এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  পরিবেশ

  • বড় নদী বাঁধের বিপদ

    সন্তোষ সেন
    আলোচনা | পরিবেশ | ০৩ আগস্ট ২০২১ | ৬৮৯ বার পঠিত
  • 'ম্যানমেড' বন্যা!


    নিম্নচাপের বৃষ্টি কমে গেলেও পাঞ্চেত-মাইথন এবং মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে কয়েকদিন ধরেই গড়ে এক লক্ষ কিউসেক এর বেশি জল ছাড়া হচ্ছে। এই জলে দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। ঘাটাল, খানাকুল, আরামবাগ, উদয়নারায়নপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায়। অতিবৃষ্টি ও বাঁধের জলে শিলাবতী - দামোদর - মুন্ডেশ্বরী - রূপনারায়ন নদীগুলোর জল দু'কূল উপচে ভাসিয়ে দিচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। রাস্তাগুলো নদীর চেহারা নিয়েছে, সেখানে নৌকা  চলছে। হাজার হাজার পরিবারের ঘরে এক তলা পর্যন্ত জল উঠে গেছে। মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন একতলার খোলা ছাদে, দোতলা, তিনতলা বা ত্রাণ শিবিরে। কত হাজার মাটির বাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এখনও পর্যন্ত এই বন্যায় ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চারিদিকে বিপন্ন মানুষের শুধুই আর্তরব - "খাবার জল দাও, আমাদের উদ্ধার কর - আমাদের বাঁচাও"। যদিও সরকার প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী বন্যা কবলিত মানুষকে উদ্ধার ও ত্রাণ এর কাজে সাধ্যমত সাহায্য করছেন।


    কিন্তু প্রশ্ন হল - কেন এমনটা হয় প্রায় ফি বছর? এর পিছনে যে অপরিকল্পিত ও অবৈজ্ঞানিকভাবে গড়ে তোলা বড় বড় নদী বাঁধগুলো দায়ী, সেই বিষয়ে নদী বিশেষজ্ঞ - পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীরা একমত। পলি পড়ে পড়ে জলাধারগুলোর জল ধারণ ক্ষমতা ক্রমশই কমছে। ফলে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই বাঁধ রক্ষা করতে প্রচুর জল ছাড়তে হয়। তার ফলে নিম্ন অববাহিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ে, তৈরি হয় প্লাবন, বিপর্যস্ত হন হাজার হাজার মানুষ। অন্যদিকে সেচকার্যের অজুহাতে এই বাঁধগুলো নির্মিত হলেও শুখা মরসুমে চাষিরা তাঁদের চাষের জন্য ক্যানেল থেকে জল পান না বললেই হয়। এবং নদীতে বড় বড় বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীগুলোর নিম্ন ভাগ পলি জমে জমে মাঠে পরিণত হয়েছে - জলধারণ ক্ষমতা প্রায় শূন্যে নেমেছে। তাছাড়া এর ফলে জলজ প্রাণী সহ সামগ্রিকভাবে নদী বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত। 


    তাই সময় এসেছে বিপর্যয়কারী এই নদী বাঁধগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবার। পাশাপাশি নতুন করে প্রস্তাবিত সমস্ত বড় বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে সকলকে। দুরদর্শনে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে দেখতে এবং মেদিনীপুরের বন্ধুদের থেকে ভয়ানক খবর শুনে এই লেখা একটা তাৎক্ষণিক প্রয়াস। সকলে এই নিয়ে ভাববেন, মতামত দেবেন এই আশা রাখি। আলোচনা এগিয়ে চলুক এই প্রত্যাশায় এখানেই ইতি টানছি।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সন্দীপ সিনহা, কানকিনাড়া | 110.227.99.8 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৪:১৯734816
  • আমাদের দেশে বাঁধগুলো নির্মাণ করে  কেন্দ্রীয় সরকার। আর রক্ষনা বেকখনের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। নিয়ম গরমকালে প্রতিদিন দু তিন হাজার কিউসেক করে জল সেচের জন্য রিলিজ করা। কখনোই সেটা করে না। বর্ষা কালে জল এর চাপে স্পার ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হলে বিপুল পরিমাণ জল একবারে ছেড়ে জনবসতি কে বিপন্ন করে তোলে। এর দুটো দিক আছে। সরকার কিছু ত্রাণ নিয়ে এসে হাজির হয়। আর কেনা জানে যারা ত্রাণ দেয় তাদেরকেই ভোট দিতে হয়। আর ত্রাণ দপ্তর একটি শাঁসালো দপ্তর। ত্রাণের নামে লুটপাটের প্রচুর সুযোগ।


       দু হাজার সালে এই ঘৃণ্য কায়দাতে অনিল বিশ্বাস সিপিএম কে ভোটে জিতিয়েছিলেন।

  • ত্রিদিপ দস্তিদার, হালিশহর | 110.227.99.8 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৪:২০734817
  • 'ভারতের নদী পরিকল্পনা(নদী সংযোগ প্রকল্প সহ..) ও তার বিপর্যয়'..বিষয়টি বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক আলোচনা দরকার। এই বিষয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করছেন এমন মানুষকে আলোচক হিসেবে অনুরোধ করতে পারলে ভালো হয়।


    আমার মনে পড়ছে জয়া মিত্র দি'র কথা।


    অরূপ ঘোষ(পল্লীমঙ্গল স্কুলের ভূগোলের প্রাক্তন শিক্ষক)কি আসবেন আলোচনায়? তাঁকে একবার অনুরোধ করতে পারি। উনি ব্যারাকপুরে থাকেন।

  • Santosh Sen | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৪:২৮734818
  • ঠিক। আমাদের সমস্ত কাজ ভালো-কাজের দরকারে হয় না; প্রয়োজনটা বাস্তব, সঠিক, কিন্তু সমাধান অন্য কারুর প্রয়োজন/ক্ষিধের দিকে তাকিয়ে ঠিক করা হয়। বেঠিক হলেই লাভ, বছর বছর আমদানীর উপায় তৈরী থাকে!


    এটি fb তে লিখেছেন মানসী ব্যানার্জি।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন