এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সাহিত্যে একালেও সাধু বাংলা ব্যবহারের ইতিবৃত্ত যা জানেন একটু বলে সাহায্য করবেন?

    সুশান্ত
    অন্যান্য | ১০ অক্টোবর ২০১২ | ১০২৮ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুশান্ত | 127.203.168.28 | ১০ অক্টোবর ২০১২ ২২:১৫575268
  • এটি একটি নির্মিয়মান লেখার খসড়ার অংশঃ
    “এই মেয়েটিরে লইয়া তাহার ভিতরে ময়ূরপঙ্খের তুল্য আকাশ; বৃষ্টির বিন্দুমাত্র চিহ্ন নাই, অথচ কান্দিতে আছে—যা এই হাৎকা হইয়া উঠা নাগরেরা চোখের নাগালে পায় না। তাই মস্করা ইত্যাদি, মণ্টু ঘোষের দোকানে, বিপ্রকে স্পর্শে না। গ্যাঁজাইবার বিষয় অভাব হইলে , যদিও ইয়েনান বক্তৃতা হইতে লোডশেডিং পর্যন্ত হাজার বিষয়, তবু মেয়েটির বৃত্তান্ত একা ঘুরিয়া বেড়ায়।
    এবং গ্যাঁজাইবার আবেগ ক্ষীণ হইলে, বিপ্র ভূমিকাহীন প্রস্থান করে। ঘোষের দোকানে ইহা নিত্য ঘটনা, বিশদে বলিবার কিছু নাই। যদিও পরবর্তী ঘটনা সকলের গোচরে ঘটেনা, উহা কমলিনীর পাঠক্রম।”—এভাবেই শুরু হয়েছে পল্লব ভট্টাচার্যের উপন্যাস ‘কমলিনীর উপাখ্যান’ । উপন্যাসটি কমলিনীর পাঠক্রমই বটে। আশির দশকের মাঝামাঝি ১৯৮৫-৮৬তে পল্লব যখন সদ্য কৈশরোত্তীর্ণ তরুণ, তখন লেখা এই উপন্যাস ছেপে বেরিয়েছে এই সেদিন ফেব্রুয়ারি, ২০১২তে। বের করেছেন ত্রিপুরার বিখ্যাত প্রকাশক অক্ষর। কিছু কিছু লেখা আছে লোককথার সেই কচ্ছপের মতো এগিয়ে গিয়ে পাঠকের দরবারে পৌঁছোয়। পল্লবের উপন্যাসটি তাই। খুব পরিচিত নয়, কিন্তু আমি নিশ্চিত যারা পড়ে ফেলেছেন একবার কমলিনীর প্রেমে পড়ে গেছেন, নিশ্চিত। কমলিনীর তাঁর ভাবনাকে গ্রাস করবে, এবং ‘বৃত্তান্ত একা’ ঘুরে বেড়াবে। আমাদেরও তাই হয়েছে। কেন, বলছি।
    তার আগে জানিয়ে দিই, পল্লব ত্রিপুরা নিবাসী। পূর্বোত্তরের বাংলা কথা এবং কবিতা সাহিত্যে তিন দশক ধরে এক পরিচিত এবং সম্মানিত নাম। যারা সাহিত্য পাঠ করেন নিত্য, তাঁরা পল্লবের লেখা না পড়ে ফেলে রাখেন না। নিত্য পাঠ যাদের অভ্যাসে নেই তাঁরা হয়তো তাঁর নাম জানেন না তেমন, কেননা পল্লব প্রচার যেদিকে-- হাঁটেন তাঁর উল্টো পথে। যে পথে কমলিনী হাঁটে । একা নিঃসঙ্গ।
    কিন্তু এ কেমন ভাষা, ‘কান্দিতে আছে’, ‘গ্যাঁজাইবার’? এহ বাহ্য! আরো আছে। এই যেমন, “...পরনের ফিরোজ লুঙ্গিটি হাঁটুর উপর গোটানো , খালি গা, মাথায় গামছা বান্ধিয়া, তাহার বয়সি যে, এই মাত্র চাউলের বস্তাটি ট্রাক হইতে নামাইয়া, উহাদের মধ্যে আইয়া বইল, কয়দিন আগে মাত্র বিহার হইতে আইয়াছে।” কিম্বা “...বুজিবা চুকুমবুদাই, দূর রাস্তার দিকে চাহিয়া , কিছুই দেখিতেছে না, এমন দাঁড়াইয়া রহিল।” নজির লিখে গেলে তালিকা দীর্ঘ হবে। প্রশ্নটা উঠবেই। এ কেমন ভাষা। তাই লিখছি, যিনি পড়বেন তাঁর ‘বৃত্তান্ত একা’ ঘুরে বেড়াবে। যিনি লিখেছেন তাঁরতো বটেই। কারণ আরো আছে , কিন্তু এগুলো শুরুর কথা। কোন এক জায়গা থেকে শুরুতো করতে হবে।
    এই ভয়ে আমি উপন্যাসটি আর কাউকে পড়তে দিই নি, অথচ এটা আমার স্বভাব --ভালোলাগা ভাগ করে নেয়া। এখন যখন লিখতে বসেছি তখনো মনে হচ্ছে এই জবাবদিহির দায়িত্ব এড়িয়ে এক পাও এগুনো যাবে না। আমাদের এলাকার, একালের পাঠক এই ভাষার সঙ্গে পরিচত বটে । কিন্তু তিনি জানেন এই ভাষাতে আজকাল আর উপন্যাস কেন কোনো কিছুই লেখা হয় না তেমন। তার উপর তিনি যে বাংলা সাধু ভাষাকে জানেন সেটি সংস্কৃতপ্রায় তৎসম শব্দ বহুল। সেই ভাষাটিকে বিদ্রূপ করে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ সেই আদ্যিকালেই লিখেছিলেন“সংস্কৃত বাংলা অর্থাৎ যাকে আমরা সাধুভাষা বলে থাকি তার মধ্যে তৎসম শব্দের চলন খুবই বেশি। তা ছাড়া সেই-সব শব্দের সঙ্গে ভঙ্গির মিল করে অল্প কিছুকাল মাত্র পূর্বে গড়-উইলিয়মের গোরাদের উৎসাহে পণ্ডিতেরা যে কৃত্রিম গদ্য বানিয়ে তুলেছেন তাতে বাংলার ক্রিয়াপদগুলিকে আড়ষ্ট করে দিয়ে তাকে যেন একটা ক্লাসিকাল মুখোশ পরিয়ে সান্ত্বনা পেয়েছেন; বলতে পেরেছেন, এটা সংস্কৃত নয় বটে, কিন্তু তেমনি প্রাকৃতও নয়। যা হোক, ওই ভাষা নিতান্ত অল্পবয়স্ক হলেও হঠাৎ সাধু উপাধি নিয়ে প্রবীণের গদিতে অচল হয়ে বসেছেন। অন্ধভক্তির দেশে উপাধির মূল্য আছে।”(বাংলা শব্দতত্ত্ব > বানান-বিধি) চলিত ভাষা , যাকে আমরা ভুল করে কখনো বা ‘মুখের ভাষা’ বলেও জানি, তাকে সাহিত্যের এবং সভার ভাষা হিসেবে দাঁড় করাবার কৃতিত্বটাও আসলে রবীন্দ্রনাথেরই, সঙ্গে ছিলেন প্রমথ চৌধুরী। এই জুটির প্রায় এক শতক পরে সেকালের সেই কৃত্রিম ভাষাতে উপন্যাস লেখা উচিত কী?-- এই প্রশ্নটি পল্লবের উপন্যাস পড়তে গেলে শুরুতেই উঠবে। তার উপর ওই ‘চাউল’, ‘চুকুমবুদাই’র মতো শব্দগুলো দেখে এই প্রশ্নও উঠবে , তিনি বাংলা ভাষাটি জানেন তো?
    পল্লব নিশ্চয়ই জানেন, আমরাও জানি। শুধু জানাটা লুকিয়ে গেছে প্রতাপ লব্ধ কিছু অভ্যাসেই আড়ালে। চারপাশের বাস্তবতা । চাউল, কয়দিন, আইয়া বইল –এগুলোর সবটাই আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহৃত বাংলা ভাষা। আর রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত ভাষাটিও আমাদের মুখের বাংলা নয় আদৌ। যেখানকার এ মুখের ভাষা সেখানকার বই পত্তর পড়তে পড়তে সংস্কারটা আমাদের দাঁড়িয়ে গেছে মাত্র। এমনিতেও সাধু বাংলার ব্যবহার কমে গেলেও উঠে কোনদিনই যায় নি। শরৎ চন্দ্র , তারাশঙ্কর , বিভূতি ভূষণেরেয়া দিব্ব্যি চালিয়ে গেছিলেন এর ব্যবহার। ফুরিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছিল যখন তখন একে প্রায় পুনরুজ্জীবিত করলেন এসে প্রথমে জীবনানন্দ এবং পরে কমলকুমার। কমলকুমার ফিরে গেলেন, মাইকেলী যুগে—এমনটা অনেকে বলে থাকেন। আমাদের সন্দেহ আছে। তত দাঁত খটমট যুক্তাক্ষর বহুল বাংলা তিনি তেমন ব্যবহার করেন নি, বরং তাঁর পরীক্ষা নিরিক্ষা ছিল সাহেবী বাংলার বাক্য গঠন অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার। কতটা পেরেছেন,সে অন্য বিতর্ক। কিন্তু করেছিলেন সেরকমই।
    রবীন্দ্রনাথ এবং প্রমথ চৌধুরী আশা করেছিলেন ‘কলকাতা’তে যেহেতু ভীড় করেন গোটা বাংলার বাঙালি, তাই ওখানকার ভাষা হয়ে উঠবে বাঙালির ভাষা। কিন্তু এটি হয়ে উঠেনি তেমন। দেশটিও ভাগ হয়ে দু’ভাগ হয় নি শুধু চার বা তারও বেশি ভাগ হয়েছে। এখনা আর বাংলার বৈচিত্র শুধু নয়, জেলার । বরং রাষ্ট্রের এবং প্রদেশের। অসম-ত্রিপুরার বাঙালিও যে বাঙালি—পুথিপত্তর সেই সত্য আড়ালে ঠেলে দিতে চাইলেও কথাটা সত্য। কলকাতার বাংলা পড়ে -শোনে বোঝেন যারা তাঁরা বিদ্বান। কিন্তু লিখতে বলতে পারেন না, অধিকাংশ বাঙালি। তাদের কাছে চলতি কিম্বা ‘মুখের ভাষা’টিও আসলে এক কৃত্রিম ভাষা, চাপানো ভাষা। আমাদের এলাকার, একালের বাঙালি সম্পর্কেও কথাটা খুবই খাঁটি। যিনি পড়েন ‘ইয়েনান বক্তৃতা’ কিম্বা লুসুনের কবিতা, কিম্বা ডকু ফিল্ম করেন, ‘পভার্টিঃ কজ অফ ইণ্টারনেল মাইগ্রেশন’ নিয়ে তিনিও ‘চলিত বাংলা’ বিশুদ্ধ বয়নে উচ্চারণে বলতে লিখতে পারেন না মোটেও। সেই বাঙালির গল্প ‘কমলিনীর উপখ্যান’। তাই তাঁরা যখন তাঁর উপন্যাসে চরিত্র হয়ে উঠে আসেন, তখন রবীন্দ্রনাথের নির্দেশে নিজেদের ভাষাকে ছেটে উঠে আসেন নি, এসছেন সঙ্গে নিয়ে। অবিকল , অকৃত্রিম। ব উপন্যাসের আর প্রতিটি উপকরণ যেমন শিল্পের দাবি মেনে এসছে, মিশেছে, নবরূপ নিয়েছে –এর ভাষাটিও তেমনি। ঠিক তাই, কি? আমরা কি তবে সাধু বাংলাতে কথা বলি? নয় বটে, কিন্তু ‘সাধু বাংলা’ কথাটাও উনিশশতকী নির্মাণ ।ভাষাটি তার আগেও ছিল। আমাদের বৈষ্ণব সুফি কাব্যের ভাষা দেখুন, দেখুন পাঁচালী-মঙ্গল কাব্যগুলোর ভাষা। এ যেন প্রাদেশিক বৈচিত্রকে এক সুতোতে বাঁধতে বাঁধতে আপনিই গড়ে উঠছিল সারা বাংলার সাহিত্যের ভাষা হিসেবে। না ছিল কোনো ব্যাকরণের নির্দেশ, না ছিল কোনো শুদ্ধিকরণের সূচিবাই। তার নাম ছিল, দেশি ভাষা। বানান, শব্দপ্রকরণ, বাক্যগঠনের চরিত্রের সবটাই ছিল দেশি।সংস্কৃত বা তৎসম নয়। পল্লব সেই রীতি মেনে লিখেছেন উপন্যাস। মুখের শব্দ তিনি বসিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথও না বসিয়ে থাকেন নি। সেই যে ‘দেখলুম, খেলুম, গেলুম’ ক্রিয়াপদগুলো—নিতান্তই ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘উপভাষা’ থেকে নেয়া। পল্লবের ‘চাউল’, ‘চুকুমবুদাই’ তবে করেনি অপরাধ কোনো। যে বাঙালির এগুলো মুখের শব্দ তাঁরাও বরঞ্চ এখনো চিঠিতে, বিজ্ঞাপনে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন এহেনো বাংলা লিখতে এবং ‘কান্দিতে আছে’র মতো প্রচুর ব্যাকরণের ভুল সহই। সুতরাং এই সিদ্ধান্ত নিতেই পারি যে ‘চলিত’ সংস্কারের বাইরে বেরিয়ে এলে দেখব, যেপল্লব উপন্যাস লিখেছেন আমাদের আদি অকৃত্রিম ভাষাতেই। বরং ভাষা যখন তার অর্থবহ বর্ণনাতে বাস্তবতার ছবি আঁকে, পল্লবের ভাষা সেখানে বর্ণগন্ধ ধারণ করেছে নিজের শরীরে। এ তাঁর শৈল্পিক কৌশল মাত্র। কারো ভালো লাগা, না লাগাটা তার ব্যক্তিগত রুচির বিষয়।
  • শঙ্খ | 169.53.46.143 | ১০ অক্টোবর ২০১২ ২২:৫৭575279
  • চুকুমবুদাই মানে কি?
  • সুশান্ত | 127.203.168.28 | ১১ অক্টোবর ২০১২ ০১:১০575280
  • হাবাগোবা!
  • সুশান্ত | 127.203.168.15 | ১৩ অক্টোবর ২০১২ ১৩:৫০575281
  • অন্তত ভেবেছিলাম কমল কুমারের ভাষা নিয়ে কেউ কিছু বলবেন।
  • Lama | 127.194.245.26 | ১৩ অক্টোবর ২০১২ ১৬:১৩575282
  • চুকুমবুদাই মানে ৯৫% নির্বোধ এবং ৫% বদমাস।

    সুশান্তদা, পল্লবদার কোনো ফোন নম্বর, ইমেল আই ডি, ঠিকানা আপনার কাছে যদি থাকে, আমাকে একটু ইমেলে পাঠাবেন?

    ১৯৮৫-৮৬ নাগাদ, পল্লবদা "ইউথ কালচারাল ফোরাম" নামে একটা দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ওদের সমসাময়িক তরুণদের পাশাপাশি, আমাদের মত ক্লাস এইট/ নাইনে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে নাটক করাত। পল্লবদার পরিচালনায় 'ভীম বধ' বা 'রসিক' নাটকের সংলাপ এখনো মুখস্থ আছে।

    যোগাযোগটা স্কুল জীবনের শেষ দিকে চলে গিয়েছিল, বাইশ বছর আগে ত্রিপুরা ছেড়ে চলে আসার পর একেবারেই চলে গেছে। লেখালিখির খবর একটু আধটু পাই, কিন্তু যোগাযোগ আর হয়ে ওঠে নি।

    আপনি তো উত্তর পূর্বের বাংলা সাহিত্যের খোঁজ খবর রাখেন, জ্ঞান বিচিত্রার দেবানন্দ দাম, ভাষা সাহিত্যের কৃত্তিবাস চক্রবর্তী, কবি অসীম দত্তরায় (আমার মামা)- এঁদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ আছে কি?

    এপাড়ায় কেসিদা আর হুতো এই দুজন ত্রিপুরার লেখালিখির খবর রাখে, আর এই আপনাকে পেলাম ঃ)
  • Lama | 127.194.245.26 | ১৩ অক্টোবর ২০১২ ১৬:১৪575283
  • ভালো কথা, shankhakarbhowmik অ্যাট gmail.com আমার ইমেল আইডি
  • সুশান্ত | 127.203.162.234 | ১৪ অক্টোবর ২০১২ ১৪:০২575284
  • পুরো লেখাটা দাঁড় করিয়ে দিলাম।এখানে পড়তে পারেন। লামা, আপনি পল্লবের ফেসবুক ঠিকানার লিঙ্ক আমার লেখাটার মধ্যে পেয়ে যাবেন।http://sushantakar40.blogspot.in/2012/10/blog-post.html
  • r2h | 208.175.62.19 | ১৬ অক্টোবর ২০১২ ০১:৩৩575285
  • নিস্তরঙ্গ ও অনেকটা অপ্রতিভ আশির দশকের ত্রিপুরায় পল্লবদা আমার চোখে আইকন ছিল বটে। ত্রিপুরার লেখালেখির খুবই যৎসামান্য খোঁজখবর পাই, কিন্তু পল্লবদার নাম কোথাও বহুদিনের মধ্যে চোখে পড়েনি। প্রচারের আলোর উল্টোদিকে হাঁটাই হয়তো তার কারন, সুশান্ত রায় যেমন বললেন। শিল্প সাহিত্যের নৈর্ব্যক্তিকতা থেকে ব্যাক্তিগত স্মৃতি ইত্যাদি আমাকে সবসময়ই বেশী চালনা করে, তো পল্লব ভট্টাচার্যের উপন্যাসের ভাষা বা কন্টেন্ট থেকে, এই নামটি এতদিন পরে শোনা আমার কাছে বেশী অন্দোলনমূলক। সাত আট বছর আগে একবার দেখা হয়েছিল ভোরবেলা আগরতলা জিবি হাসপাতালের সামনে। পল্লবদার সঙ্গে যখন তার আগে শেষ দেখা হয় তখন আমি নিতান্ত হাফপ্যান্ট পরুয়া। কি করে পরস্পরকে চিনতে পেরেছিলাম কে জানে। বেশী আমড়াগাছি হয়নি, মা তখন হাসপাতালে ভর্তি। তো এইসব ব্যক্তিগত স্মৃতি। পুজোর সময়টা এমনিতেই স্মৃতিবিষয়ক পীড়া একটু বেড়ে যায় তারমধ্যে এইসব। সুশান্ত রায় এবং গুরুচন্ডালিকে ধন্যবাদ। ফেসবুকে পল্লবদাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ জানাতে গিয়েও মনে হলো... থাক, কি হবে। এতদূর থেকে নৈকট্যের ছল অর্থহীন।
    কমলিনীর উপাখ্যান প্রকৃত রসিকজনের কাছে পৌঁছে যাবে, এই আশা।
  • সুশান্ত | 127.203.160.53 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১০:৫৬575286
  • ভালো লাগছে, এই পোষ্টে পল্লবের পরিচিত অনেকেই নজর দিচ্ছেন দেখে।
  • তাতিন | 132.252.251.244 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৭:০৬575269
  • বজরা ঘোষও সাধু ভাষায় লেখেন না?
  • PT | 213.110.243.23 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:০৭575270
  • সমরেশ বসু কি শাম্ব উপন্যাসে আংশিক সাধু ভাষা ব্যবহার করেছিলেন?
  • ekak | 69.99.230.125 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:৩২575271
  • সাধু ভাষা আবার কী ? সংজ্ঞা তা কী শুনি ! মৃত্যুঞ্জয় তর্কালঙ্কার এর ভাষা সাধু হলে বঙ্কিম কি অসাধু ? বঙ্কিম সাধু হলে লরেন দত্তর ভাববার কথা র ভাষা কি অসাধু ? যারা সাধু নয় তারা কি চদু ? তত্সম শব্দের যথেচ্ছ ব্যবহার আর সমাসবদ্ধ পদ থাকলেই কি তা সাধু ? ব্যাপারটা কয়ানতিতেতিভ নাকি কোনো জনরা কে নির্দেশ করে যা কিনা ফিউদালিস্ম এবং ক্লাস এর প্র্যক্সিস এ বিচার্সাপেক্ষ ?
    তাহলে এত ভাষার শব্দ খেলুম না ভক্ষণ করিলাম হবে তাই নিয়ে তক্ক ক্যানো ? কমলকুমার এট আল লাস্ট অফ বাবুস যে ভাষায় লিকলেন তা সাধু না তৃতীয় শিবির নাকি ফেইদালিস্ম এর পচা মরায় ধুপের গন্ধ নাকি ভাষার হেজিমনি কে সেই সময়ে দাঁড়িয়ে যতটা সম্ভব অস্বীকার ?
    আসল কতা হলো লেকা তা দাঁড়ালো কি না । এবার সেটা জাপানি তেলে দাঁড়ালো না ভায়াগ্রা তে নাকি লিঙ্গ্যমহেশ্বর এর কৃপায় তা জেনে পাঠক গয়লানির কী ?? য়াঁ ????
  • tatin | 132.252.251.244 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:৩৪575272
  • একক মাধ্যমিক দ্যান নি?
  • ekak | 69.99.230.125 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:৪৫575273
  • দেইচি তো । মাধ্যমিকি আর উচ্চমাধ্যমিকি । তাপ্পর আর নেকাপড়া হলনি ।
  • তাতিন | 132.252.251.244 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:৪৬575274
  • ্মাধ্যমিকে সাধু থেকে চলিত, চলিত থেকে সাধু করতে দিত। ওই ডমেন মেনেই আলুচানা হচ্ছে
  • ekak | 69.99.230.125 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ১৯:৫২575275
  • ওটা একটা বালের ডোমেইন । বাংলার স্যার দের সংযে ম্যাক্সিমাম বাওয়াল হত ওই সব নিয়ে । কেও কেও আছে যারা ক্রিয়াপদ গুলো চলিত করে ছেড়ে দিলে নম্বর দেয় । কেও আবার বাকি শব্দ গুলোর ও কথ্য রূপ চায় । ইদিকি কেদারা র জায়গায় চেয়ার লিকলে কেও মানে কেও মানে না । কোনো ঠিকঠাক গাইদ্লাইন আছে ? পবিত্র সরকারের ভাষা জিজ্ঞাসা বলে একখান বই আছে । সেটা তবু একটু সেন । বাকি বইগুলো র একটার সংযে আরেক মেলেনা । বামন্দেব এর অনেক মোট সুকুমার সেন বিরোধী । বাংলা ক্লাস মানেই এইসব নিয়ে উদুম বাওয়াল । পুরো ভাষা তার ওপর ঘেন্না ধরিয়ে দিয়েছিল শালা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । :X :X :X
  • শঙ্খ | 169.53.46.140 | ১৭ অক্টোবর ২০১২ ২২:৫৯575276
  • ক্রিয়াপদগুলোকে খামোকা সাধু ভাষায় পাল্টে ফেলে (মানে ঘুরে বেড়ায় না লিখে ঘুরিয়া বেড়ায়) কি বিশেষ ভাষারীতি গড়ে উঠলো ঠিক বুঝ্লাম না। তাও সেটা চরিত্রের মুখের ভাষার সঙ্গে আসেনি। গল্পের সময়কালের সঙ্গে কোন সংযোগ বোঝাবার জন্য? অথবা সাধুভাষায় যাঁরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, সেই বয়স্ক পাঠকদের জন্য লেখক তাঁর লেখা সীমাবদ্ধ রাখতে চান?
    আর
    ----------------------
    'যিনি পড়েন ‘ইয়েনান বক্তৃতা’ কিম্বা লুসুনের কবিতা, কিম্বা ডকু ফিল্ম করেন, ‘পভার্টিঃ কজ অফ ইণ্টারনেল মাইগ্রেশন’ নিয়ে তিনিও ‘চলিত বাংলা’ বিশুদ্ধ বয়নে উচ্চারণে বলতে লিখতে পারেন না মোটেও।'
    -----------------------
    এই বাঙ্গালীরাই বা কারা?
  • rabaahuta | 215.174.22.20 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৭:৩৯575277
  • এই বাঙালীরা হচ্ছেন পূর্ববঙ্গ ঘেঁষা বাঙালীদের একটা বড় অংশ।
  • r2h | 132.172.52.32 | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১১:৪৫575278
  • ভাষা, ডায়ালেক্ট এইসবে মনে পড়লো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন