এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সোনা-র হরিণের সন্ধানে বাংলা নাটক এবং দেশপ্রেম 

    Eman Bhasha লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৩ নভেম্বর ২০২২ | ২৮৪ বার পঠিত
  • সোনার হরিণের সন্ধানে বাংলা নাটক

     একটা প্রবল আক্ষেপ ছিল, বাংলাদেশের নাটকে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম ততটা আসে আমাদের সাম্প্রতিক নাটকে তা প্রায় অনুপস্থিত কেন? আর তার ফলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পদলেহী রয়াল সিক্রেট সার্ভিসের লয়াল বা অনুগত খোচর/ টিকটিকিরা নিজেদের দ্বেষপ্রেম কে দেশপ্রেম বলে দাগিয়ে দিয়ে জনমনের ৩৯% কে দখল করতে পারে। 
    আর পয়সা ছড়িয়ে প্রচার মাধ্যমের এক বড় অংশকে। তার ফলে, খেলা হয়ে যায় যুদ্ধ।
    ১৫ আগস্ট উপলক্ষে যে-সব চলচ্চিত্র দেখানো‌ হয়, তাতে মনে হয়, স্বাধীনতা সংগ্রামটা পাকিস্তানের বিপক্ষে হয়ে ছিল।
    ভারতের বহু বিপ্লবী যে বর্তমান পাকিস্তানের সন্তান তা আড়াল করে রাখা হয়।

    আর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াকু উধম সিং কে সাম্প্রতিক ভারতীয় চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ ছবি --সর্দার উধম সিং -কে অস্কারে পাঠাতে অস্বীকার করে ভারতের সঙ্ঘী সরকার।
    কেন? না, ব্রিটিশ সরকার ক্ষুণ্ণ হবে।
    ভারতের সম্পদ লুট করে একদা ধনী হওয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাণী মারা গেলে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়।
    কোহিনূর ফিরিয়ে দাও বলার হিম্মত কারো হয় না।
    ব্রিটিশ যাদুঘরগুলো লুঠের মালে ভর্তি।
    কে বলবে?
    আজ সোনার হরিণের সন্ধানে একটা নাটক দেখার ইচ্ছে ছিল।
    আগে বহুবার দেখেছি। বুঝে না বুঝে।
    বিপ্লবকেতন চক্রবর্তীর 'সিয়া সিয়া সিয়া' গান শুনে, মিহিরবাবুর অসাধারণ ঈশ্বর দেখে, বাল্মীকি চরিত্রাভিনেতাকে আসল  বাল্মীকি ভেবে কাটিয়ে দিয়েছি।
    সুমন মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়ে বিপ্লবকেতনের অভাব প্রথমে অনুভব করেছি। পরে একটু ভালো লেগেছে। সুমন মুখোপাধ্যায় প্রতিভাবান পরিচালক। কিন্তু তবু পানসে ঠেকেছে।
    আরেকজন বিখ্যাত অভিনেতাকেও বিপ্লবকেতনের ছায়ায় দেখতে হয়েছে। তিনি যদিও প্রবল শক্তিশালী অভিনেতা।

    একদিনে তিনটি শো।
    খুব খুশি।
    ওমা, টিকিট নেই।
    সব অনলাইনে।
    দামের সঙ্গে বাড়তি গচ্ছা গড়ে টিকিট প্রতি ৫৯ টাকা।
    অনলাইনের খেসারত।
    তাও তাও সই।
    কিন্তু সব বিক্রি হয়ে গেছে অনলাইন বাজারে।
    একেতাকে ধরে পরিচিত অনেকেই টিকিট পেয়েছেন ঘুরপথে।
    বললে, হতো কিনা কে জানে!
    যাক, অনলাইন জিন্দাবাদ।
    একদিন হয়তো কেউ অনলাইনে সব টিকিট কিনে হল ফাঁকা রাখার ব্যবস্থা করে ফেলবেন।
    যেমন একসময় সব কাগজ কেউ কেউ কিনে‌ নিতেন আর কী!

    সব খারাপের ভালো থাকে।
    বন্ধু দাদা বিশিষ্ট আইনজীবী একরামুল বারি ফোন করলেন, সন্ধ্যায় ফাঁকা আছেন?
    এ-সব জিজ্ঞাসা মানেই নাটক দেখার আমন্ত্রণ।
    একরামুল ভাই নিজে নাটক দেখেন, যাত্রা শোনেন। এবং অভিনয় করে দেখাতে পারেন। এবং তিনি একজন নিয়মিত নামাজ রোজা রাখা মানুষ।
    প্রবল ধর্মনিরপেক্ষ।
    বিশিষ্ট আইনজীবী কমলেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, এক মাস্টারমশাই এবং আমি তাঁর সঙ্গী তালিকায় থাকি বৌদির সঙ্গে।
    আজ দেখলাম আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসে এক অসাধারণ রাজনৈতিক দেশপ্রেমিক নাটক : প্রথম  রাজনৈতিক হত্যা।
    বিভাস চক্রবর্তীর দলের নাটক।
    অন্য থিয়েটার।
    পরিচালক আমাদের প্রিয় ভাই দেবাশিস রায়।
    দেবাশিস এবং রাজা ভট্টাচার্য একসময় একসঙ্গে দল‌ চালাতো। ভাষা ও চেতনা সমিতির বহু অনুষ্ঠানে ওঁরা নাটক করেছেন।
    রবীন্দ্র সদন চত্বরের খোলা জায়গায়।
    বাংলা যাত্রা পথনাটকও এবং স্বদেশি ঘরানার সঙ্গে বিদেশি থিয়েটারকে সার্থকভাবে মেলাতে পারেন দেবাশিস।
    নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র এক বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে মোকাবেলায় দ্বিধাগ্রস্ত।
    বান্ধবী খুন হয়েছেন।
    খুনের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটছেন নির্দোষ বন্ধু।
    আসল খুনী সোমরাজ নামী সংবাদমাধ্যমে।
    কী করবেন বাবর?
    মিথ নিয়ে তাদের কারবার ছিল।
    পৌরাণিক মিথ আর ঐতিহাসিক মিথ।
    ঐতিহাসিক মিথের সূত্র ধরে আসে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস।
    হেমচন্দ্র উল্লাসকর বারীন্দ্র ঘোষ ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকী সুশীল সত্যেন কানাইলাল দত্ত।
    এবং বিশ্বাসঘাতক নরেন গোঁসাই।
    নরেন গোঁসাইকে হত্যা করা হয় জেলে।
    কানাইলাল দত্ত ফাঁসিতে প্রাণ দেন।
    ফাঁসির দড়ি পরেন মুখ না ঢেকে হাসিমুখে।
    আর দাদাকে সগর্বে বলেন, আমি নাস্তিক। আমার মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধ শান্তি করে আমার আদর্শকে কলঙ্কিত করো না।
    সেই কানাইলাল দত্ত বাবরকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্বাসঘাতককে শাস্তি দিতে বলেন?
    কী করবে বাবর?
    বিশ্বাসঘাতকদের শাস্তি না দিলে তো তারাই দেশনায়ক হয়ে দেশের ইতিহাস বদলে দেবে।
    উৎপল দত্তের নাটক 'রাইফেল'  'বৈশাখী মেঘ', 'কল্লোল'-এ স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশ্বাঘাতকদের স্বাধীন ভারতের মন্ত্রী হওয়ার বিরুদ্ধে বক্তব্য আছে।
    বন্ধু সম্রাট মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, উৎপল দত্ত বলতেন, বাংলার শ্রেষ্ঠ শিল্পীরা আছেন যাত্রার মঞ্চে। পেশাদার এবং অপেশাদার দুই মঞ্চেই।
    আমরা তো চলচ্চিত্র এবং মঞ্চনাটকের লোকদেরই বড় অভিনেতা হিসেবে দেখতে ও দেখাতে অভ্যস্ত।
    এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্টারডম।

    দেবাশিস রায়দের, অন্য থিয়েটারের নাটকে কোনো আলাদা নামী তারা নেই, সবাই উজ্জ্বল নক্ষত্র অভিনেতা অভিনেত্রী হিসেবে।
    কুর্ণিশ।
    নজরুল ইসলাম মুকুন্দ দাসের গানকে যেভাবে ব্যবহার করেছেন-- অকল্পনীয়।
    আর এ নাটকে পর্দা পড়ে না।
    পর্দা ওঠে না।
    পথ মঞ্চ মাত্রা এবং মঞ্চ বিন্যাসে একান্ত বাঙালি ও ভারতীয় এই নাটক।
    জিন্দাবাদ। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন