে তা ও নিজেও ভাবে নি!
     
    মাঝে বৃষ্টি, তুষারপাত, ঠান্ডা, অসমান জমিতে নিদ্রাহীন রাতের শারীরিক কষ্টে মন দূর্বল হয়ে যায়। বাড়ি‌র আরামদায়ক শয‍্যা হাতছানি দেয়। তখন মনে হয়, খুব হয়েছে বাড়ি ফিরে যাই। পরক্ষণেই মনে হয় এই ক্লীবতা জয় করতেই তো এই দীর্ঘ পথে নামা। ফিরে গেলে ওর প্রিয়জন, যারা ওর মতোই কায়মনোবাক্যে চাইছে জ‍্যাসন সফল হোক, সম্পূর্ণ করুক নিজের সংকল্প - তারাও তো আশাহত হবে। তাই আবার চরৈবেতি মন্ত্র জপে প্রকৃতি পথে নামে জ‍্যাসন।

    এই দীর্ঘ পথের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে US National Park Services, US Forest Services এবং ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত Appalachian Trail Conservancy নামক একটি NGOর ছত্রছায়ায় বাইশটি স্বেচ্ছাসেবী ট্রেল ক্লাব। এই পথের পুরোটাই পায়ে হেঁটে চলার জন‍্য। তবে কিছু জায়গায় এটি হাইওয়ে পেরিয়ে চলে গেছে। সেখানে জনপদ প্রান্তে সরাইতে দু একদিন বিশ্রাম নেওয়া যায়। হাইকারদের জন‍্য ব‍্যবস্থা করা স্থানে মেশিনে জামাকাপড় কেচে নেওয়া যায়। এ পথে নির্দিষ্ট দূ্রত্বে রেশনদ্রব‍্য কেনার জায়গা আছে। এসব ব‍্যাপারে USNPS এবং ATCর উদ‍্যোগ প্রশংসনীয়।

    সেই যে শুরুতে ক্রিস্টি দুদিন চলেছিল জ‍্যাসনের সাথে, তার প্রায় মাস দেড়েক বাদে ১১৫০ কিমি‌তে যেখানে পথ এসে হাইওয়েতে মিলেছে - দেখা যায় গুবলুসোনা গোদুগোদু ক্রিস্টি গাড়িতে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে, দু বাহু বাড়ায়ে, একমুখ হাসি নিয়ে অপেক্ষা করছে ওর জ‍্যাসনের জন‍্য। সেদিন ও তার পরদিন মোটেলে একত্রে বিশ্রাম নেয় ওরা। হয়তো ওদের তৃষিত যুগলতন্ত্রে বাজে - না, আর হয়তো বিষন্ন সন্তুর নয় - বাঞ্ছিত উষ্ণবাদ‍্য‌। জ‍্যাসন যে জয় করতে পেরেছে ওর মানসিক অবসাদ, ফিরে পেয়েছে হারানো ছন্দ! হয়তো ওরা সাময়িকভাবে মিশে যায় ওদের মধ‍্যে। ওদেশে (এবং ইদানিং এদেশেও) ওসব স্বাভাবিক। তার জন‍্য বিবাহ নামক ডিসপোজেবল লাইসেন্স অপরিহার্য নয়। পথে নামার আগে বান্ধবীকে জড়িয়ে ধরে জ‍্যাসন বলে, কাঁদে না সোনা, আবার হবে তো দেখা, তবে মাস খানেকের আগে‌ নয়। এগিয়ে যায় জ‍্যাসন। ফিরে যায় ক্রিস্টি - দ্বিতীয়‌বার।
      
    এই পথের আশেপাশে থাকা স্থানীয়‌রা AT-Thru হাইকারদের খুব সম্মান করে। কারণ এ সংকল্প মোটেও সহজসাধ্য নয়। তাই এই ট্রেল যেখানে হাইওয়েতে মেশে সেখানে স্থানীয় কে‌উ সম্পূর্ণ অচেনা AT-Thru হাইকারদের গাড়িতে করে শহরে নিয়ে যায়, রেঁস্তোরায় গরম খাবার খাওয়ায় বা নিজের বাড়িতে রাতের আশ্রয় দিয়ে পরদিন আবার গাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসে ট্রেলে। এসব এক ধরণের ফেলো ফিলিংস। অর্থাৎ নিজে কখোনো ইচ্ছা স্বত্ত্বেও যেতে না পারলে যারা যাচ্ছে তাদের একটু সাহায্য, আতিথেয়তা করে আত্মিক আনন্দলাভ। 
     
    এহেন অপ্রত্যাশিত সস্নেহ আপ‍্যায়ন AT হাইকার গোষ্ঠী‌র লিঙ্গোতে  'ট্রেল ম‍্যাজিক'। যারা যাদু করে তারা 'ট্রেল এ্যাঞ্জেল'। এই ট্রেলে দীর্ঘদিন চলতে চলতে কিছু সহ পদযাত্রীদের সাথে পথের সখ‍্যতা বদলে যায় আত্মীয়‌তায়, অনুভূত হয় আত্মিক টান। তেমন সম্পর্ক‌ই তো আত্মীয়‌তা। তারা সচরাচর হয় খোলামেলা, প‍্যাঁচপয়জারহীন বিনদাস চরিত্রে‌র মানুষ। না হলে এপথে তারা আসবেই বা কেন। তারা ক্রমশ হয়ে যায় এক 'ট্র‍্যামিলি'  বা ট্রেল ফ‍্যামিলির অন্তর্গত। সবার নিজস্ব চলার ছন্দে কখোনো মাঝে হয়ে যায় ছাড়াছাড়ি, আবার কোথাও দেখা হলে প্রকাশ পায় সানন্দ উচ্ছ্বাস। কারুর সাথে যোগাযোগ থেকে যায় AT পদযাত্রার শেষেও - কখনো জীবনের পথে‌ও জড়িত হয়ে পড়ে তারা।
     
    জ‍্যাসন‌ ১৬১০ কিমি চলার পর ওর কিছু YT ফলোয়ার‌দের ভার্জিনিয়া‌র ওয়ারেন কাউন্টির রাস্তায় দেখতে পায়। তাদের একজন ওকে অভ‍্যর্থনা করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পেনসিলভানিয়া‌র কাছে এক অচেনা দম্পতি তাদের বাড়িতে পালন করে জ‍্যাসনের ছত্রিশতম জন্মদিন। অচেনা মানুষের এমন সহৃদয়তায় বেশ কয়েক‌বার আর্দ্র‌তায় দ্রবীভূত হয় একদা অবসাদে তলিয়ে যাওয়া জ‍্যাসনের অন্তর। মনুষ‍্যত্বের প্রতি হারানো বিশ্বাস ফিরে পায়। নির্জন গ্ৰেসন হাইল‍্যান্ডে দুটি বুনো ঘোড়া নিঃসংকোচে কাছে এসে জ‍্যাসনের বাড়ানো হাত চাটলে সে‌ই অলৌকিক অনুভূতি‌‌র অভিঘাতে কথা হারিয়ে যায় তার। এমন অজানা মণিমুক্তোর সন্ধানে‌ই তো পথে নামে আত্মিকভাবে বিপন্ন মানুষ। এই দীর্ঘ পথে চলতে চলতে কত মানুষ  যে কতভাবে আপ্লুত, উজ্জীবিত হয় তার ঠিকানা নেই। 
     
    এ পথে চালু আছে কিছু প্রথা। যেমন হাফ‌ওয়ে পয়েন্টে (১১০০ মাইল বা ১৮৫০ কিমি) আছে পাইন গ্ৰোভ ফারনেস জেনারেল স্টোর্স। সেখানে হাইকাররা যায় হাফ-গ‍্যালন চ‍্যালেঞ্জ চাখতে - মানে ঐ সাইজের একটা আইসক্রিম একবারে খেতে হবে। তবে পয়সা দিয়ে। পারলে ঐতিহাসিক ভিজিট‌র বুকে নাম উঠবে। কাছেই আছে AT মিউজিয়াম। সেখানে সংরক্ষিত আছে এই পথের নানা কিংবদন্তি‌প্রায় ছবি, কাহিনী - যেমন আছে আগে উল্লেখিত 'ধন‍্যি ঠাম্মা' - গ্ৰ‍্যান্ডমা গেট‌উডের কথা।
     
    শুধু পশ্চিমবঙ্গের পর্বতারোহণ মহলে‌ই নয়, প্রত‍্যন্ত হিমালয়ে‌ও কিছু পাহাড়িয়া মানুষের কাছে কলকাতার হিমালয়ান এ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস‍্য বিদ্যুৎ সরকার পরিচিত ছিলেন কাছের মানুষ ছোড়দা হিসেবে। তিনি‌ও কোনো এক অলখ প্রেরণায় ১৯৭৬ সালে দীর্ঘ নয় মাস ধরে লাদাখ থেকে ভুটান হয়ে অরুণাচল অবধি ৪০০০ কিমি ট্রান্স হিমালয়ান ট্রেক করেছি‌লেন। নাম কামানোর মোহ তাঁর ছিলনা। তিনি গেছেন মনের টানে, কারণ হিমালয় ছিল তাঁর কাছে ঘরবাড়ির মতো। সেখানকার মানুষ ছিল তাঁর আপনজন। তাই তিনি পথ চলার সাথে দেখেছেন, মিশেছেন, থেকেছেন তাদের সাথে, অনুভব করেছেন। তাই নয় মাসে ৪০০০ কিমি বা গড়ে দিনে ১৫ কিমি পথ চলতে পারাও যথেষ্টর অনেক বেশী কৃতিত্ব।

    এতদিন ধরে, এতো কষ্ট করে কোন অচিন টানে, কিছু মানুষ এমন দীর্ঘ পদযাত্রায় নামে? হয়তো অন্তরের এমন আহ্বান মুষ্টিমেয় মানুষের হিয়াতেই তোলে কোনো গভীর অলখ ঝংকার - যাতে মজলেও তার স্বরূপ হয়তো তাদের কাছেও থেকে যায় অধরা। তবে সব কিছু না বুঝলেও চলে। বেশী বোঝাবুঝি‌তে‌‌ই বরং হারিয়ে যেতে পারে কিছু ম‍্যাজিক চার্ম। জীবনে কিছু ব‍্যাপার অবোধ‍্য থাকলেও ক্ষতি নেই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 2601:84:4600:5410:ddaa:8c9f:cfc6:ed5a | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৪523859
  • বা: 
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৫১523860
  • আমি জানি কোনদিন এই পথে হাঁটবনা আমি, কিন্তু এই লেখায় ডুবে হেঁটে এলাম।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:b186:2860:b4c2:6580 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৯523861
  • আমি খুবই অল্প একটু হেঁটেছি। 
  • র২হ | 2601:c2:6:129b:ad40:a2df:5c69:b7e7 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৯523865
  • আমিও, খুব অল্প একটু। 
    তবে আশায় বাঁচি - এখনো মোদের শরীরে রক্ত/ রয়েছে গরম মেটেনি শখ তো। 
     
  • Samaresh Mukherjee | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৮523866
  • অমিতাভ‌বাবু,
    সেদিন আমি‌ও ঐ ভিডিও‌টি দেখতে শুরু করে ডুবে গেছিলুম। আমার কোনো মানসিক অবসাদ নেই। পশ্চিবঙ্গ থেকে বহু দুরে, তিন দশকের ওপর বঙ সংসর্গহীন নির্বান্ধব একান্ত জীবন যাপন করেও আত্মসঙ্গে নিত‍্যানন্দে  দিব‍্য ফুরফুরে আছি। তবু জ‍্যাসনের অবসাদ ও তার থেকে ওর নিজের মতো উপায়ে, মুক্তি‌র আকুতি আমায় স্পর্শ করেছি‌ল খুব।

    অরণ‍্য‌বাবু,
    আপনি ভাগ‍্যবান, ঐ অনন্য সুন্দর পথের, ব‍্যবস্থা‌পনার কিছুটা স্বাদ পেয়েছেন। আমার তো দুধের স্বাদ ঘোলে‌ও নয়, ছাস্ বা বাটার মিল্কে মেটে। তাই যতোগুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল‍্যাটফর্ম আছে - YT আমার কাছে বরদান মনে হয়। প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন নিই যাতে এমন কিছু দেখার মাঝে বিজ্ঞাপনের Distraction না হানা দেয়।

     
  • Samaresh Mukherjee | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৭523869
  • র২হ
    আপনি‌ও লাকি, শুধু ঐ পথে টুকুন হাঁটার জন্য‌ই নয় - খুব অল্প রেখায় সুন্দর স্কেচ করার পারদর্শিতা‌র জন‍্য‌ও। কিছু উৎসাহী, দক্ষ, করিৎকর্মাদের জন‍্য‌ই (সব গুরুদের জানি‌ও না - তার প্রয়োজন‌ও নেই) গু৯ দশ বছরের ওপর হৈ হৈ করে চলছে। ভালো থাকুন সবাই - আনন্দে থাকুন
  • Supriyo Mondal | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৪০523902
  • বাহ্!!! খুব ভালো লাগলো লেখাটা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন