এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমার ভ্যালেন্টাইন

    Shubhasish Roychowdhury লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | ২২২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Shubhasish Roychowdhury | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৯:৩০728501
  • অবশেষে শেষ হল 'প্রেম দিবস’ থুড়ি ‘প্রেম সপ্তাহ’। ওসব দিবস টিবস তো আমাদের সময়ে ছিল। এখন সেসব অবসলিট হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে নিজেকে ডাইনোসর মনে হলেও প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমার বয়স মোটে একত্রিশ। আমাদের সময় বলতে বেশিদিন নয়,এই ষোল-সতেরো বছর আগের কথাই বলছি। সেই সময়ে নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ার বহাল তবিয়ৎ এ দাঁড়িয়েছিল, ‘ফ্রেন্ডস’ এর সপ্তম সিজন চলত স্টার ওয়ার্ল্ড এ, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিল সৌরভ গাঙ্গুলী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী আর বঙ্গারু লক্ষ্মণ তখন সবে মাত্র ঘুষ খেতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। তবুও সেই সময়ে শুধু ওই দিনটুকুই ছিল। তার কয়েক বছর আগে অবিশ্যি সেটাও ছিল না। কোথা থেকে এই হিড়িকটা উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল কে জানে? হঠাৎ করে একদিন পাড়ার একটা রোমিও গোছের দাদাকে দেখলাম বাঘছাল মার্কা জামা পরে সেন্ট-টেন্ট মেখে, বাবরি চুল ঝাঁকিয়ে গটমট করে হেঁটে যেতে। কৌতূহলবশত প্রশ্ন করলাম,
    -কিগো, এত ফিটফাট হয়ে চললে কোথায়?
    সানগ্লাসের ফাঁক দিয়ে মুচকি হেসে সে উত্তর দিয়েছিল,
    -ডেটিং এ। আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে না?
    পরের প্রশ্নটা করে নিজের অজ্ঞতার পরিচয় আর সেদিন তাকে দিই নি। আনন্দমেলার আর্চি কমিক্সের দরুন জানতাম যে আর্চি মাঝে মাঝে বেটি আর ভেরনিকার সাথে ডেটিং করতে যায় কিন্তু এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে টা আবার কি রে বাবা? জীবনে প্রথমবার সেটা শুনে কমপ্লিটলি ক্লুলেস হয়েও দাঁত কেলিয়ে বলেছিলাম,
    -ওরে জিও জিও। হেবি তো।
    সে ব্যাটাও মুখের হাসিটা বজায় রেখেই চলে গিয়েছিল ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে' পালন করতে। পরে এদিক সেদিক থেকে কানে এসেছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে নাকি ভ্যালেন্টাইন্স ডে অর্থাৎ বিশ্ব প্রেম দিবস বলে। ঐদিন গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া নাকি মাস্ট। আমি তখন ‘বিগফান’ নামক বাবলগাম এর সাথে পাওয়া ক্রিকেটারদের কার্ড জমাই, ডবলু ডবলু ই তে ‘দ্য রক’ হেরে গেলে কষ্ট পাই , টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে ‘এম আর এফ’ এর লোগো কিনে ব্যাটে লাগাই আর নয়ন মোঙ্গিয়াকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ উইকেট কিপার মনে করি। এর পর আর মনে হয়না বলে দিতে হবে যে আমার সে সময়ে কোনও গার্লফ্রেন্ড ছিলনা। স্বাভাবিক ভাবে এই দিনটা নিয়ে সেরকম একটা মাথাব্যাথাও হয়নি সেই সময়ে।
    আজ এসব পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে গিয়ে বার বার মনে পড়ছে কথাটা। আমাদের সময়ে সত্যিই ওই একটাই দিন ছিল। এইরকম আটদিনব্যাপী প্রেম সপ্তাহ উদযাপনের চল ছিল না। এই ব্যাপারে নিজের অলস মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে আমি একটা থিওরিও আবিষ্কার করেছি। সেটা হল ক্রিকেট আর প্রেমের প্রকাশ যত দিন গেছে তত ব্যাস্তানুপাতিক হারে এগিয়েছে। ক্রিকেট যত দিন গেছে তত সীমিত ওভারের হয়েছে আর প্রেমের প্রকাশ দিনের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই টি-২০ এর যুগে এসে আটদিন ধরে আজ টেডি বেয়ার কিনে দে রে, কাল প্রমিস কর রে, পরশু জড়িয়ে ধর রে, তরশু চুমু খা রে এসব কারো পোষায়? মানে কোন এক ম্যাচে ওপেন করতে এসে বিরাট কোহলি উদমা ক্যালান ক্যালাচ্ছে। দু ওভার শেষে বিনা উইকেটে চল্লিশ রান উঠে গেছে। হঠাৎ আম্পায়ার উইকেট-টুইকেট তুলে নিয়ে বলল,
    -আজ আর না। সকলে বাড়ি যাও। কালকে এখান থেকেই ফের শুরু হবে।
    ইকি কথা মশাই? এরকম হলে জ্বলে যাবে না? আলবাত জ্বলবে। জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে যদি প্রতিদিন এভাবে দুই ওভার খেলার শেষে ম্যাচ মুলতুবি করে দেওয়া হয়। আমি যে সময়ের কথা বলছি সে সময়ে একটা দিনেই গাব্দা টেডি বেয়ার উপহার দিয়ে, জন্মজন্মান্তর একসাথে থাকার প্রমিস করে, জড়িয়ে ধরে, চুমু খেয়ে ছেলে-মেয়েরা খুশি মনে বাড়ি ফিরত। আর এখন দেখি ছেলেপিলেরা একটা ম্যাচ আটদিন ধরে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কেন করছে সেটার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝিনা ছাই। এর অর্থ এটাও হতে পারে প্রকৃতি তার নিজস্ব কায়দায় আমাকে মেটামরফোসিস বোঝাচ্ছে,
    -পাড়ার সেই খেঁকুরে দাদুটাকে মনে আছে? যে পূজোর সময় মাইকে “ছৈঁইয়া ছৈঁইয়া” বাজালে “আজকালকার ছোঁড়া গুলো গোল্লায় গেছে” বলে রে রে করে তেড়ে আসতো....ওয়েলকাম টু দ্য ক্লাব, বাছা। এটা তোমার স্টেজ ওয়ান।
    তাইতো বললাম, মাঝে মাঝে নিজেকে সত্যিই ডাইনোসর মনে হয়। তা এই ডাইনোসর শর্মার সময়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে এক অসাধারণ ব্যাপার ছিল। সেদিন যুবসমাজ দুদলে ভাগ হয়ে যেত। যাদের গার্লফ্রেন্ড ছিল তারা ঐদিন নিজেদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বেড়াতে যেত, আর যাদের ছিলনা তারা যাদের ছিল তাদের ফেরার অপেক্ষা করত। তারা ফিরলেই তাদেরকে চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করত,
    -ভাই কিস করলি?…সত্যি?…কেমন লাগল?…আর কি কি করলি ভাই?…প্লিজ বল।
    সকলের সেই বিশ্বজয়ীকে ঘিরে ধরে লোলুপ দৃষ্টিতে তার গল্প শোনার এক আকুল আকাঙ্ক্ষা থাকত। ডেটিং ফেরত ছেলেটি তার একলা ফোকলা বন্ধুদের সামনে তখন অলরেডি হুব্বা পাঁচু হয়ে গেছে। যারা জীবনেও ক্ষীরকদম খায়নি তাদের ক্ষীরকদম বলে নকুলদানা খেতে দিলেও কি আর তারা তফাৎ বুঝতে পারে? সে ব্যাটাও সেই সুযোগে তখন দেদার গুল মারত। হয়ত নড়বড়ে ফার্স্ট বেস কমপ্লিট করে যারপরনাই ছড়িয়ে এসেছে গার্লফ্রেন্ডের কাছে কিন্তু বন্ধুদের সে অবলীলায় স্টেডি থার্ড বেসের গল্প শুনিয়ে দিত। আমার অবিশ্যি এই পাঁচু হওয়ার দিন আসেনি কোনবারই। তবে
    এতদিন পর এসব গল্প করতে করতে আমারও নিজের সেরা ভ্যালেন্টাইনস ডে টার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এতসব বললাম যখন তখন সেটাই বা বাদ যাবে কেন? সেই স্পর্শ আজও ভোলার নয়। সেদিনের সেই কয়েক মুহূর্তের জন্য শিরদাঁড়া বেয়ে সরীসৃপের মত সুড়ুত করে নেমে যাওয়া ঠাণ্ডা স্রোতের বিকল্প আমি আর কোনোদিন পাইনি। বলা ভাল সেই অনুভূতি আমাকে সেভাবে আর কেউ দিতে পারেনি।
    ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষার আগে কি একটা কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাকে দুদিনের জন্য মাসির বাড়ি উলুবেড়িয়াতে পাঠানো হয়েছিল। অনেক গাঁইগুঁই করলেও লাভ বিশেষ হয়নি অগত্যা ব্যাগে অঙ্ক আর ইংরাজি বইয়ের সাথে একটা লোকনাথ খাতা পুরে গোমড়া মুখে রওনা দিয়েছিলাম। মাসির বাড়ির গা ঘেঁষে গঙ্গা বয়ে যায়, ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া লেগেই থাকে, দুদিন পড়াশোনা না করলেও কেউ কিছু বলার নেই এইরকম একটা সিচুএশনে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ না পেয়ে যারপরনাই দুঃখ পেয়েছিলাম কারণ দিন দুটো ছিল ১৪ই আর ১৫ই ফেব্রুয়ারি। কেমিস্ট্রি কোচিং এ একটি মেয়ে আমাদের সাথে পড়ত। তাকে বাঁ দিক থেকে পুরো করিণা কাপুরের মত দেখতে ছিল। সেই মেয়েটিকে ভেবেছিলাম ঐদিনই প্রেম নিবেদন করব। আমার মত সেই কোচিং এর আরও কিছু ঘুঘুও যে একই মতলব করছে সেটা আগে থেকেই টের পেয়েছিলাম। লড়াই করে হারলে না হয় একটা কথা ছিল কিন্তু ভাগ্যের ফেরে এভাবে ওয়াকওভার দিতে হবে ভাবতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠছিল। ট্রেনের জানলার ধারে বসে গোটা রাস্তাটা এমনভাবে এলাম যেন কোনও স্যাড সং এর মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করছি। স্টেশন থেকে কোনমতে মাসির বাড়ি গিয়ে সোজা চলে গেলাম ছাদের ঘরে অঙ্ক করতে। তখন তো সুরা পান শুরু করিনি তাই এক্সট্রিম দুঃখ হলে অঙ্কই করতাম। নাওয়া খাওয়া ভুলে সেদিন রাত ন’টা পর্যন্ত অঙ্ক কষলাম। তারপর ডিনার সেরে মাসি কে বললাম,
    -একটু গঙ্গার ধার থেকে ঘুরে আসছি।
    -যা বাবা, ঘুরে আয়। এত পড়াশোনা করলি সারাদিন এবার একটু হাওয়া খেয়ে আয়। আবার বেশি রাত করিস না যেন।
    -না না, ম্যাক্সিমাম আধা ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিটের মধ্যে ফিরছি।
    মনে মনে ভাবলাম, নিকুচি করেছে হাওয়া খাওয়ার। এতক্ষণে আমার করিণা বেহাত হয়ে গেছে মনে হয়। কাকে হ্যাঁ বলল? মেধাবী সমীরণকে? নাকি ছকবাজ অম্বরীশকে? নাকি সিম্প্যাথি ভোটে রোগা পাতলা অভিজিৎটা বাজি মেরে বেরিয়ে গেছে? ধুর ধুর ভাল্লাগে না। এসব ভাবতে ভাবতে গঙ্গার পাড়ে এসে পৌঁছালাম। নদীর দিকে তাকাতে মুহূর্তের মধ্যে কোন এক জাদুতে সব চিন্তা উধাও হয়ে গেল আমার। মনে হল মাথার ভিতরের টিভিটার চ্যানেলটা কেউ যেন বিরক্ত হয়ে বদলে দিল। ধীর পায়ে পাড়ের কাছে সিমেন্টের বাঁধানো বেদিতে গিয়ে বসলাম। চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম মানুষ বলতে আমাকে নিয়ে দুজন। পাশের বেদিতে একটা লোক বসে রেডিও শুনছিল। আমি বহুবার গঙ্গা দেখেছি। হরিদ্বার থেকে শুরু করে হাওড়া, বহু জায়গায় গিয়ে দেখেছি। মাসির বাড়ি এলেই গঙ্গার ধারে এসে বসে থাকি কিন্তু সেদিন আমার অতি পরিচিত নদীটাকে যেন চিনতে পারছিলাম না। চাঁদের মায়াবী আলোর শাড়িটা নিজের শরীরে জড়িয়ে কোমর দুলিয়ে অদ্ভুত এক লাস্যের সাথে সেদিন হেঁটে চলেছিল গঙ্গা। তার পায়ের নূপুরের শব্দ আমার কানে বয়ে এনেছিল এক অদ্ভুত সুর। নূপুরের ট্র্যাডিশনাল ছমছমের থেকে অনেক বেশী মধুর ছিল সেই ছলাৎ ছলাৎ। কি এক প্রাচীন মায়ায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এই ষোল বছরের ছেলেটাকে সম্মোহন করে দিল আশি হাজার বছরেরও বেশি বয়সী সেই সুন্দরী। তার সামনে কোথায়ে কোথায় লাগে আমার কেমিস্ট্রি কোচিং এর করিণা। তুলে নিক তাকে সমীরণ, অম্বরীশ বা অভিজিৎ। আই ডোন্ট গিভ আ ড্যাম। ওদের থেকে বেশি রাগ আমার হচ্ছিল ওপারে বজবজ পাওয়ার প্ল্যান্টের আকাশ ছোঁওয়া চিমনীটার ওপর। এমন ভাবে আমার সদ্য সদ্য হওয়া ক্রাশের দিকে নিজের লাল চোখ দিয়ে হ্যাংলার মত চেয়েছিল, যেন চোখ দিয়ে ওকে গিলেই নেবে। মনে হচ্ছিল হারামিটাকে মাটিতে ফেলে ক্যালাই। আরেকটু হলে কেলিয়েই দিতাম কিন্তু বাধ সাধল পাশের লোকটার রেডিওটা। দু দিন ধরে পেট পরিষ্কার হয়নি এরকম একজন ঘোষক নিজের জীবনের সব দুঃখ গলায় এনে বলে উঠল,
    -ইয়ে আকাশওয়ানী হ্যায় আউর আপ সুন রেহে হ্যায় ‘ছায়া গীত’। আগলা গানা ফিল্ম ‘মেরা সায়া’ সে, জিস্কে সাঙ্গীতকার হ্যায় মদন মোহন, গীতকার হ্যায় রাজা মেহদি আলি খাঁ আউর আওয়াজ হ্যায় লতা মঙ্গেশকর কি।
    সে ডাকে সম্বিৎ ফিরতেই আবার কানে এল সেই ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। শুনতে পেলাম চরম সেক্সি গলায় এক মহিলা গেয়ে উঠল,
    “ন্যায়নো মে বদরা ছায়ে,
    বিজলী সি চমকে হায়ে,
    অ্যায়সে মে বলম মোহে,
    গরবা লগা লে এ এ এ এ..."
    আর তার সাথে কোথা থেকে একটা দমকা হাওয়া এসে আমার গায়ে নদীর জল ছিটিয়ে দিয়ে চলে গেল।
    মা কসম বলছি তারপর জীবনে অনেক গরবা লেগেছি কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডের রাতে ওইরকম গরবা আমাকে আর কেউ লাগায়নি। মাইরি!!
  • Shubhasish Roychowdhury | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৯:৩০728500
  • অবশেষে শেষ হল 'প্রেম দিবস’ থুড়ি ‘প্রেম সপ্তাহ’। ওসব দিবস টিবস তো আমাদের সময়ে ছিল। এখন সেসব অবসলিট হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে নিজেকে ডাইনোসর মনে হলেও প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমার বয়স মোটে একত্রিশ। আমাদের সময় বলতে বেশিদিন নয়,এই ষোল-সতেরো বছর আগের কথাই বলছি। সেই সময়ে নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ার বহাল তবিয়ৎ এ দাঁড়িয়েছিল, ‘ফ্রেন্ডস’ এর সপ্তম সিজন চলত স্টার ওয়ার্ল্ড এ, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিল সৌরভ গাঙ্গুলী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী আর বঙ্গারু লক্ষ্মণ তখন সবে মাত্র ঘুষ খেতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। তবুও সেই সময়ে শুধু ওই দিনটুকুই ছিল। তার কয়েক বছর আগে অবিশ্যি সেটাও ছিল না। কোথা থেকে এই হিড়িকটা উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল কে জানে? হঠাৎ করে একদিন পাড়ার একটা রোমিও গোছের দাদাকে দেখলাম বাঘছাল মার্কা জামা পরে সেন্ট-টেন্ট মেখে, বাবরি চুল ঝাঁকিয়ে গটমট করে হেঁটে যেতে। কৌতূহলবশত প্রশ্ন করলাম,
    -কিগো, এত ফিটফাট হয়ে চললে কোথায়?
    সানগ্লাসের ফাঁক দিয়ে মুচকি হেসে সে উত্তর দিয়েছিল,
    -ডেটিং এ। আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে না?
    পরের প্রশ্নটা করে নিজের অজ্ঞতার পরিচয় আর সেদিন তাকে দিই নি। আনন্দমেলার আর্চি কমিক্সের দরুন জানতাম যে আর্চি মাঝে মাঝে বেটি আর ভেরনিকার সাথে ডেটিং করতে যায় কিন্তু এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে টা আবার কি রে বাবা? জীবনে প্রথমবার সেটা শুনে কমপ্লিটলি ক্লুলেস হয়েও দাঁত কেলিয়ে বলেছিলাম,
    -ওরে জিও জিও। হেবি তো।
    সে ব্যাটাও মুখের হাসিটা বজায় রেখেই চলে গিয়েছিল ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে' পালন করতে। পরে এদিক সেদিক থেকে কানে এসেছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে নাকি ভ্যালেন্টাইন্স ডে অর্থাৎ বিশ্ব প্রেম দিবস বলে। ঐদিন গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া নাকি মাস্ট। আমি তখন ‘বিগফান’ নামক বাবলগাম এর সাথে পাওয়া ক্রিকেটারদের কার্ড জমাই, ডবলু ডবলু ই তে ‘দ্য রক’ হেরে গেলে কষ্ট পাই , টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে ‘এম আর এফ’ এর লোগো কিনে ব্যাটে লাগাই আর নয়ন মোঙ্গিয়াকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ উইকেট কিপার মনে করি। এর পর আর মনে হয়না বলে দিতে হবে যে আমার সে সময়ে কোনও গার্লফ্রেন্ড ছিলনা। স্বাভাবিক ভাবে এই দিনটা নিয়ে সেরকম একটা মাথাব্যাথাও হয়নি সেই সময়ে।
    আজ এসব পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে গিয়ে বার বার মনে পড়ছে কথাটা। আমাদের সময়ে সত্যিই ওই একটাই দিন ছিল। এইরকম আটদিনব্যাপী প্রেম সপ্তাহ উদযাপনের চল ছিল না। এই ব্যাপারে নিজের অলস মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে আমি একটা থিওরিও আবিষ্কার করেছি। সেটা হল ক্রিকেট আর প্রেমের প্রকাশ যত দিন গেছে তত ব্যাস্তানুপাতিক হারে এগিয়েছে। ক্রিকেট যত দিন গেছে তত সীমিত ওভারের হয়েছে আর প্রেমের প্রকাশ দিনের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই টি-২০ এর যুগে এসে আটদিন ধরে আজ টেডি বেয়ার কিনে দে রে, কাল প্রমিস কর রে, পরশু জড়িয়ে ধর রে, তরশু চুমু খা রে এসব কারো পোষায়? মানে কোন এক ম্যাচে ওপেন করতে এসে বিরাট কোহলি উদমা ক্যালান ক্যালাচ্ছে। দু ওভার শেষে বিনা উইকেটে চল্লিশ রান উঠে গেছে। হঠাৎ আম্পায়ার উইকেট-টুইকেট তুলে নিয়ে বলল,
    -আজ আর না। সকলে বাড়ি যাও। কালকে এখান থেকেই ফের শুরু হবে।
    ইকি কথা মশাই? এরকম হলে জ্বলে যাবে না? আলবাত জ্বলবে। জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে যদি প্রতিদিন এভাবে দুই ওভার খেলার শেষে ম্যাচ মুলতুবি করে দেওয়া হয়। আমি যে সময়ের কথা বলছি সে সময়ে একটা দিনেই গাব্দা টেডি বেয়ার উপহার দিয়ে, জন্মজন্মান্তর একসাথে থাকার প্রমিস করে, জড়িয়ে ধরে, চুমু খেয়ে ছেলে-মেয়েরা খুশি মনে বাড়ি ফিরত। আর এখন দেখি ছেলেপিলেরা একটা ম্যাচ আটদিন ধরে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কেন করছে সেটার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝিনা ছাই। এর অর্থ এটাও হতে পারে প্রকৃতি তার নিজস্ব কায়দায় আমাকে মেটামরফোসিস বোঝাচ্ছে,
    -পাড়ার সেই খেঁকুরে দাদুটাকে মনে আছে? যে পূজোর সময় মাইকে “ছৈঁইয়া ছৈঁইয়া” বাজালে “আজকালকার ছোঁড়া গুলো গোল্লায় গেছে” বলে রে রে করে তেড়ে আসতো....ওয়েলকাম টু দ্য ক্লাব, বাছা। এটা তোমার স্টেজ ওয়ান।
    তাইতো বললাম, মাঝে মাঝে নিজেকে সত্যিই ডাইনোসর মনে হয়। তা এই ডাইনোসর শর্মার সময়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে এক অসাধারণ ব্যাপার ছিল। সেদিন যুবসমাজ দুদলে ভাগ হয়ে যেত। যাদের গার্লফ্রেন্ড ছিল তারা ঐদিন নিজেদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বেড়াতে যেত, আর যাদের ছিলনা তারা যাদের ছিল তাদের ফেরার অপেক্ষা করত। তারা ফিরলেই তাদেরকে চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করত,
    -ভাই কিস করলি?…সত্যি?…কেমন লাগল?…আর কি কি করলি ভাই?…প্লিজ বল।
    সকলের সেই বিশ্বজয়ীকে ঘিরে ধরে লোলুপ দৃষ্টিতে তার গল্প শোনার এক আকুল আকাঙ্ক্ষা থাকত। ডেটিং ফেরত ছেলেটি তার একলা ফোকলা বন্ধুদের সামনে তখন অলরেডি হুব্বা পাঁচু হয়ে গেছে। যারা জীবনেও ক্ষীরকদম খায়নি তাদের ক্ষীরকদম বলে নকুলদানা খেতে দিলেও কি আর তারা তফাৎ বুঝতে পারে? সে ব্যাটাও সেই সুযোগে তখন দেদার গুল মারত। হয়ত নড়বড়ে ফার্স্ট বেস কমপ্লিট করে যারপরনাই ছড়িয়ে এসেছে গার্লফ্রেন্ডের কাছে কিন্তু বন্ধুদের সে অবলীলায় স্টেডি থার্ড বেসের গল্প শুনিয়ে দিত। আমার অবিশ্যি এই পাঁচু হওয়ার দিন আসেনি কোনবারই। তবে
    এতদিন পর এসব গল্প করতে করতে আমারও নিজের সেরা ভ্যালেন্টাইনস ডে টার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এতসব বললাম যখন তখন সেটাই বা বাদ যাবে কেন? সেই স্পর্শ আজও ভোলার নয়। সেদিনের সেই কয়েক মুহূর্তের জন্য শিরদাঁড়া বেয়ে সরীসৃপের মত সুড়ুত করে নেমে যাওয়া ঠাণ্ডা স্রোতের বিকল্প আমি আর কোনোদিন পাইনি। বলা ভাল সেই অনুভূতি আমাকে সেভাবে আর কেউ দিতে পারেনি।
    ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষার আগে কি একটা কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাকে দুদিনের জন্য মাসির বাড়ি উলুবেড়িয়াতে পাঠানো হয়েছিল। অনেক গাঁইগুঁই করলেও লাভ বিশেষ হয়নি অগত্যা ব্যাগে অঙ্ক আর ইংরাজি বইয়ের সাথে একটা লোকনাথ খাতা পুরে গোমড়া মুখে রওনা দিয়েছিলাম। মাসির বাড়ির গা ঘেঁষে গঙ্গা বয়ে যায়, ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া লেগেই থাকে, দুদিন পড়াশোনা না করলেও কেউ কিছু বলার নেই এইরকম একটা সিচুএশনে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ না পেয়ে যারপরনাই দুঃখ পেয়েছিলাম কারণ দিন দুটো ছিল ১৪ই আর ১৫ই ফেব্রুয়ারি। কেমিস্ট্রি কোচিং এ একটি মেয়ে আমাদের সাথে পড়ত। তাকে বাঁ দিক থেকে পুরো করিণা কাপুরের মত দেখতে ছিল। সেই মেয়েটিকে ভেবেছিলাম ঐদিনই প্রেম নিবেদন করব। আমার মত সেই কোচিং এর আরও কিছু ঘুঘুও যে একই মতলব করছে সেটা আগে থেকেই টের পেয়েছিলাম। লড়াই করে হারলে না হয় একটা কথা ছিল কিন্তু ভাগ্যের ফেরে এভাবে ওয়াকওভার দিতে হবে ভাবতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠছিল। ট্রেনের জানলার ধারে বসে গোটা রাস্তাটা এমনভাবে এলাম যেন কোনও স্যাড সং এর মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করছি। স্টেশন থেকে কোনমতে মাসির বাড়ি গিয়ে সোজা চলে গেলাম ছাদের ঘরে অঙ্ক করতে। তখন তো সুরা পান শুরু করিনি তাই এক্সট্রিম দুঃখ হলে অঙ্কই করতাম। নাওয়া খাওয়া ভুলে সেদিন রাত ন’টা পর্যন্ত অঙ্ক কষলাম। তারপর ডিনার সেরে মাসি কে বললাম,
    -একটু গঙ্গার ধার থেকে ঘুরে আসছি।
    -যা বাবা, ঘুরে আয়। এত পড়াশোনা করলি সারাদিন এবার একটু হাওয়া খেয়ে আয়। আবার বেশি রাত করিস না যেন।
    -না না, ম্যাক্সিমাম আধা ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিটের মধ্যে ফিরছি।
    মনে মনে ভাবলাম, নিকুচি করেছে হাওয়া খাওয়ার। এতক্ষণে আমার করিণা বেহাত হয়ে গেছে মনে হয়। কাকে হ্যাঁ বলল? মেধাবী সমীরণকে? নাকি ছকবাজ অম্বরীশকে? নাকি সিম্প্যাথি ভোটে রোগা পাতলা অভিজিৎটা বাজি মেরে বেরিয়ে গেছে? ধুর ধুর ভাল্লাগে না। এসব ভাবতে ভাবতে গঙ্গার পাড়ে এসে পৌঁছালাম। নদীর দিকে তাকাতে মুহূর্তের মধ্যে কোন এক জাদুতে সব চিন্তা উধাও হয়ে গেল আমার। মনে হল মাথার ভিতরের টিভিটার চ্যানেলটা কেউ যেন বিরক্ত হয়ে বদলে দিল। ধীর পায়ে পাড়ের কাছে সিমেন্টের বাঁধানো বেদিতে গিয়ে বসলাম। চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম মানুষ বলতে আমাকে নিয়ে দুজন। পাশের বেদিতে একটা লোক বসে রেডিও শুনছিল। আমি বহুবার গঙ্গা দেখেছি। হরিদ্বার থেকে শুরু করে হাওড়া, বহু জায়গায় গিয়ে দেখেছি। মাসির বাড়ি এলেই গঙ্গার ধারে এসে বসে থাকি কিন্তু সেদিন আমার অতি পরিচিত নদীটাকে যেন চিনতে পারছিলাম না। চাঁদের মায়াবী আলোর শাড়িটা নিজের শরীরে জড়িয়ে কোমর দুলিয়ে অদ্ভুত এক লাস্যের সাথে সেদিন হেঁটে চলেছিল গঙ্গা। তার পায়ের নূপুরের শব্দ আমার কানে বয়ে এনেছিল এক অদ্ভুত সুর। নূপুরের ট্র্যাডিশনাল ছমছমের থেকে অনেক বেশী মধুর ছিল সেই ছলাৎ ছলাৎ। কি এক প্রাচীন মায়ায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এই ষোল বছরের ছেলেটাকে সম্মোহন করে দিল আশি হাজার বছরেরও বেশি বয়সী সেই সুন্দরী। তার সামনে কোথায়ে কোথায় লাগে আমার কেমিস্ট্রি কোচিং এর করিণা। তুলে নিক তাকে সমীরণ, অম্বরীশ বা অভিজিৎ। আই ডোন্ট গিভ আ ড্যাম। ওদের থেকে বেশি রাগ আমার হচ্ছিল ওপারে বজবজ পাওয়ার প্ল্যান্টের আকাশ ছোঁওয়া চিমনীটার ওপর। এমন ভাবে আমার সদ্য সদ্য হওয়া ক্রাশের দিকে নিজের লাল চোখ দিয়ে হ্যাংলার মত চেয়েছিল, যেন চোখ দিয়ে ওকে গিলেই নেবে। মনে হচ্ছিল হারামিটাকে মাটিতে ফেলে ক্যালাই। আরেকটু হলে কেলিয়েই দিতাম কিন্তু বাধ সাধল পাশের লোকটার রেডিওটা। দু দিন ধরে পেট পরিষ্কার হয়নি এরকম একজন ঘোষক নিজের জীবনের সব দুঃখ গলায় এনে বলে উঠল,
    -ইয়ে আকাশওয়ানী হ্যায় আউর আপ সুন রেহে হ্যায় ‘ছায়া গীত’। আগলা গানা ফিল্ম ‘মেরা সায়া’ সে, জিস্কে সাঙ্গীতকার হ্যায় মদন মোহন, গীতকার হ্যায় রাজা মেহদি আলি খাঁ আউর আওয়াজ হ্যায় লতা মঙ্গেশকর কি।
    সে ডাকে সম্বিৎ ফিরতেই আবার কানে এল সেই ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। শুনতে পেলাম চরম সেক্সি গলায় এক মহিলা গেয়ে উঠল,
    “ন্যায়নো মে বদরা ছায়ে,
    বিজলী সি চমকে হায়ে,
    অ্যায়সে মে বলম মোহে,
    গরবা লগা লে এ এ এ এ..."
    আর তার সাথে কোথা থেকে একটা দমকা হাওয়া এসে আমার গায়ে নদীর জল ছিটিয়ে দিয়ে চলে গেল।
    মা কসম বলছি তারপর জীবনে অনেক গরবা লেগেছি কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডের রাতে ওইরকম গরবা আমাকে আর কেউ লাগায়নি। মাইরি!!
  • s | 77.59.61.153 | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২২:২৬728502
  • বাহ। খুব ভালো। লিখতে থাকুন।
  • pi | 57.29.134.221 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৯:২৮728503
  • সময়ের ব্যবধান আছে। তবু বেশ কিছু মিল খুঁজে পেলাম। কিছু কিছু জায়গা বেশ লাগল।
  • avi | 57.11.3.245 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১১:৪৩728504
  • আমাদের সময় তো। আহা, নয়ন মোঙ্গিয়ার নাম শোনাটাই এক নস্টালজিয়া। পুরো গতজনমের কথা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন