এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • achintyarup | 59.93.192.39 | ২৭ মার্চ ২০১১ ২০:৩৭468715
  • টুকলি করার নেশা বড় সাংঘাতিক। একটা লেখা টোকা শেষ হলেই আরেটা শুরু করার জন্য হাত নিশপিশ করে। যদি হাতে সময় থাকে। সুতরাং "আমার সময়' থেকে আরও একটা
  • achintyarup | 59.93.209.228 | ২৭ মার্চ ২০১১ ২১:০২468731
  • * সাগরদ্বীপের
  • achintyarup | 59.93.209.228 | ২৭ মার্চ ২০১১ ২১:০২468726
  • আঁধার তখন ঝুঁঝকো হয়ে এসেছে। সবে জোয়ার লাগছে, ফলে তলতলে পিছল কাদার ওপর আড়াআড়ি পা ফেলে নামতে হল। চটিদুটো হাতে, ক্যামেরা গলায় ঝুলছে। তারার আবছা আলোয় হাতড়ে হাতড়ে ফুট দশেক যাওয়ার পর পায়ের নিচে শক্ত মাটি পাওয়া গেল। সে মাটি আবার প্রায় খাড়া উঠে গেছে মাথা সমান। জোয়ারের জল থেকে দ্বীপকে আড়াল করার বাঁধ।

    সুন্দরবনের দ্বীপ। দ্বীপের নাম ঘোড়ামারা। সাগর্দ্বীপের দু-তিন কিলোমিটার উত্তরে -- পুবে তার মুড়িগঙ্গা, পশ্চিমে হুগলী নদী। উত্তরপশ্চিমে খানিকটা গেলেই নয়াচর। জায়গাগুলির নাম খুব চেনা। নয়াচর তুলনায় নতুন; স্থানীয় মানুষরা বলে নয়াচরা, কেউ কেউ বলে অগ্নিমারির চর। ঘোড়ামারা কিন্তু বহু পুরোনো। শ' দেড়েক বছর আগে সাগরের অংশ ছিল এ জায়গা। সাহেবরা বলত মাড পয়েণ্ট। পরে আস্তে আস্তে রাক্ষুসে নদী ঢুকে পড়ে সাগরদ্বীপের ভেতর, জমি খেতে খেতে চার টুকরো করে ফেলে দ্বীপটাকে। জলের ফোঁটার মত দেখতে সাগরের মূল অংশটা রয়ে গেল দক্ষিণে। তার উত্তরের নতুন দ্বীপের নাম হল সুপুরিভাঙ্গা বা বেডফোর্ড, তার উত্তরে লোহাচরা আর তারও উত্তরে হল গিয়ে ঘোড়ামারা। সাগরদ্বীপকে চার টুকরো করেও নদীর ক্ষিদে কিন্তু মেটেনি। আস্তে আস্তে গিলে নিয়েছিল দুটো গোটা দ্বীপকে। আজ থেকে পাঁচ ছয় বছর আগেও লোহাচরা কি সুপুরিভাঙ্গার চিহ্নটুকু পর্যন্ত দেখা যেত না। এখন অবশ্য... যাক, সে কথায় পরে আসছি।
  • achintyarup | 59.93.223.77 | ২৭ মার্চ ২০১১ ২১:২৮468732
  • ""এ সব জায়গাই এক সময় উত্তরপাড়ার মুখুজ্যেদের জমিদারি ছিল'' -- অন্ধকারের মধ্যে ভাকুদার গলা শোনা গেল। গ্রামীণ রোজগার প্রকল্পে বাঁধের ওপর নতুন মাটি ফেলা হয়েছে, শুকনো সেই মাটির চাঙ্গড়ের ওপর দিয়ে অন্ধকারে মাইল কয়েক হাঁটা যে কি কঠিন কাজ অনভিজ্ঞ লোককে সে কথা বোঝানো ভারি শক্ত। তার ওপর মাঝে মাঝেই বড় বড় ফাটল আর গর্ত। কিন্তু সাপখোপের চিন্তা করে লাভ নেই, কারণ সঙ্গে বাতি নেই কারও। অতএব ভাকুদার ভরসায় বাঁধের ওপর নৈশ পদযাত্রা। ওর বাড়িতেই খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা আজ রাতে।

    বিশ্ব উষ্ণায়ণের আজকাল বিক্রি খুব। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে। ফলে বছর পাঁচেক আগে -- ২০০৬ সালে -- সারা পৃথিবীতে প্রচার হয়ে গেল উষ্ণায়ণের ফলে সমুদ্রের জলস্তর এত বেড়েছে, যে ডুবে গেছে লোহাচরা আর সুপুরিভাঙ্গা। ঘোড়ামারাও অর্ধেকের বেশি তলিয়ে গেছে জলের নিচে। দাবি শুনে মুচকি হাসেন ইঞ্জিনিয়ার আর বিজ্ঞানীরা, যাঁরা বছরের পর বছর কাজ করেছেন এ তল্লাটে। লোহাচরা দ্বীপে বেশ কয়েক হাজার মানুষ থাকত এক সময়। এরা ঘরছাড়া হয়ে কেউ সাগরে, কেউ কাকদ্বীপে গিয়ে বসত করল। কাউকে কাউকে সামান্য ক্ষেতিজমি দিল সরকার, অনেকের কপালে তাও জুটল না। খবরের কাগজে প্রকাশ পেল এই লোহাচরার ঘরহারারাই বিশ্বের প্রথম উষ্ণায়ণ উদ্বাস্তু। ২০০৭ সালে হলিউডের কোডাক থিয়েটারে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড প্রেজেণ্টার জ্যাক নিকলসন, মেরিল স্ট্রিপ, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, জেনিফার লোপেজরা উপহার পেলেন লোহাচরা স্কাল্পচার। সে বড় গর্বের বিষয়। কোনো একটা ক্ষেত্রে তো এগিয়ে আছি আমরা সারা দুনিয়ার চেয়ে।
  • achintyarup | 59.93.241.160 | ২৮ মার্চ ২০১১ ০১:১৩468733
  • সুন্দরবনের বেশিরভাগ দ্বীপের মতই বিদ্যুতের তার ঘোড়ামারা অবধি পৌঁছয়নি এখনো। তবে সোলার পাওয়ার আছে বেশ কিছু বাড়িতে। সব বাড়িতে নেই যদিও। সৌরশক্তিতে চলা টিমটিমে বাতি রাস্তার ধারেও আছে কয়েকটা, যদিও খুব বেশি নয়। এবড়ো-খেবড়ো বাঁধের পথ শেষ হতে গ্রামের ভেতরে ঢুকলাম আমরা। ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। তার মধ্যেই কারও বাড়ির উঠোনের পাশ দিয়ে, কারও বাঁশঝাড়ের ভেতর দিয়ে চলা। নৌকো থেকে নামার পর পায়ে আর প্যাণ্টে যে কাদা লেগেছিল তা এখন শুকিয়ে খড়খড় করছে। নিজেদের গলার আওয়াজ ছাড়া কানে আসছে শুধু কটকটে ব্যাঙ আর ঝিঁঝির শব্দ।

    হঠাৎ সে সব শব্দ ছপিয়ে একটা গুনগুন আওয়াজ কানে এল। যেন অনেক ভোমরা একসঙ্গে একটা জায়গায় পাক খাচ্ছে। আরও শ' খানেক কদম চলার পর মনে হল শব্দটা আসলে বহু মানুষের গলার আওয়াজ। কলকাতার সিনেমা হলে শো শুরু হওয়ার আগে যেমন হয়, খানিকটা তেমনি। আমরা এগিয়ে চলার সাথে সাথে আওয়াজ বাড়তে লাগল, গমগমে হয়ে উঠতে লাগল আস্তে আস্তে। কোনো মিটিং হচ্ছে কি? কিন্তু মাইক তো বাজছে না। ঝকঝকে আলো-ও চোখে পড়ছে না। ভাবতে ভাবতেই এসে পড়লাম দ্বীপের মাঝখানে, ঘোড়ামারা বাজারে। এই বাজার থেকেই উঠছে শব্দ। শ' দেড়-দুই মানুষ জড়ো হয়েছে জায়গাটাতে, জটলা করে দাঁড়িয়ে বা চায়ের দোকানে বসে গল্প করছে তারা। এ তারই আওয়াজ। হঠাৎ করে দেখলে বাজার বলে বোঝার উপায়টুকু পর্যন্ত নেই। ছোট্ট মাঠ-মত জায়গাটার চারদিক ঘিরে গুটি সাত-আটেক দোকানঘর, সেখানে টিমটিম করে জ্বলছে কার্বাইড কি সোলার পাওয়ারের একটা-দুটো বাতি। তা ছাড়া গোটা বাজারে কোনো আলো নেই। চা-মুড়ি-তেলেভাজা আর মুদির দোকান ছাড়া কেনাকাটাও প্রায় চোখে পড়ল না। এক জায়গায় মাটিতে খানিকটা চুনোপুঁটি নিয়ে বসেছেন এক বিধবা মহিলা, আর দু-একজন বসেছে খানিকটা শাক-সব্জি নিয়ে। কিন্তু তাদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না কেউ। কারণ, কেনার ক্ষমতা যাদের আছে তাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই নিজেদের খাওয়ার মত কলা-মুলো-শাক-সব্জির চাষটুকু আছে। আর কেনার সঙ্গতি যাদের নেই, তারা খামখা সব্জিওয়ালা কি মাছওয়ালির দিকে যাবেই বা কেন? প্রতিটা জটলা তাই নিজেদের মধ্যে কথা বলতেই ব্যস্ত। অধিকাংশই দাঁড়িয়ে, সামান্য কিছু লোক দোকানের ভেতরে, ভ্যাপসা গরমের মধ্যে। তারা কেউ কেউ আবার চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তাসও খেলছে। ঠিক এই রকম বাজার আর কোথাও চোখে পড়েনি আমার -- যে বাজার কেবল পরস্পরের সঙ্গে মেলামেশার জায়গা, গ্রামের দৈনিক সংবাদ আদান-প্রদানের কেন্দ্র। বেচাকেনার স্থান এখানে গৌণ।
  • achintyarup | 59.93.241.23 | ২৮ মার্চ ২০১১ ০১:৩২468734
  • এই বাজার থেকে অনেক দূর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি। অনেক অনেক দূর। মানচিত্রের হিসেবে হতে পারে ১২০ কিলোমিটার, কিন্তু মনচিত্রের হিসেবের ফিতে সে দূরত্ব মাপতে পারে না। শেষ বসন্তের সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের খুপরি ঘরে বসে গল্প বলছিলেন সমুদ্রবিজ্ঞানী তুহিনবাবু। তুহিন ঘোষ। ভদ্রলোক ঘোড়ামারা দ্বীপের ভাঙ্গনের ওপর গবেষণা করে পি এচ ডি পেয়েছেন। নয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে একটানা প্রায় বছর নয়েক ঐ অঞ্চলে ঘোরাঘুরি আর গবেষণার কাজ করেছেন তুহিনবাবু। কথা প্রসঙ্গে বলছিলেন, ""জানেন, গত কয়েক বছরের স্যাটেলাইট ইমেজে দেখছিলাম লোহাচরা দ্বীপ আবার জেগে উঠছে।'' বলেন কি! তাহলে বিশ্ব উষ্ণায়ণে দ্বীপ ডোবার সেই তঙ্কÄ? সমুদ্র তল কি এখানে নেমে যাচ্ছে নাকি আবার? হাসলেন অধ্যাপক। বললেন, "একবার দেখেই আসুন না গিয়ে।''

    সেই দেখতেই এই পশ্চিম সুন্দরবন যাত্রা আমার।

    এ অঞ্চলে সাধারণত নৌকোর তুলনায় ট্রলারই বেশি চলে এখন। এরকম চার-চারখানা ট্রলার আছে অরুণ প্রামাণিকের। আগে লোহাচরায় ঘর ছিল অরুণের। পারিবারিক ট্রলার ব্যবসা সেই সময় থেকেই। দ্বীপ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর চলে আসে ঘোড়ামারায়, ১৯৯৩ সালে। সাগরেও খানিকটা জমি দিয়েছিল সরকার। এখন কাকা থাকেন সেখানে। ঠিক হল আমরা অরুণের ট্রলারেই যাব নতুন জেগে-ওঠা লোহাচরার খোঁজে। অরুণ নিজে কিন্তু আজকাল ঐ দিকে যায় না বিশেষ। বলল, ""না দাদা, লোহাচরা আর নেই। কী দেখবেন গিয়ে?'' কিন্তু আকাশ থেকে তোলা ছবিতে যে দেখা যাচ্ছে সে জায়গা? ""দেখুন তাহলে চেষ্টা করে। ভাড়া লাগবে ৬০০ টাকা।''

    ট্রলার চালাবে মুকুন্দ মণ্ডল। পাথরপ্রতিমায় বাড়ি। কতদিন মনে করতে পারে না -- মনে হয় ৪১ বছর আগে সেই জন্ম ইস্তক নদী আর নৌকোর সঙ্গে তার কারবার। এই ট্রলার চালানোর কাজই সে করছে বেশ কিছুদিন হয়ে গেল। ট্রলারে করে পান নিয়ে যায় হলদিয়ায়, হপ্তায় চারদিন। হ্যাঁ, ঘোড়ামারার দক্ষিণ-পশ্চিমেও সে যায় মাঝে মাঝে। চর একটা জাগছে বটে সেদিকে। বর্ষায় ততটা বোঝা যায় না, কিন্তু জল কমে এলে পরিষ্কার দেখা যায় সে চর। বাবুরা যাবেন নাকি সেদিকে?

  • achintyarup | 59.93.247.64 | ২৮ মার্চ ২০১১ ০২:১৫468735
  • ঘোড়ামারার খেয়াঘাট দ্বীপের দক্ষিণ-পুবে। সেখান থেকেই ছাড়বে ট্রলার। মুকুন্দর সঙ্গে আছে দুই সাকরেদ, ইয়ারুল খাঁ আর খুশনবি। বছর চব্বিশ-পঁচিশের ছোকরা দুজন। পুরো ভাঁটা পড়ে এসেছে, চরের কাছাকাছি গিয়ে লগি ঠেলার দরকার হবে।

    রওয়ানা হওয়া গেল যখন, বিকেল তখন প্রায় সাড়ে চারটে। সূর্য পশ্চিমে ঢলতে শুরু করেছে, কিন্তু তাপের কমতি নেই। রোদ যথেষ্ট গনগনে। নদীর জলেও ঝিলিক মারছে চোখ-ধাঁধানো আলো। ঘোড়ামারার ধার বরাবর চলল ট্রলার -- দক্ষিণ বেড়ে। মিনিট পনেরো যাওয়ার পর দ্বীপ থেকে দূরে সরতে লাগলাম আমরা, কোনাকুনি -- লোহাচরার দিকে। চারদিকে ধূ ধূ করছে জল, ডাইনে ঘাড় ঘোরালে দূরে দেখা যায় নয়াচর, বাঁয়ে কাকদ্বীপ প্রায় আবছায়া লাগে। ভটভট ভটভট করে চলেছে ট্রলার, তার ওপরে রোদে চোখ কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছি আমরা -- কলকাতার লিভিংস্টোন।

    এই কয়েক মিনিটের মধ্যেই আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে রোদের তেজ, লাল হয়ে আসছে আলো। হঠাৎ সামনে খানিক দূরে কালচে একটা রেখার আভাস দেখা গেল জলের মধ্যে। হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। ক' বছর আগে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল যে দ্বীপ, সে আবার ফিরে আসছে নদীর খেয়ালে, আর সেই হারানো-প্রাপ্তির খবর পৃথিবীকে জানানোর জন্যে আমাদের এই জলযাত্রা অবশেষে সার্থক হতে চলেছে। সেই মুহূর্তের মনের ভাব ঠিক ঠিক কালি-কলমে তুলে আনা আমার মত লেখকের পক্ষে কঠিন।

    ট্রলার এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে সামনের কালো রেখাটা আকারে বাড়তে থাকল। আস্তে আস্তে একটা চরের চেহারা স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল চোখের সামনে। তেপান্তরের মত বিশাল চর এলিয়ে পড়ে রয়েছে জলের বুকের ওপর। জন্ম নিচ্ছে নতুন দ্বীপ। সব জেনেশুনে আসা সঙ্কেÄও যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না নিজের চোখকে। সত্যি তাহলে জেগে উঠছে লোহাচরা? রাক্ষসী নদী আবার যদি গিলে না ফেলে, কয়েক বছরের মধ্যে ফের ঘাসপাতা গজিয়ে উঠবে এখানে? তারপর আস্তে আস্তে আরও গাছপালা, পাখি, জেলেদের কুঁড়ে দু-একটা, আবার মানুষের গলার আওয়াজ, শিশুর কান্না, সন্ধেয় ঘরে-ফেরা ক্লান্ত মাঝির গলায় গুনগুন গান...

    ""একবার নেমে দেখবেন নাকি?'' চটকা ভেঙ্গে যায় ভাকুদার প্রশ্ন শুনে। নামব? এখানে? সত্যি সত্যি? চরে নামার কথাটা আগে মাথাতেই আসেনি আমার। নৌকো থেকে দেখতে পাব, সে-ই মনে হয়েছিল যথেষ্ট সৌভাগ্য। জবাবের অপেক্ষা না করে মুকুন্দকে নোঙর ফেলতে বলল ভাকুদা। ধীর হয়ে আস্তে আস্তে থেমে গেল ইঞ্জিনের ধক ধক। অল্প অল্প দুলছে ট্রলার, ভাঁটার নদীর ছোট ছোট ঢেউ এসে ভাঙ্গছে তার গায়ে, শুধু সেই ছলাৎ ছলাৎ শব্দটুকু ছাড়া আর কোনো আওয়াজ নেই কোত্থাও। ইয়ারুল আর খুশনবি ধরাধরি করে একটা তক্তা নামিয়ে দিল চরের কাছে। যেখানটায় নামতে হবে সেই জায়গাটায় প্রায় হাঁটুজল। প্যাণ্ট গুটিয়ে তক্তা বেয়ে তরতর করে নেমে পড়লাম নদীতে। তারপর ছপাৎ ছপাৎ করে জল ভেঙ্গে চরের ওপরে গিয়ে উঠলাম। আমাদের ঠিক পেছনে, নন্দীগ্রামের গাংড়া চরের ওপারে তখন অস্ত যাচ্ছে লাল বলের মত সূর্য। সামনে বহুদূর পর্যন্ত বিছিয়ে রয়েছে জলে-ভেজা শিশু দ্বীপ -- লোহাচরা।

    মুগ্‌ধ হয়ে দেখছি চারদিক, আদিখ্যেতা করে একমুঠো মাটি তুলে নিয়েছি হাতে, সঙ্গে করে নিয়ে যাব কলকাতায়। ভাকুদা ততক্ষণে ইয়ারুলের সাথে হাঁটতে শুরু করেছে সোজা পুব মুখে। যেন হাঁটতে হাঁটতে দ্বীপ ছাড়িয়ে নদী পেরিয়ে এক্কেবারে সেই আট নম্বর লটের ঘাটে গিয়ে উঠবে। এদিকে সুয্যিদেব তো ডুব মেরেছেন বেশ কয়েক মিনিট হয়ে গেল। ঘুমজড়ানো চোখের মত টকটকে হয়ে রয়েছে আকাশ আর নদী। আর খানিক পরেই জোয়ার লাগবে। বাড়তে শুরু করবে জল, আস্তে আস্তে ডেকে দিতে থাকবে চরের মাটি। তারও ঘণ্টা ছয়েক বাদে, ফের ভাঁটার সময় আবার জেগে উঠবে চরা, আরও এক পরত পলি বুকে মেখে। জোয়ারে আর ভাঁটায় দিনে দিনে ফের বেড়ে উঠবে দ্বীপ, লেখা শুরু হবে হুগলী মোহনার ইতিহাসের আরও একটা অধ্যায়।

    (শেষ)
  • achintyarup | 59.93.247.64 | ২৮ মার্চ ২০১১ ০২:১৮468736
  • *ঢেকে দিতে থাকবে চরের মাটি।
  • Nina | 68.84.239.41 | ২৮ মার্চ ২০১১ ০৫:৪০468737
  • কি সুন্দর।
  • pharida | 220.227.148.193 | ২৮ মার্চ ২০১১ ১০:৩৩468716
  • এই লেখা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়।
  • Manish | 59.90.135.107 | ২৮ মার্চ ২০১১ ১২:৩২468717
  • অচিন্ত্য অসা।

    অনুরোধ আরো লিখুন এইরকম অচেনা অজানা বিষয় নিয়ে।
  • Sujata | 203.197.123.130 | ২৮ মার্চ ২০১১ ১৫:১২468718
  • অচিন্ত্য, এক কথায় অসাধারণ।
  • achintyarup | 121.241.214.38 | ২৮ মার্চ ২০১১ ১৮:২৩468719
  • ধন্যবাদ সক্কলকে। কিন্তু উষ্ণায়ণ বা ডুবে-যাওয়া দ্বীপ-টিপ সম্পর্কে কেউ কিছু বলবেন না?
  • Manish | 59.90.135.107 | ২৯ মার্চ ২০১১ ১২:২৭468720
  • এ ব্যাপারে কেলোবাবু দু পয়সা দিতে পারে।
  • I | 14.99.235.138 | ৩১ মার্চ ২০১১ ০১:৪৬468721
  • এট্টু তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল না? আরো, আরো
  • achintyarup | 59.93.244.71 | ০৬ এপ্রিল ২০১১ ০৪:৫৬468722
  • কেলোবাবু মনে হচ্ছে দুপয়সা নিয়ে ফেরার হয়েছেন। অগত্যা আমার কাছে কানাকড়ি আর যেটুকু পড়ে আছে তাই দিয়ে টইটা ভাসাই, দ্বীপগুলো সব ডুবে যাওয়ার আগে।

    কিন্তু আজকে খুব ঘুম পেল
  • achintyarup | 59.94.2.156 | ০৭ এপ্রিল ২০১১ ০৩:৫৩468723
  • সত্তরের দশকের শুরুর দিকে পশ্চিম সুন্দরবনে একটি ছোট্ট দ্বীপ ছিল। নাম ছিল কাকদ্বীপ স্যাণ্ড। কাকদ্বীপের আট নম্বর লটের ঘাট আর সাগরদ্বীপের মোটামুটি মাঝামাঝি জায়গায় মুড়িগঙ্গা বা বড়তলা নদীতে ছিল সেই দ্বীপ। মানুষের বাস ছিল না সেখানে, কিন্তু যাতায়াত ছিল। যথেষ্ট ঘন ম্যানগ্রোভের জঙ্গল ছিল সেখানে।

    ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন অভিজিৎবাবু। অভিজিৎ সেনগুপ্ত। কর্মসূত্রে অনেকদিন কাটিয়েছেন পশ্চিম সুন্দরবন অঞ্চলে। সেই সত্তরের দশকে। সে সব জায়গার জীবন আর প্রকৃতি নিয়ে লিখেছেন টুকরো টুকরো স্কেচ। সেই সব স্কেচ জুড়ে বই হয়েছে "সুন্দরবনের ডায়েরি' (চর্চাপদ পুন:প্রকাশ করেছে এই বইমেলায়। সুযোগ পেলেই কিনবেন এবং পড়বেন। ঠকবেন না, গ্রাণ্টি)। সে বইয়ের একটি লেখার নাম "চরে জঙ্গলে'। সেখান থেকে কিছু লাইন টুকে দিচ্ছি:

    ""খুদিরাম মণ্ডল বলল -- ঐ জঙ্গলটা বাবু পাঁচশো লোকের জীবন বাঁচিয়ে রেখেছে। ঐ জঙ্গল না থাকলে এ-অঞ্চলে চুরি ডাকাতি ভীষণ বেড়ে যেত। মানুষে আর শানিতিতে থাকতে পারত না এদেশে।

    ""...আমাদের ডানদিকে পুব-পশ্চিমে টানা চলে গেছে কাকদ্বীপ স্যাণ্ড বা কাকদ্বীপের চরা। সমস্ত চরাটাই নিবিড় বুনো গাছ-গাছলিতে ঠাসা। বাইরের থেকে দেখলে মনে হয় দুর্ভেদ্য। সেদিকে তাকিয়েই কথাগুলো বলল খুদিরাম মণ্ডল... জোয়ার লেগে গেছে অনেকক্ষণ। কলকল করে সমুদ্রের লোনা জল ঢুকছে ছোট ছোট খাল আর খাঁড়িতে। কাকদ্বীপ স্যাণ্ড-এ সার্ভের কাজ শুরু হবে তাই দ্বীপটি ঘুরে দেখতে যাচ্ছি।

    ""...জিজ্ঞেস করলাম -- আচ্ছা খুদিরাম, এই চরের বয়স কত?

    ""খুদিরাম বলল -- আমরাই খুব ছোটবেলায় এই চর হতে দেখেছি স্যার। কুড়ি পঁচিশ বছর আগেও ওখানে জোয়ারে অনেক জল থাকত। কচুবেড়ের নৌকো যেত উপর দিয়ে। কাকদ্বীপে দাঁড়ালে তখন ওপারে সাগর (সাগরদ্বীপ) দেখা যেত।

    ""--কুড়ি পঁচিশ বছরেই এত বড় একটা চরা হয়ে গেল?

    ""--হ্যাঁ স্যার। প্রথমে ছিল খালি কাদা। এক টুকরো ঘাসও ছিল না। তারপর হল ধানী ঘাস। আস্তে আস্তে এই এতবড় একটা জঙ্গল হয়ে গেল। হয়ে ভাল হয়েছে স্যার। গরিব লোকের অনেক উপকার হয়েছে।

    "...খুদিরাম আঙুল দেখিয়ে বলল -- দেখুন স্যার, নদীর খেলা -- আমরাই দেখলাম এই চর হতে, আবার আমরাই দেখব এই চর নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে। নদীর খেয়াল কেউ বলতে পারে না স্যার।

    ""খুদিরামের নির্দেশমত সামনে তাকিয়ে দেখি নদীর পাড়ে পাড়ে ভাঙনের লক্ষণ সুস্পষ্ট। বড় বড় ভূখণ্ড বুনো গাছপালা সমেত জলের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে তা দেখেই বোঝা গেল। আঁকাবাঁকা শিকড়ের মত ফাটলের রেখা সর্বত্র। দ্বীপের পশ্চিম পাড় দেখা হল এবং এবার আমরা নৌকোয় ফিরে যাব...

    ""... ভাঁটা শুরু হয়ে গেছে। নৌকো চলছে আমাদের। কাকদ্বীপ স্যাণ্ডের পূর্ব তটভূমিতে জেগে উঠছে ঘাসের চরা -- সবুজ নরম তকতকে ধানী ঘাস। অর্থাৎ একেবারে নতুন সৃষ্টি হয়েছে এ-চরা। আথচ ওদিকে পাড় ভাঙছে। কেউ-ই জানে না আর বিশ পনের বছর পর কী রূপ নেবে এই অরণ্যভূমি।''
  • achintyarup | 59.94.2.156 | ০৭ এপ্রিল ২০১১ ০৪:২৫468724
  • সুন্দরবনের মানুষ কিন্তু জানে। খুদিরাম বলল শুনলেন না -- ""আমরাই দেখলাম এই চর হতে, আবার আমরাই দেখব এই চর নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে''? এ কথা বলার পনের বিশ বছর পর খুদিরাম বেঁচে ছিল কিনা জানি না। থাকলে নিশ্চয়ই দেখেছে কেমনভাবে আস্তে আস্তে জঙ্গলে-ঠাসা দ্বীপ গিলে নিয়েছে নদী। কাকদ্বীপে দাঁড়িয়ে পশ্চিমে তাকালে ফের দেখা যায় সাগরদ্বীপ।

    সেই পনের বিশ বছরের পর পেরিয়ে গেছে আরও পনের বিশ বছর। কাকদ্বীপ আর সাগরের মাঝে জায়গায় জায়গায় আবার তৈরি হচ্ছে চর। ভাঁটার সময় মাঝে মাঝেই তাতে ঠেকে যায় নৌকো। আর সে চরের গোলকধাঁধার ভেতরে একবার ঢুকে পড়লে আর রক্ষে নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হবে গালে হাত দিয়ে। যতক্ষণ জোয়ার না আসে।

    ভাকুদার বাড়ি রাত কাটিয়ে ভোরবেলার ফার্স্ট ট্রলারটা ধরেছিলাম কাকদ্বীপ ফিরব বলে। শেষ শীতের ভোরের নদী কুয়াশায় মোড়া। সূর্য চোখে পড়ে না। শিরশিরে ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে। কান-মাথা জড়িয়ে দাঁড়িয়েছি ট্রলারের ওপর। ভাঁটা চলছিল তখন। কুয়াশায় বেশি দূর দৃষ্টি চলে না। সাগর আর কাকদ্বীপের মাঝামাঝি কোনো জায়গায় হঠাৎ ঘচাৎ করে চড়ায় ঠেকে টলমল করে উঠল ট্রলার। লগি হাতে নিয়ে জল মাপতে থাকে মাঝি। ডানদিকে খানিক এগোয় -- চড়া। বাঁদিকে যায় -- ফের চড়া। মাঝে মাঝেই এমন নড়েচড়ে ওঠে নৌকো যে মনে হয় ওল্টালো বুঝি। মাঝিদের কপাল কুঁচকে আছে চিন্তায়। ইঞ্জিন থেমে যায়। মনে হয় ঘণ্টা চারেক বসতে হবে। হালে বসে ছিল যে বুড়ো মাঝি, সে চেঁচিয়ে কিছু বলল কমবয়সী হেল্পারকে। ফের ভুটভুট করে উঠল ইঞ্জিন। আবার খানিক ডাইনে, খানিক বাঁয়ে, কিছুটা এগিয়ে, একটু ঘুরে বাঁশের লগি দিয়ে জল মাপতে মাপতে অবশেষে পাওয়া গেল সে ভুলভুলাইয়া থেকে বেরোনোর পথ। মাফলার সরিয়ে কপালের ঘাম মুছলাম। আর একটুখানি গেলেই কাকদ্বীপ।
  • anirban | 72.36.120.184 | ০৭ এপ্রিল ২০১১ ০৫:৩৯468725
  • অচিন্ত্যরূপ, খুব সুন্দর লেখা। আসলে এই বিষয়টি (বদ্বীপের জন্ম ও মৃত্যু) বেশ জটিল ও একাধিক ফ্যাক্টর এর সাথে জড়িত। অন্যতম মূল নিয়ন্ত্রন থাকে কতখানি সেডিমেন্ট আসছে তার ওপরও। এ যেন অনেকটা পরস্পরবিরোধী দুটো প্রক্রিয়ার মধ্যে লড়াই। ধরুন, যদি সেডিমেন্ট সাপ্লাইয়ের রেট সমুদ্রতলের উচ্চতা বাড়ার থেকে বেশি হয় তাহলে ল্যান্ড-বিল্ডিং হয়, উল্টোটা হলে পরে বদ্বীপ ডুবে যায়। এই বিষয়টি নিয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। আমাদের দেশে কেউ কাজ করছেন কিনা আমার জানা নেই (কারণ এটা সরাসরি আমার বিষয়ের মধ্যে পড়ে না) - ফলে কারো জানা থাকলে অবশ্যই link দিন। আর মিসিসিপি বদ্বীপ নিয়ে আমার পরিচিত একটি গবেষণার link দিলাম। খুব interesting

    http://www.nature.com/ngeo/journal/vaop/ncurrent/full/ngeo553.html
  • siki | 123.242.248.130 | ০৭ এপ্রিল ২০১১ ০৮:৫৬468727
  • চাকরিজীবনের প্রথমদিকে বাবার পোস্টিং ছিল ঐ কাকদ্বীপ সাগরদ্বীপে। অল্প অল্প শুনেছি গল্প। আরো হোক।
  • sayan | 12.20.48.10 | ০৮ এপ্রিল ২০১১ ০২:২৬468728
  • অচিন্ত্যরূপ, মাটি, সূর্য আর জলের এমন জীবন্ত বর্ণনা অসাধারণ।
    রাক্ষুসী নদীর ছলাৎ-ছল কানে লেগে রইল।
    আর ওই গুনগুন হাটখানি।
  • dri | 117.194.229.235 | ০৮ এপ্রিল ২০১১ ২২:৫৩468729
  • অচিন্ত্য, আমি বলি কি? আপনি আর একবার চলে যান তুহিনবাবুর কাছে। জিজ্ঞেস করুন কারণগুলো।

    কিম্বা কেলোদাকে ধরুন। ঘুগনি রুটি খাওয়ান।

    মে বি আমরা আরো দুটো চারটে কথা জানতে পারব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন