এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বুরা না মানো -- ফাগুন লেগেছে বনে বনে

    shrabani
    অন্যান্য | ১৭ মার্চ ২০১১ | ১২৯৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nina | 64.56.33.254 | ৩১ মার্চ ২০১১ ২০:১১469332
  • আরে ন্না বাসুভাই, খেলার টেনশনে আর অশ্বিনকে বসিয়েছে--সব মিলিয়ে কাকে ঝাড়বে? আমাকেই তো ঝাড় দেয়--তাই ঐ বিহারী ক্যাপটেন ---:-))
    এখন শনিবার আর এক প্রস্থ --ক্ষি টেনশন!!
  • DB | 117.194.69.201 | ১০ এপ্রিল ২০১১ ১৯:২৬469333
  • নিআ,
    অসাধারণ তোমার পাটনার হোলির গল্প। কি অসাধারণ দক্ষতায় একটা সর্বাঙ্গসুন্দর ছবি তুলে ধরেছে।ভবতে অবক লাগে তুমি আরো বেশি কোরে লেখোনা কেন
    বাসুভাই
  • NIna | 68.84.239.41 | ৩০ মে ২০১১ ২৩:৩২469334
  • ভুল হয়ে গেল
  • BUBU | 71.188.73.198 | ৩১ মে ২০১১ ০০:০২469335
  • ণিনা,

    টআঋ ণ ণ ঋঈ, আআয ঋঊ। ঈণ্টূ টআঋ ঋআণ্ট ঈ ঋ ণ আআঋ আআঋ ঋঈ, ণ আআঋ আটআ ণ।

    আআঋ যণ ণটূণ ঋ ডট ঊ আআডঋ আঈআ টআঋ টআআ।

    ঈ আণূ ণাঈণা ডী ণূট্ট ঊডঈ ঋঊ।

    যডী ঋআআযী ওয়ো টা ণ ঋআ আঋ টা আঈ ঈঊ ণ্ডঊডঋ ঋ ণাট আঈ। ঋআআযী?
  • Nina | 68.84.239.41 | ৩১ মে ২০১১ ০০:১১469336
  • হা হা হা হা ইস!! বুবু বেচারি বাংলা প্রথম লিখতে গিয়ে বেজায় ছড়িয়ে ফেলেছে----বুবু আমার প্রিয় বন্ধু--লেখাটা পড়তে চাইল বলে টইটা তুলেছি :-)))
  • bubu | 71.188.73.198 | ৩১ মে ২০১১ ০০:২৩469337
  • kemon moja....dekhi ke dhnaadhnaar uttor dite paro!

    nina, tomar shonge onek golpo kori, korechhi, aaj o korlum, kintu ekhon to aar golpo korte ichhe korchhe na.

    shudhu mone hochhe lekha ta pori baarbaar, OPURBO!..

    amader oti chena mashima ke dekhlum, tomar chhotobela ke dekhlum,

    aar dekhlum manush nagina ke!!!!!

    aachha, "monushotto" aar "manabikata bodh" ei dutor alaada kore maane ki?

    jodi raaji hoyo tahole lekhata ami nijeder ekat ghoroa ashore bondhuder pore shonate chai, ki bolo?
  • | 124.169.145.182 | ০৭ মার্চ ২০১২ ১৫:৩৬469338
  • কুমুর জন্য।
  • dd | 110.234.159.216 | ০৭ মার্চ ২০১২ ১৫:৩৯469339
  • শ্রী সেন্নাইতে এসে থেকে যান।
    যদি দোলকে আমার মতনই গভীর অপছন্দ করেন তো সেন্নাই ইজ দ্য বেস্ট প্লেস।
    লোকে জানেই না।
  • Tim | 198.82.20.182 | ০৭ মার্চ ২০১২ ২২:৪৮469340
  • আম্রিকাতেও এলে পারেন, তবে হিন্দিয়ান অ্যাসাসিনটা এড়িয়ে চলবেন। ঐখেনে রংফং নিয়ে হেবি আদিখ্যেতা হয়।
  • Debashis | 2.88.58.232 | ০৮ মার্চ ২০১২ ০০:৩৫469174
  • হোলি হ্যায়, ভাই হোলি হ্যায়
    বুরা না মানো হোলি হ্যায়!
    কাল সকালে চোখটি খুলেই
    হোলি হ্যায়!
    রং লাগানো এই ফাগুনেই
    হোলি হ্যায়!
    মন মাতানো বসন্ত দিন
    হোলি হ্যায়!
    রং ওড়ানো আবীর গুলাল
    হোলি হ্যায়!
    রং বরষায় ওড়না ভেজা
    হোলি হ্যায়!
    কে লাগালো চুনরীতে দাগ
    হোলি হ্যায়!
    হঠাৎ ছোঁয়ায় শিউরে ওঠা
    হোলি হ্যায়!
    তোমার সাথে প্রথম দেখা
    হোলি হ্যায়!
    কিশোর বেলার অবাধ্য প্রেম
    হোলি হ্যায়!
    শরীর খেলার নিষিদ্ধ ডাক
    হোলি হ্যায়!
    তোমার ঠোঁটের নোনতা স্বাদে
    হোলি হ্যায়!
    থরো থরো প্রথম পরশ
    হোলি হ্যায়!
    নিষেধ বেড়ার আগল ভাঙা
    হোলি হ্যায়!
    তোমার রং এই মন রাঙানো
    হোলি হ্যায়!

    আমার জীবন পাত্র জুড়ে
    যে রং আমি নিলাম ভরে
    সেই রঙেরই মিলন মেলায়
    তোমার আমন্ত্রণ।

    গ্লানির স্মৃতি ক্ষণেক ভুলে
    বন্ধ মনের দুয়ার খুলে
    সবার রঙে রং মেলানোর
    এই তো নিমন্ত্রণ।

    বসন্তের এই রঙের উৎসবে সব্বাইকে অনেক শুভেচ্ছা। হ্যাপি হোলি! হোলি মুবারক!
  • pi | 128.231.22.249 | ০৮ মার্চ ২০১২ ০৯:৫৮469177
  • রঙ ডারুঙ্গি রে :

    গিরিজা দেবী।
  • jhumjhumi | 117.194.228.145 | ০৮ মার্চ ২০১২ ২০:৩২469178
  • আজ দোল, আমাদের এখানে সক্কলে প্রচুর রং খেলেছে, আমার মেয়েরাও খেলেছে আশ মিটিয়ে। পিচকারি নিয়ে রং ছেটাতে সে কি আনন্দ তাদের!
    মনে পড়ছে আমার ছোটো বেলার একটা ঘটনা। হোলির দু'একদিন আগের কথা, বন্ধুদের একজন বললো পলাশ ফুল সারারাত ভিজিয়ে রাখলে নাকি দারুণ রং হয়, আর সেই রং নাকি জামাতে লাগলে আর ওঠে না। সঙ্গে সঙ্গে ঠিক হলো, এবার পিচকারিতে পলাশের রং ই দেওয়া হবে। চরিদিকে অজস্র পলাশ গাছ, ফুলের অভাব নেই, অতএব বেরিয়ে পড়লাম কয়েকজন বিকেল বেলায়। সামনেই একটা ছোট্ট টিলা, তারপর কিছুটা ধানক্ষেত, তারপরে পলাশবন। গাছগুলো ফুলে ভর্তি , একটাও পাতা নেই,যেদিকে তাকাই লাল-কমলা রং। মাটিতে বিছিয়ে আছে অজস্র ফুল, আমরা ফুল কুড়োতে থাকি। গাছে চেপে দুজন ডাল ঝাঁকাতে থাকে,ঝরে পড়ে লাল কমলা রংএর পলাশ। আমরা কেমন যেন একটা নেশার ঘোরে ফুল তুলতেই থাকি। আলো কমে আসতেই চোখ তুলে দেখি সূর্য দিগন্তরেখায় নেমে যাচ্ছে, আকাশে গোলাপী ,কমলা, লাল হরেক রং। আগুনরঙা পলাশ বন,গোধুলির আকাশে রঙের খেলা, সব মিলিয়ে প্রকৃতির এক অদ্ভুত হোলি খেলার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম আমরা, নির্বাক।
  • Nina | 75.150.143.198 | ০৮ মার্চ ২০১২ ২৩:২১469179
  • দোল/হোলি আমার বড় প্রিয় সময় । ছোটবেলা থেকেই এই যে সব্বাইকে একই রঙে রাঙিয়ে দেয়া , বড় ভাল লাগত। ছোটবেলায় এই যে সমানে এটা বড়দের জিনিষ , ওটা বড়দের কথা , শুনতে শুনতে বিরক্তির মধ্যেই এসে আছড়ে পড়ত নানা রঙের ফোয়ারায়হোলি। তার কোনো ছোট বড় ভেদাভেদ নেই উঁচু নীচু ও নয়
    সা রা রা রা একই রঙে রঙিন সব্বাই ভুতে ভুতাক্কার ! মনটা আনন্দে রঙিন থাকত! এই সঙ্গে বিকেলবেলার কতরকম খাওয়া-দাওয়া , গান কবিতা নানা রঙের আবীরে রাঙানো সন্ধ্যেগুলি আমার স্মৃতির পটে বড় মন কাড়া রঙিন তার ছবিগুলি!

    তখন ভাবতাম কবে বড় হব আর ঐ সন্ধ্যে আসরের যেটুকু ঐ বড়দের জন্যে ( অবশ্যই সিদ্ধির শরব্‌ৎ) সেটারও ভাগিদার হতে পারব।
    বড় হলাম তো ! আপনজনেদের লিস্টে আরও কিছু নতুন নাম যোগ হলকিন্তু বিয়োগও হতে শুরু করল যে! তবূ সেই সাতরঙাহোলি প্রতি বছর মনকে রাঙায়।

    শুধু ছোতবেলায় যেটা বুঝিনি সেটা হল ছোট হওয়ার কি মজা যা চাইবে সেটা হবে । বড় হতে চাও বেশ তো বড় হলে! ছোটে্‌বলা ভাবতাম উফ সামনের রাস্তাটা কত্ত লম্বা বড় হতে কত দেরী! ইন্তু বুঝিনি বড় হয়ে গেলে আর কিন্তু চূট হতে পারবেনা । সামনের রাস্তা ক্রমশ: ছোট হয়ে যাবে কিন্তু পেছনের রাস্তাটা কত্ত লম্বা আর পেছন ফিরে ফিরে তাকিয়ে কি ভাল লাগবে! বড় হয়ে যাওয়ার কি কষ্ট সামনে আর বেশি কিছু নেই আর কিছুতেই ছোট হতে পারবেনা!

    আজ দোলের দিনে আরও একটি বিয়োগ ছোটবেলার দিনের এক অতি প্রিয় মানুষ মামা ডকতাম-মার বন্ধুর ভাই কিন্তু মনে হয়নি কখনো বাইরের কেউ বলে । মামা ডেকেছি আদরও মামাবাড়ীরই পেয়েছি! রঙিন যত স্মৃতি যত রঙ সবই আজ পেছনের ফেলে আসা রাস্তাটা---সামনেরটা আজ বড্ড ফ্যাকাসে ----
    বড় হওয়া আমির এই প্রথম হোলি আজ রঙহীন ধূসর!!

    (ডানদিকে বাংলা আসছেনা--কি লিখলাম জানিনা---কিন্তু বড্ড শেয়ার করতে প্রাণ চাইল)
  • Du | 117.194.192.101 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৩৬469180
  • আমরা গিয়েছিলাম ব্লকের বসন্ত উৎসবে। সেখানে দেখি শুধুই বয়স্ক মানুষেরা। সাদা মাথাগুলো গোলাপি হলুদ সবুজ নানা আবীরে কি রঙ্গীনই না লাগছিলো। তারা গান গাইলেন, কখনো বা কবিতা। কখনো আনন্দ কখনো বা বিষদের সুর তার মধ্যে। একজন গাইলেন দুলাইন - সে রবীন্দ্রসঙ্গীত(?) কোনদিন শুনিনি, তাতে ফুল ঝরা বসন্ত আর পাখীদের গান ভোলার কথা। অদ্ভুত লাগছিল। এক ভদ্রলোক আবার, ঠিক মন খারাপ করে নয় - সলিল চৌধুরীর কথা মনে করে - একদিন চলে যাবো গাইতে গেলেন তখন অনেক আবীরে রঙ্গীন এক ভদ্রমহিলা (স্ত্রীই হবেন হয়তো) প্রবল আপত্তি করে থামিয়ে দিলেন তাকে। হোলিতে এই গান নয় - সবাই বলে উঠলেন সমস্বরে। আবীরে , সরবতে ( হ্যাঁ নীনাদি, সিদ্ধিও মেশানো ছিলো তার মধ্যে :)), গানে কবিতায় রঙ্গীন হয়ে উঠলো চারদিক।

    হঠাৎ মনে হলো দোলের দিনের স্মৃতিতে সেপিয়ার কোন জায়গা নেই, সেখানে অশোকমামার ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি এখনো কড়া গোলাপী আবীরে তমনি উঙ্কÄল। তেমনি মাটি আর কালো সবুজে ভুত রাখুর কাদা খেলে ওঠা মুখটা।

    হোলি ফিরে আসুক সবার জীবনে বারবার আরও একবার একরাশ রঙ নিয়ে।
  • Ishan | 50.82.180.165 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৪৬469181
  • ইশকুলে পড়ার সময় দুটোই ভালো লাগত। কিন্তু তার পর থেকেই দোল আর দুগ্গাপুজো আমার দু চোখের বিষ। দুগ্গাপুজোয় তবু কেউ গায়ে চকলেট বোম মারেনা। কিন্তু দোলে? ওরে বাবা। রং না মেখে থাকার জাস্ট কোনো উপায় নেই। দজ্জা বন্ধ করে থাকলেও কেউ না কেউ এসে হাবিজাবি ছুতোয় ঠিক কিছু একটা মাখিয়ে যাবে। তাতে প্রবলেম ছিলনা, যদি রং গুলো ওয়াশেবল হত। তা তো নয়ই বরং যাতে তোলা না যায় তার সুবন্দোবস্তো আছে। সেই রং হাতে করে মাখাবে, পিচকিরি দিয়ে ছুঁড়বে। তাতেও না হলে বেলুন মারবে। সে বেলুন ছোঁড়া আবার পিট্টু খেলার ধরনে। যত জোরে মারবে ততো আনন্দ। এর সঙ্গে আবার আবীর। সে পুরো আত্মার মতো। জলেও ধোয়না। তেলেও গলেনা। তাতেও ক্ষান্তি নেই। শেষপাতে আবার সিদ্ধি। তার আবার কোনো কোয়ালিটি ক®¾ট্রালই নেই। কোনোটা এক গামলা খেয়েও কিসুই হবেনা। কোনোটা দুচুমুকেই সারাদিন কাত। কিন্তু না খেয়েও উপায় নেই। লোকে প্যাঁক দেবে। পৌরুষ নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। সব মিলিয়ে দুর্ভোগের অন্ত নেই। উফ। বাবা রে।
  • pi | 128.231.22.249 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৪৮469182
  • দরজা বন্ধ থাকলে দরজার নিচের ফাঁক দিয়ে আমরা বালতি করে রং ঢেলে দিতুম। দিতে শুরু করতেই কাজ হত। বেরোবেনা মানে ?
  • pi | 128.231.22.249 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৫০469183
  • তবে আমার শেষদিকের দোলে সেপিয়ার টোন আছে।
    কাদাস্নান করানো হত। :|
  • dd | 110.234.159.216 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৫৪469185
  • ধরুন একটা থান ইঁটে একটু আবীর মাখিয়ে কারুর মাথায় ঠুকে দিলাম। সেইটা কি হোলি খেলা বলে গন্য হবে ?

    আমার গায়ে লোকে বালতি ভরে রং গুলে ছুঁড়বে,বিশ্রী সব রঙীন পাউডার নাকে মুখে মাখিয়ে দেবে, বেলুন ছুঁড়ে মারাত্মক আহত করবে - আর আমি মেনে নেবো? সে ও দাঁত বার করে?

    বিভীষিকা।

    "দোল না খেলার অধিকার ও একটি অধিকার।"
  • pi | 128.231.22.249 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৫৬469186
  • মেনে নিলেও দাঁত বের করা উচিত না। দাঁতের রং যেতে খুব সময় লাগে। লাগা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালও না। ব্যাপারটা এমনকি ফোটোজেনিকও না।
  • Du | 117.194.192.101 | ০৯ মার্চ ২০১২ ০৯:৫৭469187
  • একেবারে নর্দমার কালো কাদা ? অ্যা: । আমাদের এমনি মাটি গুলে হত পরের্দিনেরটা।
  • pi | 128.231.22.249 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:০০469188
  • না, না। মাঠের মাটিতে জল ঢেলে স্পেশাল কায়দায় 'মাড বাথ' প্রস্তুত হত। তারপর এক এক করে চ্যাংদোলা করে তাতে ঝপাৎ। এবং প্রতিটি ঝপাতের সাথে সিনক্রোনাইজড উল্লাস।
  • siki | 155.136.80.36 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:০৩469189
  • ধ্যা:, মামু যেন কী! আমি জন্মে থেকে আজ পজ্জন্ত কোনওদিন একফোঁটাও সিদ্ধি ভাঙ গাঁজা কিছুই খাই নি। কেউ আমার পৌরুষ নিয় কোচ্চেন করে নাই (ইন ফ্যাক্ট কেউ দরকার মনে করেছিল কিনা, তা-ও জানি না :))

    আর চান করে উঠে গেলে সে রং আবার রং হয় নাকি? রং থাকবে হাতের তেলোয়, নখের কোণায়, কানের লতিতে, অন্তত এক সপ্তাহ, দশদিন। তব্বে না রং খেলা? হায়, আজকাল আর সে সব পার্মানেন্ট বসে যাওয়া রং পাওয়া যায় না। আমি তো খেলি, খুব করে রং খেলি। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত একটাও হোলি ছাড়ি নি। আমার হেব্বি লাগে রং মাখতে। যত তেলকালিমার্কা বাঁদুরে রং হয়, তত ভালো।
  • Ishan | 50.82.180.165 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:০৪469190
  • হিন্দিতে হোলি হল পুং লিঙ্গ (মানে আমার তাই মনে হয়)। সবাই মিলে একজনকে চেপে ধরে কেউ গালে কাদা ঘষে দেবে, কেউ মাথায় গাঁটা মারবে, কেউ গোবরজল ঢেলে দেবে, তারপর সবাই মিলে চিৎকার করে বলবে হোলি হ্যায়।

    আর দোল হল গিয়ে স্ত্রী লিঙ্গ। শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মমতে হাত-ঘোরালে-নাড়ু-দেব টাইপের ভঙ্গীতে নাচতে নাচতে "ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল' গাইতে হবে, তাতে কেউ দয়া করে দরজা খুললে ভালো, নইলে তাকে আর ডিসটার্ব করা নয়।

    নারীর উপরে পুং এর এই অত্যাচার, বাংলার উপরে হিন্দির এই আধিপত্যবাদ, মেনে নেব? কভি নেই। (মানে কক্ষনো না আর কি।)

    এই হল আমার আজকের থিয়োরি। গুড নাইট।
  • rajjo sorkar | 117.254.246.209 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:০৯469191
  • মুখ্য বা অন্য কোন গৌন মন্ত্রীর নিকট আত্মীয় হলে আবির না মাখিয়েও স্থানইঁট কারো মাথায় ঠুকে দিলে সেটা নিতান্ত শিশুদের হোলিখেলা হিসেবেই গন্য হবে।

    নিতান্তৈ যদি কোন মন্ত্রীর সঙ্গে আত্মীয়তা না থাকে তবে ইঁটে একটু সবুজ আবির মাখিয়ে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। বর্তমান সময়ে সেটা বৈধ বলেই গন্য হবে।

    দোলখেলা একটি স্যোসাল সার্ভিস। দোল না খেললে কিন্তু সার্ভিস ব্রেক হবে। অন্য কেউ তখন সবুজ আবিরমাখা স্থানইঁট আপনার মাথায় মাখিয়ে দিলে কাঁধ দেবার লোক পাবেন না। আগেই সাবধান করে দিলুম - হুঁ!
  • siki | 155.136.80.36 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:১১469192
  • ঐ জন্যেই তো এবার হোলি পড়েছে নারীদিবসে। অর্থাৎ, এবার মেয়েদের রং নেবার সময়। (আবাপ পশ্য)
  • pi | 128.231.22.249 | ০৯ মার্চ ২০১২ ১০:১২469193
  • তাও তো মামু শার্ট ছেঁড়াছেঁড়ির গপ্পো জানেনা মনে হচ্ছে। জানলে মনে হয় থিয়োরীতে অন্য মাত্রা যুক্ত হত।
  • shrabani | 117.239.15.28 | ১৩ মার্চ ২০১২ ১২:৩৪469194
  • ---------হোলি কে রঙ্গ-----------

    পরীক্ষার মাঝে হোলি, এমন অনাসৃষ্টি ভাবা যায়, তবু হচ্ছে,প্রতিবছরই। অন্যবছর যেমন তেমন এবছর যে বোর্ড, সব পরীক্ষার বাপ! ভাবলেই কান্না পেয়ে যাচ্ছে ঝিমলির। ও জানে এই হয়ে গেল শেষের শুরু, দেখছে তো আশেপাশে। এবছর বোর্ড, সামনের বছর ইলেভেন তরতরিয়ে কেটে গিয়ে ভয়ংকর বারো ক্লাস, এনট্রান্স ইত্যাদিতে হোলি কোথায় হারিয়ে যাবে! আর তারপরেই বাজবে বিদায়ের বাঁশী, বন্ধুবিচ্ছেদ, সম্ভবত সুখের নীড়ছাড়াও।
    অন্য বছর তাও অল্প হোলি খেলার অনুমতি পাওয়া যেত, "জল খেলবেনা, শুকনো আবীরে খেল, নাহলে ঠান্ডা লেগে জ্বর বাধালে পরীক্ষা মাটি"। তবে সেসব সাবধানবাণীতে ঘাড় নেড়ে একবার বাড়ি থেকে বেরোতে পারলেই আর কথাগুলো কারুর মনে থাকেনা। বড়রাও ঐ বিধিসম্মত সতর্কবাণী দিয়েই খালাস, সেসব মানামানির খতিয়ান কে করে, তারা নিজেরাও যে হোলি মেজাজে, বন্ধুবান্ধব সব বয়সের সবারই তো আছে, নাকি!
    কিন্তু এবছরের ব্যাপারটা অন্য, কেউ যেখানে ঝিমলির শুকনো আবীর খেলার সম্ভাবনার কথা মনেও আনছেনা, তখন সে নিজে সে কথা মুখে আনে কী করে! বরং সকাল সকাল সবাই তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়ল সরস্বতী মন্দিরের উদ্দেশ্যে। অন্যান্য বছর সকাল থেকে বাড়িতে লোক জন আসে, সামনের বারান্দায় চেয়ার পাতা হয়, টেবিলে আবীর, মিষ্টি নোনতা, জগে বাদামের শরবত আর ছোটো ছোটো প্লাস্টিকের গেলাসের থাক। "হোলি মুবারক", "দোলের শুভেচ্ছা", কোলাকুলি, কপালে আবীর চলে। তারা ছোটরা বাঙালী বড়দের পায়ে আবীর দিয়ে প্রণাম করে। বেলা পড়লে বাড়ির সবাই বেরিয়ে আশেপাশে ঘনিষ্ঠদের বাড়ি গিয়ে সব শেষে সরস্বতী মন্দিরে যায়। তখন সেখানে একইভাবে ক্যাম্পাসের আরো অনেকে জড়ো হয়েছে। মন্দির চত্বরে শুকনো ভিজে সব দোলের আয়োজন থাকে কতৃপক্ষের তরফে, গুজিয়া, ভাজিয়া, ভাং। মেয়েরা একদিকে, পুরুষেরা অন্য দিকে, ছোটরা নানা বয়সের নানা দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে যায়। ঢোল বাজে, গান হয়, "হোলি আয়ি রে আয়ি হোলি...."

    এইভাবে বেলা দুপুর হলে তারপর যে যার বাড়ি ফেরা। ব্যস, এরপরে আর কেউ রঙের হোলি খেলেনা এখানে। বড়জোর, যারা কোন কারণে খেলেনি বা খেলেনা তারা সন্ধ্যেবেলা এমনিই আসে বাড়িতে, শুভেচ্ছা জানায়, মিষ্টি ইত্যাদি খাওয়া হয় বাইরে বসন্তের হাওয়ায় চাঁদের আলোয় বসে, কিন্তু বচ্ছরকার হোলিখেলা ঐ সরস্বতী মন্দিরেই শেষ হয়ে যায়।

    আজ সাতসকালে সবাই তৈরী হয়ে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়ল সরস্বতী মন্দিরের দিকে, লোকজন বাড়ী বাড়ী আসতে শুরু করার আগেই। পথে অবশ্য কয়েকটা বাড়ি ঘুরে যাবে। মোটকথা সে যাই হোক, যেখানেই যাক,এবাড়ীতে হোলি নেই এবছর, ক্লাস টেনের পরীক্ষা না!
    ঝিমলি চুপচাপ নিজের ঘরে টেবিলের ওপর বায়ো বইখানা খুলে তার পাতার দিকে তাকিয়ে সবার চলে যাওয়া শুনল। কাল রাতের আলোচনার ফলাফল অনুযায়ী সদর দরজায় বড় তালা লাগিয়ে যাওয়া হবে। বেরোবার আগে মা এসে ওর ঘরের জানালার নীচের পাল্লা বন্ধ করে দিয়ে গেল যাতে বাইরে থেকে কেউ দেখে না ফেলে। জানালার নীচেই ওর পড়ার টেবিল পাতা। এ নিয়ে নিত্য অশান্তি মা বৌদির সাথে, তাদের অনুযোগ ও নাকি জানালা দিয়ে বাইরের গাছপালা পাখপাখালির দিয়ে তাকিয়ে থাকে অদ্ধেক সময়। নম্বর কোথাও কোনো বিষয়ে একটু কম হলেই মা সর্বাগ্রে জানালার নীচ থেকে টেবিল সরানোর ধুয়ো তোলে, তবে কিভাবে যেন এব্যাপারে শেষ রায়টা মুলতুবিই থেকে গেছে এখনো পর্যন্ত।

    চারদিক শান্ত হয়ে যেতে ঝিমলি ড্রইংরুমে এল। বন্ধ জানালার ঘসা কাঁচের ভেতর দিয়ে লন পেরিয়ে বড় রাস্তা দেখা যাচ্ছে। এখনো লোক চলাচল তেমন নেই। আজকে মোড়ের সাইকেল সারানোর দোকান খোলেনি, পোস্টাপিসও বন্ধ, কেমন ন্যাড়া ন্যাড়া চারধার। অন্যান্যবার সকালে সামনের লনে এই চারটে বাড়ির ছোটোরা পিচকারী নিয়ে নামে, এবারে কেউ নেই। তার আর শেষের বাড়ির টিনুর তো বোর্ড, মাঝের দুটো বাড়ির লোকজন বোধহয় এবার বাইরে গেছে, ওদের বাচ্চারা প্রাইমারীর, তাদের পরীক্ষা শেষ। চেয়ারটাকে ঘুরিয়ে একেবারে জানালার ধারে নিয়ে গিয়ে বসল রাস্তার দিকে মুখ করে। ঘসা কাঁচের মজা হল বাইরে থেকে ভেতর দেখা যায়না। স্কুল বন্ধ হওয়া থেকে ও দিনের মধ্যে বেশ কবার নিজের ঘর ছেড়ে এই ঘরে এসে বসে, কখনো বই খাতা নিয়ে, কখনও বা এমনিই। সকালে পেপারটা আদ্যোপান্ত পড়ে, এমনিতে পেপার ছোঁয়না কিন্তু পরীক্ষার সময় আলাদা কথা। অন্যান্য গল্পের বই পড়া বারন, কিন্তু পেপার পড়লে কেউ কিছু বলেনা, তাই ও খুঁটিয়ে পেপার পড়ে এসময়, বিজ্ঞাপন নিরুদ্দেশ সম্বন্ধে ঘোষণা, কিচ্ছু ছাড়েনা, যতটা ফাঁকি মারা যায় আর কি! কিছুক্ষণ রাস্তা দেখে আবার ঘরে গেল, বায়োলজির বইয়ের মধ্যে থেকে নার্ভাস সিস্টেম তাকিয়ে আছে ওর দিকে, মুখটা ঘুরিয়ে নেয়!

    বাড়ির পেছনের লাগোয়া মজদুর মহল্লা থেকে একটা হল্লা ভেসে আসে, হোলি শুরু হয়ে গেল। ওদের মত মজা করে হোলি কেউ খেলেনা। পিছন দিকে ঝিমলিরা কেউ যায়না সচরাচর, এমনিতে বারণ কিছু নেই, তবুও। তবে যেটুকু দেখেছে তাতে মজদুর মহল্লাটা বেশ মজার লাগে। এই সাজানো গোছানো ক্যাম্পাসের নিখুঁত নিভাঁজ বাড়ি রাস্তা ঘর বিল্ডিং দেখলে এর ভেতরের মজদুরদের স্টাফ কোয়ার্টারের এলাকার চিত্রটা কেউ কল্পনাই করতে পারবেনা। ঝিমলি অনেক দুপুরে পড়তে পড়তে বোর হয়ে গেলে উঠোনে গিয়ে চেয়ারে উঠে পাঁচিলের এপার থেকে ওদের জীবনযাত্রা দেখে, একদম কোনো ছবির গ্রামের মত মনে হয়। একটা বড় উঠোন মত জায়গা ঘিরে সারি সারি এক কামরার কোয়ার্টার গায়ে গায়ে লাগানো। উঠোন টা মাটির নিকোনো মতন, মাঝখানে একটা বড় পীপল গাছ, তার নীচেটা বাঁধানো, সেখানে বড় বুড়োরা এসে বসে, গালগল্প ধূমপান চলে। উঠোনে ইতস্তত দড়ির খাটিয়া পাতা,খাটিয়ায় বসে মেয়েরা চাল ডাল বাছছে গল্প করতে করতে,বাচ্চারা খেলছে বা কেউ পড়ছে। ঘরের ভেতর জায়গা অকুলান হয় বলে সবাই ঐ উঠোনেই থাকে সব সময়, সব কাজ ওখানেই। একপাশে একটা বড় চৌবাচ্চা আর কলতলা আছে। সেখানে ওরা জল ধরে, কাপড় কাচে, কাচতে কাচতে ঝগড়া করে বা গল্প করে। সন্ধ্যের দিকে দেখা হয়নি কোনোদিন কিন্তু আওয়াজ শুনে বোঝা যায় পুরুষদের জমায়েত হচ্ছে পীপলের তলায়, উঠোনে পাতা খাটিয়ায়।

    কাল হোলি ইভে মহল্লায় ফাংশন হচ্ছিল রীতিমত চাঁদোয়া খাটিয়ে, বড় আলো, মাইক ইত্যাদি লাগিয়ে। চাঁদোয়ার মাথা দেখা যাচ্ছিল এবাড়ি থেকে, আলোর আভাও। রাত হলে শুরু হল মাইকের গান। মা চিন্তিত বিরক্ত, মেয়েটার পড়ায় বাধা পড়ছে, কিন্তু কিছুই করার নেই, হোলি বলে কথা। গলাটলা শুনে মনে হচ্ছিল, রঙ শুধু বাইরে নয় ভেতরেও টইটম্বুর। এমনিতে এসব দিকে সাতদিন আগে থেকেই হোলি শুরু হয়ে যায়, ক্যাম্পাসের মধ্যে বলে বোঝা যায়না। সিভিল লাইনসের দিকে গেলেও অতটা নয় তবে বাজার বা নহর পাড়ে গেলে খুব সাবধানে, সতর্ক থাকতে হয়। হোলিতে কেউ রঙ দিলে কিছু বলার প্রথা নেই,মেনে নিতে হয়, কথায় আছে "বুরা না মানো....হোলি হ্যায়"।

    সবাই বিরক্ত হলেও বেশ মজা লাগছিল, ইদানীং টিভি দেখা বন্ধ, তার জায়গায় ফাংশান শুনতে মন্দ লাগছিল না। রীতিমত অয়ানাউন্স করা হচ্ছিল, সবই অবশ্য গান ও পুরুষ কন্ঠে। সব দরজা জানালা বন্ধ করেও, মাইকের শব্দ এড়ানো যায় নি। রাত একটু বাড়তে চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে শুধু এদের গানের হুল্লোড়,ওর চোখ বইয়ের পাতায়, কান মাইকে। সবই হোলির গান, ইউ পি বিহারের লোকগীতি টাইপের, তার মাঝে মাঝে পপুলার হিন্দী সিনেমার প্রচলিত হোলি সঙ্গীত। "আভি আপকে সামনে অগলা কলাকার গীত পেশ করনে আ রহা হ্যায়, সাগুন - সাগুন কে লিয়ে তালিয়া",ঁ একেবারে প্রফেশন্যাল দুরদর্শনের ঘোষকদের মত স্টাইল। সাগুনের বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইপার আর সাগুন ঝিমলিদের ও আশেপাশের চার বাড়ির মেথর। বেঁটে গাঁট্টাগোট্টা চেহারা, মহা ফাঁকিবাজ, সপ্তাহে তিনদিন আসার কথা। প্রায়ই একদিন ফাঁকি দিয়ে দেয়, ওকে দেখলেই সবাই বকাবকি করে, ঝিমলিও। উঠোনের নালা আর বাথরুম পরিস্কার করে, উঠোন ঝাঁট দেয়। ঝিমলির সঙ্গে ওর লাগে জাম নিয়ে। উঠোনের বড় জাম গাছটায় খুব মিষ্টি জাম হয় আর সাগুন এ বাড়ির কাজের লোক হওয়ার সুবাদে সর্দারি করে গাছে উঠে প্রায়ই ওর পুরো মহল্লাকে জাম খাওয়ায়, মালিকদের ভাগটাগ দেয়না। এদিকে ঝিমলির বন্ধুদেরও খুব প্রিয় এ বাড়ির গাছের জাম। বন্ধুরা এলে সাগুনকে জাম পেড়ে দিতে বললে দিতে চায়না, তানানানা করে।
    সেই সাগুন গান ধরল, "রঙ বরসে ভিগী চুনরিয়া", না দেখেও বুঝতে পারছিল শ্রোতা বা দর্শককূল পুরো মোহিত, মনে হয় কিছু লোক নাচছিলও গানের তালে, কারণ বার বার গাইতে বলে চেঁচাচ্ছিল সবাই, "সাগুন ফির সে, আবার"।

    অমিতাভর হেঁড়ে গলা হলেও, এই গানটা ওর খারাপ লাগেনা বিশেষ করে হোলির সময়, কথাগুলো খুব ভালো লাগে। সিলসিলা সিনেমাটাও ভালো, টিভিতে দিয়েছিল যখন দেখেছে। ওরকম একটা ফুলের বন দিয়ে সাদা বা হলুদ সালোয়ার কামিজ পরে ওড়না উড়িয়ে ছুটে যাওয়া কেমন স্বপ্নের মত লাগে, রেখাকে দারুন লাগছিল। আর "ফুল ভি হো দর্মিয়াঁ তো ফাসলে হুয়ে", এই লাইনটা তো কেমন গায়ে কাঁটা দেওয়া রোম্যান্টিক মনে হয়।
    মনে পড়তেই মনটা কেমন কেমন করে উঠল। আবার ছুটে আসে বাইরের ঘরে, আবার চোখ সেই জানালা দিয়ে রাস্তার দিকে। যদিও জানে আজ সরাফ স্যরের কোচিন বন্ধ, জয় আজ এসময় ম্যাথস করে ফিরবেনা। তবু তবু তাকিয়েই থাকে, যদি ভুল করেও সে আসে এই পথে? যদি হঠাৎ দেখে লম্বা চেহারায় একটু কুঁজো হয়ে বাঁই বাঁই করে কেউ সাইকেল ছোটাচ্ছে চির পরিচিত সেই ভঙ্গীতে!
  • shrabani | 117.239.15.28 | ১৩ মার্চ ২০১২ ১২:৪০469196
  • দুর, কী যে ভাবছে, জয় আজ কোথা থেকে আসবে! তার তো আবার শুধু বোর্ড নয়, মহাবোর্ড, আইআইটি ও আরো কত কী! জয়ের তো আই আইটি বাঁধা, ওদের স্কুলের ফার্স্ট বয় সব সময় আইআইটিতে পায়। সেকি আর হোলির দিনে পড়াশোনা না করে ঘর থেকে বেরোবে! ফার্স্ট বয় হলে কী হয় জয়ের ওপর ঝিমলিদের ক্লাসের কোনো মেয়েই ফ্ল্যাট নয়। এমনিতে এখানের সব মেয়েরাই সবসময় এক বা একাধিক জনের ওপর ফ্ল্যাট থাকে। দীপার দিদি কল্পনার ক্লাসমেট জয়, দীপাদের বাড়িতে মাঝে মাঝে আসে। দীপা ঝিমলিদের ক্লাসের একজন পান্ডাগোছের, সেদিন ব্রেকে ব্রাদারদের গিনিপিগ খরগোশ আর ময়ূরের খাঁচার সামনের ছোট মাঠটায় বসে জয়ের সম্বন্ধে বলছিল "দ্যাট বাসু বয়, ও পড়াশোনায় ভালো হতে পারে, কিন্তু কী ফিজিক, ঐ তালঢ্যাঙা শুঁটকে চেহারা, চোখে দেখা যায়না, প্যাথেটিক"।

    কথাটা উঠেছিল কল্পনার বার্থ ডে পার্টি নিয়ে। পার্টিতে ঝিমলির প্রানের বন্ধু অনু গিয়েছিল, দীপাদের সঙ্গে ওর খুব ভালো সম্পর্ক। অনুর অবশ্য সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক, সে সবার বাড়ি যায়। মূলত মিলস অ্যান্ড বুনস সার্কুলশন ক্লাবের অনু একজন উৎসাহী মেম্বার, ক্লাস স্কুল নির্বিশেষে সবার সাথে যোগাযোগ রেখে কার কাছে কী বই এল নতুন, সেটা কখন কে পাবে এসব বিলিব্যবস্থা দায়িত্বের সঙ্গে করে থাকে।
    তা তাদের ক্লাস থেকে শুধু অনু আর বন্দনা ছিল পার্টিতে, বন্দনা দীপার বেস্ট ফ্রেন্ড, যেমন ঝিমলির অনু। সেখানে শালিনী থাপর নাকি খুলে আম জয়ের সঙ্গে ফ্লার্ট করছিল। শালিনী দারুন চোস্ত মেয়ে, যেমন সুন্দরী তেমন স্মার্ট। তার জন্য যে ও পক্ষের প্রচুর ফ্ল্যাট লোকজন আছে তা এশহরের কোনো স্কুলের জনতারই জানতে বাকী নেই। সে অনেক মেয়েরই আইডল, স্কুলের অ্যানুয়াল ফ্যাশন শোয়ের লাগাতার শো স্টপার, তার এহেন পছন্দে মেয়েরা মর্মাহত। ঝিমলির তো দুগনা আঘাত, জয়ের নিন্দা শুনেও কান চাপতে পারছেনা আবার ওদিকে শালিনী থাপর জয়কে পছন্দ করেছে। এত শত ব্যথা নিজেই ছাই বুঝতে পারেনা তো আনজনে কোথা থেকে বুঝবে!

    জয়কে তো কবে থেকেই দেখছে, সব বাঙালী অনুষ্ঠানে, পূজোয়, যেখানে চারটে বাঙালী এক হয় সেখানেই। আলাদা করে কোনোদিন দেখেনি, দেখার মত মনেই হয়নি। ক্লাসে দু চারজন খুব গোঁড়া, শহর থেকে পড়তে আসা ব্যবসায়ীদের মেয়ে ছাড়া বাকী সবাই এক বা একাধিকের ওপরে ফ্ল্যাট, বেশীরভাগই সিনিয়র অথবা কখনো ছিটকে আলাপ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আর্মির মেয়েদের তালিকায় সদ্য গোঁফ ওঠা ক্যাপ্টেনও আছে একটি দুটি। তবে মোটের ওপর এই স্কুল বা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছেলেদেরই বাজারদর বেশী, আসলে তো সবাই তিনটি ক্যাম্পাসেরই ছেলেমেয়ে। স্কুলের বাইরে একাধিক জায়গায়, অনুষ্ঠানে দেখাসাক্ষাত হচ্ছে সবসময়।

    অনু কিন্তু এসবে নেই, তার হৃদয়েশ্বর সব তার মিলস অ্যান্ড বুনসের হীরোরা। এইসব প্যাংলা স্কুল বয়েজদের দেখলেই সে নাক সিঁটকোয়, টল ডার্ক হ্যান্ডসাম ছাড়া কোনো ফ্ল্যাট হওয়ার সিন নেই। সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হীরোদের ওপর ফ্ল্যাট থাকে, ইদানীং "লেপার্ড ইন দ্য স্নো" র হীরোর টার্ণ চলছে। অনুর জগ্‌ৎ মিলস অ্যান্ড বুনসময়। ও কাউকে কমপ্লিমেন্ট দিতে হলে বলে, অমুক বইয়ের হিরোয়িনের মত লাগছিস। এমনকি ওর বাবার চল্লিশ বছরের জন্মদিনে বলেছিল "পাপা, তুমি এখন ঐ বইয়ের হীরোর এজে চলে এসেছো, একদম দু:খ কোরোনা"। আঙ্কল ধরে গাঁট্টা লাগিয়েছিল কখানা। অনুর বাড়ির লোকেরা জানে ঝিমলির জন্যেই অনুর পড়াশোনা যা হয়, নাহলে কী যে হত!
    ঝিমলি সব ব্যাপারে অনুর কথামত চললেও, দুজনের পড়াটা ঐ জোর করে করায়, অনুকে ছাড়া ক্লাস ভাবতেই পারেনা সেজন্য তাকে পাস করানোর গরজ ওরই বেশী।

    প্রাণের বন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ সেও চিরকাল সেরকমটাই ভাবতে চেষ্টা করে এসেছে,টল ডার্ক হ্যান্ডসাম ছাড়া ফ্ল্যাট হওয়া যায় না। তাই কেউ কারোর ওপর ফ্ল্যাট হয়েছে শুনলেই ওরা দুজনে মিলে নাকটাক কুঁচকে একাকার করত। সব কেমন পালটে গেল দু বছর আগে জয়ের ঐ টেনের বোর্ডে দুর্দান্ত রেজাল্টের পর।
    জয়েদের বাড়ি তো প্রায়ই যেত। বাসু আন্টি সব অনুষ্ঠানেই নাচের প্রোগ্রামের দায়িত্বে থাকে। এমনিতে ঝিমলি কিছু এমন নৃত্যপটিয়সী নয়, দেখতেও ছিরি নেই, একমাত্র বাঙালী হওয়ার সুবাদেই নাচের দলে চান্স পায়। তাও লম্বা হওয়ার দরুন ওকে সবসময় পাগড়ী বেঁধে একখানা ছেলের নাচ দেওয়া হয়। আগে কিছু মনে করত না, কিন্তু ঐ সেই দুবছর আগে থেকে কেমন ছেলে সাজতে লজ্জা লজ্জা করতে লাগল। ওদের বাড়িতেই রিহার্সাল, যদি জয়ের চোখে পড়ে যায়।
    অবশ্য জয়কে কোনোদিন রিহার্সালের আশেপাশে দেখেনি। শেষ দুটো প্রোগ্রামের জন্য যখন ওবাড়ি গিয়েছিল কবার তখনো একদিনও চোখে পড়েনি। রিহার্সালের ফাঁকে দু একবার ঢুকে পড়ত জয়ের ঘরে, ওর বই খাতা গুলোকে ছুঁয়ে দিত। কী সব পোস্টার রেখেছে ঘরে, বক্সিং চ্যাম্পিয়ন, ব্রুস লী, বিদিকিচ্ছিরি!
    খুব ইচ্ছে ছিল আন্টি ওকে নায়িকার পার্ট টা দিক, ঊ সুইটির মত সেজেগুজে স্টেজে আসুক, জয় ওকে সুন্দর দেখুক। ইচ্ছে করলেই কী আর সব হয়, আন্টির সব নাচে সুইটির নায়িকার রোল বাঁধা। সুইটিও ঝিমলিদের ক্লাসের,বিহারী কিন্তু দারুন নাচে, দেখতেও ভালো মানে মুখটা ভালো লাগেনা তবে চেহারা র ঙ এসব চেয়ে দেখার মত। বাসু আন্টির মানসকন্যা সুইটি, তাকে নিয়ে আদিখ্যেতার শেষ নেই আর সুইটিরও গর্বে পা মাটিতে পড়েনা। সবাই এনিয়েও হাসাহাসি করে, বলে যে মিসেস বাসু সুইটিকেই ছেলের বউ করবে। বুক ভাঙার কী একখানা কারণ!

    যাইহোক আজকাল ও আর নাচে থাকেনা, পড়ার চাপ দেখিয়ে বারণ করে দেয়। আন্টিদের উল্টোদিকের বাড়িতে কেরলকার ম্যামের কাছে অঙ্ক করতে যায় যখন তখন মাঝে মাঝে আন্টি ধরে ব্যাডমিন্টন খেলার জন্যে। "একটু খেল না রে আমার সাথে, কী যে মুটকি হয়ে যাচ্ছি আমি"। ও খেলে, আবার ভাবে শাশুড়ীদের একটু মোটাসোটা হওয়াই ভালো,ছিমছাম স্মার্ট শাশুড়ী একদম পছন্দ নয়। এবারে পুজোয় পিঙ্ক সালোয়ার কামিজ পরেছিল, কপালে একটা ছোট্ট কালো টিপ। আন্টি দেখে বলল, "বা:, ঝিমলিকে তো টিপ পরলে বেশ লাগে। পরিস না কেন সালোয়ার কামিজ?" এমনিতে সালোয়ার কামিজ, টিপ চুড়ি এসব দু চক্ষের বিষ, তবু তারপরে দু একদিন ম্যামের কাছে পড়তে যাবার সময় পরে গিয়েছিল, তা আন্টি র সঙ্গে দেখাই হলনা। আন্টিকে নিয়ে এমনিতে খুব মজা হয় বাঙালী মহলে। গয়ার মেয়ে, তাই বাংলাটা কেমন বলে। আন্টির শ্বশুরবাড়ি কলকাতার খুব ভালো পরিবার, বিয়ের পরে নাচ শিখেছে, রবীন্দ্রসঙ্গীত। তবু এখনও মাঝে মাঝে গন্ডগোল করে ফেলে। পুজোর পর বিজয়া সম্মিলনীতে সেদিন যেমন কী নিয়ে বলতে গিয়ে বলে, "আমাদের ফল্গু নদী জান তো অন্ত:সত্বা"! সবাই তো এ ওর দিকে তাকাচ্ছে, তারপর শুক্লা কাকীমা উদ্ধার করল যে আন্টি আসলে "অন্ত:সলিলা" বলতে চাইছে। সবাই মজাক করলেও ঝিমলির আন্টিকে ভালোই লাগে, জয়ের মা বলে কথা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন