এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রান্না পূজা 

    Manab Mondal লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ২৫৮ বার পঠিত
  • অরন্ধন উৎসব বাঙালির একটা ঐতিহ্য।যদিও পশ্চিমবঙ্গে বছরে দু'বার 'অরন্ধন' উৎসব পালিত হয়। একবার মাঘ মাসে শ্রীপঞ্চমী তথা সরস্বতী পূজার পরের দিন শীতলষষ্ঠীতে। কোথাও কোথাও শিলনোড়া পূজা বলে। তবে রান্না পূজা বলতে আমরা ভাদ্র সংক্রান্তিতে মনসা পূজার দিনকে বুঝি ।মনসা পূজার অবিচ্ছেদ্য অংশই হল - 'অরন্ধন' উৎসব বা রান্না পূজা। তবে পশ্চিমবঙ্গের স্থানভেদে বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসব্যাপী যে কোন শনিবার বা মঙ্গলবারে এবং নাগপঞ্চমী হতে প্রতি পঞ্চমী তিথিতে মনসাদেবীর পূজা শুরু হয় এবং ভাদ্র সংক্রান্তিতে মনসাদেবী ও অষ্টনাগপূজা সমাপন ও ভাসান হয়। সেই উপলক্ষে সংক্রান্তি দিন পালিত হয় 'অরন্ধন'। যেহেতু ভাদ্র মাসের শেষ দিনে রান্না করা হয়তাই অরন্ধন উৎসবকে ভাদ্রে রেঁধে আশ্বিনে খাওয়ার উৎসব-ও বলা হয়।ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে মনসা পূজোর দিন অরন্ধন উৎসব পালিত হয় তাকে উনুন পূজো বলা হয় । এই দিন বাড়িতে উনুন জ্বালাবার নিয়ম নেই। তাই আগের দিন রান্না করে সেই বাসি খাবার খাওয়ার রীতি অরন্ধন উৎসবে।
     
    পূজার ব্যবস্থা অনুযায়ী অরন্ধন দুই ধরনের রান্না দেখা যায়। ইচ্ছারান্না, ও ধরাটে রান্না বা আটাশে রান্না । ইচ্ছা রান্না - ভাদ্র মাসের মঙ্গলবার ও শনিবার রাতে এই রান্না পুজো হয়। যেহেতু নিজেদের ইচ্ছে মতো দিনে এই রান্না পুজো হয় তাই ইচ্ছে রান্না বলে। আর গাবড়া রান্না বা আঠাশে রান্না - দখনো বা দখিনারি দের বাড়িতে হয়ে থাকে ভাদ্র মাসের আঠাশ তারিখে এই রান্না পুজো হয় তাই একে আঠাশে রান্না।
    বিশ্বকর্মা পূজার দিন পালিত হলে সেই অরন্ধনটিকে ‘বুড়োরান্না’ বলা হয়ে থাকে।রান্না করে পান্তা খাওয়ার রীতি আছে বলে অনেক জায়গায় একে পান্তা পুজোও বলে।
    হেঁশেলের একস্থানে পরিষ্কার করে ফণিমনসা কিংবা শালুক গাছের ডাল সাজিয়ে মনসার ঘট সাজিয়ে বিশেষ পুজো করা হয়। বিশ্বকর্মা পুজোর (Vishwakarma Puja) আগের দিন প্রায় সারা রাত জুড়ে চলে রান্নাবান্নার চরম ব্যস্ততা সাথে।সারারাত ভোগরান্নার পরে সিঁধ বৃক্ষের বায়মনসা গাছের পাশে রান্নাপুজোর ভোগ রাখা হয়। মনসার ঘট বা পাঁচফণার ঘট পেতে মাটিতে গোবর ছড়া দিয়ে , কুলোয় পদ্মপাতা বা কলাপাতা বা পাথরের বা কাঁসার থালাতে সবরকম ভোগ সাজিয়ে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। ঘরের উনুনেকেও এইদিন মনসা ডাল , শাপলা র মালা ও আল্পনা দিয়ে সাজানো হয় ও পুজো করা হয়।পুজোর জায়গায় চমৎকার আল্পনা দিয়ে ফুল সাজিয়ে দেওয়া হয়।
     
    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি রাখির পাশাপাশি অরন্ধন উৎসব কেও জনপ্রিয় করে তোলেন। আসলে যেটা হয়েছিল ব্রিটিশ সরকারের বঙ্গভঙ্গ নীতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছিল ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর। আগে থেকেই আন্দোলনকারীরা ওই দিন ব্যাপক হরতাল ও জাতীয় শোক দিবস পালন করবেন ঠিক করে ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে গ্রহণ করে প্রস্তাব রাখেন, ১৬ অক্টোবর কোনো বাড়িতে রান্নাবান্না হবে না। অরন্ধন এবং উপবাস পালন করা হবে বাংলা জুড়ে। 
     
    বর্ষা পর যেহেতু চারিদিকের নদী নালা জলে ভরে । এসময় গ্রাম বাংলায় বাড়িতে সাপের উপদ্রব বাড়ে যেতো। তাই অতীত কাল থেকে মা মনসাকে তুষ্ট করতে এই বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ বঙ্গের সব বাড়িতে মা মনসার মঞ্চ দেখা যায়। 
     
    তবে বাংলা আরো দুইটি রান্না পূজা দেখা যায়। ষষ্ঠীর দিন এই রান্না পুজো হয় তাই একে ষষ্ঠী রান্না , প্রচলিত আছে তাকে দূর্গা রান্না বলা হয়। যেটি দূর্গা পুজোর সময় হয়।
     
    প্রায় সব রান্না পুজোতেই কমবেশি এক ধরনের রান্না কারন, বাসি খেতে হয় তাই মূলত ভাজা বেশী হয় কারন তরল খাবার নষ্ট হয়ে যায় ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কিন্তু | 14.102.71.122 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:১১512073
  • এখন তো উনুনে রান্না হয় না আর সাপের বদলে মশার উপদ্রব বেশি
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন