এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হিরোশিমা

    T
    অন্যান্য | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ | ৪৩৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • T | 24.139.128.15 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬648310
  • আমরা অনুসরণ করব একটা নীল সেডানকে। বার্চ ও পপলার জাতীয় বৃক্ষের অ্যারেঞ্জমেন্টের মধ্যে দিয়ে হাইওয়ে নাম্বার ফর্টি ওয়ান ধরে যেটি ক্রমশঃ তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলেছে। অনুসরণকালে আমরা অগ্রাহ্য করব উপর থেকে নেমে আসে বরফকুচি গুলোকে। আমরা অগ্রাহ্য করব শৈত্য বা তাপমাত্রা। আমরা লক্ষ্য করব নীল সেডানের নাম্বারপ্লেট। আমরা বুঝতে পারব যে গাড়ির চালক ও আরোহী একজনই। সে উত্তেজিত কিনা সেটা আমাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় বিষয়। যেমন আমাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় তার পোষা বেড়ালের নাম। গত বিষ্যুদবারের সন্ধ্যেয় সে কি করছিল, বা এইসব টুকিটাকি।

    নীল সেডান গন্তব্যে পৌঁছনোর অনেক আগেই আমরা পৌঁছে যেতে পারি সে জায়গায়। হাউস ইন দি উডস। সেখানে নীল সেডানের অতিথির জন্য অপেক্ষা করছেন প্রফেসর স্টিভেন ল্যাভাল এবং তার নিঃসঙ্গ ফায়ারপ্লেসের র‍্যাক। চুল্লীর মধ্যে কাঠ গুঁজে বৃদ্ধ প্রফেসর আপাততঃ শান্ত হয়ে বসে উল্টে পালটে দেখছেন পারিবারিক অ্যালবাম। নিশ্চিন্ত সময়। আমরা ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না। যেহেতু আমরা অনেকটা সময় আগেই পৌঁছে গেছি সুতরাং আমরা অপেক্ষা করতে পারি বাইরের ঢাউস এলম ট্রী এর নীচে। কিন্তু তার থেকে সেডানকে অনুসরণ করাই বোধহয় উচিত হবে।

    নীল সেডানের চালক, এইসময় প্রত্যাশিত ভাবেই একটি সিগারেট ধরিয়েছে। দুবার ম্যাপ থেকে নিজের গন্তব্য জেনে নিয়েছে নিখুঁত ভাবে। তার গায়ে রয়েছে পর্যাপ্ত গরম জামাকাপড়। গাড়ির ভেতর রয়েছে শুকনো খাবারদাবারের ক্রেট। ছোট ব্যাগ। কাগজপত্র, খাতা পেন, টেপরেকর্ডার। এই আরোহী আমাদের কাছে আকর্ষনীয় নয়। তার সংবাদপত্রের অফিসের চাকরীটুকুও নয়। আমরা শুধুমাত্র তার যাওয়াটুকু নিয়ে আগ্রহ দেখাতে পারি। তার বেশী কিছু না।

    বরং আমরা কানখাড়া করে থাকব যখন নীল সেডানের আরোহীর সাথে প্রফেসর ল্যাভালের প্রথম সাক্ষাৎ হবে। গাড়ির আওয়াজটুকু পেয়ে যখন বৃদ্ধ কিছুটা উতসাহিত হয়েই বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। যদিও করমর্দনের পর প্রথম উষ্ণ সম্ভাষণটুকু আমরা শুনতে পাবো না। এর জন্য আমরা দায়ী করতে পারি নীল সেডানের আরোহীর কান্ডজ্ঞানকে। আলাপচারিতার জন্য এমন একটি জঘন্য সময় বেছে নেওয়ার জন্য।

    ঘরের মধ্যে আসবাবপত্র বড় কম। এটাতে প্রথমে আমরা বিস্মিত হতে পারি। তারপরেই আমাদের মনে পড়বে যে প্রফেসর বিপত্নীক হয়েছেন বহুকাল। দেখাশোনার জন্য কোনো লোক রাখেননি। ভুলে যাওয়ার বাতিক আছে। যেমন এখন তিনি ভুলে গেছেন নীল সেডানের আরোহীকে বসতে বলার জন্য। সে অবশ্য তাতে কিছু মনে করে নি। এইটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে কারণ সে চেয়ারে বেশ আরাম করে গুছিয়ে বসেছে।

    এদের দুজনকে এখানে রেখে আমরা দ্রুত একবার উপরের চিলেকোঠার ঘরটা দেখে আসব। চিলেকোঠার ঘরটাই শুধুমাত্র। সিঁড়ির ক্যাঁচক্যোঁচ সামলে। এখানে আমরা রঙের গন্ধের মধ্যে থাকব। লক্ষ্য করব ধুলো ময়লা ও কাঠের দেরাজ ও নোংরা বিছানা। আমরা শীতার্ত বোধ করব কারণ নীচের উষ্ণতা এখানে পৌঁছয় না। স্কাই উইন্ডোর সামনে আমরা বিষণ্ণ নিঃশ্বাস ফেলতে পারি। লক্ষ্য করতে পারি বনের নির্জনতাকে। কিন্তু কাঠের দেরাজের কথা ভুললে চলবে না। অন্যান্য বিষয়ে একমত না হলেও এটি যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে একমত হওয়া যাক।

    এইখানে বোঝা যাচ্ছে যে নীল সেডানের আরোহীর একটা নাম থাকা দরকার। আমরা তাকে স্যামুয়েলসন বলে ডাকতে পারি। জোনাথন বলে ভাবতে পারি। অ্যানাবেল বলেও ভাবতে পারি। কিন্তু আমরা পছন্দ করছি নীল সেডান নামটা। কারণ এটা নিয়ে শুধুশুধু সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। এটা আরো গুরুতর কারণ নীচে ওরা ইতিমধ্যেই কথা বলতে শুরু করে দিয়েছে। ফলে আমরা এখনি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাব। ক্যাঁচক্যোঁচ শব্দ ছাড়াই।

    নীল সেডানঃ প্রফেসর ল্যাভাল, মাফ করবেন। কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না। এটা ধরতে পারেন যে যুদ্ধজয়ের তিরিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আপনার মতামত নিতে আসা। আসলে, এত হইহুল্লোড়ের মাঝে সজাগ থাকার ব্যাপারটা আমাদের ভাবায়। যদিও এই শীতের সন্ধ্যায় আমাদের অন্য কিছু নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল। এবং অবশ্যই আমার প্রশংসা করা উচিত এই পানীয়ের, বলতেই হচ্ছে—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ আসলে ঐ ঘটনা গুলো মনে পড়লেই আমি গর্ব অনুভব করতে থাকি। আমি নিশ্চিত যে, টোয়েন্টি ফোর শেকলটন স্ট্রীট এর অন্যান্যরাও একই ভাবে গর্ব অনুভব করে। ধরো যারা এখনো বেঁচে আছে। যেমন, আমি বলতে পারি সেই টাইপিস্ট মেয়েটির কথা যার কাজ ছিল কেব্ল গুলো টাইপ করা। কঠিন কাজ, নিঃসন্দেহে। আমার মনে পড়ছে যে, ও আমাকে জানিয়েছিল ওর অপরিসীম মনোসংযোগের কথা। স্ট্রাইক অর্ডারটা লেখার সময় ও সবসময় ওর স্পেনীয় প্রেমিকের কথা ভেবেছে। এরফলে আমাদের কাজটা করতে সুবিধে হয়েছিল এবং একই ভাবে অন্যান্যদের কথাও আমি জানি। আসলে অ্যাতদিন আগের ব্যাপার। আমি নিশ্চিত ওরা সযত্নে আর্কাইভ করে রাখছে এ সমস্ত কিছুই… হ্যাঁ, তুমি নিঃসন্দেহে চুল্লীর ধারে গিয়ে বসতে পারো—

    নীল সেডানঃ ধন্যবাদ। বহুলচর্চিত যদিও, তবু স্মৃতি থেকে যদি কিছু বলেন। আসলে এ সবই হলিডে এডিশনের জন্য। বুঝতেই পারছেন। আমি দেখতে চাইছি ঐ সময়গুলোকে ফ্রিজ করে। সিকোয়েন্স গুলো গুরুত্বপূর্ণ—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ অবশ্যই। ঐতিহাসিক গুরুত্ব দিয়ে ঐ সময়টাকে দেখা উচিত। আমাদের সীমার মধ্যে থেকেই অবশ্য। এবং আমরা সচেতন ভাবেই নানান কার্যকারণ সম্পর্কের খোঁজ করে এই সান্ধ্য সময়টুকু বরবাদ করব না। তার থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে যা আমরা করতে পারি। যেমন ধরো, বরফ পরিষ্কার করা বা স্ত্রীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথাও আমরা ভাবতে পারি। কোনো পাবেও আমরা যেতে পারি। মাফ করো, আসলে আমি রূঢ় হতে চাইছি না। আশা করি বুঝতে পারবে—

    নীল সেডানঃ না না, নিশ্চয়ই। আমি এটা একটু অন্য ভাবে জানতে চাইছি। যেমন ধরা যাক ঐ মুহূর্তগুলো। অ্যাতদিন পর ঐ ঐ সময়গুলোর প্রতি আপনার বিশ্লেষণ। নির্লিপ্ততার সাথে অবশ্যই নয়—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ দ্যাখো, সময়টা বিকেল নাগাদ ছিল। যদিও আর্কাইভ চেক করলেই তুমি ইনকামিং মেসেজটার সময় জানতে পারবে। তাছাড়া আমার মনে হয়, আমরা এইসব নানান খুঁটিনাটি এড়িয়ে কথাগুলো বলতেই পারি, যেমন ঐ পপলার গাছ টা ধীরে ধীরে বরফে ঢেকে যাচ্ছে, সেরকম ভাবেই । এটা আমাদের দর্শনের সাথে মিলছেও।

    যাই হোক, আমার মনে আছে যে আমি তখন একজন সিনিয়র অ্যানালিস্ট ছিলাম। হ্যাঁ, আমি ভাবতে পারছি। টোয়েন্টি ফোর শেকল্টন স্ট্রীটের ওই সাদা বাড়িটার কথাও আমি ভাবতে পারছি। উত্তরের কোণের দিকের ঐ ঘরটা। পাশেরটায় মিসেসে অ্যান্ড্রুজ। ওঁর স্বামী মারা যান কোনো এক অক্টোবরের বিকেলে। ওঁর সাথে আমার দেখা হয়েছিল একবারই। রীতিমতন স্বাস্থ্যবান মানুষ—

    নীল সেডানঃ প্রফেসর—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ ও আচ্ছা আচ্ছা দুঃখিত। আমি চেষ্টা করছি গুছিয়ে বলার। যদ্দুর মনে পড়ছে, আমার সেই সময় কোনো কাজ ছিল না। এমনিতেও নীচের তলার ঐ ছটফটে ছোকরারা প্রায় পুরোটাই ম্যানেজ করতে পারত। শুধুমাত্র ব্রিফিং এর সময় আমার ডাক পড়ত। কিংবা বড়কর্তারা এলে। বরং আমি বেশী ইন্টারেস্টেড ছিলাম সেইসময় মস্কো ইন্সটিট্যুটে হেনরির সাথে—, কোন হেনরি বুঝতে পারছ তো?

    নীল সেডানঃ অবশ্যই।

    প্রফেসর ল্যাভালঃ হেনরিকে আমি চিনতাম আত্মীয়তার সূত্রে। তাছাড়া আমরা প্রাইম নাম্বার নিয়ে যৌথভাবে কাজও করেছি কিছুকাল। ওটা ছিল ফল সেমেস্টার। হেনরি তখন জর্জটাউনে। ওর নেভিয়ার স্টোকস সংক্রান্ত গোড়ার দিকের কাজগুলোও ঐ সময়েই। তারপর ও এক রাশিয়ানকে বিয়ে করে মস্কো চলে যায়…ঐ চেয়ারে তুমি কম্ফোর্টেবল ফিল করছ তো। আশা করি তুমি সিগারে আপত্তি করবে না।

    নীল সেডানঃ নিশ্চয়ই। আপনার মর্জিমাফিক। আমি শুধু এই রেকর্ডারটা অন করে দেবো।

    প্রফেসর ল্যাভালঃ হ্যাঁ, আমার মনে পড়ছে যে আমার একটা বড় ডেস্ক ছিল। একটা প্রিন্টার। সেসময় অনেকে ছুটিতে ছিল বোধহয়, কারণ মেসেজটা যখন এসেছিল তখন নীচের তলার এক ছোকরা আর ঐ টাইপিস্ট, যার কথা তোমায় এক্ষুণি বললাম, সে ছাড়া আর কেউ ছিল না। ও হ্যাঁ, আমাদের জোনাথন ছিল। তা সেটাকে তুমি ধর্তব্যের মধ্যে নাও ধরতে পারো—

    নীল সেডানঃ এইখানে একটু থামাবো আপনাকে। আপনি কখনো মেমোয়ারের কথা ভাবলেন না ক্যানো—

    প্রফেসরঃ আমার স্ত্রী চাননি। ব্যাক্তিগত কথা। তাছাড়া ঐ সময়ে আরো অনেককে নিয়েই পরে খুব হুল্লোড় হয়েছে। আমি, খোলাখুলি ভাবে বলতে পারি, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে বার বার নিজেকে দেখতে চাইনি। তোমাদের আপিসের এক ছোকরাকেও চিনতাম। সেও আমাকে এই কথাই বলেছিল। যদ্দুর জানি যুদ্ধের সময় সে প্রাচ্য দেশে চলে যায়। তারপর আর খবর জানি না।

    নীল সেডানঃ আপনি কি বেঞ্জামিনের কথা বলছেন? একটু রোগাটে মতন, গালে আঁচিল রয়েছে? যদি সে হয়, তাহলে আপনাকে বলতেই পারি যে তাকে পাওয়া গেছিল ইওরোপ থেকে। অ্যান্দালুসিয়ান ফরেস্টের কোনো এক মিলিটারী বেস ক্যাম্প থেকে। উদ্ধার করার সময় তার শরীর ছিল দূর্বল, কেবল সে নামটুকু বলতে পেরেছিল।

    প্রফেসরঃ হ্যাঁ, এইসব অনেকদিনের কথা। যাই হোক, আমার মনে পড়ছে যে আমি সেসময় অন্য কিছু ভাবছিলাম। সেটা আমার স্ত্রীর কথাও হতে পারে। হতে পারে হেনরির কথা। আমার ঘরের নতুন ফুলদানী কিংবা আমার চাকরীর গোড়ার দিকের কথা। আমার বাবা ছিলেন নামকরা কাঠমিস্ত্রী, এটা আমি তোমাকে বলতে পারি। হতে পারে আমি সেসময় আমাদের বাড়ির ব্যাকইয়ার্ডের ওয়ার্কশপটার কথা ভাবছিলাম। খুব ছোটো বয়সেই ওখানে আমি চেয়ার তৈরী করতে শিখি। এসবই আমার ঠিক মনে পড়ে না। হতে পারে আমি ডেস্কের সাদা পাতাটার দিকে চেয়ে বসেছিলাম।

    নীল সেডানঃ আপনাকে মেসেজটা দেখিয়েছিল কে?

    প্রফেসর ল্যাভালঃ শব্দ। খুবই সম্ভব যে সেসময় কেউ আপিসে ছিল না। মেসেজটা সোজা আমার ঘরেই এসেছিল। আমার মনে আছে যে আচমকা আমি লাফিয়ে উঠেছিলাম কারণ বহুদিন প্রিন্টারের খটরমটর শুনতে অভ্যস্ত ছিলাম না আমি। ঘরে মৃদু আলো ছিল। আর তোমাকে বলেছি বোধহয় যে আমি চোখে একটু কম দেখি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার চিনতে কোনো অসুবিধে হয়নি। কলেজে পড়ার সময় থেকেই হাজার বছর আগেকার পেইন্টিং নিয়ে আমার ইন্টারেস্ট ছিল। তুমি আমার মেজর সাবজেক্ট গুলো জানলে অবাক হবে। আর আমি শুনেছি যে আমার দাদু ভালো পেইন্টার ছিলেন। উপরে চিলেকোঠার ঘরে তুমি যদি যাও…তাঁর স্টুডিও রয়েছে এখনো। এমনকি প্রথম যখন তুমি আমাকে এই ইন্টারভিউয়ের কথা বললে, আমি ভেবেছিলাম ওখানে বসেই কথা বলবো। উনি ছিলেন খুব ক্লাসিক্যাল। আমি পরে ওঁর কাজ স্টাডি করেছি। ইন ফ্যাক্ট ইয়োরোপিয়ানদের তুলনায় আমরা সেরকম কিছুই আঁকিনি,…কিন্তু আশ্চর্য হবে যে ওঁর কাজ গুলো সেই সমতুল্যই ছিল। আমি পরে এসব নিলাম করেছি।

    নীল সেডানঃ হ্যাঁ, আপনি জাদুঘরেও কিছু দিয়েছেন।

    প্রফেসর ল্যাভালঃ ওটা আমার স্ত্রীর ইচ্ছা ছিল। তারপর শোনো, তোমাকে বলেছি কি যে আমার ঘরে একটা হট লাইন কানেকশন ছিল! প্রিন্টার থেকে বেরিয়ে আসা ছবিটা …এখন আর অবশ্য খুব চেষ্টা করলেও অনুভূতি গুলো মনে করতে পারিনা। এটা স্রেফ বয়সের জন্যই হচ্ছে। কিন্তু আমি যখন ছবিটা, বা মেসেজটা বলতে পারো, যখন সেই উজ্জ্বল কর্মঠ ছেলেটিকে দেখালাম, সে চুপ করে দাঁড়িয়েছিল। এটা আমার স্পষ্ট মনে আছে কারণ আমি অন্যদিকে ভীষণ চীৎকার করছিলাম।

    নীল সেডানঃ এইখানে আমি একটু অন্য প্রসঙ্গে যাব। অ্যানালিস্টের চাকরীতে আপনি কেন এলেন?

    প্রফেসর ল্যাভালঃ ক্যারলিনের জন্য। আমার স্ত্রী। ও তখন শেকলটন স্ট্রীটের ওই আপিসেই কাজ করত। পরে ছেড়ে দেয়। আমি কিন্তু আগ্রহী ছিলাম বহু আগে থেকেই। নাম্বার থিয়োরী নিয়ে আমার কাজ ইন্সটিট্যুটে খুব প্রশংসিত হয়। প্রফেসর গডউইন, তোমরা চিনবে না হয়তো, ভদ্রলোক প্রতিদিন ছ মাইল সাইকল চালিয়ে চেস্টারের বিয়ার পাবে যেতেন। কোনোদিন সোজা রাস্তায় যেতেন না, এঁকে বেঁকে ঘুরে ঘুরে। সব ছাত্রছাত্রীরা চিনত। পুরোনো ঘরানার লোক। আমাকে পছন্দ করতেন খুব। রোজই লাঞ্চে ডাকতেন।

    নীল সেডানঃ ওঁর কথাতেই তাহলে—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ হ্যাঁ, তা একপ্রকার বলতে পারো। ওঁর চেনাজানা ছিল। তাছাড়া আমি কিছুটা ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। ডর্মের ঐ রুম আমার কাছে অসহ্য লাগত। আমি সাধারণতঃ বেশিরভাগ সময় কাটাতাম ক্যারলিনের কাছে। কিন্তু ওতে আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছিলাম। ফলে নতুন কিছুর দরকার ছিল।

    নীল সেডানঃ সেটাতো পঁয়তাল্লিশের গোড়ার দিকের কথা। তাই না—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ হ্যাঁ পঁয়তাল্লিশ। সহাবস্থান চুক্তির পর পরই তো। আমার দক্ষতা দেখে উঁচু তলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরফলে আমি অনেকটা সময় পাই। প্রতিদিন সকাল থেকে আমার রুটিন ছিল লাইব্রেরীতে গিয়ে আর্কাইভে রাখা মেসেজ গুলো খুঁটিয়ে স্টাডী করা। তা একপ্রকার বলতে পারো, আমার ষষ্ঠেন্দ্রিয় বুঝতে পারছিল যে, মেশিনরা ক্রমশঃ ইনেভিটেবিলিটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

    নীল সেডানঃ এটি প্রশ্নযোগ্য। নয় কি? সহাবস্থান চুক্তির মূল্যায়ণ নতুন করে শুরু হয়েছে। এতসব সেলিব্রেশনের মাঝেও শোনা যাচ্ছে বিরুদ্ধ মত। এ প্রসঙ্গে আপনার মতামত জানতে আমি খুবই উৎসুক।

    প্রফেসর ল্যাভালঃ খোলাখুলি বলতে পারি, এ বিষয়ে প্রাচ্য দেশগুলোকে আমি কখনো বিশ্বাস করতে পারি নি। আমার মনে হয়েছিল ওরাই আত্মসমর্পন করবে সবার আগে। ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়ার পর…এটা তুমি একপ্রকার বলতে পারো…আমার কাছে বিপজ্জনক লেগেছিল। শুধু আমার কাছেই নয়, প্রায় সবাই আমরা একমত ছিলাম যে মেশিনরা আমাদের এরপর মুছে দেবে। টাইপিস্ট মেয়েটিও একমত ছিল। তার স্প্যানিশ প্রেমিকও। নিউক্লীয়ার স্ট্রাইক ছিল এক এবং একমাত্র অপশন। তুমি ভেবে দেখতে পারো।

    নীল সেডানঃ আমি এ বিষয়ে আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করতে চাইছি। ব্যাঙ্কস থিয়োরী বলছে যে—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ ব্যাঙ্কস থিয়োরী আমি মানি না। এটা নেগোশিয়েশন পন্থীদের তৈরী করা মিথ। সহাবস্থান চুক্তির নিও জাস্টিফিকেশন। কিন্তু মূল কথা যেটা সেটা হলো ডিপেন্ডেন্সি কোথা থেকে আসছে? তুমি পি ইকোয়াল টু এন পি আবিষ্কার করেছ। অ্যামবিগুইটিও তখন অ্যালগোরিদমিক। প্রতি মুহূর্তে মেশিনরা তৈরী করতে পারবে আরেকটা ল্যুসিয়াস চ্যাপমান, আরেকটা রমোনভ আরেকটা বার্তিস আরেকটা ভিনসেন্ট দ্যে ভিয়েরা। যা কিছু আমরা আগে করেছি, আমরা ভবিষ্যতে তৈরী করতে পারব, এমনকি ভবিষ্যতে যেটা অন্ততঃ ভেবে উঠতে পারব সেসবই যদি মেশিনরা পলিনোমিয়াল সময়ে বানিয়ে ফেলে…এটা দুটো সভ্যতার যুদ্ধ…আমি ভাবতে চাই না…আজ থেকে তিরিশ বছর আগেও ভাবতে চাইনি…আমি চীৎকার করে যাচ্ছিলাম ক্রমাগত। সেই উজ্জ্বল যুবকটি হাতের ছবিটি নিয়ে বিড়বিড় করছিল…এ তো বার্তিস…এ তো বার্তিস। টাইপিস্ট মেয়েটিই চীতকার শুনে দৌড়ে আসে।

    নীল সেডানঃ আমি অবশ্যই মেনে নিচ্ছি যে এক্ষেত্রে এগসিস্টেনশিয়ালিটির প্রশ্নটি আসে। আসছেই, এ অতি সত্য কথা। কিন্তু সহাবস্থানপন্থীরা বলছেন যে, অবশ্যই সময় নিয়ে দেখা উচিত ছিল। ওঁরা বলছেন স্ট্রাইক হয়েছে খুব আর্লি। সমস্ত সম্ভাবনাই আমরা শেষ করে দিয়েছি। কেউ কেউ আরো এগিয়ে বলছেন, যেমন আমি বলতে পারি শিকাগো ইউনিভার্সিটির প্রফেসর বোর্নের কথা। উনি বলছেন যে, ঈশ্বরের আবিষ্কার তত্ত্ব ছিল একটা হোক্স থিয়োরী। না হলে মেশিনদের পক্ষে আমাদের সমস্ত মিসাইলই ইন্টারসেপ্ট করার কথা। একশ সাতষট্টিটি মিসাইলের প্রতিটিই হিট করেছে নিখুঁত নিশানায়। প্রথম হিরোশিমা থেকে তেহেরান কায়রো। দুঘন্টার মধ্যে এশিয়া ও আফ্রিকার সমস্ত মেশিন উপনিবেশ মুছে যায়। অর্ধেক পৃথিবীই মুছে দেওয়া হলো যেন। এই রকম একপ্রকার অসম যুদ্ধ কিভাবে সম্ভব? ঈশ্বরের আবিষ্কারের পর ওদের অমরত্ব তো নিশ্চিত ছিল—

    প্রফেসর ল্যাভালঃ আমি এখনকার কাগজপত্র পড়ি না। আমি শান্ত থাকা পছন্দ করি। বার্তিসের ছবির মতন। নির্জন জনপদ। নির্জন ব্রাশ স্ট্রোক। খুব নিশ্চিন্ত ভাবে। লক্ষ্য করবে বেশিরভাগই শান্ত সমুদ্রের ছবি। মেসেজে আসা ছবিটা আমাকে নাড়া দিয়েছিল। মেশিনরা বার্তিসকে জেনে ফেলেছে। জেনে ফেলবে আরো সমস্ত কিছুই যা মানুষ কখনো জানতে পারবে না, বা জানতে পারবে বলে কল্পনাই করতে পারে না। এটা ভীতিপ্রদ ছিল। এগসিস্টেনশিয়ালিটির ক্রাইসিস। তোমরা ভাবতে পারছ না কেন? টাইপিস্ট মেয়েটি কিন্তু ভাবতে পেরেছিল।

    নীল সেডানঃ কিন্তু ডিফেন্স এবং রিট্যালিয়েশনের প্রশ্নটা আপনার কি মনে হয় না ভেবে দেখা দরকার? এটা কেন হ’ল না তার কোনো ব্যাখ্যা আপনি কি দিতে পারেন? বোর্ন বলছেন, এ যেন ফ্রিডম ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বেছে নেওয়া হলো দাসত্ব। সম্ভাবনার পরিসর ছেড়ে নিজেদের বেঁধে ফেলা। ঠিক যে ভয় থেকে উলটো কাজটা করা হয়েছে।

    প্রফেসর ল্যাভালঃ দ্যাখো, আমি সোয়ার্জ প্রবলেম অস্বীকার করি। কিন্তু আমি এব্যাপারে কথা বলতে চাই না। এটুকু বলতে পারি যে, হয়তো আনপ্রেডিক্টেবিলিটির ঈশ্বর আরো মহার্ঘ্য। কিন্তু আমি এটা এসময় সরিয়ে রাখতে চাই, বরং তুমি আমায় প্রশ্ন করো সেই সব মুহূর্তগুলোর কথা যখন স্ট্রাইক অর্ডারটা লেখার সময় আমরা রসিকতা করছিলাম। সেই সমস্ত উদ্বেগের রাত্রিগুলোর কথা যখন আমি ও ক্যারলিন প্রতিদিন মাটিতে গভীর গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা করতাম, নিউক্লীয়ার ফল আউট থেকে বাঁচবার জন্য। তখনই কোনো একসময় হেনরির চিঠি আমি পাই যে সে নাগরিকত্ব ত্যাগ করছে…আমার মনে আছে যে আমরা মাঝে মাঝে সারা রাত আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতাম…উজ্জ্বল আলোক বিন্দুগুলোকে দেখার জন্য যা আমাদেরকে খানিক পরেই মুছে দেবে…তুমি আমাকে স্বচ্ছন্দে সেসবের কথা জিজ্ঞাসা করতে পারো।

    নীল সেডানঃ অবশ্যই। আপনার মর্জিমাফিক। তবে এইবার আমি একটু ব্যক্তিগত স্তরে যেতে চাইছি…আপনার ইউনিভার্সিটির সময়কার দিনসমূহের কথা…খুব ভালো হয় যদি সেই সময়কার ছবি কিছু পাওয়া যায়, যেমন ক্যারলিন ও আপনি…বুঝতেই পারছেন যে এটা আরো আগ্রহজনক হবে…

    এইভাবে ক্রমশঃ কথাবার্তা স্তিমিত হয়ে আসে। আমরা এইখান থেকে এইবার সরে আসতে পারি। এইসমস্ত কথাবার্তায় আমরা আগ্রহ প্রকাশ করব না। আমরা শুধুমাত্র লক্ষ্য করব পরের ঘটনাক্রম । যেমন রেকর্ডার একসময় বন্ধ হচ্ছে। ঠিক যেমন বন্ধ হচ্ছে নীল সেডানের দরজা। প্রফেসর ল্যাভাল নীল সেডানকে বিদায় জানাচ্ছেন। বিদায়কালীন সম্ভাষণ সংক্রান্ত কথাবার্তা খুব স্বাভাবিক ভাবেই জর্জটাউনের প্রবল শৈত্যের মধ্যে মিশে যাচ্ছিল। খুব কিছু উষ্ণতা ওতে ছিল না। ফলে এসবও আমাদের কোনো আগ্রহ জাগাবে না। আমরা শুধুমাত্র অপেক্ষা করব চিলেকোঠার ঘরখানিতে, নীল সেডান মিলিয়ে যাওয়ার পর। বৃদ্ধ প্রফেসর যখন ঝুঁকে ঝুঁকে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসবেন। এগিয়ে যাবেন কাঠের দেরাজের দিকে। সেই কাঠের দেরাজ যার গুরুত্ব আগেই অনুধাবন করে আমরা সতর্ক হয়েছি। আমরা অনুসরণ করব প্রফেসর ল্যাভালকে, ঠিক যেমনভাবে আমরা একটু আগে অনুসরণ করছিলাম নীল সেডানকে। আমরা দেখব যে উনি দেরাজ খুলে বার করবেন একটি কাঠের বাক্স। বিস্ময়ের সাথে দেখব তাতে রাখা আছে একটি কাগজ। একটি গোটানো কাগজ। এসময় আমরা দাঁড়িয়ে থাকব স্কাইলাইটের দিকে পিছন করে।

    সম্ভাব্যতা ছেড়ে বর্তমানে ফিরে আসা যাক। অবশ্যই চিলেকোঠার নোংরা বিছানাটায় বসে উনি মাথা নীচু করে দেখছেন কাগজটা। আমরাও উঁকি মেরে দেখে নিতে পারি। আন্দাজ করতে পারি যে এই হয়তো সেই মেসেজ যা তিরিশ বছর আগে তিনি রিসিভ করেছিলেন মেশিন ওয়ার্ল্ড থেকে। শান্ত সমুদ্রের ছবি। সমুদ্রের ধারের বাতিঘরের ছবি। বার্তিসের ব্রাশ স্ট্রোকের পুনর্জন্মের ছবি। আমরাও হয়তো এবার শান্ত হতে পারি, ঠিক যেমনটি প্রফেসর ল্যাভাল খানিক আগেই আমাদের জানিয়েছিলেন। অথবা আমরা নজর রাখতে পারি বৃদ্ধের দিকে। ঘোলাটে চোখে যিনি নিঃশব্দে পপলার গাছটিকে দেখে চলেছেন। সৌজন্যতার খাতিরে আমরা জানালা থেকে সরে আসব।

    আমরা নেমে আসব সিঁড়ি দিয়ে। ক্যাঁচক্যোঁচ শব্দ না করেই। আমরা প্রফেসর ল্যাভাল কে বিরক্ত করতে চাই না। আমরা ওঁকে দেব অনন্ত সময়। ঠিক যে সময়টুকু ধরে উনি খুঁজবেন অজুহাত কিংবা তিরিশ বছর আগেকার সেই অনুভূতি সিকোয়েন্স। ঠিক কোন কারণবশতঃ উনি সাইন করেছিলেন একের পর এক নিউক্লীয়ার স্ট্রাইকের সাজেশনে। উনি কিছুতেই মনে করতে পারবেন না। উনি কিছুতেই মনে করতে পারবেন না, সেই উজ্জ্বল কর্মঠ ছেলেটি তাঁকে কি কি বলছিল। উনি কিছুতেই মনে করতে পারবেন না প্রথম মেসেজের রাতে উনি ঠিক কি কি করেছিলেন।

    আমরা ক্লান্ত প্রফেসর ল্যাভালকে রেখে এল্ম গাছের তলায় ফিরে আসব। তারপর হাঁটতে থাকব নীল সেডানের পথ ধরে। নিরাপদ বিশ্ব জুড়ে। আমাদের হাতে ধরা থাকবে একটি অন্য এলিমেন্ট। কাঠের দেরাজের ভেতরে রাখা অন্য ছবিখানি। এক বিরাট বিস্ফোরণের ছবি। বার্তিসের নিস্তব্ধতার বদলে এক প্রকান্ড প্রলয়ের ছবি। এই সেই ছবি যা প্রফেসর ল্যাভালের ইন্টারসেপটরে সেকেন্ড মেসেজ হিসেবে ধরা দিয়েছিল। প্রথমটির অব্যবহিত পরেই। যার অস্তিত্ব প্রফেসর ল্যাভাল মুছে দিয়েছিলেন সমস্ত রেকর্ড থেকে। যার কথা পৃথিবীতে আর কেউ জানে না। ক্যারলিনও কোনোদিন জানেন নি।

    আমরা সেই উত্তপ্ত প্রথম হিরোশিমার ছবিটি নিয়ে প্রচন্ড শৈত্যের মধ্যে হাঁটতে থাকবে। সবার নজর থেকে আড়াল করে। কেননা আমরাও কখনো কাউকে এই ছবিটির কথা বলতে যাব না।
  • Atoz | 161.141.84.164 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৪648316
  • ভালো লাগলো T।
    আরো বাকী আছে কি কাহিনির নাকি এখানেই সমাপ্ত?
  • T | 24.139.128.15 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৪:৪৪648317
  • না তো, আর নেই। সমাপ্ত। কিন্তু এমন বারবার হচ্ছে কেন...ঃ(
  • rivu | 138.118.51.147 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৫:০০648318
  • টি বড়ই সার্থক ছোটগল্প লিখছেন মনে হয়, "শেষ হয়ে হইলো না শেষ"
  • Atoz | 161.141.84.164 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৫:১৬648319
  • T,
    প্রথমে মনে হচ্ছিল অনুবাদ বুঝি, বিশেষ করে ডায়ালগের জায়গাগুলো।
    ঃ-)
  • | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:২১648320
  • এটা সাংঘাতিক ভাল্লাগলো।

    এত ভাল লাগল বলেই দুটো ছোট্ট কথা।
    এক প্রথমদিকে একটু আড়ষ্টগোছের যেন অনুবাদ হচ্ছে। আর দুই 'সৌজন্যতা' ভুল, ওটা সৌজন্যের খাতিরে হবে। তবে এগুলো খুব ইম্পর্ট্যান্ট কিছু নহ্য। পড়তে গিয়ে তাৎক্ষণিক মনে হল। বললাম
  • শ্রী সদা | 212.142.100.121 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:৪৮648321
  • গোলা হয়েছে।
  • T | 24.139.128.15 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:৫৬648322
  • দ দি ঠিক বলেছ। হ্যাঁ সৌজন্যের খাতিরে হবে। ভুল লিখেছি। কিন্তু আমি ঐ আড়ষ্ট অনুবাদ জাতীয়ই রাখতে চাইছিলাম। যেমন আতোজ বলছিল। :)
    ভালো লেগেছে বলে ধন্যবাদ। সদাকেও।
  • robu | 122.79.39.166 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৯:৩৩648323
  • আড়ষ্ট অনুবাদটা আমার এ গল্পের সার্থক স্টাইল বলেই মনে হয়েছে।
  • kc | 198.70.26.113 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:০১648311
  • আমার তো খুবই ভালো লাগল। টি, আরও লেখো।
  • i | 147.157.8.253 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪648312
  • পাঠক কে তুষ্ট করার প্রয়াস টি র একটা গল্পেও পাই নি-অথচ সে সব পথে হাঁটা সহজ।তিনটি গল্পেই সে সুযোগ ছিল।
    টি তোয়াক্কাই করেন নি। এই ব্যাপারটাই সব থেকে টানল।
  • T | 24.139.128.15 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৬:০২648313
  • ছোটাই দি, আমি চাইলেও পাঠককে তুষ্ট করতে পারব না বোধহয়, আমার সে ক্ষমতা নেই। এই যা পাচ্চি লিখছি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, কেশিদা ও রোবুকেও।
  • + | 213.110.246.25 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৬:৩৩648314
  • লেখার স্টাইলটা খুব ভালো লাগলো টি'দার
  • b | 24.139.196.6 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৯:৪৫648315
  • আরে দ্রাউন তো!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন