আন্তর্জাতিক রাজনীতি, ভু রাজনীতি এগুলা নিয়ে নানা সময় নানা মন্তব্য করে ফেলি। আসলে তো এর বিন্দু বিসর্গও বুঝি না আমি। কী থেক কী হচ্ছে আল্লা মালুম। ডক্টর ইউনুসকে এক দাগে খারাপ মানুষ বলে দেওয়া সম্ভব না। আমিও বলতে চাই না। কিন্তু তিনি এমন সব কাজ করছেন যার হিসাব ভালো মানুষের খাতায় নাই। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। কে এই তাইজুল ইসলাম? আর এইটা কোন ট্রাইব্যুনাল? একটু চিন্তা করেন! এইটা হচ্ছে সেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেখানে সমস্ত রাজাকারদের বিচার করা হয়েছে। এখন এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ বাকি যাদের নামে মামলা হয়েছে, হয়ত জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবিরদেরও এই ট্রাইব্যুনালেই বিচার হবে। মজাটা হচ্ছে কেই তাজুল ইসলাম প্রশ্নে! এই একই ট্রাইব্যুনালে রাজাকারদের বিচার চলার সময় এই উকিল জামাতের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন! মনে হচ্ছে না এইটা একটা প্রতিশোধের মঞ্চ বানানো হচ্ছে? মনে হচ্ছে না নোবেল জয়ই মানুষটার অন্তর তীব্র ঘৃণায় পূর্ণ? তিনি পিষে মারতে চাচ্ছেন প্রতিপক্ষকে? এতে যদি দেশ, জাতি, মুক্তিযুদ্ধের সাথেও আপোষ করতে হয় তার সেই আপোষে কোন দ্বিধা নেই! আর এইটা বুঝার পরেও তার মহানুবতা নিয়ে কথা বলতে হবে? বলতে হবে আরে তিনি জ্ঞানী মানুষ, ঠিক সব লাইনে এনে ফেলবে! লাইন চ্যুত করার সমস্ত ব্যবস্থা করে সব লাইনে চলবে আশা করা কে কী বলব? আম গাছ লাগিয়ে আনারস পাওয়ার আশা? ... ...
আমি যে গল্পের জন্য গিয়েছিলাম তা পাইনি। কিন্তু যা পেলাম তার কোন মাপজোক সম্ভব? তিনি আমাকে বললেন তিনি ১৯৭১ সালেই এসেছিলেন। আমি যে জন্য গিয়েছি তার কোন ডাটা তাদের কাছে নাই আর আগের কেউ বেঁচেও নাই। উনি পুরোপুরি আমাকে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেন নাই। আমি যখন প্রথমে গেলাম তখন কার্ড চেয়েছিলাম, উনি আমাকে বলছিলেন কার্ড থাক, আমিই তোমার সাথে যোগাযোগ করব। আমি আর কী বলব? চলে আসছি, আসার আগে বললাম একটা সেলফি তুলি? উনি হাসি দিয়ে রাজি হলেন। দ্বিতীয় বার যখন আমি আমার বই নিয়ে গেলাম তখন তাঁর সমস্ত দ্বিধা চলে গেছে। তিনি তখন নিজেই কার্ড দিলেন আমাকে আর বললেন, একটু দাঁড়াও, তোমার একটা ছবি তুলে রাখি! আমি হাসি মুখে একটা ছবি তুলতে দিলাম উনাকে। ... ...
এইসবের মাঝেই সীমান্তে আবার এক কিশোরীর লাশ! ফেলানি থেকে স্বর্ণা দাস! অষ্টম শ্রেণিতে পড়া একটা মেয়ে। কত দুর্ধর্ষ চোরাকারবারি ছিল স্বর্ণা দাস? গুলি করে মেরে ফেলল বিএসেফ। ত্রিপুরায় ওর ভাই থাকে, দালালের মধ্যমে সীমান্ত পার হচ্ছিল মায়ের সাথে। গুলি খেয়ে মরল স্বর্ণা দাস। বিএসএফ বরাবরই বলে আসছে সব অপরাধী। সব চোরাকারবারি! চোরাকারবারি সব বাংলাদেশের? এখান থেকে এমনে এমনেই চোরাকারবারি করা যায়? ওই পাশের কারও সাহায্য লাগে না? গুলি খায় শুধু আমাদের লোকজন? এমন একটা পরিস্থিতি যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত! ভাইরে কী একেবারে চলছে এইখানে যে এত মানুষ মরছে এখানে? আরে ভারতের নিজের দেশের আইনেই গুলি মারার আইন নাই, তবুও চলছে হত্যা! প্রথম আলো থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি, "জয়েন্ট ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ গাইডলাইনস ফর বর্ডার অথোরিটিজ অব দ্য টু কান্ট্রিজ প্রটোকলের ধারা ৮(আই) অনুসারে, এক দেশের নাগরিক যদি বেআইনিভাবে অন্য দেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করে বা কোনো অপরাধে লিপ্ত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আত্মরক্ষায় যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবে, তবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করাটাই বাঞ্ছনীয়।" ... ...
আফগানিস্তান, বেলারুশ, বুরনিকা ফাসো, মিয়ানমার, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, হাইতি, ইরান, ইরাক, লেবানন, লিবিয়া, মালি, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, সিরিয়া, ইউক্রেন, ভেনেজুয়েলা এবং ইয়েমেন। এই দেশের নাম গুলোর সাথে এখন বাংলাদেশ! কিসের তালিকা এইটা? এইটা হচ্ছে আমেরিকা তার নাগরিকদেরকে এই সব দেশে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখানে এতদিন বাংলাদেশ ছিল না। মাশাল্লাহ এক মাসে বর্তমান সরকার কৃতিত্বের সাথে এই তালিকায় নাম লেখিয়ে ফেলতে পারছে। আমি গত এক মাস ধরেই এই প্যাঁচাল লিখে যাচ্ছি যে দেশে আইন শৃঙ্খলা বলতে কিছু নাই। আমেরিকা তাদের সতর্কবার্তায় লেখা হয়েছে, "বেসামরিক অস্থিরতা, অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন না। সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে সতর্ক করে মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে এতে আরও বলা হয়, এই সময় স্বল্প বা আগাম সতর্কতা ছাড়াই সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। বিশেষ করে পর্যটন গন্তব্য, বাস–ট্রেন স্টেশন, বাজার বা শপিংমল, রেস্তোরাঁ, ধর্মীয় স্থান, স্কুল ক্যাম্পাস এবং সরকারি স্থাপনা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।" এমন পরিস্থিতিতে সরকারের জবাব তৈরিই আছে, সব আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র! তারাই দেশেকে অস্থিতিশীল বানাচ্ছে। এদিকে চোখের সামনে বিএনপির নেতাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ মানুষ। এক মাসের মধ্যে এইটা কী চাইছিলাম আমরা বলা শুরু হয়ে গেছে। ... ...
বলা হচ্ছে যারা ভারত বিরোধিতা না করবে তারা দেশপ্রেমিক না! কোন বিকল্প নাই! বুঝেন এখন! সেতু উপদেষ্টা পদ্মা সেতুর টাকা বাঁচিয়ে কত বড় কাজ করছে এই কৃতিত্ব নেওয়ার পরে গতকাল বলছে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ জনগণের কোন উপকার হয় নাই! এই বিষয়টাও বুঝতে হবে আপনাদের। পদ্মা সেতুতে রেললাইন হলে কেন জনগণের উপকার হবে না? পশ্চিম, দক্ষিণ বঙ্গের ওই অংশ পুরোটা রেলের আওতায় এসে যাচ্ছে, এইটা ভালো না? না! কেন? কারণ বহুদিন ধরেই একটা গুজব বাতাসে ঘুরছে এই রেল লাইন বানানোই হচ্ছে ভারতের ট্রেন যেন সোজা কলকাতা থেকে ঢাকা আসতে পারে এই জন্য! দেশের উপর দিয়ে রেল করিডর দেওয়ার কথা এই জন্যই এই পদ্মা সেতুতে রেলের ব্যবস্থা, অনেকে আরও একটু এগিয়ে বলে পদ্মা সেতু বানানোর জন্য সরকারের যে এত প্রবল ইচ্ছা ছিল তা এই কারণেই, ভারতকে দেশের ভিতর দিয়ে রেল করিডর দেওয়া! খুলনা, যশোর, বরিশাল জেলার মানুষকে কেউ জিজ্ঞাস করে না কেন এই সেতু কেন বানাইছে? জীবনে দুই একবার যে ওইদিকে গেছি, তাতেই গলা ছেড়ে কান্না আসছে যে কেন সেতু নাই! ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে এই অঞ্চলের মানুষ। আমি অবাক হয়ে গেছি এই কারবার দেখে! যাদের সুযোগ থাকে তারা লঞ্চে যাতায়াত করত তখন। কিন্তু সবার তো সেই সুযোগ ছিল না। যশোর, খুলনা, বাগেরহাট এরা কই যাবে কী দিয়া যাবে? না, সেতু বানাইছেই ভারতের জন্য! ওই যে বিলো অ্যাভারেজ আইকিউ! এই কথার পরে এখন উপদেষ্টার বুদ্ধিও মাপতে পারেন আপনারা, কোন সমস্যা নাই! ... ...
সারা দেশে শিক্ষকদের অপমান অপদস্থের একটা মিছিল শুরু হইছে। কোথাও যদি না হয় তাহলে উশখুশ শুরু হয়ে যাচ্ছে, এখানে কেন কিছু হচ্ছে না? বয়স্ক শিক্ষকদের রীতিমত অপমান করে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। এই ব্যাপারে আমাদের আইন উপদেষ্টা বলেছেন এগুলা হওয়া ঠিক না, কিন্তু শিক্ষকরা এতদিন দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন দিয়েছে তাই এগুলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টার মতোই কথা না? একটা ভিডিও দেখছি যেখানে এক শিক্ষক পদত্যাগ পত্রে জোর করে সাক্ষর দেওয়ার পরে তিনি দুম করে কাঁপতে কাঁপতে পরে গেলেন।ধরাধরি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সম্ভবত। গতকাল শুনলাম তিনি মারা গেছেন! এগুলার কোন মূল্য নাই। একদল মানুষ এখন যাই হচ্ছে, যে অনিয়মই হচ্ছে তাকেই চোখ বন্ধ করে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। প্রিন্স মাহমুদ, যিনি বাংলাদেশের খ্যাতনামা সুরকার। তিনি পুরো আন্দোলন জুড়েই অন্ধ সমর্থন দিয়ে গেছেন ছাত্রদের। এবং তিনি এখন পর্যন্ত ওই ঘোর থেকে বের হতে পারেন নাই। তিনি আরেকজনের একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করছেন। যা তার নিজেরও বক্তব্য। সেখানে লেখা শিক্ষক যদি দলদাসে পরিণত না হয় তাহলে বখাটে ছাত্রও সেই শিক্ষকের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য। দলদাস শিক্ষক ইতর ছাত্র থেকেও অধম। এই যে মবের প্রতি উৎসাহ দেওয়া, তারা জানে কী হচ্ছে পুরো দেশে? তাদের উৎসাহ পেয়ে সামনে আরও কী কী হতে পারে? কালকে দেখলাম আরেকজন লিখেছে যারা এগুলা নিয়ে মায়া দেখাচ্ছে তারা জুলাই মাসে কই ছিল? একটা শ্রেণিই না কি জুলাইয়ে চুপ থেকে এখন এইসবের জন্য মায়া কান্না করছে! ফ্যালাসির কোন মাত্রা কোন ধারণা আছে কোন? ... ...
শুরুতে আন্সারুল্লাহ দলের নেতা মুক্তি পেয়েছে বলছি। এখন আরেক নিষিদ্ধ সংগঠনের কথা বলি যারা বুক ফুলিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সব জায়গায়। সেটা হচ্ছে হিজবুত তাহরীর! এই নিষিদ্ধ সংগঠন হোলি আর্টিজেনের ঘটনায় যে দুইজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিল তাদের স্মরণে যে ভাস্কর্য বানানো হয়েছিল সেই ভাস্কর্য ভেঙ্গে দিয়েছে! দীপ্ত শপথ নামের এই ভাস্কর্য ভেঙ্গে সেখানে খেলাফতের আহবান জানানো পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে। এইটা কবের ঘটনা? গতকালের ঘটনা মানে সরকার গঠন করার প্রায় বিশ দিন পরে যখন দাবি করা হচ্ছে আইন কানুন ফিরে আসছে দেশে। কোথায় এই ভাস্কর্য? ঢাকার গুলশান এভিনিউয়ে ! ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে কেউ ভাস্কর্য ভেঙ্গে চলে গেছে খেলাফতের পোস্টার টাঙ্গিয়ে। কেউ কিছু জানে না। গুলশান থানার পুলিশ এইটা নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি! দায়িত্বশীল কেউ কোন বক্তব্য দেয় নাই। হিজবুত তাহরীর নিষিদ্ধ ২০০৯ সাল থেকে। এরা উগ্র ইসলামিক দল। যারা খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কট্টর অবস্থান নিয়ে চলে। ৫ তারিখ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরেই এরা প্রকাশ্যে চলে আসে। কোন রাখঢাক না করে ব্যানার নিয়ে, পোস্টার নিয়ে তারা মিছিল করে চলছে। ত্রাণের জন্য ক্যাম্প বসিয়েছে! সব চলছে চোখের সামনে। কেউ একটা শব্দ পর্যন্ত করছে না। ... ...
গতকালের সেরা চমক পেয়েছি টুইটারে! আমাকে একজন একটা স্ক্রিনশট দেখাল। ইউএস নেভাল ইনিস্টিটিউট নামের একটা একাউন্ট থেকে গত ২২ আগস্ট একটা টুইট করা হয়েছে। তাতে লেখা "Bangladesh could be an important security partner for the United States, with desirable facilities on the Bay of Bengal and an interest in a free and open Indo-Pacific." এর পরে তাদের ওয়েবসাইটের একটা প্রতিবেদনের লিংক দিয়েছে। আমি এইটা সত্য না মিথ্যা তা দেখার জন্য টুইটারে ঢুকলাম। ঢুকে নিশ্চিত হলাম যে না এইটা যা দেখছি তা সত্যই দেখছি। প্রতিবেদনটাও পড়লাম। নানা বিষয় আলোচনা করেছে সেখানে। কেন আমেরিকার একটা নৌ বাহিনীর ঘাটি বঙ্গোপসাগরে দরকার! এখানে একটা জাহাজ তৈরির শিল্প তৈরি হয়েছে, এইটাও তাদের কাজে লাগবে! জাহাজ মেরামত করা কাজে লাগবে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী আর ইউএস নৌ বাহিনী মিলে এই অঞ্চলে কত দারুণ সব কাজ করা সম্ভব তাও লিখেছে! দারুণ না? এইটা দেখেই মনে হল “এতক্ষণে”- অরিন্দম কহিলা বিষাদে! ... ...
এই পরিস্থিতির মতো গল্প শুনলাম আজকে আরেকটা। কয়েকদিন আগের ঘটনা। সেই কুৎসিত রাতের গল্প। যখন সমস্ত বাংলাদেশ এক সাথে কালি গোলা অন্ধকারে ডুবে গেছিল। তিনি নিজের মা বোনকে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। এলাকার বিএনপির নেতারা এসে অভয় দিচ্ছেন, কে কইছে আগুন দিব তোমাদের বাড়িতে? ডরাইতেছ কেন? যত এগুলা বলে তত ভয় আরও বাড়ে! কী অদ্ভুত সময়! এদিকে উনাদের নিচ তালায় ভাড়াটিয়া থাকে, তারা এসে জিজ্ঞাস করছে, এখন কী করব? আমরা বের হয়ে যাব? কই যাব? কী উত্তর দিবেন তিনি? উনি আমাকে বললেন, একটা শব্দও মুখ দিয়ে বের হল না। আমি হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম ওইখান থেকে। ঘরে ঢুকলেন। আমার মতোই তিনিও ভাবলেন বই গুলার কথা। একটা একটা করে বই স্পর্শ করছেন আর ভাবছেন এইটা সরায় রাখব? এইটা নিয়ে রাখব? বইয়ের মাঝে টাকা রাখছেন কি মনে করে কে জানে। ওগুলা হাতে নিলেন। টাকা পকেটে রাখব? বই পুড়লে, বাড়ি পুড়লে এই টাকার কথা ভেবে লাভ আছে? অল্প কিছু টাকা, ওইটা আবার রেখে দিলেন বইয়ের মধ্যেই। জিনিসপত্র দেখলেন, হাতালেন। কী করবেন তখন? অথচ একটা হিড়িক উঠলেই এই বাড়ি যে পুড়া হবে তা নিশ্চিত! কী করার আছে একজনের এই সময়ে? উনার পরিচিত যে কয়জন আছে তারা সাথে আসলেন। কিন্তু তাদের চোখ মুখও শুকিয়ে গেছে। সাহস দেওয়ার সাহসও নাই কারও। এর মধ্যে উনার বাবা বাসায় আসলেন। তিনি তার বাবাকে বললেন, তুমি ওদের সাথে চলে যাইতা? উনার বাবা বললেন, না, আমি বাড়িতেই থাকব, যদি আগুন দেয় তাইলে এইখানেই মরমু! বলে কোরান শরিফ নিয়ে পড়তে লাগলেন! টানা ছয় সাতদিন তাদের এমন করেই গেছে। ঘুম নাই, রাতের পর রাত জেগে জেগে পাহারা দিয়ে পার করেছেন তারা। অথচ এরা রাজনৈতিক পরিবারের কেউ না। শহরের মধ্যে অর্থ সম্পদ আছে, সচ্ছল একটা পরিবার। এবং এইটাই বড় অপরাধ! ... ...
অরাজকতা সীমা অতিক্রম করে ফেলছে। শুরুতে আমিও লিখেছিলাম সরকার গঠন করে ফেলল ছাত্রদের তো ডাকও দিল না! এইটা সম্ভবত এরা খুব করে খেয়াল করেছে। ফলাফল এখন ওরাই দেশ চালাবে বলে ঠিক করেছে। ছাত্ররা রাজু ভাস্কর্যের সামনে আগুন ঝরা বক্তব্য দিয়ে উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে ফেলছে, মানে তাদের কথায় পরিবর্তন হচ্ছে! ইতিহাস, সংস্কৃতি নিয়ে যা ইচ্ছা তা তো বলছেই, কেউ তো চ্যালেঞ্জ করছে না তাদের বক্তব্যকে! সর্বশেষ যা হল, ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষার্থীদের এক দল ছাত্র সচিবালয় মিছিল করে গেল। হুড়মুড় করে ঢুকে গেল সচিবালয়ে, সোজা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এক প্রকার গান পয়েন্টের মতো করে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে আসল! মানে একবার ভাবুন, ছাত্ররা চাচ্ছে পরীক্ষা দিব না, দিবেই না! এইটাই মানতে হবে। মব কালচার রীতিমত! টিভিতে একটা মেয়ে প্রায় কান্না করে দিচ্ছে পরীক্ষা হবে না শুনে। ও বলছে ওর মতো অনেকেরই স্বপ্ন ছিল মাধ্যমিকের পরে বাহিরের কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার। এই ফলাফল তো কোন দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই মানবে না। তাদের স্বপ্ন তো শেষ। সামনেও তাদেরকে এই ফলাফলের জন্য ভুগতে হবে। এই যে তার অত্যন্ত যৌক্তিক একটা কথা, এইটা কেউ শোনার নাই। মহামান্যরা ছাত্রদের ভয়ে তারা যা বলছে তাই করছে। কেউ যুক্তি দেখাচ্ছে অনেক পরীক্ষার্থী হাসপাতালে আছে এখনও, তাদের কথা ভেবে হলেও এইটা নিয়ে আর তর্ক করার দরকার নাই! সব হাস্যকর কথা না? আরে কয়জন ছাত্র হাসপাতালে? কয় হাজার? তাদের জন্য আলাদা করে একটা ব্যবস্থা করা গেল না? লক্ষ লক্ষ ছাত্রদের এই বিপদে ফেলার মানে কী? ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ২৮ হাজার ২৮১, এদের সবাইকে কেন আমি গড়ের বিপদে ফেলব? সারা জীবনের কান্না হয়ে থাকবে না এই ফলাফল? কে বলবে এই কথা? ... ...