এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • অকস্মাৎ সমাপ্তি (ছোট গল্প/কাঁচা হাতের)

    ওপু
    অন্যান্য | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ | ৫৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ওপু | 24.99.77.199 | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:১৮600970
  • ঝন ঝন ঝনাৎ- ধড়মড়িয়ে উঠে বসলো অরু।
    ‘তোর এতো বড় স্পর্ধা, চলে যা আমার বাড়ি থেকে, বেরিয়ে যাআআআ...’।
    উফ! মিত্রদের বাড়িতে আবার অশান্তি। মাঝ রাত্রিরে আবার বাসনপত্র ভাঙ্গাভাঙ্গি শুরু হয়েছে।
    ‘তোর বাপ একটা... তোর মতন একটা... মেয়েকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে... বেরিয়ে যা’।
    খাটের পাশে জানলাটা বন্ধ করে আলো জ্বালাল অরু। ঘড়িতে বাজে পণে চারটে।
    ঘুমনোর চেষ্টা করা বৃথা। ফ্রেশ হয়ে, বসবার ঘরে এসে দেখতে পেলো, বাবা মার ঘরে আলো জ্বলছে। অবাক হবার কারণ নেই, মিত্রদের বাড়িতে যেভাবে কুরুক্ষেত্র লেগেছে, বাবা মা’র ঘুম না ভাঙলেই বরং অবাক হওয়ার কারণ ছিল। বসবার ঘরের ভিতরেই ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি। ঘরের জানলা খুলে বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়া ভিতর আনবে, তার উপায়ে নেই।

    অন্ধকার আকাশ, ছোট্ট ছাদ, অরুর মা ফুলের টব দিয়ে বেশ সাজিয়েছেন। অল্প কিছু টব, পরিষ্কার পরিচ্ছন্য। কিছুটা এগিয়ে ধারে এসে অরু দেখতে পেলো আরও কিছু বাড়িতে আলো জ্বলছে। মিত্ররা আজ আবার অসময় অ্যালার্ম ক্লকের কাজ করেছে।
    প্রতিবেশী মিত্রদের বাড়ির এই রোজনামচা অরুকে ভাবিয়ে তোলে মাঝে মধ্যে, -‘অদ্ভুত মধ্যবিত্ত দাম্পত্য সমাজ। স্বামী স্ত্রী যখন প্রেম করেন, ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে আলো নিভিয়ে। কিন্তু যখন ঝগড়া করেন, প্রতিবেশীদের দরজা জানলা খুলে যায়ে, আলো জ্বলে যায়’। ছাদের উপরে মিত্রদের ঝগড়া কানে আসলেও বেশ ফুরফুরে হাওয়া। দরজার কাছে রাখা চেয়ারের উপর বসে সঙ্গে আনা মোবাইলে হেডফোন লাগিয়ে হালকা করে একটা গান চালিয়ে দিল অরু।

    অরু, অরুন্ধুতি বোস। বাঙ্গালরে বিবিএ পড়ছে। ছুটিতে কলকাতায়ে এসেছে বাবা মা’র কাছে। একটা ভাই আছে অরুর, শিলিগুড়িতে বোর্ডিংয়ে থাকে। কতক্ষণ ধরে একমনে গান শুনছিল, অরুর খেয়াল নেই। হঠাৎ কাঁধের উপর কে যেন হাত রাখল। চমকে উঠল অরু।
    ‘কি রে! কতক্ষণ উপরে বসে আছিস?’
    -‘বাবা তুমি’! নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল অরু।
    কতক্ষণ ধরে ডেকে যাচ্ছি জানিস’! পিছন থেকে অরুর মা বলে উঠলেন।
    আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে। ছাদের কোনায়ে লাগানো কলের সাথে একটা পাইপ লাগিয়ে গাছ গুলোতে জল দিতে দিতে অরুর মা বললেন, ‘কানের মধ্যে হেডফোন লাগিয়ে ঘুমচ্ছিস, ডেকে ডেকে গলা ধরে গেল’।
    অরু মটেও ঘুমচ্ছিল না, কিন্তু এবিষয় মা’র সাথে তর্ক করা বৃথা।
    ‘ওর’ই বা কি দোষ’, অরুর বাবা অরুর পক্ষ নিয়ে বললেন, ‘মাঝরাত্রি থেকে যা শুরু হয়েছে, আমারও তো কানে ঝালাপালা হয়ে গেল’।
    এখন মিত্রদের বাড়ি কিছুটা স্বাভাবিক, ভোরের পাখীরা গলা ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে।
    -‘আচ্ছা বাবা, রোজ একই ঘটনা বার বার ঘটছে। গত দু’বছরে তো আরও বেড়েছে। পাড়ার বড়রা যদি এক বার গিয়ে মিত্রদের সাথে কথা বলে...’।
    ‘অন্যদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানো কোন ভদ্রতা নয়’, গম্ভীর কণ্ঠে অরুর মা অঞ্জনা জানালেন, ‘তাছাড়া অরু, তুমি ছোট। এই সব চিন্তা করবার প্রয়োজন নেই’।
    -‘আরে, অভদ্রতা কিসের! টিভিতে তো দেখায়ে, ঘেরেলু হিংসা রোকিয়ে, বেল বা...’ পুরোটা বলতে পারল না। অরুদের বাড়িতেই বেল বেজে উঠেছে।
    অরুর বাবা নিচে নিমে গেলেন দরজা খুলতে।
    ‘গুড মর্নিং সুকুমার দা। চা খওয়া হয়ে গেছে’?
    ‘ভিতরে আয়ে। না, হয়নি এখনো’।
    অরু আর অঞ্জনা দু’জনেই নীচে নেমে এসেছে ততক্ষণে।
    ‘প্রদীপ, বোসো, এখুনি চা আনছি’, অঞ্জনা রান্না ঘরে দিকে চলে গেলেন।
    প্রদীপ, সুকুমারের পাড়াতোত ভাই। সুকুমারের চাইতে বছর চারেকের ছোট। খুব প্রয়োজন না হলে প্রদীপ বাবু এত সকালে অরুদের বাড়ি আসবেন না। অরু সেটা বুঝল, ‘চলে যাবে কি! কোন কথা না বলে দুম করে চলে গেলে আবার ভাল দেখাবে না’।
    ‘হ্যালো ম্যাডাম, শুনুন’, প্রদীপ বাবুই অরুর দ্বিধা কাটিয়ে দিলেন।
    -‘দুদিন হয়ে গেলো আমি এসেছি আর তুমি আজ আসলে! ম্যাডাম বললে রাগ যাবে না’। প্রদীপের পাশে বসে কিছুটা মেকি অভিমানের শুরে বলল অরু।
    ‘ওহো, দুটো বাড়ির পর আমার বাড়ি আর আপনি আসতে পারলেন না? খুব ব্যস্ত?’
    ‘কিন্তু আমি...’
    ‘থাক, বুঝে গেছি আমি’। অরুকে থামিয়ে দিলেন প্রদীপ, ‘আপনি এখন ম্যাডাম হয়ে গেছেন। এখন আপনার কুচো চিংড়ি না, গলদার প্রয়োজন’।
    হো হো করে হেসে উঠলেন সুকুমার।
    ছোটবেলা থেকে অরুর কুচো চিংড়ি ভাজার উপর দারুন লোভ। বিড়ালের কাছ থেকে যেমন মাছের গন্ধ লুকানো যায় না, তেমনি অরুর কাছে কুচো চিংড়ি ভাজার গন্ধ লুকানো মুশকিল। প্রদীপদের বাড়ি যখনই চিংড়ি হত, অরু কিছু একটা বাহানা নিয়ে গুটি গুটি চলে যেত।
    চা আর পাঁপড় নিয়ে অরুর মা চলে এসেছেন।
    ‘বউদি, আজ রাত্রিরে আমাদের বাড়িতে অরুর নেমন্তন্ন। গলদা, কুচো দুটোই হবে’। এবারের হাসিতে অরুর মা’ও যোগ দিলেন।
    সবার হাতে কাপ তুলে সুকুমারের পাশে বসে অঞ্জনা বললেন, ‘হ্যাঁ প্রদীপ, এতো সকালে, সব ঠিক আছে তো?’
    চায়ে একটা ছোট্ট চুমুক দিয়ে প্রদীপ বললেন, ‘আমার তো সব ঠিক। কিন্তু পাড়ার যা...’
    ‘তুই কি মিত্রদের কথা বলছিস?’ সুকুমার জিজ্ঞাসা করলেন।
    ‘হ্যাঁ। খানিক আগে রানা দা, পরেশ, সুদীপ আর লোপাদি এসেছিল আমাদের বাড়ি। লোপাদি প্রচণ্ড রেগে আছে। একে মহিলা সমিতির নেত্রী, পান থেকে চুন খসলেই সাতপাঁচ বিবেচনা না করে নারী নির্‍যাতন, বধূ নির্‍যাতন প্রসঙ্গ টেনে আনে। তবে... মিত্রদের ব্যাপারটা সত্যি সিরিয়াস’।
    ‘অরুও বলছিল’। পাঁপড় ভেঙ্গে মুখে পুরে জানালেন সুকুমার।
    ‘তবে...’
    ‘তবে কি সুকুমার দা! সব সীমা ছাড়িয়ে চলে গেছে সুশান্ত মিত্র। কে যে ওর নাম রেখেছিল সুশান্ত’!
    একটা বেদম হাসি পেয়ে গেছিলো অরুর। কোনোমতে হাসি চেপে চুপ মেরে বসে রইলো।
    ‘তুমি যা বলছ তা ঠিক প্রদীপ’। অঞ্জনা বললেন, ‘কিন্তু কৌশিকি তো কিছু বলছে না। যাদের ভিতর আসল অশান্তি, তাদের ভিতর থেকে কেউ এগিয়ে আসলে না হয় কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কারু দাম্পত্য জীবনে এই ভাবে হস্তক্ষেপ করা... না না... আমার ঠিক ভাল লাগছে না’।
    ‘কৌশিকির ক্ষমতা থাকলে তো কিছু বলবে, বৌদি। বিবাহিত জীবনে ছোট বড় ঝগড়াঝাঁটি হয়ে থাকে, স্বাভাবিক। তাই বলে এই রকম’! আর তাছাড়া বউদি’, চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে প্রদীপ বললেন, ‘যে রকম ভাষা ব্যাবহার করছে সুশান্ত, পাড়ার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা... ছিঃ ছিঃ ছিঃ’।
    প্রায়ে দশ বছরের বিবাহিত জীবন মিত্রদের। বাড়িতে সুশান্তের বাবা, বউ কৌশিকি আর একটা ছোট ছেলে আছে, সাত আট বছরের। সুশান্তের মা মারা যাওয়ার পর পরই সুশান্তের বাবা ছেলের বিয়ে দিয়ে দেন। বউ এসে সংসার সামলাবে। কিন্তু সে বউয়ের এখন যা দশা। নিজের বাবার সামনেই মাতাল হয়ে সুশান্ত বউকে যা পারে তাই বলে। সুশান্তের বাবা যেন এই যুগের ধৃতরাষ্ট্র। ওদের ছেলেটার জন্য মাঝে মধ্যে খারাপ লাগে অরুর। কোথাও যায়ে না, খেলতে বার হয়ে না। চুপ চাপ বাড়িতে বসে থাকে।
    অনেকক্ষণ পর সুকুমার মুখ খুললেন, ‘অবস্থা যে রকম বাড়াবাড়ি হচ্ছে, আজ বাদে কাল কোন দুর্ঘটনা না ঘটে যায়ে’। এক কাজ কর প্রদীপ, তুই সবাইকে জানিয়েদে রাতের দিকে যেন সবাই ক্লাবে আসে। মিত্রদের বাড়ি না গিয়ে সুশান্তকে না হয় ক্লাবে আসতে বলবো’।
    ‘ঠিক আছে’।
    ‘ওহ আটটা বাজতে চলল’, দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে উঠে পড়লো প্রদীপ, ‘চলো সুকুমার দা, বাজার থেকে ঘুরে আসি’।
    ‘দাড়া, মানিব্যাগটা... অরু, বাজার যাবি?’
    ‘আজ আর ভালো লাগছে না বাবা’।
    ‘চিংড়ির কথা চিন্তা কর ভাল লাগবে’, প্রদীপ টিপ্পনি কাটলেন ।
    প্রদীপ ও সুকুমার বেরিয়ে গেলেন।
    অরু নিজের ঘরে যাওয়ার জন্য উঠল।
    বুকশেলফ থেকে টিনটিনের কমিক্স নিয়ে খাটে বসলো অরু। বাধানো, টিনটিনের পুরো কালেকশান। বহুবার পড়েছে, আবারো পড়ে। এক ধরনের নেশা ধরিয়ে দিয়েছেন হার্জ। খাটের উপরে আধ-শুয়ে পোড়তে শুরু করলো অরু। বেশীক্ষণ ভালো লাগলো না। সকালবেলা এই রকম ভাবে ঘুম ভাঙলে, কারই বা মন ভাল থাকে!
    ‘পাড়ার বড়রা সুশান্ত মিত্রর সাথে কথা বলবে। ফল কি কিছু হবে! রগ চটা লোকরা খুব বেয়াড়া হয়। ভালভাবে সোজা কথা বোঝে না। ভালর জন্য যা বারণ করা হয়, নিজের জোর দেখানোর জন্য আরও বেশি করে তা করে। হিতে না বিপরীত হয়। কৌশিকি বৌদির উপর যদি আরও বেশী...’।
    ‘ক্রিং ক্রিং ক্রিং...’ মোবাইল বেজে উঠল অরুর, অচেনা নাম্বার।
    ‘হ্যালো...’
    ‘হ্যাঁ অরু, আমি বর্ণা’।
    -‘আরে... এটা কি তোর নতুন নাম্বার?’
    ‘হ্যাঁরে, আমার আগের মোবাইলটা চুরি হয়ে গেছে’।
    -‘তাই বলি, এত ফোন করি... তা তুই আমাকে আগে জানাতে পারলি না’। ছোটবেলার বন্ধুর উপর কিছুটা রেগে বলল অরু।
    ‘আর বলিস না, মোবাইল চুরি সাথে সব কনট্যাক্টও চুরি। কালকে বিকেলে তাপোসের সাথে দেখা হল, ওর কাছ থেকেই সবার নাম্বার নিলাম...’
    -‘ওঃ... তো গোলবাড়ি কবে যাবি বল, আমি আর পাঁচ দিন রয়েছি’।
    ‘শুভস্য শিঘ্রম, আজ বিকেলে চল...’
    -‘আজ হবে না রে, প্রদীপ কাকুর বাড়ি নেমন্তন্ন। কাল...’
    ‘ওকে, কাল পাক্কা... অনেকদিন পর অনেক কথা আছে... ফোনে হ্যাজাতে ভাল লাগে না... কাল জমিয়ে আড্ডা হবে...’
    -‘ঠিক আছে...’।
    আজ কোথাও বেরোবার ইচ্ছা অরুর নেই। কিছু ভালও লাগছে না। মিত্রদের কথা বার বার অরুর সামনে ভেসে আসছে।
    ‘আচ্ছা, বাবা মা’র ভিতর কখনো লড়াই হয়েছে... হ্যাঁ হয়েছে, বহুবার হয়েছে, এমনও হয়েছে বাবা মা অনেক দিন একে অপরের সাথে কথা অবধি বলেননি । কিন্তু সেই লড়াই হাতাহাতি তো দূর অশ্লীল গালিগালাজের রূপ নেয়নি কখনো’। হাজার চেষ্টা করেও অরু মনে করেতে পারল না সুকুমার আর অঞ্জনা কখনও অরু বা ভাইয়ের সামনে চিৎকার চেঁচামেচি করেছেন কি না।

    বিকেল সাড়ে চারটে বাজতে গেল। মা মেয়েতে সারা দুপুর গল্প করে, এখন বিকেলের চা খেতে খেতে টিভি দেখছে।
    ডিং ডং... অরু গেল দরজা খুলতে। হাঁপাতে হাঁপাতে সুকুমার ঢুকলেন।
    ‘এ কি... এতো তাড়াতাড়ি...’ অঞ্জনার গলায়ে আশঙ্কা প্রকাশ পেলো।
    অরুও চিন্তায়ে পড়ল। ‘আজ তাড়াতাড়ি আসার কথা, তাই বলে সাড়ে চারটে... তাছাড়া বাবাকে দেখেও মনে হচ্ছে উনি বিষণ টেনশনে আছেন...’।
    ‘এখন কথা বলার সময় নেই অঞ্জনা’। অফিসের ব্যাগ রাখতে রাখতে সুকুমার বললেন, ‘শঙ্কর ব্যানার্জী হসপিটালাইজ্, আমি এখন ওখানেই যাবো’।
    ‘একটু চা খেয়ে যাও... হয়ে গেছে...’।
    ‘না, সময় নেই একদম, ফিরতে হয়ত রাত হয়ে যাবে, ফোন করে জানিয়ে দেব। ও হ্যাঁ, প্রদীপকে বলে দিও আমি আজ ক্লাবে যেতে পারব না...’। জামাটা পালটে সুকুমার বেরিয়ে গেলেন।
    মা’র কাছ থেকে অরু পরে জানতে পারে শঙ্কর ব্যানার্জী সুকুমারের কলিগ সেই সঙ্গে বেশ ভাল বন্ধু।

    সাড়ে আটটার পর অরু গেল প্রদীপের বাড়িতে। ক্লাব থেকে প্রদীপ ফিরেছেন পাঁচ দশ মিনিট আগে। প্রদীপ কাকুর মা, বউ, ছেলেমেয়ে সবাই আছে। কিছুক্ষণ অরুর নতুন কলেজ ও পড়াশুনা নিয়ে কথা হল, তারপর টপিক চলে আসলো হট নিউজে... মিত্র। ডিনার শেষ। সোফায়ে বসে প্রদীপ বললেন, ‘এই সুশান্তটা যে কি বস্তু দিয়ে গড়া, বোঝা যায় না’।
    ‘ক্লাবে কি ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে?’ কৌতূহল মেশানো গলায় প্রশ্ন করলেন প্রদীপ বাবুর স্ত্রী রিনি।
    ‘আরে ঝগড়া করলেও তো কিছু বোঝা যেতো’, মৌরির কৌটোটা অরুর দিকে এগিয়ে বললেন প্রদীপ, ‘এক ঘণ্টা ধরে আমরা ওকে এতো বুঝালাম, বার বার বললাম যদি কোন অসুবিধা থাকে তালে জানাক, আমারা সবাই চেষ্টা করবো সাহায্য করতে, কিন্তু নাহ, একটা কথা মুখ দিয়ে বেরল না’। দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন প্রদীপ বাবু, ‘যেমন ভাবে এসেছিল, তেমন ভাবেই গেল। হাবাগোবার মতন বসে রইল। যেন কিচ্ছু জানে না, কিচ্ছু বোঝে না, ভাঁজা মাছটি উলটে খেতে পারেনা। কি বুঝল, কি বুঝল না, কিছুই বুঝলাম না...’।

    বাড়ি ফিরতে অরুর একটু দেরি হয়ে গেল। সুকুমার এখনো ফেরেন নি।

    সকাল সাতটার সময় ঘুম ভাঙল অরুর। সামনের ঘরে সুকুমারকে দেখতে পেলো।
    ‘বাবা, কখন ফিরলে’?
    ‘প্রায়ে একটা বেজে গেছিলোরে’। কাল বিকেলের তুলনায়ে অনেক শান্ত লাগছে সুকুমারকে।
    ‘তোমার বন্ধু... শঙ্কর কাকু ভাল আছেন’?
    ‘আউট অফ ডেঞ্জার। কাল রাতেই ডিসচার্জ করে দিয়েছে। তবে একটু সাবধানে থাকতে হবে’।
    সকাল সকালই সুকুমার, প্রদীপের কাছে কালকের মিটিংয়ের সব খবর পেয়ে গেছেন।

    দুপুরে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনে বর্নার সাথে দেখা হল অরুর।
    ‘উফ সাত মাস, যেন সাত বছর পর তোকে দেখলাম’, সব কটা দাঁত বার করে এগিয়ে আসলো বর্ণা।
    গোলবাড়ি পৌছাতে সময় লেগে গেল প্রায়ে তিরিশ মিনিট। ঘণ্টা খানিকের মধ্যে গোলবাড়ির পাঠ চুকিয়ে পার্ক স্ট্রিটে আসলো দুবন্ধু। মেট্রোয়ে বেশ সুবিধা। ঝটপট যাতায়াত করা যায়। কেএফসি’তে পৌঁছে দুটো কোল্ড ড্রিঙ্কস নিয়ে কোনার একটা টেবিলে গিয়ে বসলো দুজনে।
    -‘তুই বলছিলি যে জব ছেড়ে দিয়েছিস’, ড্রিঙ্কসে গলা ভিজিয়ে অরু জিজ্ঞাসা করলো।
    ‘অনেক আগেই। ভালো লাগছিল না।
    -‘তোর তো ভাল আঁকার হাত...ওটা নিয়ে...’
    ‘হা হা হা... তোর মতে আমি কি ছবিওয়ালি হবো...’ জোরে হেসে উঠল বর্ণা।
    ‘ছাড় ওকথা, আঁকা আমার হবি মাত্র... তুই বল, এতো দিন পর কলকাতায় ফিরলি, কিছু কি অচেনা লাগছে... মানে অনেক বাঙালিরা তো দেখি দুদিন বাঙলার বাইরে থাকলে পুরপুরি বাঙলা না ভুললেও এক্সেন্ট পালটে যায়ে’।
    বর্ণার খোঁচা পাত্তা না দিয়ে অরু বলল, -‘তোর মিত্রদের মনে আছে?’
    ‘তোদের প্রতিবেশী, সেই ঝগড়াটে’!
    -‘হুম, কাল পাড়ার বড়রা সুশান্তের সাথে কথা বলেছে...’।
    ‘কাঁচকলা হবে। ও বেটা শুধরবে না। মিলিয়ে নিস’, হাতের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বর্ণা জানালো।
    -‘সে না শুধরাক, কিন্তু ওদের বাচ্চাটা... ওরা কি কোনদিনও বুঝতে পারবে না ঐ বাচ্চাটার মনের অবস্থা...’।
    ‘হ্যাঁরে, কি যেন নাম ছেলেটার... রঞ্জন...’!
    -‘হ্যাঁ। কি চুপ চাপ! কারু সাথে কথা বলে না, খেলাধুলো করতেও বেরোয়ে না। সাত আট বছরের ছেলে, কোন বিষয় উৎসাহ নেই জানিস! না কোন বন্ধু, না কোন বাহানা, এমনকি টিভি অবধি দেখে না। আমার ঘরের জানলা দিয়ে ওদের বাড়ির অনেকটা দেখা যায়ে, আমি যখনই দেখি সব সময় রঞ্জন চুপ করে খাটের উপর বসে থাকে’।
    ‘হুম, সুশীল সমাজ। টিভি দেখলে, ভিডিও গেম খেললে, অন্য পাড়ার লোকেদের সাথে মিশলে বাচ্চারা খারাপ হয়ে যায়। আর বাড়িতে চোখের সামনে যখন তাণ্ডব চলে, গালাগাল আর মারপিট হয় তখন বাচ্চারা পুরো সুস্থ থাকে...’ কিছুটা বিদ্রূপের শুরে বলল বর্ণা, ‘তোর ঐ বৌদি পুলিসে কমপ্লেন করবেনা। মার খাবার অভ্যাস হয়ে গেছে। নিজে মার খাবে, তো খাক মার। ওরা ঝগড়া করে মরুক, বাচ্চাটাকে অন্য কোথাও...এই মামা বাড়ি মাসির বাড়ি কোথাও দিয়ে আসুক...’।
    -‘তা ঠিক... কাল এক প্রস্থ কালবৈশাখী উঠেছিল, বিকেলে দেখালাম, রঞ্জন খাটের উপর বসে আছে। না ফুপাচ্ছে, না ওর শরীর কাঁপছে শুধু ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। ও বোধহয় বুঝতেও পারছে না যে ও কাঁদছে। যাচ্ছাতাই... কেউ ভাবতে পারে, ঐ সুশান্ত মিত্রর পকেটে একটা অক্সফোর্ডের ডিগ্রি আছে’।
    ‘ছাড় ছাড়...’ মুখ বেঁকিয়ে প্রতিবাদ করে উঠলো বর্ণা, ‘ভদ্রতা, কমেন সেন্স এই সব কোন ডিগ্রীর উপর ডিপেন্ড করে না। শিক্ষিত আর অশিক্ষিতর ভিতর পার্থক্য কি জানিস, শিক্ষিতরা ইংরেজিতে গালি মারে আর অশিক্ষিতরা পাতি বাংলায়ে...’।
    -‘সুশান্ত কিন্তু পাতি বাঙলায়ে গালি মারে... কি বলিস, ওর ডিগ্রী গুলো একটু পরীক্ষা করা উচিৎ !’

    চারদিন পেরিয়ে গেল, অল্প কিছু চড়া গলা ছাড়া মিত্রদের বাড়ি থেকে আর বিশেষ কিছু অরুর কানে আসেনি। ক্লাবের মিটিং কাজে এসেছে বোধহয়। কাল অরু ফিরবে বাঙ্গালোর। সকালে ফ্লাইট। সব কিছু গুছানো হয়ে গেছে। ডিনারের শেষ সুকুমার অরুকে বললেন, ‘কাল তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে’। অঞ্জনা মুচকি মুচকি হাসছেন। কি সারপ্রাইজ, তা অরু আর জানতে চাইল না। সারপ্রাইজ, সারপ্রাইজ হিসাবে আসলেই আসল আনন্দ। কাল সকাল সকাল উঠতে হবে। সবাই চলে গেলো শুতে।

    ‘চুউউউপ... একটা কথা বলবি না তুই... বেশী বাড় বেড়েছে তোর... দাড়া, দাড়া... বার করছি তোর মজা... আআআআ...’।
    ‘নাহ, মিত্ররা আর শোধরাবে না। বর্ণা ঠিকই বলেছে, ও ব্যাটা কুকুরের লেজ’। কিছু করার নেই, জানলা বন্ধ করে জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করলো অরু।

    ‘অরু, অরু... শিগগিরি ওঠ... ছ’টা বাজে... ওঠ...’ অঞ্জনার ডাকে ঘুম ভাঙল।
    তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে দরজা খুলল অরু।
    ‘কাল রাতের জন্য...’ অরুকে থামিয়ে সুকুমার এগিয়ে এসে একটা বড় প্যাকেট দিয়ে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি স্নান খওয়া সেরে নে। আমি ট্যাক্সি নিয়ে আসি’। কি আছে অরু জিজ্ঞাসা করতে পারলো না, সুকুমার বেরিয়ে গেছেন, খুব গম্ভীর।
    ঝটপট স্নান সেরে তৈরি হয়ে অরু প্যাকেট’টা খুলল। ওহ, একটা ঝকঝকে ল্যাপটপ উকি মারছে। সময় নেই বেশী হাতে। তাড়াতাড়ি ব্যাগে ভরে অরু গিয়ে অঞ্জনাকে জড়িয়ে ধরল আনন্দে।
    ‘নে, সময় নষ্ট করিস না। খেয়েনে তাড়াতাড়ি’, শান্ত গলায়ে বললেন অঞ্জনা।
    আজ পরিবেশটা খুব শান্ত, সকাল সকাল যে কোলাহল থাকে, আজ কেমন যেন নিস্তব্ধ। পাখীরাও যেন ডাকতে ভুলে গেছে।
    অরুর সে সব খেয়াল নেই। সুকুমার চলে এসেছেন ট্যাক্সি নিয়ে। মেয়ের লাগেজ গুলো নিয়ে সুকুমার বেরিয়ে গেলেন। অরুর আর অঞ্জনা একসাথে আসছে। বাড়ি থেকে বেরিয়েই অরু দেখল মিত্রদের বাড়ির সামনে ভিড় জমে আছে। প্রদীপ কাকু, লোপা দি, প্রায়ে অর্ধেক পাড়া মিত্রদের বাড়ির সামনে। একটা অ্যাম্বুলেন্সও দাঁড়ানো।
    -‘সুশান্ত দা’র বাবা কি অসুস্থ, না কি উনি... বয়সতো কম নয়, পঁচাত্তর ছিয়াত্তর হবেই’।
    মিত্রদের বাড়ির দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলো অরু। কৌশিকি বৌদি বারান্দায়ে বসে আকাশের দিকে শূন্য দৃষ্টি মেলে আছেন, পাশেই সুশান্ত দাড়িয়ে। মাথা নিচু, চুল এলোমেলো। অ্যাম্বুলেন্স থেকে দুটো লোক নেমে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। চাঁপা গুঞ্জন।
    হাসপাতালের ক্যারি বেড ধরে অ্যাম্বুলেন্সের লোক দুটো বাড়ি থেকে বেরোচ্ছে। সাদা চাদরে ঢাকা। কিন্তু বডির সাইজ’টা... এতো ছো......
    ‘রঞ্জন... রঞ্জন... আমাকে ছেড়ে যাস না’, কৌশিকি চিৎকার করে উঠলেন। একটা ঠাণ্ডা স্রোত অরুর শিরদাঁড়া বয়ে উঠে এলো।
    ‘কাল গভীর রাতে কখন গলায়ে দড়ি দিয়েছে ছেলেটা, কেউ টের পায়নি’, সুকুমার অরুর হাতটা শক্ত করে ধরে ট্যাক্সির দিকে এগিয়ে গেলেন।
  • ওপু | 24.99.77.199 | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:২০600971
  • *(শেষ)
  • Ekak | 24.96.128.96 | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ২০:১৫600972
  • অপুর লেখা ভাল্লাগচ্ছে । ইয়ে অরুন্ধতি বানান টা একটু :)

    এই ঠান্ডা ,চমক বিহীন স্টাইল টা পছন্দ । ভাষা তো ঘষামাজা করতে করতে হয়ে যাবে। এগিয়ে যান ।
  • ওপু | 24.96.68.151 | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ২২:০৬600973
  • খ্যাকু... :))
    বানান ভুল মার্জনীয়।
  • Ekak | 125.118.24.165 | ২৪ এপ্রিল ২০১৩ ২২:৩২600974
  • যে বানান ভুল কেও করেনা সেটা করলে মার্জনীয় । নচেত নয় :)
  • কৃশানু | 126.203.200.241 | ২৫ এপ্রিল ২০১৩ ০২:১২600975
  • হ্যা, এই একক দা, ব্ল্যান্কি দা, আমি - বানান ভুল একদম সহ্য করতে পারি না :-)
    গল্পটা কিন্তু ভালো হয়েছে, আপনার লেখার স্টাইল বেশ তরতরে।
  • de | 190.149.51.69 | ২৫ এপ্রিল ২০১৩ ১৩:৫০600976
  • সুন্দর হয়েছে -- লেখার স্টাইল টা বেশ ভালো --
  • paTal | 24.99.87.209 | ২৫ এপ্রিল ২০১৩ ২২:০৬600977
  • আমারো ভালো লেগেছে। তবে সাত-আট বছরের ছেলে সুইসাইড করল, এটা একটু কেমন-কেমন লাগলো।
  • ওপু | 24.99.138.78 | ২৬ এপ্রিল ২০১৩ ১০:২৯600978
  • থ্যাঙ্কুসস... :)
    ইন ফিউচার বানান এন্ড ভাষা খেলায় রাখেগা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন