এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  বই কথা কও

  • "কমলে কামিনী" নাটকের ১৫০ বছর

    দীপঙ্কর দাশগুপ্ত
    পড়াবই | বই কথা কও | ৩১ জুলাই ২০২২ | ২৪৩৮ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)

  • গন্ধর্বনারায়ণ মিত্র বললে কেউই চিনতে পারবেন না। কিন্তু পরক্ষণেই সকলে এই ব্যক্তিত্বের গুরুত্ব অনুধাবন করবেন যখন জানা যায় এই নামের মালিক নিজের নাম বদলে রেখেছিলেন দীনবন্ধু। নীল বিদ্রোহ নিয়ে দেশে-বিদেশে সাড়া জাগানো নাটক "নীলদর্পণ" লিখে তিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন। এর বাইরে তাঁর আর একটি উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হল কাছাড়ের ইতিহাস অবলম্বনে রচিত নাটক, "কমলে কামিনী।" সেই নাটক প্রকাশিত হওয়ার সার্ধ-শতবার্ষিকী চলতি বছরেই। গত ৮ জুলাই ভারতীয় ডাক বিভাগ দীনবন্ধু মিত্রের "কমলে কামিনী" স্মরণে বিশেষ ফার্স্ট ডে কভার প্রকাশ করলেন শিলচর থেকে। আধুনিক প্রজন্মের কাছে অতীতের নাট্যকারের সাহিত্যকর্মের গুরুত্ব তুলে ধরা ও সচেতনতা প্রসারের এই চমৎকার কাজটির পিছনে রয়েছে ডাক বিভাগের শিলচর সার্কেলের শীর্ষ আধিকারিক সুরজিৎ দাশগুপ্তের সক্রিয় উদ্যোগ এবং বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও লেখক ডঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্যের গবেষণা সহায়তা। অমলেন্দুবাবু সম্প্রতি অসম সরকারের আজান পীর পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

    দীনবন্ধু মিত্রের জন্ম ১৮৩০ সালে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার চৌবেড়িয়ায়। যে সময় তিনি জন্মগ্রহণ করেন, সেই সময় ওই গ্রাম উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অংশ ছিল না, ছিল নদীয়া জেলার অন্তর্গত। এই চৌবেড়িয়া গ্রামের চারদিক নদী বেষ্টিত ছিল, তাই স্থানটির নাম চৌবেড়িয়া। ছোটবেলায় গ্রামের পাঠশালায় পড়াশুনার শুরু। মাত্র দশ বছর বয়সেই তাঁর পিতা কালাচাঁদ মিত্র জমিদারের সেরেস্তায় ছেলেকে কাজে নিযুক্ত করেন। কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে বালক দীনবন্ধু চলে আসেন কলকাতায়। কাকা নীলমণি মিত্রের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বাসন মাজার কাজ করে লেখাপড়া চালাতে থাকেন। ১৮৪৬ সালে তাঁকে ভর্তি করে দেওয়া হয় জেমস লঙের অবৈতনিক বিদ্যালয়ে। লঙ সাহেবের ইশকুলে নিজের নাম বদলে দীনবন্ধু নাম গ্রহণ করেন। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি একাধিক বৃত্তি পান। পরে কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল যা পরবর্তী কালে পরিচিতি পেয়েছে হেয়ার স্কুল হিসেবে সেখান থেকে তিনি বিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় সিনিয়র বৃত্তি পেয়েছিলেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বরাবরই পেতেন সর্বোচ্চ নম্বর। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে হিন্দু কলেজে গিয়েও তিনি মেধার স্বীকৃতি-স্বরূপ জলপানি পান। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার, শেষ পরীক্ষা না দিয়ে এবং কলেজের শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই তিনি ১৮৫৫ সালে পাটনায় ১৫০ টাকা মাসিক বেতনে পোস্ট মাস্টারের চাকরিতে যোগ দেন। অল্পদিনের মধ্যেই প্রমোশন পান পোস্টাল ইন্সপেক্টর পদে। পরবর্তীকালে দীনবন্ধু মিত্র নদীয়া, ওড়িশা, হুগলী, ঢাকা, প্রভৃতি স্থানে কর্মরত ছিলেন।



    দীনবন্ধু যখন ঢাকায় ইন্সপেক্টিং পোস্টমাস্টার হিসেবে নিযুক্ত সেই সময় তো বটেই এবং তার আগেও বাংলা ও ওড়িশার বিভিন্ন প্রান্তে নীলকর সাহেবদের অত্যাচার এবং স্থানীয় চাষিদের চরম বঞ্চনার নানা ঘটনা খুব কাছে থেকে দেখা ও জানার সুযোগ পেয়েছেন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ দুই জেলাতেই ছিল প্রচুর নীলকুঠি। ১৮৬০ সালে ইন্ডিগো কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পরেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি "নীলদর্পণ" রচনা করেন। কর্মসূত্রে তাঁকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের মধ্যে প্রায়ই যাতায়াত করতে হত। সেই সময় একবার বিশাল মেঘনা নদী পেরনোর সময় অলৌকিক ভাবে তিনি নৌকাডুবি থেকে রক্ষা পান। বিপন্ন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে একটি দেশি নৌকা। তখন তাঁর সঙ্গে ছিল 'নীলদর্পণে'র পাণ্ডুলিপি।

    নাট্যকারের প্রাণের সঙ্গে তাঁর নাটকও বেঁচে যায়। ঢাকায় বাংলা মুদ্রণযন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। সেখান থেকেই পরের বছর যুগান্তকারী নাটকটি প্রকাশিত হয়। দীনবন্ধু সরকারি চাকরিতে ছিলেন বলে প্রথমে তা প্রকাশিত হয়েছিল 'নীলকর-বিষধর-দংশন-কাতর-প্রজানিকর-ক্ষেমঙ্করেণ-কেনচিৎ-পথিকেনভিপ্ৰাণীতং' ছদ্মনামে। বহুদিন পর্যন্ত তিনি নিজের আসল নাম প্রকাশ করতে পারেন নি। ঢাকার বাড়িতে বসে সরকারি চিকিৎসক ও দীনবন্ধুর প্রিয় বন্ধু ডাঃ দুর্গাদাস কর রাত জেগে নাটকের প্রুফ সংশোধন করেছিলেন। বাংলার আধুনিক নাট্যধারার পথিকৃৎ মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক দীনবন্ধু মিত্র অবশ্য মাইকেল প্রবর্তিত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক নাট্যরচনার পথে না গিয়ে বাস্তবধর্মী সামাজিক নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন। এই ধারায় তিনিই হয়ে ওঠেন পরবর্তীকালের নাট্যকারদের আদর্শ স্থানীয়।

    কলকাতার জাতীয় রঙ্গালয়ে নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার সময় নীলকর উড সাহেবের ভূমিকায় অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফির অভিনয় দেখে উত্তেজিত অবস্থায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দর্শকাসন থেকে চটি ছুঁড়ে মেরেছিলেন। অর্ধেন্দুশেখর সেই জুতো অভিনয়-কৃতিত্বের পুরস্কার হিসেবে লুফে নিয়েছিলেন। সেই গল্প তো সকলেরই জানা। পাদ্রি লঙ দীনবন্ধুর পরম অনুরাগী ছিলেন। তাঁর অনুরোধে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রাতারাতি নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন এবং লঙ সেটি প্রকাশ করেন। ফলে ইংরেজদের মধ্যে এবং ইউরোপে নাটকটি বিপুল প্রচারের আলোয় আসে এবং বিতর্কের ঝড় তোলে। 'দ্য ইংলিশম্যান' পত্রিকা এবং নীলকর সাহেবদের মানহানি করা হয়েছে অভিযোগে লঙ সাহেবের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় এবং তাঁর জেল ও হাজার টাকা জরিমানা হয়। মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ নিজে সেই জরিমানার টাকা তৎক্ষণাৎ মিটিয়ে দেন। স্বদেশ-প্রেমের আমলে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই বিখ্যাত গান --



    "নীল বানরে সোনার বাংলা করলে ছারখার,
    প্রজার আর প্রাণ বাঁচানো ভার।
    অসময়ে হরিশ ম'ল, লঙের হল কারাগার। "

    বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতা অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, “নীলদর্পণ’ নাটক প্রকাশিত হলে এবং এর ইংরেজি অনুবাদ প্রচারিত হলে একদিনেই এ নাটক বাঙালি মহলে যতটা প্রশংসিত হয়েছিল, শ্বেতাঙ্গ মহলে ঠিক ততটাই ঘৃণিত হয়েছিল। এই নাটক অবলম্বন করে বাঙালির স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের সূচনা, এই নাটক সম্বন্ধে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ও রায়তদের মধ্যে মৈত্রী বন্ধন স্থাপিত হয়, এর মধ্যে দিয়েই শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের বর্বর চরিত্র উদ্ঘাটিত হয়।" সমাজের ঘোর অবিচার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্কিমচন্দ্র নাটকটির গুরুত্বের তুলনা করেছিলেন 'আঙ্কল টমস কেবিনে'র সঙ্গে। তা থেকেই বোঝা যায়, সেই সময়কার বাংলা সাহিত্য ও বাঙালির সমাজজীবনে এই নাটক কী গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। সমাজের তৃণমূল স্তরের মানুষজনের জীবনকথা এমনই সার্থক ও গভীরভাবে 'নীলদর্পণ' নাটকে প্রতিফলিত হয়েছে যে অনেকেই এই নাটককে বাংলার প্রথম গণনাটক হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। আবার বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলে এই নাটকই প্রথম জাতির জীবনে জাতীয়তাবোধের সঞ্চার ঘটিয়েছিল। বঙ্কিম নিজেও খুলনায় হাকিমের পদে থাকাকালীন বারুইখালি গ্রামের অত্যাচারী এক নীলকর সাহেবকে জেলে পুরেছিলেন।

    সাহিত্যকর্মে দীনবন্ধুর হাতেখড়ি কলেজে ছাত্রাবস্থায় ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংস্পর্শে এসে। তাঁর প্রভাবেই তিনি 'সংবাদ প্রভাকর', 'সংবাদ সাধুরঞ্জন' প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতা লিখতে শুরু করেন। তবে পরবর্তীকালে বিভিন্ন নাটক ও সামাজিক প্রহসন রচনা করে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ১৮৬৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় নাটক 'নবীন তপস্বিনী'। এ নাটকটি তিনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করেন। দীনবন্ধু মিত্রের দুটি উৎকৃষ্ট প্রহসন হল 'সধবার একাদশী' ও 'বিয়ে পাগলা বুড়ো'। ইংরেজি শিক্ষিত নব্য যুবকদের মদ্যপান ও বারবনিতাকে উপহাস করে রচিত প্রহসন 'সধবার একাদশী'। ১৮৭২ সালে তাঁর আর একটি প্রহসন 'জামাই বারিক' প্রকাশিত হয়। মৃত্যুর কিছুদিন আগে প্রকাশিত সর্বশেষ নাটক ‘কমলে কামিনী' তিনি উৎসর্গ করেছিলেন বিশিষ্ট নাট্যামোদী, শিল্প রসিক এবং বিদ্যানুরাগী মহারাজাবাহাদুর স্যার যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরকে। নাটক ছাড়াও দুখানি কাব্যগ্রন্থও দীনবন্ধু রচনা করেছিলেন – 'দ্বাদশ কবিতা' ও 'সুরধুনী কাব্য'। 'নীলদর্পণ' নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর আলোচনা হলেও 'কমলে কামিনী' নাটক বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনেকটাই অজানা। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, উনিশ শতকেই যে বাংলা সাহিত্যে অসমের কাছাড় উপত্যকা তাৎপর্যপূর্ণ স্থান অধিকার করেছিল "কমলে কামিনী" তার সাক্ষ্য বহন করছে। এই নাটক রচনার পিছনেও রয়েছে উত্তরপূর্বাঞ্চলের দুর্গম এলাকা, সেখানকার মানুষ ও রাজনীতি সম্পর্কে দীনবন্ধুর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। ১৮৭১ সালে লুসাই যুদ্ধের সময় তাঁকে অসমের শিলচরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে নিয়ে আসা হয় হুগলীর চুঁচুড়া থেকে। ব্রিটিশ আমলে বাংলার একটি জেলা থেকে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং দক্ষ তরুণ অফিসারকে অসমের সমস্যাসংকুল কাজের দায়িত্ব দেওয়া যথেষ্ট বিস্ময়কর। বোঝা যায়, একজন দেশপ্রেমিক সাহিত্যিক হয়েও সরকারি কাজের ক্ষেত্রে দীনবন্ধু ব্রিটিশদের কতখানি আস্থা অর্জন করেছিলেন।

    দীনবন্ধুর কাজের পরিধি এবং দক্ষতা সম্পর্কে সামান্য ধারণা পেতে হলে ব্রিটিশদের সঙ্গে লুসাইদের সংঘাতের প্রেক্ষাপট বুঝে নেওয়া জরুরি। আজকের মিজোরাম হল অতীতের লুসাই পাহাড় বা মিজো পার্বত্য অঞ্চল। সেখানকার লুসাই উপজাতির যোদ্ধারা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো পাহাড়ি সীমানা অতিক্রম করে সমতলে ব্রিটিশ ধন-সম্পত্তি ও প্রজাদের ওপরে অতর্কিতে হামলা চালাত। নিত্য ক্ষয়ক্ষতি ও জীবনহানির ঘটনা লেগেই ছিল। ১৮৩২ সালে সমগ্র কাছাড় ব্রিটিশ শাসনাধীনে চলে আসার পর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে মিজো উপজাতিদের আচমকা আক্রমণ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসকদের অনবরত নাজেহাল হতে হত। কাজেই লুসাইদের দমন করতে ১৮৭১-৭২ সালে ব্রিটিশ সামরিক অভিযান শুরু হয়। অবশেষে ১৮৯০ সালে মিজো উপজাতিদের বশে এনে ব্রিটিশ প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পারস্পরিক সংঘর্ষের অবসান ঘটে। তবে ব্রিটিশদের প্রতি লুসাই উপজাতিদের বৈরিতার পিছনে রয়েছে ১৮৩১ সালে অসমে চা গাছ আবিষ্কারের নাটকীয় ঘটনা। এরপরেই লুসাই পাহাড়ের পাদদেশ বরাবর এবং আরও বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চা বাগান গড়ে তোলার কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এর ফলে লুসাইদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে গভীর সমস্যা দেখা দেয়। মিজোদের চিরাচরিত অর্থনৈতিক জীবন ছিল জীবজন্তু বিশেষত হাতি শিকারের ওপর নির্ভরশীল। হাতির দাঁত, হাড় এবং চামড়ার বাণিজ্যিক মূল্য ছিল প্রচুর। বাংলার মুঘল ব্যবসায়ীদের কাছে মিজোরা এসব বিক্রি করত। শ্রীহট্ট, কাছাড় ও চট্টগ্রামের বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছেও লুসাই উপজাতির শিকারিরা নিয়মিত হাতির দাঁত সরবরাহ করত। কিন্তু চা বাগান প্রসারের জেরে লুসাইদের শিকারের স্বাভাবিক অঞ্চল সংকুচিত হতে শুরু করল এবং সেই কারণেই মিজোদের ক্ষোভের সূচনা। যে অরণ্যসংকুল অঞ্চলকে মিজোরা বহু প্রজন্ম ধরে দীর্ঘকাল নিজেদের অবাধ শিকারের চারণভূমি বলে গণ্য করে এসেছে সেখানে ব্রিটিশ অনুপ্রবেশ তারা সহ্য করবে কেন? যে বনাঞ্চল দখল করে ব্রিটিশরা চা বাগিচা তৈরি করতে তৎপর সেই জমির ওপরে তো লুসাই পাহাড়ের আদিবাসীদেরই জন্মগত অধিকার। ঐতিহ্যপূর্ণ সামাজিক বৃত্তি জলাঞ্জলি দিয়ে মিজোরা জমির ওপর নিজস্ব অধিকার ছাড়তে নারাজ। আর তাই চা বাগান ও তার আশপাশের গ্রামে সুযোগ পেলেই সশস্ত্র উপজাতি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ত। হিংস্র আদিবাসীদের হাত থেকে সমতলবাসীদের রক্ষা করতে ব্রিটিশরা কিছু আইন তৈরি করলেন। বাংলার উত্তর-পূর্ব সীমান্তের কিছু জেলায় শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখার জন্যে ১৮৭৩ সালে অসমে প্রথম প্রচলন করা হল বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশন যা পরিচিতি পায় ইনার লাইন রেগুলেশন (আই এলো আর) হিসেবে। তবে তার আগে ১৮৭১-৭২ সালে লুসাইদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সামরিক অভিযান ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। লুসাইদের প্রকৃত ভৌগোলিক অবস্থান এবং শক্তি ও সামাজিক অবস্থান জরিপ করার জন্যে ১৮৭১ সালের নভেম্বরে দুটি সামরিক কলাম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একটি কলাম অগ্রসর হয় চট্টগ্রাম থেকে মেজর ম্যাকডোনাল্ডের নেতৃত্বে আর দ্বিতীয় কলামটি ক্যাপ্টেন রিজলির নেতৃত্বে অভিযান শুরু করে কাছাড় থেকে। গভীর জঙ্গল, দুর্গম পার্বত্য এলাকা, ঘন বাঁশবন ও পদে পদে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিটিশ সেনা, মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য আধিকারিকের দল লুসাই পাহাড়ের অনাবিষ্কৃত একটি অঞ্চল মাইনাধুরে দ্রুত নির্মাণ করে ফেলে সেনা ছাউনি, হাসপাতাল, গুদাম, বারুদঘর ও অফিসারদের কোয়ার্টার্স। খরস্রোতা বরাক নদী মিজো পাহাড়ের কোলে যেখানে অর্ধ-চন্দ্রাকার বাঁক নিয়েছে তারই বাম উপত্যকার শেষ প্রান্তে মাইনাধুর চা বাগান। লুসাইদের চোরাগোপ্তা আক্রমণকে নৌকার মাঝিমাল্লারা প্রচণ্ড ভয় পেত। শ্রীহট্ট বা চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে সেনা শিবিরের জন্যে প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে যাওয়া ছিল তাদের কাছে বিভীষিকা। বিপদ আঁচ করে নৌকা নিজেরাই ডুবিয়ে দিয়ে মাঝিরা প্রাণ বাঁচাতে কোথাও আত্মগোপন করেছে এমন ঘটনাও ঘটেছে।

    উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, সেই দুঃসাহসিক ব্রিটিশ দলটিতে ছিলেন বাঙালি নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রও। কাছাড়ের শিলচর থেকে মাইনাধুর পর্যন্ত টেলিগ্রাফ লাইন বসানোর জরুরি কাজটির তদারকি করেছিলেন তিনি। প্রবল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ভুবন পাহাড়ের ওপর দিয়ে টেলিগ্রাফের তার টেনে নিয়ে যাওয়া ছিল এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। তবু সাফল্যের সঙ্গে সেই কাজ সমাধা করে তিনি নতুন একটি ডাক-তার অফিস চালু করে দেন মাত্র এক মাসের মধ্যে। ফলে ডিসেম্বরের মধ্যেই শিলচর ও মাইনাধুরে সেনাশিবিরের মধ্যে চিঠিপত্র ও টেলিগ্রাম মারফত পারস্পরিক দৈনিক বার্তা বিনিময়ের পথ খুলে গেল। আর তার ফলে কলকাতার সদর দপ্তরের সঙ্গেও সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ রাখা সহজ হয়ে গেল। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজের অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে দীনবন্ধুকে দেওয়া হয় 'রায় বাহাদুর' খেতাব। তবু ডাকবিভাগের উচ্চস্তরের কর্মচারী হয়েও উপযুক্ত বেতন তিনি পান নি। কাছাড়ে নিযুক্ত থাকাকালীনই প্রচণ্ড অনিয়ম ও পরিশ্রমে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে যায় এবং মাত্র ৪৩ বছর বয়সে ১৮৭৩ সালের ১ নভেম্বর তাঁর জীবনাবসান হয়।

    সেই সময়েই কাছাড়-মণিপুর অঞ্চলের পটভূমিকায় এক কাল্পনিক কাহিনীর আধারে ‘কমলে-কামিনী’ রচিত। মণিপুরের রাজার সঙ্গে অধুনা মায়ানমার এবং অতীতের ব্রহ্মদেশের রাজার পারস্পরিক বিরোধ, যুদ্ধ, সন্ধি ও পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রেক্ষাপটে কাছাড়ের ইতিহাস নিয়ে তিনি লিখেছিলেন "কমলে কামিনী।" সেটিই ছিল দীনবন্ধুর লেখা শেষ নাটক। মঞ্চে সাফল্য না পেলেও সাহিত্যকর্ম হিসেবে এটি গুরুত্বপূর্ণ। কাছাড়ের রাজসিংহাসনে ব্রহ্মরাজের শ্যালক অধিষ্ঠিত হলে মণিপুররাজের ছোট রানির প্ররোচনায় যুদ্ধের সূচনা। কিন্তু নাটক যত এগোয়, রণ হুঙ্কার ছাপিয়ে যায় দুই শিবিরের কুশীলবদের নানা কৌতুককর সংলাপে। আঁচ পাওয়া যায় যুদ্ধ নাটকে মুখ্য নয়। ঘটনাচক্রে মণিপুর রাজের সহ-সেনাপতি শিখন্ডীবাহন ও ব্রহ্মদেশ রাজ দুহিতা রণকল্যানীর মধ্যে প্রণয় কুসুমিত হয়ে ওঠে। সপ্তাহকালীন যুদ্ধবিরতির সময় মণিপুর রাজ শিবিরে রাসলীলাকে কেন্দ্র করে শিখণ্ডী ও রণকল্যানীর সেই পারস্পরিক প্রেম প্রকাশ্যেই আরও গভীরতা পায়। মানব-মানবীর প্রণয় উত্তীর্ণ হয় রাধাকৃষ্ণের দৈব প্রেমলীলার ভাবের উচ্চতায়। অবশেষে সহ-সেনাপতি নয়, মণিপুরের রাজপুত্র হিসেবে শিখণ্ডীর আসল পরিচয় প্রকাশিত হয়। তাঁর সঙ্গে রণকল্যানীর প্রত্যাশিত বিবাহ এবং কাছাড়ের রাজা হিসেবে শিখণ্ডীর অভিষেকে এই রোম্যান্টিক কমেডির মধুর পরিসমাপ্তি। নাটকের শুরুতে মনিপুর রাজের চিঠির জবাবে বর্মার অহংকারী নৃপতি দূত মারফত মরা ইঁদুর পাঠিয়েছিলেন। অপমানিত মনিপুর রাজ সমরাভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে সেনাবাহিনীকে উদ্বুদ্ধ করছেন। তার মনোগ্রাহী চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন দীনবন্ধু মনিপুর রাজের সংলাপে --

    "সাজ সাজ বীরকুল তুমুল সময়ে,
    সাহসে সংহার কর অরাতি-নিকরে
    চর্ম্ম-বর্ম্ম অসি শূল করিয়ে ধারণ
    বীরদম্ভে বাজিরাজি কর আরোহণ,
    সাপটি বিশ্বাসে অসি সৈনিক-সম্বল,
    কচুর মতন কাট শত্রুসেনাদল,
    বর্ব্বর ব্রহ্মেশে কেশে করি আকর্ষণ
    মনিপুর কারাগারে কর রে ক্ষেপণ।
    দুর্ম্মতির দর্প চূর্ণ গর্ব্ব খর্ব্ব হবে,
    মূষিক মার্জার কেবা বুঝিবে আহবে।"
    এর পরে লক্ষী জনার্দন মন্দিরে পুজো দিয়ে মণিপুর রাজ মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে আসন্ন যুদ্ধে সাফল্য অর্জনের জন্যে 'শত্রু হননে বলদান' করার প্রার্থনা জানালেন। চারিদিকে পারিষদদের সমবেত রব উঠল --
    "তলোয়ার-ফলাকা লক লক করে
    সেনার হাতে শত্রু মরে
    মরে শত্রু, হরে ভয়
    আপন কুলের বিপুল জয়"



    নাটকের দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে আপাত রণ হুঙ্কার ছাপিয়ে শিখণ্ডী সম্পর্কে মণিপুর রাজের মনোভাব -- "কাছাড়ের সিংহাসনে তোমার অভিষেক করাইব, হিড়িম্বা-দেশাধিপতির রাজমুকুট তোমার সুরেশ-সুলভ-শিরে সুশোভিত হইবে" অথবা রাসমণ্ডপে রাধিকা বেশে রণকল্যানীর রূপ দেখে তাঁর মন্তব্য -- "বাছার কবরী চক্রে কমলমালা, গলদেশে কমলমালা, করকমলে কমলমালা, কমলাসনে উপবেশন, আমার বোধ হয় রাইকমলিনী কমলে কামিনী।" মজার ব্যাপার, মণিপুর রাজ নাটকের যে পর্যায়ে এই সংলাপ বলছেন তখন তাঁর কাছে শিখণ্ডী বা রণকল্যানীর প্রকৃত পরিচয় স্পষ্ট নয়। তবে নাটকের পরিণতি সম্পর্কে দর্শক বা পাঠকেরা আগাম আভাস পেয়ে যান।
    কৃষ্ণবেশে শিখণ্ডীর আবির্ভাবে গানের সুর শোনা যায়,

    "মদন মোহন, মুরলী বদন
    বল বিবরণ কোথায় ছিলে..." ।
    আবার রণকল্যানীর সামনে দাঁড়িয়ে শিখন্ডির আকুতি --
    "প্রাণপ্যারী প্রাণেশ্বরী
    অভিমান পরিহারি
    চেয়ে দেখ দয়া করি
    ইন্দিবরনয়নে"।
    আর পদ্মাসনা রণকল্যানী অকপটে বলে ওঠেন --
    "শেষ উপাসনা, অতীত যাতনা
    পুরিল বাসনা, বস না পাশে।"

    পরমুহূর্তে ব্যাকুল রণকল্যানী মূর্ছিত হয়ে আশ্রয় নেন শিখণ্ডীর কোলে। এরপর বুঝতে অসুবিধে হয়না, মণিপুর রাজ ও ব্রহ্মদেশ রাজ অচিরেই যুদ্ধ ভুলে পারস্পরিক বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হবেন। তার আগেই জানা যায়, মণিপুর রাজের বড় রানির সদ্যোজাত পুত্র শিখণ্ডীকে অপহরণ করা হয়েছিল ছোট রানির কুমন্ত্রণায়। সেই শোকে বড় রানির মৃত্যু হয়। কাজেই শিখণ্ডী মোটেও জারজ সন্তান নন, বরং তিনি মণিপুর রাজের ঔরসজাত এবং সিংহাসন লাভের অধিকারী। অন্যদিকে ছোটবেলা থেকে রামায়ণ-মহাভারত পাঠে অনুরাগী ব্রহ্মদেশ রাজকন্যা রণকল্যানীর বহুমুখী গুণ -- তিনি জয়দেব পড়েন এবং একই সঙ্গে চন্দ্রপুলি বানাতেও পারদর্শী। সব মিলিয়ে নাটকটি হয়ে ওঠে ভক্তিরসাশ্রিত প্রেম লীলার অপূর্ব আখ্যান।

    'কমলে কামিনী' নাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাছাড়ের ভাবাবেগকে মর্যাদা দিয়ে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ কেন্দ্র ও অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের প্রখর রাজনৈতিক কৌশলের পরিচয় দেয়। ভাষা শহীদের রক্ত-লাঞ্ছিত শিলচরে এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন ভাষা সমস্যায় পীড়িত বরাক উপত্যকায় বাঙালি অস্মিতাকে অবশ্যই কিছুটা তৃপ্ত করবে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে নদীয়ার কৃতী সন্তান দীনবন্ধু মিত্রের প্রতি সরকারি তরফে এই স্বীকৃতি সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে যে সদর্থক বার্তা দেবে একথাও বিজেপি বিলক্ষণ জানে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ৩১ জুলাই ২০২২ | ২৪৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Subhadeep Ghosh | ৩১ জুলাই ২০২২ ২১:৫৭510629
  • তথ্যসমৃদ্ধ অত্যন্ত ভালো আলোচনা।
  • ডঃ পুরীপ্রিয়া কুণ্ডু | 2402:3a80:1cd5:cbf8:e8a3:ae61:4ff6:f9a2 | ০১ আগস্ট ২০২২ ০২:১৮510639
  • Abak Chittri | ০২ আগস্ট ২০২২ ১৩:০৪510689
  • অসাধারণ সুন্দর  তথ্য  বহুল  লেখা ।অনেক অজানা তথ্য জানলাম ।ধন্যবাদ 
     
  • /\ | 223.29.193.100 | ১৩ আগস্ট ২০২২ ২০:০২510966
  • দীপংকরবাবু  আপনিই কি ১৬ নং ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স বইয়ের লেখক? যোগাযোগের কোনো উপায় দিতে পারেন? ইমেল বা ফেসবুক বা ফোন? কমলকুমার মজুমদার বিষয়ে একটু কথা বলার ছিল। dasgupta.somnath /জিমেল
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন