এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • রাজনীতি - সব সমস্যার সমাধান? 

    অভিজিৎ নন্দী
    আলোচনা | রাজনীতি | ১১ মার্চ ২০২৩ | ৫২৪ বার পঠিত
  • আমরা শিক্ষিত হই যে লেখাপড়ার বা ইউনিভার্সিটির মধ্য দিয়ে, তার সূত্রপাত করেছিল বৃটিশরা। এবং বৃটিশদের কাছাকাছি থাকা শিক্ষিত মানুষেরা। এবং এই সূত্রে আমরা পশ্চিমী চোখ দিয়ে নিজেদের দেখতে শিখি। পশ্চিমী আচার-বিচার, পোশাক-আশাক, ন্যায়-নীতিবোধ নিয়ে চলতে শুরু করি। পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত হই। পশ্চিমের মত নই বলে লজ্জা পাই। তাদেরকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে নিজেদের তৃতীয় শ্রেণির (তৃতীয় বিশ্ব) মনে করেছি। আর উন্নয়ন নামক এক কল্পিত পথে প্রতি মুহূর্তে তাদের মত হবার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেছি।

    আর, দেশ চালানোর জন্য আমরা পশ্চিমের ন্যায় রাষ্ট্র গড়ে তুলেছি, পশ্চিমী আধুনিক রাজনীতি আয়ত্ত করেছি।

    পশ্চিমে মধ্যযুগে ছিল চার্চের প্রাধান্য। চার্চ সর্বোচ্চে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার-ব্যবস্থা, খ্রীষ্টিয়করণ, ধর্মান্তরিত করা, শাস্তি দেওয়া, ইত্যাদি মানুষের জীবনের বহু দিক ছিল চার্চের আওতায়। ধর্ম ও রাষ্ট্র তখন হাত ধরাধরি করে চলত। আধুনিক সমাজের পত্তন চার্চের থেকে রাষ্ট্রকে আলাদা করল বটে। কিন্তু চার্চের যাবতীয় কাজগুলি একইভাবে চালাতে লাগল রাষ্ট্রেরই এক একটি হাত। 

    মানুষ জন্মের পরই পুরো মানুষ থাকে না। তাকে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে পূর্ণ মানুষ করে তোলার দায়িত্ব আগে ছিল চার্চের। সেই দায়িত্ব পরবর্তীকালে নিল রাষ্ট্র। আগে চার্চ তার ধর্ম ও শিক্ষা প্রচারের মাধ্যমে মানুষ তৈরি করার কাজটা করত। কেউ বেয়াদবী করলে তাকে শাস্তিও দিত। ব্রুণোকে দিয়েছিল, গালিলিওকে দিয়েছিল।   আর এখন এই মানুষ তৈরি করা হয় স্কুল-কলেজের মাধ্যমে, রাষ্ট্রমুখী রাজনীতির মাধ্যমে। চার্চের মতই, কিছু জ্ঞাণি মানুষ (ভ্যানগার্ড) যেমন- অধ্যাপক, জজ্, রাজনৈতিক নেতৃত্ব) এখানে মানুষ গড়ার কাজটা পায়। বাকিরা এদের অনুসরণ করে। 

    বৃটিশ প্রবর্তিত এই সকল পরিকাঠামো এবং পদ্ধতি আমাদের দেশেও একইভাবে চলেছে। দেশের উন্নতিভাবনা তাই ওই রাজনীতির দ্বারাই পরিচালিত হয়েছে। ডান হোক বা বাম, রাজনীতির মূল পদ্ধতিগুলো প্রায় একই। এই রাজনীতির মূল কথা অন্যকে পালটানো। আত্মরূপান্তরের কোন দর্শন সেখানে নেই।

    এই রাজনীতি যেহেতু অন্যকে পালটাতে চায়, ফলে তাকে যুদ্ধ করতে হয়, হিংস্র হতে হয়। তার মধ্যে চার্চের যাবতীয় পদ্ধতির প্রকাশ দেখা যায়। চার্চ যেমন ধর্মান্তকরণ করে, এখনকার রাজনৈতিক দলেরও কাজ অন্য মতের লোককে নানাভাবে নিজের দলে নিয়ে আসা (convert  করা)।

    এই রাজনীতিতে নিজেকে পালটানোর কথা নেই। নিজের দিকে তাকানো নেই।
     দর্শন এখানে একটা জ্ঞান যা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো যায়। আত্মরূপান্তরের চর্যা-দর্শন এখানে নেই।

    তাহলে কি আধুনিক রাজনীতির মধ্যে (ডান, বাম, সোসালিষ্ট, কমিউনিস্ট)  আমাদের মুক্তি নেই? তাহলে কি আমাদের রসদ সংগ্রহের জন্য ফিরে দেখতে হবে মধ্যযুগের সেইসব বাউল, ফকির, সুফি, লালন, চৈতন্যদের চর্যাদর্শনগুলি (যখন আধুনিক "রাজনীতির" জন্ম হয় নি)?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ১১ মার্চ ২০২৩ ০৯:২১739645
  • মধ্যযুগের সমস্ত আউল-বাউল-ফকির-চৈতন্যদেবের আত্মদর্শনও যখনই সম্প্রদায় গড়ে তোলে তখনই অন্যকে দীক্ষিত করতে চায় , পাল্টাতে চায়। এসে পড়ে ক্ষমতার রাজনীতি । 
     সমাজবদ্ধ মানুষ চাইবে সমচিন্তার লোকজন। দরকার হিংসাকে বর্জন করা। 
  • Kishore Ghosal | ১১ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩৬739648
  • রঞ্জনদা একদম ঠিক বলেছেন, কোন দর্শনই কোনদিন ফুল-প্রুফ থাকেনি - তার কারণ সব সমাজে - সব সম্প্রদায়ে কিছু মানুষ সর্বদাই থাকেন - যাঁরা ক্ষমতার শীর্ষে উঠতে চান। সমাজের বা সম্প্রদায়ের মাথায় চড়ে - নিজের সুবিধে মতো ব্যাখ্যা-টীকা-টিপ্পনি দিয়ে পাল্টে দেন মূল দর্শনের আদর্শ। এবং নিজের নিজের গোষ্ঠী বাড়াতে নিমগ্ন থাকেন। 
    রাজনীতির থেকে কোথাও মুক্তি আছে বলে মনে হয় না। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন