এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • চল পানসি মঙ্গলাজোড়ি 

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৪৬৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)


  • দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি
     
    বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছি অনেক ভোরে। কাঁচের সার্সির ওপারে তখনও নিকষ কালো আঁধারের রবরবা। কন্যার কড়া হুকুম - “উঠে পড়ো। চারটায় গাড়ি এসে যাবে। এরপর গেলে কোনো লাভ নেই। আমরাতো শুধু বেড়াতে যাচ্ছিনা।” স্পন্সর সাহেবার এমন ফরমানের পর আর কথা বাড়ানো চলে না। রাতবিছানা পরিপাটি করে গুছিয়ে রেখে ঝটপট তৈরি হতে থাকি যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে। জাটানি - ঘরের পাশের প্রতিবেশী রাজ্য ওডিশার খোরদা জেলার এক বর্দ্ধনশীল জনপদ। দু-দুটো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনার সুবাদে খুব দ্রুতলয়ে বেড়ে চলেছে রাজ্যের রাজধানী লাগোয়া এই ছোট্ট জনপদটি। এখান থেকেই শুরু হবে আমাদের আ্যাডভেঞ্চার কাম ভ্রমণ অভিযান। দলে আমরা চারজন। প্রায় হুটোপুটি করে প্রাত: কালীন আবশ্যকীয় ক্রিয়াকর্ম সেরে, শীত পোশাকে শরীর গুলোকে প্রয়োজনমত ঢেকেঢুকে যন্ত্রসোপানের স‌ওয়ারি হয়ে নীচে নামতেই দেখি দুয়ারে হাজির আমাদের বাহন। ইনোভা গাড়ির খোলের আশ্রয়ে শরীর সমর্পণ করেই শুধু বলা - “চলো পানসি, মঙ্গলাজোড়ি।” কালো আ্যাসফল্ট মোড়া সড়কের ওপর দিয়ে শকট সরসরিয়ে চলতে শুরু করে। আমরা আরাম করে গদীয়ান হ‌ই।
     
    গাঁয়ের নাম মঙ্গলাজোড়ি….



    মঙ্গলাজোড়ি। নোনা জলে ভরা চিলিকা উপহ্রদের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটি গ্রাম। চিলিকার নোনা জলে বয়ে আসে বিসারি সাগরের অপার পশরা। সেই সম্পদ জালবন্দী করে এই গ্রামের মানুষজন সংগ্রহ করে তাঁদের বেঁচে থাকার সব পার্থিব উপকরণ - সম্পদ সমৃদ্ধি স্বস্তি সুখ শম।
    মঙ্গলাজোড়ি খোরদা জেলার টাঙ্গি ব্লকের সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। টাঙ্গি ব্লক শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। রাজধানী শহর ভুবনেশ্বর থেকে ষাট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামটি। 

    এখানে বসবাস করেন প্রায় তিনশোটি পরিবার যাদের সিংহভাগই চিলিকার জলসম্পদের ওপর নির্ভরশীল। এর পাশাপাশি রয়েছেন বেশ কিছু কৃষিজীবী পরিবার যাদের সংখ্যা পনেরো থেকে কুড়িটির মতো। বেহেরা পদবীধারী এই মানুষেরাই মূলত কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। এদের কৃষিজমির একটা বড়ো অংশ‌ই চিলিকার জলের তলায় ডুবে থাকে। ফলে এরা এক বিশেষ প্রজাতির ধান চাষ করেন যা জলে ডুবে যাওয়া অবস্থার সঙ্গে যুঝতে পারে জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে। এই দু ধরনের স্থায়ী আবাসিকদের পাশাপাশি এখানে আমাদের রাজ্য থেকে এসে ভিড় জমান বেশ কিছু পরিযায়ী মানুষজন।

     চিলিকার অগভীর বাদা জলাভূমিতে জন্মায় যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ উদ্ভিদ যেমন Typha এবং Phragmites karka reed সেগুলোর জন্য‌ই তাঁরা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এসে এখানে হাজির হন। এই জলজ উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা হয় নানান প্রয়োজনীয় উপকরণ যা কিছুটা হলেও মানুষের অর্থনৈতিক সঙ্গতি বাড়াতে সাহায্য করে। ওডিশার এই ছোট্ট জনপদের বসবাসকারী মানুষজন সম্পর্কে এই কথাগুলো বলার পেছনে একটা গূঢ় কারণ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে আলোচনায় যাবার আগে চিলিকা উপহ্রদ নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কথা আলোচনা করে নিতে হবে।
     
    চিলিকা এলো কোথা থেকে?
     
    চিলিকা বা চিলকা প্রতিবেশী ওডিশার উপকূলে অবস্থিত একটি লবণাক্ত জলের হ্রদ। ওডিশা রাজ্যের তিন উপকূলীয় জেলা যথাক্রমে পুরী, খুরদা ও গঞ্জাম জুড়ে এর অবস্থান। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম লবণাক্ত জলের হ্রদ চিলিকা দৈর্ঘ্যে ৬৫ কিলোমিটার, বিস্তারে ৮ থেকে ২০ কিলোমিটার এবং গভীরতায় গড়পড়তা ২ থেকে ২.৫ মিটার। ওডিশা রাজ্যের বেশ কয়েকটি নদী যেমন দয়া, ভার্গবী এসে মিশেছে এই হ্রদের জলে। এরা স্থলভাগের অংশ থেকে বয়ে নিয়ে আসে মিঠা জল। জুন মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নদীদের বয়ে আনা জলেই চিলিকার জলের ভাণ্ডার পূর্ণ থাকে। বছরের বাকি সময়ে সামুদ্রিক বাঁধের ফাঁক গলে ঢুকে পড়ে সমুদ্রের লবণাক্ত জল। এভাবেই মিঠা আর নোনা জলের জোগানের ভারসাম্য বজায় থাকে যার প্রভাব লক্ষ করা যায় এখানকার বাস্তুতন্ত্রে । তবে আজকে আমরা যে চেহারায় এই জলাভূমিটিকে দেখতে পাই তা কিন্তু এক ভূতাত্ত্বিক অভিঘাতের ফল। সেই বিষয়ে আগে আলোচনা করা যাক।
    চিলিকার উৎপত্তি রহস্যের খোঁজে আমাদের বেশ খানিকটা সময় পিছিয়ে যেতে হবে। 
    ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে একসময় চিলিকা বঙ্গোপসাগরের অংশ ছিল, আজকের মতো এই হ্রদের তখন কোনো স্বতন্ত্র পরিচয় বা অস্তিত্ব ছিলনা। তবে সামুদ্রিক তরঙ্গের ক্রিয়া ও নদীবাহিত পলির ক্রমসঞ্চয়নের কারণে এই অংশের উপকূলরেখা ও সংলগ্ন তটভূমির গঠনে একটা বড়োসড় পরিবর্তন ঘটতে থাকে। প্লাইস্টোসিন যুগের অন্তভাগে আজ থেকে কমবেশি ২০০০০বছর আগে উপকূলরেখা বরাবর ভূ-আলোড়নের ফলে উপকূল নিকটবর্তী অঞ্চলটি মূল সমুদ্র অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মহানদীর দ্বারা বাহিত পলি ব-দ্বীপীয় উপকূলরেখার সমান্তরালে সঞ্চিত হয়ে একটি সামুদ্রিক বার (bar) বা বাঁধ সৃষ্টি করে, ফলে তটভূমি সংলগ্ন অগভীর সমুদ্রের অংশটি মূল সমুদ্র থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং আজকের ওডিশার উপকূলে অবস্থিত চিলিকা উপহ্রদের সৃষ্টি করে। সামুদ্রিক অবক্ষেপের সঞ্চয় তটরেখার গঠনে যে বারংবার পরিবর্তন ঘটিয়েছে তার সবচেয়ে কার্যকর প্রমাণ আমরা পাই কোনারকে গেলে । এক সময় সমুদ্রের লাগোয়া অংশে থাকলেও মাত্র কয়েক শো বছরের মধ্যে আজকের কোনারক সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় অনেকটাই দূরে (তিন কিলোমিটার) সরে গেছে। উপকূলরেখার এই অপসারণ ঘটেছে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অর্থাৎ এর ফলে চিলিকার ক্ষেত্রীয় পরিসরের‌ও পরিবর্তন ঘটেছে। পাশাপাশি পলি, বালি সঞ্চয়ের কারণে সমুদ্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ পথের বিস্তৃতি ক্রমশ‌ই সংকীর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে মাত্র ১.৫ কিলোমিটার চওড়া একটি খাড়ি পথের মাধ্যমে চিলিকা হ্রদটি বঙ্গোপসাগরের সাথে যুক্ত। ঐ পথ দিয়েই সমুদ্রের নোনা জল উপহ্রদের ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। চিলিকা প্রসঙ্গে এই কথাগুলো বলার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য যে এই জলাভূমিটিকে অবলম্বন করেই পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজনের জীবন ও জীবিকার ছন্দোময় যাপন অতিবাহিত হয়। একসময় এই অঞ্চলে অবস্থিত বিখ্যাত পালুর বন্দরটি ছিল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। দশম শতকে রচিত ব্রহ্মাণ্ড পুরাণেও এই বন্দরের বিপুল বাণিজ্যিক বৈভবের কথা বলা হয়েছে। এর উল্লেখ আছে বিখ্যাত ঐতিহাসিক তথা ভৌগোলিক ক্লডিয়াস টলেমির রচনায়। কীভাবে একটি সামুদ্রিক বন্দর ইতিহাসের হাত ধরে বর্তমানে আভ্যন্তরীণ জলভাগের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে তা অবশ্য অন্যতর আলোচনার বিষয়।
     
    এতো গেল বিজ্ঞানের কথা। এবার আসি চিলিকার উৎপত্তি রহস্যের খোঁজে প্রচলিত কিংবদন্তি প্রসঙ্গে । বহুকাল আগের কথা। প্রাচীন কলিঙ্গ রাজ্যের প্রবল প্রতিপত্তি ও বিপুল বৈভবের কথা শুনে রক্তবাহু নামের এক জলদস্যু রাজা বিশাল এক নৌ বহর নিয়ে সমুদ্রপথে এসে হাজির হলো ওডিশার উপকূলে অবস্থিত পালুরের নিরাপদ পোতাশ্রয়ে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল প্রভু জগন্নাথের লীলাভূমি নীলাচল বা পুরী লুন্ঠন করে ধনসম্পদ হাতিয়ে আবার নিজের আস্তানায় ফিরে যাওয়া। উপকূলে অবস্থিত পালুর এবং পুরীর মানুষজনেরা যাতে তাঁর হীন উদ্দেশ্য সম্পর্কে আগাম টের না পায় সেইজন্য রক্তবাহু তাঁর নৌ বহরের জাহাজগুলোকে লুকিয়ে রেখেছিল। 

    এদিকে সমুদ্র রক্তবাহুর অভিসন্ধি বুঝতে পেরে প্রথমে পুরীর মানুষদের সতর্ক করে দিল যাতে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। তারপর প্রবলভাবে ঢেউ তুলে রক্তবাহুর জাহাজের ওপরে রাখা রসদ আর লড়াইয়ের সব উপকরণ ভাসিয়ে নিয়ে গেল। সমুদ্রের এমন কাজে রক্তবাহুতো রেগে আগুন। সে তাঁর দস্যু সাঙাৎদের নিয়ে হা রে রেরে করে গ্রামের ভেতরে ঢুকে পড়লো। এবারো ঠকতে হলো তাঁকে। ফাঁকা গ্রামে সে কী পাবে? এতে তাঁর রাগ আরও বেড়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো সমুদ্র তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। রেগে আগুন হয়ে সে তাঁর বাহিনীকে নির্দেশ দিলো সমুদ্রকে আক্রমণ করতে। হানাদারদের ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্যত হতে দেখে সমুদ্র আরও গভীরে ডুব দিলো সাধনার জন্য। তারপর শত্রুপক্ষের অসতর্কতার সুযোগে উঠে এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো রক্তবাহুর দলের সমস্ত লোকজনকে। আর সাধনার শেষে গভীর সমুদ্র থেকে এভাবে উঠে আসার ফলেই তৈরি হলো আজকের চিলিকা, যা সমুদ্রের কাছে থেকেও যেন আলাদা করে নিজের উপস্থিতির জানান দিচ্ছে সকলকে। এই কিংবদন্তি কাহিনি আজও চিলিকার তীরবর্তী এলাকার গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। কিংবদন্তি কাহিনি সূত্র নতুন করে মান্যতা পায় একালের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে। তখনই আরও অর্থবহ হয়তো হয়ে ওঠে আবহমানকালের লোকবিশ্বাস,লোককাহিনি।
     
    এবার চলো মঙ্গলাজোড়ি ‌‌…….



    জাটানি থেকে ঘন্টা দেড়েক পথ পাড়ি দিয়ে আমরা পৌঁছে যাই মঙ্গলাজোড়ি। সেদিন বহিরাগত পর্যটক হিসেবে আমরাই প্রথম পৌঁছেছি, তাই একটু বেশি বোধহয় পেলাম আমরা। আফটার অল ব‌উনির গ্রাহক বলে কথা! গাড়ি থেকে নেমে যেদিকেই তাকাই সেদিকেই বাদা ভূমি। আর তার মাঝে বিচিত্র সব পাখপাখালির জটলা। ভোর বেলা হলো পাখিদের প্রাতরাশের সময়। তাই এইসময় ব্যস্ততা খুব বেশি। জটলা। ভোর বেলা হলো পাখিদের প্রাতরাশের সময়। তাই এইসময় ব্যস্ততা খুব বেশি। নিয়মমাফিক একটা নৌকা ভাড়া করে নিতে হলো। এখানে এমনি দস্তুর। আমরা চারজন ছাড়াও আরও দুজন স‌ওয়ারি – একজন মাঝি যে লম্বা বাঁশের লগি ঠেলে ঠেলে নৌকা চালাবে আর দ্বিতীয় জন যাত্রী পরিষেবা সমিতির নির্দ্ধারিত গাইড। গাইড সাহেব এই জলাভূমির পাখিদের নাম ধাম ঠিকুজি কুলজি সম্পর্কে বিলক্ষণ পরিচিত তাই তিনিই আমাদের হয়ে ঘটকালি করবেন পাখিদের সঙ্গে আলাপ জমানোর কাজে। 

    ভোর বেলা, তাই গোটা জলাভূমি জুড়ে একটা হালকা কুয়াশার চাদর বিছানো। রাত বিছানা ছেড়ে আড়মোড়া ভেঙে সূর্যদেব পাটে বসতেই উষালগ্নের আলো আঁধারের প্রহেলিকা কেটে যাবে। নৌকা জেটি ছেড়ে খানিকটা এগোতেই কানে ভেসে আসে বহু বিচিত্র শব্দের কনসার্টের আওয়াজ। ঠিক যেন সরগম মেনে গলা সাধার পর্ব শুরু হয়েছে। সব শব্দ‌ই যে সুরেলা তা নয়, তবে তার মধ্যেও যেন
    একটা শৃঙ্খলা রয়েছে। আমাদের গাইড মহেন্দ্র বেহেরা লর্ড কালীয়াকে মনে মনে স্মরণ করে তাঁর ধারাভাষ্য শুরু করেন। আমাদের নয়ন দুখানি ইতিউতি এদিক সেদিক নজরদারিতে ব্যস্ত থাকলেও কান দুখানি মহেন্দ্র ভাইয়ের কথায় আটকে রাখি। কথা শুরু হয়–
    “ মঙ্গলাজোড়ি - জলার পাখিদের স্বর্গরাজ্য। ভারতের আর কোথাও এত বিপুল সংখ্যক জলচর পাখির দেখা মিলবে না। চিলিকা হ্রদের উত্তর পূর্ব প্রান্তসীমায় অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রাম ও চিলিকার লাগোয়া জলাভূমির অংশটি আজকে পৃথিবীর পক্ষিপ্রেমী মানুষের কাছে অবশ্য গন্তব্য হয়ে উঠেছে। মঙ্গলাজোড়ি এখন আন্তর্জাতিক পক্ষিবিচরণ এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এখানে প্রতি বছর শীতের সময় হাজারে হাজারে, লাখে লাখে পরিযায়ী পাখি এসে হাজির হয় পৃথিবীর দূরতম সব প্রান্ত থেকে। যদি বলেন শীতের সময়‌ই ওরা এখানে আসে কেন? তাহলে এক কথায় বলবো পাখিরা হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসে কেবলমাত্র একটু উষ্ণতার খোঁজে। এই উষ্ণতা কেবল বাইরের উষ্ণতা নয় , এ উষ্ণতা পক্ষিপ্রেমী মানুষের হৃদয়ের উষ্ণতাও বটে ।” নিজের দার্শনিক রসিকতায় নিজেই হেসে ওঠেন মহেন্দ্র বেহেরা ভাই। 

    তাঁর কথা শেষ হতে না হতেই নলখাগড়ার ঝোঁপ থেকে বেরিয়ে আসে এক লম্বা গলার পাখি। এর নাম ডার্টার। সাপের মতো লম্বা গলার জন্য এই পাখিটিকে snake bird বলেও ডাকা হয়। পানকৌড়ির মতো জলের গভীরে ডুব দিয়ে মাছ ধরার দক্ষতার বিচারে মিঃ ডার্টারের জুড়ি মেলা ভার। বলতে না বলতেই দেখি একদল পানকৌড়ি হ্রদের জলে গা ভিজিয়ে জবজবে হয়ে রোদে ডানা মেলে তাকে শুকিয়ে নিচ্ছে। মহেন্দ্র ভাই আমাদের জানান পানকৌড়ির শরীরে তৈলগ্রন্থি নেই। ফলে প্রতিবারই রোদে ডানা মেলে ধরতে হয় তাদের। গুরুত্বপূর্ণ জানকারি সন্দেহ নেই। 

    এখানে এসে নয়ন দুখানি মেলে ধরতে হয় পরম ঔৎসুক্য ও মুগ্ধতায়। আমরাও তেমনটাই করছি। তাই নজরে পড়ছে অনেক অনেক অতিথি পাখি। একঝাঁক মূর হেন নজরে পড়লো। সাতসকালেই পেটপুরে খেয়ে নিচ্ছে পছন্দের সব খাবার । ব্যুফে টেবিলে সাজানো খাবার দেখলে যেভাবে আমন্ত্রিত অতিথিদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় এদের‌ও ঠিক যেন তেমনই হাল ! মহেন্দ্র ভাইয়ের কথায়, “ মঙ্গলাজোড়ি হলো পরিযায়ী পাখিদের সবচেয়ে বড়ো dinning hall। তাই এখানে প্রায় ১২০ রকমের পরিযায়ী পাখি পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে শীতকালে এসে ভিড় করে মঙ্গলাজোড়িতে। পাখির এমন বিপুল সংখ্যাই বুঝিয়ে দেয় যে এখানে পাখিদের খাবারের কোনো ঘাটতি নেই। আসলে পাখিরা দুটো প্রধান কারণে নিজেদের চেনা জায়গা ছেড়ে অন্য ঠাঁইয়ের খোঁজে পাড়ি জমায় – এক, খাবারের ঘাটতি, আর দুই, জলবায়ুর পরিবর্তন। আমাদের গ্রামের চারপাশের গাছগুলোতেও এই সময় অনেক অতিথি পাখি এসে হাজির হয় দেশ বিদেশের নানান প্রান্ত থেকে। এছাড়া আমরা এখন এদের উপস্থিতি খুব উপভোগ করি। 

    এমন আলাপচারিতার সঙ্গেই আমাদের চারপাশের পাখিদের দেখাশোনার কাজ চলতে থাকে। দেখা হয়ে যায় লিটিল গ্রেব, কয়েকরকমের ইগ্রেট, লিটিল টার্ন, গাল বেলিড টার্ন, ব্ল্যাক উইঙ্গড স্টিল্ট, গ্রেট রিড ওয়াবলার, পিগমি গুজ এর মতো জানা অজানা বিহগ অতিথিদের সঙ্গে। এদের প্রত্যেকের কথা আলাদা করে বলতে গেলে গুরুর পাতা গুরুভার হয়ে যাবে।আর সবার কথা বলার মতো জ্ঞান আমার নেই।
    লগি ঠেলে আমাদের মাঝি ভাই নৌকাটাকে যথাসম্ভব পাখিদের কাছাকাছি নিয়ে যাবার চেষ্টা করতেই মহেন্দ্র ভাইয়ের ইশারায় তাকে নৌকা থামাতে বলে। আর আমাদের সবাইকে বলেন সামনের নলখাগড়ার ঝোঁপের দিকে তাকাতে। তাঁর কথামতো সেদিকে তাকাতেই দেখি পাটকেল রঙের এক পাখি, চেহারায় বকের মতো, শরীর ঝাঁকিয়ে কাদা মাটির ভেতর থেকে কিছু একটা টেনে আনার চেষ্টা করে চলেছে। খানিকক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেই দেখি একটা লম্বা সাপকে টেনে বার করে মুখে নিয়ে পাখিটা উড়ে গেল নিরাপদ ঠিকানায়। কী পাখি জিজ্ঞেস করতেই, জবাব পেলাম পার্পল হেরন। মাছের সাথে সাথে সাপ চেখে দেখতে ভালোবাসেন ইনি। খাদ্য খাদকের চিরন্তন সম্পর্কের এক পরিচয় পেয়ে আমরা সবাই বেশ শিহরিত হ‌ই।

    চড়তে চড়তে এক জোড়া কালো মাথার কাস্তে চড়া বা ব্ল্যাক আইবিসের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। সাপ ধরে উদরস্ত করতে এরাও কম পটু নয়।
    আমাদের চারপাশে কেবল পাখি আর পাখি। একজোড়া ওয়াগ টেল বা খঞ্জনা দম্পতিকে দেখি অনবরত লেজ নাচাতে নাচাতে পরমানন্দে খুঁটে খুঁটে পোকামাকড় ধরছে আর ঠোঁটে পুরছে। এই সময় ওরা হিমালয়ের পাদদেশ থেকে পরিযায়ী হয়ে দক্ষিণ দিকে চলে আসে। খঞ্জনা দম্পতিকে দেখে জীবনানন্দ দাশের কথা মাথায় এলো। 
     
    এখন বেলা একটু বেড়েছে। শীতের এই সময়টাতে মঙ্গলাজোড়িতে পাখিদের পাশাপাশি মানুষ জনের আনাগোনায় কোনো বিরাম নেই। লোকজন দেখে মনের খুশিতে একঝাঁক গড‌উইটস প্রবল শোরগোল তুলে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যেতে না যেতেই একটা বড়ো স্টিল্ট পাখির দঙ্গল আমাদের নৌকা চলার জলপথের ঠিক পাশেই নেমে পড়লো। 
    কোনদিকে মনোযোগ দেবো তা ভাবতে না ভাবতেই এক পল্টন বার্ন সোয়ালো কে দূরে আরও দূরে উড়ে যেতে দেখলাম। মহেন্দ্র ভাই উচ্ছ্বাসে ডগমগ হয়ে একসময় বলেই ফেললেন – আপকু ভাগ্যমন্ত অছি। সত্যিই ভাগ্যবান আমরা।

    মঙ্গলাজোড়ির জল মহলে এক আশ্চর্য যাপনের সময়সীমা একসময় শেষ হয়ে যায়। কীভাবে এক বিরল মুগ্ধতায় ১২০ মিনিট জলভ্রমণ কাল শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না। অনেকেই বাদ পড়ে গেলো। যাদের কথা আপনাদের শোনাতে পারলাম না তাদের কথা জমা র‌ইলো আমার মন সিন্দুকে। অন্য এক অবসরে শোনানোর ইচ্ছে রইলো।

     
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb90:ea91:cb70:30fb:406:3ce1:604a | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:০৯527135
  • ভালো লাগলো পাখিদের গল্প, রক্তবাহুর গল্প। আমি কয়েক মাসের জন্য একটা অ্যাপার্টমেন্টে ছিলাম। সেখানে গ্যারাজে অনেকগুলো বার্ন সোয়ালো থাকতো। কী ছটফটে পাখি! আর সারাক্ষণ নিজেদের মধ্যে কিচমিচ করে কথা বলছে। দু তিন জোড়া এক সঙ্গে থাকতো। ছাদের কার্নিশেও বসতো। তারপর ঐ বাড়ি ছেড়ে চলে এলাম। ওদের সাথে আর দেখা হয়নি।
  • Somnath mukhopadhyay | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:২৪527137
  • এই যে দেখা করিয়ে দিলাম।
  • পলি মুখার্জি | 2405:201:8000:b1a1:f842:e49f:3a64:5d7d | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৮527138
  • খুব ভালো লাগলো। শুধু পাতা ভরানো লেখা হিসেবে নয়, এই লেখাটি একাধারে ভ্রমণ কথা, সমাজবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব,পুরাণ সম্বাদ এবং পাখিদের আনন্দময় জগতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার কার্যকর গাইড বই হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করি। বছরের শেষ সপ্তাহে গুরুর পাতায় এটি একটি বড়ো গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি।
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:cf:d340:8000:: | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩৬527141
  • দেখেছি কিন্তু এমন গভীর ভাবে না।লেখা ইচ্ছে জাগলো আবার দেখার।
  • | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৫৩527142
  • ছবিগুলো বেশ
  • Somnath mukhopadhyay | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৫৫527143
  • বিবরণী?
  • সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় | 2409:40e0:103c:c94:8000:: | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৪৩527155
  • বড়দিনের সকালে মঙ্গলাজোড়ির পরিযায়ী পাখিদের এমন সচিত্র প্রাঞ্জল বিবরণী পড়তে পড়তে সত্যি সত্যিই একটা মানস ভ্রমণ হয়ে গেল। একবার সরজমিনে প্রত্যক্ষ করার প্রবল ইচ্ছে জেগে উঠল। লেখনীর গুণে মনে হল যেন কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করছি এই স্বর্গীয় দৃশ্য। 
  • Soumya mondal | 142.188.38.25 | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৮527208
  • নতুন জায়াগা টা আগে শুনিনি নাম . সহজ সাবলীল বর্ণনা আর অনেক তথ্য পেয়ে  খুব  ভালো লাগলো ..
  • শর্মিষ্ঠা লাহিড়ী | 2405:201:8016:d7:b4c8:d49c:74d0:43fc | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:১৬527290
  • এত সুবিস্তৃত আলোচনা একাধারে ইতিহাস, পৌরানিক তথ‍্য, পক্ষীকূলের সম্পর্কে এত সুন্দর বিবরণ বিষয়টিকে এতটা চিত্তাকর্ষক করে তুলেছে। এই ধরনের আরো আকর্ষনীয় লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
  • দিয়ালী চট্টরাজ। | 2402:3a80:1132:61b0:7ca9:b407:5482:560e | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:২৭527485
  • চিল্কার ভৌগলিক উৎপত্তি সম্পর্কে কিছু তথ্য ছিলো, পৌরাণিক ব্যুৎপত্তি জানলাম। খুব তথ্য বহুল লেখা। রামসার কনভেনশন দ্বারা অনুমোদিত ভারতের প্রথম নোনা জলের হ্রদটি পরিযায়ী পাখিদের আকর হিসেবে খ্যাত। চিল্কা পর্যটকদের ভ্রমনবৃত্তান্তে মঙ্গলাজোড়ি থাকা আবশ্যক।
  • Aditi Dasgupta | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:১৬527497
  • মঙ্গলাজোড়ি ঘুরে এলাম আপনার ছবি লেখা ভর করে।
  • Somnath mukhopadhyay | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫২527505
  • সশরীরে সন্দর্শনের মজাই আলাদা। একবার পানসি চলুক মঙ্গলাজোড়ি।
  • Aditi Dasgupta | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৯527506
  • ঠিক। দেখে আসাই ভালো DJ আসার আগে!
  • সৌম্যদীপ সাহা রায় | 2405:201:8012:39b8:98c1:a59f:762c:1045 | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১৩527696
  • সম্মৃদ্ধ এই লেখা পড়ে মঙ্গলাজোড়ি যাবার ইচ্ছেটা পূণরায় জাগ্রত হল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন