এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষেঃ পুরনো সিল্ক রুট।

    I
    অন্যান্য | ২৮ মার্চ ২০১৩ | ২৪৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | 24.99.100.140 | ২৮ মার্চ ২০১৩ ২২:৫১599836
  • বাপরে ! সে কী দুর্যোগ ফেরার দিন !

    সকাল থেকেই পাহাড়ী আকাশের মুখ ভার। সেদিন ভেবেছিলাম তারিয়ে তারিয়ে পাখির ছবি তুলবো। এই সিল্ক রুট রিট্রিটের আশেপাশে প্রচুর গাছপালা আর তাতে নানারকমের পাখি আসে। খেয়াল করে দেখেছিলাম, মোটামুটি সাতটার আগে পাখির ছবি তুলবার মত যথেষ্ট আলো হয় না। তাই একটু লম্বা ঘুম ( বেড়াতে গেলে আমার ঘুম কমে যায়, সাড়ে চারটে বাজতে না বাজতেই উঠে পড়ি),দশটা অবধি তো কিছু করার নেই, গোছগাছও সব কমপ্লিট, চপ্পল, ক্রীম আর টুথব্রাশ-টুথপেস্ট ঢোকালেই হল।
    কিন্তু কোথায় কী। আমি উঠে -টুঠে বসে আছি সেই কোন সকাল থেকে, আলো আর আসে না। আকাশে মেঘের জটিল ঘনঘটা। আলো ফুটল না তো ফুটলই না। পাখির ছবি তোলা গোল্লায় গেল;মেঘলা আকাশ মাথায় নিয়েই বেরোতে হল।
    কালিম্পং হয়ে যাওয়ার কথা। কালিম্পংয়ে বিচ্ছিরি জ্যাম, আধ ঘন্টা এক ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। সরু ঘিঞ্জি রাস্তা,দুপাশে অজস্র দোকান একের পর এক ঃ কিউরিও, শাড়ি-ব্লাউজ-সালোয়ার স্যুট-সোয়েটার, চটপটা স্ন্যাক্স, হার্ডওয়ার। দেখলাম , অধিকাংশ দোকানই মারোয়ারির।আমাদের ড্রাইভার সাহেব সিকিমের লোক, এদিকের রাস্তাঘাট বিশেষ ভালো চেনেন না, যদিও তাঁর বিয়ে হয়েছে কালিম্পংয়ের মেয়ের সঙ্গে। আমরা যাবো প্রধানের নার্সারিতে, তার সুলুকসন্ধান ড্রাইভার দাওয়া তামাংয়ের জানা নেই। এক বৃদ্ধ ভদ্রলোককে জিগ্গেস করা হল, তিনিও তেমন কিছু বাতলাতে পারলেন না-নার্সারি তো এখানে অনেকগুলি, আর প্রধানও এখানে খুব কমন পদবী। তারপর অবশ্যি জানা গেছিল , ভদ্রলোকের নাম স্বর্গীয় মোহন প্রধান, তাঁর নার্সারীর নাম পাইনভিউ নার্সারি, কিন্তু সে তো শুধুমাত্র সেখানে পৌঁছনোর পরই জানলাম। যদিও এই নার্সারিতেই আমরা এসেছিলাম,এর আগেরবার কালিম্পং ভ্রমণে, কিন্তু সে তো ২০০২য়ে, ১১ বছর আগে, অত কী আর মনে থাকে ! ভাগ্যে সুমনের শিলিগুড়িবাসী ডাক্তার-বন্ধু ছিল, সেই দিব্যি সুন্দর নেপালী ভাষায় পরিষ্কার ডিরেকশন দিয়ে দিল ড্রাইভার দাওয়া তামাংকে।

    ইচ্ছে ছিল কালিম্পং থেকেই মধ্যাহ্নভোজ সেরে যাওয়ার , একটা জম্পেশ করে ভোজ খাব মনে আশা।কিন্তু আমার গাছপ্রেমী বন্ধুরা প্রায় ঘন্টা আড়াই কাটিয়ে দিলেন নার্সারিতে, আমার বৌটিও কম যান নি। নানান জাতের গাছ কেনা হল, সুমনরা সেই বিখ্যাত ব্লু ক্যাকটাসও কিনল আর্জেন্টিনার, তার একটি ছোট টুকরোর দামই ৫০০ টাকা; সে আবার রোদে থাকলে সবুজ হয়ে যায়। সব কিছুরই দাম এখানে বেশী বেশী, সুমনরা বলল। ওরা প্রায়শঃই গাছ-ক্যাকটাস কিনে থাকে কলকাতায়।
    যাই হোক, দাওয়া তামাং বললেন, এখন এখানে খেতে গেলে আবার শহরের ব্যস্ত রাস্তায় নামতে হবে, আবার যানজট। আমি আপনাদের নিচে কোথাও খাবার যায়গাতে দাঁড় করিয়ে দেবো। তাই চলো তবে, হাতে এবার সময় কম , শবরীর মাসির বাড়ি আবার অ্যাটেন্ড করতে হবে শিলিগুড়িতে, সময়ের চাপ অতএব রয়েইছে। তাছাড়া কালিম্পং শহরটাকে দেখে এবার বেশ ঘিঞ্জি লাগলো, সেই ঝাঁ চকচকে হাপ-বিলেত ভাবটা (নাকি প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড) কোথায় যেন উধাও। ও, বলাই হয় নি, যানজটের কারণটা গোজমুমো-র মিটিং, একটা চকের কাছে দেখলাম -গুচ্ছের বাইক-ছাত্রযুবা-মহিলা ও ছোট্ট ডায়াস দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সেই চোয়ালকঠিন ভয় ভয় ভাবটা নেই, আগেরবার সামসিং-সুন্তালেখোলায় যেমন দেখেছিলাম। এবার বরং একটু ফুর্তি ফুর্তি মতন।

    তা সে যাই হোক, যাচ্ছি তো যাচ্ছি, দাওয়াসায়েবের আর থামার নাম নেই। এদিকে পেট চুঁই চুঁই, বেড়াতে এলে আমার আবার খিদে বেড়ে যায়। সামনের সিটে বসা সুমনের সঙ্গে ড্রাইভারসায়েবের কী গুজগুজ-ফুসফুস হচ্ছে কে জানে। এদিকে আকাশ আরো কালো হচ্ছে, মেঘে-ফগে চারিদিক অন্ধকার, সুমন তো গাড়ির কাচের মধ্য দিয়েই দিব্যি সুন্দর একটা ফগের ছবি নিয়ে নিল সামনের রাস্তার, সেখানে সার দিয়ে আলো জ্বালানো গাড়িরা সব চলেছে। ঐ মায়াবী ফগ, ধোঁয়া ধোঁয়া ছায়া ছায়া বন দুধারে, গম্ভীর মুখ বাঁদরেরা বসে আছে খাদের ধারে, তারই মধ্য দিয়ে আলো জ্বালিয়ে গাড়িরা যাচ্ছে-কী যে ভালো ছবি হয় !
    তিস্তাবাজার ছাড়াতেই বৃষ্টিটা নামল। প্রথমটা টুপটাপ, তার পরেই ঝমঝমিয়ে।এতক্ষণে দাওয়াসায়েবের যেন সম্বিত ফিরে এল, পাশের একটা খাবার দোকান দেখিয়ে বল্লেন-এইটা চলবে? আমরা দেখলাম, ছোটমত একটা কুঁকড়োনো দোকান, তার ভেতরটা লোকে লোকারণ্য, এর মধ্যে খাওয়া তো দূরস্থান, বসার জায়গাই যে পাওয়া যাবে না! সমস্বরে না-না বলতেই ড্রাইভারসায়েব যেন খুশী হয়ে -চলুন তবে - বলে আর একটু এগিয়ে একটা বড়সড় দোকানের সামনে ঘ্যাঁচ করে দাঁড় করিয়ে দিলেন। দোকানের সামনে একজন গৌরবর্ণ দীর্ঘদেহী স্মার্ট নেপালী যুবা টি-শার্ট আর হাপ-পেন্টুল পরে বসে আছেন আর ল্যাপটপে খুটুর খুটুর কী যেন করছেন। গানটা সম্ভবতঃ ল্যাপটপ থেকেই বাজছে। দোকান একদম ঠিক তিস্তার পাড়েই দাঁড়ানো, ইন ফ্যাক্ট তিস্তাপাড়ের ওপরে যেন সে ঝুলছে। পেছনের জানলা খুলে দিলে বিশাল সবুজ তিস্তা , তার ওপারে নীলচে সবুজ পাহাড়, পাহাড়ী বর্ষায় তারা ছায়াচ্ছন্ন। তিস্তা এখানে বাঁক নিয়েছে, তার সবুজ জলে অনেক নীচে রোমাঞ্চপ্রেমী যুবকেরা র‌্যাফটিং করছে, ঐ বর্ষায় ভিজে ভিজে । সে এক অদ্ভুত প্যানোরামা। সুমন বলল, ড্রাইভার বলছিলেন, আপনাদের এক আচ্ছা ভিউওয়ালা রেস্তোরাঁতে নিয়ে যাবো; সম্ভবতঃ আমাদের ক্যামেরা আর ছবি-তোলার বহর দেখে সে নিজে নিজেই এইসব ঠিক করে বসেছে। এতক্ষণে ব্যাপারটা বোঝা গেল।
  • phutki | 24.99.95.97 | ৩০ মার্চ ২০১৩ ১৬:৫৬599847
  • আগে হোক......
  • I | 24.99.246.155 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ১১:৩২599858
  • দৃশ্য তো সুন্দর , কিন্তু পতঙ্গপ্রধান।
    কী অসম্ভব মাছি! মাছিতে মাছিতে থিকথিক করছে টেবিল, কালো হয়ে আছে টেবিল। ও এক্ষুণি চলে যাবে-বলে স্মার্ট যুবা জানলা গুলো খুলে ফ্যান চালিয়ে দিল। অধিকাংশই উড়ে গেল বটে কিন্তু স্টাবর্ণ কেউ কেউ রয়েও গেল। ভিউর লোভে কিনা বলা কঠিন। এই রেস্তরাঁর ঠিক দেড়শো-দুশো ফুট নিচে তিস্তার বড়সড় চর পড়েছে, সেখানে গরু চড়ে বেড়াচ্ছে, বৃষ্টিতেও। সেইখানে জমে উঠেছে জৈব বর্জ্যের একটা বেশ বড়সড় স্তূপ, তাদের বেশ খানিকটা রেস্তোরাঁ থেকেই নিক্ষিপ্ত কিনা জানা নেই। মাছিরা সেজন্যেও ভিড় জমিয়ে থাকতে পারে। তাছাড়া, হ্যাঁ তাছাড়াও, সঙ্গীতা কাচের দরজার মধ্যে দিয়ে উঁকি দিয়ে জানালো কিচেনের অবস্থা দেখলে খেতে ইচ্ছে করে না। মাছির উৎসস্থল সেই কিচেনই কি না, কে বা নিশ্চিত করে জানে।
    তবে কিনা পতঙ্গ প্রবল কিন্তু ক্ষুধাই প্রধান। ভাত-ডাল ইত্যাদি অর্ডার দিলে পেতে দেরী হবে , জানালেন যুবক। তাড়াতাড়ির মধ্যে কী পাওয়া যাবে ভাই? এই , চিকেন মোমো, চাউমিন-বলে একটু কাঁচুমাচু। আরে , মোমো ফেলে কিনা ভাত-ডাল ! শিব্রাম ও তাঁর বন্ধুর বন্ধুর মত কেয়াবাত উল্লাসে আমরা বলি- লাগাও তবে মোমো। ও চাউমিন। শেষপাতে দুজনের জন্য দু কাপ কফি, বাকিরা কফি খাবেন না।
    খাবার আসতে না আসতেই আমার উৎসাহে আর এক প্লেট চাউমিন অর্ডার করা হল। বলেইছি, বেড়াতে গেলে আমি বেশ পেটুক হয়ে যাই। কিন্তু খোকা-খুকীরা ইতিমধ্যে হাত উল্টে দিয়ে বসে আছে, গিন্নিরাও এমনকি। যে সুমন খাবার নষ্ট হতে দিতে একদম রাজী নয়, তারও নাকি পেট ভার। এদিকে চাউমিনটাও কেমন মত, কোনো প্রাগৈতিহাসিক তেলে ভাজা, মাংসটা পোড়া পোড়া ও তেতো। তাই খেতে হল, আমাকেই সিংহভাগ। খাবার তো আর নষ্ট হতে দেওয়া যায় না ! খেয়ে পেট আইঢাঁই।

    আমাদের খাবার সার্ভ করছিলেন এক মহিলা, তাঁকে দেখে বয়্স বোঝা যায় না। মাঝবয়সী হতে পারেন, কুড়ি বাইশ হতে পারেন, মাঝ বয়স পেরিয়ে গিয়েও থাকতে পারেন। তাঁকে দেখে এমন কি তাঁর জাতিপরিচয়ও বোঝা যায় না। বাঙ্গালী হতে পারেন, নেপালী হতে পারেন, মদেশিয়া হওয়াও বিচিত্র নয়। শিশুদের সঙ্গে তিনি অনেক কথা বলছিলেন। শিশুরা তাঁকে পাত্তা দিচ্ছিল না। পাত্তা না পাওয়ার অভ্যেস তাঁর আছে বলেই মনে হল। এ জগৎসংসারে হয়তো তিনি একা; হয়তো অনেকগুলো পাখীর ছা'য়ের মত মুখ তাঁর ঝুপড়িতে হাঁ করে বসে আছে-এও হতে পারে। তাঁর ছন্নছাড়া চুল আর নোংড়া ছেঁড়া সালোয়ার কামিজে সেসব কিচ্ছু লেখা নেই। নাঃ, তাঁর ছবি তুলে আনি নি। সব ছবি তুলে আনা যায় না।

    তুলে আনলেও ছবিরা হারিয়ে যায়। লেপচাজগৎ হানিমুন করতে গিয়ে যে হাসিখুশী নেপালী মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল-সত্যি বলতে আমরাই তাকে খুঁজে বের করেছিলাম, কেননা "যারা পরিযায়ী"র কোনো এক সংখ্যায় লেপচাজগৎ নিয়ে ট্রাভেলগে তার কথা পড়েছিলাম- তার তো ছবি তুললামও বেশ দুটো-চারটে। আমার বোনের কাছ থেকে ধার নেওয়া অ্যানালগ ক্যামেরায়-সেই আদ্যিকালের ভিভিটারে। শেষ অবধি প্রিন্ট করাই আর হল না তাদের। একে কি হারিয়ে যাওয়া বলে? সেই যে মেয়েটি, তার নাম ভুলে গেছি, সে রাজ্য অ্যাথলেটিক মিটে অবধি নেমেছিল, দৌড়ের রাশি রাশি পদক ও সার্টিফিকেট একদা তার মলিন ঝোপড়ির তাকে জমানো ছিল-লেপচাজগৎ নামের একটি মলিন নেপালী বস্তিতে-যদ্দিন না তার মাতাল স্বামী একদিন টান মেরে সে সব ফেলে দেয় চুলার সবখেকো আগুনে। এখন সে পাথর ভাঙে দিনে, আর কাঠ-পাতা কুড়িয়ে আনে বন থেকে, খুব ভোরবেলায়, ফরেস্ট গার্ডদের চোখ এড়িয়ে।
    একে কি হারিয়ে যাওয়া বলে?
  • Blank | 69.93.193.134 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ১২:০৬599869
  • কালিমপঙে গেলে বাজারের কাছে ক্লক টাওয়ার থেকে ডান দিকে ডি স গুরুং রোড ধরে যেতে হয়। দুটো ভালো খাবারের দোকান আছে। খুব ভালো মোমো, থুকপা, চাউমিন বানায়।
    আর কালিমপঙে অবশ্যই একবার গ্রাহামস চার্চ টা দেখে আসা উচিৎ গিয়ে।
  • I | 24.99.240.75 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ১২:৪১599880
  • তারপর নেমে আসা । শিলিগুড়ি শহর। রাস্তা সারানোর যে চক্করে আমাদের যাওয়ার সময়ে পাক্কা ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল, এবার সেসবের বালাই নেই। এই ঝুমবৃষ্টিতে কে বা রাস্তা সারায় !
    শহরে ঢুকেও, এমনকি বৃষ্টি। তখনি বোঝা গেল এ শুধু পাহাড়ের হঠাৎ আসা হঠাৎ যাওয়া রুটিন বৃষ্টি নয়, এর পেছনে রয়েছে অন্য জ্যামিতি। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শবরীর মাসিমার বাড়ি। জল তখন সবে একটু থেমেছে।
    সেখানে রাজকীয় আপ্যায়ণ। এদিকে আমাদের তখন গলা অবধি ভর্তি।একটুখানি পুডিং ও মিষ্টি খেয়ে পিত্তিরক্ষে করলেম।আহা, বাড়িতে বানানো মিষ্টি আর পুডিংয়ের সে কী স্বাদ। শবরীর মাসি চমৎকার রান্না করেন। বসিয়ে খাওয়ানো শুধু নয়, আমাদের সবার জন্যে নামে নামে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়ে রাতের খাবার প্যাক করে দেওয়া হল।
    বেরোতে গিয়ে আবার ঝঞ্জার ঝংকার ঝংকার। আবার ফিরে এসেছেন রাজরাজ, এবার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি। কিছুটা থামতে বেরোনো হল, কিন্তু বৃষ্টির পুরো বিরাম নেই। এই কমে তো আবার বেড়ে যায়। কোনোক্রমে ওরই মধ্যে এন জে পি স্টেশনে পৌঁছনো হল, তুমুল ধারাপাত তখন। অজস্র লটবহর, গাছপালা, ক্যামেরা ও শিশুদ্বয়।নামতে না নামতেই ভিজে চুব্বুস। স্টেশনের বাইরেটায় দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই স্টেশনময় লোডশেডিং। তখন আর কে কাকে সামলায়, কে মড়মড়ায়, কে পড়পড়ায়, কে-ই বাঁধে দড়ি! ছোট্ট একটা চারাগাছ তো দেখা গেল এই হট্টগোলের মধ্যে কোথায় উল্টে পড়ে গেছে। খোঁজ খোঁজ ! একটি গাছ শবরীর একটি প্রাণ। খুঁজে খুঁজে তাকে গাড়ির পেছনের সীটে পাওয়া গেল, সেই অন্ধকারে। বাব্বা ! এইসব গাছেরা এসেছে সিলারি গাঁও থেকে, পেডং থেকে, কালিম্পং থেকে; জুলুক নেহাতই ন্যাড়া, তাই রক্ষে পেয়েছে। এবার এইসব প্রাণেরা একযোগে রাতের রেলগাড়ি দেবে পাড়ি। হারালেই গর্দান।

    একটু ধাতস্থ হয়ে এসক্যালেটরে চড়া গেল। আমি সর্বাগ্রে, বেশ কয়েক ধাপ আগেই, পেছনে বৌ-রা , শিশুরা, সবার পেছনে সুমন।সকলেই বমালসমেত। হঠাৎ হাউ মাউ চীৎকারে পেছনে তাকিয়ে দেখি, দুই বিশাল বপু অবাঙালী মহিলা, তাঁদের কখনো এসক্যালেটর দেখে অভ্যেস নেই, তাঁরা পপার চ মমার চ হয়ে আমাদেরজনেদের ঘাড়ে। এসক্যালেটর তখন মাঝরাস্তায়, আমি বেশ দূরে, বৌয়েরা চেঁচাচ্ছে, বাচ্চাগুলোর আর্তনাদ, সুমনের গেল গেল রব ! আমার হাত কামড়ানো ছাড়া গতি নেই। ভাবলাম -গেল বুঝি সব ক'টা। কিন্তু কেমন ভাবে যেন ধিঙ্গিপদ'র মত চাট্টি খচরমচর করে সকলেই দু-পায়ে দাঁড়িয়ে গেল। ওভারব্রিজে উঠে কিছু অগ্নিবর্ষী দৃষ্টি হানা আর বাংলাভাষায় বাঙালী-অবাঙালীর তুলনামূলক গ্রাম্যতাতত্ব আলোচনা করা ছাড়া আর বিশেষ কিছু করা গেল না, ঝগড়ায় আমরা সকলেই যে পরিমাণ দড়! তার ওপর রাষ্ট্রভাষায় দখলটাও কেমন একটু ইয়ে মত।

    দাঁড়িয়ে আছি বোঁচকাবুঁচকি নিয়ে ওভারব্রিজের একটুখানি শুকনোমত জায়গা খুঁজে। কিন্তু এরই মধ্যে বৃষ্টির সাথে এসে জুটেছে তুমুল এলোমেলো হাওয়া। বৃষ্টির ছাট একবার এদিকে যায়, একবার ওদিকে। যেখানেই দাঁড়াই , পরিত্রাণ নেই। জামাজুতো-বাক্সপ্যাঁটরা ভিজে একশা। বাচ্চারা ভিজে একশা। ক্যামেরাও, কী জানি... অমঙ্গলের কথা মুখে আনতে নেই।

    কিন্তু সব দুঃখের শেষেই সুখ আসে, সব রাত্রির পরে দিন, সব দুধের শেষে ঘোল; এবং বরষাপীড়িত সকল প্রতীক্ষার শেষে দার্জিলিং মেল। ঐ ভেজা জামাকাপড় নিয়েই আমরা এ সি কোচে উঠে ঘুম দেবো, রাতভর ভেজা জামা কম্বলের ওমে গায়েই শুকোবে। এবং বাড়ি ফিরে এদিকে রাত্তির, ওদিকে সুমনের যাচ্ছেতাই ঠাণ্ডা লাগবে।

    ----
  • sosen | 125.241.26.151 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ১৫:০০599891
  • :) সব দুধের শেষেই ইন্দোদা ঘোল খান----:)
    কি ভাল্লাগলো !
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:৪৯599896
  • ভেজা জামা খুলে পলি-প্যাকে ভরে রেখে দিলে হতো না? পরিবর্তে ব্যাগ থেকে শুকনো জামা পরে নিলে? একটা করে শুকনো গামছা মাথায় জড়িয়ে মাথা মুছে নিলে?

    লেখাটা দারুন হচ্ছে, তারপরে কী হোলো?
  • fsck | 131.241.218.132 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ০৯:৪৫599897
  • কিন্তু ইন্ডো শেষ থেকে শুরু করলি কেন? জুলুক/মানখিম নিয়ে লিখবি না?
  • কৃশানু | 213.99.212.53 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ০৯:৫৪599898
  • বড় ভালো :-)
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১২:২২599837
  • ইন্দো দা শেষ হলো কিন্তু শুরুটা কোই?

    আর সাথে ছবি থাকলে আরো ভালো লাগত, যদিও জানি "সব ছবি তুলে আনা যায় না" তাও
  • raatri | 24.96.121.10 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:১২599838
  • Yan,
    ছানাদের এক সময় রেইনকোট পরানো হয়,আমি একটা তোয়ালে বের করে বড়োদের মাথা মুছতে বলি আর মোটা ভিজে ঝুব্বুস প্যান্টগুলো-ও ট্রেনে উঠে ছাড়ানোর চেষ্টা করি ও জিতে যাই।না হলে আরো দুর্ভোগ ছিল।

    fsck,
    লেখা চলবে বোধহয়।
  • kumu | 132.176.32.39 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:২৬599839
  • খুবি দুক্ষের সঙ্গে লজ্জায় মাথা নীচু করে বলে গেলাম,কেউ পাশে না থাকলে আমিও এসকালেটরে চড়তে পারি না।
    অ রাত্রি,সিঁড়িমিড়ি ছিল না?
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:৩৬599840
  • আমার মা ও পারে না এসকালেটরে চড়তে, কিন্তু তাতে কি ?
  • raatri | 24.96.121.10 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:৪৬599841
  • হিহিহি কুমুদি,সত্যিইইই?কি যে বলো তুমি!!এতো কিছু পারো,এটা আবার একটা না পারার জিনিস হোলো?অনেক সিঁড়ি ছিলো,শুধুশুধু লটবহর নিয়ে তাতে চড়বো কেন??
  • kumu | 132.176.32.39 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ১৮:৪৯599842
  • সেই হাঁটুফ্র্যাকচারের পর থেকে কেমন একটা মেন্টাল ব্লক মত হয়ে গেসে,ভেউউউউ।
  • raatri | 24.99.94.211 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:২৩599843
  • ওহো!!তবে ও সব বাদ দাও!!ও সব চড়ে কেই বা কবে বড়োলোক হয়েছে??
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:২৮599844
  • আমার মা-ও এক কেস। পাশে থেকে হাত ধরে নিয়ে যেতে হয়।
  • সায়ন | 170.83.96.84 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১২:২৫599845
  • এটা কোনওভাবেই নীচে যেতে দেওয়া চলে না। ইন্ডোদা', দু'দিন হয়ে গেল কিন্তু ঃ-/
  • I | 24.96.143.131 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২১:০৬599846
  • আদত যে সিল্ক রোড (অনেকে বলেন রুট) তাই নিয়ে এবারে আমার তেমন ব্ক্তব্য নেই। ও নিয়ে বিস্তর কথা হয়েছে, আমিই অন্ততঃ গোটা দুই টই খুলেছি মনে আছে। শুধু এটুকুই বলা , ইতিহাস-ভূগোল-ধর্ম-কলচর-শিল্প, মরুভূমি-বরফ-জেড পাথর-ল্যাপিস লাজুলি-সিল্ক ব্রোকেড-পোর্সেলিন-ব্যাক্ট্রিয় উট-লেক ইসাক কুলের ঘন নীল জল-তুরফানের ফ্লেমিং মাউন্টেনের ঘোর লাল রং, চীনা-উইঘুর-মঙ্গোল-কুশান-গ্রীক-রোমান-পার্সিয়ান-তুর্কী- আফগান-উজবেক,কারাকোরাম-পামীর-বলখ-বামিয়ান-সমরখন্দ-তিয়েন শান-তাকলা মাকান-ইউরেশিয় স্তেপ ইত্যাদি মিলিয়ে যে হযবরল হিজিবিজি, যাকে গরীবরা মহাকাব্য বললে হাল্কা করে ক্লিশে লাগলেও বড়রা অতটা বকবে না, সেইখানে একদিন যে হাঁটবোই হাঁটবো, এ বিষয়ে আল্লাতালার ওপরে বিশ্বেস আমি ষোল আনার ওপরে আঠারো আনা এই কলিজায় জমিয়ে রেখেছি। এই বেড়ানোডা আসলে তারই একটা ট্রেলার হিসেবে ধরতে পারেন।

    আসল ইচ্ছে অবিশ্যি ছিল ডুয়ার্স। বলতে বক্সা-জয়ন্তী। কিন্তু শবরীর আবার জঙ্গলভীতি, না জানি হাতির পিঠ থেকে পড়েটড়ে যান, দুষ্ট রাগী প্যাঁচা কিম্বা পাগলা কাটবেড়ালী এসে ঘ্যাঁক করে কামড়ে দিলেন, বলা তো যায় না- চেতল হরিণ কখন কোন ঝোপেঝাড়ে বদ মতলবে লুকিয়ে থাকে, আগে থাকতে সাবধান না করেই গাঁউ ! বলে চিক্কুর দিয়ে ওঠে, তাতে কারো কারো আবার অনবরত তিনদিন হিক্কা উঠতে থাকে-সে বড় আতান্তর। থাক বাবা, কাজ নেই গিয়ে। তখন ব্ল্যাংকি বললেন পুরনো সিল্ক রুটের কথা। মনে মনে তাক করাই ছিল। লাগিয়ে দিলাম।

    সিল্ক রুটের এই ছোট্ট অফশুট এখনকার পুর্ব সিকিম ও দার্জিলিং জেলা জুড়ে ছড়িয়ে -ছিটিয়ে আছে (এসব অবিশ্যি অনেকেরই জানা, তবে তাই বলে লিখতে ভুললে হবে না। লোকে বলবে , দ্যাখো , ছোঁড়াটা বেড়াতে যায়, অথচ ল্যাহাপড়া একদম করে না)। কালিম্পং -পেডং হয়ে এই রাস্তা একদা জেলেপ লা হয়ে তিব্বতে ঢুকে পড়ত। ভারত-ভুটান-তিব্বত তিন দেশের সীমানা বরাবর গিয়ে রাস্তাটি তিব্বতের চুম্বি ভ্যালি হয়ে পৌঁছত ইয়াটুংয়ে-সেখান থেকে সিধে নাক বরাবর লাসা। রাস্তায় পড়ত ফারি ও গিয়ানৎসে (তিব্বতের অন্যতম বড় মনাস্টারি)। '৫৯ সালের আগে অবধি , অর্থাৎ যে বছর চীন তিব্বত অধিকার করে ও দলাই লামা ভারতে পালিয়ে আসেন, ভারতের পোস্ট অ্যাণ্ড টেলিগ্রাফ বিভাগের অফিস ছিল গিয়ানৎসে অবধি। বহু ভারতীয় ব্যবসায়ীর ( মূলতঃ মারোয়াড়ি) তিব্বতের ঐ সব এলাকায় পার্মানেন্ট বাড়ি ইত্যাদি ছিল। পঞ্চাশের দশকের শুরু অবধি তিনটি কালিম্পং-বেসড বেসরকারী ব্যাংক তিব্বতে বেওসা করে খেত, এতই শক্তপোক্ত ছিল বাঁধন। এইসব রাস্তা দিয়ে বাণিজ্য হত উল, কস্তুরী, ইয়াকের লেজ ও চামড়া, মশলাপাতি, সুতীর জামাকাপড়-এইসব। তখন কে আর জানত , একদিন চীনে নেবে তারে। আজো জেলেপ লা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

    আরেকটি যে রাস্তা সিকিম হয়ে গিয়েছে, তার অবশ্য কপাল তেমন মন্দ না। এই রাস্তা গেছে রংলি-লিংটাম-জুলুক হয়ে , কালিপোখরি ও নাথাং ভ্যালিকে বাঁ পাশে ও টুকলা ভ্যালিকে ডান পাশে রেখে কুপুপ হয়ে নাথু লা।পথে পড়ে সেই বিখ্যাত জিগ জ্যাগ,থাম্বি ভিউ পয়েন্ট,আদি বাবা ধাম, এলিফ্যান্ট লেক, ও নাথু লা পেরিয়ে আর একটু এগোলে ছাংগু লেক। ১৯৬২'র চীন-ভারত যুদ্ধের সময় থেকে এই রাস্তাটি বন্ধ ছিল, বেশ কয়েক বছর হল খুলেছে। তাই নিয়ে সিকিম জুড়ে সাজ সাজ রব। বাণিজ্য কদ্দূর এগিয়েছে জানি না, তবে পর্যটন অতি অবশ্য এক পা এক পা করে এগোচ্ছে।
  • I | 24.96.143.131 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২১:২৬599848
  • ম্যাপ ক্যামনে পোস্ট করে জানা থাকলে আমিও দিতাম ঝাঁ করে দুইখান ম্যাপ ঠুকে।
  • siki | 132.177.166.242 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৩০599849
  • jpg দিয়ে শেষ হলে সোজা লিংটা এখানে ইংরেজিতে পোস্ট করে দাও। JPG দিয়ে শেষ হলে ওটুকু পাল্টে লোয়ারকেস করে দাও।
  • I | 24.96.143.131 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২২:৩৮599850
  • এইসব কার্যকারণ সম্পর্কে একদিন ভোরবেলা ধাঁ করে গিয়ে হাজির হলাম এন জে পি স্টেশনে। পদাতিক এক্সপ্রেস ধরে। জনরব, আমাদের সঙ্গেই নাকি এসেছেন রাজ্যপাল স্বয়ং। তা একগাদা পুলিশ ও বেশ কিছু ব্ল্যাক ক্যাট দেখলাম বটে। এমন কি শ্যালদা স্টেশনে গাড়ি ঢোকার ঠিক আগে আগে ডেটল-ফিনাইল দিয়ে রেল লাইন ধোয়ানো-ও হল। কিন্তু পুলিশ কুকুর দিয়ে চাটানো (প্যাসেঞ্জার, রেল -লাইন নয়) ইত্যাদি না হওয়াতে মোটামুটি স্বস্তিতেই গাড়িতে উঠে বসা গেল। ভোরবেলা উঠে অবশ্য পুলিশের তেমন তম্বি আর দেখা গেল না। শুনলাম, রাজ্যপাল মালদায় নেমে গেছেন।
    তা বলে অবিশ্যি রাতটা শান্তি-স্বস্তি ও আর যা যা ভালো জিনিষ হয়, সেসবে দিব্যি কেটে গেল ভাববেন না। টুংকাই এই প্রথম বেড়াতে বেরিয়ে পৃথক বার্থের অধিকারী হয়েছে এবং হবি তো হ, সেটি আবার আপার বার্থ। আর সে কিছুতেই তার অধিকার ছাড়তে রাজী নয়। ছেড়েই বা তেমন লাভ কোথায়, লোয়ার বার্থ যদি একান্তই না থাকে, তবে ঐ মিডল বার্থ আর সাইড আপার -ও দুইই সমান বিধায় তার দাবী মেনে নেওয়া গেল। যেন না মেনে কোনো উপায় ছিল। সে হোক, চুপচাপ শুয়ে থাকলে তাও কথা নেই, মিনিটে মিনিটে তার বাথরুম যেতে হয়, জুতোর নজরদারী করতে হয়, লোকজন এত যাতায়ত করছে কেন, খালি বাথরুম যায় (টুংকাইকে দেখেও শেখে না)-এতে ঘুম হয় নাকি, এঃ, আমার পর্দাটা ঠিক টানা হয় নি- চোখে আলো পড়ছে, বিছানার চাদর কুঁচকে গেছে, কম্বলে গরম লাগছে, চীজ, ও চীজ, তোমরা কী করছ, ঘুমোচ্ছো-এই করেই রাত গেল কেটে। মনে হল এত লোকের এত নীরব অভিসম্পাত মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে কস্মিন কালেও কুড়োতে হয় নি, ডাগদারি করেও না। যা-ও একটু ভোরের দিকে চোখটা লেগে এসেছিল-হঠাৎ এক দড়াম ফলোড বাই হাউমাউ শব্দে তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠলাম। প্রথমে ভাবলাম, আমারটাই পড়েছে, তারপর দেখি সে তার বার্থ থেকে মাথা বের করে প্যাটপ্যাট করে তাকাচ্ছে। অন্য বার্থের একটি দশ-বারো বছরের ছেলে ওপর থেকে পড়ে গেছে, তার বাবা তাকে জড়িয়ে ধরে বাবাই! বাবাই ! বলে পিঠ মালিশ কচ্ছেন, আর সে তারস্বরে চেঁচাচ্ছে- উঃ উঃ, এই জায়গাটায় পেন করছে, ভালো করে রাব করে দাও ইত্যাদি। আমারো দুর্ভাবনা হল, না জানি কী হল, স্পাইনাল কর্ডেই লাগল না কি।। বাকিদের অবিশ্যি-ছেলের মা-দিদিমা/ঠাকুমা, কাকা-কাকী ইত্যাদি কারো হায়-আপশোষ নেই, সকলে ফোঁড়ৎ ফোঁ করে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে, জেগে শুধু বাবা ও ছেলে, আর এদিকে আমার ছেলে ও তার বাবা। খানিক পরে অবশ্য তার পেন করা থেমে গেল, সবাই আবার শান্ত -টান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেল। আমার আর চোখে ঘুম এল না। আমার ছেলেরও-বলা বাহুল্য- না।
  • kumu | 132.161.145.212 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২২:৫৯599851
  • রে রে ডাগদার,কাঠবেড়ালী পাগল হয়?যাই এগবার কলিতে,দেকাচ্চি মজা।
  • সায়ন | 59.249.33.204 | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ২৩:২১599852
  • হয় বৈকি, এই দেখুন --
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ০১:০৭599853
  • একদিন চীনে নেবে তারে :-)
  • I | 24.96.34.144 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ০১:১১599854
  • সকালবেলা এন জে পি স্টেশনে নামার একটু আগে আমাদের ড্রাইভারসাহেব ফোন করে জানালেন, তিনি স্টেশনে আসতে পারছেন না, তাঁর নাকি সিকিমের পারমিট, পশ্চিম বঙ্গে গাড়ি চালানোর অধিকার নেই, ধরতে পারলেই চার হাজার টাকা ফাইন, বিশেষ সেদিন চেকিং চলছে। তাহলে? তাহলে অবশ্য চিন্তার তেমন কারণ নেই, স্টেশনেই আট জনের অটো পাওয়া যায়, তেমন একটা অটো ধরে আমাদের চলে যেতে হবে সোনা পেট্রল পাম্প, সেখানেই তিনি গাড়ি নিয়ে থাকবেন; ভাড়া যা লাগে , তিনিই দিয়ে দেবেন।

    তাই গেলাম। রাস্তার ওপরেই দাঁড়িয়েছিলেন ড্রাইভার দাওয়া তামাং, কিভাবে আমাদের চিনলেন কে জানে, হাত নেড়ে অটো থামাতে বললেন। সেখান থেকে গাড়িতে ফগ লাইট লাগাতে যেটুকু সময় লাগে, আমরা যাত্রা শুরু করলাম আরিতারের রাস্তায়।

    গাড়ি চলল সেবক রোড দিয়ে; আবার সেই মহানন্দা স্যাংচুয়ারি, আবার সেই শালের জঙ্গল, হঠাৎ খুশি, "পাহাড় এসে গেছে" মনে হওয়া, এক্ষুণি কোনো একটা জন্তু-হাতি কি হরিণ রাস্তার মধ্যে এসে দাঁড়াবে মনে হওয়া । টুংকাই ও ইমুর ততক্ষণে বেশ ভাবটাব হয়ে গেছে, তখন তারা গাড়িতে উঠে ঘুমোচ্ছে নাকি সদ্য ঘুম থেকে উঠে হাল্কা ঝগড়ায় ব্যস্ত এখন আর মনে পড়ছে না। ওদের ডেকে বলি, এই দ্যাখ শালের জঙ্গল, এই দ্যাখ বুড়ো শাল গাছেদের মনে হয় পুড়িয়ে দিয়েছে, এই ছাইয়ের মধ্য দিয়ে কচি শালের চারা উঁকি দিচ্ছে দেখে নে, এমন সবুজ আর দেখতে পাবি না; দেখে রাখ; এমন অক্সিজেন পাবি না,বুক ভরে শ্বাস নিয়ে রাখ, কাজে দেবে।

    দাওয়া সায়েব বললেন, নাকি রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে, কোথায় একটা আটকে থাকতে হবে ঘন্টাখানেক, কোন জায়গা তার আর নাম মনে নেই। যথাসময়ে সে জায়গা এসেও পড়ল, সার দিয়ে গাড়িরা সব দাঁড়িয়ে রয়েছে, শশা-ঝালমুড়ি-ইত্যাদির ব্রিস্ক বিক্কিরি হচ্ছে। ঝালমুড়ি খেতে প্রাণ আঁকুপাকু করছিল, রাত্তিরদিদি কিছুতেই খেতে দিলেন না, তাই শশাই খেলাম। ভাবিস না বৌয়ের ভয়ে শশা খাচ্ছিস,কচি শশা ঝালমুড়ির থেকে খেতে খারাপ নাকি, আর কত পুষ্টিগুণ ! মনকে এইসব বোঝালে মন খুব ভালো ছেলে, সুবোধ বালক, মন দিয়ে সব শুনল।
    তাছাড়া একটু হাল্কা গরমও লাগছে, যদিও বেশ খানিকটা পাহাড়ে উঠে এসেছি। প্রথমবার পাহাড় বেড়ানোর কথা মনে পড়ে যায়, সেই চিরকেলে চেনা লোকের দার্জিলিং-কিন্তু আমার তো প্রথম, পাহাড়ী রাস্তায় কিছুদূর উঠে আসতেই হি হি করে ঠাণ্ডা লাগে- তারপর তো কতবার পাহাড়ে গেলাম, সেই আনন্দ আর পেলাম না।

    ম্যাপে দেখছি শিলিগুড়ি থেকে রাস্তা গিয়েছে মংপু থেকে কালিম্পং হয়ে লাভার ওপর দিয়ে পেডং পেরিয়ে রেশিখোলা হয়ে আরিতার। কিন্তু যাওয়ার সময় তো এইসব জায়গা পেরিয়ে গেছি বলে মনে আসছে না। আমরাও ভ্যাবা গঙ্গারামের মত বসে ছিলাম, জিগ্গেস করিনি তেমন। কিম্বা হয়তো অন্য কোনো শর্ট কাট ছিল। কে জানে।

    পাহাড়ে এখনো রডোডেনড্রনের লাল আগুন জ্বলে নি, এদিক ওদিক ইতিউতি কিছু গাছে অল্প কিছু ফুল এসেছে মাত্র। ম্যাগনোলিয়া ফুটেছে, সাদা ম্যগনোলিয়া কিছু কিছু , ঐ বিশাল বিশাল গাছ দেখা যাচ্ছে না, আর ফুলের সেই হাল্কা সুগন্ধ হাওয়ায় ভাসে নি এখনো তেমন করে।বাঁশবন-কলাগাছ এদেরি আধিক্য। এত উঁচুতে উঠে আসি নি যে পাইন আর সিলভার ফ্লারের জঙ্গল শুরু হয়ে যাবে। এইসব সাত-পাঁচ ভাবতে না ভাবতে চালক পাকা রাস্তা ছেড়ে একটা ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে উঠে এসে ঘ্যাঁচ করে ব্রেক কষে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন,বলেন- লিজিয়ে ! আগয়ে হাম আরিতার।

    এই নাকি আরিতার ! একটা ভাঙা মত রাস্তা, তার একপাশে একটু নীচের দিকে দুটো কুঁড়ে, অন্যপাশে একখানা আখাম্বা আধা-কমপ্লিট দোতলা পাকাবাড়ি। কোথাও একতা গ্রামটামের আভাস অবধি নেই। সামনেই অবশ্য জমকালো একটা সবুজ রঙা বাড়ি, তেতলা কি চারতলা হবে, নিচের দুটো তলা পাহাড়ের ঢালে দাঁড়িয়ে আছে তাই চোখের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড-হোটেল আদিত্য।

    আকাশ এতক্ষণে মেঘলা, রোদের সেই জেল্লা আর নেই, হালকা ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে, হোটেল আদিত্যর সামনের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রেলিংয়ে ভর দিয়ে এক ঝকঝকে মহিলা ও আর এক ভদ্রলোক-দুজনেই নেপালী - কফি অথবা চায়ের কাপে সিপ করছেন। দেখেই মন ভালো হয়ে গেল। মনে হল এক্ষুণি এক কাপ কফি খাওয়া দরকার। এই তো পাহাড়ী ঠাণ্ডা , এই তো বেড়ানো শুরু হল, আগামী কয়েকদিন আর রোগী দেখতে হবে না, নিরবচ্ছিন্ন ছুটি, নিরবচ্ছিন্ন হিমালয়। মহিলা একমুখ হেসে বললেন-যেন অনেককালের চেনা-"আসতে তো খুব দেরী হল না ! জ্যামে বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নি, না?" খানিকক্ষণ পরে জানতে পারবো, এঁর নাম গীতা প্রধান, নেটে এঁর নাম দেখেছি, ইনিই হোটেল আদিত্য'র মালকিন।
  • ....... | 24.139.211.2 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ০৯:৫১599855
  • তারপর
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ১২:০১599856
  • তারপরে?
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ১২:০২599857
  • মান্খিম এ গেছিলে? সেই ভিউ পয়েন্টাতে ? আর সেই পাহাড়ের ওপরে মন্দির্তায়?
  • I | 24.96.41.117 | ১৫ এপ্রিল ২০১৩ ২০:০৮599859
  • লাগেজ তোলার আগে আমাদের অপশন দেওয়া হল-কোথায় থাকবো! সবুজ চারতলা বাড়িটি আদিত্যর মেইন বিল্ডিং, অসমাপ্ত দোতলাটি তার অ্যানেক্স। কিন্তু মেইন বিল্ডিংয়ের দোতলায় থাকতে গেলে জানলা খুললে ঘর-দোর, তিনতলা-চারতলা ডিলাক্স , সেগুলো আবার আমাদের দেওয়া যাবে না। বরং অ্যানেক্সে থাকলে একটু খোলামেলা, আকাশ ও পাহাড় দেখা যায়,অবশ্য কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়। আর হ্যাঁ, খেতে যেতে হবে কিন্তু মেইন বিল্ডিংয়ে (রাতের ডিনার বাদে); ঢিল-ছোঁড়া দূরত্ব যদিও। তাই সই। আমরা অ্যানেক্সই নিলাম। দোতলা বাড়ির নিচের তলায় একটি পরিবার থাকেন, বেশ সম্পন্ন। গীতা প্রধানেরই কিনা জানা নেই। তাঁদের দুটি বাচ্চা ক্রমাগত বেরিয়ে আসছে রাস্তায়, তাদের সঙ্গী একটি ঝাঁপালো কুকুর। পরে জানবো তার নাম বইনি, সে আমাদের বাচ্চাদের সঙ্গেও বেশ জমিয়ে নেবে। আমি যদিও কুকুর দেখলে ঠিক ইয়ে বোধ করি না, তবু ঐরকম লোম ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চোখ ঢাকা কুত্তো দেখলে বেশ একটা ভালো ইয়েই হয়, শক্তির দিব্যি। মানে কুত্তোকসম।

    সিঁড়ির ধাপে ধাপে পাহাড়ী নিয়ম মাফিক দারুন ঝলমলে রংওলা ফুলের টব সাজানো রয়েছে। বাড়ির সামনেও ফুলের টব; টব ছাড়াই মাটিতেও গাদা ফুলগাছ। এক লিলিরই কতরকম রংয়ের ছটা। দোতলার জানালা খুললেই দূরের পাহাড় , সবজে ও নীল। কিছু এদিক -সেদিক গাছপালা;পাহাড়ের ঢাল আলগা হয়ে নেমে গেছে, তাতে অল্প কিছু খেতি। রাস্তার ওপাশে একটি কুঁড়ে। আর সবকিছুর ওপর দিয়ে একটি ইলেকট্রিকের বেখাপ্পা তার তেরিয়া হয়ে চলে গিয়ে ছবি তোলার চব্বিশ বাজিয়ে বসে আছে।

    স্নান করে বেশ আরাম হল। এবার আমরা খেয়েদেয়ে যাবো লামপোখরি লেক দেখতে। ড্রাইভার তামাং এরই মধ্যে আমাদের থেকে মাথাপিছু দু কপি ছবি ও আইডেন্টিটি প্রুফের ফটোকপি নিয়ে গেছেন, পরদিন জুলুক যাওয়ার পারমিট করিয়ে রাখবেন রংলি থেকে।

    খাবার ব্যবস্থা যে অসামান্য , তা নয়। এমনি ভাত-ডাল- তরকারি- মাছ। সঙ্গে আচার। কিন্তু খিদের মুখে তাই অমৃত লাগল। খুবসে খেলাম। বাচ্চারা ভাত নষ্ট করাতে গীতা প্রধান আবার আমাদের ডেকে বকে দিলেন। মুখে সর্বক্ষণ হাসি ঝুলিয়ে রাখলে কি হবে, আসলে বেশ কড়া মালকিন ।

    এবার চলো তবে লেক লামপোখরি। আকাশ কিছু ক্লাউডি কিছু সানি। ক্যামেরাট্যামেরা বাগিয়ে একদম মিমসে বোরোগেবের মতনই গ্যাবগেবিয়ে চলেছি সবাই মিলে, সবার আগে আগে বাচ্চারা। দু পা যেতে না যেতেই সকল ক্লান্তি-দূর করা পাহাড়ী জঙ্গলের সারি শুরু হল। এদিক-সেদিক দিয়ে টুকটাক আরিতার গাঁয়ের কিছু আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একটু দূরে একটি বাড়ির জানালায় একটি বাচ্চা মেয়ে কৌতূহলী উঁকি দিল, ক্যামেরা তাক করতে না করতেই চোখদুটো ভ্যানিস। এখানকার বাঁশঝাঁড় দেখে সকলে বেশ সপ্রশংস-কেমন মোটা আর নীলচে।বাঁশের কোঁড় খাওয়ার গপ্পো এলো, মায়েরা খেয়েছেন শুনতে পাই। আমাদের অবিশ্যি ঐ পাকা তেলালো বাঁশ অবধিই দৌড়।

    খানিকদূর গিয়েই প্রচুর পাখপাখালির আওয়াজ। মানে আওয়াজ ঠিক নয়, কলরব। সে যায়গাটা আবার একটু ফাঁকামত, রাস্তার বাঁদিকে একটুখানি সবুজ ঢাল, আশেপাশে প্রচুর মন্ত্রলেখা বুদ্ধিষ্ট পতাকা হাওয়ায় পতপত করে উড়ছে। সেখানে এসে রাস্তা দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে, একটা ঢালু হয়ে নেমে গেছে, অন্যটা খাড়া উঠে গেছে। জলের ধারে "নামতে হয়'', তাই আমরাও সহজ বুদ্ধিতে গড়গড়িয়ে নেমে চল্লাম। বেশ খানিকটা গিয়ে মনে হল , ব্যাপারটা অত সহজ নাও হতে পারে, কেননা এখনো লেকের দেখা নেই ( লোকে বলেছিল লেক কাছেই), আর পাখির কলরবও কেমন যেন দূর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বনপথ দিয়ে এক মহিলা উঠে আসছিলেন, তাঁকে ধরা হল। উনি বললেন- সে কি ? সে রাস্তা তো ছেড়ে এসেছেন। কেন, দেখেন নি? ঐ যে ওপরে উঠে গেছে রাস্তা, তার সামনে বোর্ড লাগানো- "আরিতার লেক'' বলে ?

    বোঝো কাণ্ড ! হ্যাঁ , বোর্ড একখানা টাঙানো ছিল বটে, তাতে লেখাও ছিল ঐ জাতীয় কিছু, কিন্তু সে তো দুরাস্তার মাঝখানে। লেক এইদিকে- বলে তির-টির কিছু ছিল বলে তো মনে পড়ছে না। আর জলে যেতে গেলে যে উঠতে হয়, এমন উল্টো রাজার দেশে এসে পড়েছি কে বা জানত ! আবার একরাশ চড়াই, ইদিকে মেঘ করে আসছে, আলো পড়ে আসছে, পাখিদেরই বা কী খবর কে জানে ( তখনো আমাদের মনে আশা ভরতপুর/ চিলিকা সদৃশ কোনো পক্ষীনিবাসে চলেছি বুঝি সেখানে রাশি রাশি পাহাড়ী ও পরিযায়ী পাখিতে গিজগিজ করছে) !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন