এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জল ঝরার রাতে 

    Arka Goswami লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৯ জুন ২০২১ | ৯৫৬ বার পঠিত
  • *জল ঝরার রাতে*



    এলইডি  আলোর তলা দিয়ে যাওয়ার সময় হেলমেট আর  আকাশের মাঝখানে এক পশলা ইলশেগুড়ি নেমে আসতে দেখে *অভিযানের*   মনে পড়ে গেলো ছোটবেলার কথা !  সেই প্রথমবার তার ইলশেগুড়ি দেখা,  সে আশ্চর্য হয়ে দেখেছিলো দুহাত বাড়ানো   আকাশ জুড়ে নেমে আসা মুঠো মুঠো আনন্দ! পাশে থাকা বন্ধুরা ততক্ষনে রাস্তার ধারের  দোকানের শেডে  ঢুকে গেছে,  রাস্তা আর দোকানের মাঝের রাস্তা টুকু মাথায় স্কুল ব্যগ দিয়ে ভিজে যাওয়া আটকেছে কোনোক্রমে!  যদিও *অভিযান* সেসব করেনি ! অবাক করা  ইলশেগুড়ি কে  দুহাতে আপন করে নিয়ে যখন বাড়ি ঢোকে ততক্ষনে তার মা বুঝে গেছে ছেলে তার মুষলধারা বৃষ্টিতে ভেসে এসেছে!  


    ২-


    বাজারের সামনে  স্কুটি টা দাড় করাতেই  দেখলো  ছোট্ট একটা বিড়াল ছানা ট্যবি  তার মায়ের গা ঘেষে বসে হোটেলের ডাস্টবিন  দেখছে আর হয়তো  মনে মনে বলছে  আজকাল  খাবার কম জমছে কেন?   সে জানে তার মা কম খায়!  আজকাল পাশের  পাড়ার লালুভুলু রাও দলবল নিয়ে মাঝে মধ্যে চলে আসে খাবার খেতে!  সে কি করবে??  লুকিয়ে থাকে  সন্ত্রস্ত   দৃষ্টি নিয়ে!  চোখের সামনে  তাদের অর্জিত অধিকারের হাত বসায় দুষ্টু  কুকুর গুলো!  ট্যবি জানে লালুভুলু এরকম নয়,  বাধ্য হয়ে আসে!  ট্যবিদের মতো লালুভুলু দেরও খুব কষ্ট,  বিশেষ করে যখন ভিজতে।হয়,  তারওপরে  ঘর  জল 


    ঢুকে গেলে আরও বিপদ,  যদিও তার মা খুব বুদ্ধিমতি,  সে ট্যবি কে ভিজতে দেয়নি!  বন্ধ  কারখানার হোস্টেল ঘরের সোফা তে তার নতুন ঘর পাতা হয়ে গেছে! 


    ৩- 


    স্কুটি চলিয়ে সোজা ফাড়ির পাশ দিয়ে বেড়োতে হসপিটালের  সামনে সাড়ি সাড়ি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেখে  *অভিযান* বুঝতে পারে লড়াই এখনো চলছে,  সম্মুখ সমর হয়তো বদলে গেছে গেরিলা যু্দ্ধে কিন্তু তবুও চলছে! পুলিশ ফাড়ির পাশের ছোটো জঙ্গলটার কাছে তার গাড়ি থেমে যায়!  জায়গা বেশ অন্ধকার!  যদিও ভয় তেমন কিছু নেই তবুও মনে হয় কোনো অস্পষ্ট বুড়োটে গলার আওয়াজ শুনতে পায় সে,  কাতর আবেদন  "সামনে লড়াই তৈরি হও!  এ লড়াই লড়তে হবে!!!!   এ লড়াই জিততে হবে!!!!! "  স্কুটিতে তেল আছে,  তাহলে মনে হয় স্পার্ক প্লাগ টা গেছে!  অগত্যা কি আর করবে??   ঠেলো গাড়ি! !


    ৪-


    জঙ্গলের পাশেই  শহরের ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির স্টোর।হাউস,  একজনই কর্মচারী সকাল থেকে এই রাত অবধি একাই বসে থাকে! কয়েক মাস  আগে 


    দু একবার চোখাচুখি হতে হাসি বিনিময় হয়েছে ( *তখন মাস্ক পড়া কমপালসরি ছিলোনা তাই হাসলে বোঝাও  যেতো  আর দেখাও  যেতো*  ) 


    ৫-


    অলড্রিন মোড়ে জমে থাকা  জল ছাপিয়ে পেড়িয়ে আসতেই অভিযান দেখতে পেলো  তার দিকে ধেয়ে আছে  তামলা , সিঙ্গারন,  নুনিয়া আর গাড়ুই নদী !  ও ভুলেই গিয়েছেলো আজ চারদিন যাবৎ প্রবল বৃষ্টিতে  শহর ধুয়ে গেছে, ব্যরেজ,  ড্যমের দুয়ার খুলতেই ভেসে গেছে কয়েকশো গ্রাম!  সেসব ভেসে আসছে ওঁকে লক্ষ্য করে!  ছোট নদীকে এতো জলের ক্ষমতা  দিলে  সে ডুবিয়ে নেবেই!   


    ৬-


    ইল্যুশান টা বুঝতে অভিযানের সময় লাগলো  পাক্কা ২ মিনিট!  দুটো যুগ পেড়িয়ে যখন সে আবার শহিদ সরনীতে গাড়ি ঠেলে উঠতেই  দেখতে পেলো একটা বাচ্চা  দু হাত দিয়ে  আগলে আছে একরাশ জল,  সেও এগিয়ে গেলো,  অজস্র  ইলশেগুড়ি আজ জমে জমে ঢেউ হয়ে এসেছে তাদের ভাসাতে!  ঠেলে ধরেছে অভিযান ,  তার সাথে তার পাশেই তার সমান্তরাল  সময়ে দাড়িয়ে ছোট অভিযান!  সেও সময় পেড়িয়ে এসেছে!  সেদিনকার সেই   স্কুল থেকে আসার পথের ইলশেগুড়িকে যতটা ভালোবেসে ছিলো আজ ততটাই সে আটকাতে চাইছে এই ঢেউ কে!   পিছনের জঙ্গল থেকে অভিযান শুনতে।পাচ্ছে   " এ লড়াই লড়তে।হবে!  এ লড়াই জিততেই হবে "


    ©️অর্ক গোস্বামী


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন