এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • রকবাজির কোলাজঃ কোলকাতা ও ছত্তিশগড় (১) (সংশোধিত)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২৭৯ বার পঠিত
  • রকবাজির কোলাজঃ কোলকাতা ও ছত্তিশগড় (১) (সংশোধিত)

    স্টকহোম সিন্ড্রোম

    ইদানীং শহর কোলকাতায় রকও নেই, রকের আড্ডাও নেই। অবশ্য রক বা রোয়াক বঙ্গের নাগরসভ্যতায় উত্তর কোলকাতার অবদান। সিমলে, বিডন স্ট্রিট, হরি ঘোষ স্ট্রিট, বলরাম বসু স্ট্রিট,  বাগবাজার সর্বত্র ৫০-৬০ বছর আগেও দেখা যেত বাড়িগুলোর দরজা অব্দি পৌঁছুতে তিন ধাপ সিঁড়ি—যেন গাঁয়ের পুকুরের ঘাটের আদলে তৈরি। আর তার দুপাশে লাল সিমেন্টের বাঁধানো বারান্দা বা রক।

    চণ্ডীমণ্ডপের বদলে সেই রকে বসেই মাদুর বা শতরঞ্চি পেতে তাস, দাবা, পাশা এবং হুঁকো চলত। তার সঙ্গে পাড়ার যত কেচ্ছা এবং খবরের আদানপ্রদান। তার সঙ্গে আড় চোখে পথ চলতি মেয়েদের দেখে রসালো মন্তব্য। এঁড়েদ’ বা আড়িয়াদহের পণ্ডিত পরিবারের ছেলেদের মুখে শুনেছি ভট্টপল্লী বা ভাটাপাড়ার গঙ্গার ধারের চণ্ডীমণ্ডপেও সেই একই বেত্তান্ত।

    উত্তর কোলকাতার ওই পাড়ায় এলোমেলো এ’গলি সে’গলি টোটো করে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে চোখে পড়েছিল কোন বাড়ির দরজায় একটা পাতলা টিনের টুকরো সাঁটা; তাতে লেখা- ‘গেরস্ত বাড়ি্‌ ঢুকিবেন না’।

    গেরস্ত এবং হাফ-গেরস্ত শব্দগুলো  তখনই প্রথম শুনি।

    আমার এই ভাট বকার কোলাজে ঘোরাফেরা করব কখনও কোলকাতায়, কখনও ছত্তিশগড়ে। আজ কোলকাতার পালা।

    সময়ের সঙ্গে জমির দাম বাড়ল, স্থান অপ্রতুল। ফলে বাড়ির ডিজাইন থেকে বাহুল্য বোধে রোয়াক বাদ গেল। ফলে ষাটের দশকের শেষে আমাদের প্রজন্ম আড্ডা জমাতো বন্ধ প্রাইমারি স্কুলের বারান্দায়, সন্ধ্যেয় গোলপোস্টের ধারে অথবা পাড়ার মিষ্টির দোকানের  সিঁড়িতে। টপিকের মধ্যে ইস্টবেংগল মোহনবাগান, নতুন সিনেমার গান ছাড়াও ঢুকে পড়ল রাজনীতির চর্চা এবং বিতর্ক।

    নাকতলার বাসরাস্তার মোড়ে  আমার বন্ধুর পিতৃদেবের চায়ের দোকান। সেখানে সারাদিন আসর জমিয়ে তর্কবিতর্ক চালান সিনিয়রেরা। আমরা নাম দিয়েছিলাম পলিট ব্যুরো।  ওঁয়ারা শুধু কড়া চা এবং সিগ্রেট খান, বিস্কুট কদাচিৎ। ফলে টোস্ট, ওমলেট ঘুগনি বিক্রি বন্ধ। আর আমাদের ওই দোকানে প্রবেশ নিষেধ। তাই দোকান চলে টিমটিম করে।

    মেসোমশাই সারাজীবন শুধু লুঙি আর গেঞ্জি পরে সসপ্যানে চা গরম করে ওঁদের কাঁচের গেলাসে পরিবেশন করেই কাটিয়ে গেলেন। শুনেছি ওঁর হাতের চায়ে আলাদা স্বাদ ছিল। বিখ্যাত সরোদিয়া তিমিরবরণকে দেখেছি রোজ দু’বার রাস্তার ওপার থেকে চুপচাপ পায়ে হেঁটে এখানে এসে গম্ভীর মুখে ওই গেলাস চা সোনামুখ করে খেয়ে যেতে।

    নাকতলার ভেতর দিকে আমাদের আড্ডায় সন্ধ্যের মুখে প্রায়শই এসে দাঁড়াতেন ঘ্যান্টার বাবা। মাথায় একটা নীলচে টুপি এবং বগলে রুল। মেসোমশায় পুলিশে কনস্টেবল হয়ে ঢুকেছিলেন এখন প্রৌঢ়ত্বের দোরগোড়ায় এসে দারোগা হয়েছেন।
     
    ওনার ইংরেজি শেখার ঘাটতি  নিয়ে একটু কমপ্লেক্স ছিল। এসেই আমাদের নতুন নতুন ট্রান্সলেশন ধরতেন। সুবীরদা আমাদের পাড়ার ভাল ছেলে। লেখাপড়ায় বেশ নাম। তাকেই বেশি করে ধরতেন।
    -- আচ্ছা সুবীর, তুমি তো ভাল ছেলে। বলত -- ঝিরঝির করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে, ইংরেজিতে কী হবে?
    সুবীরদা বিরক্ত মুখে বলল — ইট ইজ ড্রিজলিং।
    -- তাহলে  টিপ টিপ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে কী হবে?
    (বিরস বদনে) — ওই ড্রিজলিংই হবে।
    তা কী করে হবে? টিপটিপ আর ঝিরঝির কী এক?
    -- মেসোমশাই, আমি অত জানি না।
    সে কী! তুমি এত ভাল ছেলে, এত নামডাক। এই সামান্য ট্রান্সলেশনে আটকে গেলে! না, দোষ তোমার নয়। আজকালকার স্কুলে কিছুই শেখায় না। টিচাররা খালি পলিটিক্স করে। মজদুরদের মত লালঝাণ্ডা রাজনীতি করে। এতেই দেশটা উচ্ছন্নে যাচ্ছে।
    মেশোমশায়ের উৎপাত বেড়েই চলল। এনাকে কী করে ঠেকাই? রোজ রোজ অফিস থেকে কিছু কিছু অমূল্য জ্ঞান সঞ্চয় করে এনে আমাদের উপরে বমি করে দিতেন।
    কখনও উৎকট সব গ্রামারের প্রশ্ন।
    --কগনেট অবজেক্ট কাকে বলে? কজিটিভ ভার্ভ কী? কোয়াসি প্যাসিভ ভার্ভ কী? উদাহরণ দাও। কখন ‘আই’ পর ‘অ্যাম’ না হয়ে ‘আর’ বসবে?
    ‘এক যে ছিল পাগলা ছাগল এমনি সেটা ওস্তাদ,
    গানের তালে শিং বাগিয়ে মারল গুঁতো পশ্চাত’।

    সমস্যার সমাধান হল এক পাগলার হাতে। ছেলেটা বেলেঘাটার মাল, এ’পাড়ায় নতুন ভাড়াটে। ওর বাবা কোন আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ইদানীং টালিগঞ্জ পাড়ায় কোন ব্র্যাঞ্চে বদলি হয়েছেন, অগত্যা!
    একদিন আমাদের আড্ডায় ভালমানুষের মত গোবেচারা মুখ করে এল। দেখলে মনে হয় সদ্য হাফপ্যান্ট ছেড়ে ফুলপ্যান্ট ধরেছে।
    জিজ্ঞেস করলাম, কাদের বাড়ির ভাড়াটে? শীতল দত্তদের।
    -- ওহ্‌ ঠান্ডা দত্ত? হলদেটে দোতলা বাড়ি! তা’ কোন তলায় উঠেছ?
    ছেলেটা ফিচেল হেসে বলল –নীচের তলায় না, ওপরের তলায়।
    -- এতে হাসির কী হল?
    ছেলেটা থতমত খেল, যেন না জেনে কোন অপরাধ  করেছে।
    তারপর কিন্তু কিন্তু করে বলল—না মানে, আমাদের বেলেঘাটার ফুলবাগানের ঠেকে কোন প্রেগনান্ট মেয়েকে দেখলে বলা হত ‘ওর নিচের তলায় ভাড়াটে এসেছে’। তাই বলছিলাম, ভুল বুঝবেন না।
    বিজন – এত মহা পোঁয়াপাকা ছেলে!
    সজল — পেকে হলুদ হয়ে গেছে, এবার পচে যাবে।
    তৎক্ষণাৎ ঠেকে ওর নামকরণ হল ‘পচা’। ও সেটা হাসিমুখে মেনে নিল এবং আড্ডার সিনিয়রদের ফুট ফরমাশ খাটতে শুরু করল।
    পচা, যা তো নড়ার দোকান থেকে দুটো পানামা নিয়ে আয়। পচা, আমার জন্যে চারমিনা
    এবার অধীরের দোকানে বল চার প্লেট ঘুগনি দিতে, লেবু আর কাঁচালংকা আলাদা।
    পচা মাথা চুলকে বলল — পহা দিন।
    -- থাপ্পড় খাবি, আমার নামে ওর খাতায় লিখিয়ে আয়।
    -- নারাণদা, গত সপ্তাহেই অধীরদা বলেছিল দুমাসের হিসেব বাকি পড়েছে। সেটা ক্লিয়ার না করলে আর নগদ ছাড়া দেবে না।
    নারাণ মুখ বিকৃত করে বলে — এই অধীরটা না! একেবারে নির্লজ্জ। আমি কি মরে যাচ্ছি না পাড়া ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছি?
    তারপর একটা দশটাকার নোট ছুঁড়ে দেয় — যা পালা!
    পচা নোটটা কুড়িয়ে একটা মক স্যালুট মারে। 
    আমরা হৈহৈ করে উঠি। পেয়েছে, নারাণ নিঘঘাৎ শিকদার বাড়ি থেকে টিউশনির দু’মাসের বকায়া মাইনে পেয়েছে। ওর টিউশনির বাজার গরম,  পড়ায় ভাল। কিন্তু এই একটা বাড়ি ঠিকমত মাইনে দেয় না। মাসের গোড়ায় নাকি ভুলে যায়।

    আমরা বলি-লাভস্‌ লেবার লস্ট! ওই বাড়িটা ছেড়ে দে। নারাণ বন্ধুদের কথা কানে তোলে না। কারণ, ওই বাড়িতে একটি ছাত্রী পড়ানোর কড়ারে গেছল। ছাত্রীর পড়ায় মন নেই। ওরা ধীরে ধীরে তার ছোট বোন ও ভাইকেও  হোমটাস্কের খাতাবই শুদ্ধ বসিয়ে দেয়, একই মাইনেতেই। তবে রোজ চা এবং চিনি রুটি দেয়।
    আর ও আধ ঘন্টা পড়াতেই ছেলেমেয়ের মা এসে মাস্টারমশাইয়ের পাশে বসে গল্প করতে থাকেন, যত রাজ্যের গসিপ এবং পদ্মশ্রীতে হলে আসা নতুন সিনেমা।  
    নারাণের মাথা ধরে যায়, তবু টিউশনিটা ছাড়ে না। বললে বলে—যাকগে, বাচ্চাগুলো আমার জন্যে পাশ তো করে যাচ্ছে, কোন রাজাগজা রেজাল্ট নাই হোক। এত কম টাকায় আর কোন টিউটর পায় না।
    সবাই কোরাস গায়—তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার, ওরে ভীরু!
    কিন্তু আসল কথাটা আমি জানি। একদিন আলাদা করে চেপে ধরায় নারাণ স্বীকার করেছিল যে ছাত্রছাত্রী উদ্ধার নয়, আসল কারণ হল ওদের মা।
    -- তোর কি মাথা খারাপ? কালকেই ছেড়ে দে ওই বাড়ি। তোর ভদ্রতায় আটকালে আমি গিয়ে শিকদারবাবুকে বলে দিচ্ছি।
    নারাণ চুপ করে থাকে, মাথা নিচু করে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে ধূলোয় আঁকিবুকি কাটেশ ।
    তারপর সোজা হয়ে বলে—ছাড়তে পারবো না রে। আমায় মাপ করে দে। আসলে বিনীতা বউদির গায়ে একটা বুনো গন্ধ আছে, পাগল করে দেয়।
    আমি টের পাই, ভাল ছেলে এবং আদর্শ মাস্টারমশাই নারাণ ভেতরে ভেতরে পচে গেছে, ওই হল আসলি পচা!
    সে যাকগে, আমাদের রেজিস্টার্ড ফচকে পচা ওই দারোগা মেসোমশাইয়ের ইংরেজির ভূত ছাড়িয়ে দিল, একদিনে।
    সেদিন মাসপয়লা। দারোগাবাবু মাইনে পেয়ে খোস মেজাজে পাড়ায় ঢুকেছেন। জমজমাট আড্ডা দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন। মুচকি মুচকি হাসছেন; নির্ঘাৎ আজ অফিস থেকে কিছু প্যাঁচালো প্রশ্ন মুখস্থ করে এসেছেন।  আমরা প্রমাদ গুনলাম।
    কথা ঘোরাতে জিগ্যেস করি—মেসোমশায়, মাইনে পেয়েছেন?
    উনি আমাকে পাত্তা না দিয়ে শুরু করলেন—বলত, ‘মস্‌মস্‌ করা নতুন জুতা’ এটার ইংরেজি কী হবে?
    আমরা মুখ লুকোচ্ছি, সুবীরদার ফর্সা মুখ ক্রমশঃ লাল হচ্ছে।
    হঠাত ওই রেক্টাম-রাইপ ছেলেটার পাতলা আওয়াজ শোনা গেল—আপনে কন তো, “কচকচ করা নতুন বাল”, এর ইংরেজি কী অইব?
    শ্মশানের নিস্তব্ধতা!  
    দারোগার কালো মুখ বেগুনপোড়ার রঙ ধরল। হাতের রুল বাগিয়ে উনি পচার দিকে তেড়ে গেলেন, ‘হারামজাদা! আমি তর বাপের বয়েসি, আমার লগে ফাইজলামি করস্‌’?
    ছেলেটা এক পা এক পা করে পেছোয়।
    -- বা রে। আপনে রাইগ্যা  যান ক্যান? আমিও তো ইংরেজি জিগাইলাম। আপনে কইলেন -মসমস করা নতুন জুতা! আমি কইলাম কচকচ করা নতুন বাল!
    আমরা সবাই মিলে পচাকে ডবল ডিমের ওমলেট খাওয়ালাম।

    কিন্তু দারোগা মেসোর হাত থেকে ছাড়া পেলেও ওঁর ইঞ্জিরির ভূত আমাদের সুবীরদার ঘাড়ে সওয়ার হল।
    সুবীরদা তখন চারুচন্দ্র ওরফে চেরো কলেজে পড়ে। সেখানের ইউনিয়নের নাম “ডায়না”। ইহা আদি এবং অকৃত্রিম। কলিকাতার অন্য কোন কলেজে ইহার শাখা নাই।
    সুবীরদা ওদের কালচারাল সেক্রেটারি হয়ে আড্ডায় হেবি ঘ্যাম নিল। লাইব্রেরিতে বসে অনেক কিছু ইঞ্জিরিতে পড়ে আমাদের আড্ডায় ফাণ্ডা ঝাড়তে লাগল। ভাগ্যি ভাল, দারোগা মেসোর মত পড়া ধরত না। 
    একদিন শিখে এল “স্টকহোম সিন্ড্রোম”। সে কী কাণ্ড! আমাদের আড্ডায় আদ্দেক মেম্বার জানেই না স্টকহোম জায়গাটা কোথায়। ওদের ধারণা আমেরিকায়।
    শেষে সুবীরদা খুব প্যাট্রিসিয়া হার্স্ট, কিডন্যাপিং, রেড আর্মি — এইসব ফান্ডা দিল। আমাদের মাথা ধরে গেল। পচাকে বললাম সবার জন্যে হাফ চা আর একটা করে লেড়ো বিস্কুট  নিয়ে আয়। আর হ্যাঁ, সুবীরদার নামে লিখতে বলিস, ও মানা করবে না।
       খালি পেটে এত জ্ঞান সইবে না।
    চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম – একটু সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বল না, ওই স্টকহোম না কোপেনহাগেন ব্যাপারটা কী? খায় না মাথায় দেয়?
    সুদীপ খানিক পরে বলল, বুঝেছি — শোষিত অত্যাচারিত যখন প্রতিবাদ করার বদলে শোষকের পক্ষ  নেয়, তার গুণগান করে — এইতো?
    হতাশ সুবীরদা বলল — খানিকটা তাই বটে।
    তখন আমাদের সভাগায়ক বিপুল বলল – আরে রবীন্দ্রনাথও এই নিয়ে গান লিখে গেছেন।
    আমাদের তোল্লাই খেয়ে ব্যাটা দু’কলি গেয়ে দিলঃ

    “আরও আরও প্রভু, আরও,
    এমনি করে, এমনি করে আমায় মারো।
    লুকিয়ে থাকি আমি পালিয়ে বেড়াই,
    ধরা পড়ে গেছি আর কি এড়াই!
    আমার যা কিছু আছে সব কাড়ো কাড়ো”।

    সুদীপ খেঁকিয়ে উঠল -- এটা তোমার বালের সিন্ড্রোম? না ইয়ের মাথা? বড়জোর ম্যাসোকিজম্‌ ধরা যেতে পারে।
    রবীন্দ্রভক্ত বিজন আরও এককাঠি।
    -- অ্যাই কবিগুরুকে নিয়ে ফালতু কথা না। তোদের আঁতলেমি থেকে ওনাকে ছাড়ান দে।
    হাওয়া গরম দেখে আমি সন্ধির চেষ্টা করি। কিন্ত ভবি ভোলে না।
    আবার সেই পচা এসে মাঝখানে দাঁড়ায়। সবার সামনে চায়ের গেলাস ধরিয়ে নিচু গলায় বলে – আমি নাদান; মাঝখানে কতা বললে মাফ করে দেবেন। যা বুঝছি ওই স্টকহোম নিয়ে এত টেম্পারের দরকার নেই। আমাদের বেলেঘাটার ফুলবাগানের বুলটি ভাল পদ্য লিখত। আমাদের ক্লাবের দেয়াল বুলেটিনে ওর একটা পদ্য হেব্বি হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে ওই স্টকহোমের কথাই ভেবে লিখেছিল। শোনাই?
    আমরা সোল্লাসে বলি — হয়ে যাক, চালাও পানসি বেলেঘাটা! ল্লে পচা!
    ও একটু থেমে শুরু করেঃ
     “ওরে বাছা,  কাঁদিস কেন? তোর কী হয়েছে?
    -- বলব কী আর, ব্যাটা আমার পেছন মেরেছে।
    কে দেখেছে, কে দেখেছে? - সবাই দেখেছে।  
    মুখটি বুঁজে চুপটি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
    চল্‌লি কোথায়? আগে ব্যাটার নামটা বলে দে?
    --যাচ্ছি এখন ওরই কাছে, আবার ডেকেছে”!
    ------------------------------------------
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Arindam Basu | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৪:০৫742394
  • আড্ডা নিয়ে এমন জমাটি লেখা যখন শুরু করেছেন রঞ্জনবাবু, শাঁটুলবাবুকে নিয়ে শঙ্করলাল ভটচায্যির স্মৃতিকথাটাও এখানে তোলা থাক। অমন আড্ডাবাজ আর দুটি পাবেন না মশাই,
     
     
  • Ranjan Roy | ০৪ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৭742463
  • ধন্যবাদ অরিনদা, ডাউনলোড করে নিলাম। অনেক আগে কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের লেখায় ওঁর বন্ধু শাঁটুলবাবুর যে সামান্য বর্ণনা বিভিন্ন সময়ে পেয়েছি তাতেই ওঁকে নিয়ে কৌতুহল ছিল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন