প্লেটের দিকে তাকিয়ে সেদিন সর্বপ্রথম যার মুখটা ভেসে উঠল তিনি আর কেউ নন আমাদের ক্লাশ ইলেভেনের বায়োলজি স্যারের। স্যারের বয়স হচ্ছিল, শরীর তেমন সাথ দিচ্ছিল না – তবুও তিনি আমাদের ফিল্ড ট্রিপে নিয়ে গিয়ে গাছ-পালা চেনাবার চেষ্টা করতেন। আমরা কিছুই শিখি নি – সেটা অন্য ব্যাপার, তাতে স্যারের দিক থেকে খামতি কিছু ছিল না। তো সেদিন প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছি, আর মনে মনে ভাবছি এই প্লেট স্যার সামনে পেলে আর আমাদের কষ্ট করে বর্ধমানে রমনার পার্কে নিয়ে গিয়ে গাছপালা চেনাতে হত না! ক্লাসে বসেই যত অচেনা আর অখাদ্য শাক পাতার বিবরণ সহ পরিচিতি হয়ে যেত! ... ...
সেদিন ফেরার পথে মাঝ আকাশে এয়ারহোষ্টেসকে জিজ্ঞেস করলাম – তোমার বাড়ি কোথায়? মৃদু হেসে মেয়েটি বলে তুমি আগে শোনাও বাড়ি কাকে বলে! প্লেনের জানালার ওপাশে আকাশ দেখি - ওখানে কার বাড়ি? ... ...
পৃথিবীর বয়স কত? ধরুণ গিয়ে ঐ মোটামুটি ৪.৩ বিলিয়ন ইয়ার, মানে ওই ৪৩০ কোটি বছরের মত আর কি। তো এই এত বছর বয়সে পৃথিবীর বুক থেকে ‘প্রাণ’ নাম জিনিসটার পুরোপুরি অবলুপ্তি হয়েছে বার কয়েক ধরে নেওয়া যাক। ওই যেমন ডাইনোসার রা হাপিস হয়ে গিয়েছিল। সেই অর্থে মনুষ্য প্রজাতির (হোমো স্যাপিয়েন্স) এর অবলুপ্তি পৃথিবীর বুক থেকে এখনো হয় নি। কিন্তু যদি হত? ... ...
মোদ্দা কথা টাকা থাকলেই আসবে ক্ষমতা – এবার সেই ক্ষমতা নিয়ে আপনি কি করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। টাকা আর ক্ষমতা কাছে চলে এলে আপনি আপনার চারিদিকে যে পাবলিক ঘুরঘুর করছে তাদের কন্ট্রোল করতে পারবেন – এবং তারা আপনার জন্য আপনার চাদিকের পৃথিবী পালটে দেবার চেষ্টা করবে আপনার পছন্দ মত। এবং সেই ক্ষমতা বাড়তে বাড়তে একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আপনি চারপাশের ‘বাস্তবতা’ নিজে ইচ্ছে মত তৈরী করে নিতে পারবেন! এই পর্যায়ে আপনাকে আর সত্যের বিকৃতি ঘটাতে হবে না টাকা উপায়ের জন্য, টাকাই আপনার জন্য সত্যের বিকৃতি ঘটিয়ে দেবে! ... ...
অন্ধকার চেনাবে রাস্তা – বাড়ির সামনের শ্বেতপাথরের ফলক চিনে নিয়ে দেশলাই কাঠি শোনাবে ইতিহাস, ঘুঙুরের ঝঙ্কার একদা এখানেই ঘুমিয়ে নিত অতীত বৈধ কোলে মাথা রেখে ... ...
একদিন দেবী জেগে উঠে বলল আমাকে পদ্ম এনে দাও জানালাম স্থলপদ্মের গাছটায় ফুল আসে না তো আজকাল! ... ...
১৯৯৩ সালের কথা - জ্যোতিবাবু যাচ্ছেন কিউবা, প্রথমে যাবেন কিউবার রাজধানী হাভানা, সেখানে ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে দেখা সাক্ষাত করে তারপর কিউবা একটু ঘুরে দেখবেন। সিপিআইএম পার্টি থেকে জ্যোতিবাবুর সঙ্গী হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরী। যাওয়ার কয়েকদিন আগে জ্যোতিবাবু ফোন লাগালেন ইয়েচুরী-কে। - সীতা, তা তুমি কি নিয়ে যাবে ভাবছো কাস্ত্রো-র জন্য? এত দূর থেকে যাচ্ছি, খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না! - জ্যোতিদা আমি তো এখনো তেমন ডিটেলস কিছু ভাবিনি! তা আপনি কি নিয়ে যাচ্ছেন? জ্যোতিবাবু ফোনের এদিকে তাঁর সেই বিখ্যাত না ফুটে বেরুনো হাসিটা হেসে নিলেন – কারণ তিনি জানেন যে এই ব্যাপারে তিনি এগিয়ে আছেন ইয়েচুরীর থেকে। তাঁর ভাবার তত কিছু নেই – কারণ কুড়ি বছর আগে কাস্ত্রো কলকাতা এলে বোঝাই গিয়েছিল তিনি কি জিনিস ভালোবাসেন। তাই জ্যোতি বসু বললেন - - আমার দিক থেকে তেমন ভাবার কিছু নেই, ও সব ঠিক আছে। - একটু খুলেই বলুন না। - অত কথা এখন ফোনে বলার সময় নেই, এয়ারপোর্টে দেখা হলে বলব সেই গল্প না হয়। - ঠিক আছে, তাহলে আমি ভেবে দেখি কি নেওয়া যায় - বেশী দামী জিনিস নিও না যেন! একটা কথা মনে রেখো সীতা, আমরা কমিউনিষ্ট পার্টি – দামী জিনিস আমাদের ইমেজের সাথে যাবে না ... ...
জামগাছটার তলায় যেতে ভয় করত – অনেক দিন আগে স্কুল ফেরত আমরা খালি ফলিডলের বোতল আর উপুড় হয়ে থাকা ঝাঁকড়া চুল দেখেছিলাম ... ...
একদিন অঙ্কের খাতার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আমার অবধারিত প্রশ্ন বুঝতে পেরেই আগেভাগে বলে উঠেছিল - এ মেলানোর অঙ্ক নয় ... ...
কারা যেন রাতের বেলা কথা বলে বারান্দায় কাঁচের ঠোকাঠুকি শুনি মাঝে মাঝে ক্লান্ত হাসি সকালের অপেক্ষা করে চোখের কোণের কালি তবু চাঁদের আলো শুধু প্রেমের গানই শোনায় ... ...