এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • বিজ্ঞান ও অপবিজ্ঞানঃ গবেষণার সাতকাহন

    Ritwik Kumar Layek লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১২ জুলাই ২০১৫ | ৭০৯৮ বার পঠিত
  • বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে আমাদের বাঙালীদের কিছু মিথ দিয়ে শুরু করা যাক। আমাদের চোখে বৈজ্ঞানিক মানে একজন রকস্টার, একজন আত্মকেন্দ্রিক উন্নাসিক ম্যাজিসিয়ান। গল্পে, কমিক্সে তাই যখন বিজ্ঞানীর চরিত্র আসে, সে আর পাঁচটা লোকের মত নয়। পুলিশের ডিটেকটিভের সাথে শার্লক হোমসের যা তফাৎ, একজন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানের শিক্ষকের সাথে প্রফেসর ক্যালকুলাস, ফিলিয়াস ফগ, বা প্রফেসর শঙ্কুর তফাৎ তার চেয়ে অনেক বেশী। এরা ঠিক মাটির মানুষ নয়।
    এরা নাহয় কল্পবিজ্ঞানের বিজ্ঞানী। কিন্তু আমরা যখন ফাইনম্যানের কথা পড়ছি, বা ডারউইন, নিউটনদের কথা পড়ছি, আমরা ভাবি এনারা সব এমনিতেই জিনিয়াস। আপেল গাছের তলায় বসে, জাহাজে চড়ে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে বা বারে মদ খেতে খেতে এদের মাথায় আইডিয়া ক্লিক করে যায়। আর সেটা লিখে দিলেই এনার জগৎবিখ্যাত।
    এখান থেকেই আসে দুটো ভুল ধারনা। একঃ বিজ্ঞানের গবেষণার সাফল্য শুধু গ্রে সেল থেকে আসে, যার আই কিউ যত বেশী তার সাফল্য তত বেশী। আর দুইঃ তথাকথিত পড়াশুনার কোন দাম নেই। ওতে জিনিয়াসদের সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু হয় না। জিনিয়াসরা অন্যের কাজ কেন পড়ে দেখবে। তারা সবসময় আউট অফ দা বক্স ইনোভেশন করবেন আর তাতেই পৃথিবী বদলে যাবে।
    আমার ডিপার্টমেন্টের দু একজন সিনিয়র প্রফেসরও এই ধারনা পোষন করেন যে বেশী অন্যের কাজ পড়লে বায়াসড হয়ে যাবে, ঐ পৃথিবী উল্টে দেওয়া গবেষণা আর হবে না। বরং শুধু ভাবো আর ভাবা প্র্যাকটিস করো। ব্রেনটা অন্যের কাজের ভিড়ে ভর্তি না করে নিজের আইডিয়া নিয়েই সারা দিন ভাবো। বিজ্ঞানের কাজে সামান্য উন্নতি করে লাভ নেই। যুগান্তকারী কি করবে সেটা ভাবো ইত্যাদি, প্রভৃতি।
    এবার বাস্তবের মাটিতে আসা যাক। একটু মন দিয়ে ভাবা যাক এই যুক্তির ফ্যালাসি। পড়াশুনা ছাড়াই যুগান্ত কিভাবে সম্ভব? বিজ্ঞানের গবেষণা কি একটা ডিসক্রীট ঘটনা যা লাফিয়ে লাফিয়ে এক যুগান্ত থেকে আরেক যুগান্তে এগোবে?
    *************************************
    বাস্তব টা হল সেটা একেবারেই নয়। বিজ্ঞানের ধাপগুলো একটু লক্ষ্য করা যাক। সেটা হলঃ Assumption, Observation, Hypothesis, Experiment, Analysis-Validation, Theory। এই ধাপগুলোর কোথাও কোনও প্রবলেম হলেই আবার আগের ধাপে ফিরে যেতে হয়। আর থিওরী তৈরী হয়ে গেলে সেটা পরের যুগের অ্যাজাম্পশন হয়ে যায়। আজ আমরা ভাবতেও পারবো না যে এককালে তড়িৎ ও চৌম্বক বল যে এক জাতীয় সেটা ভাবা যেতো না। আবার কোনও এক্সপেরিমেন্টের ফল বা কোনও নতুন অবজার্ভেশন পুরোন থিওরীকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে পারে বা বদলে দিতে পারে। এখন দেখার এই ধাপগুলোর কোথায় গবেষকদের কি ভূমিকা।
    ১। Assumptionঃ এটা হল সেইসব সিদ্ধান্ত যা আমরা একটা গবেষনা শুরুর সময় সত্যি বলে ধরে নি। আমি একটা ডায়োড নিয়ে সার্কিট বানাতে গেলে ধরে নি, ডায়োড টা একদিকে কারেন্ট ফ্লো করতে দেবে, অন্যদিকে দেবে না। এই ধাপটার জন্য দরকার প্রচুর পড়াশুনা। বিজ্ঞানের সফল থিওরী গুলো না জানলে নতুন গবেষণা সম্ভব নয়। এই গভীর পড়াশুনা থেকেই আইডিয়া আসে, আইডিয়া ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক থেকে নয়।
    ২। Observationঃ এটা কিছুটা লাকের উপর নির্ভর করে। হয় প্রাকৃতিক ঘটনা লক্ষ্য করা, বা অন্যের করা পরীক্ষার ফল, বা অন্যের কাজের বাখ্যা। ডিটেকটিভের চোখ লাগে এই ধাপে। একটা নতুন পেপার পড়তে গিয়ে তার ভুল বার করাও একটা observation, যা গবেষণার অন্যতম প্রধান ধাপ। এই দেখার চোখ না থাকলে শুধু পড়ে গেলেও সফল গবেষণা হয় না। কোথাও একটা খটকা বা অসঙ্গতি থাকতেই হবে পরের ধাপে যাওয়ার জন্য। উদাহরনঃ আলোর তরঙ্গ ধর্মের থিওরীকে অ্যাজাম্পশন হিসেবে ধরলে Intereference বা Diffraction এর বাখ্যা ঠিকই পাওয়া যায়। কিন্তু Photoelectric Effect এর ব্যাখ্যা পাওয়া সম্ভব হয় না। তখন নতুন থিওরীর প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
    ৩। Hypothesisঃ আগের ধাপে পাওয়া নতুন থিওরীর প্রয়োজন থেকেই আসে হাইপোথিসিস। হাইপোথিসিস একটা নতুন গানিতিক তত্ত্ব নিয়ে আসে যা থেকে ঐ পূর্বোক্ত অসঙ্গতির যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা পাওয়া গেলেও যেতে পারে। এই হাইপোথিসিস তৈরী করা একটা সিন্থেসিস এর সমস্যা। এর জন্য শুধু পড়াশুনা বা অসঙ্গতি দেখার চোখ থাকলেই হবে না। দরকার কিছুটা সাহসের, কিছুটা প্যাটার্ন খোঁজার ক্ষমতার। অভ্যেস ছাড়া এই ধাপটা পেরোনো সম্ভব নয়। তাই সবচেয়ে বেশী প্র্যাকটিস বোধ হয় দরকার এই ধাপটার জন্য। মোটামুটি সমস্ত সমস্যাতেই এই হাইপোথিসিস বানানো একটা ill-posed inverse problem। অনেক হাইপোথিসিস থেকেই পূর্বোক্ত অসঙ্গতির ব্যাখ্যা সম্ভব। তাই ঠিক হাইপোথিসিস বানানো মানেই গবেষণাতে অনেকটা সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
    Experimentঃ হাইপোথিসিস ঠিক না ভুল বোঝার উপার এই পরীক্ষার ধাপ। এটা দুভাবে হয়। একটা Logical thought experiment আর একটা Physiscal experiment। অনেক হাইপোথিসিস যুগের অনেক আগে আসে, তখন ঐ লজিক্যাল থট এক্সপেরিমেন্ট ছাড়া আর উপায় থাকে না। গাণিতিক সমস্যাগুলোর অনেকগুলো এই ধরনের। তবে প্রাকৃতিক পরীক্ষার হল একতা হাইপোথিসিস এর আসল প্রমান।
    Analysis-Validationঃ পরীক্ষার ফল এলে তার বিশ্লেষনে দরকার গাণিতিক দক্ষতা। অসঙ্গতি যেমন দূর করা দরকার, তেমনি দরকার অ্যাজাম্পশনের সাথে মিল খুঁজে পাওয়ার। এটাও এমন একটা স্কিল যেটা অভ্যেসের সাথে তৈরী হয়। ফল প্রেডিকশনের সাথে মিলে গেলে ভ্যালিডেশন। আর না মিললে আবার নতুন হাইপোথিসিস বা পরীক্ষাপদ্ধতির পুনর্বিন্যাস।
    Theoryঃ ফল মিলে গেলে সেটা হবে থিওরী।

    ********************************
    বিজ্ঞান এই ধাপে ধাপে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় বলেই বিজ্ঞান এতো আকর্ষণীয়। ম্যাজিকের মত কিছু হয় না। কঠোর পরিশ্রমের পর বিজ্ঞান সামান্য এগোয়। তারজন্য যিনি গবেষক তাঁর এই প্রতিটা ধাপের আলাদা প্রস্তুতির প্রয়োজন। আর মুহূর্তমধ্যে বিখ্যাত হবার চিন্তা মাথায় আনাও চলবে না। সেই লোভ এসে গেলে বিজ্ঞান অপবিজ্ঞানে পরিনত হবে। সেই কন্ট্রোভার্সিয়াল বিষয়ে একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন। প্রাক্তন ইউরোপীয় গবেষণার মডেল-যুক্তরাষ্ট্রীয় মডেল-ইন্দোচীনের মডেল নিয়ে একটু ভাবা দরকার। আর গবেষণাপত্র বা পেপার ছাপানো র বিভিন্ন দিক নিয়েও একটু বিশদে বলা প্রয়োজন।
    একটা পেপার হল উপরে লেখা গবেষণার ধাপগুলোর লিখিতরূপ। এই ডকুমেন্টেশন না থাকলে বিজ্ঞানের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়ে যাবে। একজনের কাজ অন্যজনকে জানানোর জন্যই এই পেপার লেখা ও ছাপানো প্রয়োজন। আর এটা আজ স্বতঃসিদ্ধ যে পেপার না ছাপানো অবধি একটা সফল কাজের ওনারশিপ একজন বিজ্ঞানীর কাছে আসে না। তাই সবাই এই পেপার ছাপানোর জন্য কমপিট করা শুরু করে। প্রফেসর বা বিজ্ঞানীর সাফল্যের পরিমাপও হয় অনেকটা এই পেপার থেকে। কিন্তু জ্ঞানসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে একজন হবু বিজ্ঞানীর এই রোটি-কাপড়া-মকানের ব্যবস্থার নিমিত্ত পেপার লেখার শ্রেষ্ঠ স্ট্র্যাটেজি কি হবে? গবেষণাই বা কিভাবে করা যাবে?

    ***********************************

    ধরা যাক, আমি একজন নতুন গবেষক। আমার কিছু বিষয়ে দক্ষতা আছে। ধরা যাক সেগুলো হল কিছুটা Control Theory আর কিছুটা Genetics। এগুলো কিছুটা জানি কারন বই পড়েছি ও ক্লাস করেছি। এখন আমি যদি ভাবি এই দুটো ডোমেনের কোনও একটাতে আমি রিসার্চ করতে চাই। এই ভাবনার পিছনে কি কি ভবিষ্যতের চিন্তা কাজ করে? যেমন আমি একজন বড় বিজ্ঞানী হয়ে যাবো, কনফারেন্সে দেশ বিদেশ ঘুরতে পারবো, সবাই আমার পেপার রেফার করবে। এটা হল লোভের পথ। এতে দেশ বিদেশে ঘোরাটা সফল হলেও হতে পারে, কিন্তু বাকি দুটোর সম্ভাবনা প্রায় নেই। তাহলে গবেষণা কখন করব?
    গবেষণা তখনই করব যখন আমি দেখবো যে আমি ঐ বিষয়টা এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি যে ঐ বিষয় ছাড়া আমার আর কিছুই ভালো লাগে না। আর ঐ বড় বিজ্ঞানী হবার স্বপ্ন একদম নেই, শুধু বিষয়টা জানলেই খুশী। যদি হাতের কাছে ব্যোমকেশ বক্সী থাকা সত্ত্বেও আমি একটা পেপার টেনে নি অবসর সময়ে পড়ার জন্য তখন বুঝবো এবার এগোনো যেতে পারে।
    তারপর শুরু হবে ঐ ডোমেনের পেপার পড়া। পেপার পড়া অনেকটা জিগস পাজলের মত। মানে ধরা যাক ডোমেনটা একটা পাজল। প্রতিটা পেপার একটা পিস। আমাকে প্রতিটা পিস দেখতে হবে আর অন্য পিসের সাথে মেলাতে হবে যে কোনটা কোথায় জুড়ছে। তারপর একসময় দেখবো ছবিটা আস্তে আস্তে পরিষ্কার হচ্ছে। একদিন একটা নতুন পেপার পড়তে শুরু করে দেখবো তার রেফারেন্স গুলো আমার আগেই পড়া হয়ে গেছে। আমি ওগুলো সব জানি, এমনকি নতুন পেপারে কি থাকতে পারে তার ধারনাও একটা তৈরী হচ্ছে, তখন বুঝবো ঐ প্রথম ধাপটা আমি প্রায় পেরোতে চলেছি। যেটা এতক্ষন লিখলাম সেটা কিন্তু মডারেট লেভেলে করতেও ১-২-৫ বছর লাগতে পারে। আর নিয়মিত পড়লে তবেই হবে। নোট নেওয়াটাও আবশ্যক। নইলে ঐ জিগশ মেলানো মুস্কিল।। ওহো, আমি কিন্তু ধরে নিয়েছি ঐ বিষয়ের টেক্সট বইগুলো আমার আগেই পড়া। এই পেপারে পড়ে ডোমেনটা বোঝার যে টেম্পোরাল লার্নিং কার্ভ, সেটা সিগময়ডাল। শুরুর দিকে প্রায় লার্নিং হয় না বললেই চলে, তারপর একটা লিনিয়ার ফেজ পেরিয়ে এক্সপোনেন্সিয়াল হয়ে শেষে স্যাচুরেট করে। তারপর শুরু হয় পেপার গুলো পড়ার দ্বিতীয় পর্ব। এবার ডিটেকটিভের চোখ নিয়ে। প্রথম পড়া শেখার জন্য। পেপারের লেখককে বিশ্বাস করে। দ্বিতীয়বার পড়াটা ক্রিটিসাইজ করার জন্য, ভুল বের করার জন্য। আমার নিজের জন্য একটা নতুন জিগশ পিস তৈরী করার জন্য, যেটা ঐ সুন্দর ছবিতে সেট হয়ে যাবে। তার জন্য পুরোনো কোনো পিস কে নষ্ট করতে হবে, বা ছবিটা বড় করতে হবে। এই দ্বিতীয় পড়াটা খুব আকর্ষনীয়। অনেক কম বোঝা পেপার পুরো বোঝা যায় এবারে। আর অনেক পেপার ডিসকার্ড হয়ে যায় খারাপ কোয়ালিটির জন্য।
    এই উপররে গল্পটা ভালো, যদি পেপারের সংখ্যা কম হয়। মানে ধর ১০০ পিসের পাজল। কিন্তু ১০,০০০ পিসের পাজল হলে সারা জীবন কেটে যাবে, শেষ হবে না পেপার পড়া। তার অর্থ সব পেপার পড়া চলবে না। এই বেছে নেবার কাজটা একদিনে শেখা যায় না।পড়তে পড়তেই এই টেকনিকটা রপ্ত হয়। তবে ডোমেনের মধ্যে নিজেকে একটু বেঁধে রাখতেই হবে। ম্যাথেম্যাটিক্যাল বায়োলজি পড়তে পড়তে কেও হঠাৎ পিওর ম্যাথ পড়তে শুরু করলে সে পথ হারাবেই। জিনিয়াসরাও একসাথে ১০ টা টপিক করতে পারেন না। থমাস কৈলাথ ও এক একটা দশক নিয়েছিলেন এক একটা বিষয়ে। তাই ফোকাস খুব গুরুত্বপূর্ন।
    পেপারের সংখ্যা কমানোর আর একটা উপার হল রিভিউ পেপার দিয়ে শুরু করা। ডোমেনের সেরা বিজ্ঞানীরা মোটামুটি প্রতি দশকে একটা করে পেপার লেখেন ঐ ডোমেনের এযাবৎ কাজ নিয়ে। সহজ ভাষায় লেখা এই পেপারগুলো বোঝাও সহজ, অঙ্ক থাকে কম আর গবেষণার ফ্লো টা বোঝা যায়। তারপর ঐ পেপারের রেফারেন্স ধরে এগোলে ক্রনোলজিক্যালি এগোনো যায়। তবে ভালো প্রফেসরের পেপার বেছে নিতে হবে। পরমহংসের মত। পেপার সমুদ্রে দুধের চেয়ে জলের পরিমান বেশী। ঐ ডোমেনের ভালো প্রফেসর ও গ্রুপের নাম, ভালো জার্নালের নাম হাতের কাছে নোট করে রাখা একটা প্রাথমিক প্র্যাকটিস।
    (ক্রমশঃ)

    দ্বিতীয় পর্বঃ
    ****************************
    পড়া মোটামুটি দাঁড়িয়ে গেলে শুরু হয় কাজের উপযুক্ত একটা প্রবলেম খুঁজে বার করা। যেহেতু আমরা কেও হাইজেনবার্গ বা টেরেন্স টাও বা পেরেলম্যান নই, তাই ঐ শতাব্দীর কঠিনতম সমস্যাগুলোর দিকে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। PhD র জন্য দরকার এমন একটা প্রবলেম, যেটার উপর সঠিকভাবে গবেষণা হয় নি, লিটারেচারে ঠিকঠাক কোনও কাজ নেই, কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে করা গেলেও যেতে পারে। আর PhD র জন্য সময় মোটামুটি ৪-৫ বছর পাওয়া যায়, যার লিটারেচার সার্ভেতেই চলে যাবে ২ বছর। সুতরাং আরো ২ বছরের মধ্যে কাজটা দাঁড় করাতে হবে ও পাবলিশ করতে হবে।
    এই কম সময়ের জন্য PhD তে খুব ভালো কাজ করা একরকম অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। পেপারের রিভিউ ও রিরিভিউ যেহেতু ১ বছরের কাছাকাছি নিয়ে নেয়, তাই যা করার ১ বছরের মধ্যেই করতে হবে।
    এই সিচিয়েশনে দাঁড়িয়ে PhD ছাত্র ভুলে যায় ঐ বৈজ্ঞানিক গবেষণার সিকোয়েন্সটার কথা। যেন তেন প্রকারেন উৎরে দিয়ে কাজটা নিয়ে পাবলিসিটি করতে হবে। কনফারেন্সে যেতে হবে। পড়াশুনা ঠিকঠাক হয়ে থাকলেও ঐ হাইপোথিসিস বানানো সমস্যাজনক হয়ে পড়ে। আর পড়াশুনা কম হলে বা না হলে বলাই বাহুল্য।
    এবার আসা যাক গবেষণার বিভিন্ন মডেলগুলোয়।

    ১। ইউরোপঃ রেনেশাঁ র পর ইউরোপ হয়ে উঠেছিল বিশ্বের মুক্তচিন্তার আঁতুড়ঘর। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে যে নতুন করে বিজ্ঞানকে চেনার কাজ শুরু হয় তা পূর্ণতা পায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম অর্ধে। টেলিস্কোপ-মাইক্রোস্কোপ তৈরী হয়, একের পর এক আসেন গ্যালিলিও-নিউটন-ডেকার্তে-জেমস ওয়াট-ডারউইন-মেন্ডেল-মেন্ডেলিভ-ফ্যারাডে-ম্যাক্সওয়েল-প্লাংক। নাম বলে শেষ করা যাবে না। একের পর এক কাজ হতে থাকে। ইউনিভার্সিটি গুলো এই জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। এই মুক্তচিন্তার মডেল ছিল প্রাচীর গ্রীসের আদলে। সবাই একটা কাজ নিয়ে সবার সাথে আলোচনা করতেন। পেপারের লোভের চেয়ে একটা ভালো কাজ শেষ করা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই মডেলের এপিটোম ছিল ঊনবিংশ শতকের কেম্ব্রিজ আর বিংশ শতকের গোটিঙ্গেন। দুটো বিশ্বযুদ্ধ এই গবেষণার যুগটা যেন হঠাৎ করে শেষ করে দেয়। অনেক বিজ্ঞানী দেশত্যাগ করেন। ইউরোপে আমি থাকিনি, চোখে দেখা অভিজ্ঞতা নেই, তবে শুনেছি ইউরোপে প্রফেসর একটা খুব উঁচু পদ। সবাই প্রফেসর হয় না। অনেকেই রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট এমনকি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবেই রিটায়ার করেন।

    ২। যুক্তরাষ্ট্রঃ বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে বিশ্বের সেরা হয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো। বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বে জার্মানী-ইংল্যান্ড-রাশিয়া-ইতালী-ফ্রান্সের চেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্রে সেরা বৈজ্ঞানিকরা গিয়ে হাজির হন। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশগুলির সেরা ছাত্রদেরও পছন্দের জায়গা হয় MIT, Stanford, Yale, Princeton ইত্যাদি ইত্যাদি। স্বাভাবিকভাবেই গড়ে ওঠে এক রিসার্চের এক অ্যামেরিকান মডেল, যা পূর্বসূরী ইওরোপীয়ান মডেল থেকে আলাদা। এই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রত্যেক প্রফেসরই একজন রাজা। গনতন্ত্রের ও স্বাধীনতার এই নতুন স্থানে প্রফেসররা হয়ে উঠলেন উচ্চাকাঙ্খী। সাকসেস ও আসতে শুরু করল। এঞ্জিনিয়ারিং এর অভুতপূর্ব উন্নতি হল। মানুষ চাঁদে যাচ্ছে, ফিউশন বোমা তৈরী হচ্ছে, কমিউনিকেশনে বিপ্লব আসছে। কোনও এক জ্যাক কিলবি তৈরী করছেন IC। কোনও এক ভন নয়মানের কাজের উপর তৈরী হয়ে যাচ্ছে কম্পিউটার। শ্যানন, কালমান রা তৈরী করছেন ইনফরমেশন থিওরী। বিজ্ঞানের নতুন দিক খুলে যাচ্ছে। আমেরিকার এই নতুন কালচার কিন্তু ক্যাভেন্ডিস ল্যাব বা গোটিঙ্গেনের থেকে আলাদা। গবেষকরা পড়তে চলেছেন এক ভয়ংকর কম্পিটিশনের মধ্যে, যার শেষরূপ হবে publish or perish। আমার ৫ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি এই নতুন মডেলে কোলাবোরেশন হয় কম্প্লিমেন্টারী ডোমেনের প্রফেসরদের মধ্যে। আর অনেক প্রফেসরই একা সূর্য্য হয়ে আলো দেওয়া শুরু করেন। একক পেপারের বন্যা শুরু হয়। জার্নাল চলে আসে অনেক গুন বেশী। বিজ্ঞানের সিরিয়াস জার্নাল গুলো জার্মানের পরিবর্তে আবার ইংলিশ ভাষায় হতে শুরু করে। আর শুরু হয় গবেষণার প্রোডাক্টের মার্কেটিং। প্রাইভেট এন্টারপ্রাইস আসে টাকা ঢালতে। প্রফেসরদের ভাবা ও পড়ার সময় কমতে শুরু করে। শিক্ষক ও গবেষকের সাথে আসল ডেজিগনেশন হয়ে ওঠে ম্যানেজার।

    ইন্দো-চীনঃ একসময় ইউরোপের মডেলে কাজ শুরু করেও এখন দ্রুত অ্যামেরিকার মডেলে যেতে চাইছে আমাদের এই দুই দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলো। কিন্তু অ্যামেরিকার গতি চীন রপ্ত করতে পারলেও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
    ********************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১২ জুলাই ২০১৫ | ৭০৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • utpal | 212.191.212.178 (*) | ১৪ জুলাই ২০১৫ ১১:২৪69279
  • আরও লিখুন।ইকোনমিক্স হয়ত এক্সপেরিমেন্টাল সাইন্স নয়। কিন্তু বিজ্ঞান এর অনেকটাই অনুমান আর assumption এ ভরা
  • সুকি | 129.160.188.61 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০২:৩০69280
  • খুব সুন্দর লেখা - তবে প্রথম পর্ব আর দ্বিতীয় পর্বের মধ্যে একটা হলকা লাফ রয়েছে। অসুবিধা নেই তাতে, আশা করছি সামনের পর্বগুলিতে সব কিছু স্মুথ হয়ে যাবে।

    এটা ধরে নিচ্ছি যে এখানে সায়েন্স মানে ন্যাচারেল সায়েন্সকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতি বা স্যোসাল সায়েন্সকে এর মধ্যে ঢুকিয়ে নিলে লেখা ঘুলিয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা প্রেডিক্ট করা যেতেই পারে।

    তর্কের খাতিরে কিছু প্রশ্ন, আপনি লিখছেনঃ

    "গবেষণা তখনই করব যখন আমি দেখবো যে আমি ঐ বিষয়টা এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি যে ঐ বিষয় ছাড়া আমার আর কিছুই ভালো লাগে না। আর ঐ বড় বিজ্ঞানী হবার স্বপ্ন একদম নেই, শুধু বিষয়টা জানলেই খুশী। যদি হাতের কাছে ব্যোমকেশ বক্সী থাকা সত্ত্বেও আমি একটা পেপার টেনে নি অবসর সময়ে পড়ার জন্য তখন বুঝবো এবার এগোনো যেতে পারে।"

    আচ্ছা আমি যদি গবেষণাকে আমার জব হিসাবেই নিই কেবল, তাহলে কি আমার এগুবার চান্স নেই? অর্থাৎ আমি ল্যাবে ৯-৬টা সময় দিলাম, বাড়িতে পেপার এর পাশে ব্যোমকেশ থাকলে আমি ব্যোমকেশকে ভালোবাসলাম, সেই ক্ষেত্রে আমি বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কোথায় দাঁড়িয়ে? আমি কিন্তু ল্যাবে পুরো ডেডিকেটেড থাকছি - ক্রিকেট/ফুটবল/মমতা কিছু নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছি না ওই সময়টায়।
  • PT | 213.110.243.21 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৯69281
  • আসল উত্তরটা ঋত্বিক দেবে। তবে আমি একটু কিছু লেখার লোভ সামলাতে পারছি না।
    গবেষণা মোটামুটিভাবে সারা দিনের কাজ-তার আউটকাম যে মাপেরই হোক না কেন। এই অব্স্থানটিকে সেই বিখ্যাত গান-"নমাজ আমার হইল না আদায়/নমাজ আমি ফরতে ফারলাম না" দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।
    এমনকি টিভির সামনে বসে থাকলেও চিন্তাটা ঐ গবেষণা নিয়েই আবর্তিত হওয়ার কথা। কারণ কোন আইডিয়ার জন্ম বা কোন গিঁট লেগে যাওয়া সমস্যার সমাধান ঠিক ৯-৬-টার মধ্যেই হয় না।
  • সুকি | 129.160.188.61 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৬69282
  • সুইচ্‌ অন-অফ বলে কিছু হয় না গবেষণার ক্ষেত্রে? অর্থাৎ আমি ৬ টায় নিজেকে সুইচ্‌ অফ করে দিলাম বিজ্ঞান থেকে - দিয়ে ফ্যামিলি লাইফে ফিরে গেলাম। পরের দিন আবার সকাল ৯ টায় ভাবা শুরু করলাম। এতে কি বিশাল কিছু প্রবলেম আছে?

    গিঁট লেগে যাওয়া জিনিস খুবই অস্বস্তিকর, তা সে বিজ্ঞান বা ক্রিকেট খেলা যাই হোক না কেন। গিট্টু লেগে গেলে সে চিন্তা টিভির সামনে বসেও করতে হয় মানছি - কিন্তু গবেষণা মানেই কি গিঁট লেগে যাওয়া?
  • সুশ্রুত সরখেল | 212.54.102.201 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫১69283
  • কেন হবেনা? পারলেই হয় নিশ্চয়। খালি ঐরকম সুইচ অফ করা শক্ত এই যা।
  • Ritwik Kumar Layek | 213.110.243.23 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৫:১৭69284
  • সুইচ অফ করা হয়ত যায়, কিন্তু তারপর অন করা অনেক ভোগান্তি। আমার নিজের বানানো ইকোয়েশন ৬ মাস পরে নিজে বুঝতে পারছি না, এ আমার হয়েছে।
    পিটি স্যর যেটা বললেন সেটা সত্যি। একটা রিসার্চ প্রবলেম নিয়ে যখন কাজ করছি তখন ক্রিকেট বা মুভি দেখতে দেখতেও সেটা মাথায় ঘোরে। আর একই সাথে আমি দু-তিনটে প্রবলেম নিয়ে কাজ করতেই পারি না। ছাত্রদের ক্ষেত্রে তা একটু অসুবিধার বৈকি।
  • Ekak | 113.6.157.185 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৬:২২69285
  • গবেষণা কোনদিন করিনি বাপু । ছোটখাটো বাগরি করে খাই । তবে পিটি দা বা ঋত্বিক যেটা বলছে/ন সেটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না । সমস্ত দিন "কাজ " করতে হবে তা ঠিক নয় । ফোকাস টা ওই দিকে থাকা জরুরি । হতেও পারে কোনো ক্রস ডিসিপ্লিনে আমার প্রেসেন্ট সমস্যার সমাধান আছে । এখন ফোকাস ঠিক থাকলে সেই সমাধান নিজের কাজে এপ্লাই করতে পারব । ফোকাস সরে গেলে সেখানেই মজে যাবো । এইভাবে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে আলাদা আলাদা করে মজে গেলে আদৌ শেষ অবধি কোনো কাজ হয়না । এটলিস্ট সাধারণ মানুষজন দের ।
  • অমিত সেনগুপ্ত | 116.51.242.100 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৮:০৮69286
  • ঋত্বিক,

    খুবই ভালো শুরু হয়েছে লেখাটা, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম.
    অনেক কমেন্ট আসছে ও আসবে, কিছু তোমার লেখাকে কমপ্লিমেন্ট করবে, কিছু কমেন্টের ওপরে কমেন্ট ও খেই হারানো তর্কের সৃষ্টি করবে, তুমি ফোকাসড থাক তোমার লেখার কন্টিন্যুইটির ওপর, যেন পরে সব পর্ব একসাথে একটা লজিকালি ইজি ফ্লোয়িং লেখায় দাঁড়ায়.
    কিছু ভালো ও গ্রহনযোগ্য কমেন্ট তুমি নিয়ে লেখাটাকে আরো ভালো করতেই পারো, তবে কি নেবে ও কতটা নেবে সেটা সম্পূর্ণ তোমার এক্তিয়ারে.

    একটু জ্ঞান দিয়ে ফেললাম, তবে এটা সত্যি যে এমন লেখার যোগ্যতা আমার নেই, তাই পাঠক হিসেবে ভাললাগাটা জানিয়ে রাখলাম. ভালো থাক, ভালো কাজ কর.
  • de | 24.139.119.171 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৮:১২69287
  • রিসার্চে সত্যিকারের ইনভলভড হলে সুইচ অফ হওয়া খুব মুশকিল - এটা সমস্যারও বিষয় বটে। ইচ্ছেমতো অন-অফ করা গেলেই বেশী ভালো হোতো।

    লেখাটা ভালো হচ্ছে - চলুক।
  • S | 139.115.2.75 (*) | ১৬ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩০69288
  • "রিসার্চে সত্যিকারের ইনভলভড হলে সুইচ অফ হওয়া খুব মুশকিল - এটা সমস্যারও বিষয় বটে।"

    আমার যদিও অন্য বিষয় এবং অত মারাত্মক লেভেলের গবেষনা নয়। তবে এইতা একটা প্রচন্ড সমস্যা। বিশেষত আশেপাশের লোকেদের জন্যে।
  • সুশ্রুত সরখেল | 212.54.102.201 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৫ ০৬:১২69289
  • I received an early copy of Heisenberg's first work a little before publication and I studied it for a while and within a week or two I saw that the noncommutation was really the dominant characteristic of Heisenberg's new theory. It was really more important than Heisenberg's idea of building up the theory in terms of quantities closely connected with experimental results. So I was led to concentrate on the idea of noncommutation and to see how the ordinary dynamics which people had been using until then should be modified to include it.

    ---P. A. M. Dirac

    The Development of Quantum Theory (J. Robert Oppenheimer Memorial Prize Acceptance Speech), Gordon and Breach Publishers, New York, 1971, pp. 20-24.
  • সুশ্রুত সরখেল | 212.54.102.201 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৫ ০৯:০৫69290
  • The popular image of the lone (and possibly slightly mad) genius – who ignores the literature and other conventional wisdom and manages by some inexplicable inspiration (enhanced, perhaps, with a liberal dash of suffering) to come up with a breathtakingly original solution to a problem that confounded all the experts – is a charming and romantic image, but also a wildly inaccurate one, at least in the world of modern mathematics. We do have spectacular, deep and remarkable results and insights in this subject, of course, but they are the hard-won and cumulative achievement of years, decades, or even centuries of steady work and progress of many good and great mathematicians; the advance from one stage of understanding to the next can be highly non-trivial, and sometimes rather unexpected, but still builds upon the foundation of earlier work rather than starting totally anew. (This is for instance the case with Wiles‘ work on Fermat’s last theorem, or Perelman‘s work on the Poincaré conjecture.)

    বাকিটা পড়ুনঃ https://terrytao.wordpress.com/career-advice/does-one-have-to-be-a-genius-to-do-maths/
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন