এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  কাব্য

  • খোকা যাবে বেড়াতে

    গৌরী ধর্মপাল লেখকের গ্রাহক হোন
    কাব্য | ১৬ নভেম্বর ২০১১ | ৬৮৪ বার পঠিত
  • খোকা যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়িতে আছে হুলো বেড়াল কোমর বেঁধেছে।
    মিনি যাবে না? মিনি যাবে না। কেন যাবে না, রে?
    মিনির গলায় ট্যাংরা মাছের কাঁটা ফুটেছে।

    ঐ যে পাঁশগাদাতে শুয়ে
    মিনি ফুঁ দিচ্ছে গায়ে।
    মিনির পাঁচটি ছানাপোনা
    কাঁদে ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া।
    খোকা যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে ভুলো কুকুর ল্যাজ নেড়েছে।
    ডোবার জলে ডুব দিয়ে আজ চাং করেছে ভুলো।
    সাবাং মেখে লোম ঝেড়েছে কানে দিয়েছে তুলো।।

    ভুলোর কি সুন্দর গা
    গায়ে মাছি বসে না।
    ভুলোর নাটা নাটা কাণ
    দেব পান সুপুরি ধান।
    খোকন যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে ডেঁয়োপিঁপড়ে কাতার দিয়েছে।
    পিঁপড়েগুলো হ্যাংলা
    করছে বড় হামলা।
    পুলিপিঠের গাম্‌লা
    দুধের বাটি সাম্‌লা।
    খোকন যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    ঘাসের ওপর গঙ্গাফড়িং লাফিয়ে উঠেছে।
    ও গঙ্গা, গঙ্গা
    খোকন যাবে বন্‌গাঁ।
    ঘাস খেয়ে হ চাঙ্গা,
    গলা খুলে গান গা।

    ও গঙ্গা, সঙ্গে নে তোর নাঙ্গা তরোয়াল।
    বন্‌ বন্‌ বন্‌ ঘুরিয়ে তাড়া দংশমশার পাল।।
    সোনা যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    অশথ্‌তলায় জোড়া ময়ূর পেখম মেলেছে।
    পেরজাপতি ফুলে ফুলে মেলে বসেছে।
    মৌমাছিরা ডালে ডালে চাক বেঁধেছে।
    চাকে ছকোণা সব ঘর
    ঘরে মৌ ভর্‌ ভর্‌ ভর্‌।
    নীচে পাতার উপর
    মধু টুপ্‌ টুপ্‌ টুপ্‌ পড়্‌।
    সোনা যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাঁশের ঘরে লালমোরগ ঝুঁটি বেঁধেছে।
    মোরগ ডাকে কোঁকর কো
    লেপ কাঁথা ঘুম শিকেয় থো।
    মুরগী ডাকে কঁকর কাঁ
    ডিম পেড়েছি চলে যা।

    আলতাপাটি শিম।
    আমার দুধে-আলতা ডিম
    আমি ডিমে দেব তা
    তাতে তোদের কি গা?
    বাবলু যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    পুকুরপাড়ে রাজহাঁসেরা ডানা ঝেড়েছে।
    তাদের ধবধবে সব ডানা
    বেশী লোকদেখাতে মানা
    দেখো খোকনসোনা
    যেন কাছে যেও না।
    বাবলু যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    খাঁচার ভেতর ময়নাপাখী নড়ে উঠেছে।
    কোন্‌ ভোরেতে উঠে ময়না তাকিয়ে দেখেছে।
    জলছোলাটি খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।।

    ও ময়না, ময়না
    চক্ষু মেলে চাওনা,
    কথা কেন কও না,
    উড়ে চলে যাও না।

    আর যাব না বনে খোকন আর যাব না ঘরে।
    কেঁদে কেঁদে খোকন আমার বৌ গিয়েছে মরে।।

    সবুজপাতা বৌটি আমার
    ঠোঁটটি ডালিমরাঙ্গা।
    হু হু করে মন যে আমার
    ঘরে যাব না।
    বাবু যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    জাল বুনতে গিয়ে মাকড় চেয়ে দেখেছে।
    পাতায় ডালে রাঙা রোদ্দুর ঝিলিক দিয়েছে।
    মাচার ওপর কুমড়োলতা লতিয়ে উঠেছে।
    কচি কচি কুমড়োর ঝোল কে খেয়েছে রে?
    খোকা খেয়েছে সোনা খেয়েছে মণি খেয়েছে রে।
    লতায় হলুদবরণ ফুল
    খোকার চুলগুলি দুল্‌দুল্‌।
    খোকার মুখখানি ঢল্‌ঢল্‌
    যেন পদ্ম টলমল্‌।
    বাবু যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    সর্‌ সর্‌ সর্‌ শন্‌ শন্‌ শন্‌ হাওয়া বয়েছে।
    আলো দীঘির কালো জলে ঢেউ দিয়েছে।
    পদ্মফুলের পাপড়িগুলি ফুটে উঠেছে।
    তালসুপুরির মস্ত পাতা হাওয়ায় দুলেছে।
    বাদামগাছে কাঠবিড়ালী থমকে দেখেছে।
    মাছরাঙারা ঝিলের জলে উড়তে লেগেছে।
    পানকৌড়ি টুপুস করে ডুব দিয়েছে।
    উলুবনে খোকার দিদি শাড়ী মেলেছে।
    ভোমরা-কালো ঢেউ ঢেউ চুল রোদে এলেছে।
    দিদির হাতে রাঙা চুড়ি ঝলক্‌ দিয়েছে।
    চিকণগায়ে রূপসায়রের বন্যা নেমেছে।

    দিদির       দুধবরণ গা,
    তাতে       আলতা পরা পা।
    দিদির       ঠোঁট টুক্‌টুক্‌ করে
    হীরে        মুক্তো ঝরে পড়ে।
    হাতে       ফুলের ডালা
    গলায়       শঙ্খমালা।
    কচি যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    পায়রারা সব বকমবকম করতে লেগেছে।
    আলের ধারে আকন্দফুল হাওয়ায় ঝরেছে।
    কচি কচি কলার পাতা হলে পড়েছে।
    ঝিরিঝিরি তেঁতুলগাছে পাতা নড়েছে।
    নাছ-পুকুরে কাতলামাছে ঘাই দিয়েছে।
    ঘাটের জলে সরলপুঁটি বিলি কেটেছে।
    আলুথালু কচুর পাতা ভুঁয়ে লুটেছে।
    গোয়ালঘরে ####### হাম্বা ডেকেছে।
    বেড়ার ধারে চোদ্দ ঝুড়ি ফলসা পেকেছে।
    একটি ঝুড়ি খাবেন খোকা, দশটি বাড়ি নেবেন।
    আরগুলি সব পাড়ায় পাড়ায় একে ওকে দেবেন।।
    কচি যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    মাঠে চরছে কালো গরু সঙ্গে যাবে সে।
    ঘাসবিচুলি খেয়েছে গরু, খেয়েছে ভূষিখোল।
    বিজ্‌ বিজ্‌ বিজ্‌ দুধের ফেনা কেঁড়ে ভরে তোল।।
    কে দুয়েছে, কে নিয়েছে, কে দিয়েছে জ্বাল?
    আমি দুয়েছি, তুমি নিয়েছ, মা দিয়েছেন জ্বাল।

    দুধের বাটি তপ্ত
    খোকা হলেন ক্ষ্যাপ্ত।

    দাউ দাউ দাউ উনুনধারে গরম চলে যা
    ####### ######## ######## ####

    আয়রে ভোরের হাওয়া
    দুধেতে হাত ছোঁওয়া
    দেব ক্ষীরের মোয়া।

    আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
    ধান দেব মেপে।
    দুধ জুড়িয়ে দে না
    খাবে খোকনসোনা।
    বাবলি যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে শৈলকাকা রিক## #####
    ঠুন্‌ ঠুন্‌ ঠুন্‌ #### #### ### ঘণ্টি বেজেছে।
    শৈলকাকার কোলে খোকন ঝাঁপিয়ে পড়েছে।।

    শৈলকাকার মুখে
    খোকা হাম দিয়েছে ঝুঁকে
    কচি হাত দুখানি তুলে
    আদর করে খিমচে ধরে থাবা দিয়েছে গালে।

    ও শৈল শৈল
    পয়সা পড়ে রইল
    আকাশ মেঘে ছাইল
    খোকন কি কি চাইল।

    আঁধার হয়ে এল আকাশ বৃষ্টি এল বলে।
    খোকন নিয়ে বেড়াতে যা রূপগঙ্গার কূলে।।

    রূপগঙ্গার তীরে
    কঙ্কপাখী চরে

    বেতের বনে কঙ্কপাখীর পালক পড়েছে
    কে নিয়েছে কে নিয়েছে খোকা নিয়েছে।
    মেঘের ছায়া রূপগঙ্গার জলে দুলেছে।
    মাঝগঙ্গায় জেলেডিঙ্গি বাঁয়ে হেলেছে।।

    বঙ্গজেলে ঘাটে আয়
    খোকন যাবে তোদের গাঁয়
    জল উঠেছে ভাঙ্গা নায়

    ইলশে গুঁড়ি ইলশে গুঁড়ি ঝির্‌ ঝির্‌ ঝির্‌ ঝির্‌।
    আ-চাল্‌তা অশথপাতা শির্‌ শির্‌ শির্‌ শির্‌।।

    আমড়াতলার গোমড়াটা
    গর্তের ভেতর সেঁধিয়ে যা

    হিলিহিলি পিঁপড়ের ডিম
    বৃষ্টি পড়ে ঝিম্‌ ঝিম্‌।
    বাবু যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে ফুলপিসী চুল বেঁধেছে।
    কাঁটা দিয়েছেন ফিতে দিয়েছেন,
    গোড়া বেঁধেছেন জোরে।
    চুল ধরিতে গিয়ে ফুলের
    হাত গিয়েছে ভেরে।

    ফুলের মুখটি চাঁপা চাঁপা
    তাতে মস্ত বড় খোঁপা
    খোঁপায় বেলের কুঁড়ি জ্বলে
    ফুলি ঘাড় বেঁকিয়ে চলে।
    মনু যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে রাঙ্গাপিসী সেজেগুজেছে।
    কাপড় পরেছে রে রাঙা গয়না পয়েছে।
    কালো ভুরুর মাঝখানেতে টিপ দিয়েছে।

    আর সকলে কই
    রাঙার মুখে ফুটছে খই
    কাপড় করছে ঝলমল
    হাওয়ায় উড়ছে আঁচল।
    বাচ্চা যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে মেজপিসীমা সাজিয়ে দিয়েছে।
    কি পরেছেন আজকে খোকা কি পরেছেন রে?
    জুতো পরেছেন, মোজা পরেছেন, জামা পরেছেন রে।

    লাল জুতুয়া পায়ে
    হলুদ জামা গায়ে।
    কেবল ঘুরে ফিরে দেখেন
    খোকন খিলখিলিয়ে হাসেন।
    গুলগুলিটা বেড়াতে যাবে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে ছোটকাকা জুতো পরেছে।
    ছোটকাকার শামলা রঙে আভা দিয়েছে।
    ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক চিকচিকিয়েছে।

    ছোটকাকার কথা
    যেন ঘি চপ্‌চপ্‌ হাড়মুট্‌মুট্‌ রুহিমাছের মাথা।

    ফিনকি দিয়ে হাসছে সবাই, হাসছে হো হো করে
    কে জানে কি ভেবে খোকন হেসে উঠেছেন জোরে।

    খোকনসোনার হাসি
    যেন যুঁইফুলের রাশি
    দেব যে খেলনা চাস্‌
    খোকন আর একটু হাস্‌।
    বাবুন যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    ফুলকাকা আর ফুলকাকীমা হাত বাড়িয়েছে।
    সাতসকালে গায় ঢেলেছেন এক গঙ্গা জল।
    ফুলকাকীমার মুখটি ঘিরে চুলগুলি দল্‌মল্‌।

    ফুলকাকীমা লক্ষ্মী
    পটলচেরা চোখটি

    কাপড় কাচেন, বাসন তোলেন, বসে থাকেন না।
    যখন-তখন ঘুমিয়ে পড়েন, ঠেললে জাগেন না।

    অ বৌমা বৌমা
    চক্ষু মেলে চাও মা
    খোকন বড় সেয়ানা
    খোকার সঙ্গে যাও না।
    ছোটন যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে রাঙ্গাকাকা গাড়ী এনেছে।
    গাড়ীর ছাদটি আঁকা আঁকা
    গাড়ীর গায়ে কি সব লেখা
    গাড়ীর কাঁচগুলি সব বাঁকা
    গাড়ীর সামনে-তলায় চাকা

    গাড়ী হুস্‌ হুস্‌ হুস্‌ চল্‌
    খোকন বড়ই চঞ্চল।
    সুমন যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে মা-বাবা ব্যস্ত হয়েছে।
    লুচি বেলছে মাছ কুটছে পান সাজছে মা।
    ও খোকনের মা, এখন বঁটি রাখ না।

    আঁশবটিটি চকচকে
    পানের বাটা ঝকঝকে।
    থোড়ের সুতো খুলে যা
    তালমিছরি গলে যা
    নারকোলটা ফেটে যা
    দুধের ছানা কেটে যা।

    টকদইটি থকথকে।
    ঘরের মেঝে তকতকে।

    আমে বসল মাছি
    কোদাল দিয়ে চাঁচি
    কোদাল হল ভোঁতা
    খেঁকশিয়ালের মাথা।
    বুড্‌ঢা যাবে বেড়াতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছে বড়পিসীমা খাইয়ে দিয়েছে।
    কি খাওয়ালেন, কি খাওয়ালেন, কি খাওয়ালেন রে?
    দুধ খাওয়ালেন কলা খাওয়ালেন ঝোল খাওয়ালেন রে।

    খোকন থাকেন রঙ্গে
    বড়পিসীমার সঙ্গে

    কাদা মাখেন ধূলো ঘাঁটেন কাগজ নিয়ে পাকান।
    বড়পিসীমার মুখের দিকে আড়চোখেতে তাকান।
    ##### যাবে বেড়ু করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছেন ঠা-কুরমা চুমু খেয়েছেন।
    দাঁত পড়ে নি চুল পাকে নি কেমন ঠাকুমা?
    ভালো ঠাকুমা রাঙা ঠাকুমা কাউকে দেব না।

    ঠাকুমার অ্যাত্তো বড় কোল
    কোলে আস্তে খোকা দোল্‌
    দেখিস্‌ যেন ছাড়িস্‌ না
    তোর ঐ একটা ঠাকুমা।
    সোনা যাবে বেড়া করতে সঙ্গে যাবে কে?
    বাড়ীতে আছেন পিস-ঠাকুমা রান্না করেছেন।
    হাতে খুন্তি গায়ে হলুদ মুখে ঝরছে বাণী।
    আজন্ম পিস-ঠাকুমা রান্নাঘরের রাণী।

    শিলশিলাটন শিলে বাটন শিলে আছেন কে?
    পোস্ত আছেন পেস্তা আছেন আছেন ধনেজিরে।

    কলকলিয়ে ছাড়েন ঘি
    কলার পাতায় নিমকি।

    উচ্ছেভাজা পটলপুরী
    ডাল তো গড়াগড়ি
    দই তো হাঁড়িহাঁড়ি
    অম্বল খুরিখুরি।

    ধোঁকা ছোঁকা আলুর দম
    মাছ-পাতুরী কম কম।

    লাউ চিংড়ি শুকতো
    খোকা একটু চাখ্‌তো

    শিঙি মাছের পাতলা ঝোল
    ওরে খোকা গা তোল্‌।
    আর কে যাবে আর কে যাবে আর কে যাবে রে?
    এ যাবে ও যাবে সে যাবে রে।
    আমি যাব তুমি যাবে সবাই যাবে রে
    আমরা যাব তোমরা যাবে ওরাও যাবে রে।
    খোকার দেখন যাবে হাঁটন যাবে নাচন যাবে রে।
    খোকার হাসন যাবে কাঁদন যাবে বলন যাবে রে।
    আর কে যাবেন আর কে যাবেন আর কে যাবেন রে?
    ইনি যাবেন উনি যাবেন তিনি যাবেন রে।
    অমুক যাবেন তমুক যাবেন তুষুক যাবেন রে।
    এঁরা যাবেন ওঁরা যাবেন তাঁরা যাবেন রে।
    কিসে চড়ে যাবেন খোকা কিসে চড়ে রে?
    কোলে চড়ে যাবেন খোকা হনহনিয়ে রে।
    হেঁটে হেঁটে যাবেন খোকা টরটরিয়ে রে।
    রিক্‌শ করে যাবেন খোকা ঠুনঠুনিয়ে রে।
    সাইকেলেতে যাবেন খোকা ক্রিংক্রিঙিয়ে রে।
    গাড়ী চড়ে যাবেন খোকা ভঁকভঁকিয়ে রে।
    ঘোড়ায় চড়ে যাবেন খোকা টগবগিয়ে রে।
    পাল্কী চড়ে যাবেন খোকা হুমহুমিয়ে রে।
    হাতী চড়ে যাবেন খোকা থমথমিয়ে রে।
    নৌকো করে যাবেন খোকা ছলাৎছলিয়ে।
    সাঁতার দিয়ে যাবেন খোকা নদী উজিয়ে।
    এরোপ্লেনে যাবেন খোকা আকাশ ডিঙিয়ে।
    পক্ষীরাজে চড়ে যাবেন মেঘ পেরিয়ে।
    জাহাজ চড়ে যাবেন খোকা সাগরপাড়ি দে।
    ভেসে ভেসে যাবেন খোকা হেসে হেসে রে।
    রকেট চড়ে যাবেন খোকা মঙ্গলগ্রহে।

    কি দেখবেন সেখানে খোকা কি দেখবেন রে?
    মাঠ দেখবেন ঘাট দেখবেন বাট দেখবেন রে।
    জল দেখবেন থল দেখবেন মানুষ দেখবেন রে।
    ঘোড়া দেখবেন গরু দেখবেন মোষ দেখবেন রে।
    শ্রীদামসুদাম সঙ্গে নিয়ে খোকা যাবেন গোঠে।
    বটের ছায়ায় ধেনু চরাবেন রাজবংশীর মাঠে।
    পঞ্চবটীর বনে যাবেন, পম্পাসরোবরে।
    ইন্দ্রপ্রস্থে যাবেন খোকা ময়দানবের পুরে।
    গাছ দেখবেন পাখী দেখবেন আকাশ দেখবেন রে।
    ধলাপাহাড়ের চূড়োয় উঠে নীচে তাকাবেন রে।
    ঢেউ দেখবেন গান শুনবেন বাঁশী বাজাবেন রে।
    পাঁকের মধ্যে দাঁড়িয়ে খোকা শালুক তুলবেন রে।
    মেঘ দেখবেন বৃষ্টি দেখবেন রোদ্দুর দেখবেন রে।
    ফুল দেখবেন কাঁটা দেখবেন সব দেখবেন রে।
    কে মেরেছে? কে ধরেছে? কে দিয়েছে হাঁক?
    খোকার মুখে বেজে ওঠে পাঞ্চজন্য শাঁখ।
    ঐ যে কারা ধেয়ে এল বাগিয়ে তলোয়ার্‌
    খোকা দিলেন গাণ্ডীবেতে ভীষণ টঙ্কার।
    পাহাড় কাঁপায় পৃথ্বী দাপায় ঐ কারা ঐ শোন্‌।
    বন্‌ বন্‌ বন্‌ খোকার হাতে ছুটল সুদর্শন।

    উথলসায়র শান্ত
    খোকন বড় ক্লান্ত
    তিনঝুড়ি ঘুম আন্‌তো।

    চোখের পাতায় ঢেলে দে
    আদুড় গায়ে মেলে দে
    পাশবালিশটি তুলে দে
    পদ্মকাঁথা এনে দে।
    চাঁদ উঠল, তারা জ্বলল, নিভ্‌ল ঘরের আলো।
    কে ঘুমোল? কে ঘুমোল? খোকন ঘুমোল।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • কাব্য | ১৬ নভেম্বর ২০১১ | ৬৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী | 160.129.238.95 (*) | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৯:০২89034
  • সুন্দর ছোটদের ছড়া-কবিতা।
    পাঠ করে মুগ্ধ হলাম।
    কবিকে ধন্যবাদ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন