এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আফজল গুরু : বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে না

    সত্য সন্ধানী লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ | ২৪৪৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সত্য সন্ধানী | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২০:৫৫703682
  • গুরুচন্ডালিতে রৌহীন বলে জনৈক ব্যক্তি আফজল গুরুর ওপর একটা লেখা দিয়েছিলেন | সেই লেখাতে উনি বিচারব্যবস্থাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন | উনি দেখিয়েছিলেন যে কোর্ট গিলানির মুক্তির পরেও আফজল গুরুকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল | এই প্রসঙ্গে আমার কিছু বক্তব্য আছে | ওনার লেখা থেকেই কোট করছি |

    “এই বিচার প্রসঙ্গে আইনের চোখে “অবান্তর” কতগুলো “গুজব” আছে – যেগুলো নিয়ে আমরা স্বভাব নিন্দুকের মত একটু প্যাঁচালি পাড়ব। যেমন জাস্টিস শ্রী ধিংড়া – দিল্লি এবং শ্রীনগর আদালত চত্বরে এঁর পরিচিতি “হ্যাঙ্গিং জাজ” বলে – এঁর হাত দিয়েই নাকি ভারতে সবচেয়ে বেশি ফাঁসির রায় বেরিয়েছে। এই মামলায় ধিংড়া সাহেবকে বিচারপতি করা হয়েছিল আইনমন্ত্রকের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। ওদিকে মামলার ইনভেস্টিগেটিং অফিসারের নাম রাজবীর সিং – পদাধিকারবলে তিনি তখন ছিলেন স্পেশাল সেলের এসিস্টান্ট কমিশনার। আইনতঃ কোন সমস্যা নেই – কিন্তু ওই যে নিন্দুকদের ব্যপার। দেশের পক্ষে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলায় তদন্তকারী অফিসার হলেন একজন এসিপি – পূর্ণাঙ্গ কমিশনার জুটল না। নিয়োগ করলেন স্বয়ং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানী – যিনি নাকি আবার “লৌহপুরুষ” হিসাবে খ্যাত ছিলেন একসময়ে (ছাতির মাপ ছাপ্পান্ন ছিল না পঞ্চান্ন সেটা এই অধমের জানা নেই)। রাজবীরের হয়ে কথা “বার করা”র দায়ীত্বে ছিলেন ডিসিপি অশোক চাঁদ। ইনিও দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের “স্বনামধন্য” এবং “সুযোগ্য” অফিসার বলেই (কু?)খ্যাত|"

    প্রশ্ন এই যে এই নিয়োগ গুলি কি বেআইনি ? আইনমন্ত্রক কি জজ নিয়োগ করতে পারে না ? না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে পারেন না ? ঘটনাটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ | দেশের সংহতির পক্ষে অত্যন্ত বিপদজনক | অত্যন্ত সেনসিটিভ ইসু | সেইজন্য এত হোমরা চোমরা লোকেরা নিয়োগ করেছে |

    “আরো আছে – দুর্জনে বলে আফজল এই মামলায় গ্রেফতার হবার পরে বিচার শুরু হওয়া অবধি পাঁচ মাস কাল কোন আইনজীবি পায় নি – অর্থাৎ কেউ মামলা লড়তে রাজি হয়নি|"

    আইনজীবিদের স্বাধীনতা আছে ঠিক করার যে কার কেস নেবেন , কারটা নেবেননা | আমি নিজে একজন আইনজীবী তাই জানি |

    “শেষে মামলা আদালতে ওঠার পর “আসামী নিজে থেকে কোন আইনজীবি নিয়োগ করতে না চাওয়ায়” (আদালতের বয়ান) আদালত নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ১৭ইমে আইনজীবি সীমা গুলাটি এবং তার সহকারী নীরজ বনশলকে ডিফেন্স কাউন্সেল হিসাবে নিয়োগ করেন|"

    যাক শেষ পর্যন্ত আইনজীবী পাওয়া গেল |

    “অবাক ব্যপার – দেড় মাসও কাটেনি, জুলাই মাসের পয়লা তারিখে সীমা গুলাটি নিজেকে এই মামলা থেকে সরিয়ে নিলেন। কারণ? – গুলাটি নাকি আরেক অভিযুক্ত গিলানির হয়ে মামলা লড়বেন, তাই তাঁর পক্ষে আফজলের হয়ে লড়া আর “সম্ভব নয়”। তা এই দেড় মাসে গুলাটি তার মক্কেলের হয়ে কী কী করলেন? একটি সিদ্ধান্ত – সব অভিযুক্তের ডিফেন্স কাউন্সেলরা সমবেতভাবে ঠিক করেন তারা কয়েকটি বিষয় নিয়ে আদালতে কোনরকম চ্যালেঞ্জ করবেন না – যেমন মৃত জঙ্গীদের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ইত্যাদি|"

    আগেই বলেছি আইনজীবিদের স্বাধীনতা আছে | তাদের এটাও স্বাধীনতা আছে ঠিক করার যে তারা কিকরে কেস লড়বেন | এইভাবে লড়ে তারা গিলানিকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন | শওকত আর আফসানকে বাঁচিয়েছিলেন |

    “এই সিদ্ধান্ত পরে আফজলের মৃত্যুবাণ হয়ে দেখা দিয়েছিল – কিন্তু সে প্রসঙ্গে পরে আসছি|"

    না হয়নি | এই স্ট্রাটেজি তিনটি মামলায় ভালো কাজ করেছিল : গিলানি, শওকত আর আফসানের মামলায় ভালো কাজ করেছিল | সেম স্ট্রাটেজি আফজলের মামলাতেও কাজ করা উচিত ছিল কিন্তু হয়নি | এতে স্ট্রাটেজির কোনো দোষ নেই |

    “ এই বিষয়ে মহামান্য আদালতের পর্যবেক্ষণ -"counsel had exercised her discretion reasonably. The appellant accused did not object to this course adopted by the amicus throughout the trial" (SCJ, p 140)। অর্থাৎ মহামান্য আদালতের মতে মক্কেল তার উকিলের কাজের প্রতিবাদ করেননি – ভরসা করেছেন – কী মস্ত ভুল!”

    না ভুল নয় | আদালত ঠিক | আগেই বলেছি কেন ঠিক |

    “তা সীমা ছেড়ে দিলেন, অসুবিধা নেই – আফজলের পরবর্তী কাউন্সেল, ২রা জুলাই থেকে সেই আদালতেরই ঠিক করে দেওয়া (গণতন্ত্রের পীঠস্থান – একটা লোক বিচার পাবে না তা তো হতে পারে না) – নীরজ বনশল। আজ্ঞে হ্যাঁ – সীমা গুলাটির জুনিয়র উকিল। একটু সাম্প্রদায়িক বদনাম আছে – তাতে কি, “ডিফেন্স” তো সলিড। আদালত বলেছেন, "taking an overall view of the assistance given by the court and the performance of the counsel, it cannot be said that the accused was denied the facility of effective defence" (ibid pp 141-42)|”

    হাজার হোক আদালত ডিফেন্স দিয়েছে তো |

    “৮ই জুলাই সে কোর্টে তার কাউন্সেলারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং চার জন উকিলের নাম উল্লেখ করে তার হয়ে মামলা লড়ার জন্য। কিন্তু কী মুশকিল দেখুন তো, একজনেরও সময় হল না – অতএব মহামান্য আদালতের নির্দেশক্রমে নীরজ বনশলই বহাল রইলেন|"

    আবার সেই এক কথা | রহিনবাবু উকিলদের স্বাধীনতা আছে কারো মামলা না লড়ার |

    “রাম জেঠমালানি (এই মামলায় গিলানির উকিল) পরে এক জায়গায় বলেছেন পুরো শুনানিতে নীরজের কাজ ছিল শুধু আদালতে উপস্থিত হয়ে পুরো বিষয়টাকে গুলিয়ে দেওয়া (“his presence and participation have caused confusion and prejudice vitiating the trial”) |”

    এটা জেঠ্মালানির ব্যক্তিগত মতামত | সুতরাং গুরুত্ব কম |

    “নীরজের কথা এই বলে শেষ করব যে তিনি ডিফেন্স কাউন্সেল হিসাবে প্রসিকিউশনের একজন সাক্ষীকেও ক্রস-এগজামিন করেননি এই মামলায়। পিরিয়ড|"

    উকিল ঠিক করে কাকে একজামিন করবে , কাকে করবে না | সেরকম কিছু ছিল না হয়ত | এইটা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ | পরে বলছি |

    এরপর আসে মূল অভিযোগ :

    “অভিযোগ – ১৩ই ডিসেম্বর ২০০১ ভারতীয় পার্লামেন্টে যে আত্মঘাতী জঙ্গী হানা হয়, মহম্মদ আফজল গুরুই তার মূল চক্রী এবং তিনি লস্কর-ই-তৈবা এবং জঈশ-মহম্মদ নামক দুই-ই জঙ্গী সংগঠন (এই হামলা যাদের যৌথ অপারেশন বলে প্রচার)-এর সঙ্গে যোগসাজশে এই কাজ করেছেন। এই কাজের বিনিময়ে ১২ই ডিসেম্বর ২০০১ সালে আফজল, গিলানি এবং শওকৎ মিলে মোট দশ লাখ টাকা পান – ধরা পড়ার সময়ে যে টাকা তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আফজলের যে “জবানবন্দী” এই মামলার মূল “পাথুরে প্রমাণ” হিসাবে মান্য হয়েছে সেখানে বলা আছে যে জঈশ এর নেতা মৌলানা মাসুদ আজহার এবং পাক আইএসআই-এর কাশ্মীর এলাকার সুপ্রীম কমান্ডার জনৈক গাজী বাবা ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নাশকতার ছক করে। গাজী বাবার নির্দেশে জনৈক তারিক আহমেদ মহম্মদ আফজল গুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাকে আজাদ কাশ্মীরের জন্য জেহাদে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করে। আফজল এরপরে জনৈক মহম্মদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালাতে থাকে এবং নিহত পাঁচ জঙ্গীর মধ্যে চারজনকে (হামজা, হায়দার, রাজা এবং রাণা) সে-ই জোগাড় করে এবং তাদের অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং ল্যাপটপ জোগান দেবার ব্যবস্থা করে। অপারেশনের আগে দিল্লিতে তাদের গোপন ডেরার ব্যবস্থাও আফজলই করে। দিল্লিতেই এই জঙ্গীরা আফজলের খুড়তুতো ভাই শওকৎ হোসেন গুরু এবং তার স্ত্রী আফসান গুরু এবং আফজলের প্রতিবেশি ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষার লেকচারার এস এ আর গিলানির সংস্পর্শে আসে|"

    তাহলে এই অভিযোগ থেকে জানা গেল যে :

    ১] মৌলানা মাসুদ আজাহার আর গাজী বাবা দুইজনে পার্লামেন্ট হানার ছক করে |
    ২] তারা তরিক আহমেদ নাম একজনকে রিক্রুটের দায়িত্ব দেয় |
    ৩] তারিক আহমেদ আফজল গুরুকে হায়ার করে |
    ৪] আফজল গুরু মহম্মদকে নিয়োগ করে পাঁচ জঙ্গিকে রিক্রুট করে |
    ৫] দিল্লিতে গোপন ডেরার ব্যবস্থাও আফজল করে |
    ৬] দিল্লিতে জঙ্গিরা আফজলের খুড়তুত ভাই ও গিলানির সংস্পর্শে আসে |

    পাঠক এইবার অভিযোগটির দিকে একটু খতিয়ে দেখা যাক | আশা করি অভিযোগটা আগাগোড়া একইরকম ছিল, পরিবর্তিত হয়নি | গিলানি-আফসান-শওকত ছিল গোটা ঘটনার একেবারে নিচে | বলা যায় গ্রাসরুট লেভেলে| গোটা ষড়যন্ত্রে তাদের ভুমিকা ছিল নগন্য | তাই তারা বেঁচে গিয়েছে | গিলানি আর আফসান বেকসুর খালাস আর শওকত ৫ বছরের জেল | আফজল যে বাঁচবেনা তা ষড়যন্ত্রে তার পজিশন দেখে বুঝা যায় | সে ছিল অনেক উপরে | ষড়যন্ত্রের মাথাদের অনেক কাছের লোক | সে কেন বাঁচবে ? আজ যদি মাসুদ আজাহার আর গাজী বাবা বা তারিক আহমেদ ধরা পড়ত তাহলে বাজি রেখে বলতে পারি তারাও ফাঁসিকাঠে ঝুলত | সুতরাং এই ঘটনায় যে রায় কোর্ট দিয়েছে তার মধ্যে কোনো ভুল নেই |

    অনেকে বলবেন আফজল পরে গিলানিকে নির্দোষ বলেছিল প্রেস কনফারেন্স-এ | বলুক | সেটা মূল অভিযোগের থেকে কতটা আলাদা ? গিলানির পজিশন দেখলেই বুঝা যায় যে সে এসেছে অ-নে-ক পরে |

    এরপর আসছে পাথুরে প্রমান : আফজলের জবানবন্দী |

    “এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয় – আফজল কোথাও সরাসরি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত নন – তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ষড়যন্ত্র এবং দেশবিরোধী কাজের। প্রমাণ-অপ্রমাণ ব্যতিরেকে বলা যায়, এই ধরণের অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে – কিন্তু তা “বিরলের মধ্যে বিরলতম” অপরাধের মধ্যে পড়ে না|”

    দেশদ্রোহের সাজা যাবজ্জীবন হতে পারে কিন্তু ষড়যন্ত্রের সাজা হয়ত ফাঁসি | তাছাড়া দেশদ্রোহ আর ষড়যন্ত্রের প্রকৃতির উপরেও অনেক সময় সাজা নির্ভর করে | কোর্টের ডিসক্রিশনারী পাওয়ার রয়েছে কি সাজা হবে তা ঠিক করার | উকিল মাত্রেই তা জানেন |

    “এই সমস্ত ষড়যন্ত্রে তার ভূমিকা আফজল যে নিজে মুখে স্বীকার করেছে। কোথায়? মহামান্য আদালতের সামনে? আজ্ঞে না না – পুলিশের কাছে। এবং – হ্যাঁ, এবং মিডিয়ার সামনে। রীতিমত প্রেস কনফারেন্স করে বিবৃতি দিয়ে।.............অথচ এটাই কিন্তু আফজলের একমাত্র জবানবন্দী নয়। আফজল আরেকটা জবানবন্দী দিয়েছিল – হ্যাঁ, মহামান্য আদালতের সামনে, যেখানে সে বারবার তার প্রতি আনা প্রতিটা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমন কি এই বহুচর্চিত এবং “গুরুত্বপূর্ণ” জবানবন্দী নিয়েও তার বক্তব্য, পুলিশ তাকে ওই জবানবন্দী লিখে দিয়েছে এবং তা মিডিয়ার সামনে বলতে বাধ্য করেছে ভয় দেখিয়ে|"

    দুটো ঘটনাকে তুলে ধরে দেখলাম যে পুলিশের সামনে দেয়া জবানবন্দী কোর্টের সামনে অস্বীকার করা যে কোনো অপরাধীর ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ব্যাপার | চোর কখনো বলেনা যে সে চোর | লেখক বোধহয় এই মনস্তত্বটা ভুলে গেছেন |

    “ওই স্বীকারোক্তি দেবার জন্য পুলিশ তাকে পুরো এক দিন নগ্ন করে রেখেছে, দড়িতে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে, নিজের মূত্রপানে বাধ্য করেছে|”

    লেখক এই কথা জানলেন কি করে ? আফজল বলেছিল কোর্টের সামনে ?

    এরপরে লেখক বলেছেন যে কোর্ট জঙ্গিদের সনাক্তকরণের রিপোর্ট নাকচ করে দেয় | আর জঙ্গিদের ময়না তদন্তের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি তাই আফজলের ফাঁসি হয়েছে | কিন্তু এই একই স্ট্রাটেজি কিভাবে গিলানি আর শওকতদের বাঁচালো যেখানে তাদের বিরুদ্ধেও জঙ্গিদের চেনার অভিযোগ উঠেছিল ? সেটা স্পষ্ট নয় |

    উনি একটা জিনিস বিশ্লেষণ করতে বেমালুম ভুলে গেছেন | শুরুতে উনি বলেছিলেন নিরজ বনশল আফজলের বিরুদ্ধে ৮৯ জন সাক্ষীকে ক্রস করেননি | আফজলের জবানবন্দী, সনাক্তকরণের রিপোর্ট ছাড়া ঐসব সাক্ষীরা কি বলেছিলেন ? এটা একটা বড় ফাঁক | ঐসব সাক্ষীদের বয়ানও কোর্ট কনসিডার করেছিল | তাদের বয়ান হয়ত কোর্টকে ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল |
    সুতরাং দেখা যাচ্ছে কোর্ট কোনো ভুল কাজ করেনি | উকিলরাও খুব একটা ভুল করেনি | তাহলে আফজল নির্দোষ হলো কিকরে ?
  • সামান্য প্রশ্ন | 126.50.59.180 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২১:০৬703693
  • আপনি কলিন গঞ্জালভেসের নাম শুনেছেন? এন ডি পাঞ্চোলির নাম শুনেছেন?
  • সত্য সন্ধানী | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২১:০৯703701
  • দুজনেই উকিল | তো তাতে কি হয়েছে ?
  • না না | 126.50.59.180 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২১:১৩703702
  • কিসু হয় নি। আপনার প্রফেশনাল রাইভ্যাল হবেন হয় তো। এমনিই বললাম।

    আপনি লিখে যান। ভালো লাগছে।
  • b | 24.139.196.6 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২১:২৫703703
  • সত্যসন্ধানীবাবু রৌহীনের মূল লেখাটার নিচেই রিজয়েন্ডারটা লিখতে পারতেন।

    আর, নেম থ্রো না করে যুক্তিগুলো লেখা হোক না।
  • সত্য সন্ধানী | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৯:১৫703704
  • আমার প্রফেসনাল রাইভাল নয় | আমি যে যুক্তিগুলি দিলাম তার সারমর্ম হচ্ছে :

    ১] উকিলরা কোনো প্রফেসনাল মিসকন্ডাক্ট করেন নি |

    ২] কোর্ট কোনো ভুলভাল বিচার করেন নি |

    আর যে প্রশ্নটা আপনারা সবাই এড়িয়ে যাচ্ছেন সেটা হলো : যে ৮৯ জন সাক্ষীকে নীরজ বনশল ক্রস করেননি তারা কি বলেছিলেন ? আর একই স্ট্রাটেজি ( পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ না করা, ইত্যাদি ) গিলানিদের ছাড়িয়ে আনলো কিন্তু আফজলকে পারল না কেন ? আমার মনে হয় প্রথম প্রশ্নটার মধ্যেই দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর আছে |
  • amit | 37.33.21.97 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১১:২১703705
  • এই তো অপ্রিয় সব প্রশ্ন গুলো করে ফেললেন। এবার এই টইটাকে হয় ডোবানো হবে অথবা আপনাকে চাড্ডি বলে দাগানো হবে। দেখুন কতক্ষণ লাগে।
  • রৌহিন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১২:০৮703706
  • টইটা ডুবুক অন্ততঃ ব্যক্তিগতভাবে আমি চাইব না - হ্যাঁ, আলাদা টই না খুলে আমার লেখাটাতেই প্রশ্নগুলো তোলা যেত - যাই হোক, সেটা বড় বিষয় নয়। অফিসে আছি - একটু কাজে ব্যস্ত - তবে যে প্রশ্নগুলি সত্য সন্ধানী তুলেছেন, তার জবাব দেওয়া আমার কর্তব্য এবং দেব। আজকের মধ্যেই।
  • রৌহিন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১২:১৬703707
  • আরেকটা বিনীত অনুরোধ - আমার নামটা রৌহিন - রৌহীন বা রহিন নয় - দয়া করে একটু খেয়াল রাখবেন
  • ক্রুপস্কাযা | 11.39.38.168 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৩:২১703683
  • আপনি আইনজীবি ??!!!
    ওওওও
    আপনি জানেন কখন ছবি এঁকে নীচে লিখে দিতে হয় কি আঁকা হয়েছে? ?
    মক্কেলের জন্যে দুঃখ হচ্ছে মশায়।

    আচ্ছা হোমরাচোমরা ব্যক্তি নিয়োগ নিয়ে ই বলা হয়েছে ওই প্যারা তে !!! আপনি শিওর ??
  • রৌহিন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:২২703684
  • আমার উত্তরগুলো দিলাম। আলাদা রঙে লেখার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সাইট সাপোর্ট করছে না। তাই প্যারাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে "আমার উত্তর" বলে গুঁজে দিলাম। আশা করি বোঝা যাবে।

    গুরুচন্ডালিতে রৌহীন বলে জনৈক ব্যক্তি আফজল গুরুর ওপর একটা লেখা দিয়েছিলেন | সেই লেখাতে উনি বিচারব্যবস্থাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন | উনি দেখিয়েছিলেন যে কোর্ট গিলানির মুক্তির পরেও আফজল গুরুকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল | এই প্রসঙ্গে আমার কিছু বক্তব্য আছে | ওনার লেখা থেকেই কোট করছি |

    আমার বক্তব্য - অধমের নামের বানানটা রৌহিন – রৌহীন নয়। আমি “বিচারব্যবস্থাকে দোষী সাব্যস্ত” করার কেউ নই – আইনতঃ বা অন্য কোনভাবে। আমি শুধু সংশ্লিষ্ট বিচারের ফাঁক-ফোকরগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি মাত্র – বিচারের ক্ষেত্রে “শেষ বিচার” বলে যে কিছু হয় না সেটা সুপ্রীম কোর্ট নিজেই অন্যত্র স্বীকার করেছেন যা আমার লেখায় রেফারেন্স সহ বলা আছে – সেই অধিকারেই।

    “এই বিচার প্রসঙ্গে আইনের চোখে “অবান্তর” কতগুলো “গুজব” আছে – যেগুলো নিয়ে আমরা স্বভাব নিন্দুকের মত একটু প্যাঁচালি পাড়ব। যেমন জাস্টিস শ্রী ধিংড়া – দিল্লি এবং শ্রীনগর আদালত চত্বরে এঁর পরিচিতি “হ্যাঙ্গিং জাজ” বলে – এঁর হাত দিয়েই নাকি ভারতে সবচেয়ে বেশি ফাঁসির রায় বেরিয়েছে। এই মামলায় ধিংড়া সাহেবকে বিচারপতি করা হয়েছিল আইনমন্ত্রকের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। ওদিকে মামলার ইনভেস্টিগেটিং অফিসারের নাম রাজবীর সিং – পদাধিকারবলে তিনি তখন ছিলেন স্পেশাল সেলের এসিস্টান্ট কমিশনার। আইনতঃ কোন সমস্যা নেই – কিন্তু ওই যে নিন্দুকদের ব্যপার। দেশের পক্ষে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলায় তদন্তকারী অফিসার হলেন একজন এসিপি – পূর্ণাঙ্গ কমিশনার জুটল না। নিয়োগ করলেন স্বয়ং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানী – যিনি নাকি আবার “লৌহপুরুষ” হিসাবে খ্যাত ছিলেন একসময়ে (ছাতির মাপ ছাপ্পান্ন ছিল না পঞ্চান্ন সেটা এই অধমের জানা নেই)। রাজবীরের হয়ে কথা “বার করা”র দায়ীত্বে ছিলেন ডিসিপি অশোক চাঁদ। ইনিও দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের “স্বনামধন্য” এবং “সুযোগ্য” অফিসার বলেই (কু?)খ্যাত|"

    প্রশ্ন এই যে এই নিয়োগ গুলি কি বেআইনি ? আইনমন্ত্রক কি জজ নিয়োগ করতে পারে না ? না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে পারেন না ? ঘটনাটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ | দেশের সংহতির পক্ষে অত্যন্ত বিপদজনক | অত্যন্ত সেনসিটিভ ইসু | সেইজন্য এত হোমরা চোমরা লোকেরা নিয়োগ করেছে |

    আমার উত্তর - “বেআইনী” হলে “আইনের চোখে অবান্তর” কথাটা বলার প্রয়োজন হত না। অবশ্যই বে-আইনী নয়। তবে কতটা এথিকাল সে বিষয়ে প্রশ্ন তো আছেই। বিচারক নিয়োগ বিচার বিভাগই করে থাকেন – সে কাজে আইনমন্ত্রকের হস্তক্ষেপ বে-আইনী নয়, তবে প্রচলিতও নয়, বাঞ্ছিত তো নয়ই। আর কেসের গুরুত্ব বিচার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করলেন – প্রশ্নটা তো সেখানে নয়। প্রশ্নটা ছিল – এরকম একটা “গুরুত্বপূর্ণ” কেসে অফিসার নিযুক্ত হলেন একজন এসিপি – পূর্ণাঙ্গ কমিশনার পাওয়া গেল না (নাকি নেওয়া হল না) – তাও যেখানে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই নিয়োগ করলেন। বে-আইনী একেবারেই নয়। সেই জন্যই তো এটা “নিন্দুকের প্যাচাল”।

    “আরো আছে – দুর্জনে বলে আফজল এই মামলায় গ্রেফতার হবার পরে বিচার শুরু হওয়া অবধি পাঁচ মাস কাল কোন আইনজীবি পায় নি – অর্থাৎ কেউ মামলা লড়তে রাজি হয়নি|"

    আইনজীবিদের স্বাধীনতা আছে ঠিক করার যে কার কেস নেবেন , কারটা নেবেননা | আমি নিজে একজন আইনজীবী তাই জানি |

    আমার উত্তর - অবশ্যই স্বাধীনতা আছে – দেখা যাচ্ছে তারা এক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতার পূর্ণ সদব্যবহারও করেছেন। আইনজীবিদের বিভিন্ন কার্যকলাপ সম্প্রতি দেখার পর সেটা আর খুব একটা অস্বাভাবিকও মনে হচ্ছে না। তবে ওই যে পেনাল কোডে লেখা আছে, প্রত্যেক অভিযুক্তের (অপরাধীরও) ন্যায়বিচার পাবার অধিকার আছে – সেটা কেন যে লিখেছেন, প্রণেতারাই বলতে পারবেন বোধ হয়। তাতে আইনজীবিদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবার সম্ভাবনা, এটা বোঝা উচিৎ ছিল।

    “শেষে মামলা আদালতে ওঠার পর “আসামী নিজে থেকে কোন আইনজীবি নিয়োগ করতে না চাওয়ায়” (আদালতের বয়ান) আদালত নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ১৭ইমে আইনজীবি সীমা গুলাটি এবং তার সহকারী নীরজ বনশলকে ডিফেন্স কাউন্সেল হিসাবে নিয়োগ করেন|"

    যাক শেষ পর্যন্ত আইনজীবী পাওয়া গেল |

    আমার উত্তর – হ্যাঁ হ্যাঁ পাওয়া তো গেল। কী অসীম সৌভাগ্য!!

    “অবাক ব্যপার – দেড় মাসও কাটেনি, জুলাই মাসের পয়লা তারিখে সীমা গুলাটি নিজেকে এই মামলা থেকে সরিয়ে নিলেন। কারণ? – গুলাটি নাকি আরেক অভিযুক্ত গিলানির হয়ে মামলা লড়বেন, তাই তাঁর পক্ষে আফজলের হয়ে লড়া আর “সম্ভব নয়”। তা এই দেড় মাসে গুলাটি তার মক্কেলের হয়ে কী কী করলেন? একটি সিদ্ধান্ত – সব অভিযুক্তের ডিফেন্স কাউন্সেলরা সমবেতভাবে ঠিক করেন তারা কয়েকটি বিষয় নিয়ে আদালতে কোনরকম চ্যালেঞ্জ করবেন না – যেমন মৃত জঙ্গীদের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ইত্যাদি|"

    আগেই বলেছি আইনজীবিদের স্বাধীনতা আছে | তাদের এটাও স্বাধীনতা আছে ঠিক করার যে তারা কিকরে কেস লড়বেন | এইভাবে লড়ে তারা গিলানিকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন | শওকত আর আফসানকে বাঁচিয়েছিলেন |

    আমার উত্তর - আমিও এর উত্তরটা আগেই দিয়ে দিয়েছি মনে হয়। আরো কিছু প্রশ্ন থাকলে বলবেন।

    “এই সিদ্ধান্ত পরে আফজলের মৃত্যুবাণ হয়ে দেখা দিয়েছিল – কিন্তু সে প্রসঙ্গে পরে আসছি|"

    না হয়নি | এই স্ট্রাটেজি তিনটি মামলায় ভালো কাজ করেছিল : গিলানি, শওকত আর আফসানের মামলায় ভালো কাজ করেছিল | সেম স্ট্রাটেজি আফজলের মামলাতেও কাজ করা উচিত ছিল কিন্তু হয়নি | এতে স্ট্রাটেজির কোনো দোষ নেই |

    আমার উত্তর – “উচিৎ ছিল কিন্তু হয়নি” – তাতেই কী বোঝা যাচ্ছে না যে স্ট্র্যাটেজিটা অন্ততঃ আফজলের ক্ষেত্রে ভুল ছিল? কেন ছিল সেটা নীচে অন্য উত্তর প্রসঙ্গে বলেছি।

    “ এই বিষয়ে মহামান্য আদালতের পর্যবেক্ষণ -"counsel had exercised her discretion reasonably. The appellant accused did not object to this course adopted by the amicus throughout the trial" (SCJ, p 140)। অর্থাৎ মহামান্য আদালতের মতে মক্কেল তার উকিলের কাজের প্রতিবাদ করেননি – ভরসা করেছেন – কী মস্ত ভুল!”

    না ভুল নয় | আদালত ঠিক | আগেই বলেছি কেন ঠিক |

    আমার উত্তর - না বলেন নি তো! বললেও আমি বুঝিনি। ক্ষমা ঘেন্না করে যদি আরেকবার বুঝিয়ে দেন।

    “তা সীমা ছেড়ে দিলেন, অসুবিধা নেই – আফজলের পরবর্তী কাউন্সেল, ২রা জুলাই থেকে সেই আদালতেরই ঠিক করে দেওয়া (গণতন্ত্রের পীঠস্থান – একটা লোক বিচার পাবে না তা তো হতে পারে না) – নীরজ বনশল। আজ্ঞে হ্যাঁ – সীমা গুলাটির জুনিয়র উকিল। একটু সাম্প্রদায়িক বদনাম আছে – তাতে কি, “ডিফেন্স” তো সলিড। আদালত বলেছেন, "taking an overall view of the assistance given by the court and the performance of the counsel, it cannot be said that the accused was denied the facility of effective defence" (ibid pp 141-42)|”

    হাজার হোক আদালত ডিফেন্স দিয়েছে তো |

    আমার উত্তর - হ্যাঁ একদম। ডিফেন্সও দিয়েছে, তাকে সলিডও বলেছে। আবার কি চাই?

    “৮ই জুলাই সে কোর্টে তার কাউন্সেলারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং চার জন উকিলের নাম উল্লেখ করে তার হয়ে মামলা লড়ার জন্য। কিন্তু কী মুশকিল দেখুন তো, একজনেরও সময় হল না – অতএব মহামান্য আদালতের নির্দেশক্রমে নীরজ বনশলই বহাল রইলেন|"

    আবার সেই এক কথা | রহিনবাবু উকিলদের স্বাধীনতা আছে কারো মামলা না লড়ার |

    আমার উত্তর - আবার সেই একই কথা। রহিন নয়, রৌহিন। আর স্বাধীনতার পূর্ণ সদব্যবহার হয়েছে।

    “রাম জেঠমালানি (এই মামলায় গিলানির উকিল) পরে এক জায়গায় বলেছেন পুরো শুনানিতে নীরজের কাজ ছিল শুধু আদালতে উপস্থিত হয়ে পুরো বিষয়টাকে গুলিয়ে দেওয়া (“his presence and participation have caused confusion and prejudice vitiating the trial”) |”

    এটা জেঠ্মালানির ব্যক্তিগত মতামত | সুতরাং গুরুত্ব কম |

    আমার উত্তর - হ্যাঁ ঠিক। যদিও জেঠমালানিও আপনার মতই একজন আইনজীবি।

    “নীরজের কথা এই বলে শেষ করব যে তিনি ডিফেন্স কাউন্সেল হিসাবে প্রসিকিউশনের একজন সাক্ষীকেও ক্রস-এগজামিন করেননি এই মামলায়। পিরিয়ড|"

    উকিল ঠিক করে কাকে একজামিন করবে , কাকে করবে না | সেরকম কিছু ছিল না হয়ত | এইটা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ | পরে বলছি |

    এরপর আসে মূল অভিযোগ :

    “অভিযোগ – ১৩ই ডিসেম্বর ২০০১ ভারতীয় পার্লামেন্টে যে আত্মঘাতী জঙ্গী হানা হয়, মহম্মদ আফজল গুরুই তার মূল চক্রী এবং তিনি লস্কর-ই-তৈবা এবং জঈশ-মহম্মদ নামক দুই-ই জঙ্গী সংগঠন (এই হামলা যাদের যৌথ অপারেশন বলে প্রচার)-এর সঙ্গে যোগসাজশে এই কাজ করেছেন। এই কাজের বিনিময়ে ১২ই ডিসেম্বর ২০০১ সালে আফজল, গিলানি এবং শওকৎ মিলে মোট দশ লাখ টাকা পান – ধরা পড়ার সময়ে যে টাকা তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আফজলের যে “জবানবন্দী” এই মামলার মূল “পাথুরে প্রমাণ” হিসাবে মান্য হয়েছে সেখানে বলা আছে যে জঈশ এর নেতা মৌলানা মাসুদ আজহার এবং পাক আইএসআই-এর কাশ্মীর এলাকার সুপ্রীম কমান্ডার জনৈক গাজী বাবা ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নাশকতার ছক করে। গাজী বাবার নির্দেশে জনৈক তারিক আহমেদ মহম্মদ আফজল গুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাকে আজাদ কাশ্মীরের জন্য জেহাদে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করে। আফজল এরপরে জনৈক মহম্মদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালাতে থাকে এবং নিহত পাঁচ জঙ্গীর মধ্যে চারজনকে (হামজা, হায়দার, রাজা এবং রাণা) সে-ই জোগাড় করে এবং তাদের অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং ল্যাপটপ জোগান দেবার ব্যবস্থা করে। অপারেশনের আগে দিল্লিতে তাদের গোপন ডেরার ব্যবস্থাও আফজলই করে। দিল্লিতেই এই জঙ্গীরা আফজলের খুড়তুতো ভাই শওকৎ হোসেন গুরু এবং তার স্ত্রী আফসান গুরু এবং আফজলের প্রতিবেশি ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষার লেকচারার এস এ আর গিলানির সংস্পর্শে আসে|"

    তাহলে এই অভিযোগ থেকে জানা গেল যে :

    ১] মৌলানা মাসুদ আজাহার আর গাজী বাবা দুইজনে পার্লামেন্ট হানার ছক করে |
    ২] তারা তরিক আহমেদ নাম একজনকে রিক্রুটের দায়িত্ব দেয় |
    ৩] তারিক আহমেদ আফজল গুরুকে হায়ার করে |
    ৪] আফজল গুরু মহম্মদকে নিয়োগ করে পাঁচ জঙ্গিকে রিক্রুট করে |
    ৫] দিল্লিতে গোপন ডেরার ব্যবস্থাও আফজল করে |
    ৬] দিল্লিতে জঙ্গিরা আফজলের খুড়তুত ভাই ও গিলানির সংস্পর্শে আসে |

    আমার উত্তর - “অভিযোগ থেকে জানা গেল”?!! আপনি তো আইনজীবি বললেন নিজেকে। আপনি অভিযোগ থেকে সিদ্ধান্ত নেন?

    পাঠক এইবার অভিযোগটির দিকে একটু খতিয়ে দেখা যাক | আশা করি অভিযোগটা আগাগোড়া একইরকম ছিল, পরিবর্তিত হয়নি | গিলানি-আফসান-শওকত ছিল গোটা ঘটনার একেবারে নিচে | বলা যায় গ্রাসরুট লেভেলে| গোটা ষড়যন্ত্রে তাদের ভুমিকা ছিল নগন্য | তাই তারা বেঁচে গিয়েছে | গিলানি আর আফসান বেকসুর খালাস আর শওকত ৫ বছরের জেল | আফজল যে বাঁচবেনা তা ষড়যন্ত্রে তার পজিশন দেখে বুঝা যায় | সে ছিল অনেক উপরে | ষড়যন্ত্রের মাথাদের অনেক কাছের লোক | সে কেন বাঁচবে ? আজ যদি মাসুদ আজাহার আর গাজী বাবা বা তারিক আহমেদ ধরা পড়ত তাহলে বাজি রেখে বলতে পারি তারাও ফাঁসিকাঠে ঝুলত | সুতরাং এই ঘটনায় যে রায় কোর্ট দিয়েছে তার মধ্যে কোনো ভুল নেই |

    অনেকে বলবেন আফজল পরে গিলানিকে নির্দোষ বলেছিল প্রেস কনফারেন্স-এ | বলুক | সেটা মূল অভিযোগের থেকে কতটা আলাদা ? গিলানির পজিশন দেখলেই বুঝা যায় যে সে এসেছে অ-নে-ক পরে |

    আমার উত্তর - আবারও। অভিযোগ আর বিচার একই নিক্তিতে!! এগুলো আফজলের সেই জবানবন্দী থেকে নেওয়া যা সে পুলিশকে দিয়েছে এবং যাকে আমরা প্রশ্ন করেছি। আইনজীবিবৃন্দ (এবং এক্ষেত্রে আদালতও) সেই বয়ানকেই ধ্রুব ধরে নিয়েছেন। প্রশ্নটা সেখানেই।

    এরপর আসছে পাথুরে প্রমান : আফজলের জবানবন্দী |

    “এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয় – আফজল কোথাও সরাসরি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত নন – তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ষড়যন্ত্র এবং দেশবিরোধী কাজের। প্রমাণ-অপ্রমাণ ব্যতিরেকে বলা যায়, এই ধরণের অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে – কিন্তু তা “বিরলের মধ্যে বিরলতম” অপরাধের মধ্যে পড়ে না|”

    দেশদ্রোহের সাজা যাবজ্জীবন হতে পারে কিন্তু ষড়যন্ত্রের সাজা হয়ত ফাঁসি | তাছাড়া দেশদ্রোহ আর ষড়যন্ত্রের প্রকৃতির উপরেও অনেক সময় সাজা নির্ভর করে | কোর্টের ডিসক্রিশনারী পাওয়ার রয়েছে কি সাজা হবে তা ঠিক করার | উকিল মাত্রেই তা জানেন |

    আমার উত্তর - আমরাও তা জানি। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর সময় যে কিছু বাড়তি ডিসক্রিশন ব্যবহৃত হয় এটাও জানা ছিল।

    “এই সমস্ত ষড়যন্ত্রে তার ভূমিকা আফজল যে নিজে মুখে স্বীকার করেছে। কোথায়? মহামান্য আদালতের সামনে? আজ্ঞে না না – পুলিশের কাছে। এবং – হ্যাঁ, এবং মিডিয়ার সামনে। রীতিমত প্রেস কনফারেন্স করে বিবৃতি দিয়ে।.............অথচ এটাই কিন্তু আফজলের একমাত্র জবানবন্দী নয়। আফজল আরেকটা জবানবন্দী দিয়েছিল – হ্যাঁ, মহামান্য আদালতের সামনে, যেখানে সে বারবার তার প্রতি আনা প্রতিটা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমন কি এই বহুচর্চিত এবং “গুরুত্বপূর্ণ” জবানবন্দী নিয়েও তার বক্তব্য, পুলিশ তাকে ওই জবানবন্দী লিখে দিয়েছে এবং তা মিডিয়ার সামনে বলতে বাধ্য করেছে ভয় দেখিয়ে|"

    দুটো ঘটনাকে তুলে ধরে দেখলাম যে পুলিশের সামনে দেয়া জবানবন্দী কোর্টের সামনে অস্বীকার করা যে কোনো অপরাধীর ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ব্যাপার | চোর কখনো বলেনা যে সে চোর | লেখক বোধহয় এই মনস্তত্বটা ভুলে গেছেন |

    আমার উত্তর - পুলিশ নিজের কেস বানানোর জন্য এই ধরণের অত্যাচারের স্ট্র্যাটেজি হামেশাই নিয়ে থাকে। শ্রী সন্ধানী বোধহয় সেই মনস্তত্ত্বটা ভুলে গেছেন। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের রেপুটেশনগুলো দেখার পর।

    “ওই স্বীকারোক্তি দেবার জন্য পুলিশ তাকে পুরো এক দিন নগ্ন করে রেখেছে, দড়িতে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে, নিজের মূত্রপানে বাধ্য করেছে|”

    লেখক এই কথা জানলেন কি করে ? আফজল বলেছিল কোর্টের সামনে ?

    আমার উত্তর - বলেছিল। কোর্টের সামনেই। তথ্যসূত্রগুলো একটু পড়ে দেখতে অনুরোধ করছি।

    এরপরে লেখক বলেছেন যে কোর্ট জঙ্গিদের সনাক্তকরণের রিপোর্ট নাকচ করে দেয় | আর জঙ্গিদের ময়না তদন্তের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি তাই আফজলের ফাঁসি হয়েছে | কিন্তু এই একই স্ট্রাটেজি কিভাবে গিলানি আর শওকতদের বাঁচালো যেখানে তাদের বিরুদ্ধেও জঙ্গিদের চেনার অভিযোগ উঠেছিল ? সেটা স্পষ্ট নয় |

    আমার উত্তর - গিলানি আর শওকত এর ক্ষেত্রে ওটা ইম্মেটেরিয়াল হয়ে গেছিল কারণ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মূল ভিত যে কল রিপোর্ট, সেটাই আদালতে ধসে পড়ে। শওকতের বিরুদ্ধে জঙ্গীদের “চেনা”র অভিযোগ ওঠেও নি। আর আফজলের ক্ষেত্রে ওটা ভাইটাল হবার কারণ তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন ওই জবানবন্দী ছাড়া আর কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ খাড়া করতে পারেনি। ময়না তদন্তের রিপোর্টটা চ্যালেঞ্জড হলে ওই “চেনা”র প্রমাণটাও নাকচ হয়ে যাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। সেটা হয়নি। সবার ক্ষেত্রে “কমন স্ট্র্যাটেজি” নেওয়াটা কী ধরণের ওকালতি স্ট্র্যাটেজি, আমাদের মোটা মাথায় ঢোকেনি।

    উনি একটা জিনিস বিশ্লেষণ করতে বেমালুম ভুলে গেছেন | শুরুতে উনি বলেছিলেন নিরজ বনশল আফজলের বিরুদ্ধে ৮৯ জন সাক্ষীকে ক্রস করেননি | আফজলের জবানবন্দী, সনাক্তকরণের রিপোর্ট ছাড়া ঐসব সাক্ষীরা কি বলেছিলেন ? এটা একটা বড় ফাঁক | ঐসব সাক্ষীদের বয়ানও কোর্ট কনসিডার করেছিল | তাদের বয়ান হয়ত কোর্টকে ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল |

    আমার উত্তর - এটা তো সবচেয়ে বড় ফাঁক। ৮৯ জন সাক্ষী একতরফা সাক্ষ্য দিয়ে গেলেন, বিবাদী পক্ষের উকিল একজনকেও চ্যালেঞ্জ করলেন না – ক্রস একজামিন করলেন না!! তাদের বয়ান কোর্টকে কতটা প্রভাবিত করেছিল তা বিচারকই বলতে পারেন – কিন্তু ক্রস একজামিন করা হল না – এটা যে রায়দানকে প্রভাবিত করল, সেটা বুঝতে বোধ হয় উকিল হতে লাগে না।

    সুতরাং দেখা যাচ্ছে কোর্ট কোনো ভুল কাজ করেনি | উকিলরাও খুব একটা ভুল করেনি | তাহলে আফজল নির্দোষ হলো কিকরে ?

    আমার উত্তর - বাঃ – রায় তো দিয়েই দিলেন। উপপাদ্য প্রমাণিত। আর প্রশ্ন চলবে না তাই তো?

    সব শেষে আমার একটা ছোট প্রশ্ন – আপনি কোন আদালতে প্র্যাকটিস করেন? আমার বিরুদ্ধে সিডিশনের চার্জ এলে আপনাকেই নিয়োগ করব কি না ভাবছি।
  • ক্রুপস্কায়া | 11.39.38.168 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৮:০১703686
  • একটাও বোঝে নি। ফার্স্ট প্যারা র প্রশ্ন শুনলেই বোঝা যাচ্ছে। আশি বা পঁচাশি র নীচে গেলেই ঘি না ডালডা হয়ে যায়। চিন্তা ক্ষমতা শ্লথ হয়ে যায়। আবার না একটা টই খুলে ফেলেন !!!
  • ক্রুপস্কায়া | 11.39.38.168 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৮:০১703685
  • একটাও বোঝে নি। ফার্স্ট প্যারা র প্রশ্ন শুনলেই বোঝা যাচ্ছে। আশি বা পঁচাশি র নীচে গেলেই ঘি না ডালডা হয়ে যায়। চিন্তা ক্ষমতা শ্লথ হয়ে যায়। আবার না একটা টই খুলে ফেলেন !!!
  • 0 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৮:২১703687
  • একটা ব্যাপার ভালো যে অল্প হলেও অন্তত মিনিময়টুকু হচ্ছে। কথাবার্তা চলতে থাকা অলওয়েজ ওয়েলকাম্‌।

    যেকোন অপরাধেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী। হাজারবার IC 814 হলেও বিরোধী।
  • রৌহিন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২২:৩০703688
  • আমিত, টইটা ডুবে যাবার ব্যপারে আপনি তো খুবই কনসার্নড ছিলেন। ডুবে যাতে না যায় সে জন্য কিছু করুন
  • sch | 125.187.38.216 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২৩:৫৯703689
  • রৌহিন আর কিছুদিন আগে আমিও মিডিয়ার মসলা খেয়ে ভাবতাম আফজলের ফাঁসি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন কিসের - দেশদ্রোহীদের এটাই হওয়া দরকার। কিন্তু আপনার এবং সিকির লেখা পড়ে অন্য ভাবে ভাবতে বাধ্য হয়েছি। নিজের অজ্ঞতার জন্য লজ্জা হচ্ছে কিন্তু একটা প্রশ্ন মনে আসছে এখনো - আফজলের বিবৃতি সে under pressure এর কোনো প্রুফ কি সাধারণ মানুষের পক্ষে পাওয়া সম্ভব? জানতে ইচ্ছে।
    না আমি আফজলের বিচার ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না - কিন্তু এটা জানতে আগ্রহী।যদি সময় করে উত্তর দেন -
  • রৌহিন | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:৪৩703690
  • না - বিবৃতি সত্যিই আন্ডার প্রেশার দেওয়া হয়েছিল নাকি পরে কোর্টের সামনে সে নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা বলেছে এটা নিশ্চিত করে জানা অবশ্যই সম্ভব নয়। আমরা কেবল পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলি দেখে সম্ভাবনাগুলো যাচাই করছি। যেমন সংশ্লিষ্ট অফিসারদের রেপুটেশন - পোটার ব্যবহার, আদালতে আফজলের বয়ানকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা ইত্যাদি। সঙ্গে মনে রাখতে হবে যে পুরো রায়দান কিন্তু মূলতঃ এই বয়ানের ওপর ভিত্তি করেই হয়েছে। এবং মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। না আসল সত্যটা নিশ্চিতভাবে জানার উপায় কারোই নেই আজ আর।
  • shibir | 113.16.71.69 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৩৫703691
  • রৌহিন বোধহয় এই লিঙ্কটার কথা জানেন তবু সত্য সন্ধানী এর সত্য সন্ধানে এটা সাহায্য করবে ।
    "
    "
  • মসলা | 174.67.157.154 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৯703692
  • রৌহিন আপনার যুক্তি গুলো খুব যুক্তিযুক্ত লা্গছে না।
  • d | 144.159.168.72 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৯:৪২703694
  • কেন?
  • রৌহিন | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৩:২৮703695
  • মসলা সেটা না লাগতেই পারে - কিন্তু ঠিক কেন অযৌক্তিক যদি একটু বলেন তো আমিও একটু আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাই আর কি
  • sch | 132.160.114.140 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৩:৩৪703696
  • বুঝেছি রৌহিন - তার মানে ধনঞ্জয়ের ঘটনার মতো আমাদের যুক্তি পরম্পরা মেনে আফজল ভিক্টিম বলাটা একটু সমস্যা। অনেক ফাঁক রয়েছে - অনেক সন্দেহ করার মতো জায়গা আছে - কিন্তু সেভাবে প্রমাণ নেই ২+২ =৪ করার মতো।
    কিন্তু সত্যিটা কেউ না কেউ ঠিক জানে - সেটা একদিন বের হবেই - কাজেই আপাততঃ অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নেই
  • ranjan roy | 24.99.225.1 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:১২703698
  • আচ্ছা, সত্যসন্ধানী তো পেশাদার উকিল।
    আমি শুধু আইনের স্নাতক। তবে হাইকোর্টের কিছু কেসে ব্যাংকের পক্ষ থেকে অধিকৃত অফিসার যে উকিলের জন্যে সমস্ত পেপার ও পেপার বুক তৈরি করে দেয় এবং নিয়মিত হিয়ারিংয়ে গিয়ে ফলো আপ করে।
    উনি বললেন--দুটো ঘটনাকে তুলে ধরে দেখলাম যে পুলিশের সামনে দেয়া জবানবন্দী কোর্টের সামনে অস্বীকার করা যে কোনো অপরাধীর ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ব্যাপার ় চোর কখনো বলেনা যে সে চোর ় লেখক বোধহয় এই মনস্তত্বটা ভুলে গেছেন ়

    -- উনিই ভুলে গেছেন যে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড অনুযায়ী পুলিশের কাছে দেওয়া গোপন জবানবন্দী আদৌ আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে স্বীকৃত নয়; শুধু ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আন্ডারএফিডেভিট দেওয়া জবানবন্দীই আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রাহ্য। সেখানে অভিযুক্ত সত্যি কি মিথ্যে বলছে সেটা অবান্তর।
    আমরা যখন বলে আফজলের সাজা due process of Law পালন করেই হয়েছে, তখন ভুল বলি, যদি সেই পুলিশি জবানবন্দীই প্রধান সাক্ষ্য হিসেবে আদালত গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু যদি সে কোর্টের সামনে বলে যে তার পুলিশিয়া জবানবন্দী under duress দেওয়া হয়েছিল--তাহলে সেটাই গ্রাহ্য হবে যদিনা অন্য কোন বিপরীত স্বতন্র মেটেরিয়াল প্রুফ থাকে।
    যেমন শাইনি আহুজা বলে একজন সিনে অভিনেতা তাঁর নাবালিক কাজের মেয়েটিকে ধর্ষণের দায়ে জেলে গেলেন। কিন্তু ওই মেয়েটি যখন আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলল যে ওটা রেপ নয়, যৌনসম্পর্ক দুজনের সহমতিতেই হয়েছিল , তখন আদালত শাইনিকে মুক্তি দেয়।
    এগুলো ক্রিমিনাল সাক্ষ্যের এত প্রাথমিক কথা যে উনি মানে সত্যসন্ধানী কেমন প্র্যাকটিস করেন তা নিয়ে সন্দেহ জাগছে।
  • সত্য সন্ধানী | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:৪৭703699
  • রঞ্জন বাবু পুলিসের সামনে প্রেসারে দেয়া জবানবন্দী সুপ্রিম কোর্ট অব্দি গ্রহণ করেছেন তাহলে আপনি কোর্ট কেও চ্যালেঞ্জ করছেন | আপনি কি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির চেয়ে বেশি জানেন ? মনে হয় তাই |

    আর শাইনি আহুজার কেসটা ছিল অন্য | এখানে ভিকটিম নিজে এসে বলছে যে শাইনি রেপ করেনি | কিন্তু আফজল গুরুর ক্ষেত্রে দেশের গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ পার্লামেন্ট কিন্তু বলছে না যে গুরু নির্দোষ | সুতরাং এই যুক্তি এখানে চলে না |

    আর তই ডোবানোর কথা বলছেন ? ডোবান ভাসান সেটা আপনাদের বামুদের ব্যাপার | তবে আপনি তই ডোবান বা আমাকে চাড্ডি বলুন তাতে এটাই প্রমান হবে যে আপনারাও বিরুদ্ধমত সহ্য করতে পারেন না |
  • রৌহিন | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:৫১703700
  • এটা ভীষণ পুওর লজিক সন্ধানীবাবু - চাড্ডি বাম এসব প্রসঙ্গ এখানে আসেনি - আপনি আর আপনার অমিতবাবুই টেনে আনলেন। যাই হোক আইনী তর্ক যে আপনার উদ্দেশ্য নয় এবং আপনার ক্ষমতারও বাইরে সেটা বোঝা গেল।
    কোন আদালতে প্র্যাকতিস করেন সেটা জানালেন না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন